মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আমি যেসব উজ্জ্বল নিদর্শন ও হেদায়াত নাযিল করেছি সেগুলোকে কিতাবের মধ্যে মানুষের নিকট প্রকাশ করার পরও যারা ঐসব বিষয়গুলোকে গোপন করে, আল্লাহ তাদেরকে লানত করেন এবং লানতকারীগণও তাদেরকে লানত করে থাকে। (সূরা বাক্বারা- ১৫৯)
ইয়াহুদি আলেমদের বড় অপরাধ ছিল এই যে, তারা আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান সর্বসাধারণের মাঝে প্রচার করার পরিবর্তে একটি সীমিত ধর্মীয় পেশাদার গোষ্ঠীর মধ্যে সীমাবদ্ধ রেখেছিল। জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সাধারণ মানুষ তো দূরের কথা ইয়াহুদি জনতাকেও এ জ্ঞানের স্পর্শ থেকে দূরে রাখা হয়েছিল। সাধারণত অজ্ঞতার কারণে জনগণ যখন ব্যাপকভাবে ভ্রষ্টতার শিকার হলো, তখন ইয়াহুদি আলেমসমাজ জনগণের চিন্তা ও কর্মের সংস্কার সাধনে নিয়োজিত হয়নি। বরং উল্টো জনগণের মধ্যে নিজেদের জনপ্রিয়তা অব্যাহত রাখার জন্য যে ভ্রষ্টতা ও শরীয়তবিরোধী কর্ম জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ত, তাকে তারা নিজেদের কথা ও কাজের সাহায্যে অথবা নীরব সমর্থনের মাধ্যমে বৈধতার ছাড়পত্র দান করত। ফলে তারা নিজেরা পথভ্রষ্ট হতো এবং অন্যদেরকেও পথভ্রষ্ট করত। এ কারণে মুসলিমদেরকে এ ধরনের প্রবণতা ও কর্মনীতি অবলম্বন না করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সমগ্র বিশ্ববাসীকে হেদায়াত করার গুরুদায়িত্ব যে উম্মতের উপর সোপর্দ করা হয়েছে, সে হেদায়াতকে কৃপণের ধনের মতো আগলে না রেখে বেশি করে সম্প্রসারিত করাই হচ্ছে আলেমগণের কর্তব্য।
যে ব্যক্তি আল্লাহর নিকট হতে প্রাপ্ত সাক্ষ্য গোপন করেছে, তার চেয়ে বড় অত্যাচারী আর কে হতে পারে? আর তোমরা যা করছ আল্লাহ তা হতে অমনোযোগী নন। (সূরা বাক্বারা- ১৪০)
তাদের একদল জেনে বুঝে সত্যকে গোপন করেছে। (সূরা বাক্বারা- ১৪৬)
বর্তমান সমাজে যত প্রকার কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে এবং বাতিল রীতিনীতি ও অর্থহীন বিধি-নিষেধের যেসব নতুন নতুন শরীয়ত তৈরি হয়েছে- সেগুলোর জন্য দায়ী হচ্ছে সেই আলেমসমাজ, যাদের কাছে আল্লাহর কিতাবের জ্ঞান ছিল, কিন্তু তারা সাধারণ মানুষের কাছে তা পৌঁছায়নি। তারপর অজ্ঞতার কারণে লোকদের মধ্যে যখন ভুল পদ্ধতির প্রচলন হতে থাকে, তখনো তারা মুখ বন্ধ করে বসে থেকেছে এবং আল্লাহর কিতাবের বিধানের উপর আবরণ পড়ে থাকাটাই নিজেদের জন্য লাভজনক বলে মনে করেছে।
সত্য গোপনের জন্য আল্লাহ ইয়াহুদিদেরকে তিরস্কার করেছেন :
আর যখন আল্লাহ কিতাবধারীদের থেকে এ অঙ্গীকার গ্রহণ করেছিলেন যে, অবশ্যই তোমরা এটা লোকদের মধ্যে প্রকাশ করবে এবং কোন কিছুই গোপন করবে না। কিন্তু তারা এটাকে তাদের পশ্চাতে নিক্ষেপ করল এবং অল্প মূল্যে বিক্রি করে দিল; অথচ তারা যা ক্রয় করেছিল তা খুবই নিকৃষ্টতর। (সূরা আলে ইমরান- ১৮৭)
পার্থিব স্বার্থে আল্লাহর বিধান গোপন রাখার ভয়াবহ পরিণতি :
আল্লাহ কিতাবে যা নাযিল করেছেন যারা তা গোপন করে এবং অল্প মূল্যে বিক্রি করে দেয়, তারা নিজেদের পেটে আগুন ভর্তি করে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ তাদের সাথে কথা বলবেন না, তাদেরকে পবিত্রও করবেন না; সুতরাং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। তারাই সুপথের বিনিময়ে গুমরাহী এবং ক্ষমার পরিবর্তে শাস্তি ক্রয় করে নিয়েছে। সুতরাং কীভাবে তারা জাহান্নামের আযাব সহ্য করবে? (সূরা বাক্বারা- ১৭৪, ১৭৫)
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তিকে এমন কোন জিনিস সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয় যা সে জানে, অথচ সে তা গোপন রাখে (না বলে), কিয়ামতের দিন তার মুখে আগুনের লাগাম পরিয়ে দেয়া হবে। [আবু দাঊদ, হা/৩৬৬০; তিরমিযী, হা/২৬৪৯; ইবনে মাজাহ, হা/২৬৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৫৬১; জামেউস সগীর, হা/১০৬৫০; মিশকাত, হা/২২৩।]
কোন ব্যক্তি যদি কোন বিদ্বানকে দ্বীন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে এবং জিজ্ঞাসাকারী ঐ বিষয়ে ইলম ধারণ করার যোগ্যতা রাখে এবং জিজ্ঞাসার বিষয় যদি দ্বীনের আবশ্যকীয় কোন বিষয় হয় যেমন- ইসলাম, সালাতের শিক্ষা, হারাম ও হালাল তাহলে অবশ্যই সম্ভাব্যতা অনুযায়ী জিজ্ঞাসু ব্যক্তিকে উত্তর দিতে হবে। যদি জিজ্ঞাসাকারীকে উত্তর দেয়া না হয়, তাহলে কিয়ামত দিবসে বিদ্বান ব্যক্তিকে বাকশক্তিহীন চতুষ্পদ জমত্মুর মতো মুখে আগুনের লাগাম লাগিয়ে উপস্থিত করা হবে। পক্ষান্তরে যদি দ্বীনের কোন নফল বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়, তাহলে জিজ্ঞাসিত ব্যক্তির এ বিষয়ে উত্তর দেয়া বা না দেয়া ইচ্ছাধীন।
তাবেঈ যিয়াদ ইবনে হুদায়র (রহ.) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা উমর (রাঃ) আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কি বলতে পার, ইসলাম ধ্বংস করবে কোন্ জিনিসে? আমি বললাম, আমি বলতে পারি না। তখন তিনি [উমর (রাঃ)] বললেন, আলেমদের পদস্খলন, আল্লাহর কিতাব নিয়ে মুনাফিকদের ঝগড়া-বিবাদ বা তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হওয়া এবং পথভ্রষ্ট শাসকদের শাসনই ইসলামকে ধ্বংস করবে। [সুনানে দারেমী, হা/২১৪; মিশকাত, হা/২৬৯।]
অত্র হাদীসে ‘কিতাব’ শব্দ দ্বারা কুরআনকে উদ্দেশ্য নেয়া হয়েছে। হাদীসে কুরআনকে খাসভাবে বর্ণনা করার কারণ হলো- যেহেতু কুরআন নিয়ে বাদানুবাদ করা সর্বাধিক মন্দকাজ। কেননা এটা মানুষকে কুফ্রীর দিকে ঠেলে দেয়।
অত্র হাদীসে ইসলাম ধ্বংসের মূল কারণ হিসেবে আলেমদের পদস্খলনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আলেমদের পদস্খলন বলতে যেসব বিষয় বুঝায় সেগুলো হলো- আলেমদের প্রবৃত্তি অনুযায়ী ফতওয়া দেয়া এবং তা মানার জন্য জোর জবরদসিত্ম করা, ইসলামের কোন সাধারণ বিষয় নিয়ে তর্ক-বিতর্কে লিপ্ত হওয়া এবং এজন্য প্রতিযোগিতা করা, আলেমদের কর্তৃক বিদআতী আমলকে সমর্থন দেয়া, মাসআলা দানের ক্ষেত্রে দলীয় শক্তির দ্বারা প্রভাবান্বিত হওয়া, সৎ কাজের আদেশ না দেয়া এবং অসৎ কাজ থেকে নিষেধ না করা, কোন অপরাধ সংঘটিত হতে দেখে চুপ থাকা, কুফর ও ইসলামকে মিশ্রণ করে দেয়ার অপচেষ্টা করা, কাফির ও মুশরিকদের সাথে বন্ধুত্ব করা, অধিকাংশ মানুষের রায় অনুযায়ী কুফরী মতবাদকে মেনে নেয়া, ইসলামের বিভিন্ন বিষয়কে অপব্যাখ্যা করে নিজেদের মনগড়া ব্যাখ্যা প্রদান করা ইত্যাদি। যখন আলেমদের মধ্যে এসব বিষয় লক্ষ্য করা যাবে তখনই ইসলাম ধ্বংসের মুখে পতিত হবে। ইতিপূর্বে বনী ইসরাঈলদের মাঝে তাই সংঘটিত হয়েছিল। তাদের আলেমদের মধ্যে বিচ্যুতি ঘটেছিল। ফলে তারা বারবার আল্লাহর আযাবের সম্মুখীন হয়েছিল।
কোন বিষয় জানা না থাকলে জানি না বলে উত্তর দিতে হবে :
আবদুল্লাহ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হে লোকসকল! যে যা জানে সে যেন তা-ই বলে। আর যে জানে না সে যেন বলে, আল্লাহই সবচেয়ে ভালো জানেন। কারণ যে ব্যাপারে তোমার কিছু জানা নেই সে ব্যাপারে ‘‘আল্লাহই অধিকতর জ্ঞাত আছেন’’ এ কথা ঘোষণাই তোমার জ্ঞান। (কুরআনে) আল্লাহ তা‘আলা তাঁর নবীকে বলেছেন, ‘‘আপনি বলুন, আমি (দ্বীন প্রচারের বিনিময়ে) তোমাদের নিকট কোন পারিশ্রমিক চাই না। আর আমি লৌকিকতাকারীও নই’’ (সূরা সোয়াদ- ৮৬)। [সহীহ বুখারী, হা/৪৮০৯; সহীহ মুসলিম, হা/৭২৪৪; তিরমিযী, হা/৩২৫৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/৪১০৪; মু‘জামুল কাবীর লিত তাবারানী, হা/৮৯৫০; সুনানে দারেমী, হা/১৭৩; মুসনাদে হুমাইদী, হা/১২৩; মিশকাত, হা/২৭২।]
আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তিকে বিনা ইলমে (ভুল) ফতওয়া দেয়া হয়েছে, এর গোনাহ তার উপর বর্তাবে যে তাকে ফতওয়া দিয়েছে। আর যে ব্যক্তি তার কোন ভাইকে (অপরকে) কোন কাজের পরামর্শ দিয়েছে, অথচ সে জানে যে, এর কল্যাণের পথ অন্যটি, তাহলে নিশ্চয় সে তার সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। [আবু দাঊদ, হা/৩৬৫৯; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/৩৫০; জামেউস সগীর, হা/১১০১৩; বায়হাকী, হা/২০১৪০; মিশকাত, হা/২৪২।]
হাদীসে বিনা ইলমে ফতওয়া দেয়া নিষেধ করা হয়েছে। এমনকি ফতওয়াদানকারী যদি তার ইজতিহাদে ঘাটতি রেখে ভুল ফতওয়া দেয়, তাহলে তার অনেক গোনাহ হবে। হাদীসে আরো বলা হয়েছে, জেনে-শুনে কাউকে ভুল দিক-নির্দেশনা দেয়াও খিয়ানতের শামিল।
আমর ইবনে শু‘আইব (রহ.) তাঁর পিতার মাধ্যমে তাঁর দাদা হতে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, নবী ﷺ একটি দল সম্পর্কে শুনলেন, তারা পরস্পর কুরআন নিয়ে বিতর্কে লিপ্ত হয়েছে। তখন তিনি বললেন, নিশ্চয় তোমাদের পূর্বের লোকেরা এ কারণেই ধ্বংস হয়েছে। তারা আল্লাহর কিতাবের এক অংশকে অন্য অংশের দ্বারা বাতিল করার চেষ্টা করছিল। অথচ আল্লাহর কিতাব অবতীর্ণ হয়েছে তার এক অংশ অপর অংশের পরিপূরক হিসেবে ও সত্যতা প্রমাণ করার জন্য। তাই তোমরা এর এক অংশকে অপর অংশের দ্বারা মিথ্যা প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করো না, বরং তোমরা তার যতটুকু জান শুধু তা-ই বলো, আর যা তোমরা জান না তা কুরআনের আলেমের নিকট সোপর্দ করো। [মুসনাদে আহমাদ, হা/৬৭৪১; ইবনে মাজাহ, হা/৮৫; মুসান্নাফে আবদুর রাযযাক, হা/২০৩৬৭; শারহুস সুন্নাহ, হা/১২১; মিশকাত, হা/২৩৭।]
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/569/18
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।