মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের ১৮৩৭ খৃষ্টাব্দে অভিষেক হয় এবং ১৮৬২ খৃস্টাব্দে হয় তার হত্যাযজ্ঞ। কুচক্রী ইংরেজ ও তাঁর দালালদের লেখা অথবা তথ্য বা নাজার কারণে লেখা ইতিহাসে পাওয়া যায় যে, সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ শুধু কবি, বিলাসী আর স্ত্রী জিনাত মহলের হাতের পুতুল ছিলেন। আরাম-আয়েশ, বিলাস-ব্যসন ও খামখেয়ালীর কারণেই তিনি তার সৈন্যবাহিনীর নেতৃত্বে দিতে ব্যর্থ হন এবং নির্মমভাবে পরাজিত হন। কিন্তু প্রকৃত ইতিহাস তা বলেনা। প্রকৃত স্বাধীনতা আন্দোলন, যেটাকে সিপাহী বিদ্রোহ বলে চালাবার চেষ্টা করা হয়েছে, সেটা ছিল সর্বভারতীয় আন্দোলন।
সে বিশাল অবিভক্ত ভারতের নেতা নির্বাচন করার সময় হিন্দু-মুসলমান সকলেই বাহাদুর শাহকেই অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতা হিসেবে বরণ করে নেন। তিনি ধর্ম জাতি নির্বিশেষে প্রত্যেককে সমান চোখেই দেখতেন। হিন্দুদের তিনি বিশেষভাবে ভালবাসতেন। প্রমাণ স্বরূপ বলা যায়, বেনারসের বাবু সরোজ নারায়ণ, পণ্ডিত নন্দকিশোর, রাজা ভোলানাথ, কুমার সলগরাম, রাজা দেবী সিংহ, গয়েন্দ মল্ল, লালা শিবলাল, জগজ্জীবন দাস, লালা মুকুন্দলাল প্রমুখ বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে তাঁর গভীর সুসম্পর্ক ছিল। হোলি, দেওয়ালি, রাখি বন্ধন প্রভৃতি হিন্দুপর্বে তিনি হিন্দুদের উৎসাহ প্রদান করতেন। (দ্রষ্টব্য Court Diary, 11th December, 1856, Page-39)
১৮৫৭ খৃষ্টাব্দে সারা দেশ যখন ইংরেজের বিরুদ্ধে হুংকার ছেড়ে উঠেছে তখন বাহাদুর শাহের বয়স ৮২ বছর। সর্বভারতীয় নেতৃত্ব নিতে তাঁকে অনুরোধ করা হলে তিনি যা বলেছিলেন তা খুব হৃদয়স্পর্শী-“আমি সর্বান্তকরণে তোমাদের সাথে আছি। কিন্তু আমার না আছে অর্থ, না আছে সৈন্য। যদি আমি আমার হৃতরাজ্য পুনরুদ্ধার করতে পারি তবে আমি তোমাদের রাজকীয় মর্যাদা দেব।” এ কথা জনসাধারণ সমস্বরে চিৎকার করে বলেছিলেন-“হুযূর আমরা ধনও চাইনা, সৈন্যও চাইনা।
আমরা চাই যে, আপনি অনুগ্রহপূর্বক আপনার নেতৃত্বের সমর্থন আমাদের দিন। আমরা আপনার পায়ের তলায় জীবন উৎসর্গ করব। আমরা আপনার হারিয়ে যাওয়া রাজ্য উদ্ধার করার পক্ষপাতী এবং আমরা চিরস্থা গৌরব অর্জন করতে চাই।" বাদশাহ তখন বললেন, “তাহলে আমার যা কিছু আছে তা তোমাদের দায়িত্বে দিলাম। আমার ভাণ্ডার থেকে তোমরা খানাপিনা কর এবং প্রাণপণে যুদ্ধ করে শত্রুদের ভারত থেকে দূর করে আমার নামে মুদ্রা চালু কর।” সাথে সাথে তার নামে এক রকম স্বর্ণমূদ্রা চালু করা হয়েছিল।
তিনি সৈন্যগণকে লুটপাট ও শিশু-নারী হত্যার ব্যাপারে কঠোরভাবে নিষেধ করেন। এ প্রসঙ্গে ১৮৫৭ সনের 'সেপ্টেম্বর সৈন্যদের লক্ষ্য করে যা বলেন তার বঙ্গার্থ হল-লুট করার কোন দরকার নেই। আমি আমার সম্পদ-সম্পত্তি সোনা এবং রুপোর অলঙ্কার সমস্ত বিক্রয় করে তোমাদের বেতন দেব। কিন্তু তোমরা যদি শহর লুট করতে চাও তবে আমাকে আগে হত্যা কর এবং পরে তোমাদের যা খুশী করতে পার। (দ্রঃ Metcaife : Two Narratives of the Mutiny in Delhi. p.216)
১৮৫৭ সনের ১৩ই মে ৬০ জন ইংরেজ শিশু ও নারীকে হত্যার ব্যাপারে তার অনুমতি চাওয়া হলে তিনি অনুমতি তো দিলেনই না উপরন্তু তাদের রক্ষণাবেক্ষণের ব্যবস্থা করেন। সে সময় হিন্দু-মুসলমানের মধ্যে ভাঙ্গন ধরাবার জন্য মুসলমানদের গরু কোরবানীকে কেন্দ্র করে ব্রিটিশ ষড়যন্ত্রের জাল বোনে। হুশিয়ার বাহাদুর শাহ সাথে সাথে আদেশ জারী করেন “এ বছর গরু কোরবানী বন্দ
থাকবে; ছাগল, ভেড়া ইত্যাদি দিয়েই কাজ চলবে এবং যে এ আদেশ অমান্য করবে তাকে কামানের গোলায় মৃত্যুদণ্ড দেয়া হবে। সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বের নিরপেক্ষ এ বৃদ্ধ সম্রাটও সেবার নিজের তরফ থেকে একটি মেষ কোরবানী করেন।
৮২ বছর বয়স্ক সম্রাটের সিংহাসনের লালসা ছিলনা। তাই তিনি সর্বভারতীয় রাজন্যবর্গের সমন্বয়ে একটি কনফেডারলী কমিটি গঠন করতে চেয়েছিলেন-সারা ভারত পরিচালনার সম্পূর্ণ ক্ষমতা এ কমিটির হাতে থাকবে।
সম্রাট দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের পরাজয়ের কারণ তার অযোগ্যতা যে মোটেই নয়, তা তার কার্যাবলীই প্রমাণ করে। মোহনলাল, মুন্সী, গোবিন্দ দাস, আগাজানদের মত বিশ্বাসঘাতকদের চরম হঠকারিতা ভারতীয় রাজন্যবর্গের অসহযোগিতা, উন্নতমানের অস্ত্রশস্ত্রের অভাব তার কারণ তো বটেই, তাছাড়াও তার অধীনস্থ সংগ্রামীদের দ্বারা তার আদেশ ভুলে শিশু, নারী ও অসহায়দের হত্যা ও লুঠপাট করা, বাহাদুর শাহকে নিরুৎসাহ করে ফেলেছিল। একে বৃদ্ধ তার উপর তিনি শারীরিক দুর্বল ছিলেন। এ তাজা ও উদার হৃদয়ের মানুষটাকে অযোগ্য বলে চিহ্নিত করার মধ্যে কি যে ঐতিহাসিক সৌন্দর্য লুকিয়ে আছে তা আমাদের জানা নেই।
১৯শে সেপ্টেম্বর দীর্ঘাঙ্গী, শুভ্র শ্মশ্রুধারী বাদশাহ বুঝতে পারলেন, মৃত্যুর সাথে আলিঙ্গনে তার আর বিলম্ব নেই। তাই তিনি হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) কেশ রক্ষিত যে বাক্সটি তার কাছে ছিল সেটা হযরত নিজামুদ্দিন আউলিয়ার মাযারের তত্ত্বাবধানকারীর হাতে এ মনে করে সঁপে দিলেন যে, ইংরেজদের দ্বারা সেটা কলঙ্কিত হতে পারে। তারপর তিনি হুমায়ূন মাকবারায় বা সমাধি স্থানে সপরিবারে আত্মগোপন করে রইলেন। কিন্তু শীঘ্রই কুখ্যাত বৃটিশ সেনাপতি হডসন তাকে অপমান সহকারে গ্রেপ্তার করলেন। দুর্গে বন্দী হলেন বৃদ্ধ সম্রাট। সে সাথে বাহাদুর শাহের দুই পুত্রসহ রাজবাড়ির মোট ২৯ জন শিশু ও বালক-বালিকাকে মিঃ হডসন দিল্লি রাজপথে গরুর গাড়ি থেকে নামিয়ে গুলি করে হত্যা করে। নরপিশাচ হডসন বাদশাকেও গুলি করতে যান কিন্তু মিঃ উইলসন তাতে আপত্তি জানান।
এ ২৯ জন বাচ্চার কাটা মাথা নিষ্ঠুর হডসন সম্রাটকে উপহার দেন। তারপর সম্রাটকে সৈন্যদের মাঝখানে দাঁড় করান হয়। অসহায় সম্রাট নির্বাক শিশুর মত দাড়িয়ে ভাবছিলেন কিভাবে হতে পারে তার শেষ পরিণতি। এমন সময় এক ইংরেজ সৈন্য ছুটতে ছুটতে এসে লাফিয়ে সজোরে বাদশাহের নাকে ঘুষি মারে। প্রবল রক্তের ধারা নিয়ে বৃদ্ধ সম্রাট লুটিয়ে পড়লেন মাটিতে। সম্রাটের একজন কৃষ্ণদেহী সেবক প্রভুর এ দৃশ্য দেখতে না পেরে বন্দুক কামানের পরোয়া না করে তাকেও এক ঘুষি মেরে ধরাশায়ী করে। অবশ্য কয়েক মিনিটের মধ্যেই কৃষ্ণদেহীকে হত্যা করে টুকরা টুকরা করে ফেলা হয়।
বাদশাহকে অবশিষ্ট পরিবার সহ রেঙ্গুনে নির্বাসিত করা হয়। হতভাগ্য বাদশাহ একটা ছোট্ট কামরাতে বন্দী ছিলেন। প্রয়োজন মত তেল সাবানটুকুও তাঁকে সরবরাহ করা হত না। সব থেকে দুঃখের কথা, চিকিৎসার কোন ব্যবস্থা সেখানে ছিলনা। ১৮৬২ খৃস্টাব্দের ৭ই নভেম্বর শুক্রবার ৫টার সময় তার মৃত্যু হয়েছে বলে ঘোষণা করা হয়। বলা হয় তার কণ্ঠনালীতে প্যারালাইসিস হয়েছিল। মৃত্যুর পর দাফন, কাফন, কবর যা হোক কিছু একটা হয়েছিল। কিন্তু বৃটিশ সৈনিক দল তার কবরস্থান মাড়িয়ে ও খোঁচায়ে মাটির সাথে সমতল করে দেয়। ফল এ দাড়িয়েছিল যে, উক্ত কবরের কোন চিহ্ন বর্তমান ছিলনা। পরবর্তীকালে বাহাদুর শাহের কিছু সংখ্যক অনুরাগী ভারতীয় মুসলমান রেঙ্গুনে যাইয়া তাহার কবরে ফতেহাখানির আয়োজন করেন। কিন্তু তাহার কবর নির্ধারণে তাঁহারা ব্যর্থ হন। অতঃপর স্থানীয় কিছু সংখ্যক বৃদ্ধের সাহায্যে তাহারা শেষ মুঘল সম্রাটের কবরস্থান নির্ধারণ করিতে সমর্থ হন।” (দ্রঃ সিপাহী বিপ্লবে মুসলমানদের অবদান, পৃষ্ঠা ৫১)
সম্রাট বাহাদুর শাহ সম্পর্কে তথ্য বহুল অনেক নির্ভরযোগ্য ইতিহাস চাপা পড়ে আছে। তিনি এমন অসাম্প্রদায়িক ছিলেন যে হিন্দু ও মুসলমানকে ডান এবং বাম হাতের মত মনে করেই বিপ্লব পরিচালনা করেছিলেন। কিছু চরিত্রহীন লোক নিকৃষ্ট স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য ইংরেজ পুরুষ এবং মহিলাদের খুঁজে বের করার অজুহাতে ভারত বর্ষের হিন্দু এবং মুসলমানদের উপরে অত্যাচার করেছিল। বৃদ্ধ সম্রাট এ সংবাদে নিজ হাতিতে চড়ে নাগরিকদের সাথে দেখা করে সে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করেন। অবশ্য বাদশাহ ব্যর্থ হয়েছিলেন। (দ্রঃ Eighteen Fifty Seven : S. N. Sen)
অবস্থাকে আয়ত্তে আনার জন্য তিনি প্রধান সেনাপতির অধীনে একটি দশ সদস্য বিশিষ্ট সামরিক সংস্থা তৈরি করলেন। তারা ভোটাভোটি করে সিদ্ধান্ত নেবেন প্রদানমন্ত্রীর সম্মতি নিয়ে। প্রধান মন্ত্রী অসুবিধা বোধ করলে বাদশার কাছে পাঠাবেন। (দ্রঃ ঐ পুস্তক, পৃঃ ৭৫)
বাদশাহ কিছু বিশৃঙ্খলা লক্ষ্য করে কঠোর হাতে মির্জা মোঘলের পরিবর্তে বখত খাকে আজাদী দলের প্রধান সেনাপতি করলেন। বাহাদুর শাহ তাঁর বাড়ির অনেক কিছু বিক্রি করে সৈন্যদের ছয় মাসের বেতন অগ্রিম দিয়েছিলেন, যদিও পূর্বে বলেছিলেন তিনি কিছুই দিতে সমর্থ নন। অতএব যারা বলেন বাহাদুর শাহকে পুতুলের মত দাঁড় করিয়ে কাজ করা হয়েছিল বা তিনি অপদার্থ ছিলেন, তাদের কথা সঠিক নয়। সে সময়কার কুখ্যাত ব্যবসায়ী শ্রী জামানা দাস অর্থ পিশাচের ভূমিকায় অত্যন্ত চড়া দামে আটা বিক্রি করছিল। তিনি এ রকম ধরণের দেশদ্রোহী ব্যবসায়ীদের দোকান লুট করার অনুমতি দিয়ে ছিলেন সুরেন্দ্রনাথ সেনের ঐ পুস্তক, পৃষ্ঠা ৮৪)
সৈন্যদের ভরণপোষণের জন্য বাহাদুর শাহ ভিক্ষুকের মত ধনী ব্যবসাদার শ্রী রামজীমলকে বলেন, “আমি আপনার কাছে অর্থ চাচ্ছি ঋণ হিসেবে, কর হিসেবে নয়। কিন্তু রামজীমল তা অস্বীকার করলেন তখন সম্রাট বেদনা নিয়ে জানালেন, “কি আশ্চর্যের কথা। দেশ বাঁচাতে আপনি ঋণ দিতে অস্বীকার করছেন, অথচ আগ্রার খুব ধনী ঠিকাদার শ্রী জ্যোতিপ্রসাদ ইংরেজকে ত্রিশ হাজার টাকা সাহায্য (অনুদান) করলেন। দেশের লোক যখন আর্থিক সাহায্যের জন্য টাকা ধার হিসেবে দিল না তখন বাদশাহের আদেশে একটি টাকশাল খোলা হল। কিন্তু তাতেও সমস্যার সমাধান হয়নি। [দ্রঃ Mutiny Papers in the National Archives of India, Bundle 43. No. 45]
যুদ্ধের গতি নীচের দিকে নামল, এ কারণে যে, বারুদ ও রসদ ফুরিয়ে গেল। বাজারেও বারুদ কিনতে পাওয়া গেলনা। মনে হল সমস্ত বারুদ হঠাৎ উধাও হয়ে গেছে। ঘর তল্লাশি করে প্রচুর বারুদের সন্ধান পাওয়া গেল কিন্তু তখন যুদ্ধের গতি বেশ বেঁকে গেছে। যিনি এ বারুদ লুকিয়ে রেখে সঙ্কট সৃষ্টির প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁর নাম দেবীদাস। এ বারুদ থেকে ইংরেজদের প্রচুর পরিমাণে সাহায্য করা হয়েছিল বলেও জানা যায়। (তথ্য Mutiny Papers in the National Archives of India,Bundle 51. No. 280-81)
বাহাদুর শাহ বিপ্লব চেয়েছিলেন কিন্তু অসামরিক ব্যক্তি, নারী ও শিশুর হত্যা চাননি। অবশ্য তার এ আদেশ প্রতিপালিত হয়নি। ফলে সেনাপতিও তাঁর অকৃতকার্যতার জন্য পদত্যাগ করেছিলেন। দ্বিতীয় কথা, দেশের জনসাধারণের বিশেষ সম্প্রদায় তার সাথে দেশের জন্য সহযোগিতা থেকে অসহযোগিতা করেছে বেশি। তৃতীয়তঃ ইংরেজদের মত আধুনিক উন্নত অস্ত্রের অভাব লক্ষ্য করে তিনি বুঝতে পারলেন বিপ্লবের সমাধি হতে চলেছে। এ অবস্থায় ইলাহি বখশ অত্যন্ত পীড়াপীড়ি করলেন আত্মসমর্পণের জন্য। তার স্ত্রীও সে প্রস্তাবে যোগ দিলেন। বাধ্য হয়ে বৃদ্ধ দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ দুঃখ ভারাক্রান্ত হৃদয়ে তাই মেনে নিলেন। (দ্রঃ Eighteen Fifty Seven : S. N. Sen, 115)
ইংরেজ সরকার তাদের জয় হওয়ার সাথে সাথে যে নিষ্ঠুর হত্যালীলা চালিয়েছিল ইতিহাসে তার নজির পাওয়া মুশকিল। ভারত বিখ্যাত কবি গালিব সে সময় দিল্লিতে ছিলেন। তিনি লিখেছেন : রক্তের সমুদ্র দেখছি, আল্লাহ আর কত দিন দেখাবেন কে জানে। (দ্রঃ ঐ, পৃঃ ১১৫) ইংরেজ সৈন্য রাস্তায় যাকে পেয়েছে, যে কোন জাতির মানুষকে, গুলি করে হত্যা করেছে। এ মানুষদের মধ্যে ছিলেন কত ইতিহাস প্রসিদ্ধ মানুষ, কত প্রতিভাধর ব্যক্তি, তাদের মত লোক আর জন্মাবে কিনা সন্দেহ। ১৪০০ নামজাদা লোককে গ্রেপ্তার করা হয় এবং রাজঘাট দরওয়াজায় নিয়ে যাওয়া হয় ও প্রত্যেককে গুলি করে হত্যা করা হয়। এর পৈশাচিক উল্লাসে যমুনা নদীতে মৃত ও অর্ধ মৃতদেরকে নিক্ষেপ করা হয়। সে সময় সমস্ত কূপগুলো মৃতদেহে ভর্তি ছিল। যাতে ছিল শিশু ও নারীদের শবদেহের প্রাচুর্য। (সুরেন্দ্রনাথ সেনের ঐ গ্রন্থ, পৃষ্ঠা ১১৫-১১৬)
পণ্ডিত কেদারনাথ বলেন, ১৮৫৭ সালে বিপ্লবের সময় বিদ্রোহীগণ তার কাছে অর্থ দাবী করেন। অবশ্য তিনি কিছুই দেননি। কিন্তু যখন বৃটিশ সৈন্য নগরী অধিকার করল তখন প্রায় ৭০ হাজার টাকার সম্পত্তি তারা লুট করল। দ্রঃ Foreign Political Consulation, No. 3825, 3lst. Dec. 1858].
ইংরেজরা বিদ্রোহ দমন করার পর সামরিক কর্তৃপক্ষ একটা আদেশ জারী করল যে, বাহাদুর শাহের সমর্থকদের উপর অর্থদণ্ড ধার্য হবে। সেক্ষেত্রে ধরে নেয়া হল যে, হিন্দু সম্প্রদায় বৃটিশের সমর্থক এবং মুসলমানগণ বৃটিশের বিপক্ষ। এ রকম উক্তি অনেকের কাছে হিন্দু বিদ্বেষমূলক উক্তি বলে মনে হবে। কিন্তু ইতিহাসের সত্যকণ্ঠ কি করে টিপে ধরা যায়? এ তথ্য লিখেছেন ডক্টর সুরেন্দ্রনাথ সেন তাঁর Eighteen Fifty Seven গ্রন্থের ১১৮ পৃষ্ঠায় যা ১৯৫৭ তে ছাপা। আমি তার থেকেই তথ্যটুকু নিয়েছি। মূল ইংরেজি উদ্ধৃতিটুকু তুলে দিচ্ছি।'
"The military authorities insisted that a fine should be imposed on all supporters of the late regime; and it was generally held that as the Hindus were as a community well disposed towards the British and the Muslim as a community were hostile. the Hindus should be exempted from any penalty." (Eighteen Fifty Seven : Dr. Surendranath Sen, p. 118. 1957]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/492/34
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।