মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
১৮২২ খৃষ্টাব্দে মক্কায় মাওলানা নিসার আলী সাহেবের সাথে সৈয়দ আহমদ সাহেবের দেখা হয়। নিসার আলী তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন এবং তার আন্দোলনও আগামী পরিকল্পনা সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল হন (দ্রঃ অমলেন্দু দেবঃ বাঙালী বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ, পৃষ্ঠা ৯৯)
মাওলানা নিসার আলী ১৭৮২ খৃষ্টাব্দে ২৪ পরগণার চাঁদপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। একে ইতিহাসে ইংরেজরা সম্ভবত হেয় করার জন্য তার উৎকৃষ্ট নামের (সৈয়দ নিসার আলী) পরিবর্তে নিকৃষ্ট নাম (তিতুমীর) ব্যবহার করেছে। কিন্তু অতীব দুঃখের কথা যে, পরবর্তীকালে হিন্দু-মুসলমান ভারতীয় ঐতিহাসিকরাও সে প্রথাই চালু রেখেছেন।
তাঁর পিতা ছিলেন মীর হাসান আলী, আর মা আবেদ রোকাইয়া খাতুন। মীর নিসার আলীর সমগ্র কোরআন কণ্ঠ ছিল। তিনি কিশোর বেলা থেকেই ধর্মবিমুখ মুসলমানদের ধর্মের দিকে ঘুরিয়ে আনার জন্য কোরআন হাদীস হতে উপদেশ দিতেন। অবশেষে যৌবনে তাঁর এ চেষ্টা ত্রিমুখী সংগ্রামের রূপ নেয়-একটি হচ্ছে, মুসলমানদের অধর্মীয় আচরণ থেকে বাঁচান, দ্বিতীয়টি হল শাসক ইংরেজের ইঙ্গিত পরিচালিত অত্যাচারী ও শোষক জমিদারের হাত থেকে শুধু মুসলমান নয় মিলিত হিন্দু-মুসলমান শোষিত প্রজাদের বাচান ও তৃতীয়টি হচ্ছে, সারা ভারত বর্ষকে ইংরেজের শাসন হতে মুক্ত করা।
এদিকে গুরু সৈয়দ আহমদ লড়াই করেছেন সীমান্ত প্রদেশে। আর এদিকে সৈয়দ নিসার আলী কাজ শুরু করেছেন অবিভক্ত বাংলায়। ইংরেজের বিরুদ্ধে তখন প্রকাশ্য জিহাদ ঘোষণা না করলেও যুদ্ধে প্রাণ দেয়ার জন্য প্রচুর নওজোয়ানকে তিনি দলে দলে পাঠিয়ে দিতেন সাথে প্রচুর টাকা পয়সা পাঠাবারও ব্যবস্থা করতেন। সৈয়দ নিসার আলীর একটা বড় সম্বল ছিল, তা হচ্ছে অগ্নিবর্ষক সৃজনশীল বক্তৃতা করার ক্ষমতা। নিসার আলী নিজেও একজন বিখ্যাত কুস্তিগীর ও ব্যায়ামবীরও ছিলেন। তিনি তার শিষ্যদের নিজেই সশ ট্রেনিং দিতেন। (দ্রঃ শহীদ তিতুমীর আবদুল গফুর সিদ্দিকী, পৃষ্ঠা ৩০-৪১)
নিসার আলী ইসলাম ধর্মকে যেমন ভালবাসতেন, তেমনি হিন্দুদের দুঃখ দুর্দশার কথাও চিন্তা করতেন এবং তাদের বিপদে নিজে যথাসাধ্য তাদের পাশে দাঁড়াতেন। তা সত্বেও ইংরেজদের অনুগত জমিদারগণ তার উপর রাগ করতেন এবং তার ধ্বংস কামনা করতেন। এ প্রসঙ্গে একটি মূল্যবান উদ্ধৃতির একাংশ তুলে ধরা হল-“নিসার (তি,) আপন ধর্মমত প্রচার করিতেছিল। সে ধর্মমত প্রচারে পীড়ন তাড়ন ছিলনা। লোকে তাহার বাগবিন্যাসে মুগ্ধ হইয়া, তাহার প্রচারে স্তম্ভিত হইয়া, তাহার মতকে সত্য ভাবিয়া, তাহাকে পরিত্রাতা মনে করিয়ায়, তাঁহার মতাবলম্বী হইয়াছিল এবং তাহার মন্ত্র গ্রহণ করিয়াছিল।
নিসার (তি.) প্রথমে শোণিতের বিনিময়ে প্রচার সিদ্ধি করিতে চাহে নাই। জমিদার কৃষ্ণদেব জরিমানার ব্যবস্থায় তাহার শান্ত প্রচারে হস্তক্ষেপ করিলেন।” (অধ্যাপক অমলেন্দু দে, ঐ, পৃষ্ঠা ১০১; বিহারীলাল সরকারের তিতুমীর বা নার. বেড়িয়ার লড়াই', কলিকাতা ১৩০৪ পৃষ্ঠা) ইংরেজের বল বলীয়ান বিখ্যাত জমিদার রামনারায়ণ বাবু (তারাগুনিয়া), কষ্ণদেব রায় (পুড়া), গৌরপ্রসাদ চৌধুরী (নগরপুর) প্রভৃতি প্রখ্যাত জমিদারগণ মিলিতভাবে নিসার সাহেবের আন্দোলনকে খতম করার জন্য প্রকাশ্যে প্রতিদ্বন্দিতা শুরু করেন। প্রত্যেক জমিদার তার এলাকায় পাঁচটি বিষয়ে আদেশ জারী করলেন : “(১) যাহারা নিসার আলীর (তি) শিষ্যত্ব গ্রহণ করিয়া অহাবী হইবে, দাড়ি রাখিবে, গোঁফ ছাটিবে, তাহাদের প্রত্যেককে ফি দাড়ির উপর আড়াই টাকা এবং ফি গোঁফের উপর পাঁচসিকা খাজনা দিতে হবে।
(২) মসজিদ প্রস্তুত করিলে প্রত্যেক কাচা মসজিদের জন্য পাঁচ শত টাকা ও প্রত্যেকে পাকা মসজিদের জন্য এক সহস্র টাকা জমিদার সরকারে নজর দিতে হইবে। (৩) পিতা-পিতামহ বা আত্মীয়-স্বজন সন্তানদের যে নাম রাখিবে, সে নাম পরিবর্তন করিয়া অহাবী মতে আরবী নাম রাখিলে প্রত্যেক নামের জন্য খারিজানা ফি পঞ্চাশ টাকা জমিদার সরকারে নজর দিতে হইবে। (৪) গো-হত্যা করিলে হত্যাকারীর দক্ষিণ হস্ত কাটিয়া দেয়া হবে, যেন সে ব্যক্তি আর গো-হত্যা করতে না পারে। (৫) যে ব্যক্তি সংগ্রামী (অ.) নিসারকে (তি.) নিজ বাড়ীতে স্থান দিবে তাহাকে তাহার ভিটা হইতে উচ্ছেদ করা হইবে।” (A. R. Mallik : British Policy and the Muslims in Bengal, p. 78-79; সিদ্দিকী প্রণীত শহীদ তিতুমীর', পৃষ্ঠা ৪৫-৪৯ এবং অমলেন্দু দে, ১০২-১০৩)
সৈয়দ নিসার আলীর যা প্রস্তুতি ছিল তাতে তিনি একটা হামলা করতে পারতেন। কিন্তু উদ্দেশ্য তাঁর হিন্দু-মুসলমানে লড়াই নয় বরং লড়াই হবে যৌথভাবে মুসলমান ও হিন্দুর সাথে ইংরেজের। এ নোটিশ জারি হবার পর তিনি পুঁড়ার জমিদারকে শাস্তির জন্য একটি পত্র দিয়েছিলেন। সে প্রত্রটির ঐতিহাসিক মূল্য অপরিসীম
“বঃ জনাব বাবু কৃষ্ণদেব রায় জমিদার মহাশয় সমীপে-পুড়ার জমিদার বাড়ী। মহাশয়। আমি আপনার প্রজা না হইলেও আপনার স্বদেশবাসী। আমি লোক পরস্পরায় জানিতে পারিলাম যে, আপনি আমার উপর অসন্তুষ্ট হইয়াছেন, আমাকে ‘অহাবী” বলিয়া আপনি মুসলমানদের নিকট হেয় করিবার চেষ্টা করিতেছেন। আপনি কেন এইরূপ করিতেছেন তাহা বুঝিতে পারা মুশকিল। আমি আপনার কোন ক্ষতি করি নাই। যদি কেহ আমার বিরুদ্ধে আপনার নিকট কোন মিথ্যা কথা বলিয়া আপনাকে উত্তেজিত করিয়া থাকে, তাহা হইলে আপনার উচিত ছিল সত্যের সন্ধান করিয়া হুকুম জারী করা। আমি দ্বীন ইসলাম জারী করিতেছি। মুসলমানদিগকে ইসলাম ধর্ম শিক্ষা দিতেছি। ইহাতে আপনার অসন্তোষের কি কারণ থাকিতে পারে? যাহার ধর্ম সেই বুঝে। আপনি ইসলাম ধর্মের উপর হস্তক্ষেপ করিবেন না। অহাবী ধর্ম নামে দুনিয়ার কোন ধর্ম নাই। আল্লাহ্র মনঃপূত ধর্মই ইসলাম। ইসলাম শব্দের অর্থ হইতেছে শান্তি। ইসলামী ধরনের নাম রাখা, দাড়ি রাখা, গোঁফ ছোট
করা, ঈদুল আজহার কোরবানী করা ও আকীকাতে কোরবানী করা মুসলমানদিগের উপর আল্লাহর ও আল্লাহর রাসূলের আদেশ। মসজিদ প্রস্তুত করিয়া আল্লাহর উপাসনা করাও আল্লাহর হুকুম। আপনি ইসলাম ধর্মের আদেশ, বিধি-নিষেধের উপর হস্তক্ষেপ করিবেন না। আমি আশা করি আপনি আপনার হুকুম প্রত্যাহার করিবেন। ফকতু - হাকির ও নাচিজ . সৈয়দ নিসার আলী ওরফে তিতুমীর।” (দ্রঃ অমলেন্দু দে, ঐ, ১০৩-১০৪; শহীদ তিতুমীর, পৃষ্ঠা ৫০-৫১) সৈয়দ নিসার আলী তার দাড়িওয়ালা, সৎসাহসী এবং নম্র শিষ্য মহঃ আমিনুল্লার হাতে পত্র দিয়ে পুড়ার জমিদার বাড়ী পাঠান। কৃষ্ণদেব পত্র পড়েই তাকে জমিদারী জেলে আটক করতে আদেশ দেন এবং সকলের সামনে বন্দী সিংহ মারার মত আমিনুল্লাকে বাঁধা অবস্থায় সীমাহীন প্রহার করান হয় ও অবশেষে হত্যা করা হয়। এ সংবাদ সৈয়দ নিসারের কাছে পৌছিলে তিনি অশ্রু সংবরণ করতে পারেননি এবং ব্যথিত হৃদয়ে বলেছিলেন, 'আমার আজাদী আন্দোলনের প্রথম শহীদ আমিনুল্লাহ।'
ওদিকে ইংরেজদের চক্রান্তে বড় বড় জমিদারদের একটি গোপন মিটিং হয় ‘লাটুবাবুর কলকাতার বাসভবনে। তাতে অংশ গ্রহণ করেন গোবরা-গোবিন্দপুরের জমিদার দেবনাথ রায়, যদুরআটীর দুর্গাচরণ চৌধুরী, পুড়ার কৃষ্ণদেব রায়, গোবরডাঙ্গার কালীপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়, নূরনগরের জমিদারের ম্যানেজার, টাকীর জমিদারের সদর নায়েব, রানাঘাটের জমিদারের ম্যানেজার, বাড়ির মালিক লাটুবাবু এবং বসিরহাট থানার ইংরেজের অনুগত পুলিশ অফিসার রামরাম চক্রবর্তীর, (শহীদ তিতুমীর, পৃষ্ঠা ৫১-৫৩)
সভায় সিদ্ধান্ত হয় যে, ইংরেজ পাদ্রী, ইংরেজ নীলকর ও সমস্ত জমিদারগণ জমিদার কৃষ্ণদেবকে সব রকমের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ও সাহায্য করবেন। অধ্যাপক অমলেন্দু দের মতে তারা প্রচারের মাধ্যমে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে সাম্প্রদায়িক ত্রাসের সৃষ্টি করেন।'
জমিদাররা উপর তলার ঘাটি মজবুত করে পুনরায় পূর্ব ঘোষিত নোটিশ অনুযায়ী মুসলমানদের নিকট কর আদায়ের অত্যাচার অভিযান শুরু করলেন। মুসলমানদের অনেকে জরিমানা দিল, আবার অনেকে গ্রাম ত্যাগ করল। বিপ্লবী নেতা কিন্তু তখনো মিলন-মৈত্রীর পথই খুঁজছিলেন। তিনি মোটেই চাচ্ছিলেননা, লড়াই হিন্দু-মুসলমানে হোক, বরং চাচ্ছিলেন লড়াই ইংরেজ-মুসলমানে হোক-হিন্দু জনসাধারণ অন্ততঃ নিরপেক্ষ থাকুক। কৃষ্ণদেবের জরিমানা আদায়ের অভিযান যখন সরফরাজপুরে আরম্ভ হল, তখন সৈয়দ নিসারের সমর্থকরা বাধা দিলেন কিন্তু তা টিকল না।
এরপর জমিদারের লাঠিওয়ালার মসজিদে এবং গ্রামে পাইকারীভাবে আগুন লাগিয়ে দিতে আরম্ভ করে। অনেকে আগুনে ও অস্ত্রে আহত হয়। অমলেন্দু দের মতে, এক সৈন্যবাহিনীসহ সরফরাজপুর গ্রাম আক্রমণ করেন। নিসার সাহেব এ অবস্থায়ও ধৈর্য ধরতে সক্ষম হন এবং কোর্টে মোকদ্দমা করেন। বারাসাত কোর্ট এত বড় নরহত্যা, মসজিদ পোড়ান আর গ্রামকে শশানে পরিণত করার কেস ডিসমিস করলে কলকাতায় আপীল করা হয়। ওখানেও কোন সুবিচার পাওয়া গেলনা দেখে সৈয়দ নিসার সাহেব ক্ষুদ্ধ হলেন এবং বুঝলেন, সুবিচার চাইলে অবিচারই প্রাপ্য। (দ্রঃ A.R. Mallick. p. 81)
অবশেষে মরি বা করি' ভেবে নারকেলবেড়িয়ায় বাঁশের একটি কেল্লা সাধ্যানুসারে তৈরি করা হল। মৈজুদ্দিনের বাড়িতে সৈয়দ নিসারের আরাম ও গোপন পরামর্শ করবার ব্যবস্থা করা হয়। তারপর তার সৈন্যাধ্যক্ষ মাসুম আলী ও শেখ মিসকিন সমস্ত সৈন্যদের একত্রিত করলে সৈয়দ সাহেব সকলকে বললেন, এমন পাঁচজন লোকের প্রয়োজন, যারা আজ
আজাদী আন্দোলনে প্রাণ দিতে প্রস্তুত। নারায়ে তাকবীর ধ্বনির উত্তরে আল্লাহু আকবর বলতে বলতে সহস্র সহস্র হাত জানাল প্রাণ দেবার সংগ্রামী প্রতিশ্রুতি। এবার আদেশ হল কৃষ্ণদেব বাবুর পুঁড়া গ্রাম আক্রমণ করার। সাথে সাথে সংগ্রামী আমিনুল্লা হত্যা, মসজিদ ও গ্রাম জ্বালান আর অন্যায় জরিমানা আদায়ের প্রতিশোধ নিতে গ্রামের মধ্যে প্রবেশ করল বিপ্লবীরা। জমিদারদের সেনাবাহিনী, নীলকর সাহেবদের কর্মচারি এবং পাদ্রীদের দলবল সকলে মিলে প্রতিরোধ করেও কিন্তু বিপ্লবীদের পরাস্ত করা সম্ভব হয়নি। প্রত্যেকেই অবাক হয় মাসুমের সামরিক কায়দায় সৈন্য পরিচালনা করা দেখে।
ইংরেজরাও কম স্তম্ভিত হয়নি। (দ্রঃ শহীদ তিতুমীর, পৃষ্ঠা ৬৬-৭৩; অমলেন্দু দে, ১০৬) এরপরে সৈয়দ নিসার সাহেব আরও ঘোষণা করলেন, আজ থেকে ইংরেজদের সাথে সর্বপ্রকার বিরোধিতা প্রকাশ্যে করতে হবে।' ওদিকে জমিদারবৃন্দ, থানা, ইংরেজ অফিসার, ইংরেজ নীলকরদের সুপারিশ এবং উপর মহলের পরামর্শের পরে ইংরেজ সরকার একদল অশ্বারোহী সৈন্য পাঠালেন মাসুমের সৈন্যদের শায়েস্তা করতে। কিন্তু সৈয়দ নিসার, মাসুম ও সিকিনের সৈন্য পরিচালনা পদ্ধতি ইংরেজদের চেয়েও উন্নত ধরণের ছিল বলে ইংরেজ সৈন্য পরাজিত হয় এবং অনেকে মৃত্যুবরণ করে।
ইংরেজ সৈন্যের পরাজয়ের সংবাদ কলকাতায় পৌছাবার পরেই এক সুদক্ষ সেনাপতির এ অধীনে একদল সৈন্য আর উচ্চ শ্রেণীর কামান পাঠান হল, নারকেলবেড়িয়ার কেল্লার পতনের উদ্দেশ্যে। এবারেও সৈয়দ নিসার, মাসুম আলী ও মিসকিন খাঁ বিপ্লবী সৈন্যদের ; বললেন-আমাদের কামান নেই, হয়ত মৃত্যু হতে পারে; যাদের ইচ্ছ যুদ্ধ থেকে বিরত হতে পার। কিন্তু এমন একটিও দুর্বল হৃদয় সেদিন পাওয়া গেল না, যে প্রাণ না দিতে কুণ্ঠিত। যুদ্ধ আরম্ভ হতেই হুঙ্কার ছেড়ে ইংরেজ সৈন্যদের আক্রমণ করল বিপ্লবী সৈন্য। ইংরেজ সৈন্য ছত্রভঙ্গ হবার উপক্রম, কিন্তু কালবিলম্ব না করে বিরাট কামান গর্জে উঠল। কামান পরিচালকে হত্যা করার জন্য সেনাপতি মাসুম বিদ্যুৎগতিতে লাফিয়ে গিয়ে কামানের উপরে দাঁড়ালেন।
কিন্তু তার কয়েক সেকেন্ড পূর্বেই কামান দাগা হয়ে গিয়েছিল। অজস্র বিপ্লবী সৈন্য ইংরেজের কামানের গোলায় ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে মৃত্যুর কোলে ছিটকে পড়ল। ওদিকে মাসুম তো একেবারে ইংরেজদের কোলে গিয়ে উপস্থিত। আর কয়েক সেকেন্ড আগে লাফ দিতে পারলে হয়ত কামান মাসুমের হাতেই এসে যেত। মাসুম বন্দী হলেন। কেল্লা ধ্বংস হল। ইংরেজের আদালতে মাসুমের বিচারে হল ফাঁসি। অপরাধ, তিনি স্বাধীনতা আন্দোলনের বীর। দেশের মাটিতে রাঙ্গা রক্ত ঢেলে দিলেন শ্রদ্ধেয় শহীদ মাসুম। সৈয়দ নিসার আলীও কামানের গোলায় শহীদ হলেন। আর জীবন্ত যাদের পাওয়া গেল, বিচারের নামে তাদের জাহাজ ভর্তি করে ভারত থেকে দূরে পাঠিয়ে দেয়া হল যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে, বাকী আহতদের হাসপাতালে দেওয়ার নামে নদীতে নিক্ষেপ করে তারা নিশ্চিন্ত হয়েছিল।
অবিভক্ত বঙ্গের বিপ্লবী বীরেরা সেদিন শহীদ হলেন ইংরেজ সৈন্য, দেশীয় দালাল ও পাদ্রীদের প্রত্যক্ষ আক্রমণে। এ ইতিহাস খ্যাত বীর শহীদ নিসার আলীর ইতিহাস যেভাবে মূল্যায়ন করা কর্তব্য সেভাবে কিন্তু আজো করা হয়নি প্রকৃত তথ্যের অভাবেই বোধহয় ইংরেজ সৃষ্ট ইতিহাসের ধারা প্রচলন চলছে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/492/46
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।