hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্য-পথের-কন্যারা

লেখকঃ Mrs. Carol. L. Anway M.S. Ed.

৩১
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ
ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভ বা জরুরী করণীয় বিষয় রয়েছে যা একজন মসলিমের জন্য অবশ্য করণীয় বা পালনীয়। প্রথম স্তম্ভটি হচ্ছে শাহাদা ঘোষণা করা বা উচ্চারণ করা- যা হচ্ছে বলা যায় ধর্মান্তরিত হওয়ার বক্তব্য বা বাণী ঃ “আল্লাহ ছাড়া আর কোন ঈশ্বর নেই এবং মুহাম্মদ হচ্ছেন আল্লাহর রসূল।” বাকী চারটি স্তম্ভ হচ্ছে বাস্তবকর্ম এবং অবশ্য করণীয় ও প্রতিদিনের প্রার্থনা (নামাজ), রমজানে উপবাস (রোজা), বাৎসরিক কল্যাণ অর্থ ব্যয়- যা গরীবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া (প্রায়ই রমজানের সময় দেয়া হয়) আর মক্কায় তীর্থ যাত্রা।

ইসলাম গ্রহণ করতে গিয়ে যারা ধর্মান্তরিত হবে তারা প্রথমে শাহাদার ঘোষণা করবে- আরবী এই কথার পুনরাবৃত্তি করবে যে “আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নেই এবং মুহাম্মদ আল্লাহর রসূল” এ ব্যাপারে তারা সাক্ষী দিচ্ছে। তারা এমন একটা জীবন ধারা গ্রহণ করে যার অনেক প্রয়োজনীয় এবং অবশ্য করণীয় ব্যাপার রয়েছে- যখন তারা একটা সরল পথে তাদের যাত্রার দিক প্রতিষ্ঠিত করে। বাইরে থেকে যদিও এমন মনে হতে পারে যে, এই ধরণের কর্মকান্ডের জন্য বেশ কষ্ট করতে হবে, কিন্তু সাধারণভাবে আমাদের প্রশ্নপত্রে সাড়া দেয়া মেয়েরা বলেছে যে, তাদের জীবনে এইসব শৃঙ্খলা পালন করতে পেরে তারা নিজেদের ধন্য মনে করেছে। কিছু মেয়েরা উপবাস (রোজা) পালনকে সহজই মনে করেছে, আবার কেউ কেউ এটাকে খুব কঠিন মনে করেছে শুরুতে। অনেক মেয়েরাই নিজেদের দৈনিক পাচ বেলার অবশ্য করণীয় প্রার্থনার (ফরজ নামাজ) ছকে বেঁধে ফেলতে পেরেছে খুব সহজেই- আবার কেউ কেউ বেশ কষ্ট করে নিজেদের ঐ কর্মসূচীতে অভ্যস্ত করেছে। এদের এক অংশের জন্য ওড়না পরাটা (হিজাব) একটা আশীর্বাদ স্বরূপ ছিল এবং এতে কোন সমস্যা ছিল না। আবার কেউ কেউ সব প্রয়োজনীয় অবস্থায় মাথা ঢেকে চলতে কয়েক বছর সময় নিয়েছে।

একটা ইসলামিক জীবন ধারা অনুযায়ী কিভাবে জীবন যাপন করা যায় এ ব্যাপারে শিক্ষা লাভ করতে গিয়ে মেয়েরা বিভিন্ন সূত্র থেকে সহায়তা পেয়েছে। তাদের স্বামীরা ছিল এক সুদৃঢ় সমর্থনের উৎস। তারা তাদের স্ত্রীদের শিক্ষা দিয়েছে এবং তাদের ইসলামের অনুশীলন সম্বন্ধে দিক-নির্দেশনা দিয়েছে, আর তা করতে গিয়ে স্বামীরা তাদের নিজেদের জীবনেও ইসলামকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করেছে। বই, ভিডিও ক্যাসেট ও অডিও ক্যাসেট তাদের বিভিন্ন আচার-আচরণের কায়দা-কানুন ব্যাখ্যা করেছে। অন্য মুসলিম মেয়ে, যারা হয় আমেরিকান ধর্মান্তরিত অথবা জন্মগত মুসলিম- তাদের কাছ থেকেও এদের অনেকেই সাহায্য লাভ করেছে।

আমাকে যেহেতু আমার স্বামীই ইসলামের সাথে পরিচিত করায়, আমার জন্য মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করতে শেখাটা সহজ ছিল। কেননা আমাকে সেজন্য শুধু তার এবং তার কিছু বন্ধু-বান্ধবের দৈনিক কর্মকান্ডের উদাহরণ খেয়াল করতে হতো। নির্দিষ্ট ধর্মীয় করণীয়র কথা বলতে গেলে সে আমাকে কিভাবে নামাজ পড়তে হয়, রোজা রাখতে হয় এবং অজু করতে হয়, ইত্যাদি শেখানোর চেষ্টা করেছে। কিন্তু আমার ননদ, যে আমাদের মরক্কো সফরের সময় আমার বোনের মতো আপন হয়ে গিয়েছিল, আর যে নিজেই তখন মাত্র ক'মাস হয় হিজাব পরতে শুরু করেছিল, সেই আমাকে আমার উপাসনা সুচারুরূপে সম্পন্ন করতে সাহায্য করে এবং সেই আমাকে দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ শুরু করার মনোবল এবং উৎসাহ যোগান দেয়।

প্রথম যখন আমি রোজা রাখি, আমার ভয় হচ্ছিল, কখনো অল্প সময়ের জন্যও উপোস করার অভ্যাসবিহীন আমি বোধহয় ব্যাপারটা সহ্য করতে পারবো। আমার স্বামী রোজার প্রয়োজনীয়তা এবং মাহাত্ম্য ব্যাখ্যা করেছিলো, কিন্তু বলেছিল, আমি যদি একদমই সহ্য করতে না পারি তাহলে আমাকে তা করতে হবে। কারণ আল্লাহ্ কখনোই আমাদের এমন কোন কিছু বহন করতে বলেন না, যা আমরা সহ্য করতে পারি না। তার এই উদারতা আমাকে ব্যাপারটা সামলে উঠতে সাহায্য করেছে। আর তার পর থেকে যখনই প্রয়োজন হয়েছে, আমি সব সময় রোজা রেখেছি (সব রোজা রেখেছি)।

পাঁচ ওয়াক্তের নামাজটাই বুঝি সবচেয়ে কঠিন ব্যাপার, কারণ আমাদের আমেরিকান জীবন ধারা প্রায়ই সময় মতো নামাজ আদায় করার কোন অবকাশ দেয় না। কখনো সময় আমার সবচেয়ে মূল্যবান কিছু ছিনিয়ে নেয়, কিন্তু আমি কখনো নামাজ পড়া বন্ধ করি না। এমনকি কখনো যদিবা সময় মতো নামাজ আদায় করা নাও হয়। এটা বিশেষ কিছু মনে নাও হতে পারে, কিন্তু নামাজের এই ছোট্ট কর্মকান্ডটিই সব সময় আল্লাহকে আমার হৃদয়ে এবং মনে ধরে রাখে।

এই জরিপে অংশগ্রহণকারী মেয়েরা প্রতিটি ক্ষেত্রেই তাদের জীবনে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন সাধনকারী নিয়ম-শৃঙ্খলাসমূহ, জীবনে আশীর্বাদ, শান্তি ও তৃপ্তি বহন করে নিয়ে এসেছে বলে উল্লেখ করেছে- সেই নিয়ম-শৃঙ্খলাসমূহ, যা তাদের কর্মকান্ড ও ইচ্ছাকে আল্লাহর দিকে কেন্দ্রীভূত করার জন্য প্রয়োজন।

ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের দ্বিতীয়টি হচ্ছে- দিনে পাঁচবার নামাজ পড়া। যা প্রতিটি মুসলিমেরই করণীয়। প্রার্থনাগুলো আরবীতে জপ করা হয় এবং তার সাথে কিছু নড়াচড়া ও বিভিন্ন অবস্থান গ্রহণ করতে হয়। প্রার্থনার পূর্বে নিজেকে পরিষ্কার হতে হয় বা অজু করে নিতে হয়। পানি দিয়ে হাত, মুখ ও পা ধুতে হয়। মেয়েরা প্রার্থনার জন্য বিশেষভাবে নিজেদের ঢেকে নেয়। প্রার্থনায় নিবেদিত ব্যক্তি একটা বিশেষ দিকে মুখ ফিরিয়ে থাকবে (মক্কার দিকে), যা মুসলিম একতার প্রতীক।

কখন এই প্রার্থনা করা যাবে, তার নির্দিষ্ট সময়সূচী রয়েছেঃ ভোরে সূৰ্য্য ওঠার আগে, মধ্যাহ্নে, বিকেলে মাঝ বেলাতে, সূর্যাস্তের পর পর, আর তারও প্রায় এক ঘন্টা পর। এই প্রার্থনার সময়কাল প্রতিবার প্রায় ৫ মিনিটের মতো। মাসিক চলাকালে মেয়েদের নামাজ পড়তে হয় না। যদিও নিজের ব্যক্তিগত প্রার্থনা, যে কোন সময়ে যে কোন জায়গায় করার স্বাধীনতা মুসলিমদের রয়েছে তবু অবশ্য করণীয় (ফরজ) নামাজের সময়ের সাথে সেগুলোকে মিলিয়ে নিতে উৎসাহ দেয়া হয় প্রায় বিশ্বজনীন ভাবেই। মুসলিমরা মসজিদ এবং ঘরের বাইরে জুতা রেখে প্রবেশ করে, যাতে কার্পেট ইত্যাদি নামাজের জন্য পরিষ্কার থাকে।

দিনে পাঁচবার প্রার্থনা করাটা আমার জন্য এক বিরাট সংকল্পের ব্যাপার ছিল । ধর্মান্তরিত হবার কয়েক মিনিট পর আমার স্বামী যখন আমাকে বললো আমাকে নামাজ পড়তে হবে, আমার তা করতে খুব সংকোচ হচ্ছিল। আমি আমার ধর্মকর্মে, সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতে অভ্যস্ত ছিলাম না। কিন্তু একবার যখন শুরু করলাম, আমি আর বন্ধ করতে চাইনি।

ইসলাম গ্রহণ আমাকে স্থির হতে, স্বচ্ছন্দ হতে এবং মনোযোগ পেতে সাহায্য করেছে। আপনি খুব দূরে যেতে পারবেন না, যখন পরবতী নামাজ আপনাকে টেনে ফেরত নিয়ে আসবে। আমাদের বিয়ে এবং পারিবারিক জীবনে এর সুনির্দিষ্ট ইতিবাচক প্রভাব রয়েছে, আর নামাজ আমাকে অপেক্ষাকৃত ভালো এবং শান্ত সাথী ও মা হতে সাহায্য করেছে।

অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াটাই আমার জন্য ইসলামের সবচেয়ে অর্থবহ দিকআমার নিজস্ব আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতার জন্য, আমার জীবনে নামাজ এবং অন্যান্য পড়াশোনা বা আধ্যাত্মিক ক্রিয়াক্রমের যে ধারাবাহিক প্রক্রিয়া ঘটে চলেছে। কয়েক সেকেন্ডের জন্য থামতে সমর্থ হওয়া এবং সবকিছু সমর্পণ করা অর্থাৎ আল্লাহর কাছে হেদায়েতের জন্য প্রার্থনা করা হচ্ছে একটা প্রধান আশীর্বাদ।

সময় মত নামাজ পড়াটা সবচেয়ে কঠিন কাজের একটি । আমি এখনও এর সাথে তাল মিলাতে অভ্যস্ত হইনি।

অজু এবং নামাজের নিয়মকানুন শেখাটা সহজই ছিল। আমার স্বামী একটা কাগজে প্রার্থনার (নামাজের) কথাগুলো লিখে দিয়েছিল এবং ছবি এঁকে দাঁড়ানো, রুকু, সেজদা ইত্যাদি বুঝিয়ে দিয়েছিল। আমি একদিনেই নামাজের দোয়া ইত্যাদি মুখস্ত করে ফেলি। কিন্তু আমি যে ঠিক সময়ে ঠিক শারীরিক ভঙ্গিতে যাচ্ছি, তা নিশ্চিত করার মতো আত্মবিশ্বাসে পৌছুতে আমার প্রায় সপ্তাহখানেক অনুশীলন করতে হয়। আমি অজু করতে, আমার নামাজের পরিচ্ছদ গায়ে চড়াতে আর নামাজ পড়াটাকে উপভোগ করি। কারণ আমি অনুভব করি যে, আমি আমার সৃষ্টিকর্তার কাছে যাচ্ছি। তিনি জীবনে আমাকে যা দিয়েছেন তার জন্য শুকরিয়া ও একাগ্রতা প্রদর্শন করতে চাই।

নামাজে বিভিন্ন দোয়া আরবীতে পড়া হয়ে থাকে, আর প্রত্যেককে আরবী শিখতে উৎসাহিত করা হয়, যাতে তারা কোরআনের মূল রূপ পড়তে পারে (অনুবাদ নয় কেবল)। ইসলামিক স্কুলে বাচ্চাদের আরবী শিখানো হয়।

আমি এখনো মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করা শিখছি। আমি অনেক প্রশ্ন জিজ্ঞেস করি এবং পড়াশোনা করি। আমার শাশুড়ী নামাজের উপর একটা বই পাঠান, আর আমি নিজে নিজেই আরবী (দোয়া ইত্যাদি) মুখস্ত করেছি। হিজাব পরা এবং নামাজ ও পাক/নাপাক সম্বন্ধে শেখাটা বেশ কঠিন ছিল। আমি অনেক ক'টা ইসলামিক ভিডিও দেখেছি, অনেক জ্ঞাতব্য লিখে নিয়েছি এবং বিতর্কে অংশগ্রহণ করেছি।

নামাজটাই সবচেয়ে কঠিন অংশ । আমি আরবী উচ্চারণে নামাজে সবকিছু পড়ি, আর সব সময় ভয় হয় আমি বুঝি ভুল করছি ও আমার প্রার্থনা হয়তো সে জন্য গৃহীত হবে না। কিন্তু আমি জানি যে, যতক্ষণ আমার চেষ্টা রয়েছে এবং যতক্ষণ আমার নিয়ত ভালো, আল্লাহ নিশ্চয় ক্ষমা করবেন। আরবীতে নামাজ পড়া, অথচ যেভাবে জানা উচিত, সেভাবে কোরআন ও হাদীস না জানাটা আমার কাছে খুবই দুঃখজনক লাগে।

আমার গবেষণা ও পড়াশোনার মাধ্যমেই মূলতঃ আমি মুসলিম হিসাবে জীবন যাপন করতে শিখেছি। প্রথমে ইংরেজিতে শেখার পরে আমার স্বামী আমার জন্য প্রার্থনাগুলো আরবীতে লিখে দেয়- যা আমি আমি পরবর্তীতে পড়তে থাকি। কোরআনের অংশসমূহ আমি কেবলই আরবীতে শিখতে শুরু করেছি। কিন্তু সুন্দর আরবী নকশাসমূহ আমি পড়তে পারি না। তাই ওগুলো এখনো কাউকে পড়ে দিতে হয়। আমি নিজেকে এখনো মৌলিক ইসলামের শিক্ষার্থী বলে মনে করি।

আমি যে সমস্ত ধর্মীয় আচারকে জরুরী মনে করি, সেগুলোকে ধাতস্থ করতে আসলে বেশ কষ্টই হয়েছে আমার, কিন্তু একবার আয়ত্ত করার পর বেশ তৃপ্তিদায়ক লাগে।

ইসলামের তৃতীয় স্তম্ভ হচ্ছে উপবাস (সিয়াম), আর তা রমজান মাস জুড়ে পালন করা হয়- রমজান হচ্ছে মুসলিম চান্দ্রবর্ষ ক্যালেন্ডারের নবম মাস। এটা মুসলিমদের জন্য একটা পবিত্র মাস এবং এই মাস উপবাস, প্রার্থনা বা নামাজ এবং দান-দক্ষিণাকে একত্রিত করে।

রমজান মাসে উপবাস করা একটা ধমীয় অবশ্য করণীয় বিষয়। এই সময় গোটা মাস ধরেই একজন মুসলিম, ভোরের আলো ফুটে ওঠার আগে পানাহার করতে পারে, প্রতিদিন ভোর থেকে নিয়ে সূর্যাস্ত পর্যন্ত, পানাহার অথবা যৌনক্রিয়া থেকে বিরত থাকে। এর ব্যতিক্রম হবে বাচ্চাদের বেলায়, বৃদ্ধ, অসুস্থ, মুসাফির, অন্তঃসত্ত্বা নারী, যে সব নারীদের বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়াতে অসুবিধা হয় এবং ঋতুস্রাবকালীন অবস্থার নারীদের বেলায়। প্রাপ্ত বয়স্কারা, অন্য সময়ে, যখন তাদের অসুবিধা থাকবে না- তখন বাদ দেয়া রোজাসমূহ রাখবে। সূর্যাস্তের পর মুসলিমদের রোজা ভাঙ্গার ব্যাপারটা, প্রায়ই সম্প্রদায়ের অন্যান্য মুসলিমদের সাথে মিলে মিশে সারা হয়।

রমজান শেষ হবার পরের দিনকে ‘ঈদুল ফিতর' বলা হয় এবং এটা একটা প্রধান উৎসবের দিন- উপহার দেয়া নেয়া, বিশেষ খাবার, কার্ড পাঠানো আর প্রার্থনা ইত্যাদি নিয়ে এই উৎসব। আমাদের আলোচ্য কন্যারা রমজানকে ভালোবাসতে শুরু করেছে, যদিও শুরুতে রোজার শুলা কঠিন মনে হয়েছিল। এটা এমনই একটা সময় যখন অন্যান্য মুসলিমদের সাথে সাম্প্রদায়িক বন্ধন আরো সুদৃঢ় হয় এবং একই সঙ্গে ব্যক্তিগত আত্মিক শুদ্ধি লাভও ঘটে। কখনো একটা অমুসলিম দেশে, রোজা রাখাটাতে একটা হতাশাও থাকে।

আমার প্রথম রমজান মনে রাখার মতো ছিল। আমার শাহাদা নেয়ার ৬ মাস হবার ঠিক আগে আগে। আমি যেমন মনে করেছিলাম, তা থেকে ব্যাপারটা সহজতর ছিল- যদিও তবু তা এক ধরণের সংগ্রামই ছিল। সত্যি কথা বলতে কি, আমার প্রথম রোজার দিন আমি তিনবার তা ভেঙ্গেছি, এটা এমন একটা ব্যাপার যার জন্য পূর্ণ ধর্মীয় সংকল্প এবং একটা সুস্থ মন থাকতে হবে।

বছরে একবার একটা সম্পূর্ণ মাসের জন্য রোজা রাখা, শুরুতে কঠিন ছিল। কিন্তু কেন আমরা রোজা রাখছিলাম এবং রোজা আমাদের জন্য কি করছিলএ সম্বন্ধে যত বেশী জেনেছি, ততই ক্রমে রোজা রাখাটা সহজতর হয়ে এসেছে আমার জন্য।

রমজানের পবিত্র মাসে রোজা রাখাটাই আমার অভিজ্ঞতায় সবচেয়ে শক্ত করণীয়। আমার প্রথম রোজার আগে আমার ভয় ছিল- আমি হয়তো কুলিয়ে উঠতে পারবো না- বুঝি আমি ঐ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হবে। অবশ্যই আমি তা করতে পেরেছিলাম, কেননা আল্লাহর জন্য যখন আপনি উপবাস করেন, তখন তা সহজ হয়ে যায় ।

কয়েকবার আমার গলা দারুণ রকম শুকিয়ে গিয়েছিল অথবা আমার হয়তো মাথা ধরেছিল। আর আমি কোন ওষুধ সেবন করতে চেয়েছি কিন্তু শেষ পর্যন্ত আমি তা থেকে বিরত থেকেছি। আমি ইমাম হোসেন (PBUH) এবং তার অনুসারীদের কথা ভেবেছি, যারা কারবালার ময়দানে তৃষ্ণার্ত অবস্থায় শহীদ হয়েছেন। আমি গৃহহীন ও দরিদ্র জনমানুষের কথা ভেবেছি, যারা জানে না কখন এবং আদৌ কখনো তারা আরেকবার খাবার পাবে কিনা।

রোজা একজনকে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করতে সাহায্য করে- আধ্যাত্মিক সচেতনতা, দয়া ও অন্যদের প্রতি সহানুভূতি, নম্রতা ও কৃতজ্ঞতা এসবই লাভ করতে সাহায্য করে। আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতার সময় বলে আমি প্রতি বছর এই পবিত্র মাসের অপেক্ষায় থাকি। রমজানের শেষ দশ দিন আমার কষ্ট হয় যে, মাসটা সহসাই শেষ হয়ে যাবে।

মুসলিম হিসেবে জীবন যাপন করা আমার জন্য কষ্টকর হয়নি। কারণ নিজের অজান্তেই বেশ ক'বছর ধরেই আমি সে রকম জীবনই (প্রায়) যাপন করছিলাম। আমার স্বামী আমার মুসলিম জীবন যাপনকে সহজতর করতে সাহায্য করে। কারণ সে নিজে একজন মুসলিম, আর একজন সাথী থাকলে কোন কাজ করা সহজতরও হয়। ধর্মীয় আচার-আচরণকে একমাত্র CHIRISTMAS-এর সময়ই আমার দুরূহ মনে হয়- যখন সবকিছু খৃষ্টায়িত (CHRISTIANISED) হয়ে যায়। আর আমাকে ব্যাখ্যা করে বলতে হয়, আমি কেন উদ্যাপন করছি না। আরেকটা সময় হচ্ছে রমজানের সময়, যখন কেউ আমাকে জিজ্ঞেস করে আমি দুপুরের খাবারের জন্য কি চাই, আর আমাকে বলতে হয় যে আমি রোজা রাখছি। মানুষের জন্য এটা বোঝা শক্ত এবং আমি জানি তারা আমাকে এ থেকে বিচার করতে চেষ্টা করবে, কিন্তু আমি আমার বিশ্বাসকে ‘ফাস্ট ফুড’ রেস্তোরার একটা স্যান্ডউইচ-এর জন্য বিসর্জন দেব না।

চতুর্থ ইসলামিক স্তম্ভ হচ্ছে যাকাত- এটা বাধ্যতামূলক দান বলা যায়- যা সাধারণত রমজানে উপবাস এবং প্রার্থনার পাশাপাশি সম্পন্ন করা হয়ে থাকে।

ইসলামের পঞ্চম স্তম্ভ হচ্ছে হজ্ব- যাদের সঙ্গতি আছে তাদের জন্য মক্কায় তীর্থ যাত্রা। তীর্থ যাত্রার সুযোগ বছরে একবার আসে এবং এটা হচ্ছে পৃথিবীর সর্ববৃহৎ মানব সমাবেশ। তখন পৃথিবীর সব মহাদেশ থেকে ২০-২৫ লক্ষ মানুষ এসে জড়ো হয়, এই অবশ্য করণীয় ধর্মীয় ব্যাপারটি সমাধা করতে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন