hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুল ইলম

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

৫৩
হক পথ কোন্টি তা আমরা কীভাবে জানব
রাসূলুল্লাহ ﷺ তার বিদায় হজ্জের ভাষণে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন। হাদীসে বর্ণিত হয়েছে,

عَنْ مَالِك أَنَّهٗ بَلَغَهٗ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ تَرَكْتُ فِيْكُمْ أَمْرَيْنِ لَنْ تَضِلُّوْا مَا تَمَسَّكْتُمْ بِهِمَا كِتَابَ اللهِ وَسُنَّةَ نَبِيِّه

মালিক ইবনে আনাস (রহ.) হতে বর্ণিত। তার নিকট সংবাদ এসেছে যে, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমি তোমাদের মাঝে এমন দুটি জিনিস রেখে যাচ্ছি, যা শক্তভাবে ধারণ করলে তোমরা কখনো পথভ্রষ্ট হবে না। আর তা হলো ‘কিতাবুল্লাহ’ (আল্লাহর কুরআন) ও নবী ﷺ এর সুন্নাহ (হাদীস)। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/৩৩৩৮; সহীহ মুসলিম, হা/৩০০৯; মিশকাত, হা/১৮৬।]

অপর হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ ، قَالَ : قَالَ رَسُوْلُ اللهِ  : إِنِّي قَدْ تَرَكْتُ فِيكُمْ شَيْئَيْنِ لَنْ تَضِلُّوا بَعْدَهُمَا : كِتَابَ اللهِ وَسُنَّتِيْ ، وَلَنْ يَتَفَرَّقَا حَتَّى يَرِدَا عَلَيَّ الْحَوْضَ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমি তোমাদের কাছে এমন দু’টি জিনিস রেখে যাচ্ছি যতক্ষণ পর্যমত্ম তোমরা এ দু’টি জিনিস শক্তভাবে ধারণ করবে ততক্ষণ পর্যমত্ম গুমরাহ হবে না। সে দু’টি জিনিস হচ্ছে আল্লাহর কিতাব (কুরআন) ও আমার সুন্নাহ (হাদীস)। [মুয়াত্তা ইমাম মালিক, হা/২৬৪০; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৩১৯; জামেউস সগীর, হা/৫২৪৮।]

সুতরাং যদিও আমাদের মাঝে রাসূলুল্লাহ ﷺ বা সাহাবীদের কেউ উপস্থিত নেই, কিন্তু আল্লাহর কিতাব ও রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সুন্নাত আমাদের মাঝে অবশ্যই বিদ্যমান রয়েছে। সুতরাং আমাদেরকে বিরোধপূর্ণ বিষয়ে ঐ দুটি কিতাব থেকেই ফায়সালা গ্রহণ করতে হবে। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কুরআনে বলা হয়েছে,

﴿فَاِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوْهُ اِلَى اللّٰهِ وَالرَّسُوْلِ اِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللّٰهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِؕ ذٰلِكَ خَيْرٌ وَّاَحْسَنُ تَاْوِيْلًا﴾

অতঃপর তোমাদের মাঝে যদি কোন মতবিরোধ সৃষ্টি হয়, তাহলে সে বিষয়টি ফায়সালার জন্য আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাও, যদি তোমরা আল্লাহর প্রতি এবং আখিরাতের প্রতি ঈমান আনয়ন করে থাক; এটাই উত্তম এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য অধিকতর উপযুক্ত।

(সূরা নিসা- ৫৯)

এ আয়াতে ‘আল্লাহর দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাও’ বলতে কুরআনুল কারীমকে বুঝানো হয়েছে। আর ‘রাসূলের দিকে ফিরিয়ে নিয়ে যাও’ বলতে সহীহ হাদীসকে বুঝানো হয়েছে। অতএব কুরআন ও সুন্নার সহিত যার কথা মিলবে না তার কথা মানা যাবে না- সে যত বড় ব্যক্তিই হোক না কেন। আমরা কুরআন-সুন্নাহ দিয়ে আলেম-বুযুর্গ, মুরুববী, পীর-মাশায়েখ, ওলী-আওলীয়াদের পরিমাপ করব; ওলী-বুযুর্গদের দিয়ে কুরআন-সুন্নাহকে নয়। সমাজের মধ্যে দেখা যায় যে, মানুষদেরকে যখন কুরআন ও সুন্নার দিকে আহবান করা হয়, তখন তারা কুরআন ও সুন্নাহকে বাদ দিয়ে পীর-বুযুর্গ বা মুরুববীদেরকে অনুসরণ করে। আর বলে, এত বড় বড় আলেমরা কি কম বুঝেছেন? তারা কি ভুল করেছেন? ইত্যাদি। সাবধান! এ ধরনের কথা থেকে বিরত থাকতে হবে এবং নির্দ্বিধায় কুরআন ও সহীহ হাদীসের অনুসরণ করতে হবে। বিদায় হজ্জের ভাষণে রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে সে কথাই অসিয়ত করে গেছেন।

সিরাতুল মুসত্মাকীম বা সঠিক পথ চেনার অনেক উপায় রয়েছে। আমরা যদি সে পথের পরিচয় না জেনে বলি যে, সঠিক পথ পেলাম না, তবে সেটা আমাদের ভুল। এর দায় আমাদের উপরই বর্তাবে। কেননা আল্লাহ তা‘আলা সঠিক পথের সন্ধান দিয়েছেন এবং রাসূলুল্লাহ ﷺও আমাদেরকে তা দেখিয়ে গেছেন। সূরা ফাতিহার মধ্যে আমরা আল্লাহ তা‘আলার নিকট গুরুত্বপূর্ণ একটি আবেদন পেশ করে থাকি। আর তা হচ্ছে,

﴿اِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ﴾

হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়ে দিন। (সূরা ফাতিহা- ৬)

এ আয়াতের মাধ্যমে আল্লাহ তা‘আলা আমাদেরকে সঠিক পথ পাওয়ার জন্য দু‘আ শিক্ষা দিয়েছেন। এর মাধ্যমে বুঝা যাচ্ছে যে, সঠিক পথের সন্ধান দেয়ার মালিক হচ্ছেন, আল্লাহ তা‘আলা। তিনি আমাদেরকে এ দু‘আ শিখিয়ে পরের আয়াতে সেই সঠিক পথটি কাদের এবং কারা সে পথে গত হয়েছে এবং বর্তমানে কারা সে পথে চলছে- এ বিবরণও দিয়েছেন। তিনি বলেন,

﴿صِرَاطَ الَّذِيْنَ أَنْعَمْتَ عَلَيْهِمْ غَيْرِ الْمَغْضُوْبِ عَلَيْهِمْ وَلَا الضَّآلِّيْنَ﴾

তাদের পথ, যাদের উপর আপনি অনুগ্রহ করেছেন, যাদের উপর (আপনার) ক্রোধ পতিত হয়নি এবং যারা পথভ্রষ্টও নয়। (সূরা ফাতিহা- ৭)

এ আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা বলেছেন যে, সঠিক পথ হচ্ছে তাদের পথ, যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন। এখন আমাদের প্রশ্ন থাকতে পারে যে, আল্লাহ তা‘আলা কাদের প্রতি অনুগ্রহ করেছেন? এ প্রশ্নের উত্তরও আল্লাহ তা‘আলা অন্য আয়াতের মাধ্যমে আমাদেরকে জানিয়েছেন। তিনি বলেন,

﴿وَمَنْ يُّطِعِ اللهَ وَالرَّسُوْلَ فَاُولٰٓئِكَ مَعَ الَّذِيْنَ اَنْعَمَ اللهُ عَلَيْهِمْ مِّنَ النَّبِيِّيْنَ وَالصِّدِّيْقِيْنَ وَالشُّهَدَآءِ وَالصَّالِحِيْنَۚ وَحَسُنَ اُولٰٓئِكَ رَفِيْقًا﴾

যে ব্যক্তি আল্লাহ এবং রাসূলের আনুগত্য করবে, সে তো নবী, সত্যনিষ্ঠ, শহীদ ও সৎকর্মপরায়ণ এবং যাদের প্রতি আল্লাহ অনুগ্রহ করেছেন তাদেরই সঙ্গী হবে। আর তারা কতই না উত্তম সঙ্গী! (সূরা নিসা- ৬৯)

صِدِّيْقٌ (সিদ্দীক) বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায়, যে পরম সত্যনিষ্ঠ ও সত্যবাদী। তার মধ্যে সততা ও সত্যপ্রিয়তা পূর্ণমাত্রায় বিরাজ করে। নিজের আচার-আচরণ ও লেনদেনের ক্ষেত্রে সর্বদা সুস্পষ্ট ও সরল পথ অবলম্বন করে। সে সবসময় স্বচ্ছ মনে হক ও ইনসাফের সহযোগী হয়। সত্য ও ন্যায়নীতি বিরোধী যে কোন বিষয়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। এ ক্ষেত্রে সামান্যতম দুর্বলতাও দেখায় না। সে এমনই পবিত্র ও নিষ্কলুষ চরিত্রের অধিকারী হয় যে, তার আত্মীয় অনাত্মীয়, বন্ধু-শত্রু, আপন-পর কেউই তার কাছ থেকে নিখুঁত সত্যপ্রীতি, সত্যের সমর্থন ও সত্যের সহযোগিতা ছাড়া আর কিছুরই আশঙ্কা করে না।

شَهِيْدٌ (শহীদ) শব্দের আসল অর্থ হচ্ছে সাক্ষী। শহীদ বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায়, যে নিজের জীবনের সমগ্র কর্মকান্ডের মাধ্যমে তার ঈমানের সত্যতার সাক্ষ্য প্রদান করে। আল্লাহর পথে লড়াই করে প্রাণ উৎসর্গকারীকে এ কারণেই শহীদ বলা হয় যে, সে প্রাণ উৎসর্গ করে এ কথা প্রমাণ করে দেয় যে, সে যে জিনিসের উপর ঈমান এনেছিল তাকে যথার্থই সত্য মনে করত। তার কাছে দ্বীন এত বেশি প্রিয় ছিল যে, তার জন্য নিজের প্রাণ অকাতরে বিলিয়ে দিতেও দ্বিধা করেনি। আবার এমন ধরনের সত্যনিষ্ঠ ব্যক্তিদেরকেও শহীদ বলা হয়, যারা এতই নির্ভরযোগ্য হয় যে, তারা কোন বিষয়ে সাক্ষ্য দিলে তাকে নির্দ্বিধায় সত্য ও সঠিক বলে স্বীকার করে নেয়া হয়।

صَالِحٌ (সালেহ) বা সৎকর্মশীল বলতে এমন ব্যক্তিকে বুঝায়, যে তার নিজের চিন্তাধারা, আকীদা-বিশ্বাস, কথা ও কর্মের মাধ্যমে সত্য ও সরল পথে প্রতিষ্ঠিত থাকে এবং নিজের জীবনে সৎ ও সুনীতি অবলম্বন করে।

এ আয়াতের মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম যে, সঠিক পথে কারা হেটেছেন। সুতরাং আমাদেরকে তাদের পথেই হাটতে হবে। তাহলে আমরা সঠিক পথের সন্ধান পাব- ইনশাআল্লাহ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন