মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আর তোমরা সকলে মিলে আল্লাহর রশিকে আঁকড়ে ধরো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। (সূরা আলে ইমরান- ১০৩)
আল্লাহর রশি বলতে তাঁর দ্বীনকে বুঝানো হয়েছে। আল্লাহর দ্বীনকে রশির সাথে তুলনা করার কারণ হচ্ছে- এটি এমন একটি সম্পর্ক, যা একদিকে আল্লাহর সাথে ঈমানদারদের সম্পর্ক জুড়ে দেয়। অন্যদিকে সমস্ত ঈমানদারদেরকে পরস্পরের সাথে মিলিয়ে জামাআতবদ্ধ করে। এ রশিকে মজবুতভাবে আঁকড়ে ধরার তাৎপর্য হচ্ছে, মুসলিমরা দ্বীনকেই আসল গুরুত্বের অধিকারী মনে করবে, সে ব্যাপারেই আগ্রহ পোষণ করবে, তা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রচেষ্টা চালাবে এবং পরস্পরের সহযোগিতা করবে। যেখানেই মুসলিমরা দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা ও দ্বীন প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়বে এবং তাদের সমগ্র দৃষ্টি খুঁটিনাটি বিষয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে সেখানেই অনিবার্যভাবে তাদের মধ্যে দলাদলি ও মতবিরোধ দেখা দেবে, যা ইতিপূর্বে বিভিন্ন নবীর উম্মতকে জীবনের মূল লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত করে দুনিয়া ও আখিরাতে লাঞ্ছনার গর্তে নিক্ষেপ করেছিল।
ঐক্যবদ্ধ না হলে দুশমনদের মোকাবেলায় বিজয় লাভ করা সম্ভব নয়। এ কারণেই আল্লাহ তা‘আলা পবিত্র কুরআনে বলেছেন-
তোমরা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে ও নিজেদের মধ্যে বিবাদ করবে না, নতুবা তোমরা সাহস হারিয়ে ফেলবে এবং তোমাদের শক্তি বিলুপ্ত হবে। অতএব তোমরা ধৈর্যধারণ করো; নিশ্চয় আল্লাহ ধৈর্যশীলদের সাথেই রয়েছেন। (সূরা আনফাল- ৪৬)
এ আয়াতে বলা হয়েছে পরস্পর বিবাদে লিপ্ত হলে তা কাপুরুষ ও হীনমন্যতা সৃষ্টি করে এবং শত্রুদের অমত্মর থেকে মুসলিমদের প্রভাব দূর হয়ে যায়। এ কারণেই পবিত্র কুরআনের বহু আয়াতে মুসলিম জাতির মধ্যে বিভক্তি ও দলাদলি সৃষ্টি করার কঠোর প্রতিবাদ করা হয়েছে।
ইসলামে যে কারো নামে কারো জন্য কোনরূপ দল উপদলে বিভক্ত হওয়া নিষিদ্ধ। কুরআনে বলা হয়েছে-
নিশ্চয় যারা দ্বীনের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে পড়েছে, তাদের উপর তোমার কোন দায়িত্ব নেই; তাদের বিষয়টি আল্লাহর ইচ্ছাধীন। আল্লাহ তাদেরকে তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে অবহিত করবেন। (সূরা আনআম- ১৫৯)
দ্বীনের মধ্যে বিভক্তি সৃষ্টি করা মুশরিকদের কাজ, কোন মুমিনের কাজ নয়। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
তোমরা মুশরিকদের অন্তর্ভুক্ত হয়ো না, যারা তাদের দ্বীনকে খন্ড-বিখন্ড করে নিয়েছে এবং ভিন্ন ভিন্ন দলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। আর প্রত্যেক দলই নিজ নিজ অনুসৃত নিয়ম নিয়েই উল্লাসিত। (সূরা রূম- ৩১, ৩২)
এ আয়াতে বলা হচ্ছে, তোমরা মুশরিকদের অমত্মর্ভুক্ত হয়ো না, যারা নিজেদের দ্বীনকে বিভক্ত করেছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হয়েছে। কেননা বিচ্ছিন্ন হওয়াটা মুশরিকদের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এর অনুপ্রবেশ যাতে মুসলিমদের মাঝে না ঘটে সেজন্যই এ আদেশ করা হয়েছে।
এ আয়াতে আরো বলা হয়েছে, যখন বিভিন্ন দল তৈরি হয়ে যায়, তখন প্রতিটি দলই নিজেদেরকে সঠিক মনে করে। বাসত্মবেও তাই। আমরা দেখি, যখন কোন ফিরকা তৈরি হয়, তখন প্রত্যেক ফিরকা নিজেদেরকে সঠিক ও অন্যদেরকে বেঠিক প্রমাণ করার জন্য বিভিন্নভাবে কুরআন ও হাদীসের অপব্যাখ্যা করে থাকে। আর এ কাজগুলো কোন সাধারণ মানুষের পক্ষে করা সম্ভব নয়। যাদের কুরআন ও হাদীস সম্পর্কে জ্ঞান আছে, তাদেরই একটি বিভ্রামত্ম অথবা স্বার্থবাদী দল এ কাজটি করে থাকে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
তাদের নিকট (তাওহীদের জ্ঞান) আসার পরও শুধুমাত্র পারস্পরিক বাড়াবাড়ির কারণে তারা নিজেদের মধ্যে মতভেদ ঘটায়। (সূরা শূরা- ১৪)
অর্থাৎ বিভেদের কারণ এ ছিল না যে, আল্লাহ নবী-রাসূল পাঠাননি এবং কিতাবও নাযিল করেননি। তাই সঠিক পথ না জানার কারণে মানুষ নিজেদের জন্য আলাদা-আলাদা ধর্ম ও জীবনাদর্শ আবিষ্কার করে নিয়েছে। বরং তাদের মধ্যে এই বিভেদ সৃষ্টি হয়েছে আল্লাহর পক্ষ থেকে জ্ঞান আসার পর। তাই সেজন্য আল্লাহ দায়ী নন, বরং সেসব লোক নিজেরাই দায়ী, যারা দ্বীনের সুস্পষ্ট নীতিমালা এবং শরীয়তের সুস্পষ্ট বিধি-নিষেধ থেকে দূরে সরে গিয়ে নতুন নতুন ধর্ম ও পথ বানিয়ে নিয়েছে। এই মতভেদ আল্লাহর বান্দাদের একটি বড় অংশকে দ্বীনের সুস্পষ্ট রাজপথ থেকে সরিয়ে বিভিন্নভাবে বিক্ষিপ্ত করে দিয়েছে। এমনকি এর ফলে রক্তপাতও ঘটছে।
এ দু’টি আয়াতে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, যুগে যুগে কারা কী জন্য আল্লাহ প্রদত্ত দ্বীনকে বিভক্ত করেছে। অতঃপর আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকেও কঠোরভাবে সাবধান করেছেন যাতে আমরা তাদের মতো জেনে-বুঝে দলাদলি না করি। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে-
তোমরা তাদের মতো হয়ো না, যারা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে এবং তাদের কাছে স্পষ্ট প্রমাণ আসার পরও মতভেদে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তাদের জন্য রয়েছে মহাশাস্তি। (সূরা আলে ইমরান- ১০৫)
এখানে পূর্ববর্তী নবীদের এমনসব উম্মতের প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে, যারা সত্য দ্বীনের সরল ও সুস্পষ্ট শিক্ষা লাভ করেছিল; কিন্তু কিছুদিন অতিবাহিত হওয়ার পর দ্বীনের মূল বিষয়গুলো পরিত্যাগ করে দ্বীনের সাথে সম্পর্কবিহীন অপ্রয়োজনীয় খুঁটিনাটি বিষয়াবলির ভিত্তিতে নিজেদেরকে একটি আলাদা ধর্মীয় সম্প্রদায় হিসেবে গড়ে তুলতে শুরু করে দিয়েছিল। তারপর অবান্তর ও অহেতুক কথা নিয়ে এমনভাবে কলহে লিপ্ত হয়ে পড়েছিল যে, আল্লাহ তাদের উপর যে দায়িত্ব দিয়েছিলেন তার কথা তারা ভুলেই গিয়েছিল এবং বিশ্বাস ও নৈতিকতার যেসব মূলনীতির উপর মানুষের সাফল্য ও কল্যাণের ভিত্তি স্থাপিত হয়েছে, তার প্রতি কোন আগ্রহই তাদের ছিল না।
আরো অসংখ্য আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম জাতিকে বিচ্ছিন্ন না হওয়ার জন্য আদেশ করেছেন। তাছাড়া রাসূলুল্লাহ ﷺ মুসলিম জাতিকে বিচ্ছিন্ন না হওয়ার ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক করেছেন। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে-
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য তিনটি কাজ পছন্দ করেছেন এবং তিনটি কাজ অপছন্দ করেছেন। তোমাদের জন্য যে তিনটি কাজ পছন্দ করেছেন সেগুলো হলো :
১. তোমরা তাঁরই ইবাদাত করবে,
২. তাঁর সাথে কোন কিছুকে শরীক করবে না এবং
৩. তোমরা সম্মিলিতভাবে আল্লাহর রজ্জু মজবুতভাবে ধারণ করবে ও পরস্পর বিচ্ছিন্ন হবে না।
আর তিনি তোমাদের জন্য তিনটি কাজ অপছন্দ করেছেন, সেগুলো হলো :
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।