মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
সাধারণভাবে মুসলিমদের জন্য, আর বিশেষভাবে ধর্মান্তরিত মেয়েদের আদি পরিবারের জন্য আমেরিকান ছুটির দিনগুলো অত্যন্ত ঝামেলার হতে পারে । মদ সমেত অফিস পার্টি, নাচ এবং ঢলাঢলির পরিবেশ; মদ, শূকরের মাংস বা টার্কির মতো উপহার দেয়া; জাতীয় বা খৃস্টান ধর্মীয় অনুষ্ঠান এবং সাজসজ্জাএসবই মুসলিমদের কাছে অগ্রহণযোগ্য। ব্যবসায়িক জগতে উৎসব উদ্যাপনের ব্যাপারটা এড়িয়ে চলাই হয়তো মুসলিমদের জন্য স্বাভাবিক আচরণ হতে পারে।
পরিবারগুলো ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতিতে তাদের উৎসবের সময়গুলোকে মোকাবেলা করেছে। কিছু কিছু মেয়েরা গতানুগতিক পশ্চিমা উৎসবের অংশ হতে মোটেই রাজি নয়। অন্যরা উদযাপন রীতির পরিবর্তন করেছে, যাতে সে সময়টায় পরিবারের সাথে থাকতে পারে। কেউ কেউ অবশ্য প্রায় আগের মতোই সবকিছুতে অংশগ্রহণ করে।
আমার বাচ্চারা দুই ধর্মেরই সবচেয়ে ভালোটুকু পেয়ে থাকে। আমার বাবা-মা ও শ্বশুর বাড়ি CHRISTMAS নিয়ে খুবই মাতামাতি করে থাকে। আমরা তাদের উপহার গ্রহণ করি এবং ছেলেদের কাছে এর অন্তর্নিহিত ধারণা ব্যাখ্যা করি। তারা আমাদের শূকরের মাংস বা মদ পরিবেশন করে না। আমার পরিবার হচ্ছে আমার জীবন। কোন সমস্যা নেই। অনেক স্নেহ-ভালোবাসা চারিদিকেযেমন সব সময়ই ছিল। THANKSGIVING মনে হচ্ছে এমন একটা উৎসব যা সহজেই সামাল দেয়া যায়- যদি হালাল মাংস বা বিকল্প কিছুর ব্যবস্থা করা হয়। কোন দম্পতির সন্তান লাভের সাথে সাথে মনোবৃত্তির পরিবর্তন ঘটতে পারে এবং মুসলিমরা এখন যে উৎসব উদযাপন করছে, তা থেকে তখন নিজেদের গুটিয়ে নিতে পারেবিশেষতঃ সেগুলো যদি অমুসলিম ধর্মীয় উৎসব, এমনকি জাতীয় উৎসবও হয়। অমুসলিমদের মতো করে জন্মদিন উদ্যাপিত নাও হতে পারে এবং কার্যকলাপে কিছু আপোষ করারও প্রয়োজন হতে পারে।
মুসলিম উৎসবগুলো মুসলিমদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ এবং তারা পূর্ণ একাগ্রতার সাথে সেগুলো উদযাপন করে থাকে। ঈদুল ফিতর বা রমজান মাসের পরের প্রথম দিন হচ্ছে বছরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এ সময় উপহার আদান-প্রদান হয়, কার্ড পাঠানো হয় এবং সম্মতি সাপেক্ষে (আদি পরিবারের) ও সুবিধাজনক হলে মেয়েদের আদি পরিবারকে উৎসবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই অন্তর্ভুক্তি মনে হয় একটা ব্যতিক্রম, কেননা প্রায়শঃই ঈদ অন্যান্য মুসলিমদের সাথে একত্রে উদযাপন করা হয়ে থাকে। খৃষ্টান এবং জাতীয় উৎসবের ব্যাপারে মেয়েরা নিজেদের আদি পরিবারকে নিয়ে অনেক সমস্যায় পড়েছে এবং তাদের এ ব্যাপারে একটা সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে হয়েছে যে, ঐ সমস্ত সময়গুলোতে তারা তাদের পরিবারের সাথে কোন পর্যায় পর্যন্ত এক সাথে থাকতে চায়।
আমি ‘উৎসব বা ছুটির দিন' নিয়ে কথা বলাটা এড়িয়ে চলি। আমার ভাই এবং বোন বোঝে যে, আমি ওগুলো উদযাপন করি না এবং তারা সেজন্য আমাকে সম্মান দেখায়। কিন্তু আমার বাবা-মা তা বুঝতে রাজি নন এবং প্রতি বছরই, বার বার আমি ছুটিতে আসছি কিনা জিজ্ঞেস করতে থাকেন এবং আমার, আমার স্বামীর ও আমাদের বাচ্চাদের জন্য কেনা উপহারগুলো কি করবেন তা জানতে চেয়ে থাকেন।
আমার বাবার মা, আমার বাবার ছেলেবেলায় খুব অসুস্থ ছিলেন আর তার বাবা ছিলেন মদ্যপ। আমার মায়ের জন্মদাত্রী মা, তাকে ২ বছর বয়সে ত্যাগ করে চলে যান। তাই আমার বাবা-মা, উৎসবসমূহের সময়ে আমার ভাই ও আমার জন্য বিশেষ কিছু করতে চাইতেন (তাদের পরিবার শুধু আমাদের নিয়েই, এমন একটা বোধ ছিল তাদের)। আমি যে এখন আর CHRISTMAS উদযাপন করি, এ ব্যাপারটা তাদের জন্য খুবই কষ্টকর। তাদের তরফ থেকে খুবই আপোষকামী মনোভাব থাকাতে আমরা তাদের অনেক অনুভূতিকে সম্মান করতে চেষ্টা করি। তারা আমাদের বাচ্চাদের জন্য CHRISTMAS উপহার পাঠাতে পারেন এবং ওগুলো বাচ্চারা কেবল তখনই খুলে দেখতে পারে, যখন আমরা কোরআন নিয়ে বসে JESUS-এর জন্ম এবং MARY সম্বন্ধে বলা কথাগুলো এবং তাদের সম্বন্ধে কতটুকু কি বিশ্বাস্য বলে কোরআনে বলা হয়েছে তা পড়ে শেষ করি।
THANKSGIVING, শূকরের মাংস বাদ দিয়ে মুসলিম উপায়ে জবাই করা হালাল TURKEY দিয়ে উদ্যাপন করা হয়। আমরা এটাকে এক সাথে খাবার একটা অজুহাত বানিয়ে নিয়েছি। আমার বাবা-মা তাতে রাজী হন, সেটাই সবচেয়ে বড় কথা। এটা পারিবারিক বন্ধন ও স্মৃতি রক্ষা করতে সাহায্য করে।
আমার মা, বাবা ও ভাই ঈদের উপহারের জন্য অধীর হয়ে ওঠে, যা এখন CHRISTMAS-এর উপহারের স্থান দখল করেছে। আমি আমার বাচ্চাদের জন্য ইসলামিক উৎসবের উপর গুরুত্ব আরোপ এতে সত্যি সত্যি চেষ্টা করি। আমি আমার মা ও CHRISTMAS-এর প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হই, তাই আমাকে অন্য সবকিছু ছাড়িয়ে ইসলামিক উৎসবসমূহের উপর বেশী গুরুত্ব দিতে হয়।
আমার পরিবার সত্যিকার অর্থে CHRISTMAS-কে খৃষ্ট ধর্মীয় উৎসব হিসেবে দেখে না (JESUS CHRIST-এর জন্মদিন হিসেবে নয়)। কিন্তু সবাই যেহেতু CHRISTMAS উপলক্ষে স্বাভাবিকভাবে ছুটি পেয়ে থাকে এবং অনেক ভাই-বোনদের এমন পরিবারে বিয়ে হয়েছে, যারা খৃষ্ট ধর্ম মানে, আমাদের এখন একটা পারিবারিক ভোজের ব্যবস্থা হয় এবং কিছু উপহার আদান-প্রদান হয়।
আমি আমার পরিবারকে বেশী বেশী করে আমাদের ইসলামিক উৎসবসমূহে অন্তর্ভুক্ত করতে চাই, কিন্তু অনেক সময়ই এর অর্থ হবে ২/৩ ঘন্টার পথ অতিক্রম করে যেখানে অন্যান্য মুসলিমরা একত্রিত হয় সেখানে যাওয়া। তেমন সুযোগ খুব বেশী একটা হয়নি। প্রায়ই উদযাপনের প্রধান অংশ হচ্ছে বিশেষ নামাজের জামাত, যাতে তারা অংশগ্রহণ করবে না, কারণ তারা মুসলমান নয়।
আমি আমার ভাই-বোনের ছেলেমেয়েদের ঈদ কার্ড এবং চকোলেট পাঠিয়ে থাকি।
গত ঈদে আমি প্রথমবারের মতো CHRISTMAS-এর সময় আমাকে দেয়া তাদের উপহারের বিনিময়ে আমার পরিবারকে উপহার সামগ্রী দিই।
আমার ইসলামিক উৎসব উপলক্ষে অর্থাৎ ঈদুল ফিতর এবং ঈদুল আজহা উপলক্ষে আমি আমার মাকে গৃহে প্রস্তুত ঈদ কার্ড পাঠিয়ে থাকি। আমি তাতে হাদীসের মতো বিভিন্ন কথা, যেমন ঃ মায়ের পায়ের তলায় বেহেস্ত ইত্যাদি লিখে দিই। ইসলামিক উৎসবে, পার্কে বা মসজিদে তাদের খেতে ডাকি। আমার মা এবং বোন কি হচ্ছে তা দেখতে আসে।
আমার পরিবার যেহেতু অন্য একটা অঙ্গরাজ্যে থাকে, তারা কখনোই আমাদের ইসলামিক কোন উৎসবে শরীক হয়নি। তারা দূরত্ব বজায় রাখে, আর আমরা উভয় পক্ষই একে অপরকে নিজের মতো থাকতে দেই। কিছু আত্মীয় স্বজনকে আমি ফোন করি এবং CHRISTMAS বা THANKSGIVING উপলক্ষে চিঠি অথবা কার্ড পাঠাই। কখনো CHRISTMAS-এ যোগাযোগ করতে
পারলে, জানুয়ারির প্রথম দিনে আমি তাদের ফোন করে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই।
আমাদের বিয়ের পরে প্রথম দিকে আমরা CHRISTMAS-এ যেতাম এবং উপহার আদান-প্রদান করতাম। কিন্তু এ বছর আমাদের একটা বাচ্চা রয়েছে। এবং আমাদের উচিত বাচ্চাদের এ ব্যাপারে অভ্যস্ত করে ভোলা যে, আমরা CHRISTMAS- এর কর্মকান্ডের সাথে জড়িত নই। আমার বাবা-মা এ বছর আমাদের উপহার পাঠিয়েছেন এবং আমরা তাদের ধন্যবাদ জানিয়েছি, কিন্তু তাদের আমরা কিছু দেইনি। আমরা কোন কার্ডও পাঠাইনি। আমরা ঈদ উদযাপনের পরিকল্পনা করছি এবং আমরা কি করছি তা ব্যাখ্যা করে তাদের একখানা কার্ড পাঠাবো। আমাদের মেয়ে বড় হতে হতে আশা করি এটা আর কোন ইস্যু হয়ে দাঁড়াবে না। আমি চাই, সে আমার পরিবারের সাথে পরিচিত হোক, তাই সেটা কিভাবে সম্ভব তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।
আমার আদি পরিবারের সাথে অস্বস্তির সবচেয়ে প্রধান কারণ ছিল CHRISTMAS– আমাদের উপহার দেয়া ঠিক কিনা, খেতে যাওয়া ঠিক কিনা ইত্যাদি। CHRISTMAS-এর ব্যাপারে একটা সমঝোতায় পৌছাতে অনেক কথাবার্তা ও সময় ব্যয় করতে হয়েছে, কেননা আমি আমার আদি পরিবারের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নিতে পারি না। আমার স্বামী এবং আমি পরিবারের সাথে খেতে গিয়েছি এবং এই ধারণা মনে রেখে তাদের কাছ থেকে উপহার গ্রহণ করেছি যে, এটা একটা উৎসব যা আমরা উদযাপন করি না এবং আমরা উপহার বিনিময়ে যাবো না। আমরা বরং এর প্রতি সাড়া দিতে গিয়ে আমাদের ইসলামিক উৎসবে তাদের ডাকবো। সবাই এই ধারণায় একমত হয় এবং মৌসুমের আনন্দ মাটি হয়ে যায়নি।
আমার পরিবার আমাদের ইসলামিক উৎসবে কোন আগ্রহ দেখায় না। এসব উৎসব সম্বন্ধে আমি তাদের কয়েক সপ্তাহ বা মাসখানেক আগেই বলে রাখি, কিন্তু তারা তার তোয়াক্কা করে বলে মনে হয় না এবং আমার মনে হয়, ঐ সময় তারা আমাদের এড়িয়ে চলে।
উৎসবসমূহে এবং জন্মদিনে সাধারণতঃ উপহার দেয়া-নেয়া হয়। এই সব উপলক্ষগুলো কিভাবে পালন করা যেতে পারে, সে সম্বন্ধে খোলাখুলি আলাপ করে নিলে, পরিবারে বা অফিসে আনন্দ ভাগাভাগি করে নেয়ার উপায় অব্যাহত থাকে। একে অপরের অনুভূতিকে সম্মান করতে গিয়ে কিছু নতুন ধরণের আয়োজন করলে হয়তো কোন উৎসব আগের চেয়ে অনেক বেশী বিশেষ হয়ে উঠতে পারে।
বাবা-মা বা আত্মীয় স্বজন, অমুসলিম উৎসব উপলক্ষে মুসলিমদের উপহার না দিলেই ভালো করবেন তার চেয়ে বরং অন্য একটা সময় এর জন্য বেছে নিতে পারেন- তা তাদের একটা উৎসব অথবা উপহার দেয়ার জন্যই কেবল অন্য একটা দিনও হতে পারে। কেউ চাইলে, ঈদ কবে তা জেনে নিতে পারেন এবং ঐ সময় উপহার পাঠানোর কথা বলে রাখতে পারেন- খোজ নিতে পারেন কি ধরণের উপহার দেয়াটা সঠিক হবে। BATMAN, TURTLES, POWER RANGER বা BARBIE ও KEN-এর মত আমেরিকান খেলনা হয়তো একেবারেই অগ্রহণযোগ্য হতে পারে। এমনকি THOMAS THE TANK ENGINE-এর ছবি সমেত কাপড় বা BARNEY সম্বলিত বিছানার চাদরও অগ্রহণযোগ্য হতে পারে। মেয়ের সাথে আলাপ করে নিলে, বাবা-মা হয়তো জানতে পারবেন যে, তার মনে আরো ভালো কোন ধারণা থেকে থাকতে পারে।
তারপর বাবা-মা উপহার দিতে চাইলে, তারা মেয়ের সাথে আলাপে একমত হওয়া কোন সামগ্রী বেছে নিলে তা আনন্দময় হবে।
তারা জানেন যে, আমরা মুসলিম এবং আমরা তাদের মত করে CHRISTIAN উৎসবসমূহ উদযাপন করি না। কোন নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই আমার মা কখনো বাচ্চাদের জন্য উপহার পাঠিয়ে থাকেন- যখন এমন কোন জিনিস তার চোখে পড়ে, যা বাচ্চারা পছন্দ করবে। মা অবশ্য CHRISTMAS-এর সময়েও উপহার পাঠিয়ে থাকেন। আমরা সেগুলোকে নববর্ষের উপহার হিসেবে গ্রহণ করি। আমরা প্রার্থনার মাধ্যমে নবী JESUS-এর জন্মক্ষণ উদযাপন করি, তার উপর শান্তি বর্ষিত হোক।
আমার আদি পরিবার আমাদের কাছ থেকে অনেক দূরে থাকে আর ইসলাম ও ঈদ উৎসব সম্বন্ধে তাদের ধারণাও অপ্রতুল। এখন পর্যন্ত আমাদের ইসলামী উৎসব উদযাপনে তারা অন্তর্ভুক্ত হননি, কিন্তু তারা যদি কাছে পিঠে থাকতেন, তবে তাদের যতখানি ইচ্ছা, তারা আমাদের উৎসবে ততখানি অন্তর্ভুক্ত হতে পারতেন।
আমরা যে খৃষ্টান উৎসব উদযাপন করি না সে সম্বন্ধে আমার বোন এবং বাবা-মা (বাবা এবং সৎ মা) সচেতন। ঐ সমস্ত উত্সবের সাথে সম্পর্কযুক্ত কোন উপহার দেয়ার আগে বা কিছু করার আগে তারা সব সময় জিজ্ঞেস করে নেন। তারা আমাদের উৎসবসমূহকে সম্মান দেখান। তাদের কাছে বাচ্চারা থাকলে আমার কোন দুঃশ্চিন্তা হয় না। খৃস্টান, ইহুদী, বৌদ্ধ এবং মুসলিম সম্বলিত বহু বিশ্বাসের পরিবার হওয়াতে ব্যাপারটা অনেকটা সহজ হয়। এটা একটা অলিখিত পারিবারিক নিয়ম যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তারা নিজের বা অন্য কারো ক্ষতি সাধন করছে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তার বিশ্বাসকে সবাই সম্মান করে চলবে। আমার বাবা এবং মা, দু’জনের আদি পরিবারও এই নিয়ম মেনে চলে।
বাচ্চাদের অন্যের কাছে রাখতে দেয়া সচরাচর না হলেও, কিছু মুসলিম পিতা-মাতা হয়তো তাদের বাচ্চাদের কয়েক ঘন্টা বা রাতের জন্য, নানা-নানী বা অন্যদের কাছে রাখতে রাজী হতে পারে। মুসলিম পিতা-মাতা নিজেদের দায়িত্ব সম্পর্কে খুবই সচেতন এবং তাদের বাচ্চাদের পরিবেশের এতো কিছু তারা নিয়ন্ত্রিত করতে চান যে, মুসলিম পরিবারের বাইরের যে কাউকে রীতিমতো পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। এটা বর্ধিত পরিবার বা অমুসলিম প্রতিবেশী বাচ্চাদের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। অন্য মুসলিমদের প্রযত্নে বাচ্চাদের রেখে যাওয়ার ব্যাপারেও সতর্ক বিবেচনা করা হয়।
সবচেয়ে ভালো হচ্ছে বাবা-মার উদ্বেগের কারণগুলো জেনে নেয়া এবং সে অনুযায়ী নিয়ম মানার চেষ্টা করা। বাথরুমের কাজকর্মের মত সাধারণ বিষয়সমূহের বেলায়ও অমুসলিমদের ভিন্ন কিছু শেখার রয়েছে। বাচ্চাদের সাথে মুসলিম দৃষ্টিভঙ্গীর সাথে মানানসই আচরণ এবং তার পরিপন্থী কোন কিছু এড়িয়ে চলাটা, বাবা-মার কাছে খুবই স্বস্তিকর ব্যাপার বলে গণ্য হবে। মুসলিম বাচ্চাদের উপস্থিতিতে, কি ধরনের টেলিভিশন অনুষ্ঠান চলছে বা কেমন গান বাজনা হচ্ছে, সে সম্বন্ধে খেয়াল রাখতে হবে। ঠিক খাবার দেয়া এবং নিষিদ্ধ খাবার পরিহার করাও জরুরী ব্যাপার।
আমার বাবা-মা প্রায়ই বাচ্চাদের রাতে তাদের কাছে থাকতে বলেন। বাচ্চারা বা অন্যরাও এটা খেয়াল করেছে যে, মা তাদের জিজ্ঞেস করেন, শুতে যাবার আগে তারা প্রার্থনা করেছে কিনা এবং তা করতে তাদের তাগিদও দিয়ে থাকেন। (ইসলামিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা করে থাকলে ঠিকই আছে!) আমার উদ্বেগের প্রধান কারণ হচ্ছে আমার ১০ বছর বয়স্কা মেয়ে। আমার মা মনে করেন,
দ্র পোশাক নিয়ে ভাবার জন্য আমার মেয়ে এখনো খুবই ছোট আর তাই তাকে তিনি মিনি স্কার্ট কিনে দেন- যা আমি তাড়াতাড়ি লুকিয়ে রাখি। আমার মেয়ে এখনো হিজাব পরে না, কিন্তু সে ইতিমধ্যেই ধারণাটা গ্রহণ করতে শুরু করেছে এবং সে এ ব্যাপারে খুবই নিশ্চিন্ত। ঘরের বাইরে সে শালীন পোশাক পরে থাকেবেশীর ভাগ সময়েই ফুলহাতা সুতী জামা এবং ঢিলাঢালা প্যান্ট বা লম্বা স্কার্ট।
আমি নিয়মিত আমার পরিবারের কাছে বেড়াতে যাই। আমি তিন-চার ঘন্টার জন্য আমার মাকে বাচ্চাদের দায়িত্বে থাকতে দেই। কিন্তু আমার মায়ের অন্য নাতি-নাতনীরা সে বাড়িতে থাকলে তাদের ছেড়ে আসাটা আমার পক্ষে কঠিন হয়। আমার বাচ্চাদের অনৈসলামিক আচার-আচরণ শিখার ব্যাপারে, আমি বড়দের চেয়ে অন্য বাচ্চাদের নিয়েই বেশী চিন্তিত (যেমন আমার ভাতিজীরা যখন BARBIE নিয়ে খেলা করে, তখন BARBIE’র ছেলে বন্ধু KEN-এর সাথে। BARBIE’র একান্তে অবস্থানের মহড়া হয়ে থাকে)। মামাতো, খালাতো ভাইবোনদের স্কুলে ছেলে বা মেয়ে বন্ধু রয়েছে, যা নিয়ে তারা গল্প করে থাকে।
আমার বাচ্চারা আমার বাপের বাড়িতে সব সময়ই স্বাগত আর আমার মা বাচ্চাদের সামলানোর ব্যাপারে চমক্কার।
আমি এখন যেমন, আমাকে গ্রহণ করতে তাদের নিজেদের বদলাতে হবে না, একথাটা আমার পরিবারের সদস্যরা জানে। আমার বাচ্চাকে অন্য বাচ্চাদের চেয়ে আলাদা করে দেখা হয় না, কেবল বিয়ার, শূকরের মাংস বা অন্য যে সব খাবার আমরা অনুমোদন করি না- সেগুলো তাকে দেয়া যাবে না, সেটা তারা মনে রাখে।
গরমের ছুটিতে আমার ভাইয়েরা সব সময় তাদের ছেলেমেয়েদের ২১ সপ্তাহের জন্য আমার মা-বাবার কাছে থাকতে পাঠায়, কিন্তু আমাদের বাচ্চারা কখনো আমার স্বামী বা আমাকে ছাড়া তাদের নানা-নানীর কাছে বেড়াতে যায়নি। তারাও কখনো আমাদের জোর করেননি এ ব্যাপারে, কারণ তারা জানেন, আমাদের বাচ্চারা তাদের খাবার খেতে পারবে না।
আমি জানি, আমাদের ছোট্ট মেয়ে একটু বড় হলে, তাকে যদি আমার মার কাছে রাখি, তবে তিনি তাকে খৃষ্টধর্মে দীক্ষা দিতে চেষ্টা করবেন আর আমি সেটা কিছুতেই হতে দিতে পারি না। আমি যে আমার মাকে বিশ্বাস করতে পারি , এই বাস্তবতাটা আমাকে ভীষণ দুঃখ দেয়- যার গভীরতা আমার স্বামীও বোঝে । আমার মায়ের একগুঁয়েমির জন্যই আমি তাকে ত্যাগ করতে বাধ্য। কিন্তু আমি যে তা কেবল আমার বিয়ে টিকিয়ে রাখতে চেষ্টা করছি তা নয়, বরং আমার নিজের মঙ্গলের জন্যও করছি।
আমার বাচ্চাকে তাদের কাছে ছেড়ে দেয়াটা কঠিন এ জন্য যে তারা তাকে অতিমাত্রায় আজেবাজে খাবার (চিপস্, চকোলেট) দিয়ে নষ্ট করে ফেলবেন, যা আমি জানি নানা-নানীদের জন্য একটা স্বাভাবিক ব্যাপার। আমার সবচেয়ে বড় উদ্বেগ হচ্ছে সে যেন হালাল মাংস ছাড়া কিছু না খায় সেটা- তাই বাচ্চা যখন কেবল মাছ ও সজি খেয়ে থাকে, তারা তাতে মন খারাপ করেন।
আমার মা-বাবা আমাকে নিশ্চয়তা দিয়েছেন যে,আল্লাহ্ না করুন, আমার স্বামী বা আমার যদি কিছু হয়, তারা নিশ্চিত করবেন যে আমাদের বাচ্চারা যেন মুসলিম হিসেবে বড় হয় এবং তাদের আমার স্বামীর পরিবারের কাছে রাখা হয়। আমার স্বামীর এবং আমার বাবা-মার পরিবার একে অপরকে যথার্থ সম্মান দেখিয়ে থাকে ।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/633/52
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।