hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

আলোচিত রাত-দিন

লেখকঃ শাইখ আবদুর রহমান বিন মুবারক আলী

২৮
আশুরার নামে প্রচলিত শিরক ও বিদআতসমূহ
১. হুসাইন (রাঃ) এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোযা রাখা :

বর্তমান বিশ্বের শিয়া সমাজসহ অনেকেই আশুরার দিনে হুসাইন (রাঃ) এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে রোযা রেখে থাকে। এমনকি বিষয়টি বিভিন্ন মিডিয়াতে ব্যাপকভাবে প্রচারও করা হয়ে থাকে। পরিস্থিতি এমন হয়েছে- অধিকাংশ মানুষের মনে এ ধারণা বদ্ধমূল হয়ে গেছে যে, আশুরার রোযা হুসাইন (রাঃ) এর মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষেই রাখা হয়। কিন্তু যারা আশুরার দিন এ উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে রোযা রাখবে, তারা পাপী হবে।

২. তাজিয়া বা শোক মিছিল করা :

প্রতি বছর মুহাররম মাস আসার সাথে সাথেই শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা হুসাইন (রাঃ) এর শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে তাজিয়া তথা শোক মিছিল বের করে। অতঃপর তারা ১০ই মুহাররম রাতে বিশেষ কিছু অনৈতিক ও বিবেকবর্জিত কার্যাবলি সম্পাদনের মাধ্যমে এর সমাপ্তি ঘোষণা করে।

অথচ ইসলামে কোন দিবসকে কেন্দ্র করে শোক মিছিল বের করা তো দূরের কথা বরং নির্দিষ্ট কয়েকটি দিন ব্যতীত শোক পালন করারই কোন বিধান নেই। হাদীসে এসেছে,

عَنْ زَيْنَبَ بِنْتِ أَبِيْ سَلَمَةَ قَالَتْ لَمَّا جَآءَ نَعْيُ أَبِيْ سُفْيَانَ مِنَ الشَّامِ دَعَتْ أُمُّ حَبِيْبَةَ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا بِصُفْرَةٍ فِي الْيَوْمِ الثَّالِثِ فَمَسَحَتْ عَارِضَيْهَا وَذِرَاعَيْهَا وَقَالَتْ إِنِّيْ كُنْتُ عَنْ هٰذَا لَغَنِيَّةً لَوْلَاۤ أَنِّيْ سَمِعْتُ النَّبِيَّ يَقُوْلُ لَا يَحِلُّ لِامْرَأَةٍ تُؤْمِنُ بِاللهِ وَالْيَوْمِ الْاٰخِرِ أَنْ تُحِدَّ عَلٰى مَيِّتٍ فَوْقَ ثَلَاثٍ إِلَّا عَلٰى زَوْجٍ فَإِنَّهَا تُحِدُّ عَلَيْهِ أَرْبَعَةَ أَشْهُرٍ وَّعَشْرًا

যায়নাব বিনতে আবু সালামা (রাঃ) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, শাম (সিরিয়া) হতে আবু সুফিয়ানের মৃত্যুর খবর পৌঁছলে [আবু সুফিয়ানের কন্যা তথা নবী ﷺ-এর স্ত্রী] উম্মে হাবীবা (রাঃ) তৃতীয় দিনে কিছু সুগন্ধি চেয়ে নিলেন। অতঃপর তা নিজের দুই পাঁজর ও দুই বাহুতে মেখে বললেন, আমার এতটুকুও করার প্রয়োজন ছিল না, যদি না আমি নবী ﷺ-কে বলতে শুনতাম, যে মহিলা আল্লাহ তা‘আলা ও কিয়ামতের ওপর বিশ্বাস রাখে তার উপর স্বামী ব্যতীত অন্য কোন মৃতের জন্য তিন দিনের বেশি শোক প্রকাশ করা বৈধ নয়। তবে সে স্বামীর জন্য চার মাস দশ দিন শোক পালন করবে। [সহীহ বুখারী, হা/১২৮০; সহীহ মুসলিম, হা/৩৭৯৮; আবু দাউদ, হা/২৩০১; তিরমিযী, হা/১১৯৫।]

সুতরাং যারা এ ধরনের শোক মিছিল করে থাকে এবং এটাকে তাদের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে মনে করে, নিঃসন্দেহে তারা বিদআতের গুনাহে পতিত হবে।

৩. মাতম করা, নিজেদের শরীরে আঘাত করা এবং চিৎকার করা :

শিয়া সম্প্রদায়ের লোকেরা মুহাররম মাস আসলেই হুসাইন (রাঃ) এর শাহাদাতবরণ উপলক্ষে শোক পালন করার পাশাপাশি মাতমও করে থাকে। এ সময় তারা বুক চাপড়ায়, বুকের কাপড় ছিঁড়ে ফেলে, নিজেদের শরীরে ছুরি দ্বারা আঘাত করে, পিঠে চাবুক মারে, হায় হোসেন! হায় হোসেন!! বলে চিৎকার করে থাকে, রক্তের নামে লাল রং ছিটানোসহ আরো অনেক ধরনের কর্মকান্ড করে থাকে। অথচ ইসলামে এসব কার্যক্রম বৈধ হওয়া তো দূরের কথা কোন ধরনের মাতম করারই অনুমোদন নেই। বরং এ ধরনের কর্মকে ইসলামে কুফরী কাজ হিসেবে সাব্যস্ত করা হয়েছে। হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ - - اِثْنَتَانِ فِى النَّاسِ هُمَا بِهِمْ كُفْرٌ اَلطَّعْنُ فِى النَّسَبِ وَالنِّيَاحَةُ عَلَى الْمَيِّتِ

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, মানুষের মধ্যে দুটি কাজ এমন রয়েছে, যা কুফরী। (১) বংশের খোঁটা দেয়া এবং (২) মৃতের জন্য বিলাপ করা। [সহীহ মুসলিম, হা/৬৭; মুস্তাখরাজে আবু আওয়ানা, হা/৫১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১০৪৩৪।]

অপর হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ مَالِكِ الْأَشْعَرِىِّ حَدَّثَه أَنَّ النَّبِىَّ - - قَالَ أَرْبَعٌ فِىْ أُمَّتِىْ مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ لَا يَتْرُكُوْنَهُنَّ الْفَخْرُ فِى الْأَحْسَابِ وَالطَّعْنُ فِى الْأَنْسَابِ وَالْاِسْتِسْقَاءُ بِالنُّجُوْمِ وَالنِّيَاحَةُ وَقَالَ النَّائِحَةُ إِذَا لَمْ تَتُبْ قَبْلَ مَوْتِهَا تُقَامُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَعَلَيْهَا سِرْبَالٌ مِنْ قَطِرَانٍ وَدِرْعٌ مِنْ جَرَبٍ

আবু মালেক আশআরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। নবী ﷺ বলেন, আমার উম্মতের মাঝে চারটি কাজ হলো জাহেলিয়াতের প্রথা, যা তারা ত্যাগ করবে না। সেগুলো হলো- (১) বংশ নিয়ে গর্ব করা, (২) বংশের খোঁটা দেয়া, (৩) নক্ষত্রের মাধ্যমে বৃষ্টির আশা করা এবং (৪) (মৃতের জন্য) বিলাপ করা। তিনি আরো বলেন, আর বিলাপকারী মহিলা যদি মৃত্যুর পূর্বে তওবা না করে, তাহলে কিয়ামতের দিন তাকে গলিত (উত্তপ্ত) তামার পায়জামা (সেলোয়ার) ও চুলকানিদার (অথবা দোযখের আগুনের তৈরি) কামীস পরা অবস্থায় পুনরুত্থিত করা হবে। [সহীহ মুসলিম, হা/৯৩৪; মুসনাদে আহমাদ, হা/২২৯০৩; বায়হাকী, হা/৬৯০২; মিশকাত, হা/১৭২৭।]

৪. যারা গাল ও বুক চাপড়ায় তারা নবী ﷺ এর উম্মত নয় :

জাহেলী যুগের নারীদের অন্যতম বৈশিষ্ট্য ছিল, তারা শোক প্রকাশকরণার্থে নিজেদের গাল আঁচড়াত, বুক চাপড়াত, চুল ছিঁড়ত এবং এ ধরনের আরো অনেক অদ্ভুত ধরনের আচরণ করত। যার কারণে রাসূলুল্লাহ ﷺ উম্মতকে এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকতে কঠোরভাবে নির্দেশ করে গেছেন এবং যারা এতে লিপ্ত হবে তাদের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ ঘোষণা করেছেন। হাদীসে এসেছে,

عَنْ عَبْدِ اللهِ عَنْ النَّبِيِّ قَالَ لَيْسَ مِنَّا مَنْ ضَرَبَ الْخُدُوْدَ وَشَقَّ الْجُيُوْبَ وَدَعَا بِدَعْوَى الْجَاهِلِيَّةِ

আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি নবী ﷺ হতে বর্ণনা করে বলেন, ঐ ব্যক্তি আমাদের দলভুক্ত নয়, যে ব্যক্তি গাল চাপড়ায়, বুকের কাপড় ফেড়ে ফেলে এবং জাহেলী যুগের মতো ডাক ছেড়ে বিলাপ করে। [সহীহ বুখারী, হা/১২৯৭-৯৮, ৩৫১৯; সহীহ মুসলিম, হা/১০৩; মুসনাদে আহমাদ, হা/৩৬৫৮; মুসনাদে আবু ই‘আলা, হা/৫২৫২; নাসাঈ, হা/১৮৫৯; বায়হাকী, হা/৭৩৬৬; মিশকাত, হা/১৭২৫।]

অপর হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِىْ بُرْدَةَ بْنِ أَبِيْ مُوْسٰى قَالَ وَجِعَ أَبُوْ مُوْسٰى وَجَعًا فَغُشِيَ عَلَيْهِ وَرَأْسُه فِيْ حِجْرِ امْرَأَةٍ مِّنْ أَهْلِه فَصَاحَتِ امْرَأَة ٌ مِّنْ أَهْلِه فَلَمْ يَسْتَطِعْ أَنْ يَرُدَّ عَلَيْهَا شَيْأً فَلَمَّا أَفَاقَ قَالَ أَنَا بَرِيْءٌ مِمَّنْ بَرِئَ مِنْهُ رَسُوْلُ اللهِ إِنَّ رَسُوْلَ اللهِ بَرِئَ مِنْ الصَّالِقَةِ وَالْحَالِقَةِ وَالشَّاقَّةِ

আবু বুরদা ইবনে আবু মূসা (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা আবু মূসা (রাঃ) অসুখের যন্ত্রণায় দুর্বল হয়ে গেলেন। সে সময় তার কোন এক স্ত্রীর কোলে তার মাথা রাখা ছিল। সে তখন সুর ধরে চিৎকার করে কান্না শুরু করে দিল। সে অবস্থায় আবু মূসা (রাঃ) তাকে বাধা দিতে সক্ষম ছিলেন না। কিন্তু যখন তিনি পূর্ণ জ্ঞান ফিরে পেলেন তখন তিনি বললেন, ঐ ব্যক্তির সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই, যার হতে রাসূলুল্লাহ ﷺ সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ ঐ মহিলা হতে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন, যে উচ্চৈঃস্বরে বিলাপ করে, মাথার কেশ মুন্ডন করে এবং নিজের পরিহিত কাপড় ছিঁড়ে ফেলে। [সহীহ বুখারী, হা/১২৯৬; সহীহ মুসলিম, হা/১০৪; বায়হাকী, হা/৭৩৭০।]

অতএব হুসাইন (রাঃ) হোক অথবা অন্য যেকোন বড় মর্যাদাবান ব্যক্তিই হোক, কারো মৃত্যুকে উপলক্ষ করে বিলাপ করা বৈধ নয়। যারা এসব কাজ করবে তারা কবীরা গুনাহকারী হিসেবে বিবেচিত হবে।

৫. হুসাইন (রাঃ) এর রূপক কবর তৈরি করা :

আশুরার দিবসকে কেন্দ্র করে শিয়ারা হুসাইন (রাঃ) এর রূপক কবর তৈরি করে থাকে। তারপর তারা এ কবরকে উপলক্ষ করে নানা ধরনের শিরকী ও বিদআতী কর্মকান্ড সম্পাদন করে থাকে।

অথচ ইসলামে এ ধরনের রূপক কবর তৈরি করা তো দূরের কথা কোন বাসত্মব কবরের উপর স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করাও নিষেধ। হাদীসে এসেছে,

عَنْ جَابِرٍ قَالَ نَهٰى رَسُوْلُ اللهِ - - أَنْ يُجَصَّصَ الْقَبْرُ وَأَنْ يُقْعَدَ عَلَيْهِ وَأَنْ يُبْنٰى عَلَيْهِ

জাবের (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাদেরকে কবর পাকা করতে, এর উপর বসতে এবং এর উপর সৌধ নির্মাণ করতে নিষেধ করেছেন। [সহীহ মুসলিম, হা/৯৭০; মিশকাত, হা/১৬৭০।]

অপর হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِى الْهَيَّاجِ الْأَسَدِىِّ قَالَ قَالَ لِىْ عَلِىُّ بْنُ أَبِىْ طَالِبٍ أَلَّا أَبْعَثُكَ عَلٰى مَا بَعَثَنِىْ عَلَيْهِ رَسُوْلُ اللهِ - - أَنْ لَّا تَدَعَ تِمْثَالًا إِلَّا طَمَسْتَه وَلَا قَبْرًا مُّشْرِفًا إِلَّا سَوَّيْتَه

আবুল হাইয়াজ আল-আসাদী (রহ.) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, আলী ইবনে আবু তালিব (রাঃ) আমাকে বলেছেন যে, আমি কি তোমাকে ঐ কাজের জন্য প্রেরণ করব না, যে কাজের জন্য রাসূলুল্লাহ ﷺ আমাকে প্রেরণ করেছিলেন? আর তা ছিল ছবি ও মূর্তিকে ধ্বংস করে দেয়া এবং এ সবের কোন কিছু অবশিষ্ট না রাখা; আর সমস্ত উঁচু কবরকে মাটির সাথে সমান করে দেয়া। [সহীহ মুসলিম, হা/৯৬৯; মুস্তাদরাকে হাকেম, হা/১৩৬৬; মুসনাদে আহমাদ, হা/৭৪১; মিশকাত, হা/১৬৯৬।]

এমনকি কোন কবরের মধ্যে শিখা অনির্বাণ বা শিখা চিরন্তণ ইত্যাদির মাধ্যমে শ্রদ্ধাঞ্জলী নিবেদন করাও নিষেধ। কেননা এ ধরনের কর্মকান্ড ইয়াহুদি-খ্রিস্টানদের সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত। আর হাদীসে তাদের অনুসরণ করতে নিষেধ করা হয়েছে,

عَنْ عَمْرِو بْنِ شُعَيْبٍ عَنْ أَبِيْهِ عَنْ جَدِّه أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ لَيْسَ مِنَّا مَنْ تَشَبَّهَ بِغَيْرِنَا لَا تَشَبَّهُوْا بِالْيَهُوْدِ وَلَا بِالنَّصَارٰي

আমর ইবনে শু‘আইব (রহ.) তার পিতা হতে, তিনি তার দাদা হতে বর্ণনা করেন। রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন, যে ব্যক্তি আমাদের ছাড়া অন্য কারো সাদৃশ্যতা গ্রহণ করল সে আমাদের দলভুক্ত নয়। আর তোমরা ইয়াহুদি ও নাসারাদের সাদৃশ্যতা গ্রহণ করো না। [তিরমিযী, হা/২৬৯৫; আল-জামে, হা/৫৪৩৪; মিশকাত, হা/৪৬৭৯; ইমাম তিরমিযী হাদীসটিকে যঈফ বলেছেন, তবে শাইখ আলবানী হাদীসটিকে হাসান মর্যাদায় উন্নীত করেছেন।]

তাছাড়া এ ধরনের রূপক কবর তৈরি করা এবং তা যিয়ারত করাটা মূর্তি পূজার সাথে অধিক সাদৃশ্য রাখে।

৬. রূপক কবরে হুসাইন (রাঃ) এর রূহ হাযীর হয় বলে ধারণা করা :

শিয়াদের মধ্যে একটি দল ধারণা করে থাকে যে, হুসাইন (রাঃ) এর উদ্দেশ্যে এ ধরনের মাতম করতে করতে এক সময় হুসাইন (রাঃ) এর রূহ হাযীর হয়। তখন তারা এসব শিরকী কর্মকান্ড আরো বৃদ্ধি করে দেয়।

অথচ হুসাইন (রাঃ) তো দূরের কথা স্বয়ং রাসূলুল্লাহ ﷺ এর ক্ষেত্রেও এরূপ বিশ্বাস স্থাপন করাটা শিরকের অন্তর্ভুক্ত। এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানার জন্য পড়ুন আমাদের বই ‘‘মুহাম্মাদ ﷺ সম্পর্কে ভুল ধারণা’’।

৭. হুসাইন (রাঃ) এর রূপক কবরকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করা :

আশুরাকে কেন্দ্র করে শিয়াদের আরো একটি মারাত্মক শিরক হচ্ছে উক্ত কবরকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করা। অথচ একমাত্র কাবাঘর ছাড়া বিশ্বের অন্য কিছুকে কেন্দ্র করে তাওয়াফ করা বৈধ নয়। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿وَلْيَطَّوَّفُوْا بِالْبَيْتِ الْعَتِيْقِ﴾

আর তারা যেন সংরক্ষিত গৃহে তাওয়াফ করে। (সূরা হজ্জ- ২৯)

৮. হুসাইন (রাঃ) এর রূপক কবরকে সিজদা করা :

আশুরাকে কেন্দ্র করে শিয়া সম্প্রদায়ের বড় একটি শিরক হচ্ছে উক্ত রূপক কবরকে সিজদা করা। তারা এসব কবরের কাছে গিয়ে সিজদা করে এবং হুসাইন (রাঃ) এর অসিলায় আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে থাকে। আবার অনেকে আল্লাহকে বাদ দিয়ে কেবল হুসাইন (রাঃ) এর কাছে প্রার্থনা করে থাকে।

অথচ এসব কর্মকান্ড হচ্ছে শিরক। সমস্ত নবী-রাসূল সারা জীবন এ ধরনের শিরকের বিরুদ্ধেই লড়াই করে গেছেন। যারা এসব করবে তারা ইসলাম থেকে বের হয়ে যাবে। তাদের সকল ভালো আমল বাতিল হয়ে যাবে এবং পরকালে তাদেরকে চিরস্থায়ী জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

﴿اِنَّهٗ مَنْ يُّشْرِكْ بِاللهِ فَقَدْ حَرَّمَ اللهُ عَلَيْهِ الْجَنَّةَ وَمَاْوَاهُ النَّارُؕ وَمَا لِلظَّالِمِيْنَ مِنْ اَنْصَارٍ﴾

যে আল্লাহর সাথে শরীক করে আল্লাহ অবশ্যই তার জন্য জান্নাত হারাম করে দেবেন। (ফলে) তার আবাস হবে জাহান্নাম। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। (সূরা মায়েদা– ৭২)

৯. বিশেষ কেক ও পাউরুটি তৈরি করা :

আশুরাকে কেন্দ্র করে শিয়ারা বিশেষ ধরনের কেক, পাউরুটিসহ নানা ধরনের খাবার তৈরি করে থাকে এবং এসব খাবার তৈরি করাকে তারা খুবই বরকতময় মনে করে থাকে। অথচ কুরআন ও হাদীসে এ ধরনের কোন ইঙ্গিতও নেই। সুতরাং এসব কাজকে বরকতময় মনে করে পালন করাটা স্পষ্ট বিদআত।

১০. হুসাইন (রাঃ) এর নামে পুকুরে মোরগ ছেড়ে দেয়া :

আশুরাকে কেন্দ্র করে শিয়ারা হুসাইন (রাঃ) এর নামে পুকুরে মোরগ ছেড়ে দেয়। তারপর যুবক-যুবতীরা পুকুরে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঐ মোরগ ধরার জন্য প্রতিযোগিতা করে। আর তারা এ মোরগকে বরকতময় মোরগ মনে করে। অথচ এ ধরনের কোন কর্মকান্ড ইসলামে বৈধ নয়।

১১. বিশিষ্ট সাহাবীদেরকে গালি দেয়া :

শিয়ারা মূলত নিজেদেরকে আলী (রাঃ) এর অনুসারী হিসেবে দাবি করে থাকে। আর তাকে কেন্দ্র করে তারা অনেক বড় বড় সাহাবীকেও গালি দিয়ে থাকে। যেমন- আবু বকর, উমর, উসমান, মু‘আবিয়া, মুগীরা ইবনে শু‘বা (রাঃ) প্রমুখ সাহাবীবৃন্দ।

অথচ সাহাবীগণ হলেন উম্মতের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ মানুষ। তারা রাসূলুল্লাহ ﷺ-কে নিজেদের জীবনের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন এবং রাসূলুল্লাহ ﷺ-ও তাদেরকে ভালোবাসতেন। তারা দ্বীন প্রতিষ্ঠার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে গেছেন। অথচ সাহাবীদেরকে গালি দেয়া নিষেধ। এ মর্মে হাদীসে এসেছে,

عَنْ أَبِيْ سَعِيْدٍ الْخُدْرِيِّ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ لَا تَسُبُّوْا أَصْحَابِيْ فَلَوْ أَنَّ أَحَدَكُمْ أَنْفَقَ مِثْلَ أُحُدٍ ذَهَبًا مَا بَلَغَ مُدَّ أَحَدِهِمْ وَلَا نَصِيْفَه

আবু সাঈদ খুদরী (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নবী ﷺ বলেছেন, তোমরা আমার সাহাবীদেরকে গালি দিয়ো না। তোমাদের কেউ যদি উহুদ পাহাড় পরিমাণ স্বর্ণও আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, তবুও তাদের এক মুদ বা অর্ধ মুদ পরিমাণ ব্যয়ের সমান সওয়াব পর্যন্ত পৌঁছতে পারবে না। [সহীহ বুখারী, হা/৩৬৭৩; সহীহ মুসলিম, হা/৬৬৫১; মুসনাদে আহমাদ, হা/১১৫১৬; আবু দাউদ, হা/৪৬৬০; তিরমিযী, হা/৩৮৬১; মিশকাত, হা/৫৯৯৮।]

১২. আয়েশা (রাঃ) এর নামে বকরীকে আঘাত করা :

শিয়ারা মনে করে যে, আয়েশা (রাঃ) এর পরামর্শক্রমেই আবু বকর (রাঃ) রাসূলুল্লাহ ﷺ এর অসুস্থতার সময় জামা‘আতে ইমামতি করেছিলেন এবং পরে খলীফা নির্বাচিত হয়েছিলেন। ফলে আলী (রাঃ) খলীফা হতে পারেননি (নাউযুবিল্লাহ)। আর এ কারণেই শিয়ারা আয়েশা (রাঃ) এর প্রতি বিরাট আক্রোশ পোষণ করে থাকে। ফলে আশুরার দিন তারা আয়েশা (রাঃ) এর নামে একটি বকরী নির্বাচন করে। তারপর তারা সেটিকে বেত্রাঘাত করে এবং অস্ত্রাঘাতে রক্তাক্ত করে বদলা নেয় ও উল্লাসে ফেটে পড়ে।

অথচ আয়েশা (রাঃ) ছিলেন রাসূলুল্লাহ ﷺ এর সবচেয়ে প্রিয়তম স্ত্রী এবং স্বয়ং আল্লাহ তা‘আলা কর্তৃক পবিত্র ঘোষিত একমাত্র নারী। আর সবচেয়ে বেশি হাদীস বর্ণনাকারী সাহাবীদের মধ্যে তিনি ছিলেন দ্বিতীয়। এ ধরনের উচ্চ মর্যাদাপূর্ণ নারীর বিরুদ্ধে আক্রোশ পোষণ করা এবং তাকে গালিগালাজ করাটা স্পষ্ট ভ্রান্তি ছাড়া আর কিছুই নয়।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন