hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-গিরাস চিন্তার উন্মেষ ও কর্মবিকাশের অনুশীলন (১ম খন্ড)

লেখকঃ তাওফীক বিন খলফ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-রেফায়ী

৫৯
একাদশ বপন: সাধারণ দরিদ্র শ্রেণী
هُوَ الَّذِي بَعَثَ فِي الأُمِّيِّينَ رَسُولًا مِنْهُمْ يَتْلُو عَلَيْهِمْ آَيَاتِهِ وَيُزَكِّيهِمْ وَيُعَلِّمُهُمُ الْكِتَابَ وَالْحِكْمَةَ وَإِنْ كَانُوا مِنْ قَبْلُ لَفِي ضَلاَلٍ مُبِينٍ ﴿2﴾

‘তিনিই সে সত্বা, যিনি নিরক্ষরদের মাঝে তাদের মধ্য থেকে একজন রাসূল প্রেরণ করেছেন, যে তাদেরকে তাঁর আয়াতসমূহ পাঠ করে শোনাবে এবং তাদেরকে পবিত্র করবে এবং তাদেরকে কিতাব ও হিকমত শিক্ষা দেবে, যদিও তারা পূর্বে স্পষ্ট ভ্রামিত্মতে ছিল’। [সূরা জুমআ : ২]

عن أبي هريرة رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : يدخل فقراء المؤمنين الجنة قبل أغنيائهم بخمس مئة عام .

‘আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, দরিদ্র মুমিনরা ধনী মুমিনদের পাঁচ শ’ বছর পূর্বে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ [আহমদ : ৭৯৪৬]

আবু আলী (আল্লাহ তাকে রহম করুন) একজন সাধারণ লোক, আমি তাকে সৎ হিসেবে জানি, যে তার দীনের উপর অটল থাকতে পেরে অত্যন্ত গর্বিত ও সম্মানিত বোধ করে। সে দুবাই নগরীর অন্তর্ভুক্ত হাতা এলাকার অধিবাসী। খুবই সাধারণ একজন ব্যক্তি, লিখন পঠন সম্পর্কে তার ছিটেফোটা জানাশোনা না থাকলে তাকে অনায়াসেই অশিক্ষিত বলা যেত।

ধবধবে সাদা দাড়ি, সুঠাম তামাটে দেহ, দরিদ্র আবু আলী আমাদের কাছ থেকে মধু ইত্যাদি ক্রয় করত, পরে খুচরা মূল্যে তা বিক্রি করে কিছু লাভ করত, এতেই তার জীবন চলত। তার সাথে আমাদের সম্পর্কের এই ছিল সূত্র।

আমাদের সাথে প্রথম সাক্ষাতের পর থেকেই তার মাঝে ইসলাম সম্পর্কে অসাধারণ এক বোধ দেখে আসছি, মাঝে মাঝে উদাহরণ ও প্রমাণ আকারে আমাদের সামনে যা হাজির করত, যদিও অধিকাংশ সময়েই সে পূর্ণ করতে পারত না, তাতেই তার গভীর বোধের প্রকাশ পেত।

আল্লাহর শপথ, যিনি ছাড়া কোন ইলাহ নেই, এ যুগে দাওয়াতের সাথে সম্পৃক্ত অনেকের তুলনায় তার কথা আমার কাছে ছিল প্রিয় ও মধুর। একদিন সে আমার কাছে এল, কিছু সময় পর সে বলল, ‘আপনারা ইলমের পথের পথিক, আপনাদের বিষয়টি অন্যরকম, আপনাদের আমানতদারী অতুলনীয়।’

অত:পর বলল, ‘একবার কোন এক সাময়িকীতে আমি পড়েছি, এক পাকিস্তানী মুসলমান জনৈকা ইহুদী যুবতীকে ইসলাম গ্রহণের পর বিয়ে করেছে। ইহুদী সে মেয়েটি ইসলামকে হৃদয়ঙ্গম করেছে অতুলনীয়ভাবে। পাকিস্তানী মুসলিমের সাথে সে পরবর্তীতে পাকিস্তানে চলে আসে। সে দেশে গিয়ে সে ইসলাম সম্পর্কে গভীর জ্ঞান অর্জন করে, পরিস্কার বোঝাবুঝির স্তরে সে নিজেকে উন্নীত করতে সক্ষম হয়। অত:পর ইসলাম সম্পর্কে অত্যন্ত উপকারী বারোটি গ্রন্থ রচনা করে।’

আমি যদিও এই লেখিকাকে জানি না, কিন্তু এই গল্প আমাকে অত্যন্ত আকর্ষণ করল, গল্পটি আমার মনে গেঁথে গেল। আমি আমার হারিয়ে যাওয়া সময়গুলোর দিকে তাকালাম, তাকালাম সেই লেখিকার প্রতিভা ও কর্মের দিকে। নিজেকে খুব ছোট মনে হল।

আবু আলী মুসলমানদের ভূমিকা সম্পর্কে অনেক কিছু উল্লেখ করল, তার কথায় আমাদের হতাশা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিই পেল।

আমি তাকে বললাম, হে আবু আলী, তুমি যা বল, তার অধিকাংশই সত্য ও বাস্তব। কিন্তু মুসলমানদের মাঝে এখনো কল্যাণ টিকে আছে। এই কল্যাণ কখনো শেষ হবার নয়। বর্তমান সময়ে মুসলমানদের জন্য যা অতীব প্রয়োজন, তাকে আমরা দুটি ভাগে ভাগ করতে পারি।

প্রথমত: দীনের ব্যাপারে প্রতিটি মুসলমানের অর্পিত দায়িত্ব সকলে ন্যূনতম পক্ষে পালনের জন্য প্রচেষ্টা চালাবে। আমাদের চোখে এমন কোন মুসলমান নেই, যে পরিপূর্ণ অক্ষম, কর্মশক্তিশূন্য ও মূর্খ, যে কিছুই জানে না, এবং কিছু করার ক্ষমতা রাখে না।

তুমি দেখবে, কেউ হয়তো সালাতের ওয়াজিবগুলো সম্পর্কে অবগত, অপর কেউ সৎকাজের আদেশ ও অসৎকাজের নিষেধ সম্পর্কে এবং তা প্রয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কে ন্যূনতম জ্ঞান রাখে, অন্য কেউ হয়তো দীনের কিছু কিছু জ্ঞান রেখে নিজের জানার পরিধিকে বাড়িয়ে নিয়েছে। এদের প্রত্যেকে যদি তার ভূমিকা যথাযথ পালন করে, আপন ক্ষমতা অনুসারে কাজ করে যায়, তবে অবশ্যই চারদিকে সৎ আবহের প্রসার ঘটবে। সুতরাং, নিজেকে কখনো ছোট ভাবার কোন কারণ নেই।

দ্বিতীয়ত: পৌঁছে দেয়া। এটি ছিল রাসূলদের উপর অর্পিত দায়িত্ব। তাদের পর এ দায়িত্ব অর্পিত হয় আলিম সমাজ ও যারা জ্ঞাত তাদের উপর। হাদীসে এসেছে : আবু কাবশা হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : ‘তোমরা আমার পক্ষ থেকে পেঁŠছে দাও, এমনকি একটি বাণী হলেও। বনী ইসরাঈল থেকে তোমরা বর্ণনা কর, কোন সমস্যা নেই। ইচ্ছাকৃতভাবে যে আমার উপর মিথ্যা বলবে, সে যেন জাহান্নামে তার অবস্থান ঠিক করে রাখে।’ [বুখারী : ৩৪৬১]

আরো স্পষ্ট করে বলবে, এ হচ্ছে এমন ব্যক্তির জন্য দায়িত্ব নির্দিষ্ট করে দেয়া, যে তার দায়িত্ব ও ভূমিকা সম্পর্কে মোটেও জ্ঞাত নয়। কখনো কখনো হয়তো তোমার নিকট এমন কিছু উন্মোচিত হয়ে যাবে, যা তোমার চেয়ে অধিক জ্ঞানীর নিকটও উন্মোচিত হবে না।

হে আবু আলী, তুমি এখন আমাকে আহলে ইলমের আমানতদারী সম্পর্কে বলছ, এবং সে নারীর গল্প শোনাচ্ছ, যে ইসলাম গ্রহণ করে সে সম্পর্কে লেখালেখি করেছে, প্রভূত সেবা করেছে। এগুলো, সন্দেহ নেই, আমার ভিতর প্রেরণা হয়ে কাজ করবে। হাটে-বাজারে যে সকল লোক ঘুরে বেড়াচ্ছে, তাদের সম্পর্কে আমাকে জানিয়ে তাদের দায়িত্বের কথা তুলছ। যদি তুমি এই চিন্তাকে লালন করে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের নিকট নিয়ে যেতে কিংবা এমন কোন সংস্থার নিকট নিয়ে যেতে যারা অমুসলিমদেরকে দাওয়াতের কাজে নিয়োজিত, অবগত করতে তাদের দায়িত্ব সম্পর্কে, যে ভাষায় তুমি আমাকে এগুলো বলেছ, ঠিক সে ভাষাতেই, তবে তা অবশ্যই তোমার জন্য সৎকাজের প্রতি ইঙ্গিতকারীর সওয়াব বয়ে আনত।

হে আবু আলী, অধিকাংশ মানুষের মনে, যখন তারা এই সমস্ত বাজারী লোকদের প্রতি দৃষ্টি প্রদান করে, দুটি বিষয় হামলে পড়ে, তৃতীয় কোন বিষয় তাদের মনে, এমনকি, উঁকিও মারে না। বিষয় দুটি হচ্ছে : ব্যবসা এবং লাম্পট্য। কিন্তু ইসলামের প্রতি তাদেরকে দাওয়াত প্রদান? নিশ্চিত থাক, এই কথা তাদের কারো মনেই আসে না।

আবু আলী, কি এমন ক্ষতি হত, যদি এই অবার্চীন লোকদের জন্য আমরা জ্ঞানমূলক কোন বক্তৃতা অনুষ্ঠানের আয়োজন করতাম? যদি তাদের সামনে ইসলাম সম্পর্কে আরো অবগতির জন্য কোন অডিও বা ভিডিও উপস্থাপন করা হত, তবে কি মোটেও লাভ হত না? যদি তাদের মাঝে ইসলামের প্রাথমিক বিষয় সম্পর্কে লিখিত কোন পুস্তক বিতরণ করা হত, তাহলে তাদের প্রাত্যহিক জীবনে ছন্দপতন ঘটে যেত?

কী এমন ক্ষতি হত?

এগুলো কি তাদের বিপুল কল্যাণ বয়ে আনত না?

হাটে-মাঠে-বাজারে তাদের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া ছিল আমাদের দায়িত্ব, বাজারগুলোতে আমরা বিভিন্ন ঘোষণা টানিয়ে দিতে পারতাম, পারতাম বিমান বন্দরগুলোতে দাওয়াতী লিফলেট বিতরণ করতে।

হে আমার দরিদ্র ভাই, আমি জানি, তুমি ফতওয়া ইত্যাদি সম্পর্কে ব্যাপক জ্ঞান রাখ না, কোন কিছু না জেনে আল্লাহ ও আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়ত সম্পর্কে উক্তি করতে তোমার অনেক ভয়। কিন্তু এগুলো দায়িত্ব এড়ানোর মত কোন যুক্তি না, এই মহান দায়িত্ব থেকে তা তোমাকে কোনভাবেই মুক্তি দিবে না। তোমার পক্ষে কি এতটুকু সম্ভব নয় যে, প্রতিদিন যেখানেই যাও, কল্যাণকর কোন বিষয়ের আলোচনা উত্থাপন করবে এবং এ ব্যাপারে সকলের মনোযোগ আকর্ষণ করবে?

হাঁ, এটি তোমার পক্ষে সম্ভব, কিন্তু পদ্ধতি কি হবে?

তুমিই তোমার আচরিত পদ্ধতি ঠিক করবে, তবে অবশ্যই আল্লাহর ইচ্ছাকে সম্মুখে স্থাপন করে, বিষয়টির ফলাফল নিরূপন করে। তোমাকে জানতে হবে, সাধারণ লোক সমাগমের এলাকায় কোন নির্দিষ্ট আলোচ্য বিষয় থাকে না, যে ব্যক্তিই প্রথমে প্রসঙ্গ তুলবে, সেই হবে উক্ত আলোচনার প্রধান ব্যক্তি। এমনিভাবে প্রসঙ্গ বদলানোও সেখানে অতীব সহজ একটি কাজ। হিকমত বা কান্ডজ্ঞান যাই বলো না, কেবল তা থাকলেই চলবে।

তুমি কি খুব সাধারণ কেউ? তবে তোমাকে বলছি, তোমার পক্ষে কি এমন সম্ভব নয় যে, তুমি তোমার বাড়ীতে একটি অডিও আর্কাইভ গড়ে তুলবে, যাতে অসংখ্য প্রয়োজনীয় ও উপকারী সিডি থাকবে। কিছু থাকবে পিতা-মাতার সাথে অসদাচারণ ও তার পরিণতি সংক্রান্ত, কিছু থাকল আত্মীয়তার সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন করা সম্পর্কে, তৃতীয় একটি থাকল, যাতে থাকবে মন্দের সামনে চুপ থাকার পরিণতি সম্পর্কে- ইত্যাদি ইত্যাদি।

তুমি এ থেকে কাউকে কাউকে শুনতে দিবে, তাকে প্রয়োজনীয় সিডি দিয়ে সহযোগিতা করবে। এতে দেখা যাবে, একদিন তুমি আলিমদের কথা শ্রবণ করে নিজেই একজন ভালো বক্তা হয়ে যাবে, বরং তুমি তোমার কর্মে অনেক আলিমকে একত্রে নিয়ে আসতে সক্ষম হবে।

এ স্তরে পৌঁছতে সক্ষম না হলেও, নিদেনপক্ষে তুমি এই সব বিষয় সম্পর্কে অবগতি লাভ করবে, প্রয়োজনগ্রস্ত কারো কাছে এগুলোকে প্রমাণ হিসেবে উপস্থাপন করতে পারবে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন