hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্য-পথের-কন্যারা

লেখকঃ Mrs. Carol. L. Anway M.S. Ed.

৪০
সমঝোতার দিকে পদক্ষেপ
যে তিনটি গল্প বাবা-মারা আমাকে শুনিয়েছেন, তার মাঝে কিছু সদৃশ সূত্র রয়েছে, যা অবস্থাভেদে ভিন্নভাবে বাস্তবায়িত হয়েছে মাত্র। এই সমস্ত সাধারণ সূত্র, আমাদের নিজেদের জীবনে সমঝোতার প্রক্রিয়ায়, আমরা কিভাবে ইতিবাচকভাবে সম্পর্কের উন্নয়ন ও তা বজায় রাখার মধ্য দিয়ে সামনে এগুবো- সে সম্পর্কে আমাদের সাহায্য করতে পারে।

প্রথমতঃ সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য একটা স্বতঃস্ফূর্ত আকুতি দেখা যায়। যদিও গভীর ক্ষত ও বিচ্ছেদ হয়তোবা ঘটেছে। প্রথম গল্পে মেয়ের মা বলছেন, “আমরা তাকে ভালোবাসতাম এবং চাইতাম, অব্যাহতভাবে আমরা যেন তার জীবনের একটা অংশ হয়ে থাকি।” সম্পর্ক জোড়া লাগানোর ব্যাপারে আমার নিজের অভিজ্ঞতা হচ্ছে, সম্পর্ক ভালো করার একটা আকাক্ষার। এটা সাথে সাথেই ঘটেনি। আসলে প্রতিরোধের মনোবৃত্তিতে আটকে থাকাটাই হয়তো সহজ ছিল। যেটা ছিল আমার প্রাথমিক প্রতিক্রিয়া। আমি এতো রাগান্বিত ও আহত হয়েছিলাম যে, আমি JODI ও REZA'র কাছ থেকে দূরে চলে যেতে চেয়েছিলামচেয়েছিলাম আমার জীবন থেকে তাদের মুছে ফেলতে, আর কখনো যেন আমার তাদের সাথে উঠাবসা না করতে হয় এবং ঐ সমস্যা নিয়েও যেন আর ভাবতে না হয়। আমার জন্য তাদের সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করতে চাওয়ার দশাটা স্বল্প মেয়াদীই ছিল- একটা রাত বলা যায়। যে অভিজ্ঞতাটা আমাকে ক্ষত সারিয়ে তোলার একটা ইচ্ছার দিক-নির্দেশনা দিয়েছিল, তার জন্য আমি কতই না কৃতজ্ঞ বোধ করি। তারপরও আহত বোধ হতো এবং দুঃখের অনুভূতি ভুলে স্বাভাবিক হতে মাসের পর মাস লেগে যায়- বহু বছর লেগে যায় স্বীকৃতির একটা স্বস্তিকর পর্যায়ে উঠে আসতে।

আরেকটা সূত্র যা সম্পর্ক পুনর্গঠনে সহায়তা করেছে, তা হচ্ছে, মেয়ে কি গ্রহণ করছে- তা বুঝতে চাওয়ার একটা ইচ্ছা। মনের ভারাক্রান্ত অবস্থা থেকে মুক্তির গভীর আকাতায়, এক মা কিতাব খুঁজে দেখলেন এবং সেখানে সাহায্য পেলেন, যা গ্রহণ করার রাস্তা খোলা রেখেছিল। এটা হয়তো একটা জোর করে নেয়ার প্রচেষ্টা হতে পারে, প্রাথমিকভাবে হয়তো ইচ্ছাশক্তির একটা ব্যাপার থোলা মনের পরিচায়ক এই পদক্ষেপ নেয়া। কিন্তু যে সব বাবা-মায়ের দৃঢ় মূল্যবোধ রয়েছে, তারা মেয়ের অভিজ্ঞতার কথা শোনার, দেখার এবং অনুভব করার ঝুঁকি নিতে সমর্থ হবার কথা। মেয়ে হয়তো পরিবার থেকে এভো দূরে চলে গিয়েছে যে, এমন ধারণা পোষণ করা হয় যে, সে পরিবারের সীমা লংঘন করেছে এবং পরিবার সত্যিই আহত বোধ করে। প্রত্যেক সদস্যের (পরিবারের সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত যে সে কিভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবে। মেয়ের করা কিছু জিনিস হয়তো পরিবারের গ্রহণ করার বা মেনে নেয়ার ক্ষমতার বাইরে। সে ক্ষেত্রে চুপচাপ গুটিয়ে নেয়াটাই হয়তো সর্বোত্তম।

বুঝতে চাওয়ার পদক্ষেপ হিসেবে, কেউ পড়ার এবং জানার সামগ্রীর খোজ করতে পারেন, যা তারা পড়তে পারবেন এবং জানতে পারবেন, মেয়ে কি গ্রহণ করেছে। এখানে একটা সাবধান বাণী ঃ যা পড়া হবে, তাতে হয়তো পশ্চিমা দৃষ্টিভঙ্গী বা সাংস্কৃতিক বৈষম্য থাকতে পারে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মাঝেও ভিন্ন। ভিন্ন ব্যাখ্যা রয়েছে, যা সব সময় এক নাও হতে পারে। এই বইয়ের পেছনে যে BIBLIOGRAPHY রয়েছে, সেখান থেকে বই বেছে নেয়া যেতে পারে অথবা মুসলিম কন্যার পরামর্শ মতো বই বেছে নেয়া যেতে পারে। ব্যক্তিগত ধর্মতত্ত্ব ও বিশ্বাসের ব্যবস্থা খুঁটিয়ে দেখার এবং নিজের আধ্যাত্মিক জীবনকে শক্তিশালী করার এটাই মোক্ষম সময়। অনেক সময়ই পরীক্ষা না করেই আমরা নানা বিশ্বাসকে গ্রহণ করেছি, হয়তো আমাদের ধর্ম যাজকের কাছে শোনা, অথবা একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে কথাটা বলা হয়েছিল, অথবা ‘দাদীমা ঐ কথাই বিশ্বাস করতেন'।

সমঝোতা করার ইচ্ছা যখন বর্তমান আর বুঝবার মতো ভোলা মনও যখন রয়েছে- একজনের তখন প্রয়োজন বাবা-মা'র দৃষ্টিকোণ থেকে যে সমস্ত বিষয়গুলো গুরুত্বপূর্ণ, সেগুলোকে চিহ্নিত করা এবং তার মুখোমুখি হওয়া, এবং অনুভূতিগুলোকেও চিহ্নিত করা- তা প্রত্যাখ্যাত হবার, হতাশার বা নিয়ন্ত্রণ হারানোর- যাই হোক না কেন। সম্পর্ক পুনর্গঠনকল্পে যাত্রা শুরু করার মতো প্রয়োজনীয় শক্তি সঞ্চয় করার আগ পর্যন্ত, পরিবারের সদস্যবর্গের উচিত নিজেদের সংযত রাখা- প্রত্যাখ্যান, ক্রোধ এবং বিষন্নতার পর্যায়গুলো কাটিয়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত সময় নেয়া। কোন কোন পরিবার/সদস্যের হয়তো ক্রোধ বা দুঃখের অনুভূতি কাটিয়ে উঠতে বিশেষজ্ঞের (মনোবিজ্ঞানী) পরামর্শ নিতে হতে পারে।

এসব অবস্থায়, একটা প্রতিক্রিয়া খুব স্বাভাবিকভাবেই আসে- সেটা হচ্ছে ক্রোধ, কিন্তু ক্রোধ সঠিকভাবে প্রকাশ করা উচিত, যাতে ক্ষত সেরে ওঠার এবং সমঝোতার পথ খোলা থাকে। এমনকি এই অবস্থায়ও ঈশ্বরের প্রশান্তিময় ভালোবাসা এবং ক্ষমা বর্তমান থাকে এবং পরিবারের সদস্যরা মুক্তি পেতে পারে ও ব্যথা ভুলে সমস্যাটার সমাধানকল্পে একটা অবস্থান নিতে পারে। তা না হলে বুকের ওপর একটা বোঝা চেপে বসার এবং অসুস্থতার একটা অনুভব রয়ে যাবে।

আরেকটা বিষয় উদ্বেগ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে- সেটা হচ্ছে নিয়ন্ত্রণ ত্যাগ করতে আমাদের অপারগতা- তরুণ সন্তানকে হারাতে না চাওয়াঅনেক বাবা-মার জন্যই সন্তানের উপর দাবি ত্যাগ করা খুবই শক্ত ব্যাপার- তা তাদের মেয়ে ইসলাম গ্রহণ করুক বা না করুক। একজন বাবা বা মা হয়তো এমনিতেই সন্তান বড় হয়ে ঘর থেকে চলে যাওয়াতে (যা পশ্চিমা দেশে স্বাভাবিকভাবেই আসে) দুঃশ্চিন্তার, হারানোর অনুভূতির এবং দুঃখের অভিজ্ঞতার সম্মুখীন। এর পর যখন মেয়ে এমন একটা জীবন বেছে নেয়, যার সম্বন্ধে বাবা-মা একেবারেই অজ্ঞ, তখন ঘটনাটা হয়তো তাদের অবস্থাকে আরো অবনতির দিকে নিয়ে যায়- ভয়, অনিশ্চয়তা এবং অকৃতকার্যতার অনুভূতি এসে যোগ হয়। এ ব্যাপারটা বোঝাও গুরুত্বপূর্ণ যে, বাবা-মার অভিজ্ঞতার কিছু অনুভূতির হয়তো, মেয়ের ধর্মান্তরিত হবার সাথে সরাসরি সম্পর্ক নেই।

ভেবে দেখার আরেকটি বিষয় হচ্ছে, মেয়ে হয়তো সম্পর্ক উন্নয়নের প্রচেষ্টার জন্যে প্রস্তুত অবস্থায় নেই, আর এভাবে আমাদের আরো বেশী প্রত্যাখ্যাত বোধ করারও একটা সম্ভাবনা রয়েছে। সে হয়তো শক্তি সঞ্চয় করতে চাচ্ছে অথবা সে যে সমস্ত নতুন ভূমিকা বেছে নিয়েছে সে সবে অভ্যস্ত হতে চাইছে, বাবা-মার ক্ষমতার মুখোমুখি হবার আগে। পরিবর্তনের অনেক ক্ষেত্রই হয়তো তাকে একসাথে নানা ঝামেলায় ফেলছে- পড়াশুনা বা কাজ, নতুন ধর্ম, নতুন বিয়ে, নতুন আচার-আচরণের প্রত্যাশা, প্রাপ্ত বয়স্ক অবস্থায় প্রবেশ ইত্যাদি। জরিপের বেশীরভাগ কন্যাদের ক্ষেত্রেই উপরোক্ত বিষয়সমূহের অনেক ক'টাই বর্তমান ছিল।

চতুর্থ একটা উপাদান হচ্ছে আশা। এই অবস্থাগুলো সহজেই অবসান হয়ে যায় না। সম্পর্ক পুনর্গঠন এবং বজায় রাখতে অনেক ক'টা পদক্ষেপ সামনের দিকে যেমন নেয়া হবে, তেমনি কিছু হয়তো পেছনের দিকেও নেয়া হবে। এমন সময় হয়তো আসবে, যখন মেয়েকে গুটিয়ে নিতে হবে এবং সে সম্পর্ক উন্নয়নকল্পে কিছু। করে যেতে তৈরি থাকবে না। একইভাবে এমনও সময় আসবে, যখন আমাদেরও ব্যক্তিগত দুঃখ কাটিয়ে ওঠার জন্য এবং শক্ত হবার জন্য সময় নেয়া উচিত যোগাযোগের রাস্তাগুলো অব্যাহত রেখে। যখন আমাদের একান্তে থাকা উচিত, তখনও, আশার একটা উপলব্ধিই আমাদের মেয়ের ব্যাপারে ধৈর্য্য ধারণ করতে দেয়।

আমাদের শুভাকাঙক্ষী বন্ধুরা এবং আত্মীয়রা হয়তো আমাদের সে আশাকে ক্ষীণ করে তুলবে, যখন তারা নিম্নোক্ত ধরনের মতামত দিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেঃ।

“আহা, তোমার বেচারী মেয়েটা সে নরকে যাবে। আমরা তার জন্য প্রার্থনা করবো।”

“ঐ সব জায়গায়, সব মেয়েদের সাথেই এমন বিশ্রী আচরণ করা হয়।”

“তার স্বামী, যদি তাকে ত্যাগ করে, বাচ্চাগুলোকে নিয়ে দেশে চলে যায়, তাহলে সে কি করবে?

“এর চেয়ে খারাপ জীবনে আর কিছু ঘটতে পারে না।”

এই ধরণের প্রতিক্রিয়া যে কাউকে কষ্ট দিতে ব্যক্ত করা হয় তা নয়, বরং সহানুভূতি জানানোর জন্য এবং আমরা যা ঠিক মনে করছি তার প্রতি সমর্থন জানাতেই তা ব্যক্ত করা হয়। অপরদিকে কিছু মানুষ আছে, যারা শ্রবণকারী হতে পারে, যারা প্রশ্ন করতে পারে এবং সব শুনে নিয়ে আমাদের সমব্যথী হতে পারে। এদের সাথে কথা বলে, আমরা কি অনুভব করছি তা অনুধাবন করা সহজ হয় এবং আমাদের মাঝের সংশয়গুলোকে দূর করাও সহজ হয়।

আমরা যদি এই সমস্ত ধারণার যোগসূত্র বা সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছার বশবর্তী হয়ে নিজেদের উন্মক্ত করার মৌলিক পদক্ষেপ সম্বন্ধে অবগত হই- আমরা যদি কাউকে বুঝতে ও মেনে নিতে চেষ্টা করতে রাজি থাকি, আমাদের অনুভূতিগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলোর মুখোমুখি হতে তৈরি থাকি এবং যদি আশাবাদী থাকি, তবে আমরা সমঝোতার প্রক্রিয়ার ইতিবাচক অংশে রয়েছি বলে বলা যায়। আমরা তাহলে আমাদের ক্রোধ, ভয় ও দুঃখকে সামলাতে পারবোসময় বয়ে যাওয়ার সাথে সাথে আমরা উপায়ও খুঁজে পাবো। প্রার্থনা, সহজ হওয়া, শান্ত থাকা এবং অনুধাবন ইত্যাদি কৌশল ব্যবহার করে, দুঃখ এবং হাহাকারের মাঝে ডুবে যাওয়া থেকে আমরা নিজেদের রক্ষা করতে পারি। আমরা যদি মেয়ের পথে নাও যেতে চাই, তবু আমরা নিজেদের পথে থেকেই তার সহযাত্রী হতে পারবো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন