hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুল ইলম

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৩৫
মাযহাবের অন্ধ অনুসরণের কারণ
১. মাযহাবগুলো প্রতিষ্ঠিত হয়ে যাওয়া :

মাযহাবগুলো সম্পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়ে গিয়েছিল এবং সব খুঁটিনাটি মাসআলা প্রণয়ন করা হয়ে গিয়েছিল। অনুমাননির্ভর সমস্যার সমাধানকল্পে গড়ে উঠা ফিকহশাস্ত্রের ব্যাপক উন্নয়নের ফলে- ঘটেছে এবং ঘটতে পারে এমন সব কিছুর আইন বের করে তার সমাধান লিপিবদ্ধ করা হয়ে গিয়েছিল। তাই মৌলিক ইজতিহাদের প্রয়োজন খুব একটা অবশিষ্ট থাকেনি। এ কারণেই মাযহাবগুলো প্রথম দিকের বিশেষজ্ঞদের মতামত ও গ্রন্থগুলোর উপর অতিমাত্রায় নির্ভর করার একটি প্রবণতা গড়ে ওঠে।

২. রাষ্ট্রীয়ভাবে মাযহাব অনুসরণের বাধ্যবাদকতা :

আববাসী সম্রাজ্য বিভিন্ন ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রাষ্ট্রে বিভক্ত হয়ে যাওয়ার পর প্রত্যেকটি নতুন রাষ্ট্র নিজের পছন্দমতো মাযহাব অনুসরণ করতে শুরু করে। দৃষ্টামত্মস্বরূপ, মিশর শাফেয়ী মাযহাব, স্পেন মালিকী মাযহাব এবং তুরস্ক ও ভারত হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করতে থাকে। প্রত্যেকটি রাষ্ট্রই কেবল রাষ্ট্রীয় মাযহাবের অনুসারীদের মধ্য থেকে তাদের শাসক, কার্যনির্বাহক ও বিচারক নিয়োগ দিত। তাই যেসকল বিশেষজ্ঞ বিচারক হতে চাইতেন, তাদেরকে অবশ্যই রাষ্ট্রীয় মাযহাব অনুসরণ করতে হতো।

৩. ইজতিহাদের দ্বার বন্ধ করে দেয়া :

কিছু অযোগ্য ব্যক্তি দ্বীনকে নিজের খেয়ালখুশি অনুযায়ী পরিবর্তনের অসৎ উদ্দেশ্যে ইজতিহাদ করতে শুরু করে। অন্যদিকে বেশ কিছু বিষয়ে কতিপয় অযোগ্য আলেমের সিদ্ধামেত্ম জনগণ বিভ্রামত্ম হয়ে পড়ে। এসবের হাত থেকে শরীয়তকে সংরক্ষণ করার উদ্দেশ্যে সে যুগের খ্যাতনামা বিশেষজ্ঞগণ ইজতিহাদের দ্বার বন্ধ করে দেয়ার চেষ্টা করেন। ফিকহশাস্ত্র ও মাযহাবগুলোর ক্রমবিকাশের এক পর্যায়ে বিভিন্ন মাযহাবের মতপার্থক্যকে কেন্দ্র করে দলাদলি চরম আকার ধারণ করে। এক সময় তা এমন পর্যায়ে পৌঁছে যে, তৎকালীন বিশেষজ্ঞগণ ইজতিহাদ পরিত্যাগ করে চারটি মাযহাবের যে কোন একটির অনুসরণ করাকে সাধারণ মুসলিমদের উপর বাধ্যতামূলক করে দেন।

৪. ইজতিহাদের উপর কঠোর শর্তারোপ করা :

এ যুগের ফিকহশাস্ত্রের মূলনীতি তথা উসূলে ফিকহ এর উপর কিছু গ্রন্থ রচিত হয়। এসব গ্রন্থে ইজতিহাদের সঠিক পদ্ধতি ও তা প্রয়োগের শর্তাবলি স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। তবে এসব গ্রন্থে যেসকল শর্তারোপ করা হয় তা এতই কঠোর ছিল যে, কেবল তাদের সমসাময়িক বিশেষজ্ঞগণই নয়, পূর্বেকার ইজতিহাদ চর্চাকারী বিশেষজ্ঞের অনেকের মধ্যেও এসব শর্ত পূরণের যোগ্যতা ছিল না।

৫. আলেমগণের ফিকহের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়া :

এ যুগের আলেমগণ ফিকহের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এ কারণে বিশেষজ্ঞগণ পূর্ববর্তীদের গ্রন্থগুলোকে পর্যালোচনা ও সম্পাদনা করার মধ্যে নিজেদের সৃজনশীল ক্ষমতাকে সীমাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। পূর্ববর্তী বিশেষজ্ঞদের ফিকহ গ্রন্থগুলো ছিল সংক্ষিপ্ত; সেগুলোকে সহজে মুখস্থ করার সুবিধার্থে এদের অনেকগুলোকে ছন্দাকারে লিপিবদ্ধ করা হয়। এক সময় এই সারাংশগুলো সমকালীন শিক্ষার্থীদের জন্য ধাঁধায় পরিণত হয়। এরপর বিশেষজ্ঞদের পরবর্তী প্রজন্ম আবার সেসব সারাংশ ও কাব্যের ব্যাখ্যা লিখতে শুরু করেন। তার পরবর্তী বিশেষজ্ঞগণ উপরোক্ত ব্যাখ্যাগুলোর ভাষ্য রচনা করেছেন। কেউ কেউ আবার সেসব ভাষ্যের উপর টীকা সংযোজন করেছেন।

৬. ইসলামী শিক্ষায় মাযহাবি দৃষ্টিভঙ্গির প্রভাব :

ইসলামী শিক্ষায় মাযহাবি দৃষ্টিভঙ্গি হাদীস ও ফিকহশাস্ত্রের গতিশীলতাকে অনেকটা সীমিত করে দিয়েছে। এর ফলে ইসলামী আইনের পাঠ্যসূচীতে অমত্মর্ভুক্ত ফিকহের সবগুলো মৌলিক কোর্সই মাযহাব অনুযায়ী শেখানো হতো। তবে বর্তমান সময়ে হাতেগোনা কয়েকটি ব্যতিক্রমধর্মী ইসলামিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেখানে ফিকহশাস্ত্র অধ্যয়নের ক্ষেত্রে কোন বিশেষ মাযহাবকে অন্য মাযহাবের উপর প্রাধান্য দেয়া হয় না। বরং সরাসরি কুরআন ও হাদীসের ভিত্তিতে সকল মাযহাবের সমন্বয়ে পাঠ দান করা হয়।

৭. আলেমদের মধ্যে সত্যানুসন্ধানের আগ্রহ না থাকা :

আলেমগণ যতদিন পর্যমত্ম সত্যের অনুসরণকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়েছেন, দলীয় চিমত্মা-ভাবনা, গোঁড়ামি ও ব্যক্তিগত সুখ্যাতির লোভে বিপথে যাননি; ততদিন পর্যমত্ম ইসলামের মৌলিক চেতনা তাদের মধ্যে সংরক্ষিত ছিল। আলেমদের মধ্যে সংকীর্ণতা আসার পূর্ব পর্যমত্ম সত্যানুসন্ধানের নিরলস প্রচেষ্টা তাদের মধ্যে অব্যাহত ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে মাযহাবকেন্দ্রিক চিমত্মার কারণে অনেক আলেমের মধ্যে সত্যানুসন্ধানের ক্ষেত্রে অনীহা সৃষ্টি হয়। ফলে তারা চার মাযহাবের কোন এক মাযহাবের তাকলীদ করাতেই সমত্মুষ্ট থাকে।

৮. সকল মাযহাবই সম্পূর্ণ সঠিক বলে ধারণা করা :

বিদ্যমান মাযহাবের মধ্যে অসংখ্য মতপার্থক্য থাকা সত্ত্বেও এগুলোর প্রত্যেকটিকে সম্পূর্ণ সঠিক বলে বিবেচনা করা হয়। অথচ এসব মাযহাবের প্রতিষ্ঠাতা ইমামগণ নিজেরাই এমন মতপার্থক্য অপছন্দ করতেন এবং তারা কখনই অন্ধ অনুসরণকে সমর্থন করতেন না।

অনেক মানুষ মাযহাবের মতের বিপরীত হলে অনেক ক্ষেত্রে বিশুদ্ধ হাদীস পরিত্যাগ করাকেও বৈধ মনে করে। কারণ, ঐ হাদীসটিকে মেনে নেয়ার মানেই হলো এ কথা স্বীকার করে নেয়া যে, তার মাযহাবের ইমাম সিদ্ধামত্ম প্রদানের ক্ষেত্রে ভুল করেছেন। আর তাদের মতে এরূপ চিমত্মাধারা বেয়াদবি। অথচ তারা এ বিষয়টি অনুধাবন করে না যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ এর বক্তব্যের উপর তাদের ইমামের মতকে প্রাধান্য দেয়া স্বয়ং তাদের ইমামদের অবস্থানেরই সম্পূর্ণ বিপরীত। এটা মানুষকে শিরকের দিকে নিয়ে যায়। এর নাম اَلشِّرْكُ فِى تَوْحِيْدِ الْاِتِّبَاعِ অর্থাৎ প্রশ্নাতীত আনুগত্যে রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সাথে কাউকে শরীক করা।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন