মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল-গিরাস চিন্তার উন্মেষ ও কর্মবিকাশের অনুশীলন (১ম খন্ড)
লেখকঃ তাওফীক বিন খলফ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-রেফায়ী
২১
একজন ইমাম...অনুসারীগণ যার পরিচয় জানে না
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/723/21
আমি তার পাশে বসা ছিলাম, বসে তার আলোচনা শুনছিলাম, শ্রদ্ধায় আমার মাথা নত হয়ে আসছিল, আমি অভিভূত হচ্ছিলাম। আমি তার সত্য ও দৃঢ় বক্তব্য শুনছিলাম, সে যা বলছিল তার আড়ালে লুকিয়ে ছিল অনেক অনেক কল্যাণের আকাঙ্ক্ষা, অনেক কিছু সে চেপে যাচ্ছিল, যখন সে নিজের সম্পর্কে বলছিল।
আমি ইতিপূর্বে বেশ কিছু কল্যাণমূলক কাজ নিয়ে অনেক ভেবেছি, বয়সে ত্রিশের কোঠায় পৌছে আমার ধারণা হয়েছিল, আমি মনে হয় কাঙ্ক্ষিত একটি স্তরে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছি। অথচ আমি অবাক হলাম, যখন জানতে পারলাম যে, সে পনেরো বছর বয়সেই সেই স্তরে পৌছে গিয়েছে, সে এই কল্যাণমূলক কাজ নিয়ে বিস্তৃত ভেবেছে। মাধ্যমিক ক্লাসে থাকাকালিন সে এমন কিছু ভাবতে আরম্ভ করেছে এবং মনে মনে ছক কষেছে, যা আমার কাছে অকল্পনীয়। সে তখনি ইসলামী আইন নিয়ে একটি স্কুল চালুর ছক এঁকেছে, কুরআন হিফযের জন্য একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠার জন্য কী কী প্রয়োজন তা নিয়ে প্রগাঢ় ভেবেছে, যুবকদের আত্মিক ও পারত্রিক উন্নতির জন্য কার্যকরী কিছু করার প্রেরণা বোধ করেছে ইত্যাদি।
হয়তো আল্লাহ তাআলা তার সততা কবুল করেছেন, তাকে ইমামদের ইমাম হওয়ার তাওফীক দিয়েছেন, যাতে তিনি ইমামাতের স্তরকে উজ্বল ও সুউচ্চ করে তুলতে পারেন। আমি, নি:সন্দেহে, তাকে একজন সত্য ইমাম মানি, আমার এ ধারণা কতটা সত্য তা আল্লাহই ভাল জানেন।
তুমি কি এমন মুসলিম দেশের নাম বলতে পার, প্রাতিষ্ঠানিক কল্যানমূলক দাতব্য কাজে যে কুয়েতের চেয়ে এগিয়ে গিয়েছে। আরব ভূমিতে, কিংবা বলা যায়, পুরো মুসলিম বিশ্বে প্রাতিষ্ঠানিক দাতব্য কাজে সবচেয়ে অগ্রগামী দেশ কুয়েত। কুয়েতের পর মানুষ ও অন্যান্য মুসলিম দেশগুলো কাকে অনুসরণ করবে? আল্লাহই ভাল জানেন এ উত্তম ধারা এই দেশ ও এই সময়ে কে চালু করেছে।
‘ফুহাইহীল’ দাতব্য সংস্থা ছিল সে সময়ের অন্যতম ও আদর্শ একটি সংস্থা, কুয়েতে যে সমস্ত দাতব্য সংস্থা কাজ করছে, এটি ছিল তার প্রথম দিককার। কিন্তু অদ্ভুত হচ্ছে যে ব্যক্তি এই কাজটির সূচনার প্রথম চিন্তা করেছিল এবং প্রতিষ্ঠা করেছিল, কুয়েতবাসী আজ অবধি তাকে চেনে না।
এই হচ্ছে সেই অদ্ভুদ ও অচেনা ব্যক্তি, যার কথা আমি এখন তোমাদেরকে শোনাচ্ছি। প্রাতিষ্ঠানিক অনেক কাজের সে ছিল উৎস, যদি সে মন্দ মনে না করত, এবং কষ্ট না পেত, তবে অবশ্যই তার নাম আমি এস্থলে উল্লেখ করে দিতাম, যে নাম আজ অবধি কেউ জানে না।
এই মহান ব্যক্তিত্ব আমাকে বলছিল : কুয়েক ত্যাগের দীর্ঘ কয়েকটি বছর পর আমি একবার সে সংস্থা পরিদর্শনে গেলাম। তখন আমার ভিতর নানা স্মৃতিচারণ মধুর হয়ে কাজ করছিল। আমি ‘ফুহাইহীল’ এ গেলাম, সংস্থার অফিসে গেলাম। দেখলাম, এক বিপুল কর্মচাঞ্চল্য ও তৎপরতা বিরাজ করছে। দেখে আমার অন্তর জুড়িয়ে গেল, আমি আল্লাহর প্রশংসা করলাম, ভীষণ অভিভূত হলাম।
অফিসের এক নীরব কোণে দাঁড়িয়ে আমি স্মৃতি চারণ করছিলাম, তখন একজন কর্মকর্তা এসে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার কি প্রয়োজন আছে, আমরা তোমাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারি? তুমি চাও যে, আমরা তোমার ব্যাপারে বিবেচনা করি?’ আমি বললাম, ‘না, আল্লাহ তোমাকে উত্তম প্রতিদানে ভূষিত করুন !’ অত:পর আমি সে জায়গা থেকে সরে গেলাম। কিন্তু প্রতিষ্ঠাকালে আমার সহযোগী ছিল, এমন একজন আমাকে দেখে ফেলল, সে আনন্দে চিৎকার করে বলল, ‘হে আবু আব্দুল্লাহ !’ তাই, আমি ফিরে এলাম, আমরা উভয়ে পুরোনো দিনের স্মৃতিচারণ করলাম, যে সুন্দর সময়ে আমরা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠা করেছিলাম, সে সুন্দর সময়টি আমাদের মাঝে নতুন প্রাণ নিয়ে ফিরে এল। এ বিপুল ফলাফলের জন্য আমরা আল্লাহর প্রশংসা করলাম।
আমাদের আলোচিত এই ব্যক্তি মদীনা মুনাওরায় শিক্ষা-দীক্ষা করেছে। শিক্ষা সমাপ্তির পর সে আপন দেশে গিয়ে একজন দায়ীর জীবন গ্রহণে ইচ্ছা করল। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও অর্থায়ন না হওয়ায় তার সে ইচ্ছা পূরণ হল না। কারণ, উভয় দেশের মাঝে কূটনীতিক সম্পর্ক ভাল ছিল না। তাই মিডলইষ্টের একটি দেশেই সে নিজের কর্মক্ষেত্র খুঁজে নিল। নতুন দেশে যখনি তার পা পড়েছে, সে নিজেকে জড়িয়ে নিয়েছে কল্যাণমূলক কর্মকান্ডে, প্রথমে সে একজন যুবককে দীনের পথে নিয়ে এলো। অত:পর এক মসজিদে অবস্থান নিল। ধীরে ধীরে তার অবস্থানস্থল মসজিদে যুবকদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেল, একসময় তাদের সংখ্যা দশে উপনীত হল। অত:পর সে একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করল, ছাত্রদের সংখ্যাও ক্রমে বৃদ্ধি পেতে থাকল। এভাবে ক্রমান্বয়ে সে একটি প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চবিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করল।
অবগতির জন্য বলছি যে, এটিই আজ অবধি এ দেশের একমাত্র মাদরাসা, যা ছাত্রদের যাবতীয় ব্যয় বহন করে। এর অধিকাংশ ছাত্র দরিদ্র, ইয়াতীম এবং সমাজের এমন শ্রেণী যারা সরকারী ও বেসরকারী মাধ্যমে শিক্ষা গ্রহণে সঙ্গতি রাখে না।
সে একটি কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে, যা এখন সকলের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়ার অপেক্ষা করছে। প্রতি বছর তার নেতৃত্বে একদল হাজি হজ করতে যান এবং বছরে কয়েক বার সে উমরার জন্য অনেককে পবিত্র নগরীতে নিয়ে যায়। আমি এ আলোচনায় তার যে সমস্ত কর্ম উল্লেখ করেছি, তার সবগুলোই তার স্বেচ্ছাপ্রণোদিত কাজ, সে এর জন্য কোন পারিশ্রমিক কিংবা টাকা নেয় না। যে সমস্ত টাকা এ কাজে ব্যয় হয়, তার একটি দিরহামও তার পকেটস্থ হয় না।
দাতব্য এ কাজের দীর্ঘ অব্যাহততা এবং ক্রম উন্নতির কারণে সে এর জন্য যারা নিয়োজিত থাকে, তাদেরকে স্বপ্রণোদিত কর্মী হিসেবে থাকতে বলেনি, বরং তাদের জন্য নির্দিষ্ট মাসোহারা ও ভাতা নির্ধারণ করেছে। অদ্ভুদ ব্যাপার হচ্ছে, যে দেশে সে কাজ করছে, তার অধিবাসী না হয়েও কীভাবে এতগুলো লোকের মাসোহারা, বেতন ও ভাতার ব্যবস্থা করল? এ এক অবাক ব্যাপার ! এমনকি সে যখন উক্ত দেশে আগমন করে, তখন কেবল দু পাটি জুতা, পরিধানের কাপড় এবং হাতে একটি প্রত্যয়নপত্র নিয়ে এসেছিল।
তার পক্ষে কীভাবে এটি সম্ভব হয় যে, সে কোন হাজী অথবা উমরাকারীর কাছ থেকে কোন প্রকার টাকা না নিয়ে তাদেরকে পবিত্র নগরীতে নিয়ে যায়? কেমন করে সম্ভব হল যে, সে ইতিপূর্বেই রাশিয়া, হিন্দুস্থান, ইরান ও অন্যান্য দূর দেশ থেকে শত শত হাজীকে হজ করানোর ব্যবস্থা করেছে?
আমি যা বিশ্বাস করি, সে অনুসারে এর উত্তর হচ্ছে, সে যখনই কোন নতুন কর্মক্ষেত্রের সূচনা করেছে, দাতব্য সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেছে, কিংবা মসজিদ ও মারকায নির্মাণ করেছে, তখন তার এ নির্মাণের অলক্ষ্যে প্রেরণা হয়ে কাজ করেছিল তাকওয়া, আল্লাহ-ভীতি ও তার সন্তুষ্টি।
তার নির্মিত-প্রতিষ্ঠিত মাদরাসার ইতিমধ্যেই দুটি শাখা করা হয়েছে, অচিরে আল্লাহ চাহে তো তৃতীয় শাখার কাজ উদ্ভোধন করা হবে। প্রতিটি শাখার রয়েছে দুটি শাখা- ছেলে ও মেয়েদের আলাদা আলাদা শাখা। মক্কা ও মদীনায় তার নির্মিত দুটি ভবন রয়েছে, হাজী ও উমরাকারীগণ মক্কা-মদীনায় গমন করে সেখানে অবস্থান করে। সে ইতিমধ্যে তার নির্মিত মাদরাসাটিকে বিস্তৃত করার প্লান নিয়েছে।
যে দেশে সে অবস্থান করছে, সেখানে সে সতেরোটি জামে মসজিদ ইতিমধ্যেই নির্মাণ সম্পন্ন করেছে, প্রতিটি মসজিদে তার ছাত্রদের মধ্য থেকে একজনকে ইমাম হিসেবে নিয়োগ দিয়েছে, যাকে আলাদাভাবে থাকার ও মাসোহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে। আল্লাহ তাকে এত বিপুল নিআমত দিয়েছেন যে, সে অন্যান্য মুসলিম দেশে তিন শ মসজিদ নির্মান করেছে। সে কেবল মসজিদ প্রতিষ্ঠা করেই ক্ষান্ত থাকে না, বরং, তাতে একজন তালিবুল ইলম ও একজন দায়ী নিয়োগ করে থাকে, যাদের মাধ্যমে উক্ত মসজিদটি ইলম ও দাওয়াতের কেন্দ্ররূপে গড়ে উঠে। আল্লাহ তার মাধ্যমে অসংখ্য লোকালয়, দেশ ও মানুষের অন্তর মৃত অবস্থা থেকে পুনরায় জাগিয়ে তুলেছেন।
‘সে নির্মাণ করে ব্যক্তিত্ব, অন্যেরা নির্মাণ করে লোকালয়
ব্যক্তিত্ব নির্মাণ আর লোকালয় নির্মাণের মধ্যে যোজন যোজন পার্থক্য।’
আমি এ উদাহরণটি আহলে ইলম ও তালিবুল ইলমদের সামনে পেশ করছি, যাতে আমি কয়েকটি প্রশ্ন করতে পারি :
ইলম ও দাওয়াতের মাঝে কি বিস্তর কোন পার্থক্য আছে?
আমাদের আলোচিত উক্ত ব্যক্তিত্ব যে পদ্ধতি অনুসরণ করেছে, তা কি তার জন্য অসম্মানজনক ছিল, যেমন অসম্মানজনক হত যদি সে চাকুরীকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করত? নাকি সে এ পদ্ধতি অনুসরণ করতে গিয়ে নিজের ঘুম হারাম করে দিয়েছে, বিশ্রামকে বিলুপ্ত করেছে এবং নিজেকে বিলীন করে দিয়েছে?
পার্থিব জগতের ব্যক্তিগত দারিদ্র্য কি দরিদ্রদেরকে মহতি কোন অবস্থানে পৌঁছতে বাধা হয়ে দাঁড়ায়?
নিজ দেশ ব্যতীত ভিন্ন কোন দেশে অবস্থান কি তোমার পক্ষে কোন প্রমাণ হতে পারে? নিজেকে হীন করা, সত্য গোপন করা এবং দাওয়াতের কাজে আত্মনিয়োগ করার বিপক্ষে এ কি শক্তিশালী কোন ওজর?
মহান কোন অবস্থানে উন্নীত হওয়া কি অসম্ভব, যদি আল্লাহ তোমার কিংবা তোমাদের সঙ্গী হন?
ইলমের অধিকারীগণ তাদের ইলম নিয়ে দীর্ঘ সফর করবে কিন্তু তা তাদের ততটুকুই কাজে আসবে, যতটা তারা তাদের ইলম অনুসারে শিক্ষা দিবে এবং বিশ্বাস করার পর তার মাধ্যমে কর্মের উপকার লাভের প্রয়াস চালাবে।
আল্লাহ তাআলা কিয়ামত দিবসে আহলে ইলমকে এ প্রশ্ন করবেন না যে, অমুক ফিকহী মাসআলার কী হুকুম? কিংবা এ ব্যাপারে ফতোয়া কি? অমুক আয়াতের তাফসীর কি? কিংবা এ মতটি কি শুদ্ধ?
বরং, সতদেরকে তাদের সততা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করবেন, রাসূল ও তাদের অনুসারীদেরকে দাওয়াত পৌঁছে দেয়া সম্পর্কে জানতে চাইবেন। তিনি বলবেন:
‘সত্যবাদীদেরকে তাদের সত্যবাদিতা সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করার জন্য। আর তিনি প্রস্ত্তত করে রেখেছেন কাফিরদের জন্য যন্ত্রণাদায়ক আযাব।’ [সূরা আহযাব : ৮]
এমন কত বৃহৎ ইঙ্গিত রয়েছে চুড়ান্ত হিসেবে যা বিলীন হয়ে যাবে, কত ইশারা ধ্বসে পড়বে, দেখতে বিশাল ও মহান অনেক কিছু চুড়ান্ত ওজনের দিন শূন্য ওজনের হয়ে যাবে। আমরা যাকে পার্থিবের বিচারে ক্ষুদ্র ভাবছি, যার প্রতি মোটেও ভ্রুক্ষেপ করছি না, হয়তো আল্লাহ তাকে স্মরণীয় করে দিবেন, করে নিবেন তাকে নিকটের কোন আপনজন। সুতরাং চুড়ান্ত হিসেবে দিন তার স্থান হবে অনেক অনেক ঊর্ধ্বে, তাদের হিসাব হবে ভারি, কল্পনার চেয়েও বড়। আল্লাহর দরবারে তাদের চেহারাগুলো হবে উজ্বল আলোয় উদ্ভাসিত। হাদীসে কুদসীতে আল্লাহর বাণীর অনুরূপ হবে তাদের অবস্থা :
أولئك الذين أردت، غرست كرامتهم بيدي، و ختمت عليها، فلم تر عين و لم تسمع أذن، ولم تخطر على قلب بشر .
‘এদের আমি নির্বাচন করেছি, আমি নিজ হাতে তাদের সাদকা বপন করেছি এবং তার উপর মহর মেরে দিয়েছি। কোনো চোখ তা দেখেনি, কোনো কান তা শোনেনি এবং কোনো মানুষের মনে তার ভাবনার উদয় হয়নি।’ [মুসলিম : ১৮৯]
কোন মিডিয়া কিংবা সংবাদপত্রে আমাদের আলোচিত উক্ত ইমামের আলোচনা আমার চোখে পড়েনি। কিন্তু তিনি তার কাজ করে যাচ্ছেন অনবরত, অবিশ্রাম।
আমরা কেবল তার সুমহান কর্মের পুনরাবৃত্তিরই আকাঙ্ক্ষী নই, বরং আমরা এর চেয়েও বড় কিছুর আকাঙ্ক্ষী। আমরা এমন কিছু মহান ব্যক্তিত্বের আগমনের আশা রাখি, যারা ইমামের সৃষ্টিতে অনবদ্য ভূমিকা রাখবেন, তাদের এই কর্মের মাধ্যমে ইসলামের দীনহীনতা কেটে যাবে, আধারের মাঝে আলোর উদ্ভাস হবে।
আল্লাহ তাআলা কখনো কখনো কাউকে এমন হিদায়াত দান করেন, যিনি ইলম ও হিদায়াতের ক্ষেত্রে এমন এমন আমল করেন, যার ফলে অনেক ইমামের কর্ম একজনের আমলনামায় লেখা হয়ে যায়।
এমন ব্যক্তিত্বের কর্মের সূচনা হয় একটি চিন্তার মাধ্যমে...এমন চিন্তা যা প্রথমে উদিত হয় অন্তরের অন্দর মহলে, অত:পর তা বৃষ্টির মত ছড়িয়ে পড়ে হৃদয়ের আনাচ-কানাচে, বীজের মত ছড়িয়ে পড়ে হৃদয়ের কোমল মাটিতে, অত:পর তা ফলবান হয়। এক সময় তা নিজেই বীজ দিতে আরম্ভ করে। এভাবে একটি পরম্পরা তৈরি হয়, যা কখনো শেষ হয় না।
এ বিষয়টিকেই আল্লাহ তাআলা পবিত্র কুরআনে বিশ্লেষ করেছেন। বর্ণনা দিয়েছেন এভাবে :
‘যারা আল্লাহর পথে তাদের সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উপমা একটি বীজের মত, যা উৎপন্ন করল সাতটি শীষ, প্রতিটি শীষে রয়েছে একশ’ দানা। আর আল্লাহ যাকে চান তার জন্য বাড়িয়ে দেন। আর আল্লাহ প্রাচুর্যময়, সর্বজ্ঞ।’ [সূরা বাকারা : ২৬১]
এটি হচ্ছে একটি শীষ ও বীজ, এ যুগের এক ইমামের মাঝে যার বিস্তৃত আমরা লক্ষ্য করেছি এবং আমি আলোচনার প্রয়াস পেয়েছি। সে দৃশ্য কী উত্তম হবে যার ক্ষেত্রে এ বীজটি পল্লবিত হয়ে প্রকাশ পাবে হিদায়াতের ঝান্ডা হয়ে, আলোর মহৎ দীপাধার হয়ে? যদি সে মহান ব্যক্তিত্ব পার্থিব জীবনের মাঝে এক অলৌকিক ও বাস্তব জীবন সঞ্চার করতে সক্ষম হন, তবে তা কতটা কল্যাণকর হবে?
এমন ইমাম ও মহান ব্যক্তিত্ব সৃষ্টিই ছিল রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের মহত্বের গুঢ় রহস্য।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যে মহান ব্যক্তিত্বদেরকে রেখে গিয়েছিলেন, তারা কেবল ইমামই ছিলেন না, বরং তাদের প্রতিটি সদস্য ছিলেন মুত্তাকীদের ইমাম, ইমাম সৃষ্টির পদ্ধতি তাদের জানা হয়ে গিয়েছিল।
তাদেরকে আত্মিক শিক্ষাদানের বিষয়টি ব্যক্তি উন্নয়নের মাঝেই সীমাবদ্ধ ছিল না, অন্যকে ইমামরূপে তৈরি, বরং, ছিল তাদের শিক্ষার একান্ত ও গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তাদের বপন ছিলেন তাবেয়ীগণ, তারাই তাদের কর্মের ও সৃষ্টির উত্তম দৃষ্টান্ত।
ইমাম সৃষ্টি ছিল নবীগণের প্রধান ও অন্যতম দায়িত্ব। কুরআনে এসেছে :
‘আর আমি তো মূসাকে কিতাব দিয়েছিলাম, অতএব তুমি তার সাক্ষাতের ব্যাপারে সন্দেহে থেকো না। আর আমি ওটাকে বনী ইসরাঈলের জন্য হিদায়াতস্বরূপ করেছিলাম।
আর আমি তাদের মধ্য থেকে বহু নেতা করেছিলাম, তারা আমার আদেশানুযায়ী সৎপথ প্রদর্শন করত, যখন তারা ধৈর্যধারণ করেছিল। আর তারা আমার আয়াতসমূহের প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস রাখত।’ [সূরা সিজদা : ২৩-২৪]
এ হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত সম্মান, আল্লাহ তাআলা নবীদের অনুসারীদের যাকে ইচ্ছা তা দান করেন।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/723/21
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।