hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

চেপে রাখা ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৩৭
সিরাজের হত্যাকাহিনী
পলাশী যুদ্ধের পর রাজমহলে ধৃত হবার ফলে সিরাজ যখন বন্দী ছিলেন তখন তার কক্ষে মহম্মদী বেগ উলঙ্গ তরবারি হাতে প্রবেশ করতেই সিরাজ অনুমান করেছিলেন তার মৃত্যু সংবাদ আগত। তখন সিরাজ কাতর কণ্ঠে বলেন-“মহম্মদী বেগ, তুমি আমায় কতল করতে এসেছ?' মহম্মদী বেগ নিশ্চুপ। নবাবের মুখের দিকে তাকাতেও যেন সে অপরাগ। আবার রুদ্ধ প্রায় কণ্ঠে নবাব বলেন-“আমাকে কি তোমরা সামান্য একটা অসহায় গরীবের মত বেঁচে থাকতেও দেবে না?'

এবার মহম্মদী বেগ গলাটা সামান্য পরিষ্কার করে বলল-না, তারা তা দেবে না।' নবাব যেহেতু বছর দেড়েক আগে ভুলক্রমে হুসেনকুলি খাঁকে প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করেছিলেন, তাই বলেন, আমিও বাঁচতে চাইনা, হুসেন কুলির মৃত্যুর প্রতিশোধ হোক।' বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা তথা সারা ভারতের দেদীপ্যমান আলোকবর্তিকা নবাব সিরাজউদ্দৌলা তার কোটি কোটি দেশবাসীর চোখের আড়াতে অশ্রু মুছে কাদোকাদো কন্ঠে আবার বলেন-'আমাকে একটি বার সুযোগ দাও আল্লাহর সন্নিধ্যানে যাবার পূর্বে শেষ দুই রাকাত নামায পড়ে নিই।' মহম্মদী বেগের চক্ষুদ্বয় তখন বর্ষণোন্মুখ। উত্তর দিতে পারেনা। নবাব বুঝলেন, মৌনতা সম্মতির সমার্থক। তাই জীবনের অন্তিম প্রার্থনাময় নামাযে আত্মনিয়োগ করলেন। নামায তখনও শেষ হয়নি, দূরে বাঁশির সংকেত শুনে মহম্মদী বেগ প্রর্থনারত অবস্থাতেই তরবারি চালনা করল নবাবের পিঠের উপর। লুটিয়ে পড়লেন নবাব।

অতপর আরও কয়েকটি আঘাত করল মহম্মদী বেগ। সিরাজ শুধু একবার বলেছিলেন, আল্লাহ তুমি আমায় ক্ষমা কর। তারপর রক্তাক্ত সিরাজ শুধু আল্লাহু আল্লাহু' শব্দ করতে করতে চিরবিদায় নিলেন। [অক্ষয় কুমার মৈত্রের সিরাজুদ্দৌলা ও পুরানা কলকাতার কথাচিত্র, পৃষ্ঠা ৩৯৩)

এ ঘটনায় অনেকে মুসলমান ভৃত্য কত বিশ্বাসঘাতক ও নিষ্ঠুর হতে পারে তারই শিক্ষা পাবেন। কিন্তু সূক্ষ্ম ও সুস্থ জ্ঞানীর নিকট ধরা পড়বে আসল রহস্য। ইংরেজরা যখন সিরাজকে বন্দী করেছিল তখন সিরাজের সমস্ত চাকর-চাকরানী আর সিরাজের ছিল না, বরং তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই ক্লাইভ আর ওয়াটসের হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় ইতিহাসে মুসলিম চরিত্রকে কলঙ্কিত করার পরিকল্পিত বুদ্ধিতেই মীরনকে দিয়ে সিরাজের সাহায্যপুষ্ট মহম্মদী বেগকে আদেশ করা হয়েছিল।

সিরাজকে হত্যা করতে। মহম্মদী বেগ তাতে রাজী না হলে তার ও তার স্ত্রী-পুত্রের প্রাণদণ্ড হবে বলে ভয় দেখান হয়েছিল। তখন অনন্যোপায় নিরক্ষর বোকা মহম্মদী বেগ অশ্রু সম্বরণ করে মনে ইচ্ছার বিরদ্ধেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই নবাবকে হত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল। যদি মহম্মদ বেগ শিক্ষিত ও প্রকৃত জ্ঞানী হত তাহলে ইংরেজদের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে নিজের প্রাণদণ্ডকেই শ্রেষ্ঠ মনে করে মীরমদন আর মোহনলালের মত ‘ধন্য হতে পারত। সিরাজ যখন অসহায়ের মত একটু বেঁচে থাকার আবেদন করেছিলেন তখন মহম্মদী বেগ এ কথা বলেনি, যে, না আমরা তা দেবনা। বরং তার ভাষাতে একদিকে ভালবাসা ও অপরদিকে অসহায়তার কথাই ফুটে উঠেছিল বলেছিল, না, তারা তা দেবেনা।' এসব লোক কারা? তারা কি ইংরেজ তাদের দালালরা নয়?

সিরাজকে হত্যা করে তার মৃতদেহ একটা বস্তায় ভরে হাতির পিঠে চড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিরাজের স্ত্রী, মা এবংঅনেক আত্মীয়া তখন বন্দিনী। ইংরেজ কর্মচারীরা প্রভুর আদেশ অনুযায়ী সিরাজের খণ্ডিত দেহের বস্তা সেখানে পৌঁছে দিয়েছিল। নবাব পরিবারের উৎসুক মহিলাদের পক্ষ হতে একজন বস্তার মুখ খুলতেই দেখতে পেলেন তাতে আমও নেই বা অন্য কোন খাদ্য বস্তুও নেই, আছে সিরাজের দেহের ছোট্ট ছোট্ট টুকরাগুলো আর তার সাথে খোলা চোখে তাকিয়ে থাকা সিরাজের কাঁচা কাটা মাথা।

সিরাজ যেন তাঁর গর্ভধারিণীমাকে শেষ দেখা করতে এসেছেন। সিরাজের হতভাগী মা প্রিয় পুত্রের মুখের দিকে এক পলক তাকাতেই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। জ্ঞান ফিরে এলে মীরজাফরের অনুচর গোলাম হেসেনের আদেশে তাকে পুনরায় কারারুদ্ধ করা হয়। পরে জয়নুল আবেদীন নামক এক দরিদ্র নাগরিকের অনুরোধে সিরাজের খণ্ডিত দেহকে ভাগীরথী নদীর পারে খোসবাগ নামক বাগানে তার নানাজান আলিবর্দীর কবরের পূর্ব পাশে সামাধিস্থ করা হয়। (দ্রঃ পুরনো কলকাতার কথাচিত্র পৃষ্ঠা ৩৯৫)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন