hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

One Hadith a Day (সহীহ বুখারী থেকে ৩৬৫টি হাদীস ও শিক্ষা)

লেখকঃ আমির জামান, নাজমা জামান

৩৭৪
হাদীস সংকলনের ইতিহাস
সাহাবা কিরাম (রাদিআল্লাহু আনহুম) মহানবী (ﷺ) -এর প্রতিটি কথা মনোযোগ দিয়ে শুনতেন এবং তাঁর প্রতিটি কাজ ও আচরণ সূক্ষ্ম দৃষ্টিতে লক্ষ্য করতেন। রসূলুল্লাহ (ﷺ) সাহাবাগণকে ইসলামের আদর্শ ও এর যাবতীয় নির্দেশ যেমন মেনে চলতে হুকুম দিতেন, তেমনি তা স্মরণ রাখতে এবং অনাগত মানব জাতির কাছে পৌছে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।

হাদীস চর্চাকারীর জন্য তিনি নিমোক্ত দু’আ করেছেন : “আল্লাহ সে ব্যক্তিকে সজীব ও আলোকোজ্জ্বল করে রাখুন, যে আমার কথা শুনে স্মৃতিতে ধরে রাখল, তার পূর্ণ হিফাযাত করল এবং এমন লোকের কাছে পৌছে দিল, যে তা শুনতে পায়নি।” - (তিরমিযী ২য় খণ্ড)

মহানবী (ﷺ) ‘আবদুল কায়স গোত্রের প্রতিনিধি দলকে প্রয়োজনীয় উপদেশ দান করে বললেন : ‘এ কথাগুলো তোমরা পুরোপুরি স্মরণ রাখবে এবং যারা তোমাদের পিছনে রয়েছে তাদের কাছে পৌছে দিবে।” - (সহীহ বুখারী)।

তিনি সাহাবাগণকে সম্বোধন করে বলেছেন : “আজ তোমরা (আমার নিকট দ্বীনের কথা) শুনছ, তোমাদের নিকট থেকেও (তা) শুনা হবে।” - (মুসতাক হাকিম ১ম খণ্ড)।

তিনি আরো বলেন : “আমার পরে লোকেরা তোমাদের নিকট হাদীস শুনতে চাইবে । তাঁরা এ উদ্দেশ্যে তোমাদের নিকট এলে তাদের প্রতি সদয় হয়ো এবং তাঁদের নিকট হাদীস বর্ণনা করো।” - (মুসনাদ আহমাদ)।

তিনি অন্যত্র বলেছেন : “আমার নিকট থেকে একটি বাক্য হলেও তা অন্যের কাছে। পৌছে দাও।” -(সহীহ বুখারী)।

অষ্টম হিজরীতে মক্কা বিজয়ের পরের দিন এবং দশম হিজরীতে বিদায় হজ্জের ভাষণে মহানবী (ﷺ) বলেন : “উপস্থিত লোকেরা যেন অনুপস্থিতদের নিকট আমার এ কথাগুলো পৌঁছে দেয়।” - (সহীহ বুখারী)।

রসুলুল্লাহ (ﷺ) -এর উল্লেখিত বাণীর গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে তাঁর সাহাবাগণ হাদীস সংরক্ষণে উদ্যোগী হন। প্রধানতঃ তিনটি শক্তিশালী উপায়ে মহানবী (ﷺ) -এর হাদীস সংরক্ষিত হয় :

(১) উম্মাতের নিয়মিত ‘আমাল ।

(২) রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর লিখিত ডকুমেন্ট, সাহাবাদের নিকট লিখিত আকারে সংরক্ষিত হাদীস ও পুস্তিকা। এবং

(৩) হাদীস মুখস্থ করে স্মৃতি ভাণ্ডারে সঞ্চিত রাখা, অতঃপর বর্ণনা ও শিক্ষাদানের মাধ্যমে লোক পরস্পরায় তাঁর প্রচার ।

তদানীন্তন আরবদের স্মরণশক্তি অসাধারণভাবে প্রখর ছিল। কোন কিছু স্মৃতিতে ধরে রাখার জন্য একবার শ্রবণই তাদের জন্য যথেষ্ট ছিল। স্মরণশক্তির সাহায্যে আরববাসীরা হাজার বছর ধরে তাদের জাতীয় ঐতিহ্যকে সংরক্ষণ করে আসছিল। হাদীস সংরক্ষণের ক্ষেত্রে প্রাথমিক উপায় হিসেবে এ মাধ্যমটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মহানবী (ﷺ) যখনই কোন কথা বলতেন, উপস্থিত সাহাবাগণ পূর্ণ আগ্রহ ও আন্তরিকতা সহকারে তা শুনতেন, অতঃপর মুখস্থ করে নিতেন। তদানীন্তন মুসলিম সমাজে প্রায় এক লক্ষ লোক রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর বাণী ও কাজের বিবরণ সংরক্ষণ করেছেন এবং স্মৃতিপটে ধরে রেখেছেন। আবদুল্লাহ ইবনু আব্বাস (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, “আমরা রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর হাদীস মুখস্থ করতাম।” (সহীহ মুসলিম)

উম্মাতের নীরবিচ্ছিন্ন ‘আমাল, পারস্পরিক পর্যালোচনা, শিক্ষাদানের মাধ্যমেও হাদীস সংরক্ষিত হয় । রসূলুল্লাহ (ﷺ) যে নির্দেশই দিতেন, সাহাবাগণ সাথে সাথে তা কার্যে পরিণত করতেন। তাঁরা মাসজিদ অথবা কোন নির্দিষ্ট স্থানে একত্র হতেন এবং হাদীস আলোচনা করতেন। আনাস ইবনু মালিক (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, “আমরা মহানবী (ﷺ) -এর নিকট হাদীস শুনতাম। তিনি যখন মাজলিস থেকে উঠে চলে যেতেন, আমরা শোনা হাদীসগুলো পরস্পর পুনরাবৃত্তি ও পর্যালোচনা করতাম। আমাদের এক একজন করে সবাই হাদীসগুলো মুখস্থ শুনিয়ে দিতেন। এ ধরনের প্রায় বৈঠকেই অন্তত ষাট-সত্তরজন লোক উপস্থিত থাকতেন। বৈঠক থেকে আমরা যখন উঠে যেতাম তখন আমাদের প্রত্যেকেরই সবকিছু মুখস্থ হয়ে যেত। (আল-মাজমাউয যাওমাউয যাওয়ায়িদ ১ম খণ্ড)

মাসজিদে নাবাবীকে কেন্দ্র করে স্বয়ং নবী (ﷺ) -এর জীবদ্দশায় যে শিক্ষালয় গড়ে উঠেছিল সেখানে একদল বিশিষ্ট সাহাবা (আহলুস সুফফাহ) সার্বক্ষণিকভাবে কুরআন-হাদীস শিক্ষায় রত থাকতেন। হাদীস সংরক্ষণের জন্য যথাসময়ে যথেষ্ট পরিমাণে লেখনী শক্তিরও সাহায্য নেয়া হয়। প্রাথমিক পর্যায়ে কুরআন মাজীদ ব্যতীত সাধারণতঃ অন্য কিছু লিখে রাখা হতো না। পরবর্তীকালে হাদীসের বিরাট সম্পদ লিপিবদ্ধ হতে থাকে। হাদীস নবী (ﷺ) -এর জীবদ্দশায় লিপিবদ্ধ হয়নি, বরং তাঁর ইন্তিকালের শতাব্দীকাল পর লিপিবদ্ধ হয়েছে বলে যে ভুল ধারণা প্রচলিত আছে তার আদৌ কোন ভিত্তি নেই । অবশ্য এ কথা ঠিক যে, কুরআনের সঙ্গে হাদীস মিশ্রিত হয়ে জটিল পরিস্থিতির উদ্ভব হতে পারে কেবল এ আশঙ্কায় ইসলামী দাওয়াতের প্রাথমিক পর্যায়ে রসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেছিলেন : “আমার কোন কথাই লিখ না। কুরআন ব্যতীত আমার নিকট কেউ অন্য কিছু লিখে থাকলে তা যেন মুছে ফেলে।” - (সহীহ মুসলিম)।

কিন্তু যেখানে এরূপ বিভ্রান্তির আশঙ্কা ছিল না মহানবী (ﷺ) সে সকল ক্ষেত্রে হাদীস লিপিবদ্ধ করে রাখতে বিশেষভাবে উৎসাহিত করেন। ‘আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র (রাদিআল্লাহু আনহু) রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, “হে আল্লাহর রসূল! আমি হাদীস বর্ণনা করতে চাই। তাই যদি আপনি অনুমতি দেন, তাহলে আমি স্মরণশক্তির ব্যবহারের সাথে সাথে লেখনীরও সাহায্য গ্রহণ করতে ইচ্ছুক”। তিনি বললেন : “আমার হাদীস কণ্ঠস্থ করার সাথে লিখেও রাখতে পার।” - (দারিমী)।

আবদুল্লাহ ইবনু ‘আম্র (রাদিআল্লাহু আনহু) আরও বলেন, “আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট যা কিছু শুনতাম, মনে রাখার জন্য তা লিখে নিতাম । কতিপয় সাহাবা আমাকে তা লিখে রাখতে নিষেধ করলেন এবং বললেন, রসূলুল্লাহ (ﷺ) একজন মানুষ, কখন স্বাভাবিক অবস্থায় আবার কখনও রাগান্বিত অবস্থায় কথা বলেন”। এ কথা বলার পর আমি হাদীস লেখা থেকে বিরত থাকলাম। অতঃপর তা রসূলুল্লাহ (ﷺ)-কে জানালাম। তিনি নিজ হাতের আঙ্গুলের সাহায্যে স্বীয় মুখের দিকে ইঙ্গিত করে বললেন : “তুমি লিখে রাখ । সে সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ, এ মুখ দিয়ে সত্য ছাড়া অন্য কিছু বের হয় না।” - (আবু দাউদ, মুসনাদ আহমাদ, দারিমী, হাকিম, বাইহাকী)।

তাঁর সংকলনের নাম ছিল ‘সহীফাহ্ সাদিকাহ। এ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘সাদিকাহ্ হাদীসের একটি সংকলন-যা আমি নবী (ﷺ) এর নিকট শুনেছি। -(উলুমুল হাদীস)।

এ সংকলনে এক হাজার হাদীস লিপিবদ্ধ ছিল।

আবু হুরাইরাহ্ (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, এক আনসারী সাহাবা রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর কাছে আরয করলেন, হে আল্লাহর রসূল! আপনি যা কিছু বলেন, আমার কাছে খুবই ভালো লাগে, কিছু মনে রাখতে পারি না। নবী (ﷺ) বললেন, “তুমি ডান হাতের সাহায্য নাও”। তারপর তিনি হাতের ইশারায় লিখে রাখার প্রতি ইঙ্গিত করলেন । - (তিরমিযী)।

আবু হুরাইরাহ্ (রাদিআল্লাহু আনহু) বলেন, মক্কা বিজয়ের দিন রসূলুল্লাহ (ﷺ) ভাষণ দিলেন। আবু শাহ ইয়ামানী (রাদিআল্লাহু আনহু) বললেন, হে আল্লাহর রসূল! এ ভাষণ আমাকে লিখে দিন। নবী (ﷺ) ভাষণটি তাকে লিখে দেয়ার নির্দেশ দেন - (সহীহ বুখারী, তিরমিযী, মুসনাদ আহমাদ)।

হাসান ইবনু মুনাবিহ (রহ.) বলেন, আবু হুরাইরাহ্ (রাদিয়াল্লাহু আনহু) আমাকে বিপুল। সংখ্যক কিতাব (পাণ্ডুলিপি) দেখালেন তাতে রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর হাদীস লিপিবদ্ধ ছিল-(ফাতহুল বারী)।

আবু হুরাইরাহ্ (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর সংকলনের একটি কপি (ইমাম ইবনু তাইমিয়ার হস্তলিখিত) দামিক এবং বার্লিনের লাইব্রেরীতে সংরক্ষিত আছে। আনাস ইবনু মালিক (রাদিআল্লাহু আনহু) তাঁর (স্বহস্তে লিখিত) সংকলন বের করে ছাত্রদের দেখিয়ে বলেন, আমি এসব হাদীস নবী (ﷺ) -এর নিকট শুনে তা লিখে নিয়েছি। পরে তাঁকে তা পড়ে শুনিয়েছি - (মুসতাদরাক হাকিম)।

রাফি’ ইবনু খাদীজ (রাদিআল্লাহু আনহু)-কে স্বয়ং রসূলুল্লাহ (ﷺ) হাদীস লিখে রাখার অনুমতি দেন। তিনি প্রচুর হাদীস লিখে রাখেন -(মুসনাদ আহমাদ)।

“আলী ইবনু আবু তালিব (রাদিআল্লাহু আনহু)-ও হাদীস লিখে রাখতেন। চামড়ার থলের মধ্যে রক্ষিত সংকলনটি তাঁর সঙ্গেই থাকত। তিনি বলতেন, আমি রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট থেকে এ সহীফাহ্ ও কুরআন মাজীদ ব্যতীত আর কিছু লিখিনি। সংকলনটি স্বয়ং রসূলুল্লাহ (ﷺ) লেখিয়ে ছিলেন। এতে যাকাত, রক্তপণ (দিয়াত) বন্দীমুক্ত, মদীনার হারাম এবং আরও অনেক বিষয় সম্পর্কিত বিধান উল্লেখ ছিল - (বুখারীর ফাতহুল বারী)।

আবদুল্লাহ ইবনু মাসউদ (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর পুত্র আবদুর রহমান একটি পাণ্ডুলিপি নিয়ে এসে শপথ করে বললেন, এটা ইবনু মাসউদ (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর স্বহস্তে লিখিত - (জামি’বায়ানিল ‘ইম ১ম খণ্ড)।

স্বয়ং নবী (ﷺ) হিজরত করে মদীনায় পৌছে বিভিন্ন জাতির সমন্বয়ে যে চুক্তিপত্র সম্পাদন করেন (যা মদীনার সনদ নামে খ্যাত), হুদাইবিয়ার প্রান্তরে মক্কার মুশরিকদের সাথে যে সন্ধি করেন, বিভিন্ন সময়ে যে নির্দেশ জারি করেন, বিভিন্ন গোত্রপ্রধান ও রাজন্যবর্গের কাছে ইসলামের যে দাওয়াতনামা প্রেরণ করেন। এবং বিভিন্ন ব্যক্তি ও গোত্রকে যেসব জমি, খনি ও কূপ দান করেন তা সবই লিপিবদ্ধ আকারে ছিল এবং তা সবই হাদীসরূপে গণ্য। এসব ঘটনা থেকে পরিষ্কারভাবে প্রমাণিত হয় যে, নবী (ﷺ) -এর সময় থেকেই হাদীস লেখার কাজ শুরু হয়। তাঁর দরবারে বহু সংখ্যক সাহাবা সবসময়। উপস্থিত থাকতেন এবং তাঁর মুখে যে কথাই শুনতেন, তা লিখে নিতেন। রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর আমলে অনেক সাহাবার নিকট স্বহস্তে লিখিত সংকলন বর্তমান ছিল । উদাহরণস্বরূপ ‘আবদুল্লাহ ইবনু আমর (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর সহীফায়ে সাদিকাহ্ আবু হুরাইরাহ্ (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর সংকলন সমধিক খ্যাত।

সাহাবাগণ যেভাবেই রসূলুল্লাহ (ﷺ) -এর নিকট থেকে হাদীসের জ্ঞান লাভ করেন তেমনিভাবে হাজার হাজার তাবিঈ (সাহাবাদের পরের যুগ) সাহাবাগণের কাছে হাদীসের শিক্ষা লাভ করেন। একমাত্র আবু হুরাইরাহ্ (রাদিআল্লাহু আনহু)-এর নিকট আটশত তাবি’ঈ হাদীস শিক্ষা করেন। সাঈদ ইবনুল। মুসাইয়্যাব, উরগুয়াহ্ ইবনু যুবায়র, ইমাম যুহরী, হাসান বাসরী, ইবনু সিরীন, নাফি’, ইমাম যাইনুল আবিদীন, মুজাহিদ, কাযী শুরায়হ, মাসরূক, মাকহুল, ‘ইকরিমাহ, ‘আতা, কাতাদাহ, ইমাম শাবী, ‘আলকামাহ, ইবরাহীম নাখ’ঈ (রহ.) প্রমুখ প্রবীণ তাবি’ঈর প্রায় সকল দশম হিজরীর পর জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৪৮ হিজরীর মধ্যে ইন্তিকাল করেন।

অন্যদিকে সাহাবাগণ ১১০ হিজরীর মধ্যে ইন্তিকাল করেন। এদিক থেকে বিচার করলে দেখা যায়, তাবি’ঈগণ সাহাবাগণের দীর্ঘ সাহচর্য লাভ করেন। একজন তাবি’ঙ্গ বহু সংখ্যক সাহাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে নবী (ﷺ) -এর জীবনের ঘটনাবলী, তার বাণী, কাজ ও সিদ্ধান্তসমূহ অবগত করেন এবং তা তাদের পরবর্তীগণ অর্থাৎ তাবি তাবিঈনের নিকট পৌছে দেন। হিজরী দ্বিতীয় শতকের শুরু থেকে কনিষ্ঠ তাবিঈ ও তাবি’ঈ-তাবিঈনের এক বিরাট দল সাহাবা ও প্রবীণ তাবি’ঈদের বর্ণিত ও লিখিত হাদীসগুলো। ব্যাপকভাবে একত্র করতে থাকেন। তাঁরা গোটা মুসলিম জাহানে ছড়িয়ে পড়ে সমগ্র উম্মতের মধ্যে হাদীসের জ্ঞান পরিব্যাপ্ত করে দেন। এ সময় ইসলামী বিশ্বের খলীফাহ 'উমার ইবনু 'আবদুল আযীয (রহ.) দেশের বিভিন্ন এলাকার প্রশাসকদের নিকট হাদীস সংগ্রহ করার জন্য রাজকীয় ফরমান প্রেরণ করেন।

ফলে সরকারী উদ্যোগে সংগৃহীত হাদীসের বিভিন্ন সংকলন রাজধানী দামিশুক পৌছতে থাকে। খলীফাহ সেগুলোর একাধিক পাণ্ডুলিপি তৈরি করে দেশের সর্বত্র পাঠিয়ে দেন। এ যুগের আরও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য হাদীস সংকলন হচ্ছে । জামি’ সুফইয়ান সাওরী, জামি’ ইবনুল মুবারক, জামি’ ইমাম আওযাঈ, জামি’ ইবনু জুরায়জ ইত্যাদি। হিজরী দ্বিতীয় শতকের শেষার্ধ থেকে চতুর্থ শতকের শেষ পর্যন্ত হাদীসের চর্চা আরও ব্যাপকতর হয়। এ সময়কালেই হাদীসের প্রসিদ্ধ ইমাম বুখারী, মুসলিম, আবু দাউদ সিজিস্তানী, আবু ঈসা তিরমিযী, নাসায়ী ও ইবনু মাজাহ (রহ.)-এর আবির্ভাব হয় এবং তাঁদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও দীর্ঘ অধ্যবসায়ের ফলশ্রুতিতে সর্বাধিক নির্ভরযোগ্য ছয়খানি হাদীস গ্রন্থ (কুতুবে সিত্তাহ) সংরক্ষিত হয়। এ যুগেই ইমাম শাফিঈ (রহ.) তাঁর কিতাবুল উম্ম ও ইমাম আহমাদ (রহ.) তাঁর আল-মুসনাদ গ্রন্থ সংকলন করেন। হিজরী চতুর্থ শতকে মুসতাদরাক হাকিম, সুনানু দারাকুতনী, সহীহ ইবসু হিববান, সহীহ ইবনু খুযাইমাহ, তাবারানীর আল মু'জাম, মুসান্নাফুত তাহাবী এবং আরও কতিপয় হাদীস গ্রন্থ সংকলিত হয় । ইমাম বাইহাকীর সুনানু কুবরা ৫ম হিজরী শতকে সংরক্ষিত হয়। চতুর্থ শতকের পর থেকে এ পর্যন্ত সংকলিত হাদীসের মৌলিক গ্রন্থগুলোকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন ধরনের সংকলন ও হাদীসের ভাষ্য গ্রন্থ এবং এ শাস্ত্রের শাখাপ্রশাখার উপর ব্যাপক গবেষণা ও বিভিন্ন গ্রন্থ রচিত হয়। বর্তমান কাল পর্যন্ত এ কাজ অব্যাহত রয়েছে। এসব সংকলনের মধ্যে তাজরীদুল সিহাহ ওয়াস্ সুনান, আত্ তারগীব ওয়াত তারহীব, আল মুহাল্লা, মাসাহীবুস সুন্নাহ, নাইলুল আওতার প্রভৃতি সমধিক প্রসিদ্ধ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন