hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চেপে রাখা ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

২৮
সম্রাট আকবর
পিতা হুমায়ুনের মৃত্যুর সময় আকবরের বয়স ছিল মাত্র তের বছর। আর এ বয়সেই ১৫৫৬ খৃস্টাব্দের ১৪ই জানুয়ারি তার প্রধান সহায়ক বৈরাম খাঁ তাঁকে সিংহাসনে বসালেন। শুরুতে আকবরের নামে শাসনকার্য পরিচালিত হলেও সমস্ত কাজকর্ম ও দ্বায়দায়িত্ব বৈরাম খাকেই পালন করতে হত। পাঁচ বছর পরে আকবর বৈরামের অধীনতায় থাকা অসহ্যবোধ করলেন, তাই তার হাত থেকে সমস্ত দায়িত্ব নিজেই ছিনিয়ে নিয়ে তাকে জানিয়ে দিলেন, ‘আমি এখন উপযুক্ত, আপনি বরং হজ করতে যান।

এ আদেশ জারী হওয়াতে বৈরাম খাঁ নিজেকে অপমানিত বোধ করলেন এবং শেষে বিদ্রোহী রূপ নিলে সংঘর্ষ হয়। আকবর তাঁকে পরাজিত করলেন কিন্তু কারারুদ্ধ বা প্রাণদণ্ড না দিয়ে তাঁর হজ্বে যাওয়ার ব্যবস্থা করে দিলেন; যেহেতু তার থেকে তিনি বহুভাবে উপকৃত ছিলেন। হজ্ব থেকে ফিরে এসে বৈরাম খার ভূমিকা কি হত বলা যায় না, কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হজে যাওয়ার পথে গুজরাটে তিনি আততায়ী কর্তৃক নিহত হন। কেহ বলেন এটা গুণ্ডা কর্তৃক, আবার কারও ধারণা আকবরের অঙ্গুলি হেলনেই তার এ নিষ্ঠুর পরিণাম।

আকবর এখন বেশ বুঝতে পারলেন যে, এতবড় ভারত বর্ষ প্রভাব বিস্তার করতে হলে সংখ্যাগরিষ্ঠ হিন্দু জাতিকে হাতে রাখলেই কাজের সুবিধা হবে। তাই রাজপুত ও হিন্দু জাতিকে তাঁর দিকে আকর্ষিত করতে সচেষ্ট হলেন।

তিনি হিন্দুদের উপর থেকে জিজিয়া কর তুলে দিয়ে এবং তাদের বড় বড় পদে ভূষিত করলেন। রাজপূত বীর, মানসিংহকে অন্যতম সেনাপতি করলেন। রাজস্ব বিভাগ ছেড়ে দিলেন। এভাবে যখন অস্পৃশ্য মুসলমান (৫) আকবর এত সহজে হিন্দুদের প্রিয়পাত্র হলেন যে, কেহ আপন বোন, কেহ বা নিজের কন্যাকে সম্রাটের হেরেমে প্রবেশ করিয়ে দিতে কুণ্ঠিত হলেন না। অম্বর ও জয়সলমীরের হিন্দু রাজকুমারীদ্বয়কে রাজা ভগবানদাসের কন্যা এবং মাড়োয়ারের রাজা উদয় সিংহের কন্যার সাথে পুত্র সেলিমের বিয়ে দিলেন।

প্রায় সকলেই বশে এলেন ব্যতিক্রম শুধু মেবারের রাণা। বাধ্য হয়ে আকবর মেবার আক্রমণ করলেন। তখন মেবারের রাণা ছিলেন সংগ্রাম সিংহের পুত্র উদয় সিংহ। তিনি সেনাপতি জয়মল্লের হাতে রাজ্য রক্ষার ভার দিয়ে আরাবল্লী পর্বতে আশ্রয় নিলেন। জয়ম নিষ্ঠুর অকারণ আক্রমণের শিকার হয়ে আট হাজার সৈন্য নিয়ে প্রাণপণ যুদ্ধ করেও পরাজয় বরণ করলেন। অধঃপতিত চিতোর আকবরের দখলে এল বটে কিন্তু সমগ্র মেবার হাতে এল না।

উদয়সিংহ উদয়পুরে রাজধান স্থাপন করে রাজত্ব করতে লাগলেন। উদয়সিংহের মৃত্যুর পর প্রতাপসিংহ আকবরের সাথে মর্যদার যুদ্ধ করতে থাকেন। তিনি প্রতিজ্ঞা যতদিন না চিতোর পুনরুদ্ধার হয় ততদিন তিনি অত্যন্ত সাধারণ আহার করবেন এবং শয়ন করবেন শুধু তৃণশয্যায়। পরে হলদিঘাট নামক গিরি সঙ্কটে তুমুল যুদ্ধ হয় ১৫৭৬ খৃষ্টাব্দে। প্রতাপ পরাজিত হলেন আর মেবারের হল অনিবার্য পতন। প্রতিজ্ঞা পালনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রতাপ বনে জঙ্গলে ঘুরে বেড়াতে লাগলেন কিন্তু প্রিয়ী রাজধানী চিতোরকে তার জীবদ্দশায় আর উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

পূর্বে যে সমস্ত দেশ স্বাধীন হয়েছিল আকবর সে সব রাজ্য একের পর এক জয় করে চললেন। ১৫৭২ খৃষ্টাব্দে গুজরাট দখল করলেন। তখন সুলাইমান কারনানী ছিলেন বাংলার শাসনকর্তা। তিনি যুদ্ধের পথে পা না বাড়িয়ে সন্ধি করতে আগ্রহী হলেন। কিন্তু তার স্বাধীনচেতা পুত্র দাউদ বিদ্রোহী হয়ে বিহার আক্রমণ করলে আকবর সৈন্য সামন্ত পাঠিয়ে দাউদের স্বাধীনতার স্বাদ মিটিয়ে তাকে হত্যা করে নিশ্চিন্ত হয়ে বাংলা-উড়িষ্যা নিজের দখলে আনলেন। তারপর ১৫৮৬ খৃস্টাব্দে সিন্ধু দেশ জয় করে সমগ্র আর্যাবর্তের দণ্ডমুণ্ডের কর্তা হয়ে বসলেন।

এবার তিনি উত্তর ভারত ও দক্ষিণ ভারতের দিকেও দৃষ্টি নিবন্ধ করলেন। এ সময় বাহমনী রাজ্য ছোট ছোট অনেক ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছিল। আহমাদনগরের রাজার মৃত্যুর পর সেখানে অশান্তি ও বিদ্রোহের আগুন জ্বলে ওঠে। বিদ্রোহীরা আকবরের সাহায্য প্রার্থনা করলে ১৫৯৫ খৃষ্টাব্দে আকবর তার পুত্র মুরাদকে একদল সৈন্যসহ আহমাদনগরে পাঠালেন। আহমাদনগরের নাবালক রাজার অভিভাবিকা বিদূষী নারী বীরাঙ্গনা চাঁদ সুলতানা বিপুল বিক্রমে বাধা দিয়ে যুদ্ধ পরিচালনা করলেন।

মোঘল সৈন্যরা আহমাদনগর করায়ত্ত করতে না পারলে পর বছর আকবর স্বয়ং নারী এবং শিশুর বিরুদ্ধে বিপুল সৈন্য ও শক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়লেন। চাঁদ বিবি এবারেও প্রাণপণে যুদ্ধ চালনা করলেন। রসদ ও গুলি বারুদের স্বল্পতার জন্য শুধু বন্দুক এবং মামুলি অস্ত্র নিয়েই রুখে দাঁড়ালেন। কিন্তু আকবরের বীর গুপ্তচর পিছন থেকে সুলতানাকে হত্যা করার ফলে আহমাদনগরে নেমে এল পরাজয়। আহমাদনগরের একাংশ বাদশার হাতে এল। তারপর বাদশাহ খান্দেশ ও আসিরগড় দূর্গে আক্রমণ চালিয়ে বাকি অংশগুলোও দখল করলেন। এমনিভাবে আকবর বিশাল এক সাম্রাজ্যের সর্বেসর্বা রাজাধিরাজ বলে বিবেচিত হলেন।

আকবরের পিতা হুমায়ুনের উপর যখন বিপদের বিরাট বন্যা এসে পড়েছিল, সে সময় হুমায়ুনের এত বড় বন্ধু আর সুহৃদ কেহ ছিলেন না যিনি তার জন্য নিজের প্রাণ, সম্পত্তি ও সম্মান কিছুই দিতে কুণ্ঠাবোধ করেননি-তিনিই হচ্ছেন বৈরাম খাঁ। হুমায়ুন তার মৃত্যুর সময় পর্যন্ত সামান্য কিছু ভূখণ্ড ছাড়া হারিয়ে যাওয়া জায়গাগুলো পুনরুদ্ধার করতে পারেননি। এ সময় সিকিন্দার শূর এবং ইবরাহিম শূরের মধ্যে শক্তির খুব প্রতিদ্বন্দিতা চলছিল। কিন্তু আদিল শাহের এক হিন্দু মন্ত্রী হিমু তদানীন্তন সময়ে শক্তি সামর্থ ও জ্ঞান বুদ্ধিতে প্রধান ছিলেন। তিনি এত শক্তিশালী হয়ে পড়লেন যে, দিল্লি ও আগ্রা অধিকার করে বিক্রমাদিত্য নাম ধারণ করে দিল্লির সিংহাসনে আরোহণ করলেন। আবার আকবরের ভাই আবদুল হাকিমের অধীনে কাবুল, বঙ্গদেশ, মালব, গুজরাট, গণ্ডোয়ানা, উড়িষ্যা, কাশ্মীর, সিন্ধু, বেলুচিস্তান ও দাক্ষিণাত্য তখন স্বাধীন হয়ে পড়েছিল। রাজপুতগণও মোঘল আক্রমণের

প্রথম আঘাত সামলে নিয়ে শক্তিশালী হয়ে পশ্চিম উপকূলে নিজেদের প্রাধান্য বিস্তারে মেতে উঠল। এমনকি পারস্য সাগর ও আরব সাগরে তাদের প্রভুত্বের ফলে মক্কাশরীফগামী হজ্ব যাত্রীদের ভীষণ বিপদ ও বাধার সম্মুখীন হতে হত।

একে তো এতগুলো বিপদ তার উপর আকবর সিংহাসনে আরোহণ করেছেন বালক বয়সে। তখন বৈরাম খাঁ-ই আকবরকে নওজোয়ান বা প্রাপ্তবয়স্ক না হওয়া পর্যন্ত প্রতিষ্ঠিত করে রেখেছিলেন। আকবর যদিও বৈরাম খাঁকে লাঞ্ছিত ও পদচ্যুত করেছিলেন কিন্তু এ কথা সঠিক যে, রাষ্ট্র পরিচালনার ব্যাপারে তিনিই ছিলেন আকবরের গুরু, যদিও আকবর তা প্রকাশ্যে স্বীকার করতেন না। আধুনিক ঐতিহাসিকদের অনেকে এর ধারে কাছেই ঘেঁষেননি অথচ আসল ইতিহাসে যথেষ্ট এর প্রমাণ রয়েছে যে, আকবর যদিও বাদশাহ ছিলেন তবুও বৈরাম খা জানতেন-সে অবুঝ ও অপরিপক্ক। তাই বাদশার ব্যক্তিগত কাজেও তিনি বাধা দিতেন এবং কু-পদক্ষেপ নিলে তা থেকে বিরত রাখতেন অভিভাবকের মত। (দ্রষ্টব্য সেন্ট্রাল স্ট্রাকচার : ইবনে হাসান, পৃষ্ঠা ১২৩)

হুমায়ুন যখন সান্দাহার দখল করলেন তখন কৃতজ্ঞতার সাক্ষী স্বরূপ বৈরাম খাকে সেখানকার শাসনকর্তা নিযুক্ত করেছিলেন। তাছাড়া তাঁকে বড় একটা জায়গীরও প্রদান করেছিলেন এবং মৃত্যুর পূর্বে তিনি আকবরের অভিভাবক নির্ধারিত করেন এ বৈরাম খাকেই (খানই খানান)। আকবর পিতার কাছে শিখেছিলেন তিনি বাবার মত, তাই তাকে ডাকতেন ‘খান-ই বাবা' সম্বোধন করে।

এ বৈরাম খা অসম্মানিত আর পরাজিত হয়ে যে বহিস্কৃত হতে হবে গুণমুগ্ধ বন্ধু-বান্ধবদের সভা হতে, রাজা হতে এবং সব শেষে পৃথিবী হতে একথা ভাগ্যহারা বৈরাম খা কোনদিন কল্পনাও করেন নি; কল্পনা করেননি অতীত ইতিহাসের পাঠক। আকবরের জীবনের শুরুই কি তবে ষড়যন্ত্রের বেড়াজাল আর গোলক ধাধার পথে?

সহজলভ্য ইতিহাসে পাওয়া যায়, আকবর রাজপুতদের বিশেষতঃ বৈবাহিক সম্বন্ধ পাতিয়ে কাছিয়ে নিয়েছিলেন বা আয়ত্তে এনে বন্ধু জাতিতে পরিণত করেছিলেন। অপরদিকে হিন্দু প্রজাবর্গও তাঁকে দিল্লিশ্বর' উপাধিতে ভূষিত করেই ক্ষান্ত হননি, অনেকে আবার তাকে ‘জগদীশ্বর' উপাধি দিতেও কুণ্ঠিত হননি। দালাল মার্কা ইংরেজ ঐতিহাসিকরা প্রশংসা করতে গিয়ে অনেকে চরম মাত্রায় পৌছে গেছেন।

ইংরেজ ঐতিহাসিকরা আকবরের জন্য লিখেছেন, বৃটিশ যুগের ডালহৌসির সাম্রাজ্য প্রসার নীতির সাথে আকবরের তুলনা করলে মনে হয় যেন মোঘল বাদশা ভারতের আকাশে প্রখর সূর্যের মত দীপ্তমান আর ডালহৌসির ক্ষুদ্র তারকাটি তার পাশে পাশে মিটমিট করে জ্বলছে-"A strong and stout annexationist before whose sun the modest star of Lord Dalhousie pales." দেখতেও সুন্দর ছিলেন না, তার রং ছিল কাল তদুপরি আকবর ছিলেন খর্বাকৃতি। কিন্তু ইংরেজ প্রভুর (?) দেয়া সনদ হচ্ছে-"He looked every inch a king." অর্থাৎ পা থেকে মাথা পর্যন্ত প্রতি ইঞ্চিই আকবর রাজার মত।

আবার কোন কোন প্রভু (?) "He was great with the great, lowly with the lowly." 7.55 সাথে শক্তি প্রয়োগ আর নরমের সাথে তা ছিল তার বৈশিষ্ট্য। আবার কোন ঐতিহাসিক বলেছেন, তার চক্ষুর চাহনী ছিল সূর্যকরোজ্জ্বল সমুদ্রের মত- 'Vibrant like the sea In sunshine' ইত্যাদি। তিনি হিন্দু নারী বিবাহ করেছিলেন। সেখানে নিশ্চয় ইসলাম ধর্মে কোন বাধা নেই। কিন্তু শর্ত হচ্ছে নারীকে প্রথমে মুসলমান হতে হবে, তারপর ইসলাম অনুযায়ী বিয়ে হলে তা বৈধ হতে পারে। বিবাহ আর ব্যভিচারের পার্থক্য একটুকুই। কিন্তু আকবর তার হিন্দু

পত্নীদের রাজ অন্তপুরে হোমাগ্নি জ্বালিয়ে রাখার ব্যবস্থা করেছিলেন এবং যিনি যে ঠাকুরের পূজারিণী ছিলেন তার তেমনি ব্যবস্থা করা হয়েছিল। ফলে তাঁর স্ত্রী ও পুত্রদের মধ্যে তথা রাজবাড়িতে অনৈসলামিক কু-প্রথার প্রচলন হয়, যথা মদপান, ব্যভিচার, গীতবাদ্য প্রভৃতি। তার সন্তানগণ এত বেশি ব্যভিচার প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন যে, আকবরের জীবদ্দশাতেই তার দুই পুত্র মুরাদ ও দানিয়াল অত্যন্ত মদপানে মৃত্যুমুখে পতিত হন। জ্যেষ্ঠপুত্র সেলিম বা জাহাঙ্গীরও চরম মাতাল ছিলেন বলা যেতে পারে। মহামতি আকবরের পুত্রদের মধ্যে মদপান এত চরমে ওঠে যে মদে আর নেশা হত না বলে তারা মদের সাথে ভাং নামক উগ্র মাদক দ্রব্য মিশ্রিত করে পান করতেন।

যাহোক, ১৫৫৬ খৃস্টাব্দে পানিপথের দ্বিতীয় যুদ্ধে হিন্দু রাজা হিমুকে বৈরাম খার রণকীর্তির কারণে পরাজিত করা সম্ভব হয়। হিমু বন্দী হন এবং আকবরের শাসনের প্রারম্ভে আকবরের সামনেই তার মুণ্ডটি দেহচ্যুত করা হয়। আকবরকে মহামতির অভিনয় করতে হলে এ অশোভনীয় কাজটুকু দামাচাপা দেয়ার প্রয়োজন হয়ে পড়ে। আবার অন্যদিকে এত বড় এক নৃশংশ হত্যাকাণ্ডের ব্যাপার বাদ দেয়াও যায় না, তাই ভারতজনের ইতিহাসে লেখা হয়েছে-“বন্দী হিমুকে আকবরের কাছে ধরিয়া আনিয়া বৈরাম হত্যা করিতে বলিলে তিনি তাহা করেন নাই।

শেষে বৈরাম নিজেই তরবারি দিয়া হিমুর মুণ্ডুটি কাটিয়া ফেলেন।” লেখক এই ঘটনাটির প্রমাণ দেয়ার জন্যে কিছু ইতিহাস ও ঐতিহাসিকের নাম দিয়েছেন যারা এই ঘটনা সত্য বলে উল্লেখ করেছেন। যেমন আবুল ফজল, জাহাঙ্গীরের আত্মজীবনী ইত্যাদি। তবুও বাজারের ঐতিহাসিকদের প্রমাণ প্রয়োগ শান্তি না পেয়ে পরক্ষণেই লিখেছেন, “ভিসেন্ট স্মিথ কেন যে আকবরকে কিশোর বয়সেই এ নিষ্ঠুর হত্যার দায়ে দোষী করিয়াছেন তা রহস্যজনক মনে হয়। হিমুর পরাজয়ে মোঘল রাজশক্তির প্রতিষ্ঠা এবং আফগান শক্তির অবসান ঘোষিত হয়।" প্রথম পক্ষের উপরোক্ত প্রমাণের পরিপ্রেক্ষিতে মনে হয় দোষ যেন আকবরের নয়-বৈরাম খার। দ্বিতীয় পক্ষের বক্তব্য হচ্ছে-আকবরই হত্যাকারী কারণ কাউকে হত্যা করা সিংহাসন বা পালঙ্কে বসা সম্ভব নয়।

হত্যা করার নির্দিষ্ট স্থান প্রত্যেক রাজার থাকে, এখানেও তাই ছিল। আকবর তাঁকে (হিমুকে) হত্যা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন এবং হত্যাকাণ্ড তিনি চোখের সামনে দেখতে ইচ্ছুক ছিলেন শুধু হত্যা করার উদ্দেশ্য থাকলে বৈরাম খা তার আগেই কাজ সমাধা করতে পারতেন। হিমুকে বদ্ধ ভূমিতে আনার পর আকবরকে মনে করিয়ে দিলেন তার ইচ্ছার কথা। তারপর আকবরের অনুমতি ও আদেশেই তাকে হত্যা করা হয়। যিনি যখন নেতৃত্ব দেন সাধারণ নিয়মে হত্যাকাণ্ড তার দ্বারা, তার সঙ্গী বা কর্মী দ্বারা, তার আদেশ, সমর্থন বা মৌনতা প্রভৃতিতেই ঘটে। এক্ষেত্রেও তাই হয়েছে অর্থাৎ আকবরের আদেশ বা নির্দেশেই একজন রাজার এ রকম হত্যাকাণ্ড ঘটেছে।

এবার যারা আকবরের দোষ গৌণ এবং বৈরাম খাঁর দোষ মুখ্য বলেছেন তারা হলেন আবুল ফজল, জাহাঙ্গীর আর আবদুর রহিম প্রমুখ। কিন্তু মনে রাখতে হবে যারা ঐতিহাসিক তাঁরা নবী বা অবতার নন যে, তাদের সাধারণ মানবিকতা প্রত্যেক মুহূর্তে সজাগ থাকবে। কোন কোন ক্ষেত্রে তাদের লোভ, লালসা, ক্রোধ, অভিমানের কবলে পড়তে হয়; এক্ষেত্রেও কারণ তাই। যেহেতু আবদুর রহিম হচ্ছেন পিতার অবাধ্য সন্তান (পিতা পুত্রের কলহের প্রমাণ আছে), আর জাহাঙ্গীর হচ্ছেন আকবরের ঔরসজাত সন্তান-সে ক্ষেত্রে যা স্বাভাবিক তাই হয়েছে। এমনিভাবে আবুল ফজল ও আকবরের মধ্যেও এক গুরুত্বপূর্ণ সম্বন্ধ ছিল-গুরুর পুত্র। অতএব সেখানেও তাদের কিছু দুর্বলতাবোধ বোধহয় আশ্চর্যের ঘটনা নয়।

আকবরের মা ও বাবার স্বপ্ন ছিল, 'আমার ছেলের নাম ও রাজ্য বিস্তার যেন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে-যেমন মৃগনাভীর সুগন্ধ ছড়িয়ে যায়। আকবরের তাই ইচ্ছা ছিল, ছলে-বলে, কলে-কৌশলে, হত্যা, মিথ্যা শঠতা যেমন করেই হোক তাঁকে রাজ্য বিস্তার করতেই হবে। তাই তিনি বৈরাম খাঁকে বলেছিলেন, আপনি আমার ধর্ম বাবা, খান-ই-বাবা, সুতরাং যতক্ষণ মা আমি মজবুত হই আপনি যা ভাল হয় করুন।' হত্যার জন্য দায়ী বন্দুক না বন্দুকধারী সেটাই আজ সিদ্ধান্তের বিষয়। তখন আফগান শক্তি নির্মূল করতে হলে হিমুর ধ্বংসের এয়োজন ছিল। তাই হিমুর মৃত্যুর সাথে সাথেই দিল্লি ও আগ্রা আকবরের নিয়ন্ত্রণে এসে

অপরদিকে আদিল শাহও অন্যত্র নিহত হন। সিকেন্দার শূর আকবরের বশ্যতা স্বীকার করেন। ইবরাহিম শূরও বহু দিন ধরে ঘুরে ঘুরে শেষে উড়িষ্যায় নিহত হলেন। ১৫৫৮ হতে ১৫৬০ খৃষ্টাব্দের মধ্যে গোয়ালিয়র, আজমীর ও জৌনপুর আকবরের কবলে এসে যায়। এসবই বৈরামের বীরত্বের ফল আর আকবরের ভাগ্যের জোর বলতে হবে। অবশেষে ১৫৬১ খৃস্টাব্দে বৈরাম খাঁকে পদচ্যুত করে তার অপেক্ষা বহু গুণে সর্ব বিষয়ে অনভিজ্ঞ পীর মহম্মদ এবং আদম খাঁকে সেনাপতি নিযুক্ত করলেন। এটা ছিল বৈরাম খাঁর ব্যক্তিত্বে চরম আঘাত ও পরম বেইজ্জতি। তবুও একপক্ষের কাছে আকবর মহামতি।

বৈরাম খাঁর মৃত্যুর পর এক সময় আকবরের মা হামিদা ও ধাত্রীমাতা মহিম অনাগা আকবরকে অশ্রুত নয়নে বলেছিলেন, আকবর, বৈরাম আর নেই। তোমাকে সৎ পরামর্শ দিয়ে সঠিক পথ দেখাবে তেমন কেহ নেই। তাছাড়া তুমি নিজেও লেখা-পড়া জাননা। সুতরাং যখন ভাল মন্দ বুঝতে পারবে না আমাদের মতামত নেয়ার চেষ্টা করবে। কিন্তু আকবর নিজেকে প্রতিষ্ঠিত ও সর্বজ্ঞ বলে মনে করতেন। পরে তার প্রমাণ পাওয়া যাবে। তবে ছোট ছোট ব্যাপারে মাকে খুশি করবার জন্য মহামতি মায়ের মতামত নিতেন। তাও আবার বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই সেগুলো ছিল অরাজকীয় বিষয়।

নৃতন সেনাপতি আদম খাঁ ও পীর মহম্মদ ১৫৬১ খৃস্টাব্দে মালব জয় করেন। পরের বছর ১৬৬২ খৃষ্টাব্দে আকবর তার সেনাপতি আদম খাঁকে হত্যা করেন। যে আদম খাকে আকবর হত্যা করেছিলেন সে আদম খাঁ ছিলেন তাঁর ধাত্রীমাতা মহিম অনাগার পুত্র। পুত্রের শোকে বৃদ্ধা মাতা বাঁচতে পারলেন না, বুকফাটা শোকে দেহত্যাগ করলেন।

তারপর পীর মহম্মদকেও তিনি দিয়েছিলেন মৃত্যুদণ্ড। পরে আকবর তার একজন অন্যতম মামা খাজা মোয়াজেমকে মিথ্যা হত্যার অভিযোগে প্রাণদণ্ড দেন। নানা কারণে সারা মুসলমান সমাজ, আত্মীয় অনাত্মীয় প্রত্যেকেই অসন্তুষ্ট হয়ে উঠলেন। আকবর বুঝতে পারলেন একটা দল ভেঙ্গে গেছে। অতএব অন্য কূল আর ভাঙ্গতে দেয়া হবে না। যেমন করেই হোক অমুসলমানদের হাতে রাখতে হবে।

তার এ প্রস্তাবে রাজপুতরা অনেকে সাড়া দিলেন। সাড়া দেয়ার কারণ ঐতিহাসিকদের মতে প্রধানতঃ দুটি প্রথমতঃ পূর্ব থেকেই রাজপুতরা মুসলমানদের শক্তি ও প্রভাবে প্রভাবিত ছিলেন, দ্বিতীয়তঃ তারা এর মাধ্যমে শক্তি সঞ্চয়, আধিপত্য লাভ ও ভবিষ্যতে হিন্দু সাম্রাজ্যে স্থাপনের আশার আলো দেখতে পেয়েছিলেন। যাহোক, ১৫৬২ খৃষ্টাব্দে অম্বর রাজ্যের রাজা বিহারীমল্ল আকবরের আনুগত্য স্বীকার করেন এবং তাঁর কুমারী এক কন্যাকে দান করেন। সেলিম বা জাহাঙ্গীরের জন্ম এ কন্যার গর্ভেই হয়েছিল। সেলিম চিস্তি নামে এক মুসলমান সাধক দোয়া করেছিলেন বলে তারই নামানুসারে নাম রাখা হয়েছিল সেলিম'।

তারপর মানসিংহ আকবরকে তার আপন বোন দান করেন। আকবর নিজে বিয়ে না করে সেলিমের সাথে তার বিয়ে দেন। মানসিংহের বোন ছিলেন বিহারী ভগবান দাসের কন্যা। এ কন্যারই গর্ভজাত সন্তান খসরু। যোদপুরের রাজা উদয়ের কন্যাকেও গ্রহণ করেন

আকবর। বিকানীরের রাজা রায় সিংহও তাঁর কন্যা দান করলেন মহামতির হেরেমে। তাকে বিয়ে করলেন জাহাঙ্গীর। জয়সলমীরের রাজা আকবরের বশ্যতা স্বীকার করেছিলেন, শুধু বশ্যতাই নয়, সে সাথে দিতে বাধ্য হয়েছিলেন তার প্রিয়তমা কন্যাকেও। মোটকথা, মহামতির আসল ইতিহাস আমাদের মনে করিয়ে দেয় তার অসংখ্য স্ত্রী, অ-স্ত্রী আর পত্নী-উপপত্নীর কথা, যাঁদের দ্বারা মহামতির মহল সব সময়ই জমজমাট থাকত। কিন্তু যেহেতু এসব কীর্তি ইতিহাসে প্রকাশ করলে মহামতি' নামের সার্থকতা থাকে না, তাই এগুলো দৃষ্টির আড়ালেই চাপা ছিল এতদিন।

‘আকবরের বহু সংখ্যক উপপত্নী ছিল...'-এসব নুতন তথ্যের সন্ধান মুসলমান লিখিত ইতহাসে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। কিন্তু এক্ষেত্রে বিখ্যাত হিন্দু ঐতিহাসিক শ্রীরামপ্রসাদ গুপ্তের লেখা ‘মোঘল বংশ' পুস্তকের ১৭৮ পাতার মন্তব্য বিশেষ স্মরণযোগ্য-“উপপত্নীর সংখ্যা ছিল পাঁচ শতের বেশি।” পাঁচ শত নারীর ধর্ষক রাজা বরে ইতিহাসে যার উল্লেখ আছে যদি এটা সত্য হয় তাহলে তাকে আমরা মহামতি’ বললেও আগামীকালের ইতিহাস বলবে কি করে সেটাই চিন্তার কথা।

আমাদের ভারতের বিখ্যাত "Akndication of Aowrangzab" গ্রন্থের ১৩ পাতায় আরও সুস্পষ্ট প্রমাণ পাওয়া যাবে-"Akber had over five thousand wives." আকবরের পাঁচ হাজারেও বেশী স্ত্রী ছিল। যারা কন্যা দিয়েছিলেন তারা স্বেচ্ছাপ্রণোদিত হয়েই দিয়েছিলেন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে। ফলে তারা বাদশার অনুগ্রহে ধন্য হয়ে অর্থ, সম্পদ, সম্পত্তি ও সম্মান পেয়েছেন, আর রাজপুতদের হাতে এসেছিল রাজকীয় শক্তির মোটা একটা অংশ।

এক পক্ষ বলেন, আকবর ও রাজপুতদের উদারতার সাক্ষ্য হয় কন্যা প্রদানের ক্ষেত্রে। অপর পক্ষ বলেন, নারী লোলুপতা আর চরিত্রহীনতা প্রকাশ পেয়েছে মহামতির দিক থেকে, আর এ সমস্ত রাজপুতদের দিক থেকে প্রকাশ পেয়েছে নীচতা ও হীনতা। তারা আরো বলতে পারেন, পার্থিব উন্নতির জন্য যারা নিজেদের কন্যা ও বোনকে চরিত্রহীনের হাতে স্বেচ্ছায় অর্পণ করতে পারেন তারা নিঃসন্দেহে শুভ কর্ম করেননি।

তবে এ কথা সত্য ও স্বাভাবিক যে, প্রত্যেক রাজপুতই পাইকারি হারে এ পাপ পঙ্কিলে নিমজ্জিত হয়েছিলেন তা নয়। বরং বহু রাজপুত বীর তাঁদের বীরত্বের মহিমাকে অক্ষুন্ন রাখতে উল্টো নজির সৃষ্টি করেছেন। উদাহরণ স্বরূপ ১৫৬৪ খৃস্টাব্দে আকবর যখন মধ্য প্রদেশের গন্ডোয়ানা দখল করেন তখন সেখানকার বিধবা রাণী দুর্গাবতী যুদ্ধে পরাস্ত গন পরে তিনি আত্মহত্যা করেন, তবুও আকবরের হাতে পড়েন নি। মেবারের রাণা সংগ্রাম সিংহের পুত্র উদয় সিংহ আকবরের প্রস্তাব সত্বেও তাঁর কন্যাকে সমর্পণ করেননি, যার ফলে আকবর কর্তৃক চিতোর আক্রান্ত হয় ১৫৬৭ খৃস্টাব্দে।

উদয়-সিংহ পলায়ন করেন কিন্তু রাজপুত সৈন্যগণ জয়ম ও পুত্রের নেতৃত্বে যুদ্ধ করে। অবশেষে পুত্ত ও জয়মকে আকবরের হাতে নিষ্ঠুরভাবে নিহত হতে হয় বলে চিতোর আকবরের হাতে এসে যায়। যুদ্ধে পরাজিত রাজপুতদের প্রাণ দিতে হল মহামতি' আকবরের নিষ্ঠুর হাতের ইঙ্গিতে। আর নারীরা হালচাল বুঝতে পেরে ‘জহব্রত পালন অর্থাৎ আগুনের চিতার মত তৈরি করে তাতেই ঝাপ দিয়ে প্রাণ বিসর্জন করলেন। ১৫৭২ খৃষ্টাব্দে মৃত্যুর পর তার পুত্র প্রতাপ সিংহ পিতার স্থলাভিষিক্ত হলেন।

তিনি পিতার চেয়েও সাহসী ও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিলেন। ১৫৭৬ খৃষ্টাব্দে হলদিঘাটের যুদ্ধে আকবরের হাতে তিনি পরাজিত হলেন। তারপর বনে জঙ্গলে লুকিয়ে অর্ধাহারে অনাহারে কাটিয়ে বহু যুদ্ধ করে অনেক স্থান পুনরুদ্ধার করতে পেরেছিলেন কিন্তু তার সাধের চিতোর অধিকার করা আর সম্ভব হয় উঠ নি। প্রতাপের এই পরাজয় বিজয়েরই নামান্তর। তিনি বশ্যতা স্বীকার ও কন্যা দানের চিন্তাকে মুহুর্তের জন্যও মস্তিষ্কে আসতে দেননি।

প্রতাপের জন্য অনেকে গোঁড়া সংকীর্ণমনা হিন্দু বলে অভিযোগ করেন। কারণ একবার আকবরের শ্যালক ও সেনাপতি মানসিংহ প্রতাপের বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলেন। প্রতাপ মোটেই অতিথির আপ্যায়ন বা সম্মান প্রদর্শন কিছুই করেননি বরং অপমানের সুরে বলেছিলেন, যারা মুসলমানকে পিসি, বোন বা কন্যা দিয়েছে তাদের সাথে

আমার কোন সম্পর্ক নেই। মানসিংহর মান বিনষ্ট হওয়ায় তিনি বলেছিলেন, 'এর কেমন করে প্রতিশোধ নিতে হয় আপনাকে দেখাতে পারি জানেন? প্রত্যুত্তরে প্রতাপ বলেছিলেন, যাও, তোমার পিসেমশাই, ভগ্নিপতি, জামাইদা আকবরকে গিয়ে সব বল এবং তাকেও সাথে করে এনো।'মোটকথা, প্রতাপ এক সাথে খাদ্য গ্রহণ করেন নি এবং ঘণাভরে উঠে গিয়েছিলেন। (দ্রষ্টব্যঃ রাজপুত ও মারাঠাঃ রমেশচন্দ্র দত্ত, পৃষ্ঠা ১৬)

প্রতাপের এমন বীরত্ব আমাদের মতে মোটেই গোঁড়ামি নয় বরং একনিষ্ঠ বীরের বীরত্ব ও শ্রেষ্ঠত্বের উদাহরণ। তাকে গোঁড়া হিন্দু না বলে নিষ্ঠাবান বীর প্রতাপ সিংহ বলা উচিত।

তারপর বনে জঙ্গলে ঘুরতে ঘুরতে প্রতাপ সিংহকে হৃদয় বিদারক ঘটনার সম্মুখীন হতে হল। তার আদরের কন্যা ক্ষুধায় কাদতে কাদতে ছটফট করতে লাগল। তাছাড়া আরও পারিপার্শ্বিক কারণে তিনি আর ধৈর্য ধারণ করতে না পেরে আকবরকে এক লিখিত পত্রে জানালেন, তার কাছে তিনি আত্মসমর্পণ করতে সম্মত। পত্র পেয়ে খুশি হয়ে আকবর সভাসদকে ডেকে বললেন, প্রতাপের উপর অত্যাচার যাতে না হয় তার ব্যবস্থা করতে।

ঠিক এ সময় সভাসদগণের মধ্য থেকে জাহাঙ্গীরের শ্বশুর বিকানীরের রাজা রায় সিংহের কনিষ্ঠ সহোদর পথীরাজ মর্মাহত হয়ে এক পত্রে প্রতাপকে বললেন-“আমরা রাজপুতরা আকবরের অধীনতা স্বীকার করেও এবং তাকে কন্যা দিয়ে অধঃপতিত হলেও আপনার জন্য গর্ব করি। সম্রাট আকবরকে একদিন মরতেই হবে তখন আমাদের দেশে খাটি রাজপুতবীজ বপনের জন্য আমরা আপনার কাছেই উপস্থিত হবরাজপুত জাত আপনার মুখের দিকে চেয়ে আছে” পত্রটি যে একটি ঐতিহাসিক গবেষণামূলক দলিল এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। সে যা হোক, এ পত্র পাওয়ার সাথে সাথে প্রতাপ নূতন করে শক্তি ধারণ করলেন। রাজপুতগণ রাজপুত জাতির প্রতিষ্ঠার পরিপ্রেক্ষিতে প্রতীক্ষা করেছিলেন বীজ বপনের-কিন্তু কালের চক্রত পরিচালিত হয় বিশ্বনিয়ন্তার ইঙ্গিতেই।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন