hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্য-পথের-কন্যারা

লেখকঃ Mrs. Carol. L. Anway M.S. Ed.

৭৬
সন্তান প্রতিপালন
আমার সন্তান প্রতিপালনের কলা-কৌশল, আমার মুসলিম হওয়া দ্বারা সরাসরি প্রভাবিত । ইসলাম আমার জীবনের প্রতিটি দিককেই স্পর্শ করে, আর সে জন্য আমি আমার সন্তানদের সম্ভাব্য সবচেয়ে ইসলামিক উপায়ে বড় করতে চাই। আমার সন্তানরা মুসলিম হিসেবে, নিস্পাপ অবস্থায় এবং আল্লাহর ইচ্ছার কাছে সমর্পিত হয়ে এই পৃথিবীতে এসেছে। এটা আমাদের বিরাট একটা দায়িত্ব, অবশ্যই আল্লাহর তরফ থেকে একই সঙ্গে একটা আমানত এবং পরীক্ষা দুটোই, যে আমার স্বামী এবং আমি যেন তাদের এমনভাবে বড় করি, যাতে তারা মুসলিম থাকে।

সন্তান লালন-পালনে সবচেয়ে সহজ যে ইসলামিক প্রভাবসমূহ প্রয়োগ করা যায়, সেগুলোর মাঝে রয়েছে বাচ্চাদের আমাদের সাথে নামাজ পড়তে উৎসাহিত করা, তাদের কোরআনের আয়াতসমূহ শিক্ষা দেয়া, মুসলিম ঐতিহ্যবাহী সম্ভাষণ ও দৈনন্দিন প্রবাদসমূহ ব্যবহার করা যেমন, ইনশাআল্লাহ্, মাশাআল্লাহ ইত্যাদি, শালীন পোশাক-পরিচ্ছদে তাদের উৎসাহ দেয়া এবং দয়া-মায়াপূর্ণ আচারব্যবহার করতে শেখানো। আমরা দৃষ্টান্ত স্থাপনকে এবং মৌখিক উৎসাহ ও স্মরণ করিয়ে দেয়াকে কৌশল হিসেবে ব্যবহার করি, কিন্তু বাচ্চাদের জোর করে কোন নির্দিষ্ট কর্মকান্ডে যোগ দিতে বাধ্য করা হয় না, কারণ ইসলামের শিক্ষা হচ্ছে যে, ধর্মের ব্যাপারে জোরাজুরি নেই। আমাদের কোন নির্দিষ্ট কর্মের সময়ে বাচ্চারা উপস্থিত থাকুক, এমন ব্যাপারে কখনো প্রয়োজনে আমরা চাপ দেই, যাতে তারা অন্ততঃ ঐ কাজের সাথে পরিচিত হয় এবং তারা যেন বোঝে যে, নূ্যনতম কিছু পারিবারিক মান ও মাপকাঠি রয়েছে, যেগুলোকে তাদের অবশ্য সম্মান করতে হবে। আমরা এ ধরনের মান বা মাপকাঠি নির্ধারণ করতে গিয়ে কৌশলের আশ্রয় নিয়ে থাকি, যাতে তাদের মাঝে সরাসরি বিদ্রোহভাব জাগ্রত না হয়।

যে প্রধান উপায়ে ইসলাম আমার সন্তান পালন পদ্ধতিকে প্রভাবিত করে তা হচ্ছে, আমি সবসময়ে মনে রাখতে চেষ্টা করি যে, আমি সার্বক্ষণিকভাবে আল্লাহর দৃষ্টির আওতায় রয়েছি। মানুষের জন্য আল্লাহ ব্যক্তিগত আচরণের উঁচু মানদন্ড নির্ধারণ করে দিয়েছেন, কেননা তিনি জানেন যে আমরা ঐ পর্যায়ে পৌছাতে সক্ষম সেজন্য, এ জন্য নয় যে, তিনি মানুষকে কষ্ট দিতে চান। আমি সব সময় এ ব্যাপারেও সচেতন থাকি যে আমার কর্ম লিপিবদ্ধকারী দুই ফেরেশতাও সার্বক্ষণিকভাবে তৎপর। আমি ধৈর্য ধারণ করতে চেষ্টা (যদিও এ ব্যাপারটা খুবই কঠিন হতে পারে!) করি, দ্রতা ও সম্মানসূচক আচরণ করতে চেষ্টা করি এবং তাদের প্রতি (বাচ্চাদের) স্নেহ, বিশ্বস্ততা ও সহানুভূতি সূচক ব্যবহার করতে চেষ্টা করি। আমি তাদের শিক্ষার মর্মার্থ বুঝতে উৎসাহিত করি এবং শিক্ষাকে ‘স্কুল সময়’ বা ‘স্কুল-বিষয়সূচী’তে সীমাবদ্ধ না ভেবে বরং সারা জীবনের একটা সাধনা হিসেবে দেখতে উৎসাহিত করি। স্কুলে এবং অন্যত্র তারা যাতে তাদের পক্ষে সবচেয়ে ভালো যতটুকু করা সম্ভব সেটুকু করে; তারা যেন অন্যদের সহায়তাকারী হয় এবং দয়ালু হয়; যেন মিথ্যা না বলে বা প্রতারণা না করে; আল্লাহকে (তথা ইসলামকে), তাদের পরিবারকে এবং তাদের সমাজের মানুষদের যেন তারা সঠিক মর্যাদা দেয়; তারা যা বিশ্বাস করে তার পক্ষে যেন শক্ত অবস্থান নিতে পারে, ব্যক্তিগত ধর্মপরায়ণতাকে তারা যেন বাইরের কাজ-কর্মের মাঝে প্রতিফলিত করতে পারে; তারা যেন বিশ্বস্ত ও সরল হয় এবং চিন্তায় ও কাজে দুটোতেই যেন প্রাণখোলা ও দানশীল হয়- এসব কিছুর উপরই আমরা প্রচুর গুরুত্ব দিয়ে থাকি। আমরা এটাও চেষ্টা করি যে, প্রতিটি বাচ্চাকেই যেন একজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি হিসেবে দেখা হয়, তাদের যেন তাদের জন্মের ক্রমের বাইরে দেখা হয়, তাদের যেন অন্য সহোদরদের সাথে বা আমাদের সাথে তুলনা না করা হয় এবং আমরা চেষ্টা করি, সেই সমস্ত বৈশিষ্ট্য যেগুলো তাদের অবিচ্ছেদ্য অংশ অথচ যা আমাদের কাছে বিরক্তিকর, সেগুলোকে মেনে নিতে বা মর্যাদা দিতে।

ইনশাআল্লাহ্ আমাদের বাচ্চারা সহমর্মী এবং কর্মঠ মুসলিম হিসেবে বড় হবে। সে দিকে খেয়াল রেখে আমরা আমাদের অগ্রগতি এবং সন্তান পালনের কৌশলসমূহ সব সময় পর্যালোচনা করে থাকি । আমরা সব সময় নির্দিষ্ট ইসলামিক অনুশাসন অনুসরণের চেষ্টা করি এবং আইন মেনে চলার শিক্ষা দিয়ে থাকি।

সন্তান লালন-পালনের কর্মকান্ডে আমার স্বামী খুবই সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করে থাকে। আমি দিনের আংশিক সময়ের জন্য কাজ করে থাকি এবং আমি যখন কাজে থাকি তখন সে একাই তাদের দেখাশোনা করে থাকে। আমি যখন কোন সভায় বা স্টাডি গ্রুপের সঙ্গে থাকি, তখন সে বাচ্চাদের দেখাশোনা করে থাকে। সে বাচ্চাদের ডাক্তারের কাছে নিয়ে যায়, বাইরে বেড়াতে নিয়ে যায়, চিড়িয়াখানায় নিয়ে যায়, তাদের সাথে সুইমিংপুলে যায় এবং এ ধরণের অন্য যে কোন কর্মকান্ডে তাদের সঙ্গ দিয়ে থাকে।

বাচ্চাদের উপর আমার অধিকার ও তাদের প্রতি আমার কর্তব্য? যখন কেউ ইসলাম/ মা/ মায়ের অধিকার ইত্যাদি নিয়ে কথা বলে, তখন তারা। সাধারণতঃ বিবাহ-বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে বাচ্চাদের কাছে রাখার অধিকার বুঝিয়ে থাকে। আমার স্বামী এবং আমি উভয়ে একমত যে, বাচ্চাদের বাবা-মার মাঝে, যে তাদের ভালো রক্ষণাবেক্ষণ করতে সক্ষম, তার কাছেই থাকা উচিত। অবশ্যই ইসলামে বিবাহ-বিচ্ছেদ অনুমোদিত, তবে একক পরিবারকে একত্রে রাখার যথাসাধ্য চেষ্টা আগে করতে হবে। বেশীরভাগ ক্ষেত্রে মানসিকভাবে মা'ই বাচ্চাদের লালন পালনের জন্য অপেক্ষাকৃত বেশী উপযুক্ত হয়ে থাকে। যতক্ষণ না পরিস্থিতি বিরূপ কিছু বলে প্রতীয়মান না হয়, বাবা-মায়ের মাঝে যার কাছে বাচ্চারা থাকছে না, তার অধিকার থাকে ঘন ঘন বাচ্চাদের সাক্ষাৎ পাবার। প্রয়োজনবোধে বাচ্চাদের রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত মা/ বাবাকে অর্থনৈতিক সহায়তা দান করা উচিত । সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী উপযুক্ত বিচারক সম্বলিত, ইসলামী পারিবারিক আদালতে সব বিবাহ বিচ্ছেদের ব্যবস্থা করা উচিত।

আমার বাচ্চাদের প্রতি আমার দায়িত্ব হচ্ছে, তাদের ভালোবাসা, তাদের সম্মান করা এবং পরিণত মুসলিম হয়ে বড় হয়ে উঠতে তাদের সাহায্য করা। এই দায় আমাকে বাচ্চাদের তথা আল্লাহর কাছে একইভাবে দায়বদ্ধ করে রাখে, যিনি এই বাচ্চাদের আমার প্রযত্নে এ রকম আমানত হিসেবে রেখেছেন। আমি মনে রাখতে বাধিত যে, আমার সন্তানরা আসলে আল্লাহর, আমার নয়- এবং আমার তাদের সাথে সেরকম আচরণই করা উচিত।

কোরআনে যেমনটি নির্দিষ্ট করে বলা রয়েছে, আমার সন্তানদের কর্তব্য হচ্ছে আমাকে সম্মান করা (কিন্তু আমাকে সম্মানের উপযুক্ত হতে হবে), আমাকে মান্য করা (যতক্ষণ আমার আদেশ/ অনুরোধ ইসলামের সীমারেখার মাঝে অবস্থিত) এবং বৃদ্ধ বয়সে আমার দেখাশোনা করা। তাদের অধিকার রয়েছে আমার কাছ থেকে ভালোবাসা, শারীরিক যত্ন এবং দিক-নির্দেশনা লাভ করার। আমার যেমন রয়েছে, তাদেরও তেমনি মর্যাদা ও সম্মানসূচক ব্যবহার পাবার অধিকার রয়েছে।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন