hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আল-গিরাস চিন্তার উন্মেষ ও কর্মবিকাশের অনুশীলন (১ম খন্ড)

লেখকঃ তাওফীক বিন খলফ বিন আবদুল্লাহ বিন আল-রেফায়ী

৬৯
এর নানাবিধ উপকারিতা রয়েছে :
প্রথমত :

সংস্থার পক্ষ থেকে যদি প্রয়োজনগ্রসত্ম ব্যক্তিকে সহায়তা প্রদান করা হয়, তবে তাকে মানুষের দ্বারে দ্বারে হন্যে হয়ে ঘুরতে হবে না, ফলে সমাজের যারা সম্মানিত ও দুর্যোগগ্রসত্ম, অন্যের কাছে হাত পেতে তাদেরকে হেনস্থা হতে হবে না।

দ্বিতীয়ত :

যে সকল সংস্থার বিভিন্ন ক্ষেত্রে যোগ্য লোক প্রয়োজন তাদেরকে এর মাধ্যমে লোকবল দিয়ে সহযোগিতা করা যাবে। কারণ, যারাই চাকরীর আবেদন করবে, তারা পূর্বের যোগাযোগের ফলে এই সংস্থার আস্থাভাজন হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার সুযোগ পাবে।

তৃতীয়ত :

সহযোগিতা চাওয়ার ফলে এক ধরনের ভিক্ষাবৃত্তি ইসলামী সমাজে ছড়িয়ে পড়ছে, এর নানাবিধ কুপ্রভাব রয়েছে। যে সমসত্ম যুবক মোটেই ভিক্ষাবৃত্তিতে অভ্যসত্ম ও প্রস্ত্তত নয়, অন্যের কাছে সহযোগিতা চাওয়ার ফলে সকলে ভাবে সে ভিক্ষা চাচ্ছে। সংস্থার সক্রিয় সহযোগিতার ফলে এই ধরনের সামাজিক হীনতা ক্ষয় পাবে।

চতুর্থত :

এর কারণে এমন অনেক লোকের দীন রক্ষা পাবে, যারা অমুসলিম কর্মকর্তা ও মালিকের অধীনে চাকুরী করে। অমুসলিমের অধীনে চাকরী করার ফলে অনেক নতুন মুসলিম তার চাকরী হারায়, ফলে এক কঠিন অবস্থার মুখোমুখি তাকে দাঁড়াতে হয়। পথই হয়ে পড়ে তার গৃহ। আমি এমন অনেককে দেখেছি, প্রথমে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলেও পরবর্তীতে আশপাশের লোকের অব্যাহত চাপের ফলে তাকে পূর্বের ধর্মে ফিরে যেতে হয়েছে। এভাবে মুরতাদ হওয়ার কারণে তার দুনিয়া ও আখিরাত ধ্বংশ হয়ে যাচ্ছে।

এই ব্যবস্থার ফলে আমরা এমন অনেককে সহযোগিতা করতে পারব, হঠাৎ বিপদে আক্রামত্ম হওয়ার ফলে যারা হতবুদ্ধি হয়ে যায়। সহায় সম্পত্তি বিক্রয় করে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকার পরিশ্রম করে। অনেক নারী-পুরষকে নিজের সম্ভ্রম বিক্রয় করে এমন হঠাৎ বিপদ থেকে মুক্তি পাওয়ার প্রচেষ্টা চালাতে দেখা যায়।

পঞ্চমত :

সুপারিশ বিষয়ক হাদীসগুলো আমরা গভীরভাবে চিমত্মা করলে দেখতে পাব, তা মানুষকে উত্তম পন্থায় সমস্যার মুকাবিলা করার শিক্ষা দিচ্ছে। আমরা এমন মহান ক্ষেত্র গড়ে তুলতে পারি, যা অন্যের প্রয়োজন পুরনে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। তা কোন সংস্থা, প্রতিষ্ঠানর রূপে হতে পারে।

একে অপরকে সহযোগিতা বিষয়ক অসংখ্য হাদীস আমরা দেখতে পাই। কি মূলনীতিমালার আলোকে মানুষ একে অপরকে সহযোগিতা করবে, হাদীসে সেটিও উল্লেখ করে দেয়া হয়েছে। হাদীসে এসেছে :

عن رجل من أهل المدينة قال : كتب معاوية إلي عائشة رضي الله عنها أن اكتبي لي كتابا توصيني فيه، و لا تكثري علي , فكتبت عائشة رضي الله عنها إلي معاوية : سلام عليك , أما بعد , فإني سمعت رسول الله صلى الله عليه و سلم يقول : من التمس رضاء الله بسخط الناس , كفاه الله مؤنة الناس , و من التمس رضاء الناس بسخط الله , و كله الله إلي الناس , و السلام عليك .

মদীনার জনৈক অধিবাসী হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, মুআবিয়া রা. আয়িশা রা.-এর নিকট পত্র পাঠালেন যে, আমাকে অসীয়ত করে একটি পত্র লিখুন এবং আমার উপর অধিক চাপিয়ে দিবেন না। আয়িশা রা. প্রতিউত্তরে মুআবিয়াকে এই পত্র দিলেন :

‘সালাম, আম্মা বাদ, আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহ ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, তিনি বলছেন : যে মানুষের অসন্তুষ্টি উপেক্ষা করে আল্লাহর সন্তুষ্টি চাইবে, মানুষের চাপের সামনে আল্লাহই তার জন্য যথেষ্ট। আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অসন্তুষ্টি সত্বেও মানুষের সন্তুষ্টি চাইবে, আল্লাহ তাকে মানুষের হাতে ছেড়ে দিবেন। সালাম।’ [তিরমিযী : ২৪১৪]

و في رواية لابن حبان : و لفظه : قالت : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم : من التمس رضا الله بسخط الناس , رضي الله عنه و أرضى الناس عنه , و من التمس رضا الناس بسخط الله , سخط الله عليه , و أسخط عليه الناس .

‘ভিন্ন রেওয়ায়েতে ইবনে হিববান থেকে বর্ণিত হয়েছে, আয়িশা রা. বলেন : রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মানুষের অসন্তুষ্টি সত্বেও যে ব্যক্তি আল্লাহর সমত্মষ্টি চাইবে, আল্লাহ তার প্রতি সন্তুষ্ট হবেন এবং মানুষকেও তার প্রতি সন্তুষ্ট করে দিবেন।

আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অসন্তুষ্টি সত্বেও মানুষের সন্তুষ্টি চাইবে, আল্লাহ তার প্রতি ক্রদ্ধ হন এবং মানুষকেও তার প্রতি ক্রদ্ধ করে দেন।’ [ইবনে হিববান : ২৭৬]

নিম্নে কয়েকটি হাদীস উল্লেখ করছি, যার আলোকে অপরকে সহযোগিতা করার বিষয়টি হাদীসে কতটা গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে, তা স্পষ্ট হয়ে যাবে। যথা :

عن ابن عمر رضي الله عنهما أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : المسلم أخو المسلم لا يظلمه و لا يسلمه , و من كان في حاجة أخيه كان الله في حاجته , و من فرج عن مسلم كربة فرج الله عنه كربة من كربات يوم القيامة , و من ستر مسلما ستره الله يوم القيامة .

‘ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : মুসলমান মুসলমানের ভাই, সে তাকে অত্যাচার করবে না এবং তাকে পরিত্যাগ করবে না। আর যে ব্যক্তি তার ভাইয়ের প্রয়োজনে থাকবে, আল্লাহ তার প্রয়োজনে থাকবেন। যে ব্যক্তি মুসলমানের বিপদ দূর করবে, কিয়ামতের বিপদ থেকে আল্লাহ তাকে উদ্ধার করবেন। যে ব্যক্তি মুসলমানের দোষ গোপন রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিবসে তার দোষ গোপন রাখবেন।’ [বুখারী : ২৪৪২]

عن ابن عمر رضي الله عنهما , عن رسول الله صلى الله عليه وسلم أنه قال : إن لله تعالى أقواما يختصهم بالنعم لمنافع العباد , و يقرها فيهم ما بذلوها , فإذا منعوها , نزعها منهم , فحولها إلى غيرهم .

‘ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ কিছু মানুষকে মানুষের কল্যাণার্থে বিপুল নিআমতে ভূষিত করেছেন, যতক্ষণ তারা তা ব্যয় করবে, ততক্ষণ তিনি তা তাদের মাঝে বহাল রাখেন। যখনি তারা তা বন্ধ করে দেয়, আল্লাহ তা তাদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেন এবং অন্যের নিকট তা অর্পণ করেন।’ [হাদীসটি বর্ণনা করেছেন ইবনে আবিদুনইয়া, আলবানী একে হাসান বলেছেন, দ্রষ্টব্য : সিলসিলাতুল আহাদীস : ১৬৯২]

عن عبد الله بن عمرو رضي الله عنه قال : قال رسول الله صلى الله عليه و سلم إن لله عند أقوام نعما أقرها عندهم ما كانوا في حوائج المسلمين ما لم يملوهم , فإذا ملوهم نقلها من عندهم إلى غيرهم .

‘আব্দুল্লাহ ইবনে উমর রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : অনেকের কাছে আল্লাহর বিপুল নিআমত রয়েছে, তিনি তা তাদের কাছে বহাল রাখেন, যতক্ষণ তারা বিরক্তিহীনভাবে মানুষের প্রয়োজনে থাকে, যখনি তারা তাদের প্রতি বিরক্ত হয়, তিনি তা তাদের থেকে নিয়ে অন্যকে দিয়ে দেন।’ [তাবরানী : আওসাত ৮৩৫০]

عن ابن عباس مرفوعا , ما من عبد أنعم الله عليه نعمة فأسبغها عليه، ثم جعل شيئا من حوائج الناس إليه فتبرم , فقد عرض تلك النعمة للزوال .

‘ইবনে আববাস হতে বর্ণিত, যে বান্দাকে আল্লাহ বিপুল নিআমত দান করেছেন অত:পর তার প্রতি কিছু মানুষের প্রয়োজন অর্পণ করেছেন কিন্তু সে বিরক্ত হয়েছে, ফলে আল্লাহ উক্ত নিআমতকে ধ্বংসের পথে ঠেলে দিয়েছেন।’ [তাবরানী : আওসাত :৭৫২৯]

و لأن أمشي مع أخ في حاجة أحب إلى من أن أعتكف في هذا المسجد-يعني مسجد المدينة-شهراً .

তার থেকে আরো বর্ণিত হয়েছে : ‘কোন ভাইয়ের প্রয়োজনে তার পাশে থাকা আমার নিকট এই মাসজিদে- অর্থাৎ মদীনার মসজিদে এক মাস ইতিকাফ করার চেয়ে উত্তম।’ [তাবরানী : কাবীর : ১৩৬৪৬]

عن أبي بردة بن أبي موسى عن أبيه رضي الله عنه قال : كان رسول الله صلى الله عليه و سلم إذا جاءه السائل أو طلبت إليه حاجة قال : اشفعوا تؤجروا , و يقضي الله على لسان نبيه صلى الله عليه و سلم ما شاء .

‘আবু বুরদা বিন আবু মূসা তার পিতা হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট কোন প্রার্থনাকারী আসত কিংবা কোন প্রয়োজনে তার কাছে কিছু চাইত, তিনি বলতেন : তোমরা সুপারিশ কর, তোমাদেরকে প্রতিদান দেয়া হবে। আর আল্লাহ তার নবীর কথায় যা ইচ্ছা তা ফায়সালা করেন।’ [বুখারী : ১৪৩২]

عن ابن المنكدر يرفعه إلي النبي صل الله عليه و سلم : من أفضل العمل إدخال السرور على المؤمن تقضي عنه دينا , تقضي له حاجة , تنفس عنه كربة .

‘ইবনে মুনকাদির হতে বর্ণিত, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : শ্রেষ্ট কর্ম হচ্ছে মুমিনের অমত্মরে আনন্দের সঞ্চার। তুমি তার ঋণ আদায় করে দিবে, তার প্রয়োজন পুরণ করবে কিংবা তার বিপদ দূর করবে।’ [বাইহাকী : ৭২৭৪]

عن عمر بن الخطاب أن رسول الله صلى الله عليه و سلم قال : إن من عباد الله لأناسا ما هم بأنبياء و لا شهداء , يغبطهم الأنبياء و الشهداء يوم القيامة بمكانهم من الله تعالى , قالوا : يا رسول الله , تخبرنا من هم ؟ قال : هم قوم تحابوا بروح الله , على غير أرحام بينهم , و لا أموال يتعاطوها , فو الله إن وجوههم لنور , و إنهم على نور , لا يخافون إذا خاف الناس , و لا يحزنون إذا حزن الناس و قرأ هذه الآية :

أَلاَ إِنَّ أَوْلِيَاءَ اللهِ لاَ خَوْفٌ عَلَيْهِمْ وَلاَ هُمْ يَحْزَنُونَ ﴿62﴾

উমর বিন খাত্তাব রা. হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন : আল্লাহর বান্দাদের এমন কেউ কেউ আছে, যারা নবী কিংবা শহীদ নয় ; কিয়ামতের দিবসে আল্লাহর নিকট তাদের অবস্থানের কারণে নবী ও শহীদগণ তাদেরকে ঈর্ষা করবেন।

সকলে বলল, হে আল্লাহ রাসূল ! আমাদেরকে কি বলবেন, তারা কারা?

তিনি বললেন, এমন সম্প্রদায়, যারা আল্লাহর অনুগ্রহে, পরস্পরের মাঝে রক্তের সম্পর্ক ও সম্পদের বিনিময় না থাকা সত্বেও একে অপরকে ভালোবেসেছে। আল্লাহর শপথ, তাদের মুখমন্ডলগুলো হবে আলো, তারা আলোর উপর থাকবে। মানুষ যখন ভীত হবে, তখন তারা ভীত হবে না। মানুষ যখন দু:খিত হবে, তখন তারা দু:খিত হবে না। তিনি এ আয়াতটি পাঠ করলেন : ‘শুনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর বন্ধুদের কোন ভয় নেই, আর তারা পেরেশানও হবে না।’ [সূরা ইউনূস : ৬২] [আবু দাঊদ : ৩৫২৭]

এ হাদীসগুলো পাঠ করে কেউ যদি ব্যক্তিগত উদ্যোগে এই কাজ আরম্ভ করে, তার চেয়ে অনেক ফলদায়ক ও কল্যাণকর হবে যদি যৌথ ও সম্মিলিত উদ্যোগে আমরা এর সূচনা করি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন