hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চেপে রাখা ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৬০
কাজী নজরুল ইসলাম
১৮৯৯ সনের ২৪শে মে জন্মগ্রহণ করেন এ বিখ্যাত কবি। পরলোকগমন করেন ১৯৭৬ সনের ২৯শে আগস্ট। খুব গরীব ছিলেন তিনি। অন্নের জ্বালায় তাকে বাল্য বয়সে রুটির দোকানে খেটে খেতে হয়েছে।' পরে মাত্র ১৭ বছর বয়সে তিনি সৈন্য বিভাগে যোগ দেন। আরো পরে তিনি হাবিলদারের পদ পান। ১৯২১ সনে তিনি কাজে ইস্তফা দিয়ে দেশে ফিরে আসেন। শুরু হয় তাঁর সাহিত্য সাধনা।

অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় পড়াশুনায় অকৃতকার্য হয়ে অনেকে পড়া ছেড়ে দেয়। কিন্তু নজরুল ১৯১৭ খৃষ্টাব্দে যখন রাণীগঞ্জে শিয়ারশোল স্কুলে দশম শ্রেণীতে পড়তেন তখন কিন্তু তিনি ক্লাসের প্রথম ছাত্র অর্থাৎ ফাষ্ট বয় ছিলেন। সুতরাং বোঝা যায়, তার পথ পরিবর্তনের কারণ একমাত্র দারিদ্রতা, অন্য কিছু নয়।

.

বাঙ্গালীরা যখন সৈন্য বিভাগে সহজে ঢুকতে পারত না, শুধু সাধারণ পুলিশ হতে পারত তখন খুব লেখালেখি করে ইংরেজ সরকারকে রাজী করান গেল যে বাঙালী ফৌজ গঠন করা হবে। তখন দেশের নেতারা বাঙালী যুবকদের সৈন্য বিভাগে নাম দিতে উৎসাহিত ও উদ্বুদ্ধ করেন। ঠিক সে সময় ১৯১৭-তে নজরুল ইসলাম দেশের ডাকে দশের স্বার্থে মিলিটারীতে নাম দেন। (দ্রঃ মুজফফর আহমদঃ কাজী নজরুল ইসলাম স্মৃতিকথা' পৃঃ ৯)

নজরুল প্রথমে আরবী ও ফার্সী ভাষায় বেশ কিছু অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন। ফলে তার ধর্মীয় ভাব বেশ গাঢ় ছিল। তার প্রথম কবিতায় ধর্মের ঘ্রাণ বেশ তীব্রভাবে অনুভূত হয়। তার জীবনের প্রথম কবিতা মুক্তি’ ১৯১৯ সালের জুলাই মাসে বঙ্গীয় মুসলমান' পত্রিকাতে প্রথম ছাপা হয়; যেটা একটা মুসলমান ফকীরের অলৌকিক কাহিনী নিয়ে রচিত। তার একটা অংশ হচ্ছে, “রক্তাক্ত সে চূর্ণ বক্ষে বন্ধ দুটি হাত-থুয়ে ফকির পড়ছে শুধু কোরআনের আয়াত।” দারিদ্রের তাড়নায় সৈন্য বিভাগে যাওয়ার পূর্বে রেলওয়ে গার্ড সাহেবের চাকর থাকাতেও তার আটকায়নি। দারিদ্রের দায়ে তাকে লেটোর দলের গান তৈরি করে সুর দেয়ার কাজও করতে হয়েছিল। (দ্রঃ এ. পৃঃ ১১)

তখন সন্ত্রাসবাদী দল যুগান্তর ও অনুশীলন দলের কর্মী হতে হলে নিয়ম ছিল-সেখানে গীতা হাতে করে ঠাকুরের সম্মুখে তরবারি নিয়ে পরিপূর্ণ হিন্দু পদ্ধতিতে দীক্ষা নিতে হত। দেশের স্বার্থে স্ব-ধর্মের বিশ্বাস ও বাঁধন ছিন্ন করেও নজরুল এ, ‘যাগান্তরে' নিজেকে যুক্ত করার জন্য এগিয়ে যান। কিন্তু তখনো তাঁর লেখা অমুসলমান সমাজে আশানুরূপ চিত্তাকর্ষক হয়নি। নদীয়ার শান্তিপুরের মোজাম্মেল হকের ‘মোসলেম ভারত' পত্রিকা ও কিছু মুসলমান পরিচালিত পত্রিকা নজরুলের গল্প, প্রবন্ধ ও কবিতা ছাপতে আরম্ভ করে।

'মোসলেম ভারতে নজরুলের তেরটি লেখা বেরিয়েছিল। নজরুল যতই তার ধর্মীয় উদারতা প্রদর্শন অথবা ধর্মের মস্তক মুণ্ডন করুন না কেন, সাম্প্রদায়িকতা তখন বেশ শিকড় গেড়ে বসেছিল ভারতের মাটিতে। সে সময়ের অবস্থা এমন ছিল-মুসলমানরা অনেকে হিন্দুদের সাথে মিশতে চাইতেন, কিন্তু সংখ্যাগরিষ্ঠ দল মুসলমানদের কেমন চোখে দেখত তার প্রমাণে ডক্টর শহীদুল্লার ভাষায়, “আমরা কয়েকজন (মুসলমান) বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সভ্য ছিলাম। সেখানে হিন্দু মুসলমান কোন ভেদ না থাকলেও আমরা বড় লোকের ঘরে গরীব আত্মীয়ের মতন তার সভায় যোগদান করতাম। আমাদের মনে হল বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের সাথে সম্বন্ধ বিলোপ না করেও আমাদের (মুসলমানদের) একটি নিজস্ব সাহিত্য সমিতি থাকা উচিত। এ উদ্দেশ্যে কলিকাতায় ৯নং আন্তনিবাগান লেনে মৌলবী আবদুর রহমান খানের বাড়ীতে ১৯১১ সনের ৪ঠা সেপ্টেম্বর এক সভা আহুত হয়।" (বাঙ্গালা সহিত্যের ইতিহাস, চতুর্থ খণ্ড, পৃঃ ২১৭)

নজরুল প্রবন্ধ গদ্য রচনা ও কবিতাই সৃষ্টি করেন নি, তিনি একজন বক্তাও ছিলেন। বহু সভায় তিনি ইংরেজ-বিরোধী বক্তৃতা করেছিলেন। তাঁর বিরোধী মনের পরিচয়ের জ্বলন্ত প্রমাণ তাঁর কবিতা। তাই তাকে আমরা বিদ্রোহী কবি' নাম দিয়ে কৃতার্থ করে দিয়েছি।

আমাদের ইতিহাসে স্বাধীনতা আন্দোলনের নায়ক তাঁরই যাঁরা জেল খেটেছেন, প্রাণ দিয়েছেন, যাদের বই পত্রিকা বা প্রেস বাজেয়াপ্ত হয়েছে প্রভৃতি। এঁদের মধ্যে বঙ্কিম, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, নবীন সেন, ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রবীন্দ্রনাথ, আশুতোষ মুখোপাধ্যায় প্রভৃতি বুদ্ধিজীবীদের নাম না থাকলেও গান্ধীজী, জহরলাল, প্যাটেল প্রভৃতির নাম উল্লেখ করা যায়। কারণ তারা যে কারাবরণ করেছিলেন তাতে সন্দেহ নেই। কিন্তু কবি নজরুল শুধু শুকনো কবি নন, তার একদিকে ছিল দারিদ্র্য অন্যদিকে সাম্প্রদায়িকতার বাধা। তাও তিনি তার প্রচণ্ড ক্ষমতা থাকা সত্বেও তার লেখায় হিন্দু মানসে আঘাত না দিয়েই শুধু লিখে গেছেন তাই নয় বরং সাম্প্রদায়িকতার ঊর্ধ্বে উঠেই তিনি কলম ধরেছেন। দেশের একথা এবং ইংরেজ বিতাড়নে তিনি স্বধর্মের বিরোধিতা করতে কুণ্ঠাবোধ করেননি। কোরআন, হাদীস ও আলেম সমাজকেও আঘাত দিয়েছেন অনেক ক্ষেত্রে। তবুও আশানুরূপ সমর্থন তিনি পাননি।

মোহিতলালের শনিবারের চিঠি' পত্রিকায় তাঁর বিরুদ্ধে নানা ব্যঙ্গ বিদ্রুপ করে লেখা আরম্ভ হয়। তবু কবি আঘাতের পরিবর্তে পাল্টা আঘাত না দিয়ে আরও নমনীয় হলেন। সংখ্যাগুরু সম্প্রদায়কে মুগ্ধ করতে তাঁর কবিতা বের হতে লাগল, যা শুধু ঠাকুর দেবতার কথা, রামায়ণ মহাভারতের কথা, প্রাচীন মুনি ঋষিদের কথায় ঠাসা সম্ভার ছিল। এবার যেন তার উপর অনেকের দৃষ্টি পড়ল। তবুও তা যথেষ্ট নয় বলে তিনি মনে করলেন। তাই নার্গিসের সাথে তার বিবাহ বাতিল হওয়ার পর তিনি শ্রীযুক্তা গিরিবালা দেবীর কন্যা প্রমীলাকে বিয়ে করলেন। তাতে একদল হিন্দু খুশী হলেন বটে, কিন্তু আর একদল অসন্তুষ্ট হলেন এজন্য যে, হিন্দুর মেয়ে মুসলমানদের হাতে চলে গেল।

কমপক্ষে একজন হিন্দু কমে গেল এবং গর্ভজাত সন্তানরা আসবে মুসলমান হয়ে। কবি আরো নমনীয় হয়ে আরো নেমে এলেন পূর্ব-পুরুষের ধর্মীয় গণ্ডির সীমা থেকে। নামায রোযা তো আড়াল করে দিলেনই উপরন্তু তার পুত্রদের হিন্দু কায়দায় নাম রাখলেন। যেমন ছেলেদের নাম রাখলেন সব্যসাচী, অনিরুদ্ধ, বুলবুল প্রভৃতি। তাছাড়া ছেলেদের জন্য এমন পরিবেশ তিনি গড়লেন যাতে তাঁর পুত্রেরা কল্পনা করতে পারতেন না যে তারা মুসলমান পাত্রীকে বিয়ে করবেন। আর হলও তাই। তার ছেলে পুরোপুরি হিন্দু কায়দায় বড় হলেন, হিন্দু মেয়ে বিয়ে করলেন এবং তারাও তাদের ছেলেমেয়েদের নাম হিন্দু পদ্ধতিতেই রাখলেন। ফলে এতদিনে প্রমাণিত হল যে, তিনি মুসলমান সমাজ হতে নিজেকে বের করতে চান। এর পরেও নজরুল আরো দেবতাভক্ত হলেন কালী দেবীর নামে অনেক শ্যামাসঙ্গীত সৃষ্টি করলেন, তাতে সুর লাগালেন, নিজে তা ভাবাবেগের সাথে গেয়ে ও শোনালেন। অনেকে তাকে তাদের মত মনে করেন বরণ করলেও কিছু কঠিন হৃদয়ে এ কথা মনে হয়েছিল যে, লেখা আর কাজ এক নয়।

তাই নজরুল আরও নেমে এলেন-কালী সাধনায় নিমগ্ন হওয়ার দৃষ্টান্ত স্থাপন করলেন। তারপর কবি বাকহীন ও পঙ্গু হয়ে গেলেন। এবার ভক্তিমাল্য ঝরতে লাগলো জ্ঞানবিলুপ্ত কবির উপর। আজ কবির পুত্র, পৌত্র ও কন্যাদের হিসেবের অঙ্ক বড় জটিল হয়ে পড়েছেন তাদের মুসলমানত্বের কোন মর্যাদা আছে, না তারা পরিপূর্ণ হিন্দু হতে পেরেছেন। মোটকথা, ঠিক বেঠিক যাই হোক, নজরুল হিন্দু মানসে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সব কিছু ত্যাগ করেছিলেন। জীবিতাবস্থায় রামমোহন, বিদ্যাসাগর. বঙ্কিমের মত ধনী হতে পারেননি। সারা জীবন শুধু ঋণ করে গেছেন আর বুকের বেদনা ভুলতে মদ পান করেছেন। গান গেয়ে হাসির আবরণে সুপ্ত কান্নার মিনার গড়েছেন। নিজের বংশ ধ্বংস হওয়ার দিকে দৃষ্টি দিতে ফুরসত পাননি।

তাঁর জন্ম হয়েছিল পুরোপুরি মুসলিম পরিবেশে, মুসলিম বাবা-মা'র সন্ধিক্ষণে। আর মৃত্যুর পর মুসলিম পদ্ধতিতে তার ও তার স্ত্রীর কবরও রচনা হয়েছিল-এটা কবির দুর্ভাগ্য না সৌভাগ্য তা নিয়ে বিতর্কের অবকাশ থেকে গেল। নজরুল ইংরেজের রুক্ষ রোষে জেলে গেলেন, প্রহারের পুরস্কার পেলেন, জেলের অবিচার ও অনাচারের বিরুদ্ধে অনশন করলেন, কত লুকিয়ে বেড়ালেন, তবু তো তিনি কাপুরুষের মত ইংরেজের সাথে হাত মেলাননি। তার অগ্নিবর্ষক কলমে লিখে চললেন কবিতা, প্রবন্ধ ও গল্প। অবশ্য গল্প ও প্রবন্ধের চেয়ে তিনি কবিতাতেই বেশি সুখ্যাতি বা বিখ্যাত।

নজরুলের বিখ্যাত বই ভাঙ্গার গান’ ইংরেজের দরবারে কুখ্যাত বলে বিবেচিত হওয়ায় বাজেয়াপ্ত হয় ১৯৩১ খৃষ্টাব্দে। অনেক সুপুরুষকে দেখা গেছে, তার বই বা লেখা বাজেয়াপ্ত হওয়ার পর তিনি ভীত হয়ে পড়েন অথবা, কোন দুর্বলতায় কলমের গতির পরিবর্তন করেন। কিন্তু নজরুল এ অভিযোগ থেকে বিমুক্ত। যেহেতু তার ‘যোগবাণী' বইও বাজেয়াপ্ত হয় এ বছরেই। তবুও তিনি থামলেন না। তাঁর 'চন্দ্রবিন্দু' ‘বিষের বাঁশিও বাজেয়াপ্ত হল।

বঙ্কিমের গুরু ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্তের হাতে অনেক পত্রিকা ছিল-সেগুলো শুধু মুসলমানদের বিরুদ্ধে ও ইংরেজদের স্বপক্ষে গর্জে উঠেছিল কি না সে আলোচনা পূর্বে করা হয়েছে। তেমনি নজরুলের অঙ্গুলি হেলনে তখন সে পত্রিকাগুলো চলত সেগুলো হচ্ছে নবযুগ, ধূমকেতু, লাঙ্গল প্রভৃতি। এগুলোর পিছনে ছিল তার সম্পাদনা ও প্রচেষ্টা। এ প্রত্যেকটি পত্রিকা অত্যাচারী সরকার নিষ্ঠুর হাতে বাজেয়াপ্ত করেছিল। তাছাড়া তাঁর ‘অগ্নিবীণা' বইটিও সরকার বরদাস্ত করতে পারেনি।

ইংরেজের আমল থেকে নিয়ে তাদের চলে যাবার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত প্রায় চারশো বই ও পত্র পত্রিকা বাজেয়াপ্ত হয়েছে। শুধু ১৯২০-১৯৩৪ পর্যন্ত ১৭৪টি বাংলা বই নিষিদ্ধ হয়েছে। ১৯৩৪ সালের পরও ১৯৩৭-১৯৪৭ সাল পর্যন্ত একশোরও বেশি বই বাজেয়াপ্ত হয়েছে। কোন্ কোন্ মুসলমান ও হিন্দু মনীষীর বাংলা-অবাংলা বই ভারতের ইংরেজ সরকার বাজেয়াপ্ত করেছিল তার মোটামুটি আলোচনা আমার লেখা বাজেয়াপ্ত ইতিহাসে করেছি।

যারা ইংরেজের কাছ থেকে তাদের লেখনীর জন্য পুরস্কার, প্রচুর উপাধি, ধনী ও মানী হওয়ার সুযোগ পেলেন এবং ইতিহাসে তারা অনেকে স্বাধীনতার নায়ক বলে ‘হিরো’ হয়ে পড়লেন, সেখানে তুলনামূলকভাবে নজরুল ইসরামকে উচ্চাসনে বসান তো দূরের কথা সেই তথাকথিত ‘হিরো’দের পদপ্রান্তেও তার স্থান কতটুকু হয়েছে তার হিসেব করার অবকাশ আছে।

এবারে নজরুলের লেখনীর কিছু নমুনা দিচ্ছি মাত্র। হিন্দু-মুসলমানের উদ্দেশ্যে তিনি লিখলেন?

“ঘর সামলে নে এই বেলা তোরা ওরে ও হিন্দু-মুসলেমনি!

আল্লা ও হরি পালিয়ে যাবে না, সুযোগ পালালে মেলা কঠিন।

ধর্ম কলহ রাখ দুদিন।

নখ ও দত্ত থাকুক বাঁচিয়া, গণ্ডুষ ফের করিবি কাচিয়া

আসিবে না ফিরে এই সুদিন।

বদনা গাড়তে কেন ঠোকাঠুকি কাছা কোচা টেনে শক্তি ক্ষীণ

সিংহ যখন পঙ্কলীন।”

তিনি হিন্দুধর্ম ও ইসলাম ধর্মের বিরুদ্ধে বিদ্রুপ করে লিখে বোঝাতে চাইলেন হিন্দু-মুসলমান মিলেমিশে একাকার হওয়া উচিত। তাই পুরোহিত ও উলামা গোষ্ঠীকে সমানভাবে আঘাত দিয়ে তিনি লিখলেনঃ “হিন্দুত্ব ও মুসলমানত্ব দুই সওয়া যায়, কিন্তু তাদের টিকিত্ব ও দাড়ি অসহ্য, কেননা এ দুটোই মারামারি বাধায়। টিকিত্ব হিন্দুত্ব নয়, ওটা হয়ত পণ্ডি! তেমনি দাড়িত্ব ইসলাম নয়, ওটা মোল্লা। এই দুই ত্ব' মার্কা চুলের গোছা নিয়েই আজ এত চুলোচুলি! আজ য়ে মারামারিটা বেঁধেছে সেটাও এই পণ্ডিত-মোল্লার মারামারি। হিন্দু-মুসলমানে মারামারি নয়।”

তিনি কালী-ভক্তদের খুশী করতে কালীকীর্তন লিখলেনঃ

আমার কাল মায়ের পায়ের নীচে দেখে যা আলোর নাচন

মায়ের রূপ দেখে দেয় বুক পেতে শিব যার হাতে মরণ বাচন।

আমার কাল মেয়ের আঁধার কোলে শিশু রবি শশী দোলে

মায়ের একটুখানি রূপের ঝলক ঐ স্নিগ্ধ বিরাট নীল গগন।”

তার কলমে তিনি আরও লিখলেন-

“মসজিদ আর মন্দির ঐ শয়তানের মন্ত্রণাগার।

রে অগ্রদূত ডাঙ্গতে এবার আসছে কি জাঠ কালা পাহাড়।”

এটা ঠিক নজরুলের ইতিহাস লেখা হচ্ছে না। নজরুলের মৃত্যুর পরও তার মূল্যায়ন এখনো যে বাকী আছে শুধু এই ইঙ্গিত দিয়ে তার দায়িত্ব নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বিচারকমণ্ডলীর হাতেই ছেড়ে দেয়া হল।

নজরুল ‘ধূমকেতু' কাগজে ১৯২২ খৃষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ভারতের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী জানান। বাংলাদেশে নজরুলই প্রথম কবি যিনি সর্বপ্রথম পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী তুলে ধরেন (বাঙালী বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ : ডঃ অমলেন্দু দে, পৃঃ ৩০৩)

অথচ আমাদের স্বাধীনতার ইতিহাসের দামী ও নামী নেতাদের অনেকের বুলি ছিল-শুধু স্বরাজ চাই। তাদের ‘স্বরাজ' ও নজরুলের স্বাধীনতায় যে কত গভীর পার্থক্য তা পরবর্তী আলোচনায় পরিষ্কার হবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন