hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আলোচিত রাত-দিন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

১২
জুমু‘আর দিন করণীয়
জুমু‘আর দিনের অনেক করণীয় রয়েছে, যেগুলোর প্রতি গুরুত্ব দেয়া আমাদের সকলের দায়িত্ব। নিম্নে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আলোচনা করা হলো :

১. সুগন্ধি ব্যবহার করা :

জুমু‘আর দিন সুগন্ধি ব্যবহার করা উত্তম। রাসূলুল্লাহ ﷺ এই দিনে সুগন্ধি ব্যবহার করতে উৎসাহ দিতেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ : إِذَا كَانَ يَوْمُ الْجُمُعَةِ اغْتَسَلَ الرَّجُلُ وَغَسَلَ رَأْسَه ، ثُمَّ تَطَيَّبَ مِنْ أَطْيَبِ طِيْبِه  .....

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যখন জুমু‘আর দিন আসবে, তখন গোসল করবে, মাথা ধৌত করবে, তারপর সামর্থানুযায়ী সুগন্ধি ব্যবহার করবে। [বায়হাকী, হা/৬১৬৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১৮০৩; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৭০৫।]

২. উত্তম পোশাক পরিধান করা :

জুমু‘আর দিন হচ্ছে মুসলিমদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন। সুতরাং এ দিনে উত্তম পোশাক পরিধান করাই উত্তম। রাসূলুল্লাহ ﷺ এই দিনে উত্তম পোশাক পরিধান করতেও উৎসাহ দিতেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ وَأَبِىْ سَعِيْدٍ رَضِىَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَا سَمِعْنَا رَسُوْلَ اللهِ - - يَقُوْلُ : مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاسْتَنَّ ، وَمَسَّ مِنْ طِيْبٍ إِنْ كَانَ عِنْدَه وَلَبِسَ أَحْسَنَ ثِيَابِه ثُمَّ جَاءَ إِلَى الْمَسْجِدِ .....

আবু হুরায়রা ও আবু সাঈদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তারা উভয়ে বলেন, আমরা রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন গোসল করবে, মিসওয়াক করবে, সুগন্ধি ব্যবহার করবে এবং উত্তম পোশাক পরিধান করবে। তারপর মসজিদে গমন করবে......। [বায়হাকী, হা/৬১৭০।]

عَنْ اِبْنِ عُمَرَ : أَنَّ عُمَرَ كَانَ يَجْمِرُ ثِيَابَه لِلْمَسْجِدِ يَوْمَ الْجُمْعَةِ

ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, উমর (রাঃ) জুমু‘আর দিন মসজিদে গমন করার জন্য পোশাক পরিষ্কার করতেন। [জামেউল আহাদীস, হা/২৯০৬৮; কানযুল উম্মাল, হা/২৩৩৩৮।]

৩. জুমু‘আর দিনে পরিধানের জন্য কাপড় নির্দিষ্ট করে রাখা :

শুধুমাত্র জুমু‘আর দিনে পরিধান করার জন্য কোন কাপড় নির্দিষ্ট করে রাখাতে কোন দোষ নেই। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَائِشَةَ اَنَّ النَّبيَّ خَطَبَ النَّاسَ يَوْمَ الجُمُعَةِ . فَرَاٰى عَلَيْهمْ ثِيَابَ النِّمَارِ . فَقَالَ : رَسُوْلُ الله مَاعَلٰى اَحَدِكُمْ ، اِنْ وَجَدَ سَعَةً ، اِنْ يَّتَّخِذَ ثَوْبَيْنِ لِجُمُعَتِه سِوٰى ثَوْبَيْ مِهْنَتِه

আয়েশা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ জুমু‘আর খুতবা প্রদান করতেন। একদিন তিনি লোকদের গায়ে ময়লা কাপড় দেখতে পেলেন। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যদি ব্যবহৃত কাপড়ের বাইরে জুমু‘আর দিনে পরিধান করার জন্য দুটি কাপড় নির্দিষ্ট করে রাখে, তাহলে তার কোন দোষ নেই। [ইবনে মাজাহ, হা/১০৯৬; আবু দাউদ, হা/১০৮০; সহীহ ইবনে হিববান, হা/২৭৭৭; মিশকাত, হা/১৩৮৯।]

৪. মিসওয়াক করা :

মিসওয়াক করাটা একটি উত্তম অভ্যাস। এটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার অন্যতম মাধ্যম। রাসূলুল্লাহ ﷺ এ দিনে মিসওয়াক করার ব্যাপারে নির্দেশ দিয়েছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ السَّبَّاقِ أَنَّ النَّبِىَّ - - قَالَ فِىْ جُمُعَةٍ مِنَ الْجُمَعِ : يَا مَعْشَرَ الْمُسْلِمِيْنَ إِنَّ هٰذَا يَوْمٌ جَعَلَهُ اللّٰهُ عِيْدًا لِلمُسْلِمِيْنَ فَاغْتَسِلُوْا ، وَمَنْ كَانَ عِنْدَه طِيْبٌ فَلَا يَضُرَّه أَنْ يَّمَسَّ مِنْهُ وَعَلَيْكُمْ بِالسِّوَاكِ

ইবনে সাববাক (রাঃ) হতে বর্ণিত। একদা এক জুমু‘আর খুতবায় নবী ﷺ বলেন, হে মুসলিম সম্প্রদায়! এটি হচ্ছে এমন একটি দিন, আল্লাহ তা‘আলা এ দিনটিকে মুসলিমদের জন্য ঈদ হিসেবে নির্বাচন করেছেন। অতএব এ দিনে তোমরা গোসল করো এবং সুগন্ধি ব্যবহার করো। আর তোমরা মিসওয়াক ব্যবহার করো। [বায়হাকী, হা/৫৭৫২; সহীহুল জামে, হা/২২৫৮।]

৫. নখ কাটা ও গোঁফ ছোট করা :

নখ কাটা ও গোঁফ ছোট করাও হচ্ছে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার একটি আলামত। সাহাবীগণ এ দিনে এ আমলটি করতেন। যেমন-

عَنْ نَافِعٍ : أَنَّ عَبْدَ اللهِ بْنَ عُمَرَ كَانَ يُقَلِّمُ أَظْفَارَه ، وَيَقُصُّ شَارِبَه فِىْ كُلِّ جُمُعَةٍ

নাফে (রহ.) হতে বর্ণিত। আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) জুমু‘আর দিন নখ কাটতেন, গোঁফ ছোট করতেন। [বায়হাকী, হা/৬১৭৬।]

৬. জুমু‘আর দিন গোসল করা :

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রধান মাধ্যম হচ্ছে গোসল। রাসূলুল্লাহ ﷺ জুমু‘আর দিনে গোসল করা আবশ্যক করে দিয়েছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ إِذَا جَاءَ أَحَدُكُمُ الْجُمُعَةَ فَلْيَغْتَسِلْ

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের মধ্যে কেউ যখন জুমু‘আর সালাতে আসবে, তখন সে যেন গোসল করে। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/২৩১; সহীহ বুখারী, হা/৮৭৭; সহীহ মুসলিম, হা/১৯৮৮; আবু দাউদ, হা/৩৪০; তিরমিযী, হা/৪৯২; নাসাঈ, হা/১৩৭৬; ইবনে মাজাহ, হা/১০৮৮; মিশকাত, হা/৫৩৭।]

عَنْ أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - - قَالَ : غُسْلُ يَوْمِ الْجُمُعَةِ وَاجِبٌ عَلٰى كُلِّ مُحْتَلِمٍ

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, জুমু‘আর দিন গোসল করা সকল সাবালক মুসলিমের উপর ওয়াজিব। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/২২৮, ২৩০; সহীহ বুখারী, হা/৮৫৮, ৮৭৯, ৮৫৯; সহীহ মুসলিম, হা/১৯৯৪; আবু দাউদ, হা/৩৪১; নাসাঈ, হা/১৩৭০; ইবনে মাজাহ, হা/১০৮৯; মিশকাত, হা/৫৩৮।]

৭. জুমু‘আর সালাতে উপস্থিত হওয়া :

জুমু‘আর দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হচ্ছে জুমু‘আর সালাতে উপস্থিত হওয়া। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿يَاۤ اَيُّهَا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْاۤ اِذَا نُوْدِيَ لِلصَّلَاةِ مِنْ يَّوْمِ الْجُمُعَةِ فَاسْعَوْا اِلٰى ذِكْرِ اللهِ وَذَرُوا الْبَيْعَؕ ذٰلِكُمْ خَيْرٌ لَّكُمْ اِنْ كُنْتُمْ تَعْلَمُوْنَ فَاِذَا قُضِيَتِ الصَّلَاةُ فَانْتَشِرُوْا فِى الْاَرْضِ وَابْتَغُوْا مِنْ فَضْلِ اللهِ وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ﴾

হে মুমিনগণ! জুমু‘আর দিন যখন সালাতের জন্য আহবান করা হয়, তখন তোমরা আল্লাহর স্মরণে ধাবিত হও এবং ক্রয়-বিক্রয় ত্যাগ করো, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম- যদি তোমরা জানতে। অতঃপর যখন সালাত শেষ হয় তখন তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়ো এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করো। আর তোমরা আল্লাহকে অধিক হারে স্মরণ করো, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার। (সূরা জুমু‘আ- ৯, ১০)

৮. জুমু‘আর দিন হেঁটে মসজিদে উপস্থিত হওয়া :

জুমু‘আর দিন পায়ে হেঁটে মসজিদে উপস্থিত হওয়ার বিশেষ নেকী রয়েছে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ الثَّقَفِىُّ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ - - يَقُوْلُ : مَنْ غَسَّلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَاغْتَسَلَ ثُمَّ بَكَّرَ وَابْتَكَرَ وَمَشٰى وَلَمْ يَرْكَبْ وَدَنَا مِنَ الْاِمَامِ فَاسْتَمَعَ وَلَمْ يَلْغُ كَانَ لَه بِكُلِّ خُطْوَةٍ عَمَلُ سَنَةٍ أَجْرُ صِيَامِهَا وَقِيَامِهَا

আওস ইবনে আওস আস-সাকাফী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে বলতে শুনেছি যে, যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন উত্তমভাবে গোসল করল, তারপর তাড়াতাড়ি মসজিদে গমন করল এবং বাহন বাদ দিয়ে পায়ে হেঁটে গমন করল, ইমামের কাছাকাছি অবস্থান করল, তারপর খুতবা শুনল এবং অনর্থক কোন কথা বা কাজ করল না, তাহলে তার জন্য রয়েছে প্রত্যেক কদমের বিনিময়ে এক বছরের রোযা এবং রাত জাগরণের সওয়াব। [আবু দাউদ, হা/৩৪৫; ইবনে মাজাহ, হা/১০৮৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬২১৮; মিশকাত, হা/১৩৮৮।]

৯. জুমু‘আর দিন সকাল সকাল মসজিদে যাওয়া :

জুমু‘আর দিন যতটুকু সম্ভব সকাল সকাল মসজিদে উপস্থিত হওয়া উত্তম। এতে অনেক সওয়াব রয়েছে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ غُسْلَ الْجَنَابَةِ ثُمَّ رَاحَ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَدَنَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّانِيَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَقَرَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الثَّالِثَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ كَبْشًا أَقْرَنَ وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الرَّابِعَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ دَجَاجَةً وَمَنْ رَاحَ فِي السَّاعَةِ الْخَامِسَةِ فَكَأَنَّمَا قَرَّبَ بَيْضَةً فَإِذَا خَرَجَ الْإِمَامُ حَضَرَتِ الْمَلَائِكَةُ يَسْتَمِعُوْنَ الذِّكْرَ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি জুমু‘আর দিন ফরয গোসলের ন্যায় গোসল করল, অতঃপর মসজিদের দিকে রওয়ানা দিল এবং প্রথম পর্যায়ে মসজিদে প্রবেশ করল, সে যেন একটি উট কুরবানী করার সওয়াব পেল। এরপর যে দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করল, সে যেন একটি গরু কুরবানী করার সওয়াব পেল। এরপর যে তৃতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করল, সে যেন একটি ভেড়া কুরবানী করার সওয়াব পেল। অতঃপর যে চতুর্থ পর্যায়ে প্রবেশ করল, সে যেন একটি মুরগী কুরবানী করার সওয়াব পেল। অতঃপর যে ব্যক্তি পঞ্চম পর্যায়ে প্রবেশ করল, সে যেন একটি ডিম দান করার সওয়াব পেল। অতঃপর যখন ইমাম (খুতবা দেয়ার উদ্দেশ্যে) বের হন, তখন ফেরেশতাগণ (লেখা বন্ধ করে) খুতবা শুনতে থাকেন। [মুয়াত্তা ইমাম মালেক, হা/২২৭; সহীহ বুখারী, হা/৮৮১; সহীহ মুসলিম, হা/২০০১; তিরমিযী, হা/৪৯৯।]

১০. খুতবার সময় তন্দ্রা আসলে স্থান পরিবর্তন করা :

অনেক সময় খুতবা শুনতে শুনতে তন্দ্রা এসে যায়। সুতরাং এ সময় স্থান পরিবর্তন করে বসা উচিত। হাদীসে এসেছে,

عَنِ ابْنِ عُمَرَ  , قَالَ : قَالَ رَسُوْلَ اللهِ يَقُوْلُ : إِذَا نَعَسَ أَحَدُكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِىْ مَجْلِسِه  , فَلْيَتَحَوَّلْ مِنْ مَجْلِسِه ذٰلِكَ

আবদুল্লাহ ইবনে উমর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, জুমু‘আর দিন তোমাদের মধ্যে কারো যদি তন্দ্রা আসে, তাহলে সে যেন তার জায়গা পরিবর্তন করে নেয়। [তিরমিযী, হা/৫২৬; বায়হাকী, হা/৬১৩৯; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১৮১৯; মিশকাত, হা/১৩৯৪।]

১১. তাহিয়্যাতুল মসজিদের সালাত আদায় করা :

তাহিয়্যাতুল মসজিদ হচ্ছে মসজিদের হক। মসজিদে প্রবেশ করেই এই নামায আদায় করতে হয়। জুমু‘আর দিন মসজিদে উপস্থিত হয়ে প্রথমেই এ কাজটি সেরে নেয়া উচিত। হাদীসে এসেছে,

عَنْ سَلْمَانَ الْفَارِسِيِّ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنِ اغْتَسَلَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَتَطَهَّرَ بِمَا اسْتَطَاعَ مِنْ طُهْرٍ ثُمَّ ادَّهَنَ أَوْ مَسَّ مِنْ طِيْبٍ ثُمَّ رَاحَ فَلَمْ يُفَرِّقْ بَيْنَ اثْنَيْنِ فَصَلّٰى مَا كُتِبَ لَه ثُمَّ إِذَا خَرَجَ الْإِمَامُ أَنْصَتَ غُفِرَ لَه مَا بَيْنَه وَبَيْنَ الْجُمُعَةِ الْأُخْرٰى

সালমান ফারসী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে লোক জুমু‘আর দিন গোসল করে এবং যথাসম্ভব অধিক পরিমাণে পবিত্রতা অর্জন করে, তারপর তেল মেখে (চুল-দাড়ি পরিপাটি করে) নেয় অথবা সুগন্ধি লাগায়। এরপর (মসজিদে) চলে যায়, সেখানে দু’জনের মধ্যে ফাঁক করে তাদের মাঝখানে বসে পড়ে না এবং তার ভাগ্যে যে পরিমাণ (নফল নামায) নির্ধারিত হয়েছে সে পরিমাণ নামায পড়ে অতঃপর ইমাম যখন (খুতবার উদ্দেশ্যে নিজের ঘর হতে) বের হন তখন চুপ থাকে, তাহলে তার এ জুমু‘আ এবং পরবর্তী জুমু‘আর নামাযের মধ্যবর্তী যাবতীয় গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হয়। [সহীহ বুখারী, হা/৯১০; ইবনে মাজাহ, হা/১০৯৭; মুসনাদে আহমাদ, হা/২১৫৭৯; মিশকাত, হা/১৩৮১।]

১২. মানুষের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে না যাওয়া :

মানুষের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে যাওয়াটা হচ্ছে মুসল্লিদের কষ্টের কারণ। তাছাড়া এ কারণে খুতবা শ্রবণ করা হতে মনোযোগ নষ্ট হয়ে যায়। সুতরাং জুমু‘আর দিন মসজিদে উপস্থিত হয়ে শৃঙ্খলা বজায় রেখে কাউকে না ডিঙ্গিয়ে যেখানে জায়গা পাওয়া যায় সেখানেই বসে পড়া উত্তম। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ بُسْرٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ : جَاءَ رَجُلٌ يَتَخَطّٰى رِقَابَ النَّاسِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالنَّبِيُّ يَخْطُبُ، فَقَالَ النَّبِيُّ : اِجْلِسْ فَقَدْ اٰذَيْتَ وَاٰنَيْتَ

আবদুল্লাহ ইবনে বুসর (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ জুমু‘আর খুতবা দিচ্ছিলেন। এমন সময় এক ব্যক্তি এসে লোকদের ঘাড় ডিঙ্গিয়ে সামনে যাচ্ছিল। তখন রাসূলুল্লাহ ﷺ বললেন, তুমি বসে পড়ো। কারণ তুমি মানুষকে কষ্ট দিচ্ছ। [আবু দাউদ হা/১১২০; নাসাঈ, হা/১৩৯৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৭৭৩৩; সহীহ ইবনে খুযায়মা, হা/১৮১১।]

১৩. খুতবা চলাকালে নীরবতা পালন করা এবং মনোযোগ দিয়ে খুতবা শোনা :

খুতবা হচ্ছে জুমু‘আর দিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। সুতরাং এ সময় নীরবতা পালন করে মনোযোগ দিয়ে খুতবা শ্রবণ করা আবশ্যক। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ - - قَالَ إِذَا قُلْتَ لِصَاحِبِكَ يَوْمَ الْجُمُعَةِ أَنْصِتْ وَالْإِمَامُ يَخْطُبُ فَقَدْ لَغَوْتَ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেন, ইমাম খুতবা দেয়া অবস্থায় যদি তুমি তোমার সাথিকে বল যে, ‘তুমি চুপ থাকো’ তাহলে তুমি ভুল করলে। [সহীহ বুখারী, হা/৭৩৪; সহীহ মুসলিম, হা/৮৫১; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৬৮৬; আবু দাউদ, হা/১১১৪; ইবনে মাজাহ, হা/১১১০; বায়হাকী, হা/৫৬১৫; সুনানে দারেমী, হা/১৬০১; নাসাঈ, হা/১৪০১।]

১৪. ‘ইহতেবা’ অবস্থায় না বসা :

‘ইহতেবা’ হচ্ছে দু’হাঁটু খাড়া করে, দু’রান পেটের সাথে লাগিয়ে নিতম্বের উপরে বসা। রাসূলুল্লাহ ﷺ এ ধরনের বসা হতে নিষেধ করেছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ مُعَاذِ بْنِ أَنَسٍ الْجُهَنِيِّ قَالَ : نَهٰى رَسُوْلُ اللهِ عَنِ الْحِبْوَةِ يَوْمَ الْجُمُعَةِ وَالْإِمَامُ يَخْطُبُ

মুয়ায ইবনে আনাস আল জুহানী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ খুতবা চলাকালে ইহতেবা অবস্থায় বসতে নিষেধ করেছেন। [আবু দাউদ, হা/১১১২; বায়হাকী, হা/৫৭০৪; তিরমিযী, হা/৫১৪; মুসত্মাদরাকে হাকেম, হা/১০৬৯; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৫৬৩০; মিশকাত, হা/১৩৯৩।]

১৫. জুমু‘আর দিন বেশি বেশি দু‘আ করা :

জুমু‘আর দিনটি হচ্ছে দু‘আ কবুলের দিন। এ দিনে একটি বিশেষ সময় রয়েছে, সে সময় দু‘আ করলে আল্লাহ তা‘আলা তা কবুল করেন। ইতিপূর্বে এ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। সুতরাং জুমু‘আর দিন বেশি বেশি দু‘আ করা উচিত।

১৬. জুমু‘আর রাতে সূরা কাহফ পাঠ করা :

জুমু‘আর রাতে সূরা কাহফ পাঠ করার অনেক ফযীলত রয়েছে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِىِّ اَنَّ النَّبِىَّ قَالَ مَنْ قَرَأَ سُوْرَةَ الْكَهْفِ لَيْلَةَ الْجُمُعَةِ أَضَاءَ لَه مِنَ النُّوْرِ فِيْمَا بَيْنَه وَبَيْنَ الْبَيْتِ الْعَتِيْقِ

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, যে ব্যক্তি জুমু‘আর রাতে সূরা কাহফ পাঠ করবে আল্লাহ তা‘আলা তার এবং কাবা ঘরের মধ্যে যে পরিমাণ দূরত্ব রয়েছে তত পরিমাণ নূর দান করবেন। [মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/৩৩৯২; বায়হাকী, হা/৫৭৯২; জামেউস সগীর, হা/১১৪১৬; সহীহ তারগীব ওয়াত তারহীব, হা/৩৭৬; মিশকাত, হা/২১৭৫।]

১৭. জুমু‘আর দিন বেশি বেশি রাসূলুল্লাহ ﷺ এর প্রতি দরূদ পাঠ করা :

রাসূলুল্লাহ ﷺ এর উপর দরূদ পাঠ করা এমনিতেই একটি বড় ধরনের সওয়াবের কাজ। তারপরও রাসূলুল্লাহ ﷺ নিজের পক্ষ থেকে জুমু‘আর দিন তাঁর উপর দরূদ পাঠ করার ব্যাপারে তাকিদ দিয়েছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَوْسِ بْنِ أَوْسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - - إِنَّ مِنْ أَفْضَلِ أَيَّامِكُمْ يَوْمَ الْجُمُعَةِ فِيْهِ خُلِقَ اٰدَمُ وَفِيْهِ قُبِضَ وَفِيْهِ النَّفْخَةُ وَفِيْهِ الصَّعْقَةُ فَأَكْثِرُوْا عَلَىَّ مِنَ الصَّلَاةِ فِيْهِ فَإِنَّ صَلَاتَكُمْ مَعْرُوْضَةٌ عَلَىَّ . قَالَ قَالُوْا يَا رَسُوْلَ اللهِ وَكَيْفَ تُعْرَضُ صَلَاتُنَا عَلَيْكَ وَقَدْ أَرِمْتَ يَقُوْلُوْنَ بَلِيْتَ . فَقَالَ : إِنَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ حَرَّمَ عَلَى الْاَرْضِ أَجْسَادَ الْاَنْبِيَاءِ

আওস ইবনে আওস (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, তোমাদের দিনগুলোর মধ্যে জুমু‘আর দিনটি হচ্ছে শ্রেষ্ঠতম। এ দিনে আদম (আঃ)-কে সৃষ্টি করা হয়েছে এবং এ দিনেই তার মৃত্যু হয়েছে। আর এ দিনেই শিঙ্গায় ফুৎকার দেয়া হবে, এ দিনেই বিকট আওয়াজ হবে। কাজেই তোমরা ঐ দিন আমার উপর বেশি বেশি দরূদ পাঠ করো। কারণ আমার নিকট তোমাদের দরূদগুলো উপস্থাপন করা হয়। বর্ণনাকারী বলেন, সাহাবীরা বলল, হে আল্লাহর রাসূল! আপনার নিকট আমাদের দরূদ কীভাবে উপস্থাপন করা হবে, আপনিতো তখন মাটির সাথে মিশে যাবেন? জবাবে তিনি বললেন, আল্লাহ নবীদের শরীরকে জমিনের জন্য হারাম করে দিয়েছেন অর্থাৎ মাটি কখনো নবীদের শরীর খেতে পারবে না। [আবু দাউদ, হা/১০৪৯, ১৫৩৩; নাসাঈ, হা/১৩৭৪; ইবনে মাজাহ, হা/১০৮৫; মুসনাদে আহমাদ, হা/১৬২০৭; জামেউস সগীর, হা/৩৯৭৫; সিলসিলা সহীহাহ, হা/১৫২৭; মিশকাত, হা/১৩৬১।]

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন