hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-গিরাস চিন্তার উন্মেষ ও কর্মবিকাশের অনুশীলন (১ম খন্ড)

লেখকঃ তাওফীক বিন খলফ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-রেফায়ী

১৩
একটি চিন্তার উদ্রেক : সংক্ষিপ্ত সময় ও অবস্থানে
একটি ক্ষুদ্র স্থান এবং সংক্ষিপ্ত ও সীমাবদ্ধ সময়ে একবার আমি আমার চিন্তাকে নতুন কোন সাদাকায়ে জারিয়া সৃষ্টির আকাঙ্ক্ষায় নিয়োজিত করলাম। কিন্তু আমার চিন্তা আমাকে ঘিরে থাকা দেয়ালে হোঁচট খেল। তাই, আমি আমার সঙ্গী ‘ইয়াসির’-এর মাঝে চিন্তাটি ছড়িয়ে দিলাম। তাকে প্রশ্ন করলাম। লিফট দুবাই ব্যাংকের নীচ তলা থেকে আমাদেরকে পঞ্চম তলায় নিয়ে যাচ্ছিল। ...আমি তাকে লক্ষ্য করে বললাম, এইমন ক্ষুদ্র স্থানে, ক্ষুদ্র পরিসরের লিফটে তুমি কি চিন্তার সাদাকায়ে জারিয়া সৃষ্টি করতে সক্ষম?

আমার সঙ্গী দৃষ্টি ঝুকিয়ে, লিফটের মেঝেতে দৃষ্টি নিবদ্ধ করল। দীর্ঘ সময় তাকিয়ে থেকে অত:পর দৃষ্টি তুলে বলল : এই লিফটে? এমন সময়ে? অসম্ভব !

আমি বললাম : আমিও এমন সময়ে সাদাকায়ে জারিয়া সৃষ্টির মত কোন চিন্তা ধারণ করছি না। তবে তুমি হতাশ হবে না, তোমার নিয়ত যদি হয় সত্য, ইচ্ছা হয় দৃঢ় এবং সঠিক উপায়ে তুমি আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল কর, তিনি অবশ্যই তোমাকে কোন নতুন অভাবিত চিন্তায় অভিষিক্ত করবেন, এমনকি তুমি যদি কোন পাথর খন্ডেও দাঁড়িয়ে থাক।

এমন কোন পাথর কি নেই, যা থেকে পানি ও নদ প্রবাহিত হয়? বনী ইসরাইলের বারটি দলের জন্য পাথর থেকে এক আঘাতে বারটি ঝর্ণাধারা উৎসারিত হয়নি কি?

তুমি আল্লাহর কাছে সাহায্য চাও, এবং হতোদ্যম হয়ো না...।

তোমার পক্ষে এটা কি সম্ভব নয় যে, তুমি লিফটের দেয়ালে কয়েকটি দুআ লিখে দিবে, যা পড়ে মানুষ আমল করবে?

সর্বদা মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে, এমন কয়েকটি ভুল চি ‎‎ হ্নত করে তা সংশোধনের জন্য কার্যকরী কোন পদক্ষেপ নিতে পার না?

এমন কি সম্ভব নয় যে, তুমি কোন বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানাবে তারা এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নিবে এবং বিজ্ঞপ্তি আকারে এ সমস্ত স্থানগুলোতে টানিয়ে দিবে?

কিংবা তুমি কি ছোট্ট কোন অডিও তৈরী করতে পার না, যা হবে খুবই কল্যাণকর এবং যা এই লিফটগুলোতে স্থাপন করা হবে? আমরা লিফট থেকে নামলাম।

আমার বন্ধু দীর্ঘক্ষণ চুপ করে থাকল। আমার অনুভব ও চিন্তা তার মাঝে কাজ করছিল। সে নানাভাবে বিষয়টি নিয়ে ভাবছিল, এক-একটি চিন্তা ও পরিকল্পনা আমার কাছে নিয়ে আসছিল, আমি অন্য ভালো কোন চিন্তা উদ্রেকের অপেক্ষায় সেগুলো বাতিল করে দিচ্ছিলাম। অত:পর যখন খাবারের সময় হল, আমরা খাবার গ্রহণের জন্য প্রস্ত্তত হলাম, সে বলল : পেয়েছি ! আমরা একটু পরে খাবার গ্রহণ করি। আমি বললাম, বলো !

সে বলল : লিফটের দেয়ালগুলো বিজ্ঞপ্তি আকারে কিছু প্রকাশের জন্য উত্তম স্থান, সন্দেহ নেই। মানুষ যতটা সময় লিফটে কাটায়, তা একটি পুরো বিজ্ঞপ্তি পড়ে শেষ করার জন্য যথেষ্ট। নগরের বিলবোর্ডগুলো যতটা কার্যকরী, তার তুলনায় অনেক বেশি কার্যকরী ও দৃষ্টি আকর্ষণকারী হবে এগুলো। প্রতিটি লিফটে নিদেনপক্ষে তিনটি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা যায়। কিন্তু আমরা একটি ঘোষণা বা নির্দেশনা দিব। এতে অধিক দৃষ্টি পড়বে।

আমরা যখন- উদাহরণত:, জানতে পারলাম যে, কুয়েতী ব্যাংকের পঞ্চাশটিরও অধিক স্থাপনা রয়েছে, এর অধিকাংশ স্থাপনায় রয়েছে দুটি করে লিফট, তখন আমাদের এ চিন্তা কী পরিমাণ ফল বয়ে আনার সম্ভাবনা তৈরি করবে তা ভেবে শিহরিত হলাম। সুতরাং যদি আমরা এই চিন্তাকে কোন সাংগঠনিক রূপ দিতে পারি, তবে তা কী বিপুল ফল বয়ে আনবে তা নি:সন্দেহ হলাম।

পাঠক ! এটি ছিল আমাদের একটি ক্ষুদ্র চিন্তা, যা একটি ক্ষুদ্র সময়ে আমাদের চিন্তার এলাকয় উদয় হয়েছে।

সুতরাং, যখন তুমি তোমার চারপাশে নজর বুলাও, তখন হেলায় দৃষ্টি দিয়োনা, দৃষ্টির সেই ক্ষণগুলোকে অবহেলাভরে নষ্ট হতে দিয়ো না। কিছুই যেন তোমার আকাঙ্ক্ষাকে দুর্বল করে না দেয়, এবং সাদাকায়ে জারিয়ার সৃষ্টিতে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়।

উক্ত আলোচনার প্রেক্ষিতে আমরা চিন্তানৈতিক একটি বড় পরিবর্তনের দিকে যেতে পারি, আমরা এই ক্ষুদ্র পরিসর থেকে বড় পরিসরে যাত্রা করতে পারি। আমরা আশা করব, তুমি আরো বড় করে ভাববে, তুমি নিজেকে ছড়িয়ে দিবে আরো বৃহৎ অবস্থানে। সম্ভাব্য সর্বস্ব নিয়োগ করে তুমি কোন দাওয়াতী প্রক্রিয়ার উদ্ভাবন করবে, আমরা অধীর হয়ে এই আশাই করব।

কল্পনা কর, তুমি দাঁড়িয়ে আছ মানচিত্রের গোলকের সামনে, যা নির্মিত হয়েছে নগন্য প্লাস্টিকের মাধ্যমে। তুমি সত্য ও স্থির মনে আল্লাহর প্রতি রুজু কর। সেই আল্লাহর আশ্রয়, আসমানসমূহ ও যমীনে যা রয়েছে, তার একক রাজত্ব যার, সেই আল্লাহর আশ্রয়, ভূতলের যাবতীয় বিষয় যার অধীনে।

হয়তো তিনি তোমাকে এমন কোন চিন্তায় ভূষিত করবেন, যা হবে পুরো বিশ্ব ব্যাপী। যার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের তাবৎ অধিবাসীদের অন্তর সিঞ্চিত করবেন, যারা সেই মহান ব্যক্তিত্বের অনুসারী, যার ব্যাপারে কুরআনে আল্লাহ তাআলা এই ঘোষণা দিয়েছেন :-

وَمَا أَرْسَلْنَاكَ إِلاَّ رَحْمَةً لِلْعَالَمِينَ ﴿১০৭﴾

‘আর আমি তো তোমাকে সৃষ্টিকুলের জন্য রহমত হিসেবেই প্রেরণ করেছি।’ [সূরা আম্বিয়া : ১০৭]

আমি এ ব্যাপারে অবগত আছি যে, এ যুগের অধিকাংশ লোকই এই ধারণা ও চিন্তাকে অসার মনে করবে, খুবই অর্থহীন ভেবে একে উড়িয়ে দিবে।

এমন যুগেও যারা আকাঙ্ক্ষায় দৃঢ়, প্রখর বিশ্বাসী, তাদের মাঝে ন্যুনতম প্রভাব সৃষ্টির জন্য আমি বলব :

অস্তিত্বময় এ জগতে যে কোন অস্তিত্বেরই রয়েছে এক ধরনের প্রভাব, বস্ত্তর অস্তিত্ব, বিস্তৃতি ও ব্যাপকতা অনুসারে তার প্রভাব সৃষ্টি হয়। কিন্তু মৌলিক কথা হচ্ছে, আল্লাহর ইচ্ছায়, এই পৃথিবীতে আমাদের মাঝে যে ব্যক্তি কল্যাণের ধারা তৈরী করবে, সে আমাদেরই মত একজন হবে, এর বাইরে নয়। সে বরং, তার চারপাশের সাথে চুড়ান্তভাবে সংশ্লিষ্ট হবে। এভাবেই, এই পৃথিবীর শেষ অবধি কল্যাণ ও কল্যাণকর ব্যক্তিদের ধারা অব্যাহত থাকবে।

তোমার নিকট যদি পানি ভরা কোন পাত্র থাকে, আর তুমি তাতে লাঠি দিয়ে আঘাত কর, তবে ফল এই দাঁড়াবে যে, পাত্রের পানিগুলো নড়ে উঠবে, যখন লাঠিটি বের করবে, তখন আবার নড়বে। তখন তোমার স্থির বিশ্বাস দাঁড়াবে যে, লাঠির আঘাতের ক্রিয়া কেবল পানি ও তার আশপাশেই সীমাবদ্ধ থাকে না। এমনিভাবে, লাঠির ক্রিয়া বৃদ্ধি পায়, যখন পাত্র কিংবা লাঠির আকার বড় হয়। আমাদের চারপাশে, দৃষ্টির প্রান্ত জুড়ে যে জগত ছড়িয়ে আছে, তা ঐ পাত্রের মত, আর আমাদের ঊর্ধ্বে যে শূন্য তার বিশাল অস্তিত্ব বিস্তার করে আছে, তা পানির মত।

এ হচ্ছে প্রাকৃতিক যুক্তি, ঈমানী যুক্তির ক্রিয়া-বিক্রিয়া, এই জগতে, আরো অনেক বড় ও মহান, পাত্রে যে পরিমাণে ক্রিয়া করে একটি লাঠি, তার সাথে এর কোন তুলনা চলে না।

জগতের এই অস্তিত্বে মুমিনের উপস্থিতি তার প্রভাব ছড়িয়ে দেয়, যেমন অন্ধকারে আলো ছড়িয়ে পড়ে প্রতিটি অণু-পরমাণুতে। আল্লাহ তাআলা তার প্রেরিত রাসূল মুহাম্মাদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ‘আলোকিত দ্বীপাধার বলে অবহিত করেছেন। কুরআনে এসেছে :

يَا أَيُّهَا النَّبِيُّ إِنَّا أَرْسَلْنَاكَ شَاهِدًا وَمُبَشِّرًا وَنَذِيرًا ﴿৪৫﴾ وَدَاعِيًا إِلَى اللَّهِ بِإِذْنِهِ وَسِرَاجًا مُنِيرًا ﴿৪৬﴾

‘হে নবী, আমি তোমাকে পাঠিয়েছি সাক্ষ্যদাতা, সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপে,আর আল্লাহর অনুমতিক্রমে তাঁর দিকে আহবানকারী ও আলোকদীপ্ত প্রদীপ হিসেবে। ’ [সূরা আহযাব : ৪৫-৪৬]

জগতসমূহের উপর রাসূলের প্রভাবের বিস্তৃতি তুমি কি দেখ না? তুমিও সেই মহৎ ও উজ্জ্বল দ্বীপাধারের অংশ। কুরআনে এসেছে :

أَوَمَنْ كَانَ مَيْتًا فَأَحْيَيْنَاهُ وَجَعَلْنَا لَهُ نُورًا يَمْشِي بِهِ فِي النَّاسِ كَمَنْ مَثَلُهُ فِي الظُّلُمَاتِ لَيْسَ بِخَارِجٍ مِنْهَا كَذَلِكَ زُيِّنَ لِلْكَافِرِينَ مَا كَانُوا يَعْمَلُونَ ﴿১২২﴾

‘যে ছিল মৃত, অতঃপর আমি তাকে জীবন দিয়েছি এবং তার জন্য নির্ধারণ করেছি আলো, যার মাধ্যমে সে মানুষের মধ্যে চলে, সে কি তার মত যে ঘোর অন্ধকারে রয়েছে, যেখান থেকে সে বের হতে পারে না? এভাবেই কাফিরদের জন্য তাদের কৃতকর্ম সুশোভিত করা হয়।’ [সূরা আনআম : ১২২]

উম্মতের সেই মহান খুলাফায়ে রাশিদীন, তাদের কথা কি তুমি ভুলে গিয়েছ?

আবু হানীফা, মালিক, শাফেয়ী ও আহমদ- উম্মতের এমন মহান অনুসৃতগণের কথা কি তুমি বিস্মৃত হয়েছ? তারা তাদের কালে কীভাবে নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে আছেন, তা কি তোমার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে? এমনকি, তারা তাদের কাল ছাপিয়ে আমাদের কাল অবধি নিজেদের প্রভাব বিস্তার করে আছেন, কিয়ামত অবধি, আল্লাহ চাহে তো তাদের এই প্রভাব অব্যাহত থাকবে।

উম্মতের সেই যাত্রাকাল থেকে আজ অবধি যে সকল মহাপুরুষ অতিক্রান্ত হয়েছেন, এবং তাদের প্রভাব আমাদের মাঝে এখনো অটল আছে, তুমি তাদের কথাও ভুলে যেয়ো না।

পার্থিব ও বস্ত্তগত সীমার মাধ্যমে যে উক্ত প্রভাবে দৃষ্টি দিবে, সে নিশ্চয় এ আলোচনার কোন যৌক্তিক সার খুঁজে পাবে না। সে নিশ্চয় আমাদের আলোচনায় হতাশ হবে। আর যে ব্যক্তি নিজেকে আল্লাহর সাথে অঙ্গিভুত করে নিবে, যার হাতে প্রতিটি বস্ত্তর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে। এবং কায়মনোবাক্যে বিশ্বাস করবে যে, আসমানসমূহ ও যমীনের নূর হচ্ছেন আল্লাহ তাআলা, মানুষের অন্তরগুলো আললাহ তাআলার পবিত্র অঙ্গুলিসমূহের দু’ অঙ্গুলি মাঝে অবস্থিত, যেমন ইচ্ছা তিনি তাকে পরিবর্তিত করেন এবং তিনি এ ধরনের প্রভাব ও ক্রিয়াকে সকল মানুষের অন্তরের মাঝে বিস্তৃত করে দিতে সক্ষম, সে অবশ্যই এই দৃঢ় ধারণায় উপনীত হবে যে, আল্লাহ যদি বিষয়টি সহজ করে দেন, তবে তা খুবই সহজ। ইতিহাসে এর দৃষ্টান্ত ও উদাহরণ বিরল নয়।

তুমি অন্তরকে স্মরণ করিয়ে দিবে, তার সামনে তুলে ধরবে সেই মহান ব্যক্তিত্বদেরকে, যারা ইতিপূর্বে বিগত হয়েছেন, নিজেদের শারীরিক অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাওয়ার পরও এখনো যারা আমাদের অন্তরজুড়ে আছেন এবং তোমার বুদ্ধির সামনে একটি যৌক্তিক কাঠামো তুলে ধরবে, যাতে যুক্তির এলাকায় সে বরাভয় খুঁজে পায়।

চিন্তার পরিপুষ্টতার এই সুযোগ তুমি কোনভাবেই হাতছাড়া করো না, কারণ, তুমি জান না, জীবনের কতটা সময় তোমার অবশিষ্ট আছে। এ জীবন সূতোর মত, যে কোন সময় তা ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন