hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-গিরাস চিন্তার উন্মেষ ও কর্মবিকাশের অনুশীলন (১ম খন্ড)

লেখকঃ তাওফীক বিন খলফ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-রেফায়ী

৮২
(খ) দাওয়াতের কর্ম-শৈলী
দাওয়াতী কার্যক্রমের ইসলামী দাওয়াতী মারকাযগুলোর ঐতিহ্যবাহী এবং বেশ সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা রয়েছে। আমি এখানে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাচ্ছি :

সময় এবং প্রতিটি জাতি-সম্প্রদায় উপযোগী দাওয়াতী শৈলী তৈরি করা।

অমুসলিমদের কাছে, তাদের কর্মক্ষেত্র, বাড়িঘর এবং সমাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে নিজেরাই যাওয়া, তারা ইসলামী মারকাযগুলোতে এসে সাক্ষাৎ করবে- সেই অপেক্ষায় না থাকা।

বিভিন্ন উপায়ে এই দুটি লক্ষ্য বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। ইসলামী দাওয়াতী প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্যই এই বিষয়ে অনেক ওয়াকেফহাল। আমি শুধু নির্দিষ্টভাবে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করছি :

মুসলমানদেরকে অমুসলিমদের ইসলামের প্রতি দাওয়াতের কর্মে নিয়োজিত করা। স্বাভাবিকভাবেই প্রতিটি মুসলিম নারী-পুরুষ তার ধর্মকে ভালোবাসে, তা নিয়ে গর্ব বোধ করে, তার হাতে কোনো কাফির মুসলমান হোক- নিখাদভাবে তা কামনা করে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে : দাওয়াতী মারকাযগুলো কি মুসলমানদের মনে এই প্রাকৃতিক, স্বভাবজাত আশাকে কার্যকরী ও ফলপ্রসু একটা জায়গায় নিতে পারবে?

উত্তর হচ্ছে হাঁ ! এবং ইনশাল্লাহ খুব সহজেই তা পারা যায়।

এর সবচেয়ে কার্যকরী পদ্ধতি হচ্ছে মসজিদভিত্তিক তৎপরতা। মারকাযগুলোকে মসজিদের ইমাম খতীবদের সাথে একযোগে কাজ করতে হবে। তারা তাদের খুতবা-বয়ান-সালাত পরবর্তী তালিমের মাধ্যমে মুসলমানদেরকে অমুসলিমদের দাওয়াতের ক্ষেত্রে সচেতন করে তুলবেন, তাদের প্রবলভাবে উদ্বুদ্ধ করবেন এবং তাদের মনের স্বভাবজাত সুপ্ত আকাঙ্ক্ষাকে এক বিশাল দাওয়াতী কার্যক্রমে পরিণত করবেন। এরপর মারকায আসবে সুসংবাদের মত... এই স্বেচ্ছা দায়ীদের যাবতীয় ব্যয়ভার গ্রহণ করবে .. মারকায তাদের কাছে যা দাবী করবে তা হচ্ছে এই কাজে তাদের অব্যাহত থাকা, তারা যদি থাকতে না পারেন অন্তত মারকাযকে তা চালিয়ে যেতে অনুমতি দেওয়া।

হাঁ, ব্যাপারটা এত সহজ .. এই ক্ষেত্রে মারকাজের কাজ হচ্ছে সূচনার উদ্বোধন ঘটানো.. যোগাযোগ ঘটিয়ে দেওয়া।

মাঠে কর্মরত প্রতিষ্ঠানগুলো, ইসলাম গ্রহণ করতে চাই, ইসলাম বিষয়ে জানতে আগ্রহী, ইসলাম নিয়ে সংলাপ করতে চাই.. ইত্যাদি নানা ক্যাটাগরী দিয়ে কূপন তৈরি করতে পারে, যার সাথে থাকবে আগ্রহী ব্যক্তির নাম ঠিকানা। পরে কূপনগুলো মসজিদের মাধ্যমে সেচ্ছা দায়ীদের মাঝে বিলি করা হবে এবং তারা তা পূর্ণ করে মারকাজে পৌছে দিবে বা জুমার সময় মসজিদে নিয়ে এলে মারকাজের কর্মীরা গিয়ে নিয়ে আসবে।

তাছাড়া মারকায এই ধরনের সেচ্ছা দায়ীদের এবং ব্যাপক অর্থে মুসলানদেরকে নানা কর্মে স্থায়ী নিয়োগ দিতে পারে। কাদের কীভাবে নিয়োগ দেওয়া যেতে পারে- সে ব্যাপারে কিছু নির্দেশনা দিচ্ছি :

বিভিন্ন সামাজিক-ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানী প্রধান : এই ধরনের লোকেরা সাধারণত তাদের ব্যবসা বা বস্ত্ত স্বার্থের দিকটাই দেখে থাকেন। তাদের অধীনে কর্মরত শ্রমিকদের ধর্মের ব্যাপারে তাদের কোনো আগ্রহ থাকে না। বরং দায়ীরা যদি কর্মকালীন সময়ে দাওয়াত নিয়ে যান তাহলে তারা বিরক্ত হন এবং মনে করেন যে, দায়ীরা তাদের অনেক ক্ষতি করছেন।

তাই দায়ীদেরকে মিল-ফ্যাক্টরীতে না গিয়ে, অমুসলিমদের ঘরে ঘরে যেতে হবে। দৈনন্দিন বা সাপ্তাহিক একটা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে নিয়ে দায়ীরা তাদের কাছে তাদের বিশ্রামের সময় গিয়ে হাজির হতে পারেন। এভাবে একটা পর্যায়ে দায়ীরা তাদের সাথে মারকাযের একটা ভাল এবং স্থায়ী সম্পর্ক তৈরি করে নিতে পারেন।

গৃহিণী : আমার মনে হয় বাড়ীর গৃহিণীরা অনেক ক্ষেত্রে পুরুষদের চেয়ে অনেক বেশী সিরিয়াস ও আগ্রহী। তাদের আগ্রহ তাদের চেয়ে অনেক বেশী প্রজ্বলিত।

বিষয়টা মোটেও কঠিন কিছু নয়। মারকায যদি সচেতন মুসলিম নারীদেরকে এই কাজের দায়িত্ব দেন তাহালে তারা খুবই আগ্রহের সাথে এই কাজ করে যাবেন বলে আমার বিশ্বাস। এবং তারা এর জন্য কোনো পারিশ্রমিকও আশা করে না। এভাবে মহিলা দায়ীদের মাধ্যমে অতিসহজে অধিকাংশ ঘরে ঢুকে পড়া যাবে। প্রতিটি অমুসলিম ঘরে ইসলাম ঢুকে পড়বে এবং প্রতিটি মুসলিম ঘর হয়ে ওঠবে দাওয়াতী কেন্দ্র।

পর্যটক দাওয়াত : এই কার্যক্রম শুরু হবে ইয়ারপোর্ট থেকে ছড়িয়ে পড়বে হোটেল-মার্কেটে এবং শেষ হবে মারকাযে এসে।

পর্যটকরা তো মূলত আসে সেই দেশের নতুন সব জিনিস দেখতে : নতুন অপরিচিত সব স্থাপত্য সংস্কৃতি পরিদর্শন করতে। তাহলে এই সুযোগে তাদের সেই নতুনের পিপাসার মুখে আমরা ইসলামকে হাজির করি না কেন?

নানা দেশ থেকে অনেক মুসলিম পর্যটকও আসেন। তাদের নিয়ে মারকায এই ক্ষেত্রে সবসবময় বা নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ করে দিয়ে নানা ভাষায় সেমিনারের আয়োজন করতে পারে। এভাবে তাদের সাথে স্থায়ী একটা সম্পর্ক গড়ে তাদের নিয়ে দেশে দেশে দাওয়াতী কার্যক্রমের উদ্বোধন করা যেতে পারে।

দায়ী বিনিময় : ফিলিপাইনে দাওয়াতের কাজ করেন এবং তার হাতে অনেক অমুসলিম মুসলমান হয়েছেন- এমন একজন দায়ীর সাথে ব্যক্তিগত আলাপকালে আমি তার কর্মসাফল্যে সত্যিকার অর্থেই মুগ্ধ হই। তাকে জিজ্ঞেস করলাম আপনারা এই মানের দায়ীদেরকে আমাদের দেশে পাঠাতে পারেন না? তিনি বলেলেন সেটা খুবই সম্ভব। আমাদের দায়ীরা এই কাজে খুবই পারদর্শী এবং তারা প্রশিক্ষন দিয়ে এমন মানের পুরুষ-নারী গড়ে তুলতে সক্ষম।

আমাদের জানা মতে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়ার দায়ীদেরও একই অবস্থা। আমরা এই ধরনের লোকদেরকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিয়োগ দিয়ে দাওয়াতী ক্ষেত্রে ব্যাপক আশাব্যঞ্জক ফল লাভ করতে পারি।

মিশনারিগুলোর কর্মতৎপরতা পর্যবেক্ষণ এবং তাদের গোমড় উন্মোচন : দাওয়াতী প্রতিষ্ঠানগুলো স্বীকার করুক বা না করুক, দেশে বিদেশে তাদের এই কাজের সবচেয়ে বড় শত্রু হচ্ছে এই সব মিশনারিগুলো। তাদের দায়িত্ব তাদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ ও তাদের গোমড় উন্মোচন করা এবং তাদের প্রতারণা সম্পর্কে মানুষজনকে সতর্ক করে তোলা। তাদের কর্মকান্ড পর্যবেক্ষণ ও রেকর্ডিংয়ে নানা পদ্ধতি ব্যাবহার করা যেতে পারে।

রাত-দিন সর্বক্ষণ দাওয়াতী কর্মকান্ড অব্যাহত রাখা : আল্লাহ তাআলা বলেন :

قَالَ رَبِّ إِنِّي دَعَوْتُ قَوْمِي لَيْلًا وَنَهَارًا .

‘হে আমার রব, আমি আমার সম্প্রদায়কে দাওয়াত দিচ্ছি রাতে ও দিনে।’ [সূরা নূহ : ৫]

রাত-দিন দাওয়াতী কার্যক্রম অব্যাহত রাখা যেতে পারে নানাভাবে। উদাহরণত দায়ীকে চবিবশ ঘন্টা খোলা থাকবে, এমন একটা মোবাইল সেটের ব্যবস্থা করে দেওয়া যেতে পারে। তাহলে যে কোনো সময় কোনো ব্যক্তির কিছু জানার দরকার হলে তার কাছে ফোন করে জেনে নিতে পারবে। এই ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে যদি মানুষের চাহিদা এমন ব্যাপক বিস্তৃত রূপ নেয়।

যারা ইসলাম গ্রহণ করেছে তাদেরকে দায়ী বানিয়ে দেওয়া : অনেক দাওয়াতী সংগঠনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে তারা অমুসলিমদেরকে কালিমায়ে শাহাদাত পড়িয়ে মুসলমান বানিয়ে এবং তার সার্টিফিকেট দিয়েই ছেড়ে দেয়। এটা রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের দাওয়াতের পদ্ধতি ছিল না। তিনি বরং যারা ইসলাম গ্রহণ করত তাদেরকে প্রয়োজনীয় শিক্ষা দিয়ে দায়ী বানিয়ে স্বদেশে প্রেরণ করতেন। তিনি তাদের তাৎক্ষণিক আবেগকে সাথে সাথে কাজে লাগাতেন। যেমন হাদীসে এসেছে, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম খুতবা দানকালে কাতারের পিছন থেকে ডাকতে ডাকতে এক লোক এল :

انتهيت إلى النبي صلى الله عليه وسلم وهو يخطب , قال فقلت : يا رسول الله رجل غريب جاء يسأل عن دينه لا يدري ما دينه , قال فأقبل علي رسول الله صلى الله عليه وسلم وترك خطبته حتى انتهى إلي فأتي بكرسي حسبت قوائمه حديدا , قال فقعد رسول الله صلى الله عليه وسلم وجعل يعلمني مما علمه الله ثم أتي خطبته فأتم آخرها .

‘আমি নবীর কাছে পৌঁছে গেলাম। তিনি খুতবা দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, আমি বললাম : হে আল্লাহর রাসূল ! একজন ভিনদেশী অজ্ঞ লোক তার দীন সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে। তিনি বলেন, এই কথা শুনে রাসূল খুতবা ছেড়ে আমার দিকে আসতে লাগলেন। তিনি আসলে তাকে চেয়ার দেয়া হল, মনে হয় তর পা’গুলো ছিল লোহার। তিনি বলেন, তারপর রাসূল সেই চেয়ারে বসে আমাকে বুঝাতে লাগলেন। আমাকে বুঝানো শেষ করে ফিরে গিয়ে তিনি খুতবা শেষ করলেন। [মুসলিম : ৮৭৬]

নতুন অতিথিদের কর্ম সংস্থানের ব্যবস্থা করা : অধিকাংশ সময় দেখা যায় নব্য মুসলমানগণ কর্মসংস্থানহীনতা বা পূর্বে যে সব অমুসলিম প্রতিষ্ঠানে চাকরী করতেন তাদের বিরক্তির মুখে পড়েন। এটা নব্য মুসলমানদের অন্যতম প্রধান সমস্যা। মারকাযের এই লোকগুলোর কর্ম সংস্থানের বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। কমপক্ষে তাদের কাজের জন্য মারকায সুপারিশ করতে পারে।

ক্রিড়া ক্লাব : দাওয়াতের ময়দানে ক্রিড়াক্লবগুলোই হচ্ছে সবচেয়ে উপেক্ষিত ও অবহেলিত। ক্রিড়া ক্লাবগুলো গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করা এবং সেই ভিত্তিতে কার্যকরী কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা উচিত। যে সব কারণে এই দিকটা এতগুরুত্বপূর্ণ তার অন্যতম :

ক. স্কুল-মাদরাসার সময় ছাড়া অন্যান্য সময় যুবকরা যেখানে সবচেয়ে বেশী ভিড় করে তা এই ক্লাবগুলো।

গ. দাওয়াতী সংগঠনগুলোর সবচেয়ে অবহেলিত স্থান হচ্ছে এই ক্লাবগুলো।

গ. এই ক্লাবগুলোতে নানান ধরনের ভয়ংকর নাফরমানি হয়ে থাকে।

ঘ. ক্রিড়া ক্লাবগুলোর ছেলেরা হয় সবল-শক্তিশালী। তাদের এই সক্ষমতাকে যদি ভাল কাজে লাগানো যায় তাহলে তার অনেক ভাল ফল পাওয়া যেতে পারে।

এই প্রসঙ্গে আমি এই ময়দানের বিশেষজ্ঞদের আলোচনায় অনাহুত কোনো ধরনের নাক গলাতে চাইনি। মৌলিকভাবে আমি মনে করি দাওয়াতী সংগঠনগুলোর কাজই হচ্ছে এই মাঠের লোকদেরকে নানাভাবে, বর্তমানের সময় ও কালের উপযুক্ত করে এই কালে ইসলাম-প্রচার-প্রসারের উপযুক্ত করে গড়ে তোলা।

আল্লাহ তাওফীক দান করুন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন