HADITH.One
HADITH.One
Bangla
System
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
সাপোর্ট করুন
One Hadith a Day (সহীহ বুখারী থেকে ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা)
লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান
One Hadith a Day (সহীহ বুখারী থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা)
[সহীহ বুখারী থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা এবং সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস]
Family Development Package - Book 10
গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা:
আমির জামান
নাজমা জামান
Published by
Institute of Family Development, Canada
www.themessagecanada.com
[সহীহ বুখারী থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা এবং সহীহ বুখারী ও সহীহ মুসলিম ব্যতীত অন্যান্য হাদীস গ্রন্থ থেকে বাছাইকৃত ৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস]
Family Development Package - Book 10
গ্রন্থনা ও উপস্থাপনা:
আমির জামান
নাজমা জামান
Published by
Institute of Family Development, Canada
www.themessagecanada.com
আল্লাহর কিতাব আল কুরআন ওয়াহীয়ে মাতলু অর্থাৎ জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) কর্তৃক পঠিত হয়ে তাঁর মাধ্যমে নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) -কে দেয়া হয়েছে। আর সহীহ হাদীস হল গায়র মাত অর্থাৎ যা পঠিত হয়নি বরং আল্লাহ তা'আলা সরাসরি নবী (ﷺ) -এর অন্তরে সংস্থাপিত করেছেন। কুরআনও ওয়াহী, সহীহ হাদীসও ওয়াহী। আল্লাহ তা'আলার বাণী :
“আল্লাহর রসূল নিজের প্রবৃত্তি থেকে কিছুই বলেন না, তাঁর কথা হল ওয়াহী যা তাঁর প্রতি প্রেরিত হয়।” (সূরা আন নাজম, ৫৩ : ৩-৪)
“আর রসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর, আর যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাক।” (সূরা আল হাশর, ৫৯ : ৭)
“আল্লাহ ও তাঁর রসূল যখন কোন কাজের নির্দেশ প্রদান করেন তখন কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর ঐ নির্দেশের ব্যতিক্রম করার কোন অধিকার থাকে না, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ও তাঁর রসূলের কথা অমান্য করল, সে স্পষ্টতঃই পথভ্রষ্ট হয়ে গেল।” (সূরা আল আহযাব, ৩৩ : ৩৬)
“আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে, অবশ্যই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন যাতে তারা সর্বদা-চিরকাল অবস্থান করবে।” (সূরা জিন, ৭২ : ২৩)
“কিন্তু না, তোমার রব্বের কসম! তারা প্রকৃত মু'মিন হতে পারবে না যে পর্যন্ত তারা তাদের যাবতীয় বিরোধপূর্ণ ব্যাপারে তোমাকে বিচারক সাব্যস্ত না করে এবং তুমি যে ফায়সালা প্রদান কর তা দ্বিধাহীন চিত্তে পরিপূর্ণ আস্থার সঙ্গে গ্রহণ করে না নেয়।” (সূরা আন নিসা, ৪ : ৬৫)।
“সুতরাং যারা আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের সতর্ক হওয়া উচিত যে, তাদের উপর কোন বিপদ এসে পড়ে কিংবা তাদের উপর কোন যন্ত্রণাময় আযাব নাযিল হয়ে পড়ে।” (সূরা আন নূর, ২৪ : ৬৩)
যারা সহীহ হাদীস বিরোধী বিভিন্ন যুক্তি দোহাই দিয়ে পাঠকদেরকে সহীহ হাদীস না। মানার জন্য আহ্বান জানায় তারা ঈমানদার হিসেবে গণ্য হতে পারে কি না এ বিষয়টি উপযুক্ত আয়াতসমূহের আলোকে বিচার্য। “ওমুক মতে এই, ওমুক মতে এই"- এসব কথা বলে মুসলিমদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রসূল (ﷺ) -এর সরল-সোজা পথ থেকে বিচ্যুত করে কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না। মুসলিমগণ একমাত্র কুরআন ও সহীহ হাদীস মানতে বাধ্য, ওমুক তমুকের মত মানতে বাধ্য নয়। অতএব, আসুন! আমরা কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রতি আমল করে পরিপূর্ণ ঈমানদার হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি ।।
“আল্লাহর রসূল নিজের প্রবৃত্তি থেকে কিছুই বলেন না, তাঁর কথা হল ওয়াহী যা তাঁর প্রতি প্রেরিত হয়।” (সূরা আন নাজম, ৫৩ : ৩-৪)
“আর রসূল তোমাদেরকে যা দেন তা গ্রহণ কর, আর যা হতে তোমাদেরকে নিষেধ করেন, তা হতে বিরত থাক।” (সূরা আল হাশর, ৫৯ : ৭)
“আল্লাহ ও তাঁর রসূল যখন কোন কাজের নির্দেশ প্রদান করেন তখন কোন ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারীর ঐ নির্দেশের ব্যতিক্রম করার কোন অধিকার থাকে না, আর যে ব্যক্তি আল্লাহর ও তাঁর রসূলের কথা অমান্য করল, সে স্পষ্টতঃই পথভ্রষ্ট হয়ে গেল।” (সূরা আল আহযাব, ৩৩ : ৩৬)
“আর যারা আল্লাহ ও তাঁর রসূলের আদেশ অমান্য করে, অবশ্যই তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন যাতে তারা সর্বদা-চিরকাল অবস্থান করবে।” (সূরা জিন, ৭২ : ২৩)
“কিন্তু না, তোমার রব্বের কসম! তারা প্রকৃত মু'মিন হতে পারবে না যে পর্যন্ত তারা তাদের যাবতীয় বিরোধপূর্ণ ব্যাপারে তোমাকে বিচারক সাব্যস্ত না করে এবং তুমি যে ফায়সালা প্রদান কর তা দ্বিধাহীন চিত্তে পরিপূর্ণ আস্থার সঙ্গে গ্রহণ করে না নেয়।” (সূরা আন নিসা, ৪ : ৬৫)।
“সুতরাং যারা আল্লাহর হুকুমের বিরুদ্ধাচরণ করে তাদের সতর্ক হওয়া উচিত যে, তাদের উপর কোন বিপদ এসে পড়ে কিংবা তাদের উপর কোন যন্ত্রণাময় আযাব নাযিল হয়ে পড়ে।” (সূরা আন নূর, ২৪ : ৬৩)
যারা সহীহ হাদীস বিরোধী বিভিন্ন যুক্তি দোহাই দিয়ে পাঠকদেরকে সহীহ হাদীস না। মানার জন্য আহ্বান জানায় তারা ঈমানদার হিসেবে গণ্য হতে পারে কি না এ বিষয়টি উপযুক্ত আয়াতসমূহের আলোকে বিচার্য। “ওমুক মতে এই, ওমুক মতে এই"- এসব কথা বলে মুসলিমদেরকে আল্লাহ ও তাঁর রসূল (ﷺ) -এর সরল-সোজা পথ থেকে বিচ্যুত করে কোথাও নিয়ে যাওয়া যাবে না। মুসলিমগণ একমাত্র কুরআন ও সহীহ হাদীস মানতে বাধ্য, ওমুক তমুকের মত মানতে বাধ্য নয়। অতএব, আসুন! আমরা কুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রতি আমল করে পরিপূর্ণ ঈমানদার হয়ে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করি ।।
আস্সালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ, এই বইতে আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে সম্পর্কিত ৩৬৫টি হাদীস সহীহ বুখারী’ থেকে সংকলন করা হয়েছে। উদ্দেশ্য আমরা যারা সাধারণ মুসলিম তারা যেন এই ব্যস্ততম জীবনের মধ্যেও প্রতিদিন অন্ততপক্ষে একটি করে সহীহ হাদীস অধ্যয়ন করে জীবনের করণীয় সম্পর্কে জানতে পারি । সহীহ বুখারীর একটি হাদীস আমরা জানি যে আল্লাহর তা'আলার নিকট ঐ আমল সর্বাপেক্ষা প্রিয় যা নিয়মিত করা হয়। তাই আমরা দিনে যদি অন্ততপক্ষে একটি হাদীস পড়ি তাহলে দেখা যাবে আমাদের অজান্তে বছর শেষে ৩৬৫টি সহীহ হাদীস জানা হয়ে গেছে। তবে প্রতিদিন আমরা যে হাদীসটি পড়বো তা যেন মুখস্ত করে নেয়ার চেষ্টা করি। যেহেতু হাদীসগুলো বাংলায় সেহেতু আশা। করি সকলেরই অতিসহজেই মুখস্ত হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ ।
এই বইতে যে ৩৬৫টি হাদীস সংকলন করা হয়েছে তা তাওহীদ প্রকাশনীর ৬টি খন্ডে প্রকাশিত ৭৫৬৩টি হাদীস থেকে বাছাই করে নেয়া হয়েছে। আরো একটি মুল্যবান তথ্য হচ্ছে তাওহীদ প্রকাশনী ইমাম বুখারীর লিখা মূল আরবী কিতাব থেকে সরাসরি অভিজ্ঞ আরবী ভাষায় পারদর্শী ও হাদীস বিশারদবৃন্দের সহায়তায় তা বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এবং হাদীসগুলোর শুরুতে সে নাম্বার রয়েছে তা মূল আরবী সহীহ বুখারীর-ই নাম্বার। তাই কেউ যদি রেফারেন্স হিসেবে কোন হাদীস ব্যবহার করতে চান তাহলে এই নাম্মার অতি সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। এতে আরব এবং অনারব সকলেই রেফারেন্স প্রয়োজন মিলিয়ে দেখতে পারবেন।
কিছু কিছু হাদীসের শেষে আমরা একটি * (স্টার চিহ্ন) ব্যবহার করেছি, এর কারণ হচ্ছে ঐ একই হাদীস সহীহ মুসলিমেও রয়েছে।
কিভাবে এবং কোথা থেকে পড়া শুরু করবো? বিষয়টি এমন নয় যে আমাদেরকে ঠিক জানুয়ারীর এক তারিখ থেকেই পড়া শুরু করতে হবে । অর্থাৎ আমি এই বইটি যে মাসেই হাতে পাই না কেন, যে কোন একটি তারিখ থেকেই পড়া শুরু করতে পারি । ক্যালেন্ডারের প্রতিদিনের তারিখের সাথে মিল রেখে পড়তে থাকলে হিসাব রাখতে হয়তো সুবিধে হবে। যেমন, আমি যদি ১লা জুলাই থেকে পড়া শুরু করি তা হলে পরবর্তী বছরের ৩০শে জুন গিয়ে ৩৬৫টি হাদীস পড়া শেষ হবে। আবার কেউ চাইলে দ্রুত জানার জন্য এক মাসেও পুড়ো বই পড়ে শেষ করে ফেলতে পারেন।
বিশেষ নোট :
সংকলনের সময় একটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা হয়েছে যে, ৩৬৫টি হাদীসের মধ্যে একটি শব্দও আমরা নিজেদের থেকে সংযুক্ত করিনি। কারণ রসূল (ﷺ) -এর কথাকে একবিন্দুও পরিবর্তন করার কারো অধিকার নেই। যদি কেউ কোন বক্তৃতায় কোন হাদীস কোট করেন তাহলে রসূল (ﷺ) -এর কথাটি হুবহু বলতে হবে, কোন প্রকার নড়চড় করা যাবে না। আরো কিছু তথ্য এই বইয়ের শেষে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে যা একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের সকলেরই জানা প্রয়োজন। যেমন : হাদীস সংকলনের ইতিহাস, হাদীসের প্রকারভেদ, সহীহ হাদীস, বানোয়াট হাদীস ইত্যাদি। এছাড়াও ইমাম বুখারী (রহ.) ও ইমাম মুসলিম (রহ.) দু’জনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস দেয়া হয়েছে। এই দুই ইমামের সংগৃহীত হাদীসগুলো নিঃসন্দেহে সহীহ তা পৃথিবীর সকল মুহাদ্দিস এবং স্কলারগণ একমত।
৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস :
এই বইয়ের শেষ অধ্যায়ে আলবেনীয়ার বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ শায়খ নাসিরুদ্দিন আল আলবানীর যাচাই-বাছাই করা হাদীস গ্রন্থ থেকে ৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস সংকলন করা হয়েছে। সহীহ হাদীসের পাশাপাশি এই কমোন জাল ও দুর্বল হাদীসগুলোও আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন।
সম্মানিত পাঠকের পরামর্শ, ভুল সংশোধন ও দৃষ্টি আকর্ষণ ইমেইল অথবা টেলিফোনে জানালে আগামী সংস্করণে তা প্রতিফলিত হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের ভুল-ত্রুটি মার্জনা করে সঠিক পথে থাকার তৌফিক দিন। আমীন।
জাযাকআল্লাহু খায়রন,
আমির জামান
নাজমা জামান
টরন্টো, কানাডা।
এই বইতে যে ৩৬৫টি হাদীস সংকলন করা হয়েছে তা তাওহীদ প্রকাশনীর ৬টি খন্ডে প্রকাশিত ৭৫৬৩টি হাদীস থেকে বাছাই করে নেয়া হয়েছে। আরো একটি মুল্যবান তথ্য হচ্ছে তাওহীদ প্রকাশনী ইমাম বুখারীর লিখা মূল আরবী কিতাব থেকে সরাসরি অভিজ্ঞ আরবী ভাষায় পারদর্শী ও হাদীস বিশারদবৃন্দের সহায়তায় তা বাংলায় অনুবাদ করেছেন। এবং হাদীসগুলোর শুরুতে সে নাম্বার রয়েছে তা মূল আরবী সহীহ বুখারীর-ই নাম্বার। তাই কেউ যদি রেফারেন্স হিসেবে কোন হাদীস ব্যবহার করতে চান তাহলে এই নাম্মার অতি সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। এতে আরব এবং অনারব সকলেই রেফারেন্স প্রয়োজন মিলিয়ে দেখতে পারবেন।
কিছু কিছু হাদীসের শেষে আমরা একটি * (স্টার চিহ্ন) ব্যবহার করেছি, এর কারণ হচ্ছে ঐ একই হাদীস সহীহ মুসলিমেও রয়েছে।
কিভাবে এবং কোথা থেকে পড়া শুরু করবো? বিষয়টি এমন নয় যে আমাদেরকে ঠিক জানুয়ারীর এক তারিখ থেকেই পড়া শুরু করতে হবে । অর্থাৎ আমি এই বইটি যে মাসেই হাতে পাই না কেন, যে কোন একটি তারিখ থেকেই পড়া শুরু করতে পারি । ক্যালেন্ডারের প্রতিদিনের তারিখের সাথে মিল রেখে পড়তে থাকলে হিসাব রাখতে হয়তো সুবিধে হবে। যেমন, আমি যদি ১লা জুলাই থেকে পড়া শুরু করি তা হলে পরবর্তী বছরের ৩০শে জুন গিয়ে ৩৬৫টি হাদীস পড়া শেষ হবে। আবার কেউ চাইলে দ্রুত জানার জন্য এক মাসেও পুড়ো বই পড়ে শেষ করে ফেলতে পারেন।
বিশেষ নোট :
সংকলনের সময় একটি বিষয়ের প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখা হয়েছে যে, ৩৬৫টি হাদীসের মধ্যে একটি শব্দও আমরা নিজেদের থেকে সংযুক্ত করিনি। কারণ রসূল (ﷺ) -এর কথাকে একবিন্দুও পরিবর্তন করার কারো অধিকার নেই। যদি কেউ কোন বক্তৃতায় কোন হাদীস কোট করেন তাহলে রসূল (ﷺ) -এর কথাটি হুবহু বলতে হবে, কোন প্রকার নড়চড় করা যাবে না। আরো কিছু তথ্য এই বইয়ের শেষে কিছু তথ্য দেয়া হয়েছে যা একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের সকলেরই জানা প্রয়োজন। যেমন : হাদীস সংকলনের ইতিহাস, হাদীসের প্রকারভেদ, সহীহ হাদীস, বানোয়াট হাদীস ইত্যাদি। এছাড়াও ইমাম বুখারী (রহ.) ও ইমাম মুসলিম (রহ.) দু’জনের সংক্ষিপ্ত ইতিহাস দেয়া হয়েছে। এই দুই ইমামের সংগৃহীত হাদীসগুলো নিঃসন্দেহে সহীহ তা পৃথিবীর সকল মুহাদ্দিস এবং স্কলারগণ একমত।
৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস :
এই বইয়ের শেষ অধ্যায়ে আলবেনীয়ার বিশিষ্ট হাদীস বিশারদ শায়খ নাসিরুদ্দিন আল আলবানীর যাচাই-বাছাই করা হাদীস গ্রন্থ থেকে ৩৬৫টি জাল ও দুর্বল হাদীস সংকলন করা হয়েছে। সহীহ হাদীসের পাশাপাশি এই কমোন জাল ও দুর্বল হাদীসগুলোও আমাদের জানা থাকা প্রয়োজন।
সম্মানিত পাঠকের পরামর্শ, ভুল সংশোধন ও দৃষ্টি আকর্ষণ ইমেইল অথবা টেলিফোনে জানালে আগামী সংস্করণে তা প্রতিফলিত হবে ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ আমাদের ভুল-ত্রুটি মার্জনা করে সঠিক পথে থাকার তৌফিক দিন। আমীন।
জাযাকআল্লাহু খায়রন,
আমির জামান
নাজমা জামান
টরন্টো, কানাডা।
১. আলক্বামাহ ইবনু ওয়াক্কাস আল-লায়সী (রহ.) হতে বর্ণিত, আমি উমার ইবনুল খাত্তাব (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে মিম্বারের উপর দাঁড়িয়ে বলতে শুনেছি : আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি : [কাজ (এর প্রাপ্য হবে) নিয়্যাত অনুযায়ী। আর মানুষ তার নিয়্যাত অনুযায়ী প্রতিফল পাবে । তাই যার হিজরত হবে ইহকাল লাভের অথবা কোন মহিলাকে বিবাহ করার উদ্দেশ্যে- তবে তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে, যে জন্যে, সে হিজরত করেছে।]*
৬. ইবনু 'আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ছিলেন সর্বশ্রেষ্ঠ দানশীল রমাদানে তিনি আরো অধিক দানশীল হতেন, যখন জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতেন। আর রমাদানের প্রতি রাতেই জিবরীল (আলাইহিস সালাম) তাঁর সাথে দেখা করতেন এবং তাঁরা একে অপরকে কুরআন তিলাওয়াত করে শোনাতেন। নিশ্চয়ই আল্লাহর রসূল (ﷺ) রহমতের বায়ু অপেক্ষাও অধিক দানশীল ছিলেন। *
২৯. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : আমাকে জাহান্নাম দেখানো হয় । (আমি দেখি), তার অধিবাসীদের বেশির ভাগই নারীজাতি; (কারণ) তারা কুফরী করে । জিজ্ঞেস করা হল, তারা কি আল্লাহর সঙ্গে কুফরী করে?' তিনি বললেন : তারা স্বামীর অবাধ্য হয় এবং অকৃতজ্ঞ হয়। তুমি যদি দীর্ঘদিন তাদের কারো প্রতি ইহসান করতে থাক, অতঃপর সে তোমার সামান্য অবহেলা দেখতে পেলেই বলে ফেলে, 'আমি কক্ষণো তোমার নিকট হতে ভালো ব্যবহার পাইনি।*
৩৪. 'আবদুল্লাহ ইবনু 'আমর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন : চারটি স্বভাব যার মধ্যে বিদ্যমান সে হচ্ছে খাটি মুনাফিক। যার মধ্যে এর কোন একটি স্বভাব থাকবে, তা পরিত্যাগ না করা পর্যন্ত তার মধ্যে মুনাফিকের একটি স্বভাব থেকে যায় ।
১) আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে;
২) কথা বললে মিথ্যা বলে;
৩) অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং
৪) বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগালি দেয়। *
১) আমানত রাখা হলে খিয়ানত করে;
২) কথা বললে মিথ্যা বলে;
৩) অঙ্গীকার করলে ভঙ্গ করে; এবং
৪) বিবাদে লিপ্ত হলে অশ্লীলভাবে গালাগালি দেয়। *
৫৪. উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : কর্মসমূহ সংকল্পের সাথে সম্পৃক্ত এবং প্রতিটি মানুষের প্রাপ্য তার সংকল্প অনুযায়ী। কাজেই যার হিজরত হবে আল্লাহ ও তদীয় রসূলের উদ্দেশে, তার হিজরত আল্লাহ ও তদীয় রসূলের উদ্দেশে হয়েছে বলেই ধরা হবে । আর যার হিজরত হয় দুনিয়া অর্জনের জন্য বা কোন নারীকে বিবাহ করার উদ্দেশে, তার হিজরত সে উদ্দেশ্যেই হবে যে উদ্দেশে সে হিজরত করেছে। *
৫৬. সাআদ ইবনু আবূ ওয়াক্কাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তুমি আল্লাহর নৈকট্য অর্জনের উদ্দেশ্যে যা-ই ব্যয় কর না কেন, তোমাকে তার প্রতিদান নিশ্চিতরূপে প্রদান করা হবে। এমনকি তুমি তোমার স্ত্রীর মুখে যা তুলে দাও, তারও। *
৫৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : একদা আল্লাহর রসূল (ﷺ) মজলিসে জনসম্মুখে কিছু আলোচনা করছিলেন। ইতিমধ্যে তাঁর নিকট জনৈক বেদুঈন এসে জিজ্ঞেস করল, “কিয়ামাত কখন সংঘটিত হবে? আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাঁর আলোচনায় রত থাকলেন। এতে কেউ কেউ বললেন, লোকটি যা বলেছে তিনি তা শুনেছেন কিন্তু তার কথা পছন্দ করেননি। আর কেউ কেউ বললেন বরং তিনি শুনতেই পাননি। আল্লাহর রসূল (ﷺ) আলোচনা শেষে বললেন : “কিয়ামাত সম্পর্কে প্রশ্নকারী লোকটি কোথায়? সে বলল, এই যে আমি, হে আল্লাহর রসূল! তিমি বললেন : যখন কোন অনুপযুক্ত ব্যক্তির উপর কোন কাজের দায়িত্ব দেয়া হয়, তখন তুমি কিয়ামতের অপেক্ষা করবে।
৭১. হুমায়দ ইবনু আবদুর রহমান (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি মু'আবিয়াহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে খুৎবায় বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ যার মঙ্গল চান, তাকে দ্বীনের 'ইলম দান। করেন। আমি তো বিতরণকারী মাত্র, আল্লাহই (জ্ঞান) দাতা। সর্বদাই এ উম্মত কিয়ামাত পর্যন্ত আল্লাহর হুকুমের উপর প্রতিষ্ঠিত থাকবে, বিরোধিতাকারীরা তাদের কোন ক্ষতি করতে পারবে না। *
৭৩. আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : কেবল দু'টি বিষয়ে ইর্ষা করা বৈধ;
১) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর তাকে বৈধ পন্থায় অকাতরে ব্যয় করার ক্ষমতা দিয়েছেন;
২) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ তাআলা প্রজ্ঞা দান। করেছেন, অতঃপর সে তার মাধ্যমে বিচার ফায়সালা করে ও তা অন্যকে শিক্ষা দেয়। *
১) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন, অতঃপর তাকে বৈধ পন্থায় অকাতরে ব্যয় করার ক্ষমতা দিয়েছেন;
২) সে ব্যক্তির উপর, যাকে আল্লাহ তাআলা প্রজ্ঞা দান। করেছেন, অতঃপর সে তার মাধ্যমে বিচার ফায়সালা করে ও তা অন্যকে শিক্ষা দেয়। *
৮১. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি কি তোমাদের এমন একটি হাদীস বর্ণনা করব যা আমার পর তোমাদের নিকট আর কেউ বর্ণনা করবে না। আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি যে, কিয়ামতের কিছু আলামাত হল ও ‘ইলম হ্রাস পাবে, অজ্ঞতার প্রসার ঘটবে, ব্যভিচার ছড়িয়ে পড়বে, স্ত্রীলোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাবে এবং পুরুষের সংখ্যা কমে যাবে, এমনকি প্রতি পঞ্চাশজন স্ত্রীলোকের জন্য মাত্র একজন পুরুষ হবে পরিচালক।
১৩৭. ‘আব্বাদ ইবনু তামীম (রহ.)-এর চাচা হতে বর্ণিত, একদা আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর নিকট এক ব্যক্তি সম্পর্কে বলা হল যে, তার মনে হয়েছিল যেন সলাতের মধ্যে কিছু হয়ে গিয়েছিল। তিনি বললেন : সে যেন ফিরে না যায়, যতক্ষণ না শব্দ শোনে বা দুর্গন্ধ পায়। *
১৪৪. আবু আইয়ুব আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন টয়লেটে যায়, তখন সে যেন কিবলার দিকে মুখ না করে এবং তার দিকে পিঠও না করে, বরং তোমরা পূর্ব দিক এবং পশ্চিম দিকে ফিরে বসবে (এই নির্দেশ মদীনার বাসিন্দাদের জন্য) *
১৭৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : বান্দা যে সময়টা মাসজিদে সলাতের অপেক্ষায় থাকে, তার সে পুরো সময়টাই সলাতের মধ্যে গণ্য হয় যতক্ষণ না সে হাদাস করে । জনৈক অনারব বলল, হে আবু হুরাইরাহ! ‘হাদাস কী? তিনি বললেন, ‘শব্দ করে বায়ু বের হওয়া।
১৭৮. মুহাম্মাদ ইবনুল হানাফিয়্যাহ (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ‘আলী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেছেন, আমার অধিক পরিমাণে মযী বের হতো। কিন্তু আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর নিকট এ সম্পর্কে জিজ্ঞেস করতে লজ্জাবোধ করছিলাম। তাই আমি মিকদাদ ইবনু আসওয়াদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে অনুরোধ করলাম, তিনি যেন আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর নিকট জিজ্ঞেস করেন। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন। তিনি বলেন : এতে শুধু ওযূ করতে হয় । হাদীসটি শু’বাহ (রহ.) আ’মাশ (রহ.) থেকে বর্ণনা করেছেন।
২২৩. উম্মু কায়স বিনত মিহসান (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, তিনি তাঁর এমন একটি ছোট ছেলেকে নিয়ে আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর নিকট এলেন। যে তখনো খাবার খেতে শিখেনি। আল্লাহর রসূল (ﷺ) শিশুটিকে তাঁর কোলে বসালেন। তখন সে তাঁর কাপড়ে পেশাব করে দিল । তিনি পানি আনিয়ে এর উপর ছিটিয়ে দিলেন এবং তা ধৌত করলেন না। *
২২৭. আসমা (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জনৈকা মহিলা নবী (ﷺ) -এর নিকট এসে বললেন : (হে আল্লাহর রসূল!) বলুন, আমাদের কারো কাপড়ে হায়যের রক্ত লেগে গেলে সে কী করবে? তিনি বললেন : সে তা ঘষে ফেলবে, তারপর পানি দিয়ে রগড়াবে এবং ভাল করে ধুয়ে ফেলবে। অতঃপর সেই কাপড়ে সলাত আদায় করবে। *
২৩৭. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) নবী হতে বর্ণনা করেন, তিনি বলেন : আল্লাহর রাস্তায় মুসলিমদের যে যখম হয়, কিয়ামতের দিন তার প্রতিটি যখম আঘাতকালীন সময়ে যে অবস্থায় ছিল সে অবস্থাতেই থাকবে। রক্ত ছুটে বের হতে থাকবে। তার রং হবে রক্তের রং কিন্তু গন্ধ হবে মিশকের মত। *
৩৮৯. হুযাইফাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, এক ব্যক্তি তার রুকুসাজদাহ পুরোপুরি আদায় করছিল না। সে যখন সলাত শেষ করলো তখন তাকে হুযাইফাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন : তোমার সলাত ঠিক হয়নি। রাবী বলেন : আমার মনে হয় তিনি (হুযাইফাহ) এ কথাও বলেছেন, (এ অবস্থায়) তোমার মৃত্যু হলে তা মুহাম্মাদ (ﷺ) -এর তরীকার বাইরে হবে ।
৪১৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : মুমিন যখন সলাতে থাকে, তখন সে তার প্রতিপালকের সাথে নিভৃতে কথা বলে। কাজেই সে যেন তার সামনে, ডানে থুথু না ফেলে, বরং তার বাম দিকে অথবা (বাম) পায়ের নীচে ফেলে ।
৫১৩. নবী (ﷺ) -এর সহধর্মিণী ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -এর সামনে শুয়ে থাকতাম আর আমার পা দুটো থাকত তাঁর কিবলার দিকে। তিনি যখন সাজদাহ করতেন তখন আমাকে টোকা দিতেন, আর আমি আমার পা সরিয়ে নিতাম। তিনি দাঁড়িয়ে গেলে পুনরায় পা দুটো প্রসারিত করে দিতাম। আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) বলেন : তখন ঘরে কোন বাতি ছিল না। *
৫১৬. আবু কাতাদাহ আনসারী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) তাঁর মেয়ে যয়নবের গর্ভজাত ও আবুল আস ইবনু রাবী'আহ ইবনু আবদ শামস (রহ.)-এর ঔরসজাত কন্যা উমামাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-কে কাঁধে নিয়ে সলাত আদায় করতেন। তিনি যখন সাজদাহয় যেতেন তখন তাকে রেখে দিতেন আর যখন দাঁড়াতেন তখন তাকে তুলে নিতেন। *
৫২৮. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -কে বলতে শুনেছেন, “বলতো যদি তোমাদের কারো বাড়ির সামনে একটি নদী থাকে, আর সে তাতে প্রত্যহ পাঁচবার গোসল করে, তাহলে কি তার দেহে কোন ময়লা থাকবে? তারা বললেন, তার দেহে কোনোরূপ ময়লা বাকী থাকবে না। আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন : এ হলো পাঁচ ওয়াক্ত সলাতের উদাহরণ। এর মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা (বান্দার) গুনাহসমূহ মিটিয়ে দেন। *
৫৩৭. জাহান্নাম তার প্রতিপালকের নিকট এ বলে নালিশ করছিলো, হে আমার প্রতিপালক! (দহনের প্রচণ্ডতায়) আমার এক অংশ আর এক অংশকে গ্রাস করে ফেলেছে। ফলে আল্লাহ তা'আলা তাকে দু'টি শ্বাস ফেলার অনুমতি দিলেন, একটি শীতকালে আর একটি গ্রীষ্মকালে। আর সে দুটি হলো, তোমরা গ্রীষ্মকালে যে প্রচণ্ড উত্তাপ এবং শীতকালে যে প্রচণ্ড ঠাণ্ডা অনুভব কর তাই । *
৪৪
ফেব্রুয়ারী ১০ - সূর্যাস্তের পূর্ব মুহূর্তে আসর সলাত এবং সুর্য উদয়ের পূর্ব মুহূর্তে ফযরের সলাত আদায়৫৫৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যদি সূর্য অস্ত যাওয়ার পুর্বে ‘আসরের সলাতের এক সাজদাহ পায়, তাহলে সে যেন সলাত পূর্ণ করে নেয়। আর যদি সূর্য উদিত হবার পূর্বে ফযর সলাতের এক সাজদাহ পায়, তাহলে সে যেন সলাত পূর্ণ করে নেয় । *
৬০৮. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যখন সলাতের জন্য আযান দেয়া হয়, তখন শয়তান। হাওয়া ছেড়ে পলায়ন করে, যাতে সে আযানের শব্দ না শোনে। যখন আযান শেষ হয়ে যায়, তখন সে আবার ফিরে আসে। আবার যখন সলাতের জন্য ইকামাত বলা হয়, তখন আবার দূরে সরে যায়। ইক্বামাত শেষ হলে সে পুনরায় ফিরে এসে লোকের মনে কুমন্ত্রণা দেয় এবং বলে এটা স্মরণ কর, ওটা স্মরণ কর, বিস্মৃত বিষয়গুলো সে মনে করিয়ে দেয়। এভাবে লোকটি এমন পর্যায়ে পৌছে যে, সে কয় রাক'আত সলাত আদায় করেছে তা মনে করতে পারে না।
৬৩৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, যখন তোমরা ইক্বামাত শুনতে পাবে, তখন সলাতের দিকে চলে আসবে, তোমাদের উচিত স্থিরতা ও গাম্ভীর্য অবলম্বন করা। তাড়াহুড়া করবে না । ইমামের সাথে যতটুকু পাও তা আদায় করবে, আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ করবে।*
৬৫১. আবূ মূসা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : (মসজিদ হতে) যে যত অধিক দূরত্ব অতিক্রম করে সলাতে আসে, তার তত অধিক পুণ্য হবে। আর যে ব্যক্তি ইমামের সঙ্গে সলাত আদায় করা পর্যন্ত অপেক্ষা করে, তার পুণ্য সে ব্যক্তির চেয়ে অধিক, যে একাকী সলাত আদায় করে ঘুমিয়ে পড়ে। *
৬৯৪. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তারা তোমাদের ইমামতি করে। যদি তারা সঠিকভাবে আদায় করে তাহলে তার সওয়াব তোমরা পাবে। আর যদি তারা ভুল করে, তাহলে তোমাদের জন্য সওয়াব আছে, আর ভুলত্রুটির দায়িত্ব তাদের (ইমামের) উপরই বর্তাবে।
৭০৩. আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ যখন লোকদের নিয়ে সলাত আদায় করে, তখন যেন সে সংক্ষেপে করে। কেননা, তাদের মাঝে দুর্বল, অসুস্থ ও বৃদ্ধ রয়েছে। আর যদি কেউ একাকী সলাত আদায় করে, তখন ইচ্ছামত দীর্ঘ করতে পারে ।*
৭০৯. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন : আমি দীর্ঘ করার ইচ্ছা নিয়ে সলাত শুরু করি। কিন্তু পরে শিশুর কান্না শুনে আমার সলাত সংক্ষেপ করে ফেলি । কেননা, শিশু কাঁদলে মায়ের মন যে খুবই উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে তা আমি জানি।
৭২৫. আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেন : তোমরা তোমাদের কাতার সোজা করে নিও। কেননা, আমি আমার পিছন হতেও তোমাদের দেখতে পাই। আনাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন আমাদের প্রত্যেকেই তার পার্শ্ববর্তী ব্যক্তির কাঁধের সাথে কাঁধ এবং পায়ের সাথে পা মিলাতাম।
৬২
ফেব্রুয়ারী ২৮ - তাকবীরে তাহরীমা, রুকুতে যাওয়া এবং রুকু হতে উঠার সময় উভয় হাত উঠানো (রফেইয়াদাইন করা)৭৩৭. আবু কিলাবাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি মালিক ইবনু হুওয়ায়রিস (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে দেখেছেন, তিনি যখন সলাত আদায় করতেন তখন তাকবীর বলতেন এবং তাঁর দু হাত উঠাতেন। আর যখন রুকু করার ইচ্ছা করতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন, আবার যখন রুকু হতে। মাথা উঠাতেন তখনও তাঁর উভয় হাত উঠাতেন এবং তিনি বর্ণনা করেন যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) এরূপ করেছেন ।*
১১৭৮. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমার খলীল ও বন্ধু (নবী (ﷺ)) আমাকে তিনটি কাজের ওসিয়্যাত (বিশেষ আদেশ) করেছেন, মৃত্যু পর্যন্ত তা আমি পরিত্যাগ করব না। (তা হল)
১) প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম,
২) সলাতুয-যুহা এবং
৩) বিতর (সলাত) আদায় করে শয়ন। করা । *
১) প্রতি মাসে তিন দিন সিয়াম,
২) সলাতুয-যুহা এবং
৩) বিতর (সলাত) আদায় করে শয়ন। করা । *
১২৩২. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ সলাতে দাঁড়ালে শয়তান এসে তাকে সন্দেহে ফেলে, এমনকি সে বুঝতে পারে না যে, সে কত রাকআত সলাত আদায় করেছে। তোমাদের কারো এ অবস্থা হলে সে যেন বসা অবস্থায় দু’টি সাজদাহ করে ।
১২৩৮. ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন; আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যে আল্লাহর সঙ্গে শিরক করা অবস্থায়। মারা যায়, সে জাহান্নামে প্রবেশ করবে। আমি বললাম, যে আল্লাহর সঙ্গে কোন কিছুর শিরক না করা অবস্থায় মারা যায়, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
১৩১৬. আবু সাঈদ খুদরী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেন : যখন জানাযা (খাটিয়ায়) রাখা হয় এবং পুরুষ লোকেরা তা তাদের কাঁধে তুলে নেয়, সে পুণ্যবান হলে তখন বলতে থাকে, আমাকে সামনে এগিয়ে দাও। আর পুণ্যবান না হলে সে আপন পরিজনকে বলতে থাকে, হায় আফসোস! এটা নিয়ে তোমরা কোথায় যাচ্ছ? মানুষ জাতি ব্যতীত সবাই তার চিৎকার শুনতে পায়। মানুষ যদি তা শুনতে পেত তবে অবশ্যই অজ্ঞান হয়ে
১৩৫৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) ইরশাদ করেছেন ও প্রত্যেক নবজাতকই ফিতরাতের উপর জন্মলাভ করে। অতঃপর তার পিতামাতা তাকে ইয়াহূদী, নাসারা বা মাজুসী (অগ্নিপূজারী) রূপে গড়ে তোলে । যেমন, চতুষ্পদ পশু একটি পূর্ণাঙ্গ বাচ্চা জন্ম দেয় । তোমরা কি তাকে কোন (জন্মগত) কানকাটা দেখতে পাও? অতঃপর আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) তিলাওয়াত করলেন : (যার অর্থ) “আল্লাহর দেয়া ফিতরাতের অনুসরণ কর, যে ফিতরাতের উপর তিনি মানুষ সৃষ্টি করেছেন, এটাই সরল সুদৃঢ় দ্বীন” (সূরা রূম : ৩০)।
১৩৭৩. ‘উরওয়া ইবনু যুবাইর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) সূত্রে বর্ণিত, তিনি আসমা বিনত আবু বকর (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-কে বলতে শুনেছেন যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) (একবার) দাঁড়িয়ে খুৎবাহ দিচ্ছিলেন তাতে তিনি কবরে মানুষ যে কঠিন। পরীক্ষার সম্মুখীন হবে, তার বর্ণনা দিলে মুসলিমগণ ভয়ার্ত চিৎকার করতে লাগলেন ।।
১৩৭৯. ‘আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : তোমাদের কেউ মারা গেলে অবশ্যই তার সামনে সকাল ও সন্ধ্যায় তার অবস্থান স্থল উপস্থাপন করা হয়। যদি সে জান্নাতী হয়, তবে (অবস্থান স্থল) জান্নাতীদের মধ্যে দেখানো হয়। আর সে জাহান্নামী হলে, তাকে জাহান্নামীদের (অবস্থান স্থল দেখানো হয়) আর তাকে বলা হয়, এ হচ্ছে। তোমার অবস্থান স্থল, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তোমাকে পুনরুত্থিত করা অবধি। *
১৪০৩. আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যাকে আল্লাহ সম্পদ দান করেছেন, কিন্তু সে এর যাকাত আদায় করেনি, কিয়ামতের দিন তার সম্পদকে টেকো (বিষের তীব্রতার কারণে) মাথা বিশিষ্ট বিষধর সাপের আকৃতি দান করে তার গলায় ঝুলিয়ে দেয়া হবে । সাপটি তার মুখের দু’পার্শ্ব কামড়ে ধরে বলবে, আমি তোমার সম্পদ, আমি তোমার জমাকৃত মাল। অতঃপর আল্লাহর রসূল তিলাওয়াত করেন : “আল্লাহ যাদেরকে সম্পদশালী করেছেন অথচ তারা সে সম্পদ নিয়ে কার্পণ্য করছে, তাদের ধারণা করা উচিত নয় যে, সেই সম্পদ তাদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে, বরং তা তাদের জন্য অকল্যাণকর হবে । অচিরেই ক্বিয়ামাত দিবসে, যা নিয়ে কার্পণ্য করছে তা দিয়ে তাদের গলদেশ শৃঙ্খলাবদ্ধ করা হবে ।” (সূরা আলি ইমরান : ১০৮)।
১৪০৯, ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, কেবল মাত্র দু'ধরনের ব্যক্তির প্রতি ঈর্ষা রাখা। যেতে পারে, একজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ সম্পদ দিয়েছেন এবং ন্যায় পথে তা ব্যয় করার মত ক্ষমতাবান করেছেন। অপরজন এমন ব্যক্তি যাকে আল্লাহ দ্বীনের জ্ঞান দান করেছেন (আর তিনি) সে অনুযায়ী ফায়সালা দেন ও অন্যান্যকে তা শিক্ষা দেন।
১৪১০. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন : যে ব্যক্তি হালাল কামাই থেকে একটি খেজুর পরিমাণ সদাকাহ করবে, (আল্লাহ তা কবূল করবেন) এবং আল্লাহ কেবল পবিত্র মাল কবুল করেন আর আল্লাহ তাঁর ডান হাত দিয়ে তা কবুল করেন। এরপর আল্লাহ দাতার কল্যাণার্থে তা প্রতিপালন করেন যেমন তোমাদের কেউ অশ্ব শাবক প্রতিপালন করে থাকে, অবশেষে সেই সদাকাহ পাহাড় বরাবর হয়ে যায় ।
১৪২০. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত যে, নবীর কোন সহধর্মিনী নবী (ﷺ)-কে বললেন : আমাদের মধ্য হতে সবার পূর্বে (মৃত্যুর পর) আপনার সাথে কে মিলিত হবে? তিনি বললেন তোমাদের মধ্যে যার হাত সবচেয়ে লম্বা। তাঁরা একটি বাঁশের কাঠির মাধ্যমে হাত মেপে দেখতে লাগলেন। সওদার হাত সকলের হাতের চেয়ে লম্বা বলে প্রমাণিত হল। পরে সবার আগে যায়নাব। (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর মৃত্যু হলে আমরা বুঝলাম হাতের দীর্ঘতর অর্থ দানশীলতা। তিনি [যায়নাব (রাদিয়াল্লাহু আনহা)] আমাদের মধ্যে সবার আগে তাঁর সাথে মিলিত হন এবং তিনি দান করতে ভালবাসতেন। *
১৪৩০. ‘উকবাহ ইবনু হারিস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদিন আল্লাহর রসূল (ﷺ) আসরের সলাত আদায় করে দ্রুত ঘরে প্রবেশ করলেন। অতঃপর বিলম্ব না করে বের হয়ে আসলেন। আমি বললাম বা তাঁকে বলা হলো, এমনটি করার কারণ কী? তখন তিনি বললেন : ঘরে সদাকাহর একখণ্ড সোনা রেখে এসেছিলাম কিন্তু রাত পর্যন্ত তা ঘরে থাকা আমি পছন্দ করিনি। কাজেই তা বণ্টন করে দিয়ে এলাম ।
১৪৪১. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) সূত্রে নবী (ﷺ) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন : ফাসাদের উদ্দেশ্য ব্যতীত স্ত্রী তার ঘরের খাদ্য সামগ্রী হতে সদাকাহ করলে সে এর সওয়াব পাবে। উপার্জন করার কারণে স্বামীও সওয়াব পাবে। এবং খাজাঞ্চীও সমপরিমাণ সওয়াব পাবে ।
১৪৭৭. শাবী (রহ.) হতে বর্ণিত যে, মুগীরা ইবনু শুবাহ (রহ.)-এর কাতিব (একান্ত সচিব) বলেছেন, মুআবিয়া (রাদিয়াল্লাহু আনহু) মুগীরা ইবনু শুবাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর কাছে লিখে পাঠালাম যে, নবী (ﷺ) -এর কাছ হতে আপনি যা শুনেছেন তার কিছু আমাকে লিখে জানান। তিনি তাঁর কাছে। লিখলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছি, আল্লাহ তোমাদের তিনটি কাজ অপছন্দ করেন-
১) অনর্থক কথাবার্তা,
২) সম্পদ নষ্ট করা এবং
৩) অত্যধিক প্রশ্ন করা।
১) অনর্থক কথাবার্তা,
২) সম্পদ নষ্ট করা এবং
৩) অত্যধিক প্রশ্ন করা।
১৮৯৬. সাহল (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন : জান্নাতে রাইয়্যান নামক একটি দরজা আছে। এ দরজা দিয়ে কিয়ামতের দিন সওম পালনকারীরাই প্রবেশ করবে। তাদের ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করতে পারবে না। ঘোষণা দেয়া হবে, সওম পালনকারীরা কোথায়? তখন তারা দাঁড়াবে। তারা ব্যতীত আর কেউ এ দরজা দিয়ে প্রবেশ করবে না। তাদের প্রবেশের পরই দরজা বন্ধ করে দেয়া হবে। যাতে করে এ দরজাটি দিয়ে আর। কেউ প্রবেশ না করে। *
১৯০০. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আল্লাহর রসূল (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, যখন তোমরা তা (চাঁদ) দেখবে তখন সওম রাখবে, আবার যখন তা দেখবে তখন ইফতার করবে। আর যদি আকাশ মেঘলা থাকে তবে সময় হিসাব করে (ত্রিশ দিন) পূর্ণ করবে । ইয়াহইয়া ইবনু বুকায়র (রহ.) ব্যতীত অন্যরা লায়স (রহ.) হতে ‘উকায়ল এবং ইউনুস (রহ.) সূত্রে বর্ণনা করেন, নবী (ﷺ) এ কথাটি বলেছেন রমাদানের চাঁদ সম্পর্কে।
১৯০১. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন : যে ব্যক্তি লাইলাতুল ক্বদরে ঈমানের সাথে সওয়াবের আশায় রাত জেগে ‘ইবাদত করে, তার পিছনের সমস্ত গুনাহ ক্ষমা করা হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানসহ সওয়াবের আশায় রমাদানে সিয়াম পালন করবে, তারও অতীতের সমস্ত গুনাহ মাফ করা হবে ।
১৯০৪. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসুল (ﷺ) বলেন : আল্লাহ তা'আলা বলেছেন, সওম ব্যতীত আদম সন্তানের প্রতিটি কাজই তার নিজের জন্য, কিন্তু সিয়াম আমার জন্য। তাই আমি এর প্রতিদান দেব। সিয়াম ঢাল স্বরূপ । তোমাদের কেউ যেন সিয়াম পালনের দিন অশ্লীলতায় লিপ্ত না হয় এবং ঝগড়া-বিবাদ না করে। যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সঙ্গে ঝগড়া করে, তাহলে সে যেন বলে, আমি একজন রোযাদার। যাঁর কবজায় মুহাম্মাদের প্রাণ, তাঁর শপথ! অবশ্যই রোযাদারের মুখের গন্ধ আল্লাহর নিকট মিকের গন্ধের চাইতেও সুগন্ধি । রোযাদারের জন্য রয়েছে দু'টি খুশী যা তাকে খুশী করে । যখন সে ইফতার করে, সে খুশী হয় এবং যখন সে। তার রবের সাথে সাক্ষাৎ করবে, তখন সওমের বিনিময়ে আনন্দিত হবে । *
১৯০৫. ‘আলকামাহ (রহ.) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর সঙ্গে চলতে ছিলাম, তখন তিনি বললেন, আমরা আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর সাথে ছিলাম, তিনি বললেন : যে ব্যক্তির সামর্থ্য আছে, সে যেন বিয়ে করে নেয়। কেননা বিয়ে চোখকে অবনত রাখে এবং লজ্জাস্থানকে সংযত করে। আর যার সামর্থ্য নেই, সে যেন সওম পালন করে। সওম তার প্রবৃত্তিকে দমন করে ।
১৯৪৩. নবী (ﷺ) -এর স্ত্রী ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত যে, হামযাহ ইবনু আমর আসলামী (রাদিয়াল্লাহু আনহু) অধিক সওম পালনে অভ্যস্ত ছিলেন। তিনি নবী (ﷺ) -কে বললেন, আমি সফরেও কি সওম পালন করতে পারি? তিনি বললেন: ইচ্ছা করলে তুমি সওম পালন করতে পার, আবার ইচ্ছা করলে নাও করতে পার।
২০৮২. হাকীম ইবনু হিযাম (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, যতক্ষণ বিচ্ছিন্ন না হবে ততক্ষণ ক্রেতা-বিক্রেতার ইখতিয়ার থাকবে। যদি তারা সত্য বলে ও যথাযথ অবস্থা বর্ণনা করে তবে তাদের ক্রয়-বিক্রয়ে বরকত হবে, আর যদি পণ্যের প্রকৃত অবস্থা গোপন করে ও মিথ্যা বলে তবে ক্রয়-বিক্রয়ের বরকত চলে যাবে ।
২১৯৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, নবী (ﷺ) বলেন, ফলের উপযোগিতা প্রকাশ হওয়ার আগে তা বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন এবং খেজুরের রং ধরার আগে (বিক্রি করতে নিষেধ করেছেন)। জিজ্ঞেস করা হল, রং ধরার অর্থ কী? তিনি বলেন, লাল বর্ণ বা হলুদ বর্ণ ধারণ করা।
২২৭০. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা বলেন, আমি কিয়ামতের দিন তিন ব্যক্তির বিরোধী থাকব । তাদের এক ব্যক্তি হল, যে আমার নামে প্রতিজ্ঞা করল, তারপর তা ভঙ্গ করল। আরেক ব্যক্তি হল, যে স্বাধীন মানুষ বিক্রি করে তার মূল্য ভোগ করে। অপর এক ব্যক্তি হল, যে কোন লোককে মজদুর নিয়োগ করল এবং তার হতে কাজ পুরোপুরি আদায় করল, অথচ তার পারিশ্রমিক দিল না।।
২৩৮৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, আমার কাছে যদি উহুদ পাহাড়ের সমান সোনা থাকত, তাহলেও আমার পছন্দ নয় যে, তিন দিন অতিবাহিত হওয়ার পর তার কিছু অংশ আমার কাছে থাকুক। তবে এতটুকু পরিমাণ ব্যতীত, যা আমি ঋণ। পরিশোধ করার জন্য রেখে দেই।
২৩৯৭. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) সলাতে এই বলে দু'আ করতেন, হে আল্লাহ! আমি তোমার কাছে। গুনাহ এবং ঋণ হতে পানাহ চাচ্ছি। একজন প্রশ্নকারী বলল, (হে আল্লাহর রসূল)! আপনি ঋণ হতে এত বেশী বেশী পানাহ চান কেন? তিনি উত্তর দিলেন, মানুষ ঋণগ্রস্ত হলে যখন কথা বলে মিথ্যা বলে এবং ওয়াদা করলে তা খেলাফ করে।
২৪৪২. ‘আবদুল্লাহ ইবনু 'উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার উপর যুলম করবে না এবং তাকে যালিমের হাতে সোপর্দ করবে না। যে কেউ তার ভাইয়ের অভাব পূরণ করবে, আল্লাহ তা'আলা কিয়ামতের দিন তার বিপদসমূহ দূর করবেন। যে ব্যক্তি কোন মুসলিমের দোষ ঢেকে রাখবে, আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ ঢেকে রাখবেন।
২৪৭৫. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, কোন ব্যভিচারী মু'মিন অবস্থায় ব্যভিচার করে না এবং কোন মদ্যপায়ী মু'মিন অবস্থায় মদ পান করে না। কোন চোর মু'মিন অবস্থায় চুরি করে না। কোন লুটতরাজকারী মু'মিন অবস্থায় এরূপ লুটতরাজ করে না যে, যখন সে লুটতরাজ করে তখন তার প্রতি লোকজন চোখ তুলে তাকিয়ে থাকে।
২৭৪৭. ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, উত্তরাধিকারী হিসেবে সম্পদ পেতো সন্তান আর পিতা-মাতার জন্য ছিল অসীয়াত। অতঃপর আল্লাহ তা'আলা তাঁর পছন্দ মত এ বিধান রহিত করে ছেলের অংশ মেয়ের দ্বিগুণ, পিতামাতা প্রত্যেকের জন্য এক ষষ্ঠাংশ, স্ত্রীর জন্য এক অষ্টমাংশ, এক চুতর্থাংশ, স্বামীর জন্য অর্ধেক, এক চতুর্থাংশ নির্ধারণ করেন।
২৭৬০. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, জনৈক ব্যক্তি নবী (ﷺ) - কে বললেন, আমার মা হঠাৎ মৃত্যুবরণ করেছেন। আমার ধারণা হয় যে, যদি তিনি কথা বলতে পারতেন তবে সদাকাহ করতেন। আমি কি তার পক্ষ হতে সদাকাহ করব? আল্লাহর রসূল (ﷺ) বললেন, হ্যা, তার পক্ষ হতে সদাকাহ করতে পার।
২৮১৭. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, জান্নাতে প্রবেশের পর আর কেউ দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা। করবে না, যদিও দুনিয়ার সকল জিনিস তাকে দেয়া হয়। একমাত্র শহীদ ব্যতীত; সে দুনিয়ায় ফিরে আসার আকাঙ্ক্ষা করবে যেন দশবার শহীদ হয়। কেননা সে শাহাদাতের মর্যাদা দেখেছে। *
২৮২৩. আনাস ইবনু মালিক (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) এই দু’আ করতেন, হে আল্লাহ! আমি অক্ষমতা, ভীরুতা ও বার্ধক্য থেকে আপনার নিকট পানাহ চাচ্ছি এবং জীবন ও মরণের ফিতনা থেকে এবং কবরের আযাব থেকে আপনার নিকট পানাহ চাচ্ছি। *
৩২১০. ‘আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি আল্লাহর রসূল (ﷺ)-কে বলতে শুনেছেন যে, ফিরিশতামণ্ডলী মেঘমালার আড়ালে অবতরণ করেন এবং আকাশের ফায়সালাসমূহ আলোচনা করেন। তখন শয়তানেরা তা চুরি করে শোনার চেষ্টা করে এবং তার কিছু শোনেও ফেলে। অতঃপর তারা সেটা গণকের নিকট পৌছে দেয় এবং তারা সেই শোনা কথার সঙ্গে নিজেদের আরো শত মিথ্যা মিলিয়ে বলে থাকে।
৩২১১. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘জুমু'আর দিন মাসজিদের প্রতিটি দরজায় ফিরিশতা এসে দাঁড়িয়ে যায় এবং যে ব্যক্তি প্রথম মাসজিদে প্রবেশ করে, তার নাম লিখে নেয় । অতঃপর ক্রমান্বয়ে পরবর্তীদের নামও লিখে নেয়। ইমাম যখন বসে পড়েন। তখন তারা এসব লেখা পুস্তিকা বন্ধ করে দেন এবং তাঁরা মাসজিদে এসে যিকর (খুতবা) শুনতে থাকেন।
৩২১৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -কে বলতে শুনেছি, যে ব্যক্তি আল্লাহর পথে কোন কিছু জোড়ায় জোড়ায় দান করবে, তাকে জান্নাতের পর্যবেক্ষকগণ আহ্বান করতে থাকবে, হে অমুক ব্যক্তি! এ দিকে আস! তখন আবূ বাকর (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, এমন ব্যক্তি তো সেই যার কোন ধবংস নেই। তখন নবী (ﷺ) বললেন, আমি আশা করি, তুমি তাদের মধ্যে একজন হবে।
৩২২৯. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যতক্ষণ পর্যন্ত সলাতে রত থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত ফিরিশতাগণ এ বলে দু’আ করতে থাকে, হে আল্লাহ! তাকে ক্ষমা করে দিন এবং হে আল্লাহ! তার প্রতি রহম করুন যতক্ষণ পর্যন্ত লোকটি সলাত ছেড়ে না দাঁড়ায় কিংবা তার ওযু ভঙ্গ না হয় ।
৩২৩৭. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, কোন লোক যদি নিজ স্ত্রীকে নিজ বিছানায় আসতে ডাকে আর সে অস্বীকার করে এবং সে ব্যক্তি স্ত্রীর উপর দুঃখ নিয়ে রাত্রি যাপন করে, তাহলে ফিরিশতাগণ এমন স্ত্রীর উপর সকাল পর্যন্ত অভিশাপ দিতে থাকে। *
৩২৪১. 'ইমরান ইবনু হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, ‘আমি জান্নাতের অধিবাসী সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি। আমি জানতে পারলাম, জান্নাতে অধিকাংশ অধিবাসী হবে দরিদ্র লোক। জাহান্নামীদের সম্পর্কে জ্ঞাত হয়েছি, আমি জানতে পারলাম, এর বেশির ভাগ অধিবাসী নারী।
৩২৪৭. সাহল ইবনু সা’দ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, নবী (ﷺ) বলেছেন, আমার উম্মতের সত্তর হাজার লোক অথবা সাত লক্ষ লোক একই সঙ্গে জান্নাতে প্রবেশ করবে। তাদের কেউ আগে কেউ পরে এভাবে নয় আর তাদের চেহারা পূর্ণিমার চাঁদের মত উজ্জ্বল থাকবে । *
৩২৬৫. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমাদের আগুন জাহান্নামের আগুনের সত্তর ভাগের একভাগ মাত্র । বলা হল, হে আল্লাহর রসূল! জাহান্নামীদেরকে শাস্তি দেয়ার জন্য দুনিয়ার আগুনই তো যথেষ্ট ছিল। তিনি বললেন, “দুনিয়ার আগুনের উপর জাহান্নামের আগুনের তাপ আরো উনসত্তর গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, প্রত্যেক অংশে তার সম পরিমাণ উত্তাপ রয়েছে।'
৩২৭৩. ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আল্লাহর রসূল (ﷺ) বলেছেন, তোমরা সূর্যোদয়ের সময়কে এবং সূর্যাস্তের সময়কে তোমাদের সলাতের জন্য নির্ধারিত করো না। কেননা তা শয়তানের দু' শিং-এর মাঝখান দিয়ে উদিত হয়। বর্ণনাকারী বলেন, হিশাম (রহ.) ‘শয়তান’ বলেছেন ‘আশ-শয়তান’ বলেছেন তা আমি জানি না। *
৩২৮৬. আবু হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, প্রত্যেক আদম সন্তানের জন্মের সময় তার পার্শ্বদেশে শয়তান তার দুই আঙ্গুল দ্বারা খোচা মারে। ঈসা ইবনু মরয়াম (আলাইহিস সালাম)-এর ব্যতিক্রম। সে তাঁকে খোচা মারতে গিয়েছিল। তখন সে পর্দার ওপর খোচা মারে।
৩২৯২. আবু কাতাদাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, সৎ ও ভাল স্বপ্ন আল্লাহর তরফ হতে হয়ে থাকে। আর মন্দ স্বপ্ন শয়তানের তরফ হতে হয়ে থাকে। কাজেই তোমাদের কেউ যখন ভয়ানক মন্দ স্বপ্ন দেখে তখন সে যেন তার বাম দিকে থুথু ফেলে আর শয়তানের ক্ষতি হতে আল্লাহর নিকট আশ্রয় চায় । তা হলে এমন স্বপ্ন তার কোন ক্ষতি করতে পারবে। না।
৩৩২০. ‘উবাইদ ইবনু হুনায়ন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আবূ হুরাইরাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলতে শুনেছি, নবী (ﷺ) বলেছেন, “তোমাদের কারো পানীয় দ্রব্যে মাছি পড়লে সেটাকে তাতে ডুবিয়ে দেবে। অতঃপর তাকে উঠিয়ে ফেলবে। কেননা তার এক ডানায় রোগ থাকে আর অপর ডানায় থাকে প্রতিষেধক।
৩৩৩৫. ‘আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছেন, কোন ব্যক্তিকে অন্যায়ভাবে হত্যা করা হলে, তার এ খুনের পাপের অংশ আদম (আলাইহিস সালাম)-এর প্রথম ছেলের (কাবিলের) উপর বর্তায়। কারণ সেই সর্বপ্রথম হত্যার প্রচলন ঘটায়। *
৩২৭৪. আবু সাঈদ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবী (ﷺ) বলেছেন, সলাত আদায়ের সময় তোমাদের কারো সম্মুখ দিয়ে যখন কেউ চলাচল করবে তখন সে তাকে অবশ্যই বাধা দিবে । সে যদি অমান্য করে তবে আবারো তাকে বাধা দিবে । অতঃপরও যদি সে অমান্য করে তবে অবশ্যই তার সঙ্গে লড়াই করবে । কেননা সে শয়তান।
৩৫০৯. ওয়ায়িলাহ ইবনু আসকা (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বলেন যে, নবী (ﷺ) বলেছেন, কোন লোকের এমন লোককে পিতা বলে দাবি করা যে তার পিতা নয় এবং প্রকৃতই যা দেখেনি তা দেখার দাবি করা এবং আল্লাহর রসূল (ﷺ) যা বলেননি তা তাঁর প্রতি মিথ্যারোপ করা নিঃসন্দেহে বড় মিথ্যা।
৯৩১. জাবির ইবনু আবদুল্লাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, এক জুমুআহর দিন নবী (ﷺ) খুতবাহ দেয়ার সময় এক ব্যক্তি প্রবেশ করলে তিনি তাকে জিজ্ঞেস করলেন, সলাত আদায় করেছ কি? সে বলল, না; তিনি। বললেন : উঠ, দু'রাকআত সলাত আদায় কর ।
৩৭৫৩. আবদুল্লাহ ইবনু উমার (রাদিয়াল্লাহু আনহু) হতে বর্ণিত যে, তাকে ইরাকের এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করল, ইহরামের অবস্থায় মশা-মাছি মারা যাবে কি? তিনি বললেন, ইরাকবাসী মশা-মাছি মারা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করছে অথচ তারা। আল্লাহর রসূল (ﷺ)-এর নাতিকে হত্যা করেছে। নবী (ﷺ) বলতেন, হাসান ও হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আমার নিকট দুনিয়ায় যেন দু’টি ফুল ।
৩৭৬৮. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) বললেন, হে ‘আয়িশাহ! জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) তোমাকে সালাম বলেছেন। আমি উত্তরে বললাম “ওয়া আলাইহিস সালাম ওয়ারহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু” । আপনি যা দেখতে পান আমি তা দেখতে পাই না। এ কথা দ্বারা তিনি রসূলুল্লাহ (ﷺ) -কে বুঝিয়েছেন।
৩৭৬৫. ইবনু আবূ মুলায়কাহ (রহ.) হতে বর্ণিত, ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-কে বলা হল, আপনি আমীরুল মু'মিনীন মু'আবিয়াহ (রাদিয়াল্লাহু আনহু)-এর সঙ্গে এ বিষয় আলাপ করবেন কি? যেহেতু তিনি বিতর সলাত এক রাকআত আদায় করেছেন। ইবনু আব্বাস (রাদিয়াল্লাহু আনহু) বললেন, তিনি ঠিকই করেছেন, কারণ তিনি নিজেই একজন ফকীহ।
৩৮১৭. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি নবী (ﷺ) -এর অন্য কোন স্ত্রীর ব্যাপারে এত ঈর্ষা পোষণ করিনি, যতটুকু খাদীজাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর প্রতি করেছি। যেহেতু নবী (ﷺ) তার আলোচনা বেশি করতেন। তিনি (আরো) বলেন, খাদীজাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-এর (ইন্তি কালের) তিন বছর পর তিনি আমাকে বিবাহ করেন। আল্লাহ নিজে অথবা জিবরাঈল (আলাইহিস সালাম) নবী (ﷺ) কে আদেশ করলেন যে, খাদীজাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা)-কে জান্নাতে মণিমুক্তা খচিত একটি ভবনের খোশ খবর দিন।
৩৮৩১. 'আয়িশাহ (রাদিয়াল্লাহু আনহা) হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, জাহিলি যুগে আশুরার দিন কুরাইশগণ ও নবী (ﷺ) সাওম পালন করতেন। যখন হিজরত করে মদীনায় আগমন করলেন, তখন তিনি নিজেও আশুরার সাওম পালন করতেন এবং অন্যকেও তা পালনের নির্দেশ দিতেন। যখন রমাদানের সাওম ফরয করা হল তখন যার ইচ্ছা (আশুরা) সওম করতেন আর যার ইচ্ছা করতেন।
১৭৮
জুন ২৪ - হুসাইন (রাদিয়াল্লাহু আনহু) খন্ডিত মস্তকে ইবনু যিয়াদের অপমান করা