মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মীরজাফর ইংরেজদের সুপরিকল্পিত সিদ্ধান্তে বাংলার সিংহাসনে বসেন ইংরেজদের হাতে উপঢৌকনের নামান্তরে মোটা অঙ্কের অর্থপ্রদানের ফলে তার ধনাগার প্রায় শূন্য হয়ে পড়ে। অবশেষে অর্থ দিতে অপরাগ হলে তাকেও সিংহাসনচ্যুত করে তারই জামাতা মীরকাশিমকে সিংহাসনে বসান হয়। ইংরেজ যখন মীরজাফরের প্রয়োজনীয়তা বুঝেছিল তখন তার সাথে হাত মিলিয়েছিল। সিংহাসনে বসার পর সে হাত যখন শূন্য হল তখন তাকে অপ্রয়োজনীয় মনে করে পর্বান্তর ঘটাল।
মীরকাশিম বেশ বুঝতে পেরেছিলেন, ইংরেজরা গোটা ভারত বর্ষ দখল করতে চায়। তিনি এও বুঝেছিলেন যে, ইংরেজরা তাদের শক্তির দ্বারা এখুনি তাঁকে পরাজিত করে রাজা হয়ে বসতে সক্ষম। কিন্তু তারা এখনই তা করবে না। কেননা বাংলার জনতা, বিশেষ করে মুসলমানেরা বিদ্রোহী হয়ে উঠতে পারে আর সে বহ্নি সারা ভারতের বুকে ছড়িয়ে যেতে পারে; তখন তা মেলান হবে মুশকিল। অবশ্য এ নবাবী প্রহসন মাত্র। তাই মীরকাশিম করি অথবা মরি' নীতি অবলম্বন করে ইংরেজদের অত্যাগরের প্রতিবাদ করতে বদ্ধপরিকর হলেন।
ইংরেজরা চাষীদের উৎপাদিত শস্য, দরিদ্র দেশবাসীর দোকানের মাল যথেচ্ছ ভাবে নিয়ে দাম দিতনা। খুব অনুগ্রহ হলে সামান্য কিছু দিত মাত্র। এছাড়া ইংরেজরা বহুদিন ধরে যে বাণিজ্য কর দিয়ে আসছিল তাও হঠাৎ বন্ধ করে দেয়। এ সমস্ত কারবার দেখে ন্যায়দণ্ডের বিচারে মীরকাশিম তার হিন্দু-মুসলমান প্রজাদের জানিয়ে দিলেন যে তাদেরও আজ থেকে কোন কর দিতে হবেনা। কারণ আমার দেশবাসী কর দেবে আর শোষক ইংরেজ কর ফাঁকি দিয়ে ভারতে শিকড় গাড়বে, তা হয়না।
এ ঘোষণায় ক্রোধান্ধ হয়ে ইংরেজরা মীরকাশিমকে সিংহাসনচ্যুত করতে মনস্থ করলে তিনি বীর বিক্রমে সসৈন্যে ইংরেজদের বিরুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। পরস্পর যুদ্ধ চলতে থাকল। ইংরেজরা কাটোয়, গিরিয়া, উদয়নালা, মঙ্গের প্রভৃতি স্থানে মীরকাশিমকে পরাস্ত করে। উদয়নালার যুদ্ধই এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। এ যুদ্ধে মীরকাশিমের প্রচণ্ড প্রস্তুতি আর বিরাট সৈন্যবল ভারতে নতুন ইতিহাস সৃষ্টি করত সন্দেহ নেই। কিন্তু সেখানেও মীরকাশিমের বিশ্বস্ত (?) সেনাপতি মিঃ মসিয়ে জেনটিলের বিশ্বাসঘাতকতা এবং গুরগীন খাঁ-এর বেইমানি ইংরেজদের ভাগ্য সুপ্রসন্ন করতে সক্ষম হয়। বেঈমান জেনটিল সাহেবকে সে বাজারে প্রথমেই ৫০ হাজার টাকা দিয়ে বশ করা হয়েছিল।
তাকে ভার দেয়া হয়েছিল নবাব মীরকাশিমের বিশ্বস্ত লোকদের খৃস্টানদের পক্ষে করে নেয়ার। জেনটিল তা পেরেও ছিলেন। দ্রেঃ Long's Selections, p. 32-333) অসাম্প্রদায়িকতার বলিষ্ট মনোভাবে নবাব মীরকাশিম যোগ্যতা দেখতেন-জাতি, বংশ ও গোত্র নয়। আর তাই ইউরোপীয় ও আরমেনীয় খৃষ্টান সৈন্য উচ্চ পদেনিয়োগ করেই তিনি ঐতিহাসিক ভুল করেছিলেন। (দ্রঃ Broome এর লেখা Bengal Army. Vol. 1, p. 388: Rise of the Christian Power in India p. 158) বেইমান গুরগীন খানের নাম শুনে অনেকে ভুলক্রমে তাকে মুসলমান মনে করতে পারেন। কিন্তু খান উপাধি মুসলমানদের দেয়া, গুরগীন নামও তার ডাক নাম। তার আসল নাম ছিল মিঃ গ্রোগরী।
এরপর মীরকাশিম অযোধ্যার নবাব সুজাউদ্দৌলা এবং দিল্লীর সম্রাট বাহাদুর শাহের নিকট সাহায্য প্রার্থনা করলে তাঁরা সাথে সাথে যথাসাধ্য সৈন্য নিয়ে মীরকাশিমের পাশে এসে দাঁড়ালেন বক্সার নামক যুদ্ধক্ষেত্রে। তথাপি মীরকাশিমের ভাগ্যে পরাজয় নেমে আসে। অবশ্য ঐতিহাসিকদের মতে পলাশীর যুদ্ধ অপেক্ষা ভারতের ইতিহাসে এ যুদ্ধ অধিক গুরুত্বপূর্ণ। স্যার জি, স্টিফেনও বলেছেন, "Buxar deserves far more than Plassey to be connsidered as the origin of the British Power in India.
মীরকাশিমের শেষ জীবনের ইতিহাস অতীব দুঃখের। সে কাহিনীর মর্মান্তিক বর্ণনা আমাদের মুক্তি-সংগ্রাম পুস্তক থেকে উদ্ধৃত করে প্রসঙ্গের শেষ করতে চাইছি। “রোহিলাখণ্ডে না হোক, অন্য কোন স্থানে মীরকাশিম পরিজনবর্গ সহ আজীবন নির্বিঘ্নে বাস করিতে পারিতেন কিন্তু স্বদেশের মুক্তিস্পৃহা তাহাকে অনিশ্চয়তার পথে আবার ঠেলিয়া দেয়। পরিজনবর্গকে শেষ আসুর তত্ত্বাবধানে রাখিয়া তিনি রোহিলাখণ্ড ত্যাগ করিলেন। সুদীর্ঘ ১২ বৎসরকাল তিনি সমগ্র উত্তর ও মধ্য ভারতে ব্যাপক সফর কারিয়া হিন্দু ও মুসলমান রাজ-রাজড়াদিগকে ইংরেজদের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ করিবার অনেক চেষ্টা করিলেন, কিন্তু কেহ তাহার কথায় কর্ণপাত করিলেন না।
রাজা-মহারাজা এবং নওয়াব-সুবাদারদের ঘর হইতে বিমুখ হইয়া তিনি হিন্দু-মুসলমান জনসাধারণকে বিদেশীয়দের ক্ষমতা বৃদ্ধির দরুণ আশু বিপদের কথা বুঝাইতে লাগিলেন। রাজপুতানায় উষর মরুভূমির বক্ষে, সিন্ধুর বিজন প্রান্তরে, মধ্য ভারতের গভীর ঝাড় জঙ্গলে, উত্তর ভারতের গিরি গহ্বরে তিনি কত বিদ্রি রজনী যাপন করিলেন, হাটে-বাজারে, মন্দিরে-মসজিদে দেশের নামে, স্বাধীনতার নামে, ইসলামের নামে দেব-দেবীর নামে হিন্দু-মাসূলমানের কাছে কত আকুল আবেদন জানাইলেন, কিন্তু কাহারও অন্তরে সামান্য দাগ পর্যন্ত কাটিতে পারিলেন না।”
“অবশেষে রণশ্রান্ত বরি, দেশপ্রেমের মূর্ত প্রতীক মীরকাশিম দেশোদ্ধারের আশায় জলাঞ্জলী দিয়া মোঘলদের গোরস্থানে আশ্রয় লাভের জন্যই যেন দিল্লি গমন করিলেন। ১৭৭৭ সনের ৬ই জুন দিল্লির আজমীরি দরওয়াজার বাহিরে একটি মৃতদেহ অনাদরে পড়িয়া আছে দেখিয়া কিছু সংখ্যক লোক তথায় একত্রিত হয়। তাহার মাথার নীচে একটি গঠরী ছিল। পথচারীরা অনুমান করিয়া লইল, নিদ্রিত অবস্থায় হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধের ফলে লোকটির মৃত্যু ঘটিয়াছে।
গাঁঠরীটি ভোলা হইলে উহার মধ্য হইতে একখানি বহু পুরাতন অথচ অত্যন্ত মূলাবান্ কাশ্মিরী শাল বাহির হইয়া পড়ে। উহারই এক কোণে সোনালী অক্ষরে লেখা ছিলঃ নাসিরুলমুলক ইমতিয়াজউদ্দৌলা নসরতজঙ্গ মীরকাশিম আলি খান বাহাদুর। দিল্লিতেই তিনি সমাধিত হন। দিল্লি-আজমীর রেলওয়ে নির্মাণের সময় বিদেশী ইংরেজ কোম্পানীর হাতে তাহাব কবরটি ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।" (পৃষ্ঠা ৩১-৩২)
সবশেষে একটা মনে রাখার কথা যে, তার মৃত্যুর পূর্বে বিশ্বাসঘাতক, সাম্রাজ্যবাদীদের কয়েকজন বান্ধবের মৃত্যুর ব্যবস্থা তিনি করে গিয়েছিলেন। প্রতিভারঞ্জন মৈত্রবাবুর লেখা থেকে একটা ছোট্ট উদ্ধৃতি দিচ্ছি-“মুঙ্গের দুর্গের ওপর থেকে ছুঁড়ে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয়েছে মহতাপ চাঁদকে। রেহাই পায়নি মহারাজ স্বরূপচাদ। রেহাই পায়নি সপুত্র রাজা রাজবল্লভ, রায়রায়ান, উদিমরায় সহ একাধিক রাজা, জমিদার। ভাগ্যক্রমে বেঁছে গেছে একমাত্র মহারাজ কৃষ্ণচন্দ্র।” (দ্রঃ মুর্শিদাবাদের ইতিহাস, পৃষ্ঠা ৫৯)
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/492/38
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।