মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
১৬২৭ খৃস্টাব্দ হতে ১৬৫৮ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত সম্রাট শাহজাহানের রাজত্বকাল। তখন বুন্দেলখণ্ডের আফগান সর্দার খানজাহান লোদী বিদ্রোহী হলে সম্রাট তাকে দমন করে তারপর ১৬৩২ খৃষ্টাব্দে আহমদনগর দখল করেন। বিজাপুর ও গোলকুণ্ডার সুলতানদের তিনি শান্তিপূর্ণভাবে সম্রাটের বশ্যতা স্বীকার করার জন্য আবেদন জানান। কিন্তু তারা যুদ্ধই পছন্দ করলে তখন সম্রাট একটি সৈন্যবাহিনী প্রেরণ করেন। অবস্থা অশুভ বুঝে বিজাপুরের সুলতান বছরে ২০ লাখ টাকা কর দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে সন্ধি করেন। এমনিভাবে ১৬৩৪ খৃস্টাব্দে বিজাপুরের আদিলশাহী ও গোলকুণ্ডার কুতুবশাহী সুলতানদ্বয়ের সাথে সন্ধি করে শাহজাহান নিজের আধিপত্য বিস্তার করেন।
এ সময় বঙ্গদেশে পর্তুগীজরা ঘাঁটি তৈরি করে বাণিজ্য ও অত্যাচারে বেশ উন্নতি করেছিল। তখন বাংলার সুবেদার ছিলেন কাসিম আলী খাঁ। সম্রাট শাহজাহানকে আদেশ দিলেন হুগলী অবরোধ করে পর্তুগীজদের যেন উপযুক্ত শিক্ষা দেয়। হয়। সম্রাটের আদেশে যুদ্ধ ঘোষিত হল। পর্তুগীজরা পরাজিত ও বহু নিহত হয় এবং অজস্র পর্তুগীজ বন্দী হয়ে আগ্রায় প্রেরিত হয়। শাহজাহানের চেহারা পোশাক-পরিচ্ছদ একজন পূর্ণ মুসলমানের মতই ছিল এবং জাহাঙ্গীরের ধর্মীয় ভাবান্তর ও ইসলামে আত্মসমর্পণের ছাড়া শাহজাহানের উপরও পড়েছিল। তিনি যদি মাতাল, ধর্মহীন, দাড়ি মুণ্ডিত আকবরের মত বা জাহাঙ্গীরের প্রথম অবস্থার সাথে নিজেকে মেলাতে পারতেন তাহলে প্রচলিত ইতিহাসে তাঁর বিরুদ্ধেও অভিযোগ (?) থাকত না।
বরং তিনি বহু সুনামের অধিকারী হতে পারতেন। শ্রীবিনয় ঘোষ খৃস্টান লেখক মিঃ ভিন্সেন্ট স্মিথ প্রভৃতি ঐতিহাসিকদের উদ্ধৃতি দিয়ে তার ইতিহাসে যা লিখেছেন তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ-“স্মিথ বলিয়াছে, এবং ঠিকই বলিয়াছেন যে, বাদশাহ শাহজাহানের ঐশ্বর্যবিলাস, স্থাপত্য প্রীতি, প্রাসাদ-দূর্গ, বিশেষ করিয়া তাজমহল নির্মাণ অনেককে অবাক করিয়া দিয়াছে। কিন্তু এই বিলাসিতার অন্তরালে অনেক নিষ্ঠুর অত্যাচার ও নৃশংস হত্যালীলার কদর্যতা লুকাইয়া আছে” (ভাঃ জঃ ইঃ ৪৩১ পৃঃ দ্রঃ)
কিন্তু দাড়িওয়ালা সম্রাটকে সুস্পষ্ট ভাষায় চরিত্রহীন না বললে সরল পাঠক সহজে বুঝবেন না সেজন্য আবার লেখা হয়েছে, “মমতাজের মৃত্যু হয় ১৬৩১ খৃষ্টাব্দে এবং তার পর জীবনের বাকি ৩৫ বছর শাহজাহান তাজমহলে সমাধিস্থ প্রিয় পত্নী মমতাজের ধ্যান করে কাটান নাই। স্মিথ বলিয়াছেন, during the remaining thirty five years of his life he disgraced himself by gross licentiousness.' বাকী ৩৫ বছর নির্বিচার উচ্ছৃঙ্খলতায় শাহজাহান নিজের জীবনকে কলুষিত করতে কুণ্ঠিত হন নাই।” এ ব্যাপারে আমাদের জেনে রাখা দরকার যে, মমতাজের মৃত্যু জনিত শোকে শাহজাহানের মস্তিষ্ক বিকৃতি দেখা দিয়েছিল এবং মমতাজের মৃত্যুর পর তিনি শুধু শোকে নয়, নানা শারীরিক ও মানসিক পীড়ায়ও পীড়িত ছিলেন। তাই দূরবর্তী শ্রেষ্ঠতম শাহজাদা আলমগীরের মূল্য নির্ধারণ করতে না পেরে নিকটবর্তী অপদার্থ দারাশেকোহকেই আশাতিরিক্ত স্নেহ ও সুযোগে সিক্ত করে তাকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন।
বস্তৃত আগ্রার তাজমহল, দিল্লীর লালকেল্লা, দেওয়ান-ই-খাস, দেওয়ান-ই-আম, মোতি মসজিদ, দিল্লীর জুমআ মসজিদ, ময়ূর সিংহাসন প্রভৃতি শাহজাহানের অক্ষয় কীর্তি; যার সাথে তার স্থাপত্যশিল্প প্রীতি ও ধর্মানুরাগী মনেরও পরিচয় বিজড়িত।
একবার শাহজাহান রাত্রে স্বপ্নে একটি মসজিদ দর্শন করলেন। ঘুম ভাঙ্গার পর তাঁর স্থপতিদের ডাকলেন এবং আদেশ দিলেন, আমার বর্ণনা অনুযায়ী আপনারা এ মসজিদের ছবি এঁকে আমায় দেখান।' সকলেই বহুরূপে বহুভাবে কল্পিত মসজিদের একটা করে ছবি আঁকলেন বটে, কিন্তু একটি ছবিও বাদশাহের মনের মত হল না। সে সময় মস্ত বড় এক সাধক বা দরবেশ খুব জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিলেন। অবশেষে তারই শরণাপন্ন হতে হল বাদশাহকে এ ছবির জন্য।
দরবেশ বাদশাহকে জানালেন, 'আমার অপেক্ষাও বড় দরবেশ যিনি আপনার রান্না করেন। বাদশাহ অবাক হয়ে দাড়িওয়ালা ছোট জামা পরা রাধুনিকে ডেকে ছবির কথা বলতেই তিনি বলেন, “আমার চেয়ে বড় বুজুর্গ যিনি আপনার পায়খানা পরিষ্কার করেন। বাদশাহ অবাক হয়ে মেথরকে ডেকে বলেন, আপনার মত মহান মানুষ নিজেকে গোপন রাখার এ কৃস্ট্র সাধনার উপর শ্রদ্ধা জানাচ্ছি আর ক্ষমা চাইছি আপনাকে এর আগে চিনতে না পারার জন্য।' মেথর ফকির তাঁর স্বপ্ন বৃত্তান্ত শুনে বলেন, “এটা মোফাত্তেশরা ইঞ্জিনিয়ার আঁকতে পারবে কেন? এটা যে বেহেস্তের মসজিদ।' মেথর ফকির একজন শিল্পীকে ডেকে আনালেন এবং নিজে একটি মসজিদের ছবি এঁকে তাঁকে দেখালেন।
বাদশাহ খুব অবাক হলেন যে, এ ছবি তার স্বপ্নে দেখা ছবির সাথে হুবহু সংগতিপূর্ণ। ফকির শেষ কথা বলেন, 'ভ্রাতঃ স্মরণ থাকে, যে ব্যক্তির কখনও নামায কাযা হয় নাই কেবল তিনিই এ মসজিদের প্রথম প্রস্তরখানি প্রোথিত করবেন' (দ্রঃ রাজমুকুট, পৃষ্ঠা ১৩,১৯২৩ খৃস্টাব্দে মুদ্রিত)
আরও কথিত আছে, এ ঘটনার পরের দিন হতে সে ফকিরকে আর লোকালয়ে দেখা যায়নি। দিল্লির জুমআ মসজিদ নির্মাণের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনায় সম্রাট বহু আলেম সুফী আমির ওমরাহদের বলেন, আমি এমন লোক দ্বারা মসজিদের প্রথম ইট বসাতে চাই যার বার বছর কোনদিন তাহাজ্জুদের নামায কাযা হয়নি। প্রতিদিন গভীর রাত্রে নিয়মিতভাবে এ নামায পড়া কঠিন কাজ; তাই নানা কারণে কেহ এগিয়ে আসলেন না। বাধ্য হয়ে বাদশাহ নিজেই প্রথম ইট বসালেন এবং কেঁদে ফেললেন, হে আল্লাহ আমি জানতাম না যে তুমি আমাকে এমনিভাবে প্রকাশ করে লজ্জিত করবে।
হে আল্লাহ তোমার শোকর (কৃতজ্ঞতা) যে আমার বার বছর তাহাজ্জুদ বাদ যায়নি। অনেকে প্রশ্ন করলেন, বাদশাহ দিল্লির শাহী মসজিদ এত উঁচু জায়গায় নির্মাণ করছেন কেন? উত্তরে সম্রাট বলেছিলেন, আমার মৃত্যুর পর আমার ছোট বড় প্রজারা যখন উচ্চ স্থানে স্থাপিত মসজিদে আল্লাহকে সিজদা করবেন আমি তখন আমার প্রজাবৃন্দের পায়ের নীচে, অনেক নীচে কবরে তাদের দোয়ার ভিক্ষুক হয়ে প্রতীক্ষায় থাকব।' দিল্লীর বুকে আজও সে মসজিদ মাথা উচু করে দাড়িয়ে আছে।
আজ আমাদের সূক্ষ্ম বিচারদণ্ড ও নিরপেক্ষ দৃষ্টিভঙ্গিতে গবেষণা করে দেখতে হবে যে, সারা ভারতের সর্বাধিনায়ক যে সম্রাট শাহজাহান বিশ্বের শ্রেষ্ঠ সুন্দরী মমতাজকে কাছে বা পাশে পেয়েও, আল্লাহর স্মরণে তার সমস্ত আকর্ষণ উপেক্ষা করেও তাহাজ্জ্বরে নামাযে নিমগ্ন হতে পারেন, তিনিই প্রকৃতপক্ষে উচ্ছল, না তারাই উচ্ছল যারা তার চরিত্রের উপর মিথ্যা কলঙ্কের কালিমা লেপন করতে দ্বিধা করেন নি?
শাহজাহানের শাসনকালে দু-একটি বিদ্রোহ ছাড়া শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হয়নি। B.P. Saksena Ta. "In Shahjahan's reign the Mughal Empire attained to the zenith of prosperity and aflluence." elle wr96sics রাজত্বকালে মোঘল সাম্রাজ্য সমৃদ্ধি এবং প্রাচুর্যের উচ্চ পর্যায়ে উন্নীত হয়েছিল। ডঃ ভি. স্মিথও বলেছিলেন-"Shahjahan's reign marks the climax of the Mughal dynasty and Empire."
শাহজাহান তাঁর পিতার অপেক্ষা রাষ্ট্রের শাসন পরিচালনায় অধিক সতর্ক ও যত্নবান ছিলেন' (দ্রঃ যদুনাথ সরকারের ট্র্যাডিজ ইন মুঘল ইন্ডিয়া, পৃষ্ঠা ১৫)
ফরাসী ঐতিহাসিক ও পর্যটক ভার্নিয়ের যা বলেছেন, তাও সবিশেষ উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, শাহজাহান “রাজা হিসেবে প্রজাদের শুধু শাসন করা নয়, পরিবার এবং সন্তানদের পিতার ন্যায় তিনি প্রজা শাসন করিতেন।"
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/492/26
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।