hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

কিতাবুল ইলম

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১৭
ইলম শিক্ষা দেয়ার ক্ষেত্রে সতর্কবাণী
মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করা যাবে না :

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرٍو قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ بَلِّغُوْا عَنِّى وَلَوْ اٰيَةً وَحَدِّثُوْا عَنْ بَنِيْ اِسْرَائِيْلَ وَلَا حَرَجَ وَمَنْ كَذَبَ عَلَيَّ مُتَعَمِّدًا فَلْيَتَبَؤَّا مَقْعَدَه مِنَ النَّارِ

আবদুল্লাহ ইবনে আমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, আমার পক্ষ হতে (মানুষের কাছে) একটি আয়াত (কথা) হলেও তা পৌঁছে দাও। আর তোমরা বনী ইসরাঈল হতে শোনা কথা বলতে পার, এতে কোন আপত্তি নেই। কিন্তু (জেনে রেখো) যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে আমার প্রতি মিথ্যারোপ করবে, সে যেন তার বাসস্থান জাহান্নামে প্রসত্মুত করে নিল। [সহীহ বুখারী, হা/৩৪৬১; তিরমিযী, হা/২৬৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৪৮৬; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/১৫২৫; মু‘জামুস সগীর, হা/৪৬২; সুনানে দারেমী, হা/৫৪২; মুসান্নাফে আবদুর রযযাক, হা/১০১৫৭; জামেউস সগীর, হা/৫১৪৮; মিশকাত, হা/১৯৮।]

এ হাদীসের মাধ্যমে রাসূলুল্লাহ ﷺ তার উম্মতকে ব্যাপকভাবে ইলম প্রচার করার ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেছেন। এমনকি কারো সামান্য পরিমাণ ইলম থাকলেও তা অপরের কাছে প্রচার করতে বলেছেন। চাই তা কুরআনের ছোট একটি আয়াত হোক বা রাসূলুল্লাহ ﷺ থেকে সাধারণ একটি হাদীস হোক। সাথে সাথে তিনি কুরআনের আয়াত ও রাসূলের হাদীস বিকৃত করা বা এসব বিষয়ে মিথ্যারোপ করা থেকে সতর্ক করে দিয়েছেন। আর এর মাধ্যমে সেসব আলেমদের যুক্তিও খন্ডন করা হয়েছে যারা বলে থাকেন যে, দ্বীনের জন্য উৎসাহ প্রদান করা এবং আল্লাহর প্রতি ভয় প্রদর্শন করার জন্য মিথ্যা হাদীস বর্ণনা করা জায়েয।

অতঃপর এ হাদীসে রাসূলুল্লাহ ﷺ বনী ইসরাঈলের ঘটনাসমূহ বর্ণনা করার অনুমতি দিয়েছেন। কেননা ইতিপূর্বে আল্লাহ তা‘আলা বনী ইসরাঈলের মাঝে অনেক নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন। ফলে তাদের মাঝে অনেক আশ্চর্যজনক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে, যার কিছু কিছু ঘটনা আল্লাহ তা‘আলা কুরআনের মধ্যে বর্ণনা করেছেন। আবার কিছু কিছু ঘটনা বনী ইসরাঈলদের বংশ পরম্পরা থেকে লোকশ্রুতির মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু এর অধিকাংশই প্রকৃত ঘটনার বিকৃত রূপ। কখনো কখনো এসব ঘটনা মানুষদেরকে খুবই আশ্চর্যান্বিত করে এবং এগুলো তাদেরকে অনেকটাই প্রভাবান্বিত করে। আর কুরআনে এসব ঘটনাবলির মধ্য হতে এমন সব ঘটনাই বর্ণনা করা হয়েছে, যেগুলো কুরআনের অনুসারীদের জন্য শিক্ষণীয়। আর হাদীসে বাকি ঘটনাগুলোর ব্যাপারে মধ্যমপন্থা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। যাতে এসব ঘটনা নিয়ে মানুষ বাড়াবাড়ি না করে এবং ফেতনায় জড়িয়ে না পড়ে।

অতএব, যেসব ঘটনা কেবল কুরআন ও হাদীসের সমর্থক সেগুলো বর্ণনা করাই উত্তম। অন্যথায় সেগুলো বর্ণনা না করাই ভালো। যাতে করে কুরআন ও হাদীসের ব্যাখ্যার ক্ষেত্রে কোন ধরনের বিকৃতি বা পরিবর্তন-পরিবর্ধন না ঘটে।

দলীল-প্রমাণের ভিত্তিতে দ্বীন প্রচার করতে হবে :

﴿وَلَا تَقْفُ مَا لَيْسَ لَكَ بِهٖ عِلْمٌؕ اِنَّ السَّمْعَ وَالْبَصَرَ وَالْفُؤَادَ كُلُّ اُولٰٓئِكَ كَانَ عَنْهُ مَسْئُوْلًا﴾

যে বিষয়ে তোমার কোন জ্ঞান নেই, তার অনুসরণ করো না। নিশ্চয় কর্ণ, চক্ষু ও হৃদয়- তাদের প্রত্যেকটি সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। (সূরা বনী ইসরাঈল- ৩৬)

এ আয়াতে আকীদা-বিশ্বাসের ক্ষেত্রে সব ধরনের ধারণা, কল্পনা ও কুসংস্কারের মূলোৎপাটন করা হয়েছে এবং ঈমানদারদেরকে শুধুমাত্র আল্লাহ ও তাঁর রাসূল প্রদত্ত জ্ঞানের ভিত্তিতে প্রমাণিত বিষয়সমূহ মেনে নেয়ার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। লোকেরা নিজেদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনে ধারণা ও অনুমানের পরিবর্তে জ্ঞানের অনুসরণ করবে- ইসলামী সমাজে এ ধারাটি ব্যাপকভাবে নৈতিক ব্যবস্থা, আইন, রাজনীতি, দেশ শাসন, শিক্ষাব্যবস্থা তথা জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়েছে। জ্ঞানের পরিবর্তে অনুমানের পেছনে চলার কারণে মানুষের জীবনে যে অসংখ্য ভ্রান্ত মত সৃষ্টি হয়, তা থেকে চিন্তা ও কর্মকে মুক্ত করা হয়েছে। নৈতিকতার ক্ষেত্রে কুধারণা থেকে দূরে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে এবং অনুমান করে কারো বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করতে নিষেধ করা হয়েছে।

عَنْ سَمُرَةَ بْنِ جُنْدُبٍ وَالْمُغِيْرَةِ بْنِ شُعْبَةَ قَالَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ حَدَّثَ عَنِّيْ بِحَدِيْثٍ يُّرَاى اَنَّه كَذِبٌ فَهُوَ اَحَدُ الْكَاذِبِيْنَ

সামুরা ইবনে জুনদুব ও মুগীরা ইবনে শু‘বা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তারা বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমার পক্ষ হতে এমন হাদীস বর্ণনা করে, অথচ সে জানে যে এটা মিথ্যা- তবে সেও দু’জন মিথ্যাবাদীদের একজন। [সহীহ মুসলিম, হা/১; তিরমিযী, হা/২৬৬২; ইবনে মাজাহ, হা/৩৮; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৮২৬৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৯৫; জামেউস সগীর, হা/১১১৪৪; মিশকাত, হা/১৯৯।]

কোন একটি হাদীস তৈরি করার পর যদি তা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর দিকে সম্বন্ধ করা হয় এবং এ বিষয়টি পরিষ্কার জানার পরও কোন ব্যক্তি যদি তা রাসূলুল্লাহ ﷺ এর হাদীস বলে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে, তাহলে সে ব্যক্তিও হাদীস তৈরিকারীদের অমত্মর্ভুক্ত হবে। তবে হাদীস উল্লেখের পর যদি বলে দেয় এ হাদীসটি তৈরিকৃত অথবা এটি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর নামে মিথ্যাচার, তবে ঐ ব্যক্তির হুকুম আলাদা।

কুরআন-সুন্নার আলোকে মতভেদের মীমাংসা করতে হবে :

﴿فَاِنْ تَنَازَعْتُمْ فِيْ شَيْءٍ فَرُدُّوْهُ اِلَى اللهِ وَالرَّسُوْلِ اِنْ كُنْتُمْ تُؤْمِنُوْنَ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِؕ ذٰلِكَ خَيْرٌ وَّاَحْسَنُ تَأْوِيْلًا﴾

যদি তোমাদের মধ্যে কোন বিষয়ে মতভেদ ঘটে, তবে তা আল্লাহ ও রাসূলের নিকট উপস্থাপন করো; যদি তোমরা আল্লাহ ও আখিরাতের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে থাক। আর এটাই উত্তম পন্থা ও পরিণামে উৎকৃষ্টতর। (সূরা নিসা- ৫৯)

﴿وَمَاۤ اَنْزَلْنَا عَلَيْكَ الْكِتَابَ اِلَّا لِتُبَيِّنَ لَهُمُ الَّذِى اخْتَلَفُوْا فِيْهِ وَهُدًى وَّرَحْمَةً لِّقَوْمٍ يُّؤْمِنُوْنَ﴾

আমি তো তোমার প্রতি কিতাব অবতীর্ণ করেছি, যারা মতভেদ করে তাদেরকে সুস্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য। আর এটি (অবতীর্ণ করেছি) মুমিনদের জন্য পথনির্দেশ ও রহমতস্বরূপ। (সূরা নাহল- ৬৪)

কুরআন-সুন্নার সিদ্ধান্তের উপর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্তের অধিকার কারো নেই :

﴿وَمَا كَانَ لِمُؤْمِنٍ وَّلَا مُؤْمِنَةٍ اِذَا قَضَى اللهُ وَرَسُوْلُهٗۤ اَمْرًا اَنْ يَّكُوْنَ لَهُمُ الْخِيَرَةُ مِنْ اَمْرِهِمْؕ وَمَنْ يَّعْصِ اللهَ وَرَسُوْلَهٗ فَقَدْ ضَلَّ ضَلَالًا مُّبِيْنًا﴾

কোন মুমিন পুরুষ কিংবা মুমিন নারীর জন্য এ অবকাশ নেই যে, যখন আল্লাহ ও তাঁর রাসূল কোন কিছুর নির্দেশ দেন, তখন সে বিষয়ে তাদের কোন নিজস্ব সিদ্ধান্তের অধিকার থাকবে। যদি কেউ আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে অমান্য করে, তবে সে প্রকাশ্য ভ্রষ্টতায় পতিত হয়। (সূরা আহ্যাব- ৩৬)

কোন হালালকে হারাম করা যাবে না :

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا لَا تُحَرِّمُوْا طَيِّبَاتِ مَاۤ اَحَلَّ اللهُ لَكُمْ وَلَا تَعْتَدُوْاؕ اِنَّ اللّٰهَ لَا يُحِبُّ الْمُعْتَدِيْنَ﴾

হে মুমিনগণ! আল্লাহ তোমাদের জন্য যেসব পবিত্র বস্তুসমূহকে হালাল করে দিয়েছেন, সেগুলোকে তোমরা হারাম করো না এবং সীমালঙ্ঘন করো না। নিশ্চয় আল্লাহ সীমালঙ্ঘনকারীদেরকে পছন্দ করেন না। (সূরা মায়েদা- ৮৭)

এ আয়াতে দু’টি কথা বলা হয়েছে। (এক) তোমরা নিজেরাই কোন জিনিস হালাল ও হারাম সাব্যস্ত করার অধিকারী হয়ে বসো না। আল্লাহ যা হালাল করেছেন তা হালাল এবং যা হারাম করেছেন তা হারাম। (দুই) খ্রিস্টান, সন্ন্যাসী, হিন্দু, বৌদ্ধ ও ভন্ডদের মতো বৈরাগ্যতা, সংসার বিমুখতা ও দুনিয়ার বৈধ স্বাদ পরিহার করার পদ্ধতি অবলম্বন করো না। ধর্মীয় মানসিকতাসম্পন্ন লোকদের মধ্যে সাধারণভাবে এ প্রবণতা দেখা গেছে যে, শরীর ও প্রবৃত্তির চাহিদা পূরণ করাকে তারা আধ্যাত্মিক উন্নতির অন্তরায় মনে করে।

আনাস ইবনে মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, কোন এক সময় তিন ব্যক্তির একটি দল রাসূলুল্লাহ ﷺ এর স্ত্রীদের কাছে তাঁর ইবাদাত সম্পর্কে জিজ্ঞেস করল। অতঃপর তাদেরকে নবী ﷺ এর ইবাদাত সম্পর্কে জানানো হলে তারা বুঝল যে, নবী ﷺ এর আমলের তুলনায় তাদের আমলের পরিমাণ খুবই কম। অতঃপর তারা বলল, আমরা নবী ﷺ এর সমকক্ষ হব কী করে? যাঁর আগের-পরের সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়েছে। অতঃপর তাদের একজন বলল, আমি আজীবন রাতভর সালাত আদায় করতে থাকব। দ্বিতীয়জন বলল, আমি সারা বছর সিয়াম পালন করব এবং কখনো বিরতি দেব না। তৃতীয় ব্যক্তি বলল, আমি সর্বদা নারী বিবর্জিত থাকব এবং কখনো বিয়ে করব না। অতঃপর রাসূলুল্লাহ ﷺ তাদের নিকট এসে বললেন, তোমরা কি সেসব ব্যক্তি যারা এমন এমন কথা বলেছ? তিনি আরো বললেন, আল্লাহর শপথ! আমি আল্লাহর প্রতি তোমাদের চেয়ে বেশি অনুগত এবং তাঁকে তোমাদের চেয়ে বেশি ভয় করি। তা সত্ত্বেও আমি সিয়াম পালন করি আবার বিরতিও দেই। রাত্রে নিদ্রাও যাই এবং মহিলাদেরকে বিয়েও করি। সুতরাং যারা আমার সুন্নাতের প্রতি অনীহা প্রকাশ করবে, তারা আমার উম্মতের অন্তর্ভুক্ত নয়। [সহীহ বুখারী, হা/৫০৬৩; সহীহ ইবনে হিববান, হা/৩১৭; বায়হাকী, হা/১৩২২৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/১৯১৮; মিশকাত, হা/১৪৫।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন