মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আল-গিরাস চিন্তার উন্মেষ ও কর্মবিকাশের অনুশীলন (১ম খন্ড)
লেখকঃ তাওফীক বিন খলফ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-রেফায়ী
২৪
এই চিন্তার লক্ষ্য ও গুরুত্ব
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/723/24
প্রথমত: হজের জন্য এভাবে পদক্ষেপ নেয়া এবং এ বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করা, বলা যায়, এক অর্থে বিরল। বিশেষত দেশের বাইরে থেকে হাজী হিসেবে এই শ্রেণীকে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি তো কারো চিন্তাতেই হানা দেয় না। সাধারণত, যাদেরকে হাজীর সফরে সঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করা হয়, তাদের অধিকাংশই থাকে বয়স্ক নারী-পুরুষ। কিন্তু যুবক-যুবতীদেরকে নিয়ে হাজীদের জামাআতের চিন্তা, গুরুত্ব থাকা সত্বেও, সবার নজর এড়িয়ে যাচ্ছে।
দ্বিতীয়ত: এমন একদলকে হজের ফরজ আদায়ে সহযোগিতা করা, যাদের উপর শরীয়তের আইন মোতাবেক হজ ফরজ হয়ে গিয়েছে। সাধারণ মানুষের আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের ব্যাপারে অবহেলা, হজের ফরজ আদায়ে অযথা বিলম্বকরণ, সক্ষম ও বালেগ হওয়া সত্বেও ‘এখনো সময় হয়নি’- এই ধারণার বশবর্তী হওয়া ইত্যাদি কারণে ছাত্ররা সাধারণত হজের ব্যাপারে আগ্রহী থাকে না। সাধারণের মাঝে প্রচলিত আরেকটি ধারণা হল, হজের পূর্বে অবশ্যই বিবাহ করতে হবে, কিংবা হজের আগে পড়াশোনা পাট চুকাতে হবে। এটি খুবই দুর্লভ যে, শিক্ষা সমাপ্তির পূর্বে কিংবা বিবাহের পূর্বে কেউ হজ সম্পন্ন করেছে।
মানুষের ধারণা, হজ যথাসম্ভব বিলম্বে আদায় করতে হবে। যেন ইসলামের এই গুরুত্বপূর্ণ রুকনটি বালেগ হওয়া ও সক্ষমতার সাথে সম্পৃক্ত নয়।
এ ধরনের হজের সফরের ফলে ন্যূনতম যে ফললাভ হবে, তা হল, এমন একদল ছাত্রদের পক্ষে হজের ফরজ আদায় করা হবে, যাদের উপর হজ ফরজ হয়ে গিয়েছে।
তৃতীয়ত: ছাত্রদেরকে যদি ব্যবস্থা করে দেয়া হয়, এবং হজে নিয়ে যাওয়া হয়, তাহলে তা তাদের অন্তরে কী কী প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে, সে ব্যাপারে আমাদের অভিজ্ঞতা রয়েছে। সহজ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে যদি তাদেরকে সঠিক উপায়ে তালিম তরবিয়ত দেয়া হয় তবে অবশ্যই তা তাদের হৃদয়ে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।
মাধ্যমিক স্কুল থেকে একবার আমরা পনেরো জনের একটি গ্রুপ নিয়ে হজে গিয়েছিলাম। এই সফরের ফলে তাদের মাঝে এক অভূতপূর্ব ক্রিয়া দেখতে পেলাম, যেন তাদের বিশ্বাস দৃঢ়তর হয়ে গিয়েছিল। এমনকি এদের কেউ কেউ ইহরাম শুরু করার কালে তালবিয়া পাঠের সময় উচ্চ স্বরে কেঁদে উঠছিল, কেউ আমাদেরকে রাসূলের সাহাবীদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিল, যখন তারা জিবরাইলের প্রতিউত্তরে রাসূলের ডাকের অনুসরণ করছিল। সালাতে তাদের অগ্রগামিতা, ইতিকাফ এবং আল্লাহর আনুগত্যে অসীম ধৈর্য- তাদের এ বিষয়গুলোর সামনে আমাদের নিজেদেরকে খুবই ক্ষুদ্র মনে হচ্ছিল। আমরা ছিলাম অভিভূত।
আরাফা দিবসে এদের অন্য একটি অভূতপূর্ব আচরণ আমাদেরকে নাড়া দিল। আরাফায় আসবাবপত্র রেখে আমরা যখন এক সাথে যোহর ও আছরের সালাত আদায় করলাম, তাদের অধিকাংশই দুহাত তুলে আল্লাহর দরবারে মুনাজাত আরম্ভ করল, সূর্য হেলে যাওয়ার পর তাদের সে দুআর সূচনা হয়েছিল, সূর্যাস্ত পর্যন্ত তাদের তা শেষ হয়নি। কেউ কেউ খাবার ও পুনরায় ওজু করার জন্য কেবল মাঝে ক্ষণকাল বিরতি দিয়েছিল। রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেমন বর্ণিত হয়েছে, তারা কান্নায়, অশ্রুতে এবং আল্লাহভীতিতে নিজেদেরকে এবং আমাদেরকে কাঁপিয়ে দিয়েছিল।
ঈমানের এই অভূতপূর্ব প্রস্রবনই ছিল আমাদের সে সফরের প্রাপ্তি, সন্দেহ নেই, এমন যে কোন সফরেরই একই চিত্র পাওয়া যাবে। এটুকু প্রাপ্তিই, আমি মনে করি, এ ধরনের সফরের আয়োজনের প্রেরণার জন্য যথেষ্ট।
চতুর্থত: ইসলামী আচার ব্যবহারের পুনর্জীবন। সাধারণত, হাজীরা তাদের সফরে দায়িত্ব পালন করে এমনভাবে, যেমনভাবে একজন চাকুরিজীবি তার দায়িত্ব পালন করে যায়, সেখানে আত্মিক আচরণীয় দিকগুলো ততটা কার্যকরী হয় না। তাদের মাঝে অনেক আচরণীয় বৈপরীত্ব দেখা দেয়। কিন্তু ছাত্রদের মাঝে এ দিকটি অন্যভাবে আমরা লক্ষ্য করি। এরা অন্যান্য হাজীদেরকে সেবার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভের আশা করে, সে লক্ষ্যে কাজ করে। এরা কেবল ততটা ইবাদাতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখে না, যতটা হজের নিয়মের অধীনে রাখা হয়েছে। তারা কেবল সালাত, যিকর-আযকার ও কুরআন তিলাওয়াতেই মগ্ন থাকে না, বরং তারা একটি সর্বাঙ্গীন আচরণীয় জীবন গঠনে নিজেকে তৈরি করে। আমরা যে আচরণীয় উৎকর্ষের আলোচনা করেছি, তা কেবল কল্যাণমূলক কাজে এগিয়ে যাওয়ার মাঝেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং, এ জন্যে প্রয়োজন অনর্থক বিতন্ডা পরিহার, অকার্যকর বিষয়গুলো এড়িয়ে যাওয়া : যেমন- অনর্থক কথা, দৃষ্টি, শ্রবণ ও কাজ পরিহার করা।
পঞ্চমত: ভ্রাতৃত্বের নির্মাণ। যুবকরা সাধারণত বিক্ষিপ্তভাবে মিলিত হলেও, খুব কমই তারা ইসলামী ভ্রাতৃত্বের বাস্তবতায় মিলিত হয়। তাই, তুমি দেখবে, তারা একত্রে মিলিত হলেও তাদের মাঝে এক ধরনের বিক্ষিপ্ততা মানসিক অনৈক্য কাজ করে। তারা আদব ও স্বভাবের বিরোধী অনেক কাজে লিপ্ত হয়ে পড়ে। ভ্রাতৃত্বের বহির্ভূত অনেক আচরণ তাদের এ বিক্ষিপ্ততার মূল কারণ। কিন্তু হজে তাদের মাঝে সাধারণ যে পরিবেশ বিরাজ করে, তা ভ্রাতৃত্বের পরিবেশ, বিনয় ও বিনম্রতার পরিবেশ। তখন তারা অপরের প্রতি ছাড় দেয়ার মানসিকতা ধারণ করে, অপরের সেবায় তারা বিপুল আনন্দ লাভ করে। এই পরিবেশ থেকে তারা যে আচরণীয় উৎকর্ষ লাভ করে, তা তাদেরকে নতুন করে জীবনকে শোভাময় করে তুলে।
হজের ঈমানী ও চারিত্রিক শোভাময় পরিবেশ এই যুগ ও সময়ের ব্যাধীর উত্তম প্রতিশেধক। কারণ, এই প্রতারণার যুগে পবিত্র ও পবিত্রতা আনয়নকারী পরিবেশ হজের সময় সকলের মাঝে বিরাজ করে।
অপর মুসলিম ভাইয়ের কথা সম্পূর্ণ বিস্মৃত হওয়া এ সময়ের অন্যতম একটি সমস্যা ও ভয়াবহ দিক। এই সময়ের চরিত্র এমন, যা মানুষকে এক কোণে ঠেলে দেয়, ফলে মানুষ অপরের কথা ভুলে নিজেকে চুড়ান্ত ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এটিই এখনকার সাধারণ অবস্থা। সুতরাং হজের সফরের সুযোগে যদি আমরা এ পরিবেশ ও মানসিকতা পরিবর্তনের সুযোগ গ্রহণ করি, এবং তাকে একটি সুস্থ, সবল ভিতের উপর স্থাপন করি, তবে সন্দেহ নেই, তা আমাদের জন্য অতি উত্তম হবে। হজে তাদেরকে এই আচরণীয় দিকটির প্রতি প্রবলভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হবে, তাদেরকে এ ব্যাপারে দীর্ঘ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে।
হজ একটি সফর, সফর মানুষকে তার জমে যাওয়া স্থান ছেড়ে দূরে অন্য এক স্থানে পৌঁছতে সাহায্য করে। হজের সফর মানুষকে পৃথিবীর পবিত্রতম স্থানসমূহে নিয়ে যায়, যা তার আত্মা ও শরীরকে এক অনির্বচনীয় পবিত্রতায় বিধৌত করে। শরীয়ত বিরোধী যে সমস্ত নেতিবাচক আচরণ যুব সমাজকে কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে, এ সুযোগে তাদেরকে তা থেকে সরিয়ে আনা খুব সহজ- সন্দেহ নেই।
হজের এই সংক্ষিপ্ত সময়ে তাদের মাঝে জন্ম নেয় যে ভ্রাতৃত্ববোধ ও আচরণীয় উৎকর্ষ, তা তাদের জীবনব্যাপী অব্যাহত থাকবে- এটি খুবই সম্ভব। যারা এই সফরের সঙ্গী হবে, তারা বাকি জীবন এই সুখময় ও পবিত্র স্মৃতি দ্বারা তাড়িত ও অনুপ্রাণিত হবে, বিশেষত যখন বছর ঘুরে হজের মৌসুম ঘনিয়ে আসবে তখন তাদের মাঝে কেঁপে উঠবে সেই পুরোনো স্মৃতি, আরো কিছু ভালো সময় অতিবাহিত করার জন্য তা তাদের কাছে প্রেরণা হয়ে থাকবে।
হজের পাশাপাশি অন্যান্য সুযোগ অনুসারে- গ্রীস্ম ও বসন্তকালীন ছুটিতে কিংবা রমজান মাসে ছাত্রদেরকে উমরার সফরে নিয়ে যাওয়া যায়।
ষষ্ঠত: সঠিক উপায়ে হজ পালন। অপ্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় যে হজ বিষয়ে কোন মূর্খ ব্যক্তির সাথে হজে গমন করবে, সেই মূর্খ লোকের মূর্খামী তার ভিতর সংক্রমিত হওয়ার পর পরবর্তীতে দেখা যাবে এটি তার সন্তানের মাঝেও সংক্রামিত হবে। কারণ, সঠিক জেনে সে পুরো জীবন এরই চর্চা অব্যাহত রাখবে। অসচেতনভাবে সে এর পক্ষ হয়ে লড়ে যাবে। এই অবস্থা বর্তমানে সচরাচর ঘটতে দেখা যায়। পক্ষান্তরে অপ্রাপ্ত বয়স্ক কোন ছাত্র যদি হজ ও হজ বিষয়ক মাসআলা মাসাইল সম্পর্কে পূর্ণ জ্ঞাত কোন আলেমের সাথে হজের সফর করে, তবে তার মাঝেও উক্ত জ্ঞাত ব্যক্তির চর্চা ও জ্ঞান অনায়াসে তার আয়ত্ব হয়ে যায়। সচেতন ব্যক্তির কাছ থেকে হজ বিষয়ক তার জ্ঞান অবশ্যই পূর্বের উদাহরণের তুলনায় হবে ভিন্ন রকম। ছাত্ররা তার কর্মকান্ড ও আচর আচরণ গভীর মনোযোগে বিশ্লেষণ করবে, তার কাছে প্রশ্ন করবে জেনে নেয়ার জন্য।
এ বিষয়টি তার মাঝে হজ বিষয়ক সঠিক জ্ঞান প্রদানের জন্য যথেষ্ট, এটি তার স্মৃতিতে অক্ষয় হয়ে থাকবে। আশা করা যায়, আল্লাহ চাহে তো, এটি কখনো তার স্মৃতি থেকে হারিয়ে যাবে না। সাধারণত, একজন ছাত্রের মাঝে মুখস্ত করা ও হওয়ার সর্ববিধ কারণ উপস্থিত থাকে, যেমন : শ্রবণ, দেখা, চর্চা, পঠন, অনুসরণ, আলোচনা-পর্যালোচনা, ভুল কাজ ও বক্তব্যের প্রতি সতর্ক থাকা ইত্যাদি। এ সবই পর্যায়ক্রমে ও আলোচনা প্রসঙ্গে তৈরি হয়ে যায়।
তবে, ছাত্রদের নিয়ে গঠিত এ ধরনের নামসর্বস্ব একটি গ্রুপ তৈরি করলেই আমরা সঠিক ফল পেয়ে যাব, তা ভাবার মোটেই অবকাশ নেই। বরং, আল্লাহর অনুগ্রহ ও সহযোগিতার সাথে এটি সম্পৃক্ত এমন দায়িত্বশীল ব্যক্তি ও ব্যক্তিগণ ও পদ্ধতির সাথে, যা সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও অভাবিত। যে কোন দেশ থেকেই এভাবে ছাত্রদের নিয়ে গঠিত হাজী দলকে হজের সফরে পাঠাতে পারে, যাদের দায়িত্বশীল হবে কোন নির্ভরযোগ্য শিক্ষক বা ইমাম এবং যাদেরকে সার্বিক তত্বাবধান দিবে কোন সংস্থা, সঠিক পন্থা ও পদ্ধতিতে সফরটি সম্পন্ন করার যাবতীয় ব্যবস্থা যারা নিবে। এমনিভাবে, পারিবারিক ভাবেও তাদেরকে হজে পাঠানো যেতে পারে। যদি কয়েকটি পরিবারকে হজের সফরে একত্রিত করা যায়, তবে ছাত্রকে তার পরিবারের সাথে হজে পাঠানো যেতে পারে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/723/24
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।