hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্য-পথের-কন্যারা

লেখকঃ Mrs. Carol. L. Anway M.S. Ed.

৪৪
স্বামীর পরিবারের সাথে সম্পর্ক
আরেকটা বিষয় হচ্ছে, স্ত্রীর গ্রহণযোগ্যতার ব্যাপারে স্বামীর পরিবারের যে ক্ষমতা রয়েছে তা। অবশ্য এটা এমন একটা জিনিস যা বিয়েতে আমাদের সবারই সমাধা করতে হয়। শ্বশুরালয়ের লোকজনের সাথে সম্পর্ক স্থাপন- কিন্তু এই পরিস্থিতি (আমাদের কন্যাদের)-তে সাংস্কৃতিক পার্থক্যের একটা অতিরিক্ত মাত্রা রয়েছে। বেশীর ভাগ (মুসলিম) পুরুষেরই তাদের আদি পরিবারের সঙ্গে এবং তাদের মাতৃভূমির সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন রয়েছে, আর ঐ পরিবার স্ত্রীকে গ্রহণ করার ব্যাপারে কি বোধ করে, তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কখনো তাদের মতামত বিয়ে ভেঙ্গে যাবার মতো শক্তিশালীও হতে পারে, যদি ঐ পরিবার তা অনুমোদন না করে। কেউ কেউ স্বামীর পরিবারের সাথে খারাপ সম্পর্ক নিয়েই বেঁচে থাকতে শিখে- কিন্তু জরিপে সাড়া দানকারী বেশীরভাগ মেয়েই স্বামীর পরিবারের কাছ থেকে ভালোবাসা ও স্বীকৃতি পেয়েছে এবং স্বামীর পরিবারকে জানাটা তাদের জন্য সুখের বিষয় ছিল। তারা পরিবারসমূহের মাঝে চিঠিতে এবং ফোনে ভালো যোগাযোগের বর্ণনা দিয়েছে এবং স্বামীর মাতৃভূমিতে বেড়াতে যাবার অভিজ্ঞতাও একই ধরণের। কখনো আত্মীয়রা যুক্তরাষ্ট্রে বা কানাডায় বেড়াতে বা থাকতে এসেছেন।

আমার স্বামীর পরিবারের সাথে আমার দেখা হয়েছে। আমি তাদের সাথে দেখা করতে প্রায় মৃত্যুভয়ে ভীত ছিলাম- আমেরিকান মেয়েদের সম্বন্ধে তাদের বাজে ধারণা ছিল। আমি যে আমার মুখ ঢেকে চলি তা দেখে তারা হতবাক হয়েছে- তারা দৃশ্যতঃ অস্বস্তিই বোধ করছিল এ সম্বন্ধে। উষ্ণ অভ্যর্থনা ছিল না, কিন্তু কেউ আমাকে হত্যা করার চেষ্টা করেনি।

আমার স্বামীর পরিবারের বাড়ীতেই আমরা থাকি (স্বামীর দেশে)। প্রায় এক বছর হলো আমার এখানে এবং আমাকে মেনে নেয়া হয়নি। তাদের গুটিকয়েকই আমাকে মন থেকে স্বাগত জানায়। বেশীরভাগেরই একটা ভয় যে, আমি একদিন চলে যাবো, বাচ্চাদের নিয়ে।

আমার স্বামী এবং আমি সত্যি ভেবেছিলাম যে, আমি অন্যদের (সবার) একজনই হবে। আমি এমনকি কাছের কেউও হতে পারিনি। আমি নিশ্চিত নই যে, জীবনে কখনো আমি সত্যিকার অর্থে পরিবারের একজন সদস্য হতে পারবে কিনা। আমরা যেমন আশঙ্কা করতাম, ইসলামিক আচার-আচরণ মেনে চলতে আমাদের বেশ ঝামেলাই হয়। আমার স্বামীর পরিবার অতিমাত্রায় পশ্চিমা ঘেঁষা। তাদের কাছে থাকার লাভটা হচ্ছে আমার স্বামী ও বাচ্চাদের ব্যাপারে পূর্ণ এবং স্থায়ী সদস্য হবার জন্য, একটা বৃহত্তর পারিবারিক কাঠামো।

আমাদের বিয়ের সময়ে আমার স্বামীর পরিবার উপস্থিত ছিল। তার মা একজন BRAZILIAN এবং তার বিয়ের সময়ে তিনি ধর্মান্তরিত হয়েছিলেন তাই তারা কিছু অসুবিধার প্রতি সহানুভূতিশীল। তারা এখন যুক্তরাষ্ট্রে থাকেন এবং আমরা যখন একটু বড় বাসা নিতে সক্ষম হবো, তখন হয়তো বছরের কিছুটা সময় তারা আমাদের সাথে থাকবেন। তারা আমাকে এবং বাচ্চাদের আরবীর সাথে সাথে পর্তুগীজ শিখতে সাহায্য করবেন। তাদের নিয়ে যে অসুবিধা হবে সেটা হচ্ছে তাদের বাজে খাদ্যাভ্যাস এবং ব্যায়ামের অভ্যাস। আমি সুষম খাবারের পাগল (কেবল চকোলেট ছাড়া) এবং আমার স্বামী তার বাবার উপস্থিতিতে কিছুটা অসহিষ্ণু হয়ে পড়ে, কিন্তু এটা এখন ভালোর দিকে যাচ্ছে।

আমরা তাদের অর্থনৈতিক সমর্থন যোগাই এবং তা আমাদের জীবন ধারণকে কিছুটা কঠিনতর করে, কিন্তু তারা '৬৭’র যুদ্ধে সব হারিয়েছিলেন এবং পুনরায় উপসাগর যুদ্ধেও। ঐ সময় তারা কুয়েতে ছিলেন। তারা খুব সাধারণ মনের মানুষ, আর আমরাও তাই।

আমার স্বামীর মা আমার খুব প্রিয় মানুষ আর বিদায়ের সময় এলে আমরা সবাই খুব কান্নাকাটি করি। আমি যখন আমার পরিবারের কাছে বেড়াতে যাই এবং তার পরে বিদায় নেই- এটা ঠিক তেমনই একটা ব্যাপার। আমার মাবাবা ও তার পরিবার, দু'পক্ষই একে অপরের প্রতি যত্নশীল, আর আমার পরিবার, আমরা ওখানে থাকলে আমার স্বামীর পরিবারের জন্য উপহার পাঠায় এবং ফোনে খোজখবর নেয়।

আমার স্বামীর দেশে এক যাত্রায় আমি তার পরিবারের সঙ্গে মিলিত হই। তারা চমৎকার মানুষজন এবং তারা আমাকে সম্পূর্ণরূপে মেনে নিয়েছে যদিও আমি একজন বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়া আমেরিকান মেয়ে ছিলাম, বাচ্চা-কাচ্চাসহ, যে তখনও এমনকি মুসলিমও ছিল না। কারণ আমি তাদের ছেলের এবং ভাইয়ের কাছে গুরুত্বপূর্ণ ছিলাম।

কিছু ক্ষেত্র আছে, যেখানে খাপ খাওয়ানো আমার জন্য কষ্টকর। আমি এ ব্যাপারটাতে কখনোই অভ্যস্ত হবো না যে, ৩৫ জন বা তারও বেশী সংখ্যক আত্মীয় স্বজন দরজায় টোকা দেয়ার প্রয়োজন বোধ করবে না এবং মনে করবে যে আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপারও তাদের ব্যাপার। আর বড় সমাবেশ হলে কয়েক দিনের জন্য শুধু মহিলাদের মাঝে থাকাটাও আমি ঠিক স্বস্তিকর বোধ করি না। এক পারিবারিক বিয়েতে আমি তাদের দিয়ে আমার জন্য একটা আলাদা কামরার ব্যবস্থা করিয়ে নিয়েছি, যাতে আমি আমার নিজের স্বামী ও বাচ্চাদের সাথে চাইলে একত্রিত হতে পারি- একটু অস্বাভাবিক ব্যাপার অবশ্য, আমি জানি। আমার স্বামী আমার এই সমস্ত আজব বৈশিষ্ট্য বেশির ভাগ সময় ভালোভাবেই মেনে নেয়কিন্তু যখন সে মেনে নিতে চায় না, তখন তার মা তাকে আমার সাথে একটা মাঝামাঝি অবস্থান নিতে তাকে চাপ দেন।

তার পরিবারের সাথে সম্পর্ক রাখার লাভ হচ্ছে এটুকুই যে, তারা সব ভালো এবং মন্দ নিয়ে, সত্যিকার অর্থেই একটা পরিবার- যা আমার নিজের পরিবারে (মা-বাবার পরিবারে) আমি কখনো দেখিনি।

আমার মিসরে যাওয়ার প্রথম কয়েক সপ্তাহের মাঝেই আমার সাথে ডজন ডজন আত্মীয় স্বজনের পরিচয় হয়েছে আর তা ছিল বেশ ধকল পোহাননা অভিজ্ঞতা। এখন আমি বলতে পারি যে, এই পরিবারের সাথে আমার ভালই চলছে, আর আমার স্বামী কাজের খাতিরে সৌদিতে গেলে আমি একা এদের সাথে দু'মাস থাকার পর নিজেকে তাদের একজন মনে করি। তারাও আমাকে মেনে নিয়েছে এবং আমাকে নিয়ে স্বস্তিবোধ করে- আমার মনে হয় এর প্রধান কারণ আমি তাদের সম্মান দেখিয়েছি এবং আমি তাদের ছেলেকে সত্যিই ভালোবাসি। একটা লাভ হচ্ছে, আমি আরবী শিখবো। একটা অসুবিধা হচ্ছে, সাধারণভাবে আমেরিকানদের যে তারা সন্দেহের চোখে দেখে, এই সত্যটা ভুলতে না পারা।

এমনও মেয়েরা রয়েছে, যারা নিজেদের পরিবারের চেয়ে স্বামীর পরিবারেই বেশী আকাক্ষিত। নীচের চিঠিটা একজন মেয়ে যুক্তরাষ্ট্রে তার বন্ধুকে লিখেছিল- যখন সে এবং তার স্বামী ইরানে স্বামীর বাবা-মার কাছে বেড়াতে গিয়েছিল।

আমি এখানে এসেছি প্রায় এক সপ্তাহ হয় এবং সবকিছু এতো চমৎকার। আমি আমার শাশুড়িকে আমার মা বলে গ্রহণ করেছি। তিনি খুব ভালো একজন মানুষ। এই প্রথম সপ্তাহ খুব মজায়ই কাটলো, তার পরিবারের সদস্যদের সাথে পরিচিত হতে আর রীতি অনুযায়ী কখন কি করতে হবে তাই মনে রাখার চেষ্টা করতে করতে। এ পর্যন্ত আমার স্বামী বলেছে যে, প্রত্যেকেই বলছে তারা আমাকে ভালোবাসে, আর আমি অনুভব করি আমাকে গ্রহণ করা হয়েছে। তারা আমাকে রাণীর মতো আপ্যায়ন করে। আমার শাশুড়ি আমাকে প্রায়ই চুমা খান এবং সারাক্ষণ আমার প্রয়োজনের প্রতি মনোযোগ রাখেন। এখানে যখন প্রথম আসি, তখন কি আশা করা যায় তা না জেনে, শুধু শুধুই অনেক দুঃশ্চিন্তা করেছি।

আমার স্বামীর পরিবারের অনেকে বিমানবন্দরে গিয়েছিল আমাদের সঙ্গে মিলিত হতে এবং ওটা ছিল অত্যন্ত হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া একটা মুহূর্ত- যে মুহূর্ত আমি জীবনে কখনো ভুলবো না। মা একজন ফেরেশতার মতো। আমি বিশ্বাস করতে পারি না, তার কাছে আসতে আমরা এতো সময় নিয়েছি। আমি অনেকটা সময়ই এখানকার দৃশ্য দেখে, অশ্রুসজল নয়নে কাটিয়েছি। এখানকার পরিবার পদ্ধতি একেবারে ভিন্ন ধরনের। যেখানে ঘনিষ্ঠতা বা নিকটত্বকে ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। আমার চোখের জলের একাংশ এ জন্য যে, এক সপ্তাহে আমার স্বামীর পরিবারের কাছ থেকে আমি যে স্নেহ-মমতা পেয়েছি, তা আমার নিজের রক্তের চেয়ে অনেক বেশী, যারা এমনকি আমাদের বিদায় জানাবার প্রয়োজনটুকু বোধ করেনি।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন