hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুল ইলম

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৩
দ্বীনী ইলম দ্বারা দুনিয়া অর্জনকারীর পরিণাম
দ্বীনী ইলম শিক্ষা করার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে আখিরাতের চিরস্থায়ী কল্যাণ অর্জন করা। আর প্রত্যেক ইলম অর্জনের মূল উদ্দেশ্য এটাই হওয়া উচিত। কিন্তু প্রত্যেক যুগে একদল লোক থাকে, যারা ইলম অর্জন করে দুনিয়া অর্জনের জন্য। তাদের এ কর্মের মধ্যে আখিরাতের কোন উদ্দেশ্য থাকে না। তাদের ইলম তাদেরকে কোন উপকার করতে পারে না। আল্লাহ তা‘আলা তাদের সম্পর্কে বলেন,

﴿فَخَلَفَ مِنْ ۢبَعْدِهِمْ خَلْفٌ وَّرِثُوا الْكِتَابَ يَأْخُذُوْنَ عَرَضَ هٰذَا الْاَدْنٰى وَيَقُوْلُوْنَ سَيُغْفَرُ لَنَاۚ وَاِنْ يَّأْتِهِمْ عَرَضٌ مِّثْلُهٗ يَأْخُذُوْهُؕ اَلَمْ يُؤْخَذْ عَلَيْهِمْ مِّيثَاقُ الْكِتَابِ اَنْ لَّا يَقُوْلُوْا عَلَى اللهِ اِلَّا الْحَقَّ وَدَرَسُوْا مَا فِيْهِؕ وَالدَّارُ الْاٰخِرَةُ خَيْرٌ لِّلَّذِيْنَ يَتَّقُوْنَؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ﴾

অতঃপর অযোগ্য উত্তরাধিকারীরা একের পর এক তাদের স্থলাভিষিক্ত হলো এবং (আল্লাহর) কিতাবেরও উত্তরাধিকারী হলো। তারা এ তুচ্ছ দুনিয়ার সম্পদ করায়ত্ত করত এবং (মূর্খের মতো) বলত, আমাদেরকে ক্ষমা করা হবে। কিন্তু যদি (পরবর্তীতে আবারও অর্জিত সম্পদের) অনুরূপ সম্পদ তাদের নিকট আসত, তবে তারা তাও হস্তগত করে নিত। তাদের নিকট থেকে কি কিতাবের ব্যাপারে এ অঙ্গীকার নেয়া হয়নি যে, তারা আল্লাহ সম্বন্ধে সত্য ছাড়া অন্য কিছুই বলবে না? আর তারা তো সে কিতাব (বহু বার) অধ্যয়ন করেছে। সুতরাং যারা আল্লাহকে ভয় করে তাদের জন্য পরকালীন ঘরবাড়িই হচ্ছে উত্তম নিবাস; তবুও কি তোমরা (এ বিষয়ে) অনুধাবন করবে না? (সূরা আ‘রাফ- ১৬৯)

দ্বীনী ইলম দ্বারা দুনিয়া অর্জনকারীরা জানে, এ কাজটি করা গোনাহ; তবুও তারা এ আশায় কাজটি করে যে, কোনভাবে তাদের গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। কারণ তারা মনে করে, তারা আল্লাহর প্রিয় পাত্র এবং তারা যত কঠিন অপরাধই করুক না কেন তাদেরকে ক্ষমা করা হবে। এ ভুল ধারণার ফলে কোন গোনাহ করার পর তারা লজ্জিত হয় না এবং তওবাও করে না। বরং তারা একই ধরনের গোনাহ বারবার করতে থাকে। অথচ তারা এমন একটি কিতাবের উত্তরাধিকারী ছিল, যা তাদেরকে দুনিয়ায় নেতৃত্বের পদে সমাসীন করতে চেয়েছিল। কিন্তু তাদের হীনমন্যতার ফলে তারা এর সাহায্যে তুচ্ছ পার্থিব সম্পদ আহরণ করার চেয়ে বড় কোন জিনিস অর্জনের ইচ্ছাই করল না। তারা দুনিয়ায় ন্যায়-ইনসাফ, সত্য ও সততার পতাকাবাহী এবং কল্যাণের পথপ্রদর্শক হওয়ার পরিবর্তে নিছক দুনিয়াদারী হয়েই রইল।

দুনিয়াপূজারী এক আলেমের কাহিনী :

﴿وَاتْلُ عَلَيْهِمْ نَبَاَ الَّذِيْۤ اٰتَيْنَاهُ اٰيَاتِنَا فَانْسَلَخَ مِنْهَا فَاَتْبَعَهُ الشَّيْطَانُ فَكَانَ مِنَ الْغَاوِيْنَ﴾

তাদেরকে ঐ ব্যক্তির বৃত্তান্ত পড়ে শোনাও, যাকে আমি নিদর্শন দিয়েছিলাম, কিন্তু সে তা বর্জন করে। অতঃপর শয়তান তার পেছনে লাগে এবং সে বিপথগামীদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যায়। (সূরা আ‘রাফ- ১৭৫)

দুনিয়ায় লোভী হওয়াতে তাকে কুকুরের সাথে তুলনা করা হয়েছে :

﴿وَلَوْ شِئْنَا لَرَفَعْنَاهُ بِهَا وَلٰكِنَّهٗۤ اَخْلَدَ اِلَى الْاَرْضِ وَاتَّبَعَ هَوَاهُۚ فَمَثَلُهٗ كَمَثَلِ الْكَلْبِؕ اِنْ تَحْمِلْ عَلَيْهِ يَلْهَثْ اَوْ تَتْرُكْهُ يَلْهَثْؕ ذٰلِكَ مَثَلُ الْقَوْمِ الَّذِيْنَ كَذَّبُوْا بِاٰيَاتِنَاۚ فَاقْصُصِ الْقَصَصَ لَعَلَّهُمْ يَتَفَكَّرُوْنَ﴾

আমি ইচ্ছা করলে এর দ্বারা তাকে উচ্চমর্যাদা দান করতে পারতাম, কিন্তু সে দুনিয়ার প্রতি ঝুঁকে পড়ে ও প্রবৃত্তির অনুসরণ করে। তার অবস্থা কুকুরের ন্যায়, যাদের উপর বোঝা চাপালেও হাঁপাতে থাকে এবং না চাপালেও হাঁপায়। সুতরাং যে সম্প্রদায় আমার নিদর্শনাবলিকে প্রত্যাখ্যান করে, তাদের অবস্থাও এরূপ। অতএব তুমি এ ঘটনা বর্ণনা করে যাও, যেন তারা চিন্তা করে। (সূরা আ‘রাফ- ১৭৬)

এখানে যে ব্যক্তির উদাহরণ পেশ করা হয়েছে, সে আল্লাহর কিতাবের জ্ঞানের অধিকারী ছিল। তার উচিত ছিল, ভুল কর্মনীতি থেকে দূরে থাকা এবং সঠিক কর্মনীতি অবলম্বন করা। কিন্তু সে কেবল পার্থিব স্বার্থ ও আরাম-আয়েশের দিকে ঝুঁকে পড়ে। প্রবৃত্তির লালসার মোকাবেলা করার পরিবর্তে সে এর সামনে নতজানু হয়ে পড়ে। তার বিবেক যেসব সীমানা রক্ষণাবেক্ষণের দাবি জানিয়ে আসছিল, সে সেগুলো লঙ্ঘন করেছিল। তারপর যখন সে নিজের নৈতিক দুর্বলতার কারণে জেনে-বুঝে সত্যকে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলল, তখন ওঁৎ পেতে থাকা শয়তান তার পেছনে লেগে গেল এবং অনবরত তাকে অধঃপতনের অতল গভীরের দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকল। এরপর আল্লাহ এ ব্যক্তির অবস্থাকে এমন একটি কুকুরের সাথে তুলনা করেছেন, যার জিভ সবসময় ঝুলে থাকে এবং এ ঝুলন্ত জিভ থেকে অনবরত লালা ঝরতে থাকে। যেভাবে আমরা পার্থিব লালসায় অন্ধ ব্যক্তিকে দুনিয়ার কুকুর বলে থাকি, ঠিক তেমনিভাবে এ বিষয়টিকে এখানে উপমা হিসেবে পেশ করা হয়েছে। কুকুরের স্বভাব হলো, চলাফেরার পথে তার নাক সবসময় মাটি শুঁকতে থাকে, হয়তো কোথাও কোন খাবারের গন্ধ পাওয়া যাবে এ আশায়। তার গায়ে কেউ পাথর ছুঁড়ে মারলেও তার মনে সন্দেহ জাগে যে, যে জিনিসটি তার দিকে ছুঁড়ে মারা হয়েছে সেটি হয়তো কোন হাড় বা রুটির টুকরা হবে। পেটপূজারি কুকুর দৌড়ে গিয়ে সেই নিক্ষিপ্ত পাথরটিও কামড়ে ধরে। সে তার পেটের দৃষ্টি দিয়ে সারা দুনিয়াকে দেখে। কোথাও যদি কোন বড় লাশ পড়ে থাকে, তবে তা কয়েকটি কুকুরের পেট ভরার জন্য যথেষ্ট হলেও একটি কুকুর তার মধ্য থেকে কেবলমাত্র তার নিজের অংশটি নিয়েই ক্ষান্ত হয় না বরং সম্পূর্ণ লাশটিকে নিজের দখলে রাখার চেষ্টা করে এবং অন্য কোন কুকুরকে তার ধারে কাছেও আসতে দেয় না। এ পেটের লালসার পর যদি দ্বিতীয় কোন বস্তু তার উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে তাহলে সেটি হচ্ছে যৌন লালসা। সারা শরীরের মধ্যে কেবলমাত্র লজ্জাস্থানটিই তার কাছে আকর্ষণীয়। ফলে সে সেটিরই ঘ্রাণ নিতে থাকে এবং সেটিকেই চাটতে থাকে। কাজেই এখানে এ উপমা দেয়ার উদ্দেশ্য হচ্ছে এ কথাটি সুস্পষ্টভাবে তুলে ধরা যে, দুনিয়াদারী ব্যক্তি যখন জ্ঞান ও ঈমানের বাঁধন ছিঁড়ে ফেলে প্রবৃত্তির লালসার কাছে আত্মসমর্পণ করে চলতে থাকে, তখন তার অবস্থা পেট ও যৌনাঙ্গ পূজারি কুকুরের মতো হওয়া ছাড়া আর কোন উপায় থাকে না।

দ্বীনের ইলম দ্বারা দুনিয়া অর্জনকারীর পরকালের অবস্থা :

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ الله إِنَّ أَوَّلَ النَّاسِ يُقْضٰى عَلَيْهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ رَجُلٌ اسْتُشْهِدَ فَأُوْتِيَ بِه فَعَرَّفَه نِعَمَه فَعَرَفَهَا؟ فَقَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيْهَا قَالَ قَاتَلْتُ فِيْكَ حَتَّى اسْتُشْهِدْتُ قَالَ كَذَبْتَ وَلٰكِنَّكَ قَاتَلْتَ لِأَنْ يُّقَالَ جَرِيءٌ فَقَدْ قِيْلَ ثُمَّ أُمِرَ بِه فَسُحِبَ عَلٰى وَجْهِه حَتّٰى أُلْقِيَ فِي النَّارِ وَرَجُلٌ تَعَلَّمَ الْعِلْمَ وَعَلَّمَه وَقَرَأَ الْقُرْاٰنَ فَأُوْتِيَ بِه فَعَرَّفَه نِعَمَه فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيْهَا؟ قَالَ تَعَلَّمْتُ الْعِلْمَ وَعَلَّمْتُه وَقَرَأْتُ فِيْكَ الْقُرْاٰنَ قَالَ كَذَبْتَ وَلٰكِنَّكَ تَعَلَّمْتَ الْعِلْمَ لِيُقَالَ اِنَّكَ عَالِمٌ وَقَرَأْتَ الْقُرْاٰنَ لِيُقَالَ اِنَّكَ قَارِئٌ فَقَدْ قِيْلَ ثُمَّ أُمِرَ بِه فَسُحِبَ عَلٰى وَجْهِه حَتّٰى أُلْقِيَ فِي النَّارِ وَرَجُلٌ وَسَّعَ اللّٰهُ عَلَيْهِ وَأَعْطَاهُ مِنْ أَصْنَافِ الْمَالِ كُلِّه فَأُتِيَ بِه فَعَرَّفَه نِعَمَه فَعَرَفَهَا قَالَ فَمَا عَمِلْتَ فِيْهَا؟ قَالَ مَا تَرَكْتُ مِنْ سَبِيْلٍ تُحِبُّ أَنْ يُّنْفَقَ فِيْهَا اِلَّا أَنْفَقْتُ فِيْهَا لَكَ قَالَ كَذَبْتَ وَلٰكِنَّكَ فَعَلْتَ لِيُقَالَ هُوَ جَوَادٌ فَقَدْ قِيْلَ ثُمَّ أُمِرَ بِه فَسُحِبَ عَلٰى وَجْهِه ثُمَّ أُلْقِيَ فِي النَّارِ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, কিয়ামতের দিন প্রথমে এক শহীদ ব্যক্তির ব্যাপারে বিচার হবে। আল্লাহ তা‘আলা তাকে হাশরের ময়দানে পেশ করবেন এবং তাকে তার সকল নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। ফলে তার এসব নিয়ামতের কথা স্মরণ হয়ে যাবে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, তুমি এসব নিয়ামত পেয়ে কৃতজ্ঞতাস্বরূপ দুনিয়াতে কী কাজ করেছ? সে উত্তরে বলবে, আমি তোমার (সমত্মুূষ্টির) জন্য তোমার পথে (কাফিরদের বিরুদ্ধে) লড়াই করেছি, এমনকি শেষ পর্যন্ত আমাকে শহীদ করে দেয়া হয়েছে। তখন আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। বরং তুমি এজন্য লড়াই করেছ যে, লোকেরা তোমাকে বীরপুরুষ বলবে। আর বাসত্মবেও তা বলা হয়েছে (তাই তোমার উদ্দেশ্য সাধিত হয়েছে)। অতঃপর তার ব্যাপারে হুকুম দেয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

তারপর দ্বিতীয়ত এমন একজন ব্যক্তিকে উপস্থিত করা হবে, যে নিজে জ্ঞানার্জন করেছে, অন্যকেও তা শিক্ষা দিয়েছে এবং সে কুরআনও পাঠ করেছে। তারপর তাকে দেয়া সব নিয়ামতের কথা আল্লাহ তা‘আলা তাকে স্মরণ করিয়ে দেবেন। ফলে এসব নিয়ামত তার স্মরণ হবে। তখন আল্লাহ তা‘আলা তাকে জিজ্ঞেস করবেন, তুমি কী এসব নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করেছ? সে উত্তরে বলবে, আমি ইলম অর্জন করেছি, মানুষকে ইলম শিক্ষা দিয়েছি এবং তোমার সমত্মুষ্টির উদ্দেশ্যে কুরআন পাঠ করেছি। আল্লাহ বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ। তুমি এসব কাজ এজন্য করেছ যে, তোমাকে আলেম বলা হবে এবং ক্বারী বলা হবে। আর তোমাকে দুনিয়ায় এসব বলাও হয়েছে। তারপর তার ব্যাপারে হুকুম দেয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

তারপর তৃতীয়ত এমন একজন ব্যক্তিকে আল্লাহর সম্মুখে উপস্থিত করা হবে, যাকে আল্লাহ তা‘আলা বিভিন্ন ধরনের মাল দিয়ে সম্পদশালী করেছেন। তারপর আল্লাহ তা‘আলা তাকে দেয়া সব নিয়ামতের কথা স্মরণ করিয়ে দেবেন। ফলে এসব তার মনে পড়ে যাবে। তখন আল্লাহ তাকে জিজ্ঞেস করবেন, তুমি এসব নিয়ামত পেয়ে কী আমল করেছ? সে ব্যক্তি উত্তরে বলবে, আমি এমন কোন খাতে খরচ করা বাকি রাখিনি, যে খাতে খরচ করাকে তুমি পছন্দ কর। আল্লাহ তা‘আলা বলবেন, তুমি মিথ্যা বলছ, তুমি খরচ করেছ, যাতে মানুষ তোমাকে দানশীল বলে। আর সে খেতাব তুমি দুনিয়ায় অর্জনও করেছ। তারপর তার ব্যাপারে হুকুম দেয়া হবে এবং তাকে উপুড় করে টেনে-হিঁচড়ে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। [সহীহ মুসলিম, হা/৫০৩২; নাসাঈ, হা/৩১৩৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/৮২৬০; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৩৬৪; বায়হাকী, হা/১৮৩৩০; জামেউস সগীর, হা/৩৭৭৭; সিলসিলা সহীহাহ, হা/৩৫১৮; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/২২; মিশকাত, হা/২০৫।]

এ হাদীস হতে বুঝা যায় যে, আমলের ক্ষেত্রে নিয়ত স্বচ্ছ থাকা আবশ্যক, যা আল্লাহর বাণী কর্তৃকও প্রমাণিত। যেমন আল্লাহ তা‘আলা বলেন-

﴿وَمَاۤ أُمِرُوْاۤ إِلَّا لِيَعْبُدُوا اللهَ مُخْلِصِيْنَ لَهُ الدِّيْنَ حُنَفَآءَ وَيُقِيْمُوا الصَّلَاةَ وَيُؤْتُوا الزَّكَاةَ وَذٰلِكَ دِيْنُ الْقَيِّمَةِ﴾

তাদেরকে এছাড়া অন্য কোন নির্দেশ করা হয়নি যে, তারা খাঁটি মনে একনিষ্ঠভাবে আল্লাহর ইবাদাত করবে, সালাত কায়েম করবে এবং যাকাত দেবে। আর এটাই হচ্ছে সঠিক ধর্ম। (সূরা বায়্যিনাহ- ৫)

عَنْ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ طَلَبَ الْعِلْمَ لِيُجَارِيَ بِهِ الْعُلَمَاءَ أَوْ لِيُمَارِيَ بِهِ السُّفَهَاءَ أَوْ يَصْرِفَ بِه وُجُوْهَ النَّاسِ إِلَيْهِ أَدْخَلَهُ اللّٰهُ النَّارَ

কা‘ব ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি জ্ঞানার্জন করে আলেমদের উপর গৌরব করার জন্য অথবা মূর্খদের সাথে তর্ক-বিতর্ক করার জন্য অথবা মানুষকে নিজের প্রতি আকৃষ্ট করার জন্য, আল্লাহ তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করবেন। [তিরমিযী, হা/২৬৫৪; জামেউস সগীর, হা/১১৩২৯; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০৬; মিশকাত, হা/২২৫।]

যে বিদ্যা অন্বেষণকারী ব্যক্তি আল্লাহর সমত্মুষ্টির লক্ষ্য বাদ দিয়ে মানুষের সামনে নিজের ইলম প্রকাশের জন্য বিদ্বান ব্যক্তির সাথে তর্কে লিপ্ত হবে অথবা অজ্ঞ ব্যক্তিদেরকে সন্দেহে লিপ্ত করার জন্য অথবা সম্পদ ও সম্মান অর্জনের উদ্দেশ্যে অথবা জনসাধারণের দৃষ্টিকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়ার উদ্দেশ্যে ইলম অর্জন করবে, তাহলে আল্লাহ তাকে জাহান্নামে প্রবেশ করাবেন।

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ تَعَلَّمَ عِلْمًا مِمَّا يُبْتَغٰى بِه وَجْهُ اللهِ لَا يَتَعَلَّمُهُ اِلَّا لِيُصِيبَ بِه عَرَضًا مِنْ الدُّنْيَا لَمْ يَجِدْ عَرْفَ الْجَنَّةِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ يَعْنِي رِيْحَهَا

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি এমন জ্ঞান অর্জন করে, যা দ্বারা আল্লাহর সমত্মুষ্টি অর্জন করা যায়। আর সে তা কেবল পার্থিব স্বার্থ উদ্ধারের উদ্দেশ্যে অর্জন করে, তাহলে কিয়ামতের দিন সে জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। [মুসনাদে আহমাদ, হা/৮৪৩৮ আবু দাউদ, হা/৩৬৬৬ ইবনে মাজাহ, হা/২৫২; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১০৫; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হ/২৮৮; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৬৩৭৩; জামেউস সগীর, হা/১১১০৪; মিশকাত, হা/২২৭।]

এ হাদীস থেকে বুঝা যায়, যে ব্যক্তি দ্বীনী জ্ঞান শিক্ষার মাধ্যমে আল্লাহর সমত্মুষ্টি ছাড়া দুনিয়ার সম্পদের ইচ্ছা করবে সে জান্নাতের কাছাকাছিও যেতে পারবে না। এমনকি জান্নাতের সুঘ্রাণও পাবে না। অথচ ৭০ হাজার মাইল দূর থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাওয়া যায়। তবে কেউ যদি তা দ্বারা আল্লাহর সমত্মুষ্টির উদ্দেশ্য করে, অতঃপর দুনিয়ার সম্পদের প্রতি ঝুঁকে পড়ে, সে ব্যক্তি হাদীসে উল্লেখিত শাস্তির আওতাভুক্ত হবে না।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন