hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

অন্য-পথের-কন্যারা

লেখকঃ Mrs. Carol. L. Anway M.S. Ed.

৫৫
আমরা কারা
আমি চাই, আমেরিকান জনসাধারণ বুঝুক যে, আমরা ঠিক তাদের মতই কিছু মানুষজন। আমাদের বিল পরিশোধ করতে হিমশিম খেতে হয় (আমাদের সবার তেল সম্পদ নেই), আমরা আগামীকাল নিয়ে চিন্তিত হই, আমরা শান্তি চাই। আমাদের কেবল সুদৃঢ় ধর্মীয় দায়িত্ববোধ রয়েছে, আর আমরা চেষ্টা করি এমন জীবন যাপন করতে যা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য। আমার স্বামী আমাকে এভাবে পোশাক পরায়নি আর আমি নিপীড়িতও নই। আমি মুক্ত- কাপড় চোপড়, চুল, জুতা এবং ঐ ধরনের যাবতীয় ফ্যাশনের বন্ধন থেকে আমি মুক্ত। দায় পরিশোধের পর, আমার এবং আমার বাচ্চাদের জন্য উত্তরাধিকার নিশ্চিত। আমি আমেরিকা বা আমেরিকানদের ঘৃণা করি না। আমি এখনো JESUS-কে ভালোবাসি এবং তার উল্লেখ করা একই ঈশ্বরে উপাসনা করি। আমি ইহুদীদের বা ইসরায়েলকে ঘৃণা করি না। সত্যি বলতে কি, আমার ওখানে (ISRAEL) থাকতে খুব ভালো লাগবে, যদি আমি বুঝতাম যে ওখানে আমি নির্যাতিত হবো না। আমি যা ঘৃণা করি তা হচ্ছে অবিচার, মিথ্যাচার, ঈশ্বর বিরোধিতা, বৈষম্য, গর্ভপাত, শরীরের অপবিত্রতা এবং ঈশ্বরের যে কোন আদেশ মান্য করতে যে কোন ধরনের অস্বীকৃতি- কারণ আমি ঈশ্বরকে ভালোবাসি।

, আমি পছন্দ করি বলেই এই পথ বেছে নিয়েছি। এমন কোন কিছুই আমি ত্যাগ করিনি, যা আমি ত্যাগ করতে চাইনি। আমার মগজ ধোলাইও করা হয়নি। আমি পূর্ণ চিন্তাশক্তি সম্পন্ন একজন শিক্ষিতা। আমি আমার দেশের প্রতি বিশ্বাসঘাতক নই, কিন্তু আমি গোটা পৃথিবীর ওকালতি করি। আমি সব সময়ই মুসলিম থাকবো, তা আমার স্বামীকে নিয়েই হোক আর তাকে ছাড়াই হোক। আমি, আমার স্বামীকে ভালোবাসি' বলে মুসলিম হইনি। আমি চাই আমার বাচ্চারা মুসলিম হিসেবে বড় হবে। আমি আশা করি তারা মুসলিম হবে এবং আমার মেয়ে হিজাব পরবে। সবাই আমাকে এসব প্রসঙ্গে প্রশ্ন করে থাকে। আমি আমার বাচ্চাদের অনৈসলামিক পরিবেশে নয়, ইসলামিক পরিবেশে রাখবো, আর তারপর তাদের বলবো মুসলিম হতে।

সাধারণ মুসলিম শান্তি চায়। কেউ সচরাচর যে সব খবর শুনে থাকে, সেগুলো হচ্ছে চরমপন্থী এবং রাজনৈতিক বিপ্লবী মুসলিমদের গল্প। এরা হচ্ছে সংখ্যালঘু। অধিকাংশ (কথা প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, আরবরা মুসলিম জনসংখ্যার মাত্র এক-পঞ্চমাংশ) শান্তিপ্রিয়। INDONESEAN-দের কথাই ধরুন, যাদের সম্বন্ধে আমরা কিছু শুনি না, অথচ তাদের সংখ্যা আরবদের চেয়ে অনেক বেশী।

আমি তাদের সাথে যোগাযোেগ স্থাপন করতে এবং তাদের প্রশ্নের উত্তর দিতে ইচ্ছুক, যদি তারা আমার মতামত এবং বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়।

আমি, আমার আপন মুক্ত ইচ্ছায় মুসলিম হয়েছি। আমি, আমার নিজস্ব মন সম্বলিত একজন ব্যক্তি। কোন কিছুর প্রতি নিজেকে দায়বদ্ধ করার আগে আমি সে সম্বন্ধে পড়াশোনা করি এবং জানি।

ইসলাম হচ্ছে আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সিদ্ধান্ত। একজন মুসলিম নারী। হিসেবে পরিচিত হতে পেরে আমি সুখী। এমন একটা বড় এবং আমূল পরিবর্তনের পরে আপনার পরিবারের সাথে সম্পর্ক রক্ষা করা খুবই কঠিন।

যারা ধর্মান্তরিত হয়ে মুসলিম হয়েছে, আমি তাদের বাবা-মাদের এ ব্যাপারে উৎসাহ দিতে চাই যে, তারা যেন সন্তানদের জিজ্ঞেস করে দেখেন তারা কেন পরিবর্তন আনলো জীবনে এবং তাদের যেন তারা বুঝতে চেষ্টা করেন। মুসলিম হবার পরে এই সমাজে বাস করা সহজ নয়। আপনি সবকিছুকে এবং মানুষজনকে ভিন্নভাবে দেখবেন, আর তারাও আপনাকে ভিন্নভাবে দেখবে। আপনার পরিবার যদি আপনার সাথে অন্ততঃ এ সম্বন্ধে কথা বলে এবং যদি অনুধাবন করতে চেষ্টা করে যে আপনি কিসের ভিতর দিয়ে যাচ্ছেন এবং এই পরিবর্তন আপনার জন্য কতখানি গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা অনেকখানি সহায়তা করে। আমরা ভালোর জন্য পরিবর্তিত হচ্ছি, আল্লাহর জন্য কেবল।

আমেরিকানদের আমি একমাত্র যা জানাতে চাই, তা হচ্ছে যে কোন ব্যক্তি বা মেয়ে যদি ইসলাম গ্রহণ করে, তার মানে এই নয় যে, আমাদের জোর করে তা করানো হয়েছে। কেউ অন্য কাউকে নামাজ পড়তে, আরবী শিখতে, লম্বা হাতা জামা পরতে, মাথা ঢাকতে বা মুসলিমদের অন্য কোন অবশ্যকরণীয় করতে জোর করতে পারে না। অন্য যে কারো মতই আমাদের অধিকার রয়েছে কাজ করার এবং আমরা যা বিশ্বাস করি তা সমর্থন করার।

আমি আমেরিকান জনসাধারণকে মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আমিও ঠিক তাদের মতই একজন মানুষ। আমাকে নিয়ে পি করা হোক, আমি তা পছন্দ করি না। আমি যা পরি তা নিয়ে ঠাট্টা করলে আমার বিষন্ন লাগে। আপনি কি একজন খৃষ্টান নানকে তার পরিচ্ছদের জন্য ঠাট্টা করবেন? অথবা একজন AMISH বা MENONITE মহিলাকে তার মাথা ঢাকার জন্য বিদ্রুপ করবেন?

আমার স্বামী আমার মগজ ধোলাই করেনি। আমি একজন বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি, যে মুসলিম হওয়াটা স্বেচ্ছায় বেছে নিয়েছে। ধর্মের ব্যাপারে কোন জোরাজুরি নেই, এই ধারণার উপর ইসলাম প্রতিষ্ঠিত আপনি আপনার বিশ্বাস নিয়ে থাকুন, আর আমার প্রয়োজন আমার বিশ্বাসের।

কিছু মানুষ, যারা ইসলামকে হেয় প্রতিপন্ন করতে চায়, তারা বলতে চায় যে, ইসলাম মেয়েদের পুরুষদের চেয়ে নিকৃষ্ট হিসেবে দেখে বা দ্বিতীয় শ্রেণীর নাগরিক সুলভ ব্যবহার করে তাদের প্রতি। তারা বলে যে মুসলিম মেয়েরা, স্বামী এবং বাচ্চাদের আহারের পর যা বেঁচে থাকে তাই খায়। এটা সত্যের এক সার্বিক অপলাপ। হ্যা, মেয়েরা কখনো অন্যদের পরে খেয়ে থাকে, কিন্তু তার মানে এই নয় যে, এটা একটা শাস্তি বা দন্ড, যা মেয়েদের উপর চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। একজন মেয়ে যখন অন্যদের আগে খাওয়ায়, সে তার স্নেহ বা যত্নের বোধ থেকে তা করে থাকে। সে জানে বাচ্চাদের প্রায়ই খেতে হবে সুস্বাস্থ্য-সম্পন্ন থাকতে এবং স্বাভাবিকভাবে বেড়ে উঠতে। সে বোঝে যে, পুরুষদের খেতে হবে, তারা যেন কাজে বা স্কুলে যাবার জন্য উপযুক্ত প্রাণশক্তি লাভ করতে পারে। সে নিশ্চিত করে যে, পরিবারে কোন অন্তঃসত্ত্বা মহিলা থাকলে, তারা যেন দুধ, পর্যাপ্ত ফল এবং তরিতরকারি ইত্যাদি খেয়ে থাকে এবং ঠিকমতো তাদের ভিটামিন গ্রহণ করে। সে অনুভব করে যে, অন্যদের কোন প্রয়োজন এড়িয়ে সে নিজের ক্ষুধাকে পরিতৃপ্ত করতে পারে না।

মুসলিমরা CHRISTMAS উদ্যাপন করে না, কিন্তু আমাদের খৃষ্টান আত্মীয়, প্রতিবেশী বা সহকর্মীদের উৎসবের সময়টা যেন সুন্দর হয়, তা আমরা কামনা করি। আমরা CHRISTMAS TREE বা অন্য সাজসজ্জা দিয়ে ঘর সাজাই বলে এমন মনে করার কোন কারণ নেই যে, আমাদের বাচ্চারা বঞ্চিত। আমাদের অন্য উৎসব রয়েছে, যা আপনাদের জানা নেই এবং আমরা মনে করি, আমাদের বাচ্চারা সুখী এবং খুব সুন্দর ভাবেই বড় হচ্ছে।

আমি নির্যাতিত নই, আর সঠিক পরিচ্ছদ পরাটা অবমূল্যায়নকর নয়। আমি তাদের জানাতে চাই যে, আমার স্বামী কাপড়-চোপড় ধোয়, পরিষ্কারের কাজে সহায়তা করে (এমনকি শৌচাগার পরিষ্কারেও) এবং আমি যেন বাইরে যেতে পারি, সেজন্য বাচ্চাদেরও দেখাশোনা করে। তথাকথিত মুক্তি প্রাপ্ত মেয়েদের খবর কি? মুসলিম মেয়েরা বিয়ের সাথে সাথে তাদের নাম পরিবর্তন করে না। আমাদের স্বামীর নামের শেষাংশ ধারণ করার প্রয়োজন নেই। ইনশাআল্লাহ আমার মেয়ের যখন বিয়ে হবে, তার নাম তেমনই থাকবে যেন তাকে একজন স্বতন্ত্র ব্যক্তি হিসেবে চেনা যায়- একজন সমান মানুষ হিসেবে। কোন হাইফেনের প্রয়োজন নেই।

আমেরিকার সব মুসলিমই যে হয় বিদেশী বা আফ্রিকান-আমেরিকান কৃষ্ণাঙ্গ, তা নয়। এদেশে অনেক শ্বেতাঙ্গ আমেরিকান মুসলিম রয়েছে। অনেক মানুষজনেরই এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয় যে, আপনি একজন শ্বেতাঙ্গ এবং আমেরিকান হয়েও, একই সাথে একজন মুসলিমও হতে পারেন। খৃষ্টান মেয়েদের চেয়ে বা অন্য যে কোন মেয়েদের চেয়ে আমাদের অনেক বেশী অধিকার রয়েছে।

আপনি বুঝবেন যে, আমি একটু স্বতন্ত্র, কারণ আমি মনে করি দৈনন্দিন “কি করা যাবে বা কি খাওয়া যাবে এ সমস্ত সমস্যার চেয়ে সম্ভবতঃ আমার বিশ্বাসের আত্মিক দিকটা বেশী গুরুত্বপূর্ণ। আমার বিশ্বাস খুবই সজীব এবং তা কখনোই ম্লান হবে না। আমার সম্বন্ধে আরেকটা জ্ঞাতব্য হচ্ছে, প্রায় ছ'বছর আগে আমার NON-HODGKIN'S LYMPHOMA ধরা পড়ে। আমি এক রাউন্ড কেমোথরাপি নেই এবং গত পাঁচ বছরে আর চিকিৎসার প্রয়োজন হয়নি। আমার দুটো বাচ্চাই (৫ বছর এবং ১৫ মাস বয়স্ক) হয়েছে আমার ক্যান্সার হবার পর। আমার জীবন খুবই বৈচিত্র্যময় এবং এই বাড়তি সমস্যার জন্য কঠিনও বটে। আল্লাহতে আমার বিশ্বাস, আমাকে এই ক্রান্তিকাল অতিক্রম করতে খুব সাহায্য করেছে এবং আমার সুদৃঢ় বিশ্বাস যে আমার ক্যান্সার আল্লাহ্র ইচ্ছায় হয়েছে। আমি কৃতজ্ঞ কারণ এটা আমাকে অনেক কিছু শিখিয়েছে। এখন বাঁচতে, নিজেকে ভালোবাসতে, পরিবারকে ভালোবাসতে এবং কেবল বড় সমস্যা নিয়ে ভাবতে শিখিয়েছে- "DON'T SWEAT THE SMALL STUFF"- এটা আমাকে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে এসেছে যেখানে আমি আগের চেয়ে অনেক বেশী স্পষ্টবাদী এবং স্পষ্টভাষী। কিন্তু সেটা অবশ্য সম্পূর্ণ আলাদা একটা অধ্যায়।

কতিপয় মুসলিম, যারা ইসলামের নামে অনৈসলামিক কাজ-কর্ম করে থাকে, তাদের দিয়ে আমাকে বিচার করবেন না। আমাকে জানুন, আমার সাথে কথা বলুন, আমাকে আপনাদের স্কুল বা গীর্জায় আমন্ত্রণ জানান এবং চলুন আমরা একে অপরের ধর্ম নিয়ে আলাপ-আলোচনা করি। ইসলামকে নিয়ে ভীত হবেন না। আমাকে জানার চেষ্টা করুন। মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞদের' লেখা ইসলাম বিরোধী বই বা খবরের কাগজ না পড়ে, আমাদের জিজ্ঞেস করুন কোন বইগুলো ইসলামকে সবচেয়ে ভালোভাবে ব্যাখ্যা করে। আমার পোশক আমাকে অবদমিত করে রেখেছে এমনটি ভাববেন না। আমার দিকে যখন তাকিয়ে দেখবেন, তখন ABRAHAM-এর স্ত্রী এবং JESUS-এর মায়ের দিকে তাকিয়ে দেখুন এবং দেখুন তারা কিভাবে আচ্ছাদিত ছিলেন। এটা নতুন কিছু নয়। এটা আপনার ঐতিহ্যেরও অংশ।

আমার অনুভূতি মিশ্র। আমি ইসলাম নিয়ে জনসমক্ষে বক্তব্য রাখি। আমি মানুষজনকে বলি, আমি ঠিক তাদেরই মতো। আমাদের স্বপ্ন এবং অভীষ্ট রয়েছে এবং আমরা আমাদের পরিবারকে ভালোবাসি, কিন্তু সমস্যা সমাধানে আমাদের কিছু দৃষ্টিভঙ্গী কেবল আলাদা। আমরা কেবল আমাদের নিজেদের দ্বারাই নির্যাতিত বা অবদমিত, আমাদের বিশ্বাস দ্বারা নই। আমরা অন্যসব জনগোষ্ঠীর মতই ভালো এবং মন্দ মিলিয়ে। আমেরিকান ও ইউরোপীয়দের সাবধান হওয়া উচিত, কারণ ঐ সমস্ত সরকারের এমন কর্মসূচী রয়েছে যা নিশ্চিতভাবে মুসলিম বিরোধী (আমাদের নিজেদের কংগ্রেসই ৮০'র দশকের মাঝামাঝি, ইসলামকে আমেরিকার সবচেয়ে বড় বিপদের কারণ চিহ্নিত করে এক প্রস্তাব পাস করেছে)। তাদের উচিত তাদের যা বলা হয় তা পরখ করে দেখা এবং সত্যের সন্ধান করা।

আমাদের মুসলিমদেরও উচিত লুকোচুরি এবং অজুহাত দেখানো বন্ধ করে, নিজেদের কথা প্রকাশ করা। একভাবে চিন্তা করলে, আমরা মুসলিমরা, এই আমেরিকান জাতি যে সমস্ত ইতিবাচক এবং প্রায়শঃই কল্পনা-প্রসূত মূল্যবোেধর উপর ভিত্তি করে গঠিত হয়েছিল, সেগুলোর প্রতিনিধিত্ব করি। কিন্তু অত্যন্ত স্পষ্ট কিছু ব্যতিক্রম সহকারে। অন্যের দরজায় কড়া নেড়ে কোন নীতিকথা সম্বন্ধে বলার আগে, মুসলিম হিসেবে আমরা নিজেদের ঘর ঝাড় দিয়ে পরিষ্কার করে নিই এবং পরীক্ষা করে দেখি ইসলামের নামে আমরা কি দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চলেছি।

এই বক্তব্য টিনএজ' (১৩-১৯ বছর বয়স্ক) মেয়ের মা, ৪০-এর কোঠার একাকী (বিধবা বা বিবাহ বিচ্ছেদ হওয়া) এক নতুন ধর্মান্তরিত মহিলার মুসলিম হওয়াটা, আমার জীবনের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ এবং কঠিনতম ব্যাপার। এটা সব প্রশ্নের উত্তর এবং সব কাজের হাতিয়ার। ১৯৯৪ সালের ২৮শে ফেব্রুয়ারী আমাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হয়। OHIO CIVIL RIGHTS COMMISSION-এ আমি ক্ষতিপূরণ দাবী করে কাগজপত্র জমা দিচ্ছি, কারণ আমি মনে করি আমার ইসলামে প্রত্যাবর্তনের (এই মহিলার মতে, তার ইসলাম গ্রহণটা হচ্ছে নিজ গৃহে প্রত্যাবর্তনের মত একটা স্বাভাবিক পরিণতি) কারণে আমার চাকরি গেছে। যত মুশকিল, তত আসান। কোরআন হচ্ছে উত্তর, পরামর্শ এবং সতর্কবাণীর এক অফুরন্ত উৎস। এসব প্রতিকূলতার জন্যও আমি আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ, যদিও একজন দুর্বল মানুষ হিসেবে আমি বলা যায় ৮০% সময় উৎফুল্ল থাকলেও, ২০% সময় অপেক্ষাকৃত কম ইতিবাচক অনুভূতি নিয়ে থাকি। আমার মাঝে আল্লাহর সবচেয়ে বড় আশীর্বাদসমূহের মাঝে রয়েছে আল্লাহর উপর আমার নির্ভরতা, আমার বদমেজাজের অবসান, ধৈর্য ধারণের শিক্ষা এবং আমার মুসলিম নাম দ্বারা প্রতিফলিত শান্তি এবং নীরবতা, যে নামের অর্থ হচ্ছে, আমাদের সবার জন্যআল্লাহ রয়েছেন, আল্লাহ রয়েছেন। সবচেয়ে ঝামেলার ব্যাপার হচ্ছে আমার জীবনকে নিয়ন্ত্রিত করার পুরনো অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা- এ সত্যটা বোঝার এবং গ্রহণ করার প্রয়োজনীয়তা যে, ইসলাম নিখুঁত হলেও সব মুসলিমরা তা নয়।

আমি একজন বিদেশী নই। আমি একজন অনাহুতও নই। আমি চাই তারা আমাকে ও আমার পরিবারকে আমাদের প্রাপ্য সম্মান সহকারে দেখুক। একটা মুসলিম পরিবার, ধার-কর্জ বা সরকারের দান-দক্ষিণার মাঝে না গিয়ে বাঁচতে পারার মতো একটা জীবনের মানের ব্যবস্থা, এদেশের সরকারের এবং সমাজ ব্যবস্থার থাকবে- এটাই আমার কাম্য।

আমি চাই সবাই জানুক যে ঃ আমি গরুর পূজা করি না, ইসলামের কারণে আমি নিপীড়িত নই, ইসলাম নারীকে মুক্তি দেয়, আমি ঐ একই ঈশ্বরের উপাসনা করি- যার উপাসনা খৃষ্টান ও ইহুদীরা করে থাকে এবং মুসলিমরা সন্ত্রাসী নয়! আমি আশা করি, মানুষজন মুক্ত মনের হবে এবং তাদের অজ্ঞতার অবসান ঘটবে। যে সব মেয়েরা হিজাব পরে, তাদের দিকে হাঁ করে তাকিয়ে থাকা এবং তাদের নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করা থেকে সবাই বিরত থাকবে! এটা তাদের অধিকার এবং তাদের স্বামী বা পিতারা তাদের হিজাব পরতে বলপ্রয়োগ করছে না। আমাদের আমেরিকান হিসেবে মেনে নাও, নিজে বাঁচো এবং আমাদের বাঁচতে দাও!

আমরা নির্বোধ নই, আর আমরা জন্মগ্রহণ করেছি আল্লাহ্ (swT দাসত্ব করতে, আমাদের পুরুষদের দাসত্ব করতে নয়। এভাবে জীবন যাপনটা হচ্ছে আমাদের কর্তব্য এবং আমরা আমাদের বেছে নেয়া জীবন নিয়ে পরিতৃপ্ত।

আমি কেবল আমার মাথা ঢেকে চলবার জন্য একজন অপ্রকৃতিস্থ, মৌলবাদী, নিপীড়িত বা দুর্বল নারী হয়ে যাই না। আমি এ ব্যাপারটা ঘৃণা করি যে, আমি যেখানেই যাই, মানুষজন হাঁ করে তাকিয়ে থাকে (কখনো খুব নীচ দৃষ্টি সহকারে)। আমি চাই আমাকে আমার মত থাকতে দেয়া হোক এবং আমি আমার জীবন যেভাবে কাটাতে চাই, সেভাবে বাঁচতে দেয়া হোক।

সবচেয়ে বড় ভুল ধারণাগুলোর একটি হচ্ছে, সব মুসলিমরাই হয় মধ্যপ্রাচ্য থেকে আসা অথবা মধ্যপ্রাচ্যের কারো সাথে বিবাহিত। কিন্তু ব্যাপারটা তো তা নয়। এমন হাজারো আমেরিকান মুসলিম রয়েছে, যারা অন্য আমেরিকানদের কাছ থেকে ইসলাম সম্বন্ধে জেনেছে। আমার স্বামী এবং আমি হচ্ছি এই বাস্তবতার উদাহরণ।

আমার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ ঘটনা হচ্ছে আমার মুসলিম হওয়া। আমার ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক ধ্যান-ধারণা অনেক আমেরিকানদের চেয়ে ভিন্ন ধরনের হতে পারে। কিন্তু আমি আশা করবো ‘ভিন্ন’ আর ‘খারাপ' যে সব সময় এক নয়, এটুকু বুঝতে পারার মতো মুক্তমনা তারা হতে পারবে। মুসলিম নারীরা (যাদের ইসলামের দেয়া নির্দিষ্ট অধিকার রয়েছে। তাদের ঘরে শৃঙ্খলাবদ্ধ নয় বা নিয়মিতভাবে নিগৃহীতও নয়। আমরা সমাজের অংশ এবং আমাদের উপর এক অত্যন্ত গুরুদায়িত্ব অর্পিত রয়েছে। ইমাম আলী যেমন বলেছেন, “মায়ের কোলে জাতিসমূহ বেড়ে ওঠে”। আমাদের খুব গুরুত্বপূর্ণ করণীয় রয়েছে। আমি আশা করবো, আমেরিকান জনগণ আমাদের এই গুরুত্বপূর্ণ কাজকে খাটো করে দেখবেন ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন