hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুল ইলম

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৫১
আমাদের পরিচয় হলো আমরা মুসলিম
মানবজাতির ইতিহাসের সূচনালগ্ন থেকেই যারা তাওহীদ, আখিরাত ও রিসালাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে আসছেন, তারা সকলেই মুসলিম ছিলেন। এ সত্য মিল্লাতের অনুসারীদেরকে কোন দিন ‘নূহী’ ‘ইবরাহিমী’ বা ‘মাসীহী’ ইত্যাদি বলা হয়নি বরং তাদের নাম ছিল ‘মুসলিম’ এবং আজও সবাই মুসলিম। তবে অতি দুঃখের বিষয় যে, আজকের মুসলিমরা তাদের এ প্রকৃত পরিচিতিমূলক নামটি ব্যবহার না করে ভিন্ন ভিন্ন নামে তাদের পরিচয় প্রকাশ করছে, যার ফলে গোটা মুসলিম উম্মাহ বিভক্ত হয়ে গেছে। ফলে সবাই মুসলিম হওয়া সত্ত্বেও তাদের মধ্যে হিংসা-বিবাদ ও হানাহানি লেগেই আছে।

আমাদের পরিচয় আমরা মুসলিম। এর বাইরে আমাদের আর কোন পরিচয় নেই। কুরআন থেকে আমরা আমাদের মূল পরিচয় এটাই পাই। পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,

﴿ مِلَّةَ اَبِيْكُمْ اِبْرَاهِيْمَؕ هُوَ سَمَّاكُمُ الْمُسْلِمِيْنَ مِنْ قَبْلُ وَفِيْ هٰذَا ﴾

এটা তোমাদের পিতা ইবরাহীমের মিল্লাত। তিনি পূর্বে তোমাদের নামকরণ করেছেন ‘মুসলিম’ এবং এ কিতাবেও। (সূরা হাজ্জ– ৭৮)

এ আয়াতে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, আমাদের পিতা ইবরাহীম (আঃ) আমাদেরকে মুসলিম হিসেবে নামকরণ করেছেন। আর সেজন্যই আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা পবিত্র কুরআনে তা ঘোষণা করে দিয়েছেন এবং মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেওয়াটাই পছন্দ করেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿ وَمَنْ اَحْسَنُ قَوْلًا مِّمَّنْ دَعَاۤ اِلَى اللهِ وَعَمِلَ صَالِحًا وَّقَالَ اِنَّنِيْ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ ﴾

কথায় ঐ ব্যক্তির চেয়ে উত্তম আর কে হতে পারে, যে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান করে, সৎকর্ম করে এবং বলে, নিশ্চয় আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত।

(সূরা হা-মীম সাজদা- ৩৩)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা মুসলিম হিসেবে পরিচয় দেয়াকে পছন্দ করেছেন এবং মুসলিম অবস্থায়ই মৃত্যুবরণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوا اتَّقُوا اللهَ حَقَّ تُقَاتِهٖ وَلَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَاَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ﴾

হে ঈমানদারগণ! তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় করো এবং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। (সূরা আলে ইমরান- ১০২)

আদম (আঃ) থেকে শুরু করে মুহাম্মাদ ﷺ এর পূর্ব পর্যমত্ম সকল নবী-রাসূলগণ মুসলিম ছিলেন। কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তা‘আলা তাদের কারো কারো পরিচয় তুলে ধরতে গিয়ে তাদেরকেও মুসলিম হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন।

নূহ (আঃ) মুসলিম ছিলেন :

﴿ وَاُمِرْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ ﴾

{নুহ (আঃ) বলেছিলেন} আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার জন্যই আদিষ্ট হয়েছি। (সূরা ইউনুস- ৭২)

ইবরাহীম (আঃ) মুসলিম ছিলেন :

﴿ مَا كَانَ اِبْرَاهِيْمُ يَهُوْدِيًّا وَّلَا نَصْرَانِيًّا وَّلٰكِنْ كَانَ حَنِيْفًا مُّسْلِمًاؕ وَمَا كَانَ مِنَ الْمُشْرِكِيْنَ ﴾

ইবরাহীম ইয়াহুদি বা নাসারা কিছুই ছিলেন না, বরং তিনি ছিলেন একনিষ্ঠ মুসলিম। আর তিনি মুশরিকদের অন্তর্ভুক্তও ছিলেন না। (সূরা আলে ইমরান- ৬৭)

ইবরাহীম ও ইসমাঈল (আঃ) মুসলিম হওয়ার দু‘আ করেছিলেন :

﴿ رَبَّنَا وَاجْعَلْنَا مُسْلِمَيْنِ لَكَ وَمِنْ ذُرِّيَّتِنَاۤ اُمَّةً مُّسْلِمَةً لَّكْ وَاَرِنَا مَنَاسِكَنَا وَتُبْ عَلَيْنَاۚ اِنَّكَ اَنْتَ التَّوَّابُ الرَّحِيْمُ ﴾

হে আমাদের রব! আমাদের উভয়কে মুসলিম বানিয়ে দিন এবং আমাদের বংশধরদের মধ্য হতেও আপনার অনুগত একদল লোক সৃষ্টি করে দিন। আর আমাদেরকে ইবাদাতের আহকাম বলে দিন এবং আমাদের প্রতি ক্ষমাশীল হোন, নিশ্চয় আপনি ক্ষমাশীল ও করুণাময়। (সূরা বাক্বারা- ১২৮)

ইয়াকূব (আঃ) এর সমত্মানরা মুসলিম ছিলেন :

﴿ وَوَصّٰى بِهَاۤ اِبْرَاهِيْمُ بَنِيْهِ وَيَعْقُوْبُؕ يَا بَنِيَّ اِنَّ اللهَ اصْطَفٰى لَكُمُ الدِّيْنَ فَلَا تَمُوْتُنَّ اِلَّا وَاَنْتُمْ مُّسْلِمُوْنَ﴾

ইবরাহীম ও ইয়াকূব স্বীয় সন্তানদেরকে এ সদুপদেশ প্রদান করেছিল যে, হে আমার বংশধর! নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের জন্য এই দ্বীনকে (জীবনব্যবস্থা হিসেবে) মনোনীত করেছেন। অতএব তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ করো না। (সূরা বাক্বারা- ১৩২)

ইউসুফ (আঃ) মুসলিম হয়ে মৃত্যুবরণ করার জন্য দু‘আ করেছিলেন :

﴿ فَاطِرَ السَّمَاوَاتِ وَالْاَرْضِؕ اَنْتَ وَلِيِّيْ فِى الدُّنْيَا وَالْاٰخِرَةِۚ تَوَفَّنِيْ مُسْلِمًا وَّاَلْحِقْنِيْ بِالصَّالِحِيْنَ ﴾

হে আকাশমন্ডলী ও পৃথিবীর স্রষ্টা! ইহকাল ও পরকালে তুমিই আমার অভিভাবক। তুমি আমাকে মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দাও এবং আমাকে সৎকর্মপরায়ণদের অন্তর্ভুক্ত করো। (সূরা ইউসুফ- ১০১)

লূত (আঃ) এর পরিবারও মুসলিম ছিলেন :

﴿ فَاَخْرَجْنَا مَنْ كَانَ فِيْهَا مِنَ الْمُؤْمِنِيْنَ فَمَا وَجَدْنَا فِيْهَا غَيْرَ بَيْتٍ مِّنَ الْمُسْلِمِيْنَ ﴾

সেখানে যারা মুমিন ছিল আমি তাদেরকে বের করে নিলাম। কিন্তু সেখানে লূত এর পরিবার ব্যতীত অন্য কোন মুসলিম পাইনি। (সূরা যারিয়াত- ৩৫, ৩৬)

মূসা (আঃ) মুসলিম ছিলেন :

﴿ وَقَالَ مُوْسٰى يَا قَوْمِ اِنْ كُنْتُمْ اٰمَنْتُمْ بِاللهِ فَعَلَيْهِ تَوَكَّلُوْاۤ اِنْ كُنْتُمْ مُّسْلِمِيْنَ ﴾

মূসা বলেছিল, হে আমার সম্প্রদায়! যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনে থাক এবং যদি তোমরা মুসলিম হও, তবে তোমরা তাঁর উপরই নির্ভর করো। (সূরা ইউনুস- ৮৪)

ঈসা (আঃ) মুসলিম ছিলেন :

﴿ وَاِذْ اَوْحَيْتُ اِلَى الْحَوَارِيِّيْنَ اَنْ اٰمِنُوْا بِيْ وَبِرَسُوْلِيْۚ قَالُوْاۤ اٰمَنَّا وَاشْهَدْ بِاَنَّنَا مُسْلِمُوْنَ ﴾

স্মরণ করো, যখন আমি হাওয়ারীদেরকে এ আদেশ দিয়েছিলাম যে, তোমরা আমার প্রতি ও আমার রাসূলের প্রতি ঈমান আনয়ন করো। তখন তারা বলেছিল, আমরা ঈমান আনলাম এবং তুমি সাক্ষী থাকো যে, আমরা মুসলিম। (সূরা মায়েদা- ১১১)

মুহাম্মাদ ﷺ ও মুসলিম ছিলেন :

﴿ اِنَّمَاۤ اُمِرْتُ اَنْ اَعْبُدَ رَبَّ هٰذِهِ الْبَلْدَةِ الَّذِيْ حَرَّمَهَا وَلَهٗ كُلُّ شَيْءٍ وَّاُمِرْتُ اَنْ اَكُوْنَ مِنَ الْمُسْلِمِيْنَ ﴾

নিশ্চয় আমি আদিষ্ট হয়েছি এ নগরীর প্রতিপালকের ইবাদাত করার জন্য, যিনি তাকে সম্মানিত করেছেন এবং সমস্ত কিছু তাঁরই জন্য। আর আমি আরো আদিষ্ট হয়েছি- যেন আমি মুসলিমদের অন্তর্ভুক্ত হই। (সূরা নামল- ৯১)

এখন কোন ব্যক্তি যদি প্রশ্ন করে- আপনি কে? তার উত্তরে আপনার বলা উচিৎ- আমি একজন মুসলিম। কেউ যদি নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে ইমাম আবু হানিফা (রহ.), অথবা ইমাম মালিক (রহ.) অথবা ইমাম শাফেয়ী (রহ.) অথবা ইমাম আহমাদ ইবনে হাম্বল (রহ.) এদের দৃষ্টিভঙ্গিতে বিশ্বাস করে তবে কোন আপত্তি নেই । যদি কেউ কখনো ইমাম শাফেয়ী (রহ.) এর কথা গ্রহণ করে, কখনো আবু হানিফা (রহ.) এর মত গ্রহণ করে, তাতেও কোন আপত্তি নেই। কিন্তু একজন ঈমানদার ব্যক্তির মূল পরিচয় হলো সে একজন মুসলিম।

কিন্তু বর্তমানে আপনি যদি কিছু মুসলিমকে জিজ্ঞেস করেন, তুমি কী? তখন কেউ বলে, আমি হানাফী, আমি শাফেয়ী, আমি মালিকী অথবা কেউ বলে আমি হাম্বলী। আমাদের প্রিয় নবী ﷺ ও তার সাথিগণ কী ছিলেন? তিনি কি শাফেয়ী ছিলেন? তিনি কি হাম্বলী ছিলেন? তিনি কি মালিকী ছিলেন? নাকি তিনি হানাফী ছিলেন? বরং তিনি ছিলেন একজন মুসলিম। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿قُلْ اِنَّ صَلَاتِيْ وَنُسُكِيْ وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِيْ لِلّٰهِ رَبِّ الْعَالَمِيْنَ لَا شَرِيْكَ لَهٗ وَبِذٰلِكَ أُمِرْتُ وَاَنَا اَوَّلُ الْمُسْلِمِيْنَ﴾

আপনি বলুন, আমার সালাত, আমার কুরবানী এবং আমার জীবন ও আমার মরণ বিশ্ব প্রতিপালক আল্লাহর জন্য। তাঁর কোন অংশিদার নেই, আমি তাই আদিষ্ট হয়েছি এবং আমিই প্রথম মুসলিম। (সূরা আনআম- ১৬২, ১৬৩)

কুরআন প্রমাণ করেছে যে, নূহ (আঃ) একজন মুসলিম, ইবরাহীম (আঃ) একজন মুসলিম, মূসা (আঃ) একজন মুসলিম, ঈসা (আঃ) একজন মুসলিম, মুহাম্মাদ ﷺ একজন মুসলিম। সকল যুগের সকল নবী-রাসূলগণ মুসলিম নামে পরিচয় দান করেছেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿شَرَعَ لَكُمْ مِّنَ الدِّيْنِ مَا وَصّٰى بِهٖ نُوْحًا وَّالَّذِيْۤ اَوْحَيْنَاۤ اِلَيْكَ وَمَا وَصَّيْنَا بِهٖۤ اِبْرَاهِيْمَ وَمُوْسٰى وَعِيْسٰۤى اَنْ اَقِيْمُوا الدِّيْنَ وَلَا تَتَفَرَّقُوْا فِيْهِ﴾

তিনি তোমাদের জন্য নির্ধারণ করে দিয়েছেন ঐ দ্বীন, যার নির্দেশ দিয়েছিলেন নূহকে এবং যে ব্যাপারে আমি তোমাকে ওহী করেছিলাম। আর যার নির্দেশ দিয়েছিলাম ইবরাহীম, মূসা ও ঈসাকে এই বলে যে, তোমরা এ দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করো এবং তাতে মতভেদ করো না। (সূরা শূরা- ১৩)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন