মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কালক্রমে মানুষের হৃদয়ে বিভিন্নভাবে শিরক প্রবেশ করেছে এবং অধিকাংশ লোক সত্য থেকে বিচ্যুত হয়ে পড়েছে। যেসব কারণে মানুষ গুমরাহ হয় তার কিছু কারণ সংক্ষেপে উল্লেখ করা হলো :
১. কোন ব্যক্তির প্রতি মাত্রাতিরিক্ত শ্রদ্ধা বা ভক্তি প্রদর্শন :
নূহ (আঃ) এর জাতির সীমালঙ্ঘনমূলক সম্মান প্রদর্শনের পরিণতিতে সর্বপ্রথম মানব ইতিহাসে একত্ববাদের অবক্ষয় শুরু হয়েছিল। পরবর্তীতে বৌদ্ধধর্মে গৌতম বুদ্ধ এবং খ্রিস্টধর্মে ঈসা (আঃ) কে অনুরূপ উপাসনার বসত্মুতে পরিণত করা হয়েছে। অতিরিক্ত মর্যাদা দেখাতে গিয়ে মানুষ সৃষ্টিকে সঠিক স্থান থেকে উচ্চে তুলে ধরে এবং এক পর্যায়ে তার উপাসনা শুরু করে দেয়।
ইসলাম ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ রীতি হচ্ছে, সব ব্যাপারে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করা ও সীমালঙ্ঘন না করা। রাসূলুল্লাহ ﷺ ধর্মীয় ক্ষেত্রে সীমালঙ্ঘন বা অতিরঞ্জন করা থেকে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন। তিনি বলেন,
ইবনে আববাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি উমর (রাঃ) কে মিম্বারে দাঁড়িয়ে বর্ণনা করতে শুনেছেন যে, আমি নবী ﷺ কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, আমার প্রশংসা করতে বাড়াবাড়ি করো না, যেমন মারইয়ামের পুত্র ঈসা (আঃ) সম্পর্কে করেছিল নাসারারা। আমি একমাত্র আল্লাহর দাস। সুতরাং তোমরা বলবে, আল্লাহর দাস ও তাঁর রাসূল। [সহীহ বুখারী, হা/৩৪৪৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৪; মুসনাদুত তায়ালুসী, হা/২৪; দারেমী, হা/২৭৮৪; শারহুস সুন্নাহ, হা/৩৬৮১; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/১৫৩; মুসনাদে হুমাইদী, হা/৩০; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/২০৫২৪।]
কোন ব্যক্তির উপর মাত্রাতিরিক্ত ভক্তি ও শ্রদ্ধার ফলাফল তার মৃত্যুর পর অধিকাংশ ক্ষেত্রে তার কবরের উপরই প্রকাশ পায়। ভক্তরা তার কবরকে উপাসনার স্থান বানিয়ে নেয়, এমনকি একসময় তারা তার নিকট সিজদা করা, কুরবানী করা, প্রার্থনা করা ইত্যাদি শিরকী কাজসমূহ করতে শুরু করে। এভাবে এটি একটি ইবাদাতে রূপ নেয়। মৃতের প্রতি প্রদর্শিত শ্রদ্ধা ও ভক্তি যাতে ইবাদাতে রূপ না নেয় সেজন্য ইসলাম এ সংক্রামত্ম সকল কার্যক্রম নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। যেমন- কবরের উপর মসজিদ বা কোন কাঠামো তৈরি করা ইত্যাদি। হাদীসে এসেছে,
জাবির (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে কবরের উপর সৌধ নির্মাণ করতে, কবরকে পাকা করতে এবং তার উপর কিছু লিখতে নিষেধ করেছেন। [মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/১৩৬৯; নাসাঈ, হা/২০২৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২৬৫৭৭; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩১৬৩।]
আয়েশা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন, নবী ﷺ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাঁর স্ত্রীদের একজন মারিয়া নামক একটি গীর্জা বা উপাসনালয়ের কথা তাঁকে বললেন, যা তিনি (নবী ﷺ এর স্ত্রী) হাবশাহ্ দেশে দেখেছিলেন। (তাঁর স্ত্রীদের মাঝে) উম্মে সালামা ও উম্মে হাবীবা হাবশায় গিয়েছিলেন। তাঁরা দু’জনই এ গীর্জার সৌন্দর্য ও চাকচিক্য এবং ভেতরের চিত্রসমূহের বর্ণনা দিলেন। (এসব কথা শুনে) নবী ﷺ তাঁর মাথা তুলে বললেন, ঐসব (হাবশাবাসী) লোকদের মাঝ থেকে কোন সৎলোক মারা গেলে তারা তার কবরের উপর মসজিদ নির্মাণ করতো এবং তাদের ছবি নির্মাণ করে এর মাঝে রাখত। ঐসব ব্যক্তি আল্লাহর নিকট অত্যন্ত নিকৃষ্ট ও ঘৃণিত। [সহীহ বুখারী, হা/১৩৪১; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩১৭১; শারহুস সুন্নাহ, হা/৫০৯।]
২. প্রতিমা ও প্রতিকৃতি নির্মাণ :
সর্বপ্রথম শিরকের সূচনা হয়েছিল মৃতদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের নিমিত্তে প্রতিমা তৈরির মাধ্যমে। এরপরেও নির্দোষ শিল্পকলার নামে অংকিত ও খুদাইকৃত প্রতিকৃতির হাত ধরে পৌত্তলিকতা ও শিরকের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। এসব কারণে ইসলামে জীবের প্রতিকৃতি নির্মাণ নিষিদ্ধ ঘোষিত হয়েছে। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন,
যে গৃহে ছবি বা প্রতিকৃতি রয়েছে, সেখানে আল্লাহর রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করে না। [সহীহ বুখারী, হা/৩২২৪, ৩৩৫১; মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/১৭৩৪; সহীহ মুসলিম, হা/৫৬৩৯; আবু দাউদ, হা/৪১৫৭; তিরমিযী, হা/২৮০৫; নাসাঈ, হা/৪২৮১; ইবনে মাজাহ, হা/৩৬৫০; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৭২; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৫৮৫০; মুসনাদুল বাযযার, হা/৫২৩; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৫২১; বায়হাকী, হা/১৪৩৬০; জামেউস সগীর, হা/৩৭২৬।]
৩. পূর্ব পুরুষদের নীতি ও প্রথার অন্ধ অনুসরণ :
অতীত ও বর্তমানের অসংখ্য লোক পূর্ব পুরুষদের ভিত্তিহীন নিয়ম-নীতির অন্ধ অনুসরণ করে ভ্রান্তিতে নিক্ষিপ্ত হয়েছে। সত্যকে জানা ও বুঝার পরও অনেক মানুষই পিতৃপুরুষ ও সমাজে প্রচলিত রীতিনীতির প্রতি আবেগজনিত দুর্বলতার কারণে ভুল বিশ্বাস ও প্রথা আঁকড়ে থাকতে পছন্দ করে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
তাদের সম্মুখে ইবরাহীম (আঃ) এর বৃত্তান্ত বর্ণনা করো। সে যখন তাঁর পিতা ও তাঁর সম্প্রদায়কে বলেছিল, তোমরা কিসের উপাসনা কর? তারা বলল, আমরা প্রতিমার উপাসনা করি এবং আমরা নিষ্ঠার সাথে তাদের পূজায় লিপ্ত থাকি। সে বলল, তোমরা প্রার্থনা করলে তারা কি শুনে? অথবা তারা কি তোমাদের কোন উপকার কিংবা অপকার করতে পারে? তারা বলল, না- তবে আমরা আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে এরূপই করতে দেখেছি। (সূরা শু‘আরা : ৬৯-৭৪)
আর যখন তাদেরকে বলা হয় যে, আল্লাহ যা নাযিল করেছেন তার অনুসরণ করো। তখন তারা বলে, বরং আমরা তাঁরই অনুসরণ করব, যার উপর আমাদের পিতৃপুরুষদেরকে পেয়েছি; অথচ যদিও তাদের পিতৃপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিল না এবং তারা হেদায়াতপ্রাপ্ত ছিল না। (তবুও কি তারা তাদের অনুসরণ করবে?)। (সূরা বাক্বারা- ১৭০)
৪. ধর্মীয় ক্ষেত্রে মানবকর্তৃক সংযোজন-বিয়োজন :
যুগে যুগে নবী-রাসূলদের প্রচারিত সৃষ্টিকর্তার সত্যধর্ম বিকৃত হওয়ার নেপথ্যে মানুষের হস্তক্ষেপ ও সংযোজন-বিয়োজন বড় ভূমিকা পালন করেছে। খ্রিস্ট ধর্মে যীশুর জন্মদিন উদযাপন ও ধর্মীয় প্রতীক হিসেবে ক্রুশ এর প্রচলন, গীর্জায় ক্রুশ এর আবির্ভাব ইত্যাদি খ্রিস্ট ধর্মের নবোদ্ভাবিত বিষয়, যা ঈসা (আঃ) এর প্রচারিত মূল শিক্ষায় অনুপস্থিত। নিজ ধর্মের ইতিহাসের সাথে পরিচিত আজকের অধিকাংশ খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীই তা স্বীকার করে। খ্রিস্ট ধর্মের মূল কিতাব ইঞ্জীল হতে যেমন তারা অনেক দূরে সরে গিয়েছিল, বর্তমানে কুরআনুল কারীম থেকেও মুসলিমরা দূরে সরে পড়ে বিভিন্ন দল-উপদলে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।
মুসলিমদেরকে যদি বলা হয়, সকল তরীকা, সকল মত, সকল পথ বর্জন করে একমাত্র নবীর তরীকা ধরে কুরআনুল কারীম ও সুন্নাতের অনুসরণ করো, তাহলে প্রতুত্তরে তারা বলে, বাপ-দাদার থেকে যা পেয়েছি তাই মান্য করে যাব। আমাদের হাজার হাজার আলেম রয়েছেন, হাজার হাজার মুফতী রয়েছেন, তারা কি সবাই ভুল করে যাচ্ছেন? তারা কি কুরআন হাদীস পড়ে না? ভাষাজ্ঞান কি তাদের নেই? আমরা সাধারণ মানুষ, আমাদের জ্ঞান-বুদ্ধি কম। আলেম সমাজ যা বলেছেন, সে অনুযায়ীই আমরা আমল করে যাচ্ছি।
আফসোস! আজকের বিশ্বে সকল কিছুরই যাচাই-বাছাই হচ্ছে। অথচ মানুষ ঈমান ও আমল যাচাই করতে চায় না।
৫. বিধর্মীদের সাথে সাদৃশ্য স্থাপন ও তাদের অনুকরণ :
যুগে যুগে মানুষ বিধর্মী জাতির অনুকরণ করতে গিয়ে সত্য ও ন্যায়ের পথ থেকে বিচ্যুত হয়েছে। এজন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ তার উম্মতকে বিজাতির অনুসরণ না করার জন্য সতর্ক করে দিয়েছেন। হাদীসে এসেছে,
আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, তোমরা অবশ্যই তোমাদের পূর্ববর্তীদের পন্থাগুলো (এমনভাবে) অনুসরণ করবে যে, এক এক বিঘত এক এক হাত পরিমাণও ব্যবধান হবে না। এমনকি তারা যদি গুই সাপের গর্তেও ঢুকে থাকে, তাহলে তোমরাও তাতে ঢুকবে। বর্ণনাকারী বলেন, আমরা জিজ্ঞেস করলাম, হে আল্লাহর রাসূল! ইয়াহুদি ও নাসারাদের? তিনি বললেন, তবে আর কারা হবে? [সহীহ বুখারী, হা/৭৩২০; ইবনে মাজাহ, হা/৩৯৯৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৯৮১৮; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৩৪৮।]
ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন জাতির অনুকরণ করবে, সে তাদের দলভুক্ত হবে। [আবু দাউদ, হা/৪০৩৩; মুসনাদুল বাযযার, হা/২৯৬৬; মু‘জামুল আওসাত, হা/৮৩২৭।]
অতি আফসোসের বিষয় হলেও সত্য যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর এত সতর্কবাণী থাকার পরও বর্তমান যুগের অধিকাংশ মুসলিম পশ্চিমা বিশ্বের ইয়াহুদি ও খ্রিস্টানদের অনুসরণ করতে শুরু করেছে। তারা তাদের উঠাবসা, চলাফেরা, পোশাক-পরিচ্ছদ, রীতিনীতি, আইনকানুন ইত্যাদি সকল ক্ষেত্রে তাদের অনুসরণ করতে চেষ্টা করে। অবস্থা দেখে মনে হয়, যেন তারা নিজেদেরকে মুসলিম বলে পরিচয় দিতে লজ্জাবোধ করে। যার ফলস্বরূপ আজ মুসলিমগণ ধীরে ধীরে আল্লাহ থেকে বিমুখ হয়ে যাচ্ছে। তাদের সকল কাজে আল্লাহর প্রতি ভরসা উঠে যাচ্ছে। তাদের মধ্যে বিভিন্ন ধরনের অপকর্ম স্থান করে নিয়েছে। তাদেরকে সৎ উপদেশ দিলেও তারা যুক্তি দেখিয়ে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
অতএব, সময় থাকতে এখনই আমাদের সাবধান হতে হবে। অমুসলিমদের সাথে সাদৃশ্য হয় এমন সবকিছু থেকে বিরত থাকতে হবে এবং সর্বদা মুসলিমদের সংস্কৃতির দিকে সম্পৃক্ত থাকতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সেই তাওফীক দান করুন। আমীন!
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/569/57
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।