hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্য-পথের-কন্যারা

লেখকঃ Mrs. Carol. L. Anway M.S. Ed.

৩৯
৩নং গল্প ও হতাশা থেকে স্বীকৃতি
পরবর্তী পরিবারের মা, তার মেয়ে যা বেছে নিয়েছে, তা সম্বন্ধে হতাশার অনুভূতি থেকে শুরু করে শেষ পর্যন্ত উষ্ণ স্বীকৃতির অনুভূতিতে পৌঁছান। কিন্তু তাতে বহু বছর সময় লেগেছে। মেয়েটি আজ ১২ বছর যাবত মুসলিম। মেয়ে মুসলিম হয়েছে, এ ব্যাপারে প্রথম অবগত হলে তার নিজের অনুভূতিকে মা বর্ণনা করছেন (আমাদের পূর্ব বর্ণিত) স্কেলের মাত্রায় ১ বলে, আর বাবার অনুভূতি ৪ বলে। যাহোক, প্রশ্নপত্র হাতে পাবার সময় দু'জনেই তাদের অনুভূতি (প্রতিক্রিয়াকে) ৮ বলে বর্ণনা করেছেন। এখানে মা তার গল্পে বলছেন ।

আমাদের মেয়ে যখন শহরের বাইরে একটা চার্চ চালিত কলেজে গেল, আমরা এ ব্যাপারে নিশ্চিত বোধ করলাম যে, মেয়েকে বুঝি আমরা বাড়ির সবচেয়ে সদৃশ একটা পরিবেশে পাঠাচ্ছি। আমরা তার সাথে দেখা করতে গেলে, তার মধ্যপ্রাচ্যের নতুন বন্ধুর সাথে দেখা হলো এবং আমরা তাকে পছন্দ করলাম। আমরা এমনকি তাকে এক সপ্তাহান্তে আমাদের বাড়িতে নিমন্ত্রণ করলাম। আমরা ভাবিনি এ সম্পর্ক গুরুত্ব দেয়ার মতো কিছুতে পরিণত হবে। আমরা জানতাম ধর্মের ব্যাপারে এই মেয়ে আমাদের চার ছেলেমেয়ের মাঝে সবচেয়ে দৃঢ়। চারমাস পরে সে আমাদের বললো যে, সে আর প্রার্থনা সমাবেশে যাচ্ছে না। এর পরের সেমিস্টারে যখন এই বন্ধু অন্য এক কলেজে বদলি হলো, সেও তখন তাকে অনুসরণ করতে চাইলো- কিন্তু আমরা তাকে তা করতে দিতে অস্বীকার করলাম। আমরা আশা করছিলাম সম্পর্কটা এখানেই শেষ হবে আর সে তার তখনকার দশা থেকে বেরিয়ে আসবে।

পরের গ্রীষ্মকালে, তার ঐ বন্ধু আমাদের শহরে একখানা এপার্টমেন্ট ভাড়া নিলো, আর আমাদের মেয়ে তার দাদীকে নিয়ে সেখানে উঠলো- যেহেতু আমাদের মাঝে সম্পর্ক ভালো যাচ্ছিল না। জুন মাসের শেষ অংশে সে আমাদের জানালো যে, সে ঐ ছেলেকে আগস্টে বিয়ে করবে, আমাদের নিয়েই হোক, আর ছাড়াই হোক। আমরা অনিচ্ছা সত্ত্বেও পরিকল্পনার সাথে মিশে যাই।আমরা কেউই বিশ্বাস করিনি এই বিয়ে আদৌ কোনোদিন সত্যি সত্যি হবে। কিন্তু আমাদের বাড়িতেই তা ঘটলো এবং সে যেহেতু তখনো মুসলিম হয়নি, ব্যাপারটা এক ধরনের আপোষরফা হলো বলা যায়। তার বাবা-মাকে (ছেলের) বিয়ে সম্বন্ধে বলা হয়নি, আর তাই আমাদের আপত্তিগুলো সমর্থন করার জন্য আমরা তার পরিবারকে পেলাম না।

এর কয়েকমাস পরে সে আমাদের বললো যে সে ইসলাম গ্রহণ করছে। আমি ঐ সংবাদের প্রতিক্রিয়া জানালাম রাগ, কষ্ট এবং ভয় সহকারে। রাগটা মূলতঃ আমার জামাইকে লক্ষ্য করেই ছিল। কারণ আমরা নিশ্চিত ছিলাম যে, আমাদের মেয়ের মগজ ধোলাই না করা হলে, সে কখনোই এমন সিদ্ধান্ত নিতে। এটা আমাদের খুব কষ্ট দিয়েছে। কারণ আমাদের মনে হয়েছে আমাদের মেয়ে কত সহজে JESUS CHRIST-কে ঘিরে আমাদের আজীবনের শিক্ষা ও জীবন ধারাকে ত্যাগ করতে পারলো । সে এই সমস্ত শিক্ষাকে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে প্রত্যাখ্যান করতে পারলো। এই বাস্তবতাটাই ধ্বংসাত্মক ছিল। ভয়টা প্রথমে ছিল যে, আমাদের অন্য সন্তানরা একই জিনিস করতে পারে, কারণ সে সবার বড় এবং অন্যরা তাকে সমীহ করে এবং তার মতামতকে সম্মান করে।

সময়ের সাথে সাথে আমরা মধ্যপ্রাচ্যের সম্বন্ধে অধিকতর সচেতন হতে লাগলাম এবং ঐ এলাকার সন্ত্রাসবাদীদের সম্বন্ধে খবর এবং সমীক্ষা মনোেযোগ দিয়ে শুনতে লাগলাম। তখন তাকে নিয়ে (মেয়েকে) ভয় হতে লাগলো। যতদিন তার স্বামী কলেজে থাকছে, ততদিন যে তারা যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে যাবে না, এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত বোধ করলাম, কিন্তু তার কলেজ শেষ হলে কি হবে, তা আমরা জানতাম না। তাদের প্রথম ছেলের জন্মের পর আমাদের ভয়টা আগের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশী বোধ হয়। কারণ তার স্বামী হয়তো তাদের তার দেশে নিয়ে যেতে চাইবে। এই ভয়টা কিছুটা কমে আসে যখন সে আমেরিকার নাগরিক হয়ে যায়। আমরা একটু সহজ হতে ও বিশ্বাস করতে চেষ্টা করলাম। আমরা যে তার জাগতিক জীবন নিয়েই কেবল চিন্তিত ছিলাম তা নয় বরং পরকালে তার কি হবে সে নিয়েও আমাদের দুশ্চিন্তা ছিল।

কিতাবের যে কথাগুলো আমাকে ভূতের মতো তাড়িয়ে বেড়াতো তা হচ্ছে। JOHN 14:6 “আমিই হচ্ছি পথ, এবং সত্য , এবং জীবন; কেউ আমার মাধ্যম ছাড়া পিতার কাছে আসতে পারে না।” আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যে কিতাবের এই অংশ যদি আমাকে অস্বস্তিতে ফেলে থাকে তবে আরো কোন অংশ নিশ্চয়ই আমাকে তা থেকে মুক্তি দেবে। তাই আমি ঐ অধ্যায়টার প্রতিটি শব্দ মনোযোগ দিয়ে পড়তে শুরু করলাম। প্রথম বাক্যেই আমি আমার প্রয়োজনীয় অনুপ্রেরণা পেয়ে গেলাম, “তোমার হৃদয়ে কষ্ট নিও না। ঈশ্বরে বিশ্বাস রাখো এবং আমাতে বিশ্বাস রাখো। আমার পিতার বাড়িতে অনেক আবাসস্থল রয়েছে।” আমি বুঝলাম, যদি অনেক আবাসস্থল থেকেই থাকে তবে তাতে পৌছবার অনেক পথও থেকে থাকবে। JESUS, সেখানে CHRISTIAN-দের জন্য একটা স্থান তৈরি করে রাখছেন আর মুহাম্মদও সেখানে মুসলিমদের জন্য একটা স্থান তৈরি করে রাখছেন। ঈশ্বর, আমাদের মেয়ের জন্য কেবল একটা ভিন্ন অনুসরণীয় পথ বেছে দিয়েছেন এবং সে তা যথাসাধ্য ভালোভাবে অনুসরণ করার চেষ্টা করছে। আর আমরা সকলেই ঠিক এই চেষ্টাটাই করে চলেছি। এই পরিবারের কেউ তার পথে বাধার সৃষ্টি করবে না, যাতে পথটা তার জন্য আরো কষ্টকর হয়ে যায়। আমার নিজেকে খাপ খাওয়ানোর পিছনের এটাই হচ্ছে মূল কাহিনী ।

আমি এখানে আরেকটা ছোট্ট গল্প যোগ করতে চাই যা আমার অন্তদৃষ্টিকেও সমর্থন করবে। একদিন আমার বড় নাতী খুবই জেদ ধরলো যে, আমি যেন আরবী ভাষা শিখে নেই। আমি যখন জিজ্ঞেস করলাম যে, সে কেন ভাবছে আমার শেখা উচিত, তখন তার উত্তর ছিল, “তুমি মারা গেলে ফেরেশতারা এসে তোমাকে আরবীতে কিছু প্রশ্ন করবে এবং তোমাকে ওগুলোর উত্তর দিতে জানতে হবে, নয়তো তুমি দোজখে যাবে।” তার বাচনভঙ্গী দেখেই আমি বুঝলাম যে, আমার উত্তরটা বেশ ভালো হতে হবে। আর যে উত্তরটা আমি দিলাম, তা আমার নিজেকে দেয়া উত্তরও হলো। আমি বললাম, আমাদের প্রত্যেকের ব্যক্তিগত ফেরেশতা রয়েছে, যারা ঠিক ঠিক জানে আমাদের হৃদয়ে কি রয়েছে। আমি, আমার ব্যক্তিগত যে ফেরেশতা রয়েছে, তার প্রশ্নের উত্তর দিতে জানবো, আর তেমনি, তুমিও তোমার ফেরেশতার উত্তর দিতে জানবে।” তাকে মনে হলো আশ্বস্ত এবং আমিও আশ্বস্ত হলাম।

আমার কাছে, আমাদের ধর্ম বিশ্বাসের পার্থক্যটা এমনই সহজ। আমাদের মেয়েকে মা হিসেবে দেখা এবং আমাদের অনেক মৌলিক মূল্যবোধ যে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে পৌছুবে, এটা জানাটাও বেশ সাহায্য করে (সম্পর্ক উন্নয়নে)। সে খুবই যত্নশীল এবং প্রাণোজ্জ্বল মেয়ে এবং একজন খুব ভালো মা, দুটো ছেলের, যাদের বয়স এখন ১০ ও ৩। আমাদের এখনো একটা স্নেহময় সম্পর্ক রয়েছে, যা আমরা সবাই ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করি। আমাদের একটা ভালো পারিবারিক ভিত্তি রয়েছে এবং আমি নিশ্চিত যে, আগামী বছরগুলোতে আসা যে কোনো মতপার্থক্যই এই ভিত্তি সহ্য করতে পারবে।

আমাদের সৌভাগ্য যে তারা পরিবারের CHRISTMAS-এর উৎসবে অংশ নেয়। তারা ধরে নেয়, এটা ‘ঈদের সময় তারা আমাদের সাথে যে সময়টা কাটাতো, তাই। যখন সত্যি সত্যি ঈদ হয়, তখন সে সময়টা তারা জামাইয়ের পরিবার ও স্বজনদের সাথে কাটায়। আমি জানিনা, এটা সব সময়ের জন্য কিনা, কিন্তু আপাততঃ আমরা এভাবেই উৎসব পর্ব সামাল দিই। তাদের জীবনে ইসলামিক উৎসবের যে মূল্য, তা স্বীকার করতে ও তাকে সম্মান করতে গিয়ে, আমরা সে সব উৎসবে অংশগ্রহণ করি না।।

প্রত্যেক পরিবারের গল্প স্বতন্ত্র। কিন্তু এই তিনটি গল্পতে প্রত্যেকটি পরিবারই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য চেষ্টা করতে চেয়েছে। যদিও উদ্বেগ বা চিন্তা এখনো বর্তমান, তারা চেষ্টা করছে কিভাবে যোগাযোগ স্থাপন করা যায়। পরিবার হিসেবে আমরা সব সময়ই সম্পর্কযুক্ত, সেটা ইতিবাচকই হোক বা নেতিবাচক হোক, বাবা-মার প্রতারিত হবার, আহত হবার বা ভেঙ্গে পড়ার একটা অনুভূতি থাকতে পারে। বাবা-মার প্রতিক্রিয়া থেকে, মেয়েরও একই ধরণের অনুভূতি হতে পারে। সমঝোতার প্রক্রিয়ায় এক পর্যায়ে সিদ্ধান্ত নিতে হয় যে স্পষ্ট ক্ষতকে কিভাবে সামলাতে হবে এবং কতটুকুতে কেউ আহত বোধ করবে বা করবে না। অনেক সময়, আমরা আমাদের সম্পর্কের বাঁধন সম্বন্ধে বেখেয়াল হয়ে যাই এবং ভুলে যাই আমরা অন্যের প্রতি কি ধরণের ব্যবহার করছি। আমরা নিজেদের প্রতিরক্ষা করতে খুবই দ্রুত পদক্ষেপ নেই, নিজের মাথাটা একটা শক্ত খোলসের ভিতরে লুকিয়ে নিতে আমরা কচ্ছপের মতই ক্ষিপ্র কখনো বা আমাদের চিন্তা শক্তিস্ত্র বাইরে যা কিছু তার প্রতি আমরা দারুণ রক্ষণশীল ও প্রতিরোধী।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন