HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

One Hadith a Day (সহীহ বুখারী থেকে ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা)

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

কিতাবের নাম/ লেখক/ অনুবাদক/ সম্পাদক
One Hadith a Day (সহীহ বুখারী থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা)

[সহীহ বুখারী থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা এবং সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস]

Family Development Package - Book 10

গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা:

আমির জামান

নাজমা জামান

Published by

Institute of Family Development, Canada

www.themessagecanada.com

সতর্কবাণী!
আল্লাহর কিতাব আল কুরআন ওয়াহীয়ে মাতলু অর্থাৎ জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) কর্তৃক পঠিত হয়ে তাঁর মাধ্যমে নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) -কে দেয়া হয়েছে। আর সহীহ হাদীস হল গায়র মাত অর্থাৎ যা পঠিত হয়নি বরং আল্লাহ তা'আলা সরাসরি নবী (ﷺ) -এর অন্তরে সংস্থাপিত করেছেন। কুরআনও ওয়াহী, সহীহ হাদীসও ওয়াহী। আল্লাহ তা'আলার বাণী :

“আল্লাহর রসূল নিজের প্রবৃত্তি থেকে কিছুই বলেন না, তাঁর কথা হল ওয়াহী যা তাঁর প্রতি প্রেরিত হয়।” (সূরা আন নাজম, ৫৩ : ৩-৪)

“আর রসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর, আর যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাক।” (সূরা আল হাশর, ৫৯ : ৭)

“আল্লাহ ও তাঁর রসূল যখন কোন কাজের নির্দেশ প্রদান করেন তখন কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর ঐ নির্দেশের ব্যতিক্রম করার কোন অধিকার থাকে না, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ও তাঁর রসূলের কথা অমান্য করল, সে স্পষ্টতঃই পথভ্রষ্ট হয়ে গেল।” (সূরা আল আহযাব, ৩৩ : ৩৬)

“আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে, অবশ্যই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন যাতে তারা সর্বদা-চিরকাল অবস্থান করবে।” (সূরা জিন, ৭২ : ২৩)

“কিন্তু না, তোমার রব্বের কসম! তারা প্রকৃত মু'মিন হতে পারবে না যে পর্যন্ত তারা তাদের যাবতীয় বিরোধপূর্ণ ব্যাপারে তোমাকে বিচারক সাব্যস্ত না করে এবং তুমি যে ফায়সালা প্রদান কর তা দ্বিধাহীন চিত্তে পরিপূর্ণ আস্থার সঙ্গে গ্রহণ করে না নেয়।” (সূরা আন নিসা, ৪ : ৬৫)।

“সুতরাং যারা আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের সতর্ক হওয়া উচিত যে, তাদের উপর কোন বিপদ এসে পড়ে কিংবা তাদের উপর কোন যন্ত্রণাময় আযাব নাযিল হয়ে পড়ে।” (সূরা আন নূর, ২৪ : ৬৩)

যারা সহীহ হাদীস বিরোধী বিভিন্ন যুক্তি দোহাই দিয়ে পাঠকদেরকে সহীহ হাদীস না। মানার জন্য আহ্বান জানায় তারা ঈমানদার হিসেবে গণ্য হতে পারে কি না এ বিষয়টি উপযুক্ত আয়াতসমূহের আলোকে বিচার্য। “ওমুক মতে এই, ওমুক মতে এই"- এসব কথা বলে মুসলিমদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রসূল (ﷺ) -এর সরল-সোজা পথ থেকে বিচ্যুত করে কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না। মুসলিমগণ একমাত্র কুরআন ও সহীহ হাদীস মানতে বাধ্য, ওমুক তমুকের মত মানতে বাধ্য নয়। অতএব, আসুন! আমরা কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রতি আমল করে পরিপূর্ণ ঈমানদার হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি ।।

কিছু মূল্যবান কথা
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ, এই বইতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত ৩৬৫টি হাদীস সহীহ বুখারী’ থেকে সংকলন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য আমরা যারা সাধারণ মুসলিম তারা যেন এই ব্যস্ততম জীবনের মধ্যেও প্রতিদিন অন্ততপক্ষে একটি করে সহীহ হাদীস অধ্যয়ন করে জীবনের করণীয় সম্পর্কে জানতে পারি । সহীহ বুখারীর একটি হাদীস আমরা জানি যে আল্লাহর তা'আলার নিকট ঐ আমল সর্বাপেক্ষা প্রিয় যা নিয়মিত করা হয়। তাই আমরা দিনে যদি অন্ততপক্ষে একটি হাদীস পড়ি তাহলে দেখা যাবে আমাদের অজান্তে বছর শেষে ৩৬৫টি সহীহ হাদীস জানা হয়ে গেছে। তবে প্রতিদিন আমরা যে হাদীসটি পড়বো তা যেন মুখস্ত করে নেয়ার চেষ্টা করি। যেহেতু হাদীসগুলো বাংলায় সেহেতু আশা। করি সকলেরই অতিসহজেই মুখস্ত হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ।

এই বইতে যে ৩৬৫টি হাদীস সংকলন করা হয়েছে তা তাওহীদ প্রকাশনীর ৬টি খন্ডে প্রকাশিত ৭৫৬৩টি হাদীস থেকে বাছাই করে নেয়া হয়েছে। আরো একটি মুল্যবান তথ্য হচ্ছে তাওহীদ প্রকাশনী ইমাম বুখারীর লিখা মূল আরবী কিতাব থেকে সরাসরি অভিজ্ঞ আরবী ভাষায় পারদর্শী ও হাদীস বিশারদবৃন্দের সহায়তায় তা বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এবং হাদীসগুলোর শুরুতে সে নাম্বার রয়েছে তা মূল আরবী সহীহ বুখারীর-ই নাম্বার। তাই কেউ যদি রেফারেন্স হিসেবে কোন হাদীস ব্যবহার করতে চান তাহলে এই নাম্মার অতি সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। এতে আরব এবং অনারব সকলেই রেফারেন্স প্রয়োজন মিলিয়ে দেখতে পারবেন।

কিছু কিছু হাদীসের শেষে আমরা একটি * (স্টার চিহ্ন) ব্যবহার করেছি, এর কারণ হচ্ছে ঐ একই হাদীস সহীহ মুসলিমেও রয়েছে।

কিভাবে এবং কোথা থেকে পড়া শুরু করবো? বিষয়টি এমন নয় যে আমাদেরকে ঠিক জানুয়ারীর এক তারিখ থেকেই পড়া শুরু করতে হবে । অর্থাৎ আমি এই বইটি যে মাসেই হাতে পাই না কেন, যে কোন একটি তারিখ থেকেই পড়া শুরু করতে পারি । ক্যালেন্ডারের প্রতিদিনের তারিখের সাথে মিল রেখে পড়তে থাকলে হিসাব রাখতে হয়তো সুবিধে হবে। যেমন, আমি যদি ১লা জুলাই থেকে পড়া শুরু করি তা হলে পরবর্তী বছরের ৩০শে জুন গিয়ে ৩৬৫টি হাদীস পড়া শেষ হবে। আবার কেউ চাইলে দ্রুত জানার জন্য এক মাসেও পুড়ো বই পড়ে শেষ করে ফেলতে পারেন।

বিশেষ নোট :

সংকলনের সময় একটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা হয়েছে যে, ৩৬৫টি হাদীসের মধ্যে একটি শব্দও আমরা নিজেদের থেকে সংযুক্ত করিনি। কারণ রসূল (ﷺ) -এর কথাকে একবিন্দুও পরিবর্তন করার কারো অধিকার নেই। যদি কেউ কোন বক্তৃতায় কোন হাদীস কোট করেন তাহলে রসূল (ﷺ) -এর কথাটি হুবহু বলতে হবে, কোন প্রকার নড়চড় করা যাবে না। আরো কিছু তথ্য এই বইয়ের শেষে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে যা একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের সকলেরই জানা প্রয়োজন। যেমন : হাদীস সংকলনের ইতিহাস, হাদীসের প্রকারভেদ, সহীহ হাদীস, বানোয়াট হাদীস ইত্যাদি। এছাড়াও ইমাম বুখারী (রহ.) ও ইমাম মুসলিম (রহ.) দু’জনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস দেয়া হয়েছে। এই দুই ইমামের সংগৃহীত হাদীসগুলো নিঃসন্দেহে সহীহ তা পৃথিবীর সকল মুহাদ্দিস এবং স্কলারগণ একমত।

৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস :

এই বইয়ের শেষ অধ্যায়ে আলবেনীয়ার বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ শায়খ নাসিরুদ্দিন আল আলবানীর যাচাই-বাছাই করা হাদীস গ্রন্থ থেকে ৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস সংকলন করা হয়েছে। সহীহ হাদীসের পাশাপাশি এই কমোন জাল ও দুর্বল হাদীসগুলোও আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন।

সম্মানিত পাঠকের পরামর্শ, ভুল সংশোধন ও দৃষ্টি আকর্ষণ ইমেইল অথবা টেলিফোনে জানালে আগামী সংস্করণে তা প্রতিফলিত হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের ভুল-ত্রুটি মার্জনা করে সঠিক পথে থাকার তৌফিক দিন। আমীন।

জাযাকআল্লাহু খায়রন,

আমির জামান

নাজমা জামান

টরন্টো, কানাডা।

জানুয়ারী জানুয়ারী ০১ - নিয়্যাতের উপর ফল
১. আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহ.) হতে বর্ণিত, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি : আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি : [কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়্যাত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে । তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে- তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্যে, সে হিজরত করেছে।]*

জানুয়ারী ০২ - রসূল (ﷺ) ছিলেন অধিক দানশীল
৬. ইবনু 'আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল রমাদানে তিনি আরো অধিক দানশীল হতেন, যখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমাদানের প্রতি রাতেই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সাথে দেখা করতেন এবং তাঁরা একে অপরকে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল (ﷺ) রহমতের বায়ু অপেক্ষাও অধিক দানশীল ছিলেন। *

জানুয়ারী ০৩ - নিজের জন্য যা পছন্দ করা সেটা অন্যের জন্যও পছন্দ করা ঈমানের অংশ
১৩. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন : তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য সেটাই পছন্দ করবে, যা তার নিজের জন্য পছন্দ করে।*

জানুয়ারী ০৪ - সে-ই প্রকৃত মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত হতে অন্য মুসলিম নিরাপদ।
১০. 'আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ইরশাদ করেন, সে-ই মুসলিম, যার জিহ্বা ও হাত হতে সকল মুসলিম নিরাপদ এবং সে-ই প্রকৃত মুহাজির, আল্লাহ যা নিষেধ করেছেন তা যে ত্যাগ করে। *

জানুয়াৱী ০৫ - রসূল (ﷺ) -কে ভালবাসা ঈমানের অন্তর্ভুক্ত
১৫. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেন : তোমাদের কেউ প্রকৃত মুমিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না আমি তার নিকট তার পিতা, তার সন্তান ও সব মানুষের অপেক্ষা অধিক প্রিয়পাত্র হই। *

জানুয়ারী ০৬ - বেশীরভাগ নারী জাহান্নামে যাবে কারণ তারা স্বামীর প্রতি অকৃতজ্ঞ
২৯. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয় । (আমি দেখি), তার অধিবাসীদের বেশির ভাগই নারীজাতি; (কারণ) তারা কুফরী করে । জিজ্ঞেস করা হল, তারা কি আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করে?' তিনি বললেন : তারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং অকৃতজ্ঞ হয়। তুমি যদি দীর্ঘদিন তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক, অতঃপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখতে পেলেই বলে ফেলে, 'আমি কক্ষণো তোমার নিকট হতে ভালো ব্যবহার পাইনি।*

১০
জানুয়ারী ০৭ - মুনাফিকের চিহ্ন
৩৪. 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন : চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায় ।

১) আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে;

২) কথা বললে মিথ্যা বলে;

৩) অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং

৪) বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগালি দেয়। *

১১
জানুয়ারী ০৮ - প্রতিটি ব্যক্তির প্রাপ্য তার সংকল্প অনুযায়ী
৫৪. উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : কর্মসমূহ সংকল্পের সাথে সম্পৃক্ত এবং প্রতিটি মানুষের প্রাপ্য তার সংকল্প অনুযায়ী। কাজেই যার হিজরত হবে আল্লাহ ও তদীয় রসূলের উদ্দেশে, তার হিজরত আল্লাহ ও তদীয় রসূলের উদ্দেশে হয়েছে বলেই ধরা হবে । আর যার হিজরত হয় দুনিয়া অর্জনের জন্য বা কোন নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশে, তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে যে উদ্দেশে সে হিজরত করেছে। *

১২
জানুয়াৱী ০৯ - আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ব্যয় করা
৫৬. সাআদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তুমি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে যা-ই ব্যয় কর না কেন, তোমাকে তার প্রতিদান নিশ্চিতরূপে প্রদান করা হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও। *

১৩
জানুয়ারী ১০ - অনুপযুক্ত ব্যক্তি দায়িত্বশীল হওয়া কিয়ামতের লক্ষণ
৫৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : একদা আল্লাহর রসূল (ﷺ) মজলিসে জনসম্মুখে কিছু আলোচনা করছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর নিকট জনৈক বেদুঈন এসে জিজ্ঞেস করল, “কিয়ামাত কখন সংঘটিত হবে? আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাঁর আলোচনায় রত থাকলেন। এতে কেউ কেউ বললেন, লোকটি যা বলেছে তিনি তা শুনেছেন কিন্তু তার কথা পছন্দ করেননি। আর কেউ কেউ বললেন বরং তিনি শুনতেই পাননি। আল্লাহর রসূল (ﷺ) আলোচনা শেষে বললেন : “কিয়ামাত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? সে বলল, এই যে আমি, হে আল্লাহর রসূল! তিমি বললেন : যখন কোন অনুপযুক্ত ব্যক্তির উপর কোন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।

১৪
জানুয়ারী ১১ - আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের জ্ঞান দান করেন
৭১. হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি মু'আবিয়াহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে খুৎবায় বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের 'ইলম দান। করেন। আমি তো বিতরণকারী মাত্র, আল্লাহই (জ্ঞান) দাতা। সর্বদাই এ উম্মত কিয়ামাত পর্যন্ত আল্লাহর হুকুমের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, বিরোধিতাকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। *

১৫
জানুয়ারী ১২ - ইলম ও সম্পদ ব্যয়-এর ক্ষেত্রে সমতুল্য হবার উৎসাহ
৭৩. আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : কেবল দু'টি বিষয়ে ইর্ষা করা বৈধ;

১) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর তাকে বৈধ পন্থায় অকাতরে ব্যয় করার ক্ষমতা দিয়েছেন;

২) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ তাআলা প্রজ্ঞা দান। করেছেন, অতঃপর সে তার মাধ্যমে বিচার ফায়সালা করে ও তা অন্যকে শিক্ষা দেয়। *

১৬
জানুয়ারী ১৩ - কিয়ামতের আগে ইলমের বিলুপ্তি ও মূর্খতার প্রসার
৮১. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি হাদীস বর্ণনা করব যা আমার পর তোমাদের নিকট আর কেউ বর্ণনা করবে না। আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের কিছু আলামাত হল ও ‘ইলম হ্রাস পাবে, অজ্ঞতার প্রসার ঘটবে, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি প্রতি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন পুরুষ হবে পরিচালক।

১৭
জানুয়ারী ১৪ - নবী (ﷺ) -এর নামে মিথ্যা হাদীস বলা
১০৯. সালামাহ ইবনু আকওয়া (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আমার উপর এমন কথা আরোপ করে যা আমি বলিনি, সে যেন জাহান্নামে তার ঠিকানা বানিয়ে নেয়।

১৮
জানুয়ারী ১৫ - নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত সন্দেহের কারণে ওযু করতে হয় না
১৩৭. ‘আব্বাদ ইবনু তামীম (রহ.)-এর চাচা হতে বর্ণিত, একদা আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর নিকট এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হল যে, তার মনে হয়েছিল যেন সলাতের মধ্যে কিছু হয়ে গিয়েছিল। তিনি বললেন : সে যেন ফিরে না যায়, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা দুর্গন্ধ পায়। *

১৯
জানুয়ারী ১৬ - কিবলামুখী হয়ে পেশাব পায়খানা না করা
১৪৪. আবু আইয়ুব আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন টয়লেটে যায়, তখন সে যেন কিবলার দিকে মুখ না করে এবং তার দিকে পিঠও না করে, বরং তোমরা পূর্ব দিক এবং পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে (এই নির্দেশ মদীনার বাসিন্দাদের জন্য) *

২০
জানুয়ারী ১৭ - মাসজিদে সলাতের অপেক্ষায় থাকা পুরো সময়টাই সলাতের মধ্যে গণ্য হয়
১৭৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : বান্দা যে সময়টা মাসজিদে সলাতের অপেক্ষায় থাকে, তার সে পুরো সময়টাই সলাতের মধ্যে গণ্য হয় যতক্ষণ না সে হাদাস করে । জনৈক অনারব বলল, হে আবু হুরাইরাহ! ‘হাদাস কী? তিনি বললেন, ‘শব্দ করে বায়ু বের হওয়া।

২১
জানুয়ারী ১৮ - শুধু মযী বের হলে ওযু করলেই চলবে
১৭৮. মুহাম্মাদ ইবনুল হানাফিয়্যাহ (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, আমার অধিক পরিমাণে মযী বের হতো। কিন্তু আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবোধ করছিলাম। তাই আমি মিকদাদ ইবনু আসওয়াদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর নিকট জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেন : এতে শুধু ওযূ করতে হয় । হাদীসটি শু’বাহ (রহ.) আ’মাশ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন।

২২
জানুয়ারী ১৯ - পাগড়ী ও মোজার উপর মাস্হ করা
২০৫. উমাইয়াহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘আমি নবী (ﷺ) -কে তাঁর পাগড়ীর উপর এবং উভয় মোজার উপর মাস্হ করতে দেখেছি। মামার (রহ.) 'আমর (রহ.) হতে অনুরূপ বর্ণনা করেন : “আমি নবী (ﷺ) -কে তা করতে দেখেছি।

২৩
জানুয়ারী ২০ - দুধ পান করলে কুলি করা উত্তম
২১১. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, একদা আল্লাহর রসূল (ﷺ) দুধ পান করলেন। অতঃপর কুলি করলেন এবং বললেন : ‘এতে রয়েছে। তৈলাক্ত বস্তু (কাজেই কুলি করা উত্তম)। *

২৪
জানুয়ারী ২১ - সলাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হলে আগে ঘুমিয়ে নেয়া
২১৩. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবী (ﷺ) বলেছেন : কেউ যদি সলাতে তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে, সে যেন ততক্ষণ ঘুমিয়ে নেয়, যতক্ষণ না সে কী পড়ছে, তা অনুধাবন করতে সক্ষম হয় ।

২৫
জানুয়ারী ২২ - ছেলে শিশুর পেশাব লাগলে কাপড় না ধৌত করা (মেয়ে শিশু হলে কাপড় ধুতে হবে)
২২৩. উম্মু কায়স বিনত মিহসান (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, তিনি তাঁর এমন একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর নিকট এলেন। যে তখনো খাবার খেতে শিখেনি। আল্লাহর রসূল (ﷺ) শিশুটিকে তাঁর কোলে বসালেন। তখন সে তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল । তিনি পানি আনিয়ে এর উপর ছিটিয়ে দিলেন এবং তা ধৌত করলেন না। *

২৬
জানুয়ারী ২৩ - হায়েযের রক্ত ধৌত করা
২২৭. আসমা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা নবী (ﷺ) -এর নিকট এসে বললেন : (হে আল্লাহর রসূল!) বলুন, আমাদের কারো কাপড়ে হায়যের রক্ত লেগে গেলে সে কী করবে? তিনি বললেন : সে তা ঘষে ফেলবে, তারপর পানি দিয়ে রগড়াবে এবং ভাল করে ধুয়ে ফেলবে। অতঃপর সেই কাপড়ে সলাত আদায় করবে। *

২৭
জানুয়ারী ২৪ - আল্লাহর রাস্তায় যখম হওয়ার মর্যাদা
২৩৭. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নবী হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন : আল্লাহর রাস্তায় মুসলিমদের যে যখম হয়, কিয়ামতের দিন তার প্রতিটি যখম আঘাতকালীন সময়ে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই থাকবে। রক্ত ছুটে বের হতে থাকবে। তার রং হবে রক্তের রং কিন্তু গন্ধ হবে মিশকের মত। *

২৮
জানুয়ারী ২৫ - আবদ্ধ পানিতে পেশাব না করা
২৩৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তোমাদের কেউ যেন স্থির - যা প্রবাহিত নয় এমন পানিতে কখনো পেশাব না করে । (সম্ভবত) পরে সে আবার তাতে গোসল করবে ।

২৯
জানুয়ারী ২৬ - পরিপূর্ণভাবে সাজদাহ না করা
৩৮৯. হুযাইফাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি তার রুকুসাজদাহ পুরোপুরি আদায় করছিল না। সে যখন সলাত শেষ করলো তখন তাকে হুযাইফাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন : তোমার সলাত ঠিক হয়নি। রাবী বলেন : আমার মনে হয় তিনি (হুযাইফাহ) এ কথাও বলেছেন, (এ অবস্থায়) তোমার মৃত্যু হলে তা মুহাম্মাদ (ﷺ) -এর তরীকার বাইরে হবে ।

৩০
জানুয়ারী ২৭ - যে সকল পানীয় নেশা সৃষ্টি করে, তা হারাম
২৪২. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবী (ﷺ) বলেছেন : যে সকল পানীয় নেশা সৃষ্টি করে, তা হারাম।

৩১
জানুয়ারী ২৮ - গোসলের পূর্বে ওযু করা
২৪৯. মাইমূনাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আল্লাহর রসূল (ﷺ) সলাতের ওযূর ন্যায় ওযু করলেন, পা দুটো ব্যতীত এবং তাঁর লজ্জাস্থান ও যে যে স্থানে নোংরা লেগেছে তা ধুয়ে নিলেন। অতঃপর নিজের উপর পানি ঢেলে দেন। অতঃপর সেখান হতে সরে গিয়ে পা দুটো ধুয়ে নেন।

৩২
জানুয়ারী ২৯ - সহবাস করার পর ওযু করে নিদ্রা যাওয়া (যদি ঐ মুহুর্তে গোসল করা সম্ভব না হয়)
২৮৮. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : নবী (ﷺ) যখন জানাবাতের অবস্থায় ঘুমাতে ইচ্ছা করতেন তখন তিনি লজ্জাস্থান ধুয়ে সলাতের ওযূর মত ওযূ করতেন । *

৩৩
জানুয়ারী ৩০ - মুখমণ্ডলে ও হস্তদ্বয়ে তায়াম্মুম করা
৩৪৩. ইবনু 'আবদুর রহমান ইবনু আবা তার পিতা (আবদুর রহমান) হতে বর্ণনা করেন যে, 'আম্মার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন : নবী (ﷺ) মাটিতে হাত মারলেন এবং তাঁর চেহারা ও হস্তদ্বয় মাস্হ করলেন।

৩৪
জানুয়ারী ৩১ - জুতা পড়ে সলাত আদায় করা
৩৮৬. আবু মাসলামাহ সাঈদ ইবনু ইয়াযীদ আল-আদী (রহ.) বলেন : আমি আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে জিজ্ঞেস করেছিলাম, নবী (ﷺ) কি তাঁর না’লাইন (চঞ্চল) পরে সলাত আদায় করতেন? তিনি বললেন, হাঁ। *

৩৫
ফেব্রুয়ারী ফেব্রুয়ারী ০১ - সলাতের মধ্যে থুথু ফেলতে হলে যেন বাম দিকে ফেলা হয়
৪১৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : মুমিন যখন সলাতে থাকে, তখন সে তার প্রতিপালকের সাথে নিভৃতে কথা বলে। কাজেই সে যেন তার সামনে, ডানে থুথু না ফেলে, বরং তার বাম দিকে অথবা (বাম) পায়ের নীচে ফেলে ।

৩৬
ফেব্রুয়ারী ০২ - সুন্নাত সলাত ঘরে আদায় করা উত্তম
৪৩২. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের ঘরেও কিছু সলাত আদায় করবে এবং ঘরকে তোমরা কবর বানিয়ে নিও না।

৩৭
ফেব্রুয়াৱী ০৩ - মাসজিদে প্রবেশ করে বসার পূর্বে দু'রাকআত সলাত আদায় করা
৪৪৪. আবু কাতাদাহ সালামী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ মাসজিদে প্রবেশ করলে সে যেন বসার পূর্বে দু'রাকআত সলাত আদায় করে নেয়।

৩৮
ফেব্রুয়ারী ০৪ - রসূল (ﷺ) -এর নফল সলাত আদায়
৫১৩. নবী (ﷺ) -এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর সামনে শুয়ে থাকতাম আর আমার পা দুটো থাকত তাঁর কিবলার দিকে। তিনি যখন সাজদাহ করতেন তখন আমাকে টোকা দিতেন, আর আমি আমার পা সরিয়ে নিতাম। তিনি দাঁড়িয়ে গেলে পুনরায় পা দুটো প্রসারিত করে দিতাম। আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন : তখন ঘরে কোন বাতি ছিল না। *

৩৯
ফেব্রুয়াৱী ০৫ - সলাতে নিজের ঘাড়ে কোন ছোট বাচ্চাকে তুলে নেয়া
৫১৬. আবু কাতাদাহ আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাঁর মেয়ে যয়নবের গর্ভজাত ও আবুল আস ইবনু রাবী'আহ ইবনু আবদ শামস (রহ.)-এর ঔরসজাত কন্যা উমামাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-কে কাঁধে নিয়ে সলাত আদায় করতেন। তিনি যখন সাজদাহয় যেতেন তখন তাকে রেখে দিতেন আর যখন দাঁড়াতেন তখন তাকে তুলে নিতেন। *

৪০
ফেব্রুয়ারী ০৬ - ইশার সলাতের পূর্বে ঘুমানো অপছন্দনীয়
৫৬৮. আবু বারযাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ‘ইশার পূর্বে নিদ্রা যাওয়া এবং পরে কথাবার্তা বলা অপছন্দ করতেন।

৪১
ফেব্রুয়ারী ০৭ - পাঁচ ওয়াক্তের সলাত (গুনাহসমূহের) কাফফারা
৫২৮. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -কে বলতে শুনেছেন, “বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তার দেহে কোনোরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন : এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত সলাতের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা (বান্দার) গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন। *

৪২
ফেব্রুয়ারী ০৮ - প্রচণ্ড গরমের সময় যোহরের সলাত ঠাণ্ডায় আদায় করা
৫৩৭. জাহান্নাম তার প্রতিপালকের নিকট এ বলে নালিশ করছিলো, হে আমার প্রতিপালক! (দহনের প্রচণ্ডতায়) আমার এক অংশ আর এক অংশকে গ্রাস করে ফেলেছে। ফলে আল্লাহ তা'আলা তাকে দু'টি শ্বাস ফেলার অনুমতি দিলেন, একটি শীতকালে আর একটি গ্রীষ্মকালে। আর সে দুটি হলো, তোমরা গ্রীষ্মকালে যে প্রচণ্ড উত্তাপ এবং শীতকালে যে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অনুভব কর তাই । *

৪৩
ফেব্রুয়াৱী ০৯ - সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সলাত আদায়ের উদ্যোগ না নেয়া
৫৮৫. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যেন সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সলাত আদায়ের উদ্যোগ না নেয়। (ফরয ব্যতীত)

৪৪
ফেব্রুয়ারী ১০ - সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্তে আসর সলাত এবং সুর্য উদয়ের পূর্ব মুহূর্তে ফযরের সলাত আদায়
৫৫৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যদি সূর্য অস্ত যাওয়ার পুর্বে ‘আসরের সলাতের এক সাজদাহ পায়, তাহলে সে যেন সলাত পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্য উদিত হবার পূর্বে ফযর সলাতের এক সাজদাহ পায়, তাহলে সে যেন সলাত পূর্ণ করে নেয় । *

৪৫
ফেব্রুয়ারী ১১ - ফরের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত এবং ‘আসরের পর সূর্য ডুবা পর্যন্ত সলাত নিষেধ
৫৮৮. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) দু’ সময়ে সলাত আদায় করতে নিষেধ করেছেন। ফযরের পর সূর্য উঠা পর্যন্ত এবং আসরের পর সূর্য ডুবা পর্যন্ত।

৪৬
ফেব্রুয়ারী ১২ - ফযরের এবং মাগরিবের আগে দুই রাকআত সুন্নাহ
৫৯২. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, দু'রাকআত সলাত আল্লাহর রসূল (ﷺ) প্রকাশ্যে বা গোপনে কোন অবস্থাতেই ছাড়তেন না। তাহলো ফযরের সলাতের পূর্বের দু'রাক'আত ও ‘আসরের পরের দু'রাকআত।

৪৭
ফেব্রুয়ারী ১৩ - সলাতের সময় শয়তানের কুমন্ত্রণা দেয়া
৬০৮. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যখন সলাতের জন্য আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান। হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শোনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন সলাতের জন্য ইকামাত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইক্বামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে মনে করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌছে যে, সে কয় রাক'আত সলাত আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না।

৪৮
ফেব্রুয়ারী ১৪ - মুআযিনের আযানের সাথে সাথে যা বলতে হয়
৬১১. আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যখন তোমরা আযান শুনতে পাও তখন মুআনি যা বলে তোমরাও তাই বলবে।

৪৯
ফেব্রুয়ারী ১৫ ফযরের আযান ও ইকামাতের মাঝে দু'রাক'আত সলাত
৬১৯. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ফযরের আযান ও ইকামাতের মাঝে দু'রাকআত সলাত সংক্ষেপে আদায় করতেন। *

৫০
ফেব্রুয়ারী ১৬ - প্রত্যেক আযান ও ইকামাতের মাঝে সলাত রয়েছে।
৬২৪. ‘আবদুল্লাহ ইবনু মুগাফফাল মুযানী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : প্রত্যেক আযান ও ইকামাতের মাঝে সলাত রয়েছে।*

৫১
ফেব্রুয়ারী ১৭ - জামাআত ধরার জন্য দৌড়ে না আসা, বরং ধীরস্থিরভাবে আসা
৬৩৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তোমরা ইক্বামাত শুনতে পাবে, তখন সলাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন করা। তাড়াহুড়া করবে না । ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করবে।*

৫২
ফেব্রুয়ারী ১৮ - জামাআতে সলাত আদায় করার মর্যাদা সাতাশ গুণ
৬৪৫. ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : জামাআতে সলাতের ফাযীলত একাকী আদায়কৃত সলাত অপেক্ষা সাতাশ গুণ বেশী। *

৫৩
ফেব্রুয়ারী ১৯ - যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে সলাতে আসে, তার তত অধিক পুণ্য
৬৫১. আবূ মূসা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : (মসজিদ হতে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে সলাতে আসে, তার তত অধিক পুণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে সলাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার পুণ্য সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক, যে একাকী সলাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে। *

৫৪
ফেব্রুয়ারী ২০ - খাবার উপস্থিত হবার পর যদি সলাতের ইকামাত হয়
৬৭১. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : যখন রাতের খাবার উপস্থিত করা হয়, আর সে সময় সলাতের ইকামাত হয়ে যায়, তখন প্রথমে খাবার খেয়ে নাও। *

৫৫
ফেব্রুয়ারী ২১ - জামাতে সলাতের সময় ইমামের পূর্বে মাথা উঠানো গুনাহ
৬৯১. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, তোমাদের কেউ যখন ইমামের পূর্বে মাথা উঠিয়ে ফেলে, তখন সে কি ভয় করে না যে, আল্লাহ তাআলা তার মাথা গাধার মাথায় পরিণত করে দিবেন, তার আকৃতি গাধার আকৃতি করে দেবেন। *

৫৬
ফেব্রুয়ারী ২২ - নেতা দেখতে যেমনই হোক তার আনুগত্য করা ফরয
৬৯৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন : তোমরা শোন ও আনুগত্য কর, যদিও তোমাদের উপর এমন কোন হাবশীকে [কালো নিগ্রো] নেতা নিয়োগ করা হয়-যার মাথা কিমিসের মতো।

৫৭
ফেব্রুয়ারী ২৩ - জামাতে সলাতে ইমামের ভুল-ত্রুটির দায় দায়িত্ব তার নিজের
৬৯৪. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তারা তোমাদের ইমামতি করে। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করে তাহলে তার সওয়াব তোমরা পাবে। আর যদি তারা ভুল করে, তাহলে তোমাদের জন্য সওয়াব আছে, আর ভুলত্রুটির দায়িত্ব তাদের (ইমামের) উপরই বর্তাবে।

৫৮
ফেব্রুয়ারী ২৪ - একাকী সলাত আদায় করলে ইচ্ছানুযায়ী দীর্ঘায়িত করতে পারে
৭০৩. আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করে, তখন যেন সে সংক্ষেপে করে। কেননা, তাদের মাঝে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃদ্ধ রয়েছে। আর যদি কেউ একাকী সলাত আদায় করে, তখন ইচ্ছামত দীর্ঘ করতে পারে ।*

৫৯
ফেব্রুয়ারী ২৫ - শিশুর কান্নাকাটির কারণে সলাত সংক্ষেপ করা
৭০৯. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সলাত শুরু করি। কিন্তু পরে শিশুর কান্না শুনে আমার সলাত সংক্ষেপ করে ফেলি । কেননা, শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তা আমি জানি।

৬০
ফেব্রুয়ারী ২৬ - জামাতে কাতার সোজা করা তা না হলে নিজেদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হবে
৭১৭. নুমান ইবনু বশীর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : তোমরা অবশ্যই কাতার সোজা করে নিবে, তা না হলে আল্লাহ তা'আলা তোমাদের মাঝে মতভেদ সৃষ্টি করে দিবেন। *

৬১
ফেব্রুয়ারী ২৭ - কাতারে কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলানো
৭২৫. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেন : তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নিও। কেননা, আমি আমার পিছন হতেও তোমাদের দেখতে পাই। আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন আমাদের প্রত্যেকেই তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম।

৬২
ফেব্রুয়ারী ২৮ - তাকবীরে তাহরীমা, রুকুতে যাওয়া এবং রুকু হতে উঠার সময় উভয় হাত উঠানো (রফেইয়াদাইন করা)
৭৩৭. আবু কিলাবাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে দেখেছেন, তিনি যখন সলাত আদায় করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দু হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু করার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন, আবার যখন রুকু হতে। মাথা উঠাতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) এরূপ করেছেন ।*

৬৩
মার্চ মার্চ ০১ - সলাতে সূরা ফাতিহা না পড়লে সলাত হবে না
৭৫৬. ‘উবাদাহ ইবনু সমিত (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : যে ব্যক্তি সলাতে সূরা আল ফাতিহা পড়ল না তার সলাত হলো না।*

৬৪
মার্চ ০২ - জুমুআহর দিন গোসল করা ওয়াজিব
৮৫৮. আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জুমু'আহর দিন প্রত্যেক বয়ঃপ্রাপ্ত (মুসলিমের) গোসল করা ওয়াজিব ।*

৬৫
মার্চ ০৩ - ফযর ও মাগরিবে দু’আ কুনুত পড়া
৭৯৮. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) - এর সময়ে কুনূত ফযর ও মাগরিবের সলাতে পড়া হত।

৬৬
মার্চ ০৪ - রুকু থেকে উঠে এবং দু’ সাজদাহর মাঝে যথেষ্ট সময় দেয়া
৮০১. বারাআ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) -এর রুকু ও সাজদাহ এবং তিনি যখন রুকু হতে মাথা উঠাতেন, এবং দু সাজদাহর মধ্যবর্তী সময় সবই প্রায় সমান হত ।

৬৭
মার্চ ০৫ - কাঁচা রসুন, পিঁয়াজ ও দুর্গন্ধযুক্ত মসলা খেয়ে সলাতে না আসা
৮৫৪. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) খায়বারের যুদ্ধের সময় বলেন, যে ব্যক্তি এই জাতীয় বৃক্ষ হতে অর্থাৎ কাঁচা রসুন খায় সে যেন অবশ্যই আমাদের মাসজিদে না আসে। *

৬৮
মার্চ ০৬ - সলাতে এদিক ওদিক তাকান নিষেধ
৭৫১. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে সলাতে এদিক ওদিক তাকানো সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন : এটা এক ধরনের ছিনতাই, যার মাধ্যমে শয়তান বান্দার সলাত হতে অংশ বিশেষ ছিনিয়ে নেয় ।

৬৯
মার্চ ০৭ - ঈদুল ফিতরের দিন বের হবার আগে খাবার খাওয়া
৯৫৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ‘ঈদুল ফিতরের দিন কিছু খেজুর না খেয়ে বের হতেন না। অপর এক বর্ণনায় আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নবী (ﷺ) হতে বর্ণনা করেন যে, তিনি তা বিজোড় সংখ্যায় খেতেন।

৭০
মার্চ ০৮ - উনিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান কালে সলাত কসর করা
১০৮০. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) একদা সফরে ঊনিশ দিন পর্যন্ত অবস্থান কালে সলাত জ্বর করেন। সেহেতু আমরাও ঊনিশ দিনের সফরে থাকলে কৃসর করি এবং এর চেয়ে অধিক হলে পূর্ণ সলাত আদায় করি ।

৭১
মার্চ ০৯ - সফরে যোহর-আসর ও মাগরিব-ইশা একত্রে আদায় করা
১১০৭. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সফরে দ্রুত চলার সময় আল্লাহর রসূল (ﷺ) যোহর ও আসরের সলাত একত্রে আদায় করতেন আর মাগরিব ‘ইশা একত্রে আদায় করতেন।

৭২
মার্চ ১০ - তাহাজ্জুদ ও বিতর সলাত
১১৩৭. ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, একজন জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রসূল! রাতের সলাতের পদ্ধতি কী? তিনি বললেন : দুদু রাকআত করে। আর ফযর হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করলে এক রাকআত মিলিয়ে বিতর করে নিবে।

৭৩
মার্চ ১১ - সুন্নাত সলাত
১১৭২. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -এর সঙ্গে যুহরের পূর্বে দু'রাক'আত, যুহরের পর দু'রাক'আত, মাগরিবের পর দু'রাক'আত, ‘ইশার পর দু'রাক'আত এবং জুমুআহর পর দু'রাকআত সলাত আদায় করেছি। তবে মাগরিব ও ‘ইশার পরের সলাত তিনি তাঁর ঘরে আদায় করতেন।

৭৪
মার্চ ১২ - প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম পালন করা এবং যুহা সলাত আদায় করা
১১৭৮. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার খলীল ও বন্ধু (নবী (ﷺ)) আমাকে তিনটি কাজের ওসিয়্যাত (বিশেষ আদেশ) করেছেন, মৃত্যু পর্যন্ত তা আমি পরিত্যাগ করব না। (তা হল)

১) প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম,

২) সলাতুয-যুহা এবং

৩) বিতর (সলাত) আদায় করে শয়ন। করা । *

৭৫
মার্চ ১৩ - সলাতে কোমরে হাত রাখা নিষেধ
১২২০. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, কোমরে হাত রেখে সলাত আদায় করতে লোকেদের নিষেধ করা হয়েছে।

৭৬
মার্চ ১৪ - সলাতে ভুল হলে সোহ সাজদাহ দেয়া
১২৩২. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ সলাতে দাঁড়ালে শয়তান এসে তাকে সন্দেহে ফেলে, এমনকি সে বুঝতে পারে না যে, সে কত রাকআত সলাত আদায় করেছে। তোমাদের কারো এ অবস্থা হলে সে যেন বসা অবস্থায় দু’টি সাজদাহ করে ।

৭৭
মার্চ ১৫ - শিরক করা অবস্থায় মারা গেলে সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে
১২৩৮. ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা অবস্থায়। মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যে আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুর শিরক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।

৭৮
মার্চ ১৬ - খাটিয়ায় থাকার সময় মৃত ব্যক্তির উক্তি ও আমাকে নিয়ে এগিয়ে চল
১৩১৬. আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেন : যখন জানাযা (খাটিয়ায়) রাখা হয় এবং পুরুষ লোকেরা তা তাদের কাঁধে তুলে নেয়, সে পুণ্যবান হলে তখন বলতে থাকে, আমাকে সামনে এগিয়ে দাও। আর পুণ্যবান না হলে সে আপন পরিজনকে বলতে থাকে, হায় আফসোস! এটা নিয়ে তোমরা কোথায় যাচ্ছ? মানুষ জাতি ব্যতীত সবাই তার চিৎকার শুনতে পায়। মানুষ যদি তা শুনতে পেত তবে অবশ্যই অজ্ঞান হয়ে

৭৯
মার্চ ১৭ - মুসিবতের প্রথম অবস্থায়ই প্রকৃত সবর
১৩০২. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, বিপদের প্রথম অবস্থায়ই প্রকৃত সবর ।

৮০
মার্চ ১৮ - শোকে গাল চাপড়ানো নিষেধ
১২৯৭. ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) ইরশাদ করেছেন : যারা শোকে গণ্ডে চপেটাঘাত করে, জামার বক্ষ ছিন্ন করে ও জাহিলী যুগের মত চিৎকার দেয়, তারা আমাদের দলভুক্ত নয় ।

৮১
মার্চ ১৯ - প্রত্যেক শিশুই ফিতরাতের উপর জন্মলাভ করে এবং পিতামাতা তাকে অমুসলিম বানায়
১৩৫৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন ও প্রত্যেক নবজাতকই ফিতরাতের উপর জন্মলাভ করে। অতঃপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহূদী, নাসারা বা মাজুসী (অগ্নিপূজারী) রূপে গড়ে তোলে । যেমন, চতুষ্পদ পশু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয় । তোমরা কি তাকে কোন (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও? অতঃপর আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তিলাওয়াত করলেন : (যার অর্থ) “আল্লাহর দেয়া ফিতরাতের অনুসরণ কর, যে ফিতরাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন” (সূরা রূম : ৩০)।

৮২
মার্চ ২০ - কবরের আযাব সম্পর্কে যা কিছু বর্ণিত হয়েছে
১৩৭৩. ‘উরওয়া ইবনু যুবাইর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে বর্ণিত, তিনি আসমা বিনত আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-কে বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) (একবার) দাঁড়িয়ে খুৎবাহ দিচ্ছিলেন তাতে তিনি কবরে মানুষ যে কঠিন। পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তার বর্ণনা দিলে মুসলিমগণ ভয়ার্ত চিৎকার করতে লাগলেন ।।

৮৩
মার্চ ২১ - মৃত ব্যক্তিকে সকাল ও সন্ধ্যায় জান্নাত ও জাহান্নাম দেখানো হয়
১৩৭৯. ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ মারা গেলে অবশ্যই তার সামনে সকাল ও সন্ধ্যায় তার অবস্থান স্থল উপস্থাপন করা হয়। যদি সে জান্নাতী হয়, তবে (অবস্থান স্থল) জান্নাতীদের মধ্যে দেখানো হয়। আর সে জাহান্নামী হলে, তাকে জাহান্নামীদের (অবস্থান স্থল দেখানো হয়) আর তাকে বলা হয়, এ হচ্ছে। তোমার অবস্থান স্থল, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তোমাকে পুনরুত্থিত করা অবধি। *

৮৪
মার্চ ২২ - মৃতদের গালি দেয়া নিষেধ
১৩৯৩. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : তোমরা মৃতদের গালি দিও না। কারণ, তারা স্বীয় কর্মফল পর্যন্ত পৌঁছে গেছে।

৮৫
মার্চ ২৩ - মৃত্যুর পর সম্পদশালীর শাস্তি
১৪০৩. আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে এর যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তার সম্পদকে টেকো (বিষের তীব্রতার কারণে) মাথা বিশিষ্ট বিষধর সাপের আকৃতি দান করে তার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হবে । সাপটি তার মুখের দু’পার্শ্ব কামড়ে ধরে বলবে, আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার জমাকৃত মাল। অতঃপর আল্লাহর রসূল তিলাওয়াত করেন : “আল্লাহ যাদেরকে সম্পদশালী করেছেন অথচ তারা সে সম্পদ নিয়ে কার্পণ্য করছে, তাদের ধারণা করা উচিত নয় যে, সেই সম্পদ তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে, বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর হবে । অচিরেই ক্বিয়ামাত দিবসে, যা নিয়ে কার্পণ্য করছে তা দিয়ে তাদের গলদেশ শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হবে ।” (সূরা আলি ইমরান : ১০৮)।

৮৬
মার্চ ২৪ - দু'ধরনের ব্যক্তির প্রতি ঈর্ষা রাখা যেতে পারে
১৪০৯, ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, কেবল মাত্র দু'ধরনের ব্যক্তির প্রতি ঈর্ষা রাখা। যেতে পারে, একজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন এবং ন্যায় পথে তা ব্যয় করার মত ক্ষমতাবান করেছেন। অপরজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ দ্বীনের জ্ঞান দান করেছেন (আর তিনি) সে অনুযায়ী ফায়সালা দেন ও অন্যান্যকে তা শিক্ষা দেন।

৮৭
মার্চ ২৫ - হালাল উপার্জন থেকে সদাকাহ প্রদান করা
১৪১০. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যে ব্যক্তি হালাল কামাই থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদাকাহ করবে, (আল্লাহ তা কবূল করবেন) এবং আল্লাহ কেবল পবিত্র মাল কবুল করেন আর আল্লাহ তাঁর ডান হাত দিয়ে তা কবুল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে তা প্রতিপালন করেন যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সদাকাহ পাহাড় বরাবর হয়ে যায় ।

৮৮
মার্চ ২৬ - দান করা
১৪২০. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত যে, নবীর কোন সহধর্মিনী নবী (ﷺ)-কে বললেন : আমাদের মধ্য হতে সবার পূর্বে (মৃত্যুর পর) আপনার সাথে কে মিলিত হবে? তিনি বললেন তোমাদের মধ্যে যার হাত সবচেয়ে লম্বা। তাঁরা একটি বাঁশের কাঠির মাধ্যমে হাত মেপে দেখতে লাগলেন। সওদার হাত সকলের হাতের চেয়ে লম্বা বলে প্রমাণিত হল। পরে সবার আগে যায়নাব। (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর মৃত্যু হলে আমরা বুঝলাম হাতের দীর্ঘতর অর্থ দানশীলতা। তিনি [যায়নাব (রাদিয়াল্লাহু আনহা)] আমাদের মধ্যে সবার আগে তাঁর সাথে মিলিত হন এবং তিনি দান করতে ভালবাসতেন। *

৮৯
মার্চ ২৭ - যে ব্যক্তি যথাশীঘ সদাকাহ দেয়া পছন্দ করে
১৪৩০. ‘উকবাহ ইবনু হারিস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আল্লাহর রসূল (ﷺ) আসরের সলাত আদায় করে দ্রুত ঘরে প্রবেশ করলেন। অতঃপর বিলম্ব না করে বের হয়ে আসলেন। আমি বললাম বা তাঁকে বলা হলো, এমনটি করার কারণ কী? তখন তিনি বললেন : ঘরে সদাকাহর একখণ্ড সোনা রেখে এসেছিলাম কিন্তু রাত পর্যন্ত তা ঘরে থাকা আমি পছন্দ করিনি। কাজেই তা বণ্টন করে দিয়ে এলাম ।

৯০
মার্চ ২৮ - সদাকাহ করলে সম্পদ কমে না
১৪৩৩. আসমা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) আমাকে বললেন : তুমি (সম্পদ কমে যাওয়ার আশঙ্কায়) সদাকাহ দেয়া বন্ধ করবে না। অন্যথায় তোমার জন্যও আল্লাহ কর্তৃক দান বন্ধ করে দেয়া হবে ।

৯১
মার্চ ২৯ - সম্পদ জমা করে রাখলে, আল্লাহ তা আটকে রাখবেন
১৪৩৪. আসমা বিনতু আবূ বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত যে, তিনি এক সময় নবী (ﷺ) -এর নিকট উপস্থিত হলে তিনি তাঁকে বললেন : তুমি সম্পদ জমা করে রেখো না, এরূপ করলে আল্লাহ তোমা হতে তা আটকে রাখবেন। কাজেই সাধ্যানুসারে দান করতে থাক।

৯২
মার্চ ৩০ - স্ত্রী তার স্বামীর সম্পদ কিছু সদাকাহ করলে তার প্রতিদান পাবে
১৪৪১. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ফাসাদের উদ্দেশ্য ব্যতীত স্ত্রী তার ঘরের খাদ্য সামগ্রী হতে সদাকাহ করলে সে এর সওয়াব পাবে। উপার্জন করার কারণে স্বামীও সওয়াব পাবে। এবং খাজাঞ্চীও সমপরিমাণ সওয়াব পাবে ।

৯৩
মার্চ ৩১ - দান ও কৃপণের পরিণাম
১৪৪২. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ প্রতিদিন সকালে দু’জন ফিরিশতা অবতরণ করেন। তাঁদের একজন বলেন, হে আল্লাহ! দাতাকে তার দানের উত্তম প্রতিদান দিন আর অপরজন বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধবংস করে দিন। *

৯৪
এপ্রিল এপ্রিল ০১ - অত্যধিক প্রশ্ন করা এবং অনর্থক কথাবার্তা থেকে বিরত থাকা
১৪৭৭. শাবী (রহ.) হতে বর্ণিত যে, মুগীরা ইবনু শুবাহ (রহ.)-এর কাতিব (একান্ত সচিব) বলেছেন, মুআবিয়া (রাদিয়াল্লাহু আনহু) মুগীরা ইবনু শুবাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর কাছে লিখে পাঠালাম যে, নবী (ﷺ) -এর কাছ হতে আপনি যা শুনেছেন তার কিছু আমাকে লিখে জানান। তিনি তাঁর কাছে। লিখলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপছন্দ করেন-

১) অনর্থক কথাবার্তা,

২) সম্পদ নষ্ট করা এবং

৩) অত্যধিক প্রশ্ন করা।

৯৫
এপ্রিল ০২ - সওম পালনকারীর জন্য জান্নাত
১৮৯৬. সাহল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন : জান্নাতে রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, সওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর। কেউ প্রবেশ না করে। *

৯৬
এপ্রিল ০৩ - রমাদানে শয়তানগুলোকে শিকলবন্দী করা হয়
১৮৯৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলতেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : রমাদান আসলে আসমানের দরজাসমূহ খুলে দেয়া হয় এবং জাহান্নামের দরজাসমূহ বন্ধ করে দেয়া হয় আর শয়তানগুলোকে শিকলবন্দী করে দেয়া হয় ।

৯৭
এপ্রিল ০৪ - চাঁদ দেখে সওম রাখা
১৯০০. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা তা (চাঁদ) দেখবে তখন সওম রাখবে, আবার যখন তা দেখবে তখন ইফতার করবে। আর যদি আকাশ মেঘলা থাকে তবে সময় হিসাব করে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে । ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহ.) ব্যতীত অন্যরা লায়স (রহ.) হতে ‘উকায়ল এবং ইউনুস (রহ.) সূত্রে বর্ণনা করেন, নবী (ﷺ) এ কথাটি বলেছেন রমাদানের চাঁদ সম্পর্কে।

৯৮
এপ্রিল ০৫ - যে ব্যক্তি সওম পালনের সময় মিথ্যা বলা পরিত্যাগ না করে
১৯০৩. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুযায়ী আমল বর্জন করেনি, তার এ পানাহার পরিত্যাগ করায় আল্লাহর কোন প্রয়োজন নেই।

৯৯
এপ্রিল ০৬ - লাইলাতুল ক্বদরে ঈমানের সাথে রাত জেগে ইবাদত করা
১৯০১. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন : যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদত করে, তার পিছনের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমাদানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে ।

১০০
এপ্রিল ০৭ - রমাদানে কাউকে গালি দেয়া হলে সে বলবে, 'আমি তো রোযাদার’
১৯০৪. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল (ﷺ) বলেন : আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, সওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য। তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢাল স্বরূপ । তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোযাদার। যাঁর কবজায় মুহাম্মাদের প্রাণ, তাঁর শপথ! অবশ্যই রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিকের গন্ধের চাইতেও সুগন্ধি । রোযাদারের জন্য রয়েছে দু'টি খুশী যা তাকে খুশী করে । যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে। তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সওমের বিনিময়ে আনন্দিত হবে । *

১০১
এপ্রিল ০৮ - অবিবাহিত ব্যক্তি যে নিজের ব্যাপারে ভয় করে, তার জন্য সওম
১৯০৫. ‘আলকামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর সঙ্গে চলতে ছিলাম, তখন তিনি বললেন, আমরা আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর সাথে ছিলাম, তিনি বললেন : যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। সওম তার প্রবৃত্তিকে দমন করে ।

১০২
এপ্রিল ০৯ - রমাদানের একদিন বা দু’দিন পূর্বে সওম আরম্ভ না করা
১৯১৪. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন : তোমরা কেউ রমাদানের একদিন কিংবা দু'দিন আগে হতে সওম শুরু করবে।

তবে কেউ যদি এ সময় সিয়াম পালনে অভ্যস্ত থাকে তাহলে সে সেদিন সওম পালন করতে পারবে ।

১০৩
এপ্রিল ১০ - রোযাদার ভুলবশতঃ কিছু খেলে বা পান করে ফেললে
১৯৩৩. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, সওম পালনকারী ভুলক্রমে যদি আহার করে বা পান করে ফেলে, তাহলে সে যেন তার সওম পুরা করে নেয়। কেননা আল্লাহই তাকে পানাহার করিয়েছেন।

১০৪
এপ্রিল ১১ - সফরে সওম পালন করা বা না করা
১৯৪৩. নবী (ﷺ) -এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত যে, হামযাহ ইবনু আমর আসলামী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) অধিক সওম পালনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি নবী (ﷺ) -কে বললেন, আমি সফরেও কি সওম পালন করতে পারি? তিনি বললেন: ইচ্ছা করলে তুমি সওম পালন করতে পার, আবার ইচ্ছা করলে নাও করতে পার।

১০৫
এপ্রিল ১২ - সওমের কাযা রেখে যিনি মারা যান
১৯৫২. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন ও সওমের কাযা যিম্মায় রেখে যদি কোন ব্যক্তি মারা যায় তাহলে তার অভিভাবক তার পক্ষ হতে সওম আদায় করবে। *

১০৬
এপ্রিল ১৩ - শুধু জুমু'আর দিনে সওম পালন করা নিষেধ
১৯৮৫. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি যে, তোমাদের কেউ যেন শুধু জুমু'আর দিনে। সওম পালন না করে কিন্তু তার পূর্বে একদিন অথবা পরের দিন (যদি পালন। করে তবে জুমু'আর দিনে সওম পালন করা যায়)। *

১০৭
এপ্রিল ১৪ - রমাদানের শেষ দশকের আমল
২০২৪. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন রমাদানের শেষ দশক আসত তখন নবী (ﷺ) তাঁর লুঙ্গি কষে নিতেন (বেশি বেশি ইবাদতের প্রস্তুতি নিতেন) এবং রাত জেগে থাকতেন ও পরিবারপরিজনকে জাগিয়ে দিতেন।*

১০৮
এপ্রিল ১৫ - যে ব্যক্তি কোথেকে সম্পদ কামাই করল, তার পরোয়া করে না
২০৫৯, আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, এমন এক যুগ আসবে, মানুষ পরোয়া করবে না যে, সে কোথা হতে সম্পদ উপার্জন করল, হালাল হতে না হারাম হতে।

১০৯
এপ্রিল ১৬ - ক্রয়-বিক্রয়ে নম্রতা ও কোমলতা
২০৭৬. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ এমন ব্যক্তির প্রতি রহমত বর্ষণ করেন যে নম্রতার সাথে ক্রয়-বিক্রয় করে ও পাওনা ফিরিয়ে চায় ।

১১০
এপ্রিল ১৭ - মিথ্যা বলা ও দোষ-ত্রুটি লুকিয়ে রাখায় ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত মুছে যায়
২০৮২. হাকীম ইবনু হিযাম (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন না হবে ততক্ষণ ক্রেতা-বিক্রেতার ইখতিয়ার থাকবে। যদি তারা সত্য বলে ও যথাযথ অবস্থা বর্ণনা করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে, আর যদি পণ্যের প্রকৃত অবস্থা গোপন করে ও মিথ্যা বলে তবে ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত চলে যাবে ।

১১১
এপ্রিল ১৮ - নগদ নগদ ব্যতিত মালের পরিবর্তে মাল বিক্রয় করা সুদ
২১৭০. ‘উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, হাতে হাতে (নগদ নগদ) ছাড়া গমের বদলে গম বিক্রি করা সুদ, নগদ নগদ ছাড়া যবের বদলে যব বিক্রয় সুদ, নগদ নগদ ব্যতীত খেজুরের বিনিময়ে খেজুর বিক্রয় সুদ। 

১১২
এপ্রিল ১৯ - অগ্রিম ফলের গাছ বিক্রি করা নিষেধ
২১৯৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেন, ফলের উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন এবং খেজুরের রং ধরার আগে (বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন)। জিজ্ঞেস করা হল, রং ধরার অর্থ কী? তিনি বলেন, লাল বর্ণ বা হলুদ বর্ণ ধারণ করা।

১১৩
এপ্রিল ২০ - মদের ব্যবসা হারাম
২২২৬. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, যখন সূরা আল বাকারার শেষ আয়াতগুলো নাযিল হলো, তখন নবী (ﷺ) বের হয়ে বললেন, শরাবের ব্যবসা হারাম করা হয়েছে।

১১৪
এপ্রিল ২১ নিকটবর্তী প্রতিবেশীর প্রতি দায়িত্ব
২২৫৯. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি বললাম, হে আল্লাহর রসূল! আমার দু’জন প্রতিবেশী রয়েছে, তাদের মধ্যে কাকে আমি হাদিয়া দিব? তিনি বললেন, উভয়ের মধ্যে যার দরজা তোমার বেশী কাছে।

১১৫
এপ্রিল ২২ - মজদুরকে পারিশ্রমিক না দেয়ার পাপ
২২৭০. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা বলেন, আমি কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরোধী থাকব । তাদের এক ব্যক্তি হল, যে আমার নামে প্রতিজ্ঞা করল, তারপর তা ভঙ্গ করল। আরেক ব্যক্তি হল, যে স্বাধীন মানুষ বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করে। অপর এক ব্যক্তি হল, যে কোন লোককে মজদুর নিয়োগ করল এবং তার হতে কাজ পুরোপুরি আদায় করল, অথচ তার পারিশ্রমিক দিল না।।

১১৬
এপ্রিল ২৩ - পরিশোধ করার বা না করার উদ্দেশে ধার নেয়া
২৩৮৭. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মানুষের মাল (ধার) নেয় পরিশোধ করার উদ্দেশে আল্লাহ তা'আলা তা আদায়ের ব্যবস্থা করে দেন। আর যে তা নেয় বিনষ্ট করার নিয়্যাতে আল্লাহ তা'আলা তাকে ধবংস করেন।

১১৭
এপ্রিল ২৪ - ঋণ পরিশোধ করা
২৩৮৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, আমার কাছে যদি উহুদ পাহাড়ের সমান সোনা থাকত, তাহলেও আমার পছন্দ নয় যে, তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার কিছু অংশ আমার কাছে থাকুক। তবে এতটুকু পরিমাণ ব্যতীত, যা আমি ঋণ। পরিশোধ করার জন্য রেখে দেই।

১১৮
এপ্রিল ২৫ - ঋণ থেকে আশ্রয় চাওয়া
২৩৯৭. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) সলাতে এই বলে দু'আ করতেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে। গুনাহ এবং ঋণ হতে পানাহ চাচ্ছি। একজন প্রশ্নকারী বলল, (হে আল্লাহর রসূল)! আপনি ঋণ হতে এত বেশী বেশী পানাহ চান কেন? তিনি উত্তর দিলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা খেলাফ করে।

১১৯
এপ্রিল ২৬ - পাওনাদার ব্যক্তির কড়া কথা বলবার অধিকার রয়েছে
২৪০১. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) -এর কাছে এক লোক (ঋণ পরিশোধের) তাগাদা দিতে আসল এবং কড়া কথা বলল। সাহাবীগণ তাকে শাস্তি দিতে উদ্যত হলে নবী (ﷺ) বললেন, তাকে ছেড়ে দাও। হাদারের (কড়া) কথা বলার অধিকার আছে।

১২০
এপ্রিল ২৭ - ক্রয়-বিক্রয়ে ধোঁকা দেয়া যাবে না
২৪১৪. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, ক্রয়বিক্রয়ের ব্যাপারে এক ব্যক্তিকে ধোঁকা দেয়া হত । তখন নবী (ﷺ) বললেন, তুমি যখন বেচা-কেনা কর তখন বলে দেবে যে, ধোঁকা দিবে না। অতঃপর সে অনুরূপ কথাই বলত।

১২১
এপ্রিল ২৮ - যে ব্যক্তি জামাতে সলাতে উপস্থিত হয় না।
২৪২০. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, আমি ইচ্ছা করেছিলাম যে, সলাত আদায় করার আদেশ করব । সলাতে দাঁড়ানোর পর যে সম্প্রদায় সলাতে উপস্থিত হয় না, আমি তাদের বাড়ী গিয়ে তা জ্বালিয়ে দেই।

১২২
এপ্রিল ২৯ - এক মুসলিম অপর মুসলিমের দোষ-ক্রটি ঢেকে রাখা
২৪৪২. ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার উপর যুলম করবে না এবং তাকে যালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে কেউ তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে, আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।

১২৩
এপ্রিল ৩০ - কারো জমির অংশ যুলম করে নিয়ে নেয়া প্রচন্ড গুনাহ
২৪৫২. সাঈদ ইবনু যায়দ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি কারো জমির অংশ যুলম করে কেড়ে নেয়, কিয়ামতের দিন এর সাত তবক জমিন তার গলায় লটকিয়ে দেয়া হবে।

১২৪
মে মে ০১ - ঝগড়াটে ব্যক্তিকে আল্লাহ ঘৃণা করেন
২৪৫৭. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর নিকট সেই লোক সবচেয়ে বেশী ঘূণিত, যে অতি ঝগড়াটে।

১২৫
মে ০২ - কোন ব্যভিচারী মুমিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না
২৪৭৫. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, কোন ব্যভিচারী মু'মিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোন মদ্যপায়ী মু'মিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোন চোর মু'মিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন লুটতরাজকারী মু'মিন অবস্থায় এরূপ লুটতরাজ করে না যে, যখন সে লুটতরাজ করে তখন তার প্রতি লোকজন চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে।

১২৬
মে ০৩ - কোন জিনিস বন্ধক রাখা
২৫০৯, ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, জনৈক ইয়াহূদীর কাছ হতে নির্দিষ্ট মেয়াদে খাদ্য শস্য খরিদ করেন এবং নিজের বর্ম তার কাছে বন্ধক রাখেন।

১২৭
মে ০৪ - কাজের লোককে সাথে নিয়ে আহার করা।
২৫৫৭. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের কারো খাদিম (কাজের লোক) খাবার নিয়ে হাযির হলে তাকেও নিজের সাথে বসানো উচিত। তাকে সাথে না বসালেও দু' এক লোকমা কিংবা দু' এক গ্রাস তাকে দেয়া উচিত। কেননা, সে এর জন্য পরিশ্রম করেছে।

১২৮
মে ০৫ - কেউ যেন কারো উপহার তুচ্ছ মনে না করে
২৫৬৬. আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, হে মুসলিম নারীগণ! কোন মহিলা প্রতিবেশিনী যেন অপর মহিলা প্রতিবেশিনীর উপহার তুচ্ছ মনে না করে, এমনকি তা ছাগলের সামান্য গোশতযুক্ত হাড় হলেও।

১২৯
মে ০৬ - দান করে তা আবার ফেরত নেয়া
২৫৮৯. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, দান করে তা ফেরত গ্রহণকারী ঐ কুকুরের মত, যে বমি করে এরপর তার বমি খায়। *

১৩০
মে ০৭ - হিসাব করে খরচ না করা
২৫৯১. আসমা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন : খরচ কর, আর হিসাব করতে যেওনা, তাহলে আল্লাহ তোমার বেলায়। হিসাব করে দিবেন। লুকিয়ে রেখ না, নইলে আল্লাহও তোমার ব্যাপারে লুকিয়ে রাখবেন। *

১৩১
মে ০৮ - স্ত্রী লোকের সাক্ষ্যদান
২৬৫৮. আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সুত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নারীদের সাক্ষ্য কি পুরুষদের সাক্ষ্যের অর্ধেক নয়? উপস্থিতরা বলল, অবশ্যই অর্ধেক । তিনি বলেন, এটা নারীদের জ্ঞানের ত্রুটির কারণেই।

১৩২
মে ০৯ - প্রশংসা অপছন্দনীয়
২৬৬৩. আবু মূসা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) এক ব্যক্তিকে অপর এক ব্যক্তির প্রশংসা করতে শুনে বললেন, তোমরা তাকে ধবংস করে দিলে কিংবা (রাবীর সন্দেহ) বলেছেন, তোমরা লোকটির মেরুদণ্ড ভেঙ্গে ফেললে।

১৩৩
মে ১০ - ওয়ারিসের জন্য অসীয়াত নেই
২৭৪৭. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, উত্তরাধিকারী হিসেবে সম্পদ পেতো সন্তান আর পিতা-মাতার জন্য ছিল অসীয়াত। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা তাঁর পছন্দ মত এ বিধান রহিত করে ছেলের অংশ মেয়ের দ্বিগুণ, পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য এক ষষ্ঠাংশ, স্ত্রীর জন্য এক অষ্টমাংশ, এক চুতর্থাংশ, স্বামীর জন্য অর্ধেক, এক চতুর্থাংশ নির্ধারণ করেন।

১৩৪
মে ১১ - মৃতের পক্ষ থেকে দান-খয়রাত করা
২৭৬০. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি নবী (ﷺ) - কে বললেন, আমার মা হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেছেন। আমার ধারণা হয় যে, যদি তিনি কথা বলতে পারতেন তবে সদাকাহ করতেন। আমি কি তার পক্ষ হতে সদাকাহ করব? আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন, হ্যা, তার পক্ষ হতে সদাকাহ করতে পার।

১৩৫
মে ১২ - মৃতের মানত পূর্ণ করা
২৭৬১. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, সাদ ইবনু উবাদাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) রসূলুল্লাহ (ﷺ)-এর নিকট জানতে চাইলেন যে, আমার মা মারা গেছেন এবং তার উপর মানত ছিল, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, তুমি তার পক্ষ হতে তা পূর্ণ কর ।

১৩৬
মে ১৩ - আল্লাহর পথে যার দুটি পা ধূলি-মলিন হয়
২৮১১. ‘আবদুর রাহমান ইবনু জাবর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহর পথে যে বান্দার দু’পা ধূলায় মলিন হয়, তাকে। জাহান্নামের আগুন স্পর্শ করবে এমন হয় না।

১৩৭
মে ১৪ - পৃথিবীতে আবার ফিরে আসার জন্য মুজাহিদদের কামনা
২৮১৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের পর আর কেউ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা। করবে না, যদিও দুনিয়ার সকল জিনিস তাকে দেয়া হয়। একমাত্র শহীদ ব্যতীত; সে দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা করবে যেন দশবার শহীদ হয়। কেননা সে শাহাদাতের মর্যাদা দেখেছে। *

১৩৮
মে ১৫ – অক্ষমতা, ভীরুতা ও বার্ধক্য থেকে আশ্রয় প্রার্থনা
২৮২৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) এই দু’আ করতেন, হে আল্লাহ! আমি অক্ষমতা, ভীরুতা ও বার্ধক্য থেকে আপনার নিকট পানাহ চাচ্ছি এবং জীবন ও মরণের ফিতনা থেকে এবং কবরের আযাব থেকে আপনার নিকট পানাহ চাচ্ছি। *

১৩৯
মে ১৬ - মক্কা বিজয়ের পর আর হিজরত নেই
২৮২৫. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত নবী (ﷺ) বলেছেন, মক্কা বিজয়ের দিন বলেছিলেন, এই বিজয়ের পর আর হিজরাতের প্রয়োজন নেই। এখন কেবল জিহাদ ও নিয়্যাত। যখনই তোমাদের বের হবার আহ্বান জানানো হবে, তখনই তোমরা বেরিয়ে পড়বে।

১৪০
মে ১৭ - শহীদ পাঁচ প্রকার
২৮২৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, পাঁচ প্রকার মৃত শহীদ ও মহামারীতে মৃত, পেটের পীড়ায় মৃত, পানিতে ডুবে মৃত, ধবংসস্তুপে চাপা পড়ে মৃত এবং যে আল্লাহর পথে শহীদ হলো।

১৪১
মে ১৮ - নারীদের জিহাদ
২৮৭৫. উম্মুল মুমিনীন ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর নিকট জিহাদের অনুমতি চাইলে তিনি বলেন, “তোমাদের জিহাদ হলো হাজ্জ।

১৪২
মে ১৯ - নারীগণ কর্তৃক যুদ্ধে আহতদের সেবা ও শশা
২৮৮২. রুবাইয়ি’ বিনতু মুআবিয় (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “আমরা (যুদ্ধের ময়দানে) নবী (ﷺ) -এর সঙ্গে থেকে লোকদের পানি পান করাতাম, আহতদের পরিচর্যা করতাম এবং নিহতদের মদীনায় পাঠাতাম।

১৪৩
মে ২০ - পাপ কাজের নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত নেতার কথা শুনা ও আনুগত্য করা
২৯৫৫, ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘পাপ কাজের আদেশ না করা পর্যন্ত নেতার কথা শোনা ও তার আদেশ মানা অপরিহার্য। তবে পাপ কাজের আদেশ করা হলে তা শোনা ও আনুগত্য করা যাবে না।'

১৪৪
মে ২১ - পিতামাতার অনুমতি ক্রমে জিহাদে গমন
৩০০৪. ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নবী (ﷺ)-এর নিকট এসে জিহাদে যাবার অনুমতি প্রার্থনা করল । তখন তিনি বললেন, তোমার পিতামাতা জীবিত আছেন কি? সে বলল, হ্যা। নবী (ﷺ) বললেন, তবে তাঁদের খিদমতের চেষ্টা কর । *

১৪৫
মে ২২ - আল্লাহর দেয়া সম্পদের ব্যবহার
৩১১৮. খাওলাহ আনসারীয়া (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত তিনি বলেন, ‘আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি যে, কিছু লোক আল্লাহর দেয়া সম্পদ অন্যায়ভাবে ব্যয় করে, কিয়ামতের দিন তাদের জন্য জাহান্নাম নির্ধারিত।

১৪৬
মে ২৩ - ফিরিশতাদের বর্ণনা
৩২১০. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছেন যে, ফিরিশতামণ্ডলী মেঘমালার আড়ালে অবতরণ করেন এবং আকাশের ফায়সালাসমূহ আলোচনা করেন। তখন শয়তানেরা তা চুরি করে শোনার চেষ্টা করে এবং তার কিছু শোনেও ফেলে। অতঃপর তারা সেটা গণকের নিকট পৌছে দেয় এবং তারা সেই শোনা কথার সঙ্গে নিজেদের আরো শত মিথ্যা মিলিয়ে বলে থাকে।

১৪৭
মে ২৪ - জুমু'আর দিনে মসজিদের গেটে ফিরিশতারা মুসল্লিদের নাম লিখেন
৩২১১. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘জুমু'আর দিন মাসজিদের প্রতিটি দরজায় ফিরিশতা এসে দাঁড়িয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি প্রথম মাসজিদে প্রবেশ করে, তার নাম লিখে নেয় । অতঃপর ক্রমান্বয়ে পরবর্তীদের নামও লিখে নেয়। ইমাম যখন বসে পড়েন। তখন তারা এসব লেখা পুস্তিকা বন্ধ করে দেন এবং তাঁরা মাসজিদে এসে যিকর (খুতবা) শুনতে থাকেন।

১৪৮
মে ২৫ -আল্লাহর পথে দানের বরকত
৩২১৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে কোন কিছু জোড়ায় জোড়ায় দান করবে, তাকে জান্নাতের পর্যবেক্ষকগণ আহ্বান করতে থাকবে, হে অমুক ব্যক্তি! এ দিকে আস! তখন আবূ বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, এমন ব্যক্তি তো সেই যার কোন ধবংস নেই। তখন নবী (ﷺ) বললেন, আমি আশা করি, তুমি তাদের মধ্যে একজন হবে।

১৪৯
মে ২৬ - ফিরিশতাদের দু'আ
৩২২৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত সলাতে রত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ফিরিশতাগণ এ বলে দু’আ করতে থাকে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করে দিন এবং হে আল্লাহ! তার প্রতি রহম করুন যতক্ষণ পর্যন্ত লোকটি সলাত ছেড়ে না দাঁড়ায় কিংবা তার ওযু ভঙ্গ না হয় ।

১৫০
মে ২৭ - স্ত্রীকে ফিরিশতাদের লানত বর্ষণ
৩২৩৭. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফিরিশতাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে। *

১৫১
মে ২৮ - জান্নাত ও জাহান্নামের অধিবাসী
৩২৪১. 'ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘আমি জান্নাতের অধিবাসী সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি। আমি জানতে পারলাম, জান্নাতে অধিকাংশ অধিবাসী হবে দরিদ্র লোক। জাহান্নামীদের সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি, আমি জানতে পারলাম, এর বেশির ভাগ অধিবাসী নারী।

১৫২
মে ২৯ - সত্তর হাজার অথবা সাত লক্ষ লোক একই সঙ্গে জান্নাতে প্রবশে করবে
৩২৪৭. সাহল ইবনু সা’দ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, আমার উম্মতের সত্তর হাজার লোক অথবা সাত লক্ষ লোক একই সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের কেউ আগে কেউ পরে এভাবে নয় আর তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল থাকবে । *

১৫৩
মে ৩০ - জ্বর হলে পানি দিয়ে ঠাণ্ডা করা
৩২৬৩. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, “জ্বর হয় জাহান্নামের উত্তাপ থেকে। কাজেই তোমরা তা পানি দিয়ে ঠাণ্ডা কর । *

১৫৪
মে ৩১ - জাহান্নামের আগুনের থ্রিতা
৩২৬৫. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ মাত্র । বলা হল, হে আল্লাহর রসূল! জাহান্নামীদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ট ছিল। তিনি বললেন, “দুনিয়ার আগুনের উপর জাহান্নামের আগুনের তাপ আরো উনসত্তর গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রত্যেক অংশে তার সম পরিমাণ উত্তাপ রয়েছে।'

১৫৫
জুন জুন ০১ - ভোরে শয়তান কানে পেশাব করে দেয়
৩২৭০. আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) - এর নিকট এমন এক লোকের ব্যাপারে উল্লেখ করা হল, যে সারা রাত এমনকি ভোর পর্যন্ত ঘুমিয়ে ছিল। তখন তিনি বললেন, সে এমন লোক যার উভয় কানে অথবা তিনি বললেন, তার কানে শয়তান পেশাব করেছে।

১৫৬
জুন ০২ সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের সময় সলাত না পড়া
৩২৭৩. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমরা সূর্যোদয়ের সময়কে এবং সূর্যাস্তের সময়কে তোমাদের সলাতের জন্য নির্ধারিত করো না। কেননা তা শয়তানের দু' শিং-এর মাঝখান দিয়ে উদিত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, হিশাম (রহ.) ‘শয়তান’ বলেছেন ‘আশ-শয়তান’ বলেছেন তা আমি জানি না। *

১৫৭
জুন ০৩ - নারীদের মধ্যে সর্বোত্তম।
৩৪৩২. ‘আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে এ কথা বলতে শুনেছি যে, সমগ্র নারীদের মধ্যে ইমরানের কন্যা মারইয়াম হলেন সর্বোত্তম আর নারীদের সেরা হলেন খাদীজা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) *

১৫৮
জুন ০৪ - শয়তান সলাত নষ্ট করার চেষ্টা করে
৩২৮৪. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) সলাত আদায় করলেন। অতঃপর বললেন, শয়তান আমার সামনে এসেছিল। সে আমার সলাত নষ্ট করার বহু চেষ্টা করেছিল। কিন্তু আল্লাহ আমাকে তার উপর বিজয়ী করেন। অতঃপর পূর্ণাঙ্গ হাদীসটি উল্লেখ করেন।

১৫৯
জুন ০৫ - সন্তান জন্মের সময় তার পার্শ্বদেশে শয়তান খোঁচা মারে
৩২৮৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তানের জন্মের সময় তার পার্শ্বদেশে শয়তান তার দুই আঙ্গুল দ্বারা খোচা মারে। ঈসা ইবনু মরয়াম (আলাইহিস সালাম)-এর ব্যতিক্রম। সে তাঁকে খোচা মারতে গিয়েছিল। তখন সে পর্দার ওপর খোচা মারে।

১৬০
জুন ০৬ - হাই তোলা শয়তানের পক্ষ হতে হয়ে থাকে
৩২৮৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, হাই তোলা শয়তানের পক্ষ হতে হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের কারো যখন হাই আসবে তখন যথাসম্ভব তা রোধ করবে। কারণ তোমাদের কেউ হাই তোলার সময় যখন ‘হা’ বলে, তখন শয়তান হাসতে থাকে । *

১৬১
জুন ০৭ - ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের তরফ হতে হয়ে থাকে
৩২৯২. আবু কাতাদাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, সৎ ও ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে হয়ে থাকে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের তরফ হতে হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের কেউ যখন ভয়ানক মন্দ স্বপ্ন দেখে তখন সে যেন তার বাম দিকে থুথু ফেলে আর শয়তানের ক্ষতি হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চায় । তা হলে এমন স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে। না।

১৬২
জুন ০৮ - শয়তান ঘুমের সময় নাকের ছিদ্রে রাত কাটায়
৩২৯৫. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, “তোমাদের কেউ যখন ঘুম হতে উঠল এবং ওযূ করল তখন তার উচিত নাক তিনবার ঝেড়ে ফেলা। কারণ, শয়তান তার নাকের ছিদ্রে রাত কাটিয়েছে।

১৬৩
জুন ০৯ - পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে ডুবিয়ে দেয়া
৩৩২০. ‘উবাইদ ইবনু হুনায়ন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলতে শুনেছি, নবী (ﷺ) বলেছেন, “তোমাদের কারো পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে সেটাকে তাতে ডুবিয়ে দেবে। অতঃপর তাকে উঠিয়ে ফেলবে। কেননা তার এক ডানায় রোগ থাকে আর অপর ডানায় থাকে প্রতিষেধক।

১৬৪
জুন ১০ - খুনের পাপের অংশ আদম (আ.)-এর প্রথম ছেলে (কাবিলের) উপর বর্তায়
৩৩৩৫. ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের অংশ আদম (আলাইহিস সালাম)-এর প্রথম ছেলের (কাবিলের) উপর বর্তায়। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন ঘটায়। *

১৬৫
জুন ১১ - সলাত আদায়ের সময় সম্মুখ দিয়ে কেউ চলাচল করলে তাকে বাধা দিবে
৩২৭৪. আবু সাঈদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, সলাত আদায়ের সময় তোমাদের কারো সম্মুখ দিয়ে যখন কেউ চলাচল করবে তখন সে তাকে অবশ্যই বাধা দিবে । সে যদি অমান্য করে তবে আবারো তাকে বাধা দিবে । অতঃপরও যদি সে অমান্য করে তবে অবশ্যই তার সঙ্গে লড়াই করবে । কেননা সে শয়তান।

১৬৬
জুন ১২ - নিজ পিতা ব্যতীত অন্যকে পিতা বলে দাবি করা নিষেধ
৩৫০৯. ওয়ায়িলাহ ইবনু আসকা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, কোন লোকের এমন লোককে পিতা বলে দাবি করা যে তার পিতা নয় এবং প্রকৃতই যা দেখেনি তা দেখার দাবি করা এবং আল্লাহর রসূল (ﷺ) যা বলেননি তা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করা নিঃসন্দেহে বড় মিথ্যা।

১৬৭
জুন ১৩ - মসজিদে ঢুকে দু'রাক'আত সলাত আদায় করা, যদিও জুমু'আর খুতবাহ চলতে থাকে
৯৩১. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক জুমুআহর দিন নবী (ﷺ) খুতবাহ দেয়ার সময় এক ব্যক্তি প্রবেশ করলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সলাত আদায় করেছ কি? সে বলল, না; তিনি। বললেন : উঠ, দু'রাকআত সলাত আদায় কর ।

১৬৮
জুন ১৪ - হাসান ও হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহুম)-এর জন্য দু'আ
৩৭৪৭. উসামাহ ইবনু যায়দ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) তাঁকে এবং হাসান (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে এক সঙ্গে কোলে তুলে নিয়ে বলতেন, হে আল্লাহ! আমি এদের দু'জনকে ভালবাসি, আপনিও এদেরকে ভালবাসুন।

১৬৯
জুন ১৫ - রসূল (ﷺ) জাতভাবে অশ্লীল ভাষী ছিলেন না
৩৭৫৯. মাসরূক (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আবদুল্লাহ ইবনু 'আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) জন্মগতভাবে বা ইচ্ছাপূর্বক অশ্লীল ভাষী ছিলেন না। তিনি বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই আমার সবচেয়ে প্রিয় যে সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী।

১৭০
জুন ১৬ - ইরাকবাসীর মশা-মাছি মারা সম্পর্কে প্রশ্ন ও হুসাইন (রাদিআল্লাহু আনহু) কে হত্যা
৩৭৫৩. আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, তাকে ইরাকের এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, ইহরামের অবস্থায় মশা-মাছি মারা যাবে কি? তিনি বললেন, ইরাকবাসী মশা-মাছি মারা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে অথচ তারা। আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর নাতিকে হত্যা করেছে। নবী (ﷺ) বলতেন, হাসান ও হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আমার নিকট দুনিয়ায় যেন দু’টি ফুল ।

১৭১
জুন ১৭ - আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করা নিষেধ
৩৮৩৬. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাবধান! যদি তোমাদের কসম করতে হয় তাহলে আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে কসম করো না। লোকজন তাদের বাবা-দাদার নামে কসম করত। তিনি বললেন, সাবধান! বাবা-দাদার নামে কসম করো না।

১৭২
জুন ১৮ - আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন
৩৭৯৫. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, হে আল্লাহ! আখিরাতের জীবনই প্রকৃত জীবন। হে আল্লাহ! আনসার ও মুহাজিরদের কল্যাণ করুন।।

১৭৩
জুন ১৯ - ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর মর্যাদা
৩৭৬৮. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হে ‘আয়িশাহ! জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) তোমাকে সালাম বলেছেন। আমি উত্তরে বললাম “ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু” । আপনি যা দেখতে পান আমি তা দেখতে পাই না। এ কথা দ্বারা তিনি রসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে বুঝিয়েছেন।

১৭৪
জুন ২০ - বিতর সলাত এক রাকআত আদায়
৩৭৬৫. ইবনু আবূ মুলায়কাহ (রহ.) হতে বর্ণিত, ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলা হল, আপনি আমীরুল মু'মিনীন মু'আবিয়াহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর সঙ্গে এ বিষয় আলাপ করবেন কি? যেহেতু তিনি বিতর সলাত এক রাকআত আদায় করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, তিনি ঠিকই করেছেন, কারণ তিনি নিজেই একজন ফকীহ।

১৭৫
জুন ২১ - বাদশা নাজ্জাশীর মৃত্যুতে গায়েবানা জানাযার সলাত আদায়
৩৮৫১. যাবির (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন নাজ্জাশীর মৃত্যু হল তখন নবী (ﷺ) বললেন, আজ একজন সৎ ব্যক্তি মারা গেছেন। উঠো, এবং তোমাদের ভাই আসহামার জন্য জানাযার সলাত আদায় কর ।

১৭৬
জুন ২২ - ‘খাদীজাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর মর্যাদা
৩৮১৭. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -এর অন্য কোন স্ত্রীর ব্যাপারে এত ঈর্ষা পোষণ করিনি, যতটুকু খাদীজাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি করেছি। যেহেতু নবী (ﷺ) তার আলোচনা বেশি করতেন। তিনি (আরো) বলেন, খাদীজাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর (ইন্তি কালের) তিন বছর পর তিনি আমাকে বিবাহ করেন। আল্লাহ নিজে অথবা জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) নবী (ﷺ) কে আদেশ করলেন যে, খাদীজাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-কে জান্নাতে মণিমুক্তা খচিত একটি ভবনের খোশ খবর দিন।

১৭৭
জুন ২৩ - আশুরার সাওম পালন
৩৮৩১. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জাহিলি যুগে আশুরার দিন কুরাইশগণ ও নবী (ﷺ) সাওম পালন করতেন। যখন হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, তখন তিনি নিজেও আশুরার সাওম পালন করতেন এবং অন্যকেও তা পালনের নির্দেশ দিতেন। যখন রমাদানের সাওম ফরয করা হল তখন যার ইচ্ছা (আশুরা) সওম করতেন আর যার ইচ্ছা করতেন।

১৭৮
জুন ২৪ - হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) খন্ডিত মস্তকে ইবনু যিয়াদের অপমান করা