hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ব্যক্তি ও সমাজ সংশোধনে ইসলামি দিক নির্দেশনা

লেখকঃ মুহাম্মদ বিন জামীল যাইনূ

২২
মাতা-পিতার প্রতি কর্তব্য
দুনিয়া আখেরাতে নাজাত পেতে হলে, নিম্নোক্ত উপদেশগুলি পালন করতে হবে-

১। মাতা পিতার সাথে ভদ্রভাবে কথা বলবে। তাদেরকে ‘উহ্’ শব্দটি পর্যন্ত বলবে না। তাদের ধমক দিবে না। আর তাদের সাথে নম্র ব্যবহার করবে।

২। সর্বদা মাতা পিতার আদেশ-নিষেধ পালন করতে তৎপর থাকবে, তবে কোনো পাপের কাজ হলে ভিন্ন কথা। কারণ, স্রষ্টাকে অসন্তুষ্ট করে কোনো সৃষ্টির আনুগত্য করা যাবে না।

৩। তাদের সংঙ্গে উত্তম ব্যবহার করবে। কখনও তাদের সম্মুখে বেয়াদবি করবে না। কখনও তাদের প্রতি রাগের সাথে দৃষ্টি নিক্ষেপ করবে না।

৪। সর্বদা মাতা পিতার সুনাম, সম্মান ও ধন-সম্পদের হিফাজতে সচেষ্ট থাকবে। তাদের অনুমতি ব্যতীত তাদের কোনো টাকা-পয়সা ধরবে না।

৫। যেসব কাজে তারা খুশি হন সেসব কাজে তারা নির্দেশ না দিলেও উদ্যোগী হও। যেমন তাদের খেদমত করা এবং প্রয়োজনীয় জিনিস-পত্র ক্রয় করে দেয়া।

৬। তোমার সর্ববিধ কাজে তাদের সাথে পরামর্শ করবে। আর যদি কোনো অবস্থায় তাদের বিরোধিতা করতে হয়, তবে তাদের নিকট ওজর পেশ করবে।

৭। তাদের ডাকে হাসিমুখে উপস্থিত হবে। আর বলবে, হে আমার মাতা, হে আমার পিতা, তাদের মাম্মি, ড্যাডি ইত্যাদি সম্বোধন করে ডাকবে না। সেগুলো অমুসলিমদের ব্যবহৃত শব্দ।

৮। পিতা-মাতার বন্ধু বান্ধব ও আত্মীয়-স্বজনদের সাথে সুন্দর আচরণ করতে হবে, তাদের সম্মান করতে হবে। এগুলো তাদের জিবদ্দশায় যেমনি করতে হবে তেমনি মৃত্যুর পরেও।

৯। তাদের সাথে ঝগড়া করা যাবে না। তাদের ভুল-ভ্রান্তিও খোঁজা যাবে না। বরঞ্চ আদবের সাথে তাদেরকে সঠিক জিনিসটি জানাতে আপ্রাণ চেষ্টা করবে।

১০। তাদের অবাধ্য হবে না। তাদের সম্মুখে উচ্চস্বরে কথা বলবে না। তাদের কথাবার্তা মনোযোগ সহকারে শ্রবণ করবে। তাদের সাথে উত্তম ব্যবহার করবে। মাতা-পিতার সম্মানের খাতিরে তোমার কোনো ভাই বোনদের কষ্ট দিবে না।

১১। তাদের কেউ তোমার সম্মুখে উপস্থিত হলে সম্মান প্রদর্শনার্থে দাড়িয়ে যাবে। আর তাদের কপাল চুম্বন করবে।

১২। মাতাকে তার গৃস্থালি কাজে সহযোগিতা করবে। অনুরূপ পিতার কাজে সহযোগিতা করতেও পিছপা হবে না।

১৩। মাতা-পিতার অনুমতি ব্যতীত কোথায়ও বের হবে না। সেই কাজটি যতই গুরুত্বপূর্ণ হোক না কেন। যদি বিশেষ অসুবিধার কারণে বের হতে হয়, তা হলে তাদের নিকট ওজর পেশ করবে। তাদের থেকে দূরের কোনো সফর যেমন দেশ বা নিজ শহর ছেড়ে কোথাও গেলে, তাদের সাথে চিঠি পত্রের মাধ্যমে যোগাযোগ রাখবে।

১৪। অনুমতি ব্যতীত কখনও তাদের কক্ষে প্রবেশ করবে না। বিশেষ করে তাদের ঘুম কিংবা বিশ্রামের সময়।

১৫। যদি তোমার ধুমপান বা এজাতীয় কোনো বদ অভ্যাস থাকে, তবে কস্মিনকালেও তাদের সম্মুখে তা করবে না। তবে এসব বদ অভ্যাস ছেড়ে দেয়াই জরুরি। কারণ, এগুলো সালাত আদায়ে বাধা স্বরূপ।

১৬। আহারের সময় তাদেরর পূর্বে খাবার গ্রহণ করবে না। খানা-পিনার সময় তাদের একরাম করতে সচেষ্ট হবে।

১৭। তাদের সম্মুখে কখনও মিথ্যা কথা বলবে না। তাদের কোনো কাজ তোমার পছন্দ না হলে তাদের দোষ বের করতে তৎপর হবে না।।

১৮। তাদের সম্মুখে তোমার স্ত্রী বা সন্তানদের প্রাধান্য দিবে না। সর্বাবস্থাতে তাদেরকে রাজি-খুশি রাখতে তৎপর থাকবে। তাদের রাজি খুশিতেই আল্লাহ তাআলা রাজি হবেন। আর তাদের নারাজিতে, আল্লাহ তাআলা নারাজ হবেন।

১৯। তাদের সম্মুখে উচুঁ স্থানে বসবে না। অনুরূপভাবে তাদের সামনে অহংকারের সাথে পদদয় লম্বা করে দিয়ে বসবে না।

২০। পিতার সম্মুখে কখনও নিজের বড়ত্ব জাহির করবে না। তুমি যত বড় কর্মচারী বা কর্মকর্তা হও না কেন। তাদের কোনো ভাল কাজকে মন্দ বলবে না। তাদের কোনো কষ্ট দিবে না, যদিও তা মুখের কথার দ্বারাই হোক না কেন।

২১। তাদের জন্য খরচের ব্যাপারে কখনও কৃপণতা করবে না যে, তারা অভিযোগ উত্থাপন করতে পারে। এটা তোমার জন্য অত্যন্ত লজ্জাস্কর ব্যাপার। পরবর্তীতে তা তোমার সন্তানদের মধ্যেও দেখতে পাবে। তাই তোমার সন্তানদের ব্যাপারেও চিন্তা ভাবনা কর।

মাতা পিতার সাথে যেরকম ব্যবহার করবে, সন্তানদের নিকট হতে সেরকম ব্যবহারই আশা করতে পার।

২২। মাতা পিতার বেশি বেশি দেখাশুনা করবে এবং তাদেরকে মাঝে-মধ্যে হাদিয়া-উপঢৌকন দিবে। তারা যে কষ্ট করে তোমাকে প্রতিপালন করেছেন তজ্জন্য তাদের কৃতজ্ঞতা-শুকরিয়া আদায় করবে। তুমি আজ তোমার সন্তানদের যেমন আদর কর এবং তাদের জন্য কষ্ট কর, একদা তারাও তোমার জন্য ঐ রকমই করতেন।

২৩। তোমার সেবা, আনুগত্য ও সম্মান পাওয়ার সর্বাধিক হকদার হলেন তোমার মাতা। তারপর তোমার পিতা। মনে রেখো, মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত।

২৪। মাতা-পিতার অবাধ্যচারণ ও তাদের সাথে রাগারাগি করা হতে বিরত থাকবে। অন্যথায় তুমি দুনিয়া ও আখেরাতে দু:খ কষ্টে পতিত হবে। আজ তুমি তোমার মাতা-পিতার সাথে যেমন ব্যবহার করবে, ভবিষ্যতে তোমার সন্তানরা তোমার সাথে সেরকম ব্যবহারই করবে।

২৫। যদি তাদের নিকট কোনো কিছু চাইতে হয়, তবে নম্রভাবে চাইবে। সেটি মিলে গেলে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করবে। আর যদি তারা অপারগ হন, তবে তাদের ওজর গ্রহণ করবে। তাদের নিকট এমন কিছু দাবী করবে না, যা দিতে তাদের কষ্ট হয়।

২৬। তুমি উপার্জনক্ষম হবার সাথে সাথেই রিজিক অন্বেষণে তৎপর হবে। এবং মাতা পিতাকে সাহায্য করতে চেষ্টা করবে।

২৭। মনে রেখো, তোমার উপর তোমার মাতা-পিতার যেমন হক আছে। তেমনি তোমার স্ত্রীরও তোমার উপর অধিকার আছে। তাই প্রত্যেক হকদারের হক সঠিকভাবে আদায় করতে চেষ্টা করবে। আর তাদের মধ্যে মনোমালিন্য দেখা দিলে তা প্রজ্ঞা ও বিচক্ষণতার সাথে দূর করতে চেষ্টা করবে এবং গোপনে গোপনে উভয়কেই হাদিয়া-তোহফা দিবে।

২৮। যদি কখনও স্ত্রীর সাথে মাতা পিতার মনোমালিন্য হয়, তবে ন্যায়ানুগ পন্থায় উত্তম বিচারে সচেষ্ট হবে। স্ত্রী যদি হকের উপর থাকে তাহলে তাকে ভালভাবে বুঝিয়ে বলবে যে, তুমি তার পক্ষে আছ। কিন্তু মাতা পিতাকে খুশি রাখাও তোমার জন্য অত্যন্ত জরুরি।

২৯। যদি বিয়ে কিংবা তালাকের ব্যাপারে মাতা পিতার সাথে তোমার কোনো মতবিরোধ দেখা দেয়, তবে শরিয়তের আইনের আশ্রয় গ্রহণ করবে, ওটাই হবে তোমাদের জন্য উত্তম সাহায্যকারী।

৩০। ভাল-মন্দ উভয় ক্ষেত্রেই মাতা পিতার দোয়া কবুল হয়। তাই তাদের বদ দোয়া হতে বাঁচার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে।

৩১। পিতা-মাতার ব্যাপারে অন্যদের সাথেও উত্তম ব্যবহার করবে। কারো পিতা-মাতাকে গালমন্দ করবে না। কারণ, যে অন্যদের গালি দেয়, সে নিজেও গালি খায়।

রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন:

مِنَ الْكَبَائِرِ شَتْمُ الرَّجُلِِ وَالِدَيْهِ : قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَهَلْ يَشْتِمُ الرَّجُلُ وَالِدَيْهِ ؟ قَالَ : نَعَمْ، يَسُبُّ أبَا الرَّجُلِ فَيَسُبُّ أَبَاهُ وَيَسُبُّ أمَّهُ فَيَسُبُّ أمَّهُ ( متفق عليه )

একটি মারাত্মক কবিরা গুনাহ হচ্ছে নিজ পিতা-মাতাকে গালমন্দ করা, লোকেরা বলল, ইয়া রাসূলাল্লাহ, কেউ কি নিজ মাতা-পিতাকে গালমন্দ করতে পারে? নবীজী বললেন, হ্যাঁ, কেউ কারো বাবাকে গালি দিলো তখন সেও তার বাবাকে গালি দিল, অনুরূপ কেই কারো মাকে গালি দিল তখন সেও তার মাকে গালি দিল। (বর্ণনায় বোখারি ও মুসলিম)

৩২। নিয়মিত মাতা পিতার যিয়ারত করবে, তাদের জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরেও। তাদের পক্ষ হতে দান খয়রাত করবে। সর্বদা তাদের জন্য দোয়া করবে যেমনটি আল্লাহ শিখিয়েছেন।

(আরবি)

হে আমার রব, আমাকে, আমার মাতা পিতাকে, যে আমার ঘরে ঈমানদার হয়ে প্রবেশ করবে তাকে এবং মুমিন নারী-পুরুষকে ক্ষমা করে দিন। (সূরা নূহ : ২৯)

(আরবি)

হে আমার রব! তুমি আমার মাতা পিতার উপর দয়া কর যেমনিভাবে তারা আমাকে ছোট অবস্থায় লালন পালন করেছেন। (সূরা ইসরা : ২৪ )

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন