hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-গিরাস চিন্তার উন্মেষ ও কর্মবিকাশের অনুশীলন (১ম খন্ড)

লেখকঃ তাওফীক বিন খলফ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-রেফায়ী

এ বিষয়টি কী প্রমাণ করে?
এটি প্রমাণ করে যে, আল্লাহ তাআলা হয়তো কোন একদিন তোমার জন্য চিন্তার এই অমিয় ধারা উন্মুক্ত করেছিলেন, কিন্তু তুমি তার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করনি। তার প্রতি ভ্রুক্ষেপ করনি কোনভাবে। হয়তো তার সামনে তুমি তোমার চিন্তার কপাট আটকে দিয়েছ, তোমার কর্মের, উত্থানের পথ বন্ধ করে দিয়েছ। তাই তোমার থেকে সেই চিন্তা হারিয়ে গিয়েছে, সে অবস্থান নিয়েছে অন্য কোথাও, অন্য কারো কাছে। দেখা যাবে, তোমার কাছ থেকে ফিরে গিয়ে যার কাছে সে আশ্রয় নিয়েছিল, সেখানেও তার স্থায়ী আবাস হয়নি। এভাবে চিন্তা জনে জনে পরিভ্রমণ করে। অবশেষে তা হাজির হয় এমন ব্যক্তির কাছে, আল্লাহ যার জন্য উক্ত চিন্তাকে নির্ধারণ করেছেন কিংবা যাকে উক্ত চিন্তার জন্য নির্ধারণ করেছেন। এবং তাকে তার জন্য প্রমাণ স্বরূপ বানিয়ে দেন।

সেই চিন্তা গ্রহণকারীর মাঝে এক অভাবিত তাড়নার জন্ম নেয়। ফলে সে তা অত্যন্ত গরুত্বের সাথে গ্রহণ করে, তাকে বিন্যাস দেয়, শৃঙ্খলাবদ্ধ করে নেয়। সবশেষে তাকে কর্মে রূপ দেয়। সেই কর্ম নিয়ে সে মানুষের জন্য হাজির হয় সুনির্ধারিত এমন কোন প্রজেক্ট নিয়ে, যা জীবনের সর্বময় স্পন্দনে স্পন্দিত। এটি তার মৃত্যু পরবর্তী সময়ের জন্য সাদাকায়ে জারিয়াতে পরিণত হয় :

وَمَا هَذِهِ الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلاَّ لَهْوٌ وَلَعِبٌ وَإِنَّ الدَّارَ الآخِرَةَ لَهِيَ الْحَيَوَانُ لَوْ كَانُوا يَعْلَمُونَ ﴿৬৪﴾

‘আর এ দুনিয়ার জীবন খেল-তামাশা ছাড়া আর কিছুই নয় এবং নিশ্চয় আখিরাতের নিবাসই হলো প্রকৃত জীবন, যদি তারা জানত’। [সূরা আনকাবূত : ৬৪]

যদি তুমি হিসাব কর, দেখবে কত অসংখ্য চিন্তার উদ্রেক ঘটেছে তোমার ভিতর, অতপর যেভাবে এসেছে, হারিয়ে গিয়েছে সেভাবেই...দেখবে তার সংখ্যা অগণিত-অসংখ্য। আল্লাহ তোমাকে সুস্থ-শুদ্ধ চিন্তার মাধ্যমে পরীক্ষা করেন, অথচ তুমি তাকে অবহেলা কর। এমনকি এক চিন্তার সূত্র ধরে নতুন যে চিন্তার উদয় ঘটে, তাকেও অবহেলা কর। এভাবে একের পর এক চিন্তা তোমার পাশ কেটে চলে যায়। এক সময় আল্লাহ তোমাকে তার কাছে উঠিয়ে নেন, তোমার বিরুদ্ধে প্রমাণ হিসেবে হাজির হয় রাশি রাশি শুদ্ধ চিন্তার স্ত্তপ, যেগুলোকে তুমি অবহেলা করেছ। আল্লাহ যা রহমত স্বরূপ তোমার কাছে পাঠিয়েছিলেন, যা এসেছিল তোমার জন্য উদ্ধারকারী হয়ে, সাদাকা জারিয়া হয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল যা তোমার দিকে। সেগুলোই হত সুকর্ম, যার সাথে তৈরী হত তোমার সাথে এক অসম্ভব মেলবন্ধন।

এইভাবে অবহেলায় কেটে যায় যদি তোমার দিন-ক্ষণগুলো, তাহলে একসময় তোমার অবস্থা এমন হবে যে, তুমি পরিণত হবে আল্লাহ তাআলার পাঠানো কল্যাণকর চিন্তা সমূহের পাশ কাটিয়ে যাওয়া বিন্দুতে, চিন্তাসমূহ যাকে অবহেলাভরে কেবল অতিক্রম করে যাবে, স্থির হবে না যাতে। আমি মনে করি না যে, কল্যাণকর ধারাবাহিক চিন্তাসমূহ বার বার তোমার পাশ দিয়ে অতিক্রম করবে। হয়তো তার স্থানে দখল করবে অন্য চিন্তা। কে জানে, কল্যাণের ধারা হয়তো তোমাকে ছেড়ে অন্য কারো দিকে গমন করবে, সে তাকে গ্রহণ করবে পরিপূর্ণ আদরে, তাকে লালন করবে, পরিণত করবে সাদাকায়ে জারিয়ায়। ফলে চিন্তা তোমাকে বিস্মৃত হবে। বসে বসে অসহায় আত্মসমর্পণ ব্যতীত তোমার কোন কাজই থাকবে না তখন।

সুতরাং, তুমি নিজের প্রতি রহম কর, তোমার দুর্বলতার প্রতি দয়াশীল হও। প্রতারণা দিবসের জন্য (কিয়ামত দিবস) যথার্থ বন্ধুত্ব গ্রহণ কর। মুসলমানদের জন্য, বরং তোমার নিজের জন্য এক নতুন জীবনের বীজ বপন করে জীবন-সঞ্চারক তৈরী কর। কুরআনে এসেছে :

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آَمَنُوا اسْتَجِيبُوا للهِ وَلِلرَّسُولِ إِذَا دَعَاكُمْ لِمَا يُحْيِيكُمْ وَاعْلَمُوا أَنَّ اللَّهَ يَحُولُ بَيْنَ الْمَرْءِ وَقَلْبِهِ وَأَنَّهُ إِلَيْهِ تُحْشَرُونَ ﴿২৪﴾

‘হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহ ও রাসূলের ডাকে সাড়া দাও; যখন সে তোমাদেরকে আহবান করে তার প্রতি, যা তোমাদেরকে জীবন দান করে। জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহ মানুষ ও তার হৃদয়ের মাঝে অন্তরায় হন। আর নিশ্চয় তাঁর নিকট তোমাদেরকে সমবেত করা হবে’। [সূরা আনফাল : ২৪]

নিয়ত শুদ্ধ করা, দৃঢ় প্রত্যয়ে নিজেকে বলীয়ান করা এবং তোমার মাঝে কল্যাণের যে চিন্তারই উদ্রেক হবে, তাকে পূর্ণরূপে গ্রহণ করার প্রবল মানসিকতা ব্যতীত, সুতরাং, কোন পথ নেই। তোমার আশপাশে যে বস্ত্তরাশি ছড়িয়ে আছে, যে ব্যক্তিগণ হাজির আছে তোমার চারপাশে, তাদের থেকে, তাদের কর্মকান্ড থেকে চিন্তার স্ফূরণ কাম্য। তবে, আল্লাহ চাহে তো, তুমি চিন্তার অবশ্যম্ভাবি ফল থেকে কোনভাবেই বঞ্চিত হবে না।

যে কোন কল্যাণের সূচনা, সাধারণত, একটি চিন্তার মাধ্যমে হয়, আল্লাহ যাকে ইচ্ছা সেই চিন্তা-সৌভাগ্যে অভিষিক্ত করেন।

হেরার সেই সুনিবিড়, নিভৃত একাকীত্বে, নির্জনতায় ওহীর সূচনা হয়েছিল। সন্দেহ নেই, নবুয়্যত আল্লাহ তাআলার এক বিশেষ ফযীলত এবং তার একক নির্বাচন, চিন্তা কিংবা অন্য কোন উপায়ে যার আবির্ভাব ও প্রাপ্তি কোনভাবেই সম্ভব নয়। তবে, আল্লাহ তাআলা তার নবীকে একটি ব্যাপক ও বিশ্বময় বৈপ্লবিক কর্মকান্ডের জন্য প্রস্ত্তত করার লক্ষ্যে, নির্জনতা, নিভৃত একাকীত্ব এবং চিন্তাকে মৌল ভিত্তির মর্যাদায় ভূষিত করেছিলেন।

ইসলামী ইতিহাসের সেই সূচনাকালে, বিজিত এলাকা ও ক্রম বিস্তারমান বিজয় রথের সূচনা হয়েছিল এই চিন্তার লালন ও তার উদ্রেকের ফলেই। বিহার এলাকার বিজয়ের সূচনাও ছিল একটি চিন্তার মাধ্যমে। এ ক্ষুদ্র বাতায়ন বেয়েই, চিন্তা ও জ্ঞানের বিদগ্ধ এলাকায় ঘটে যায় বৈপ্লবিক ওলটপালট, ইতিহাস ভূষিত হয় অতুলনীয় সব উপঢৌকনে, বাস্তব দুনিয়ার সাথে সমান্তরাল যাত্রা বজায় রাখা কিংবা ইতিহাসের গতি আমূল পরিবর্তন করে দেওয়ার মন্ত্রও তৈরি হয় এখান থেকে। সূচনা হতে সমাপ্তি পর্যন্ত এ আল্লাহ তাআলারই দান, যাকে ইচ্ছা তাকে তিনি এ দানে ভূষিত করেন।

বলকানের দুর্গগুলো ঘিরে মুসলিম বাহিনী দাঁড়িয়ে আছে অসহায়ের মত, দুর্গের দেয়াল ভেদে ঝাঁপিয়ে পড়ার যাবতীয় উপায় রহিত, কনকনে শীতে জড়সর সকলে, শত্রুপক্ষের ব্যুহ অতিক্রম কোনভাবেই সম্ভব নয়, এদিকে যুদ্ধের সরবরাহও বন্ধ...এমন কঠিন মুহূর্তগুলোয় জয়ের কারণ ছিল একটি মাত্র চিন্তার উদ্রেক।

চিন্তা, যা উদিত হয়েছিল কোন এক সাধারণ মুসলিম মুজাহিদের অন্তরে, তিনি ছুটে গিয়েছিলেন সেনাপতির নিকটে, বলেছিলেন : দুর্গে প্রবেশ করবার পথ সম্পর্কে আপনি কোন বন্দীকে জেরা করুন। নিশ্চয় কোন উপায় বেরুবে। তিনি জেরা করলে বন্দী জানিয়েছিল, দুর্গে প্রবেশ করবার পথ হচ্ছে পানি প্রবাহের নালা। যখন রাতের অবসান হল, দেখা দিল ঊষার রক্তিম পূর্বাভাস, তখন সেই নালা দিয়ে মুসলিম মুজাহিদগণ প্রবেশ করলেন। এভাবেই বিজয় সূচিত হয়, ইসলাম প্রবেশ করে বলকানের বিস্তৃত এলাকায়, যা আজো দুর্দান্ত গতিতে অব্যাহত আছে। আল্লাহ চাহে তো কিয়ামত অবধি এ ধারা অব্যাহত থাকবে। এ বিজয়ও ছিল চিন্তার উদ্রেকের এক সুনিশ্চয় ফলশ্রুতি।

মহান ব্যক্তিত্বদের পথপ্রাপ্তির কারণ যদি অনুসন্ধান কর, বৃহৎ এলাকাগুলোর বিজয়ের আড়ালের উপলক্ষ্য যদি তালাশ কর, তবে দেখতে পাবে এভাবে আচম্বিত চিন্তার স্ফূরণ ও উদ্রেকই মূলত বিজয় ও পথ প্রাপ্তির এই শিহরণ ছড়িয়ে দিয়েছিল তাদের মাঝে।

চিন্তার সহজ উদ্রেক, সন্দেহ নেই, হেদায়েতের পথকেও সহজ ও সুগম করে দেয়। এই সহজতা সর্বার্থেই আল্লাহ তাআলার দান বৈ নয়। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, এ কারণেই, সর্বদা তা আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করতেন।

রাসূলের দুআ ছিল :-

رب أعني و لا تعن علي، وانصرني و لا تنصر علي، وامكر لي و لا تمكر علي، واهدني و يسر الهدى لي وانصرني على من بغى علي، رب اجعلني لك شكارا، لك ذكارا , لك رهابا، لك مطواعا، لك مخبتا، إليك أواها منيبا، رب تقبل توبتي واغسل حوبتي، وأجب دوعتي، وثبت حجتي، وسدد لساني، واهد قلبي، واسلل سخيمة صدري .

‘হে রব ! আমাকে সহযোগিতা করুন, আমার বিরুদ্ধে (কাউকে) সহযোগিতা করবেন না। আমাকে সাহায্য করুন, আমার বিরুদ্ধে (কাউকে) সাহায্য করবেন না। আমার পক্ষে কৌশল অবলম্বন করুন, আমার বিপক্ষে কৌশল করবেন না।

আমাকে পথ দেখান, এবং হিদায়াতকে আমার জন্য সহজ করে দিন। যে আমার বিপক্ষে দ্রোহ করবে, তার বিরুদ্ধে আমাকে সাহায্য করুন। হে রব ! আমাকে আপনার জন্য কৃতজ্ঞ করুন, আপনার যিকিরকারী ও ভীত করুন, আপনার অনুগত ও বিনয়াবনত করুন আমাকে। আমাকে আপনার জন্য অধিক প্রার্থনাকারী ও আপনার প্রতি ধাবিত করুন।

হে রব ! আমার তওবা কবুল করুন, বিধৌত করুন আমার পাপসমূহ। আমার দুআয় সাড়া দিন, আমার প্রমাণকে দৃঢ় করুন, আমার ভাষা-কন্ঠকে সঠিক রাখুন, হিদায়াত করুন আমার অন্তরকে। এবং আমার অন্তরকে বিদ্বেষমুক্ত করুন।’ [তিরমিযী : ৩৫৫১]

হে আল্লাহ আমাদেরকে হিদায়াত করুন, এবং হিদায়াতকে সহজ করে দিন।

প্রিয় পাঠক ! তুমি হয়ত একটি আলোকবর্তিকা ও দিপাধার সন্ধান করবে, যা তোমাকে আলোয় উদ্ভাসিত করবে, কিংবা কামনা করবে কোন চিন্তার, যা প্রদান করবে অপরিমেয় পরিশ্রুতি, অথবা উদগ্রীব হবে কোন কর্মের সূচনার জন্য, যাকে বিশ্লিষ্ট করা ও পৌঁছে দেয়া তোমার একান্ত কাম্য।

তোমার জন্যই, এই বইয়ে ধারাবাহিকভাবে নিম্নোক্ত তিনটি বিষয়ের অবতারণা হবে।- আলোকবর্তিকা, চিন্তা ও কর্ম।

সুতরাং, তুমি কি পাঠে ক্ষান্ত দিবে?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন