মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে তোমাদের নিকট যা অবতীর্ণ হয়েছে তোমরা তার অনুসরণ করো এবং তাঁকে ছাড়া অন্য কোন অভিভাবকের অনুসরণ করো না। তোমরা খুব অল্পই উপদেশ গ্রহণ করে থাক। (সূরা আ‘রাফ- ৩)
‘‘আলস্নাহ তোমাদের উপর যা অবতীর্ণ করেছেন’’ এর দ্বারা উদ্দেশ্য হলো, ‘কুরআন’ এবং এর ব্যাখ্যাকারী গ্রন্থ ‘হাদীস’। কেননা এ উভয়টিই ওহীর মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ হতে অবতীর্ণ হয়েছে।
তোমাদের প্রতি তোমাদের প্রতিপালকের নিকট হতে উত্তম যা কিছু অবতীর্ণ করা হয়েছে তার অনুসরণ করো- তোমাদের উপর হঠাৎ করে শাস্তি আসার পূর্বে, যে ব্যাপারে তোমাদের কোন খবরও থাকবে না। (সূরা যুমার- ৫৫)
নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, কুরআন হলো সর্বোত্তম কিতাব, যা আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে আমাদের প্রতি অবতীর্ণ হয়েছে। আর সুন্নাহ হলো, কুরআনের ব্যাখ্যাকারী। আমাদের প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যে উত্তম কিতাব আমাদের উপর নাযিল করা হয়েছে, যারা তার অনুসরণ করবে না আল্লাহ তা‘আলা অত্র আয়াতের মাধ্যমে তাদেরকে কঠোরভাবে হুঁশিয়ার করে দেন।
বলো, তোমরা আলস্নাহর আনুগত্য করো এবং রাসূলের আনুগত্য করো। তারপর যদি তোমরা মুখ ফিরিয়ে নাও তবে তিনি শুধু তার উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য দায়ী এবং তোমাদের উপর অর্পিত দায়িত্বের জন্য তোমরাই দায়ী। আর যদি তোমরা তার আনুগত্য কর তবে তোমরা হেদায়াতপ্রাপ্ত হবে। আর রাসূলের দায়িত্ব শুধু স্পষ্টভাবে পৌঁছে দেয়া। (সূরা নূর- ৫৪)
রাসূল তোমাদেরকে যা দেয় তা তোমরা গ্রহণ করো এবং যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করে তা হতে বিরত থাকো। আর তোমরা আল্লাহকে ভয় করো; নিশ্চয় আল্লাহ শাস্তি দানে খুবই কঠোর। (সূরা হাশর- ৭)
তোমাদের মধ্যে যারা আল্লাহ ও পরকালের দিনকে ভয় করে এবং আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করে, তাদের জন্য আল্লাহর রাসূলের মধ্যে রয়েছে উত্তম আদর্শ। (সূরা আহযাব- ২১)
এখানে اُسْوَةٌ অর্থ اِقْتِدَاءٌ তথা অনুসরণ করা। সুতরাং প্রতিটি মুসলিমের উচিত রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর আদর্শে জীবন গঠন করা। আর এটাই হবে তাঁর সুন্নাতের অনুসরণ।
তোমার প্রতিপালকের শপথ! তারা ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না তাদের মধ্যে সৃষ্ট বিবাদ নিরসনে তোমাকে বিচারক হিসেবে মানবে। অতঃপর তোমার মীমাংসায় নিজেদের মনে কোন সংকীর্ণতা অনুভব করবে না এবং তা সমত্মুষ্টচিত্তে মেনে নিবে। (সূরা নিসা- ৬৫)
আলস্নাহ তা‘আলা অত্র আয়াতে কসম করে বলছেন যে, তারা ততক্ষণ পর্যমত্ম মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের বিতর্কিত বিষয়ের ফায়সালা রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর মাধ্যমে গ্রহণ করবে।
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অনুসরণ না করলে মানুষ বিভ্রামত্ম হয়ে যাবে :
তারা যদি তোমার আহবানে সাড়া না দেয়, তাহলে জানবে যে, তারা কেবল নিজেদের প্রবৃত্তিরই অনুসরণ করে। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর পথনির্দেশকে অগ্রাহ্য করে নিজ খেয়াল-খুশির অনুসরণ করে, তার চেয়ে অধিক বিভ্রান্ত আর কে হতে পারে? নিশ্চয় আল্লাহ যালিম সম্প্রদায়কে সৎপথে পরিচালিত করেন না। (সূরা ক্বাসাস- ৫০)
যে নিজেই আল্লাহর দিকে ধাবিত হয় না এবং তাঁর দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়, তাকে জোর করে সত্য ও সঠিক পথ দেখানো আল্লাহর রীতি নয়। এ ধরনের লোকেরা সত্য ও সঠিক পথ পরিত্যাগ করে বিভ্রান্তের মতো যেসব ভুল পথে ঘুরে বেড়াতে চায় আল্লাহ তাদেরকে সেসব পথে ঘুরে বেড়ানোর সুযোগ দেন। একজন সত্য সন্ধানী লোকের জন্য যেসব মাধ্যম সত্যপথ লাভের ব্যাপারে সহায়ক হয়, একজন অসত্য ও ভ্রান্ত পথ প্রত্যাশী ব্যক্তির জন্য সেগুলো বিভ্রান্তি ও গুমরাহীর কারণ হয়।
রাসূলুল্লাহ ﷺ কেবল ওহীর অনুসরণ করতেন :
রাসূলুল্লাহ ﷺ ছিলেন আমাদের মতোই একজন মানুষ। অন্যান্য মানুষের মতো তার উপরও শরীয়তের বিধান প্রযোজ্য ছিল। তিনি শরীয়তের বিষয়ে নিজের থেকে কোন কিছু বলতেন না। বরং তিনি ওহীর মাধ্যমে আল্লাহর পক্ষ হতে যা কিছু নির্দেশ পেতেন তাই বর্ণনা করতেন। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
(হে নবী! তাদেরকে) বলো, নিজ হতে এটা বদলানো আমার কাজ নয়। আমার প্রতি যা ওহী করা হয়, আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। আমি আমার প্রতিপালকের অবাধ্যতা করলে অবশ্যই আমি মহাদিবসের শাস্তির আশঙ্কা করি। (সূরা ইউনুস- ১৫)
বলো, আমি তোমাদেরকে এটা বলি না যে, আমার নিকট আল্লাহর ধনভান্ডার আছে। আর অদৃশ্য সম্বন্ধেও আমি কোনকিছু জানি না। আমি তোমাদেরকে এটাও বলি না যে, আমি ফেরেশতা; তবে আমার প্রতি যা ওহী করা হয় আমি কেবল তারই অনুসরণ করি। (সূরা আনআম- ৫০)
(হে রাসূল!) আপনি বলে দিন, আমি তো রাসূলদের মধ্যে নতুন নই। আর আমি জানি না যে, আমার সাথে ও তোমাদের সাথে কেমন আচরণ করা হবে। আমি তো শুধু তা-ই মেনে চলছি, যা আমার উপর ওহী করা হয়। আর আমি একজন স্পষ্ট সতর্ককারী ছাড়া আর কিছুই নই। (সূরা আহকাফ- ৯)
বলো, যদি আমি পথভ্রষ্ট হই, তবে তো নিজেরই ক্ষতি করব; আর যদি আমি সরল-সঠিক পথের উপর থাকি, তবে তা এজন্য সম্ভব হচ্ছে যে, আমার প্রতিপালক আমার প্রতি ওহী অবতীর্ণ করেন। নিশ্চয় তিনি সবকিছু শুনেন এবং তিনি অতি নিকটবর্তী। (সূরা সাবা- ৫০)
উপরোক্ত আয়াতসমূহ থেকে বুঝা গেল যে, ওহীর পথই হলো হেদায়াতের পথ এবং রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর পথ হলো ওহীর অনুসরণ করা। এজন্য আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের বিভিন্ন আয়াতে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আনুগত্য করতে আদেশ দিয়েছেন। সুতরাং আমাদের উপর রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আনুগত্য করা আবশ্যক।
রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আনুগত্যই আল্লাহর আনুগত্য :
রাসূলুল্লাহ ﷺ ছিলেন আল্লাহর পক্ষ হতে মানবজাতির জন্য একজন শিক্ষক। আল্লাহ তা‘আলা রাসূলুল্লাহ ﷺ কে যখন যা কিছু করতে বলেছেন, তখন তিনি তাই করেছেন। এজন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আনুগত্য করা আল্লাহর আনুগত্যেরই নামামত্মর। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
যে ব্যক্তি রাসূলের আনুগত্য করল, সে তো আল্লাহরই আনুগত্য করল এবং যে ব্যক্তি মুখ ফিরিয়ে নিল তবে (মনে রেখো) তোমাকে তাদের উপর তত্ত্বাবধায়ক হিসেবে প্রেরণ করিনি। (সূরা নিসা- ৮০)
তাদেরকে বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসতে চাও তবে আমার অনুসরণ করো। (যদি কর) তাহলে আল্লাহও তোমাদেরকে ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহসমূহ ক্ষমা করে দেবেন। আল্লাহ অতি ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু। (সূরা আলে ইমরান- ৩১)
যারা আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের আনুগত্য করবে তারা সকলেই নবী, সিদ্দীক, শহীদ ও সালেহীনদের অন্তর্ভুক্ত; তারা নিয়ামতপ্রাপ্তদের সাথে থাকবে এবং তারাই একে অপরের উত্তম সঙ্গী হবে। (সূরা নিসা– ৬৯)
পরে আমার পক্ষ হতে তোমাদের নিকট সৎপথের নির্দেশ আসলে যে আমার পথ অনুসরণ করবে, সে বিপথগামী হবে না এবং দুঃখ-কষ্টও পাবে না। (সূরা ত্বা-হা- ১২৩)
অত্র আয়াতটি প্রমাণ করে যে, যারা ওহীর অনুসরণ করবে তারা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না এবং পরকালে হতভাগাদের অমত্মর্ভুক্ত হবে না। তাছাড়া এ আয়াত এটাও প্রমাণ করে যে, কোন আলেমের অন্ধ অনুসরণ করা পথভ্রষ্টতার অমত্মর্ভুক্ত। কারণ কোন আলেমই নিষ্পাপ নন, তাদের মাধ্যমেও ভুল সংঘটিত হয়। সুতরাং তাদের থেকে আগত সব কথাই ওহীভিত্তিক বা ওহীর সঠিক ব্যাখ্যা অনুযায়ী হবে- এটাও নিশ্চিত নয়।
যারা মনোযোগ সহকারে কথা শুনে, অতঃপর তার মধ্যে যা উত্তম তার অনুসরণ করে। এরাই ঐসব লোক, যাদেরকে আল্লাহ তা‘আলা সৎপথে পরিচালিত করেছেন; আর তারাই জ্ঞানের অধিকারী। (সূরা যুমার- ১৮)
এতে কোন সন্দেহ নেই যে, কোন ব্যক্তির মতামতের চেয়ে কিতাবুলস্নাহ ও সুন্নাতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ অতি উত্তম।
মুমিনদের উক্তি তো এই- যখন তাদের মধ্যে ফায়সালা করার জন্য আল্লাহ এবং তাঁর রাসূলের দিকে আহবান করা হয় তখন তারা বলে, আমরা শ্রবণ করলাম ও আনুগত্য করলাম। মূলত তারাই সফলকাম। আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে, আল্লাহকে ভয় করে এবং তাঁর অবাধ্যতা হতে সাবধান থাকে তারাই কৃতকার্য। (সূরা নূর- ৫১, ৫২)
মুমিন নর ও মুমিন নারী একে অপরের বন্ধু, এরা সৎ কাজের নির্দেশ দেয় এবং অসৎকাজ হতে নিষেধ করে, সালাত কায়েম করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্য করে; অচিরেই আল্লাহ এদেরকে দয়া প্রদর্শন করবেন। নিশ্চয় আল্লাহ মহা পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়। (সূরা তওবা- ৭১)
কুরআন ও সুন্নার অনুসরণ না করা মুনাফিক ও কাফিদের বৈশিষ্ট্য :
হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের আনুগত্য করো এবং তাদের আনুগত্য করো, যারা তোমাদের মধ্যে ক্ষমতার অধিকারী। অতঃপর তোমাদের মাঝে যদি কোন মতবিরোধ সৃষ্টি হয়, তাহলে সে বিষয়টি ফায়সালার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাও, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান আনয়ন করে থাক; এটাই উত্তম এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অধিকতর উপযুক্ত। (সূরা নিসা- ৫৯)
আলস্নাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন করার অর্থ হলো, তাঁর কিতাবের দিকে প্রত্যাবর্তন করা। আর রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর মৃত্যুর পর তাঁর দিকে প্রত্যাবর্তন করার অর্থ হলো তাঁর সুন্নাতের দিকে প্রত্যাবর্তন করা।
আর এ বিষয়টিকে ঈমানের সাথে সম্পৃক্ত করে বলা হচ্ছে যে, اِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ অর্থাৎ যদি তোমরা আলস্নাহর প্রতি ঈমান রাখ তথা দ্বন্দ্ব নিরসনের ক্ষেত্রে কিতাবুলস্নাহ ও সুনণাতে রাসূলের দিকে প্রত্যাবর্তন কর, তাহলে সেটাই হলো প্রকৃত ঈমানের পরিচয়। সুতরাং এ থেকে বুঝা যায় যে, যদি কেউ দ্বন্দ্ব নিরসনে কুরআন ও সুন্নাহ ছাড়া অন্য কোন কিছুর দিকে প্রত্যাবর্তন করে তাহলে সে ঈমানদার নয়।
এ আয়াতটি ইসলামের ধর্মীয়, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক জীবনের মূল ভিত্তি। এখানে নিম্নলিখিত মূলনীতিগুলো স্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত করে দেয়া হয়েছে।
(এক) ইসলামী জীবনব্যবস্থায় আসল আনুগত্য লাভের অধিকারী হচ্ছেন একমাত্র আল্লাহ। একজন মুসলিমের সর্বপ্রথম পরিচয় হচ্ছে, সে আল্লাহর বান্দা; এরপর অন্য কিছু। মুসলিমের ব্যক্তিগত জীবন ও সমাজব্যবস্থা উভয়ের কেন্দ্র ও লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহর আনুগত্য করা ও বিশ্বস্ততার সাথে তাঁর নির্দেশ মেনে চলা। অন্যান্য আনুগত্য ও অনুসরণ কেবল তখনই গৃহীত হবে, যখন তা আল্লাহর আনুগত্যের বিপরীত না হবে। কারণ স্রষ্টার নাফরমানী করে কোন সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না।
(দুই) ইসলামী জীবনব্যবস্থার দ্বিতীয় ভিত্তি হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর আনুগত্য। এটি কোন স্বতন্ত্র আনুগত্য নয়; বরং আল্লাহর আনুগত্যের বাস্তব ও কার্যকর পদ্ধতি। রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রমাণ ছাড়া আল্লাহর কোন আনুগত্য গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নবী ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার আনুগত্য করল, সে মূলত আল্লাহর আনুগত্য করল। আর যে ব্যক্তি আমার নাফরমানী করল সে মূলত আল্লাহরই নাফরমানী করল। [সহীহ বুখারী, হা/২৯৫৭; সহীহ মুসলিম, হা/৪৮৫২-৫৮; নাসাঈ, হা/৪১৯৩; ইবনে মাজাহ, হা/৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৬৪৩; জামেউস সগীর, হা/১০৯৮৮; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/২০৬৭৯; মুসনাদে হুমাইদী, হা/১১৭৪; মিশকাত, হা/৩৬৬১।]
(তিন) উপরোক্ত দু’টি আনুগত্যের পর তৃতীয় আরো একটি আনুগত্য মুসলিমদের উপর ওয়াজিব। সেটি হচ্ছে, ‘উলিল আমর’ তথা দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তির আনুগত্য করা। মুসলিমদের সামষ্টিক কার্যাবলির ক্ষেত্রে দায়িত্বসম্পন্ন ও নেতৃত্বদানকারী ব্যক্তিরাই ‘উলিল আমর’-এর অন্তর্ভুক্ত। তাদের মধ্যে রয়েছেন মুসলিমদের নেতৃত্বদানকারী উলামায়ে কেরাম, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, দেশের শাসনকার্য পরিচালনাকারী প্রশাসকবৃন্দ, আদালতে রায় প্রদানকারী বিচারপতি এবং সামাজিক বিষয়ে নেতৃত্বদানকারী নেতাগণ। মোটকথা যে ব্যক্তিই মুসলিমদের নেতৃত্বদানকারী হবেন, তিনিই আনুগত্য লাভের অধিকারী হবেন। তার সাথে বিরোধ সৃষ্টি করে মুসলিমদের সামাজিক জীবনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা যাবে না। তবে এ ক্ষেত্রে শর্ত হচ্ছে, তাকে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের অনুগত হতে হবে। নবী ﷺ বলেছেন, আল্লাহ ও রাসূলের নাফরমানির ক্ষেত্রে কোন আনুগত্য নেই, আনুগত্য করতে হবে শুধুমাত্র ‘মারূফ’ বা বৈধ ও সৎকাজে। [সহীহ বুখারী, হা/৭২৫৭; সহীহ মুসলিম, হা/৪৮৭১; আবু দাউদ, হা/২৬২৭; নাসাঈ, হা/৪২০৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭২৪; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৪৫৬৭; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৮০; মিশকাত, হা/৩৬৬৫।]
(চার) এ আয়াতের চতুর্থ মূলনীতি হচ্ছে, ইসলামী জীবনব্যবস্থায় আল্লাহর হুকুম ও রাসূলের সুন্নাহই হচ্ছে মৌলিক আইন ও চূড়ান্ত সনদ। মুসলিমদের মধ্যে অথবা মুসলিম সরকার ও প্রজাদের মধ্যে কোন বিষয়ে বিরোধ দেখা দিলে তার মীমাংসার জন্য কুরআন ও সুন্নার দিকে ফিরে আসতে হবে। কুরআন ও সুন্নাহ এ ব্যাপারে যা ফায়সালা দেবে তা মেনে নিতে হবে। আর এটা ইসলামী জীবনব্যবস্থার এমন একটি বৈশিষ্ট্য, যা তাকে কুফরী জীবনব্যবস্থা থেকে সম্পূর্ণ আলাদা করে দেয়। যে ব্যবস্থায় এ জিনিসটি অনুপস্থিত থাকে সেটি হবে অনৈসলামী জীবনব্যবস্থা।
কাফিররা নিজেদের তৈরি মূলনীতি ও বিধানের মাধ্যমে তাদের যাবতীয় বিষয়ের মীমাংসা করে। এসব মূলনীতি ও বিধানের ক্ষেত্রে কোন দলীলের সমর্থন ও স্বীকৃতির প্রয়োজন আছে বলে তারা মনে করে না। অপরপক্ষে মুসলিমরা তাদের প্রতিটি ব্যাপারে সর্বপ্রথম আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে ফিরে যায়। সেখান থেকে কোন নির্দেশ পেলে তারা তার অনুসরণ করে। আর কোন নির্দেশ না পেলে কেবল এ অবস্থায়ই স্বাধীনভাবে পদক্ষেপ গ্রহণ করার সুযোগ লাভ করে। এ ব্যাপারে শরীয়ত প্রণেতার পক্ষ থেকে কোন বিধান না দেয়াই এ কথা প্রমাণ করে যে, তিনি এ ক্ষেত্রে স্বাধীনতা প্রদান করেছেন।
নিঃসন্দেহে বিদ্বানদের মতে, উলেস্নখিত আয়াতসমূহ দ্বারা এবং ওহী সংক্রামত্ম অন্যান্য আয়াত দ্বারা এ কথা প্রমাণিত যে, আলস্নাহ ও তাঁর রাসূলের প্রতি আনুগত্য করা কিতাবুলস্নাহ ও সুন্নাতে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর প্রতি আমল করার মধ্যে সীমাবদ্ধ।
সুতরাং কুরআন ও সুন্নার দলীলসমূহ প্রমাণ করছে যে, ওহীর ব্যাপারে চিমত্মা-ভাবনা করা, তা নিয়ে গবেষণা করা এবং সে ব্যাপারে জ্ঞানার্জন ও তার প্রতি আমল করা আবশ্যক। সাহাবীগণ কোন ব্যক্তির কথার কারণে রাসূলুলস্নাহ ﷺ এর সুন্নাত পরিত্যাগ করেননি। সে যে মাপেরই লোক হোক না কেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/569/43
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।