hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

নির্বাচিত হাদীস চতুর্থ খণ্ড

লেখকঃ ড: মুহাম্মাদ মর্তুজা বিন আয়েশ মুহাম্মাদ

২৭
নিশ্চয় আল্লাহ সেই প্রকৃত মুসলিম ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঠিক ভক্ত
23 - عَنْ سَعْدِ بْنِ أَبِيْ وَقَّاصٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُ , قَالَ : سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ , يَقُوْلُ : " إنَّ اللهَ يُحِبُّ الْعَبْدَ التَّقِيَّ، الْغَنِيَّ، الْخَفِيَّ ".

( صحيح مسلم , رقم الحديث 11- (2965),).

23 - অর্থ: সায়াদ বিন আবি ওয়াক্কাস [রাদিয়াল্লাহু আনহু] থেকে বর্ণিত। তিনি বলেছেন যে, আমি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেন: “নিশ্চয় আল্লাহ সেই প্রকৃত মুসলিম ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঠিক ভক্ত, সৃষ্টিজগতের অমুখাপেক্ষী এবং আত্মগোপনকারী”।

[সহীহ মুসলিম, হাদীস নং 11 -(2965) ]।

* এই হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীর পরিচয়:

আবু ইসহাক সায়াদ বিন আবী অক্কাস আজ জহরী আল কুরাশী একজন মহাবিখ্যাত সাহাবী [রাদিয়াল্লাহু আনহু] । তিনি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর হিজরতের 23 বছর পূর্বে মাক্কা মহানগরীতে জন্ম গ্রহণ করেন। এবং সেখানেই তিনি প্রতিপালিত হন ও বড়ো হন। তিনি ইসলাম ধর্ম আবির্ভূত হওয়ার প্রথম দিকেই ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। যে দশজন সাহাবীকে দুনিয়াতেই জান্নাতের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে, সেই দশজন সাহাবীগণের মধ্যে হলেন তিনি একজন। ওমার [রাদিয়াল্লাহু আনহু] যে ছয়জন সাহাবীগণের মধ্যে থেকে একজনকে তাঁর উত্তরাধিকারী হিসেবে মুসলিম জাহানের খলিফা ও শ্রেষ্ঠনৃপতি নিযুক্ত করার জন্য একটি পরিষদ বা সভা গঠন করেছিলেন, সেই ছয়জন সাহাবীগণের মধ্যে সায়াদ বিন আবী ওয়াক্কাস [রাদিয়াল্লাহু আনহু] ছিলেন অন্যতম একজন মহাসাহাবী।

তিনি মাদীনায় হিজরত করেন। এবং বদরের যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন। অতঃপর তিনি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর সাথে আরো সমস্ত যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন।

তিনি নাবী কারীম [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর মায়ের পিতৃব্যপুত্র ছিলেন। তাই আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] তাঁকে মামা বলেই ডাকতেন। অর্থাৎ তিনি ছিলেন তাঁর মামাদের অন্তর্ভুক্ত যদিও তিনি আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর মায়ের সহোদর ভাই ছিলেন না।

সায়াদ বিন আবি ওয়াক্কাস ছিলেন একজন বিরাট সাহসী ও যোদ্ধা সাহাবী। এবং আল্লাহর রাসূল [সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম] এর বড়ো বড়ো নেতাদের অন্তর্গতই ছিলেন তিনি। আবু বাকর ও ওমার [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা] দুই খলিফার আমলে রাষ্ট্র পরিচালনার কার্যক্রমে তাঁর মহা অবদান রয়েছে। ওমার এবং ওসমান [রাদিয়াল্লাহু আনহুমা] এর আমলে তাঁকে কূফা শহরের আমির বা শাসক নিযুক্ত করা হয়েছিল।

সায়াদ বিন আবি ওয়াক্কাস [রাদিয়াল্লাহু আনহু] পারস্য এবং ইরাক সাম্রাজ্যের যুদ্ধে মুসলিম সেনাবাহিনীর প্রধান নেতা ও সেনাপতি ছিলেন। এবং আল্লাহর করুণায় তিনি কাদসিয়ার যুদ্ধে পারস্য এবং ইরাক সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনীকে পরাজিত ও পরাস্ত করে জয়লাভ করেন। মাদায়েনের যুদ্ধেও তিনি জয়লাভ করেন। তিনি মহান আল্লাহর কাছে এমন পবিত্র মানুষ ছিলেন যে, আল্লাহ তাঁর দোয়া কবুল করে নিতেন। তাঁর মহামর্যাদার সমস্ত কথা এখানে উল্লেখ করার সুযোগ নেই বলে এই বিষয়টিকে অধিক দীর্ঘ করলাম না।

অতঃপর সাহাবীগণের মধ্যে যখন ফেতনা এবং শত্রুতা সৃষ্টি হয়, তখন তিনি রাজনীতির কাজ এবং রাষ্ট্র পরিচালনার কার্যক্রম পরিত্যাগ করে মাদীনা শহর থেকে দূরবর্তী স্থানে গিয়ে অবস্থান করেন। এবং নিজের স্ত্রী ও সন্তানদেরকে আদেশ প্রদান করেন যে, তারা যেন সাহাবীগণের মধ্যে যে ফেতনা এবং শত্রুতা সৃষ্টি হয়েছে, সেই ফেতনা এবং শত্রুতার কোনো সংবাদ বা রাষ্ট্রীয় কোনো খবর তাঁর কাছে না পৌঁছায়।

হাদীস গ্রন্থে তাঁর কাছ থেকে বর্ণিত 270 টি হাদীস পাওয়া যায়।

তিনি একজন বেঁটে আকারের মানুষ ছিলেন। তিনি মাদীনা শহর থেকে সাত মাইল দূরে আকীক নামক জায়গাতে তাঁর প্রাসাদে সন 55 হিজরীতে মৃত্যুবরণ করেন। সেখান থেকে তাঁর দেহ মাদীনা শহরে নিয়ে আসা হয় এবং মাদীনা শহরের শাসক মারওয়ান ইবনুল হাকাম তাঁর জানাজার নামাজ পড়ান। এবং তাঁকে মাদীনার আল বাকী কবরস্থানে সমাহিত করা হয়। হিজরতকারী সাহাবীগণের মধ্যে তিনিই সব শেষে মৃত্যুবরণ করেছেন।

* এই হাদীস হতে শিক্ষণীয় বিষয়:

1। মানব সমাজের সাথে জীবনযাপন করা অপরিহার্য এবং প্রয়োজনীয় বিষয়; তাই সকল মানুষের উচিত যে, তারা যেন সামাজিকভাবে সমাজের সদস্যদের সাথেই জীবনযাপন করে।

2। মানব সমাজের সাথে জীবনযাপন করা অপরিহার্য এবং প্রয়োজনীয় বিষয়, কিন্তু এই মানব সমাজের সাথে জীবনযাপন করার কারণে যদি আল্লাহর অবাধ্যতা, অমান্যতা অথবা নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করা হয়, তাহলে সামাজিকভাবে সমাজের সদস্যদের সাথে জীবনযাপন ত্যাগ করে সকলকে ছেড়ে দিয়ে একাকী বা একক ভাবে জীবনযাপন করাই হলো উত্তম পন্থা। বিশেষ করে তাদের জন্য এই বিধানটি বেশি উপযোগী বা প্রযোজ্য যারা নিজেকে আল্লাহর অবাধ্যতা কিংবা পাপের কাজ থেকে এবং সন্দেহযুক্ত বিষয় ইত্যাদি থেকে রক্ষা করতে সক্ষম নয়।

3। প্রকৃত ইসলাম ধর্মে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা করা অপরিহার্য কিন্তু এই বন্ধন রক্ষা করার কারণে যদি আল্লাহর অবাধ্যতা, অমান্যতা অথবা আল্লাহর নির্ধারিত সীমালঙ্ঘন করা হয় তাহলে; এই ক্ষেত্রে আত্মীয়তার বন্ধন রক্ষা না করাই উত্তম পন্থা; কেননা ইসলাম ধর্মের একটি বিধান রয়েছে:

قاعدة : " درء المفاسد مقدم على جلب المنافع ".

অর্থ: “মঙ্গল আনয়নের চেয়ে অমঙ্গল দূরীকরণেরই বেশি দরকার”।

(সুতরাং যে জিনিসে মঙ্গলের চেয়ে অমঙ্গল বেশি আছে, সে জিনিসটি বর্জনীয়। এবং যে জিনিসে অমঙ্গলের চেয়ে মঙ্গল বেশি আছে, সে জিনিসটি গ্রহণীয়।)

4। এই হাদীসটির ভাবার্থঃ আল্লাহ সেই প্রকৃত মুসলিম ব্যক্তিকে ভালোবাসেন, যে ব্যক্তি আল্লাহর সঠিক ভক্ত। আল্লাহর সঠিক আত্তাকী বা ভক্ত ব্যক্তি বলা হয় সেই ব্যক্তিকে, যে ব্যক্তি প্রকৃত ইসলাম ধর্মের অপরিহার্য বা করণীয় কাজগুলি সম্পাদন করে এবং বর্জনীয় অবৈধ বস্তুগুলি পরিত্যাগ করে। আর আলগাণী বা সৃষ্টিজগতের অমুখাপেক্ষী ব্যক্তি বলা হয় সেই ব্যক্তিকে, যে ব্যক্তির আত্মা প্রকৃতপক্ষে তৃপ্ত, সেই তৃপ্ত আত্মার মানুষই আল্লাহর কাছে প্রিয়; কেননা সে তো শুধু মাত্র আল্লাহরই মুখাপেক্ষী ব্যক্তি আর অন্য কোনো সৃষ্টি বস্তুর মুখাপেক্ষী নয়। এবং আলখাফী বা আত্মগোপনকারী বলা হয় সেই ব্যক্তিকে, যে ব্যক্তি অনুপস্থিত থাকলে তার বিষয়ে কেউ কিছু জিজ্ঞাসা করে না এবং উপস্থিত থাকলে তাকে কেউ চিনতে পারে না। অথচ সে আল্লাহর কাছে মহামর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তি এবং সে প্রকৃতপক্ষে জান্নাতুল ফেরদাউসের উচ্চ স্থানের অধিকারী ব্যক্তি ।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন