মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
কুকুর বিড়াল দেখলে তাড়া করে, বিড়াল ইঁদুর দেখলে তাড়া করে আর সাপ ব্যাঙ দেখলেই তাড়া করে কেননা, একটি অপরটির খাদ্যবস্তু। প্রয়োজনের পরিপেক্ষিতেই একটির আরেকটির ওপর ইদৃশ আক্রমণ। কিন্তু দুঃখ বা আশ্চর্যবোধ তখনই যখন দেখা যায় মানুষ মানুষকে আক্রমণ করার জন্য অস্ত্র শাণ দিতে দ্বিধাবোধ করে না। আমাদের মতে প্রধানত দোষী সংখ্যাগুরু সম্প্রদায় বা শাসক সম্প্রদায়। কেননা, লঘু সম্প্রদায়ের লোকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ সম্প্রদায়ের লোকদের সাথে দাঙ্গা বাধাতে চায় না, তাতে মারার পরিবর্তে মরতেই হয়। পাকিস্তানে যদি উর্দু ও বাংলা ভাষী লোকদের ভেতর দাঙ্গা হয় তবে দোষ অবশ্যই উর্দুওয়ালাদের দেওয়া যায়। কারণ তারা সংখ্যাগুরু এবং শাসক দলের ভূমিকায় আছে। ঠিক তেমনি আরবে যদি ইহুদীদের সঙ্গে সাম্প্রদায়িক কলহ হয় দোষ হবে আরবের মুলমানদের। আবার ইসরাঈলে যদি মুসলমানদের সাথে লড়াই হয় ইহুদীর মুখ্যত দোষ হবে ইসরাঈলের। ঐ রকম বাংলাদেশে যদি হিন্দু মুসলমানে দাঙ্গা হয় তাহলে প্রধানত দোষ মুসলমানদের বলা চলে কারণ তারা সংখ্যা বা শক্তিতে অপেক্ষাকৃতভাবে বেশি। তদ্রুপ ভারতে যদি হিন্দু মুসলমানদের দাঙ্গা হয় মূলত বা মুখ্যত দোষ আসবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর স্বাভাবিকভাবেই, তার কারণও ঐ একই।
ভারতে কতবার যে হিন্দু-মুসলমানদের রক্তক্ষয়ী দাঙ্গা হয়েছে, কতবার যে হিন্দু-মুসলমানদের তাজা রক্তে ভারতের বুক রক্তাক্ত হয়েছে, কত মা সন্তান হারা হয়ে চোখের জলে পৃথিবী ঝাপসা দেখেছে, কত স্ত্রী স্বামী হারা, কত শিশু পিতামাতা হারা হয়ে অসহায় এতিম হয়েছে সে ইতিহাস পরে আসছে।
সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার ইন্ধনে ভারতের হিন্দু-মুসলমানদের যে অশোভনীয় আচরণ তা সত্যিই বিস্ময়কর। বুকের তাজা রক্ত ঢেলে শোষক সম্প্রদায়ের কাছ থেকে স্বাধীনতালব্ধ ভারতেও যে হিন্দু-মুসলমান প্রভৃতি জাতির মধ্যে লড়াই ঝগড়া হবে একথা ভাবা যায় না; কিন্তু তবুও তা সত্য, ইতিহাস তার সাক্ষী। সাম্প্রতিকতার পশ্চাতে যা কিছু কারণ থাকে তার মধ্যে পরস্পর বিদ্বেষসুলভ মনোভাবই বোধ হয় অন্যতম প্রধান। আমাদের ভারতের হিন্দু- মুসলমানদের মধ্যে এই ব্যাধি অত্যন্ত ব্যাপক ছিল বা আজও আছে। ফলে আজও আশঙ্কা হয় আবার হয়ত কখন ভারতের হিন্দু-মুসলমান অবতীর্ণ হবে এই নিষ্ঠুর পৈশাচিক ভূমিকায়।
আমাদের দেশে মুসলিম হিন্দুকে, হিন্দু মুসলিমকে যথাক্রমে ‘কাফের’ ও ‘যবন’ বলেন। ‘কাফের’ আরবী শব্দ, অর্থ হচ্ছে অবিশ্বাসী। যে বা যারা ইসলাম ধর্মের অনুগামী, অনুসারী অথবা বিশ্বাসী নয় তাদের কাফের বলা হয়। যথা খ্রিস্টান, হিন্দু, ইহুদী, জৈন প্রভৃতি প্রত্যেক ভিন্ন ধর্মাবলম্বী। কিন্তু অনেক মুসলমনের ধারণা কাফের মানেই হিন্দু। আবার অনেক হিন্দুরও ধারণা কাফের মানে হিন্দু অথবা গালিবাচক ঘৃণ্য কোন চক্রান্তপূর্ণ শব্দ। আসল কথা হচ্ছে এই, যদি কোন মুসলমান এমনকি ডিগ্রিধারী কোন মাওলানাও বলেন, “আমি কুরআনের সব বাক্য স্বীকার করি, শুধু একটি বাক্য মিথ্যা মনে করি তবে ইসলামের আইনে ডিগ্রিধারী ঐ মাওলানা সাহেবকেও ঐ আখ্যায় অতি সহজে আখ্যায়িত করা হয়। এমনকি কুরআনের কোন বাণীকে সন্দেহযুক্ত মনে করলেও তারও ঐ একই অবস্থা। অনৈসলামিক কোন নীতিকে কাজে পরিণত না করলে পাপী বা অপরাধী হয়। কিন্তু অস্বীকার করলে তাকে কাফের বা অবিশ্বাসী বলে চিহ্নিত করতে হবে তাতে অবাক বা আশ্চর্য হবার কিছু নেই।
অপরদিকে হিন্দু ভাইয়েরা মুসলমানদের বলেন, ‘যবন’। ‘যবন’ শব্দের অর্থ গ্রীক জাতি। অনেকের মতে, ভারতের মুলমান আগমনের পূর্বেও ‘যবন’ কথা প্রচলিত ছিল। কিন্তু ভাগ্যের কি ফের, এখন যবন মুসলমানদের বোঝায়। ভাষা শিখতে হলে অভিধানের আবশ্যকতা অবশ্যই আছে। কিন্তু আমাদের দেশের পণ্ডিতদের কল্যাণে অভিধানে ‘যবন’ শব্দের অর্থ যা পাওয়া যায়, অনেকের বিচারে তাও বিষাক্ত এবং দুর্গন্ধময় দেশের ভবিষ্যৎ গঠনের বাধাস্বরূপ। ‘নতুন বাঙালা অভিধানে’- আছে যবন' মানে “অহিন্দু জাতি বিশেষ; ম্লেচ্ছজাতি! বিধর্মী, অসদাচিরী, গ্রীস, আফগানিস্তান আরব পারস্য প্রভৃতি দেশের অধিবাসী।” তারপর ‘কথিত আছে’ বলে যে তথ্যটি ঢুকানো হয়েছে তা যেমন সারকুডের আবর্জনা ছাত্রছাত্রীদের পরিচ্ছন্ন হৃদয়ে বুলিয়ে দেওয়া হয়েছে মাত্র। যেমন- বশিষ্ঠের আশ্রমদ্রোহী বিশ্বামিত্রের সমস্ত সৈন্য পরাভূত করিবার নিমিত্ত তাহার কামধেনু শবলার যোনিদ্বার হইতে ঐ জাতি উৎপন্ন হয়। তাতেও আশা মেটেনি লেখক তখন ধর্মের বুলি শুনিয়েছন। “বিষ্ণু পুরাণে যবন জাতির অন্যবিধ উক্তি আছে–
সগর রাজা কতগুলো লোককে শুরু অপরাধের জন্য মস্তক মুণ্ডন করাইয়া ভারতবর্ষ হইতে দূরীকৃত করিয়া দেন; তাহারাই পরে যবন নামপ্রাপ্ত হইয়াছে।” কিন্তু উহলসন সাহেবের মতে, ব্যাকট্রিয়া হইতে আয়োনা বা গ্রীস পর্যন্ত সমগ্র গ্রীক উপনিবেশে অধিবাসী গ্রীকদিগকে হিন্দুরা যবন বলিতেন এবং Jonia শব্দটি হইতে যবন শব্দের উৎপত্তি হইয়াছে।”
অভিধানে তার পরের শব্দটি আছে ‘যবনারি’। মানে- শ্রীকৃষ্ণ। যবন + অরি। অরি মানে শত্রু; অতএব কৃষ্ণও মুসলমানদের শত্রু। সুতরাং হিন্দু জাতিকে মুসলমানদের শত্রু না সাজালে কৃষ্ণ ভক্ত হওয়া যায় কী করে।
দেশকে বাঁচাতে হলে কলম আর কালিকে সংযতভাবে খরচ করতেই হবে, নইলে এক কলম কালি যা ক্ষতি করবে একটা পারমাণবিক বোমা ক্ষতি করবে তার চেয়ে অনেক কম।
আমাদের স্বদেশের লেখক ও কবিগণ এই অমৃতপ্রায় ‘যবন' শব্দটিকে কেমনভাবে ব্যবহার করেছেন তার কিছুটা নমুনা কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডক্টর সুকুমার সেনের লেখা হতে প্রমাণস্বরূপ তুলে দেওয়া হচ্ছেঃ
“ব্রাহ্মণের জাতি ধ্বংস হেতু নিরঞ্জন।
সাম্বাইল জাজপুর হইয়া যবন।" ইত্যাদি।
ভারতের বৈষ্ণব ধর্মের প্রবর্তক নদীয়ার শ্রী শ্রী চৈতন্য দেব ধর্মগুরু পণ্ডিত সভাসদ মুসলমান জাতিকে যবন বলতে ভোলেননি।
“শ্রীবাসে বস্ত্র সিয়ে দরজী যবন,
প্রভু তারে নিজ রূপ করাইল দরশন।”
সাম্যের স্বয়ং মূর্তি শ্রী চৈতন্য দেব নিজেও মুক্ত মনের পরিচয় দিতে পারেননি। তিনি তার মুসলমান ভক্তের নাম দিয়েছিলেন ‘যবন হরিদাস’।
‘প্রাচীন বঙ্গ সাহিত্যে’ লেখা আছে–
“যবন হইয়া করে হিন্দুর আচার,
ভালমত তারে আনি করহ বিচার।” ইত্যাদি।
এ ঘড়াও আরও অনেক দৃষ্টান্ত এ ধরনের সাম্প্রদায়িক মনোভাবাপন্ন উক্তির এমাণ করে। ‘মধ্য যুগের বাঙালা ও বাঙ্গলি’ পুস্তকে লিখিত আছে–
আলিবর্দী খায়ের আক্রমণের নিন্দা করে কবি ভরতচন্দ্র লিখেছেন–
“পলাইয়া কোঠে গিয়া নবাব রহিল।
কি কহিব বাংলার কি দশা হইল।
লুঠিয়া ভূবনেশ্বর যবন পাতকী।
সেই পাবে তিন সূবা হইল নারকী৷”
মহাভারতে আছে- “হিন্দুরাজ যযাতি একবার গোমেধ যজ্ঞ করেছিলেন। তাঁর অসংযমী পুত্র লোভ বশত এক টুকরো গোমাংস খেয়ে ফেলে। তখন থেকেই পিতার অভিশাপ ক্রমে এই আগের ভ্রষ্ট পুত্র হতেই গো-খাদক ম্লেচ্ছ বংশ আরম্ভ হয়। সাধারণের ধারণা ঐ গো-খাদক মুসলমানরাই ঐ ম্লেচ্ছ বংশীয় যবন।”
কিন্তু আসল কথা তা নয়। মুসলমান জাতি বিশ্বাস করে তাদের আদি পিতা ও ধর্ম প্রবর্তক হচ্ছেন হযরত আদম (আ.)। তাই আদম সন্তান আদমী বলে গণ্য হয়। হযরত মোহাম্মদ (সা.) ইসলাম ধর্মের প্রথম প্রবর্তক নন বরং তিনি ইসলাম ধর্মের পরিপূর্ণকারী শেষ পয়গাম্বর।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক ও গবেষক শ্রী ডাঃ কালিদাস নাগ এবং ঐতিহাসিক সুরেন্দ্রনাথ সেন মহোদ্বয়ের মতে, ব্যাকট্রিয়ান গ্রীকদেরই উপাধি হচ্ছে যবন। কেবল তাদের ক্ষেত্রেই যবন শব্দের প্রয়োগ সম্ভব। কিন্তু উপযুক্ত অসভ্য উক্তির উদাহরণ নিরপরাধ মুলমানদের ক্ষেত্রে অপপ্রয়োগ করলে তা হবে নিতান্ত অপরধিজনক ও সাম্প্রদায়িক মনোবৃত্তির পরিচায়ক।
যাহোক, সপক্ষে ও বিপক্ষে যে দলিলই থাক “প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য” পুস্তকের ২৯/৩০ পৃষ্ঠায় স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “যবন হচ্ছে গ্রীকদের নাম; এই নামটার ওপর অনেক বিবাদ হয়ে গেছে; অনেকের মতে ‘যবন’ এই নামটা ‘য়োনিয়া' (Ionia) নামক স্থানবাসী গ্রীকদের ওপর প্রথম ব্যবহার হয়। এজন্য মহারাজা অশোকের লেখনামায় ‘যোন’ নামে গ্রীক জাতি অভিহিত। পরে যোন হতে সংস্কৃত যবন শব্দের উৎপত্তি। আমাদের দেশীয় কোন কোন প্রত্নতত্ত্ববিদের মতে ‘যবন’ গ্রীক শব্দ বাচনীয় নয়। কিন্তু এ সমস্তই ভুল যখন শব্দটাই আদি শব্দ, কারণ শুধু যে, গ্রীকদের যবন বলতো তা নয়; বরং প্রাচীন মিসরীয় ও ব্যাবিলীয়ানরাও গ্রীকদের যবন নামে আখ্যায়িত করতো।”
মোটামুটি উপরের আলোচনা হতে একথাই আমাদের কাছে পরিষ্কার যে, আমাদের দেশের বেশির ভাগ অমুসলমান লেখক তাঁদের লেখায় মুলমানদের সমাজের ওপর অনেক ক্ষেত্রে নানা কুৎসিত শব্দ প্রয়োগ করে বিরূপ মনোভাবের পরিচয় দিয়েছেন।
যবন ম্লেচ্ছ পাতকী ছাড়াও পাষণ্ড, পাপিষ্ঠ, পাপাত্মা, দুরাত্মা, দুরাশয়, নরাধম, নরপিশাচ, বানর, নেড়ে, দেড়ে, ধেড়ে, এঁড়ে, অজ্ঞান, অকৃতজ্ঞ প্রভৃতি শব্দ তাঁরা স্থান কাল ক্ষেত্রে ব্যবহার করেছেন।
বঙ্কিম বাবু ‘রাজ সিংহে” হিন্দু প্রজাবৃন্দ কর্তৃক জগদীশ্বর উপাধিপ্রাপ্ত সম্রাট আকবর বাদশাহের দাড়িতে একটি যুবতী নারী দিয়ে ঝাড় মারিয়েছেন এবং মুসলমান ধর্মনেতা ঔরঙ্গজেব বাদশাহের মুখে কল্পিতা সাখী ও স্ত্রীলোকদের দ্বারা লাথি মারারও ব্যবস্থা করেছেন। বঙ্কিম বাবু তাঁর “মৃণালিনী” বইয়ে বখতিয়ার খলজীকে ‘অরণ্যর বানর’ বলতেও দ্বিধা করেননি। এছাড়া তিনি তাঁর কবিতা পুস্তকে মুসলমান জাতিকে উদ্দেশ্য করে লিখেছেন, “আসে আসুক না আরবী বানর, আসে আসুক না পারসী পামর।”
কবি ঈশ্বরচন্দ্র গুপ্ত লিখেছেন প্রতিবেশী মুসলমান পাঠকদের জন্য–
“বড় বড় ধেড়ে দেড়ে, ছাগল দেড়ে নেড়ে পানে রূকে,
চোড়ে ঘাড়ে, কোলে দেয় হাড়ে হাড়ে ঠুকে।
পশ্চিমে নিয়া মোল্লা, কাচা খোল্লা তোবা তাল্লা বোলে,
কোলে পোড়ে তোপে উড়ে যাবে সব জ্বেলে।
কেবল মরজী তেড়া তেড়া, কাজে ভেড়া নেড়া মাথা যত
নরাধম নীচ তাই নেরাদের মত।” ইত্যাদি ইত্যাদি।
প্রখ্যাত কবি দীনবন্ধু মিত্র মহাশয় লিখেছেন–
“আল্লা বল রে ভাই নবী কর সার,
মাজা দুলায়ে চলে যাবা ভব নদী পার।
মুখ ঘামছে, বুক ঘামছে বিবির ভেসে যাচ্ছে হিয়ে,
খসম যদি থাকত কাছে পুঁচতো নুমাল দিয়ে।
পিড়েই বসে কাঁদছে বিবি ডুবি আখির জলে,
মোল্লারে ধরেছে ঠেসে খসম খসম বলে।”
আরও এগিয়ে আসুন। “....উচ্চ শ্রেণীর হিন্দুরা সব সময়েই মুসলমানদের নিম্ন বর্ণের হিন্দুর সমান জ্ঞান করতেন। উনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগেও সম্মানিত সুলমানেরা হিন্দুদের ঘরে প্রবেশের অনুমতি পেতেন না।” (দ্রঃ R.c. MaJumder, History of Freedom Movement in India.)
“এমনকি স্বদেশী আন্দোলনের উন্মাদনার যুগেও মুলমান যুবকদের হিন্দু বুকে দাওয়া হতে নেমে যেতে হত বন্ধুর জলপানের সুযোগ করে দেবার জন্য এমন ঘটনা রবীন্দ্রনাথ উল্লেখ করেছেন” (দ্রষ্টব, রবীন্দ্রনাথ, “লোকহিত, “লোকান্তর”, নবীন্দ্র রচনাবলী ২৪ খণ্ড, পৃঃ ২৬২)
এমনিভাবে সাম্প্রদায়িক মনোবত্তি সুলভ লেখক শ্রেণীর বিষাক্ত লেখনীরূপ বীজের প্রভাব সামান্য চারারূপে বিকশিত হলেও এক সময় তা বিরাট মহীরূহে পরিণত হয়ে শিকড় গেড়েছিল হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষ ভারতবাসীর হৃদয় ভূমিতে। আর তারই অনিবার্য ফলস্বরূপ শুরু হল রক্তের হোলিখেলা, সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা।
১৯৬৪তে কি ভয়ানক রক্তাক্ত দাঙ্গা কলকাতায় হয়েছিল তার সাক্ষী ইতিহাস ও এরই জীবন্ত অধিবাসী। ৯ জানুয়ারি কলকাতার যাদবপুর, টালীগঞ্জ, বাশদ্রোষী, জমিদারপাড়া, মোল্লাপাড়া প্রভৃতি স্থানে হত্যা, লুণ্ঠন আর অগ্নি সংযোগের ফলে নিদারুণ বিভীষিকার স্রোত বয়ে গিয়েছিল। এছাড়া বেলেঘাটা, এন্টালি, করেয়া, বেনেপুকুর, তালতলা, ওয়াটগঞ্জ, একবালপুর, এলাকায় হত্যা, লুট, আর আগুনে জ্বালানো হয়েছে মুসলমানদের যথা সর্বস্ব। পুলিশের সহযোগিতায় এই হত্যাকাণ্ড হয়েছে। কিন্তু দায়ী কে? গুণ্ডাহ? না- তা নয়। প্রকৃতপক্ষে দায়ী ইতিহাস আর বিষাক্ত ইতিহাস শ্রেণী।
ঠিক তেমনি পূর্ব বাংলায় ও পাকিস্তানে হিন্দু নির্যাতনের প্রমাণের প্রাচুর্যের অভাব নেই। পূর্ব পাকিস্তানে (বর্তমান বাংলাদেশ) যেভাবে হিন্দু হত্যা করা হয়েছিল তা বাঘ-সিংহের হিংস্রতাকেও অতিক্রম করেছিল। যার জন্য সেখানকার মুসলমান বংশধরকে বহু যুগ পর্যন্ত নির্লজ্জজনক ও ঘৃণিত অপরাধের ধিক্কার বহন করতে হচ্ছে এবং হবেও।
১৭ ফেব্রুয়ারি একজন ভারতীয় এমপি দাঙ্গার বিরুদ্ধে যে বক্তৃতা দিয়েছিলেন তা এখানে প্রণিধানযোগ্য। “..... মাননীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ঘটনাস্থলে আবির্ভূত হয়েছিলেন, তাঁর বিমান ৮টা ৪০ মিনিটে বিমান ঘাঁটি স্পর্শ করেছে। তিনি তার নিজের চোখে দেখেছেন অধিকাংশ মুসলিম বসতি এলাকা, যেমন মতিঝিল, কলাবাগান, জালিয়া টোলা, চিংড়ী হাটা, ট্যাংরা, বিবি বাগান ও অন্যান্য মুসলমান এলাকা জ্বলছে। যদিও আর তিনি মাত্র ১২ ঘন্টা পরে পৌঁছাতেন, তাহলে এমনকি জ্যাকেরিয়া স্টীট, বলুটোলা যেখানে হাজার হাজার মুসলমান আশ্রয়ের জন্য উঠেছিলেন, মাটিতে মিশে যেত। এমনকি আমাদের তালতলা অবস্থিত বেকার হোস্টেল, এলিয়ট হোস্টেল, কলিকাতা মাদরাসা, বিপিনীট যেখানে মুসলমানরা জমায়েত হয়েছিল, সেসব হয়তো কসাইখানায় পরিণত হতো।”
এমনিভাবে ১৯৬১ সালে জবলপুরে, ১৯৬২ সালে মালদহ, মুর্শিদাবাদে প্রভৃতি স্থানেও ভয়াবহ রূপ নিয়েছিল। তাছাড়া জামসেদপুরে সীমাতিরিক্ত খুনখরাবি করা হয়েছিল। রাওরকেল্লা, গুজরাট প্রভৃতির হত্যাকাণ্ড তো কল্পনাই করা যায় না। অথচ এ সমস্তই স্বাধীনতাপ্রাপ্তির পর। স্বাধীনতার আগে যে হিন্দুমুসলমানে কত রক্তারক্তি হয়েছে তার কোন সঠিক হিসাব নেই। তবে নিঃসন্দেহে তা ভয়াবহ এবং উভয় জাতির জন্য লজ্জাকর। কিন্তু দেশ স্বাধীন হবার পর পাকিস্তানে সাম্প্রতিক দাঙ্গার জন্য দায়ী মুসলমানগণ এবং ভারতে দায়ী হবেন হিন্দু ভ্রাতাগণ। অবশ্য একথা স্বীকার করতে হবে যে, প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মধ্যে কিছু কিছু শুভবুদ্ধিসম্পন্ন ও শান্তিপ্রিয় নিরপেক্ষ মানুষ আজও আছেন, পূর্বেও ছিলেন এবং আগামীতেও থাকবেন। যে খ্রিস্টান জাতি আমাদের ভেদবুদ্ধির শিক্ষাগুরু তাদের মধ্যেও সাধু সজ্জন নিরপেক্ষ মহামানুষ নেই বললে শুধু অপরধই হয় না বরং সত্যের অপলাপ করা হয়।
শুধু সংকীর্ণতা ও ভেদবুদ্ধি আমাদিগে ধ্বংসের পথে ঠেলে নাই বরং আমদের পরস্পরের ধর্মের ভেতরেও তার মহাপ্রবেশ ঘটেছে, ফলে ধর্ম কেন্দ্রীয় ভারতবাসী পরস্পরের প্রতি বিস্ফোরণের মত ফেটে পড়েছে। “নৃসিংহ পুরাণে’র শ্লোক উদ্ধৃতি করে লেখক যা বলেছেন, তাতে দেশবাসীর মুসলমান ও হিন্দুর কি উপকার হবে তা চিন্তার বিষয়।” “দংক্ট্রিদংষ্ট্রাহত স্নেচ্ছো হারামো পতি পুনঃ পুনঃ। উক্তাপি মুক্তিমাপ্নেতি, কিং পুনঃ শ্রদ্ধায় গৃগন” অর্থাৎ- “দাতাল শূকরের হস্তাহত হইয়া ম্লেচ্ছ যবন বারংবার হারাম হারাম শব্দ উচ্চারণ করিয়া মুক্তি লাভ করিয়া থাকে, তখন শ্রদ্ধাপূর্বক রাম শব্দ উচ্চারণ করিলে যে মুক্তি লাভ করিতে পারিবে ইহাতে অসম্ভব কি আছে।” টীকাকার বলেছেন- “যবনেরা প্রচলিত বাক্যে অপবিত্র শব্দের পরিবর্তে যে হারাম শব্দ বলে তাহা হারাম এই উচ্চারণ হওয়াতে ঐ নাম নামাভাস হইল এই নামাভাসেই যবনগণ অনায়াসেই মুক্ত হইবে।” (চৈতন্য চরিতামৃত হতে ৫৭৩, ৭৪ পাতায় দ্রষ্টব্য)
এই অলীক, অসত্য, অযৌক্তিক কল্পনাকে প্রত্যেক শিক্ষিত মানুষই ঘৃণা ভরে প্রত্যাখ্যান করবে। যেহেতু মূর্খের মূর্খামী মুখ খুললেই প্রকাশ পায়। হারাম আরবী শব্দ যা অবৈধ বস্তুকে নির্দেশ করে। আর লেখকের ভাষা হচ্ছে বাংলা বা সংস্কৃত। একেই বলে ‘উদোর পিণ্ডি বুধোর ঘাড়ে’। যেমন বাংলায় ‘বাগ মানে সুযোগ কিন্তু উর্দুতে ‘বাগ’ মানে বাগান আর ইংরেজিতে বাগ’ মানে পোকা। এই সবকে একাকার করে ফল যা হবার হয়ে গেছে। কিন্তু আগামীতে সাবধান না হলে আমাদের স্বাতন্ত্র্য শেষ হয়ে যেতে পারে না কি?
যাহোক, এত আলোচনার পর একথা ভুললে চলবে না যে, ভারতের মাটিতে হিন্দু-মুসলমান এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্কে তথা সৌভ্রাতৃত্বের বন্ধনে গ্রোথিত। মুসলমান হিন্দুর চরিত্রে সমাজে ইতিহাসে এমনকি ভাষার ক্ষেত্রেও উন্নতির জোয়ার এনে দিয়েছে। বঙ্গের বাংলা ভাষা আজ যত উন্নতই হোক না কেন, এখনো তাতে সহস্র সহস্র আরবী, পারসী ও উর্দু শব্দ যুক্ত হয়ে সমৃদ্ধশালী হয়ে রয়েছে। বিখ্যাত গবেষক পণ্ডিত, শ্রীযুক্ত দীনেশ চন্দ্র সেন রায় বাহাদুর এমএ পিএইচডি মহাশয় লিখেছেন- “বঙ্গ সাহিত্যকে একরূপ মুসলমানদের সৃষ্টি বললেও অত্যুক্তি হবে না।
..... মুসলমান সম্রাটগণ সাহিত্যের একরূপ জন্মদাতা বলিলেও অত্যুক্তি হয়। তাঁহারা বহু ব্যয় করিয়া শাস্ত্রগুলিকে অনুবাদ করাইয়াছিলেন।” দীনেশ বাবুর কথায় অনেক কিছু প্রমাণিত হলেও দরিদ্র ভবঘুরে শ্রেণীর পুঁথি লেখক সাহিত্যিক মুসলমানদের পরিশ্রমেও বাংলা সাহিত্য গৌরবান্বিত হয়েছে। যেমন মুসলমান আলওয়াল, মুসলমান মাগন ঠাকুর প্রভৃতি নামের সাথে ঠাকুর শব্দের যোগ আছে বলে অনেকের ধারণা, হয়তো এরা মুসলমান নন। কিন্তু আমাদের কাছে তার তথ্য মজুদ আছে যে, এঁরাও মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত।
মুসলমান রাজা-বাদশাহগণ এদেশে এসে তারা প্রতিবেশী সুলভ মনোভাব পোষণ করতেন এবং হিন্দুদের সাথে যথেষ্ট পরিমাণে নিজেদের খাপ খাইয়ে নিয়েছিলেন। হিন্দুদের ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান ও উৎসবকে তাঁরা যে সমর্থন করতেন তা বড় বড় উদারচিত্ত ঐতিহাসিকদের লেখায় প্রমাণ পাওয়া যায়। যেমন শ্ৰীযুক্ত দীনেশ চন্দ্র সেন লিখেছেন-“মুসলমানগণ ইরান, তুরান প্রভৃতি যে স্থান হতেই আসুন না কেন এদেশে আসিয়া সম্পূর্ণ বাঙালি হইয়া পড়িলেন, তাহারা হিন্দু প্ৰজামণ্ডলী বেষ্টিত হইয়া বাস করিতে লাগিলেন। মসজিদের পাশে দেব মন্দিরের ঘণ্টা বাজিতে লাগিল, মহরম, ঈদ, শবেবরাত প্রভৃতির পাশে দুর্গোৎসব, রাস, দোল উৎসব চলিতে লাগিল।”
আজ আশ্চর্য লাগলেও প্রমাণিত ঐতিহাসিক সংবাদ এই যে, হিন্দু ধর্মের পবিত্র পুস্তকসমূহ যেমন রামায়ণ মহাভারত, গীতা, পুরাণ প্রভৃতি আকাশের ছায়াপথের মত দূর হতেই পরিদৃষ্ট হত। ব্রাহ্মণ ছাড়া এ সমস্ত গ্রন্থ অপর কেউ পড়তেই পেতেন না। অর্থাৎ পড়ার অধিকারই ছিল না। আর সাধারণ মানুষ পড়তে পারা তো দূরের কথা এর অর্থই বুঝতো না। এমনকি যারা পুরোহিত তাঁরাও অধিকাংশ জন অর্থ বুঝতেন না। কারণ ঐসব বেদ বা ধর্মগ্রন্থগুলো অনুবাদ করা শাস্ত্রে নিষেধ ছিল। (শ্রী রমেশ চন্দ্র মজুমদারের ইতিহাস দ্রষ্টব্য)
কিন্তু ডক্টর দীনেশ চন্দ্র সেনের উক্তিতে পরিষ্কার উল্লিখিত আছে যে মুসলমান রাজা হুসেন শাহের সময় তার সেনাপতি পরগাল খাঁ ও পরগালের পুত্র দুটি খাঁ রামায়ণ ও মহাভারতের অনুবাদ করেন। সেটি শুধু মাত্র প্রাথমিক অনুবাদ হিসেবেই উল্লেখযোগ্য ঐতিহাসিক সংবাদ নয়; বরং আজ বহু ভাষায় বহুরূপে ধর্মগ্রন্থের অনুবাদ করবার ও সর্বশ্রেণীর পড়বার অধিকারের ওটাই হচ্ছে গোড়াপত্তন, ওটাই হচ্ছে হিন্দু ধর্মকে প্রকাশ ও প্রচারের ভিত্তিস্থাপনা। তেমনি বাবু গিরিশচন্দ্র ঘোষের কুরআন তর্জমা’ও আমাদের কাছে প্রশংসনীয়।
অতএব দেখা যাচ্ছে হিন্দু-মুসলমানের মিলিত প্রচেষ্টাতেই ভারতের সমাজ সংস্কৃতি ও সভ্যতা এতখানি উন্নত কারোর কোন অবদানের কথা ভুলে গেলে চলবে না। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথের অবদান যদি আমাদের মধ্যে বেঁচে থাকে তাহলে নজরুলের বিদ্রোহিতার সুরও ঝংকৃত হবে ভারতবাসীর হৃদয়তন্ত্রীতে।
স্বাধীনতা সংগ্রামীরূপে বিনয়, বাদল, দীনেশ প্রমুখের নাম যদি স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকে তবে হযরত মাওলানা ওলিউল্লাহ, মুহাম্মদ শহীদ ইসমাইল, মাওঃ আবদুল আজিজ, ওবাইদুল্লা সিন্ধী, হুসাইন আহম্মদ মাদানী (র.), আহম্মদ ব্রেলবী প্রমুখ স্বাধীনতাকামী বীরদের নামও লেখা থাকবে রক্তাক্ত ইতিহাসের পাতায় রক্তের তুলি দিয়ে। সে ইতিহাস পরে আসছে। মীরজাফর সিরাজ হত্যার পেছনে দায়ী বলে সারা মুসলমান সমাজ যদি হয় বিশ্বাসঘাতক তবে হিন্দু সমাজও বিশ্বাসঘাতক, নরহন্তারূপে চিহ্নিত হবে। কেননা তারই সন্তান নাথুরাম গড সে স্বাধীনতা সংগ্রামী অন্যতম নেতা গান্ধীজীর বুকে গুলিবিদ্ধ করে হত্যা করেছিল। কারবালার রক্তাক্ত ইতিহাস যদি হয় দুঃখের তবে কুরু পাণ্ডবের যুদ্ধে লক্ষ লক্ষ হিন্দুর প্রাণহানিও অনুরূপ বেদনাদায়ক। অতএব দোষ-গুণ আমাদের সকলেরই আছে একথা ভুলে গেলে চলবে না।
পরিশেষে বলব, আজ ভারতের হিন্দু-মুসলমান সাম্প্রদায়িকতায় মেতে থাকার দিন নয়। আজ উভয় সম্প্রদায়ের কোটি কোটি হস্তকে এক করে এগিয়ে যেতে হবে উন্নতির পথে; সংগ্রাম করতে হবে যাবতীয় অন্যায় অত্যাচার আর কলুষতার বিরুদ্ধে। তবেই হবে ভারতের কল্যাণ-তবেই প্রতিষ্ঠিত হবে অনাবিল সুখ আর শান্তি। অতএব হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রত্যেক ভারতবাসীকে যাবতীয় অসভ্যতা আর কুসংস্কারের বিরুদ্ধে আপসহীন সংগ্রামে মিশে যেতে হবে। তাহলেই আমরা আমাদের অভীষ্ট সিদ্ধির পথে অগ্রসর হতে পারব বিপুল সংবর্ধনা আর সাফল্যতার সাথে এবং অচিরেই ভারতের ভাগ্যাকাশে উদিত হবে নিষ্কলুষ সৌভ্রাতৃত্ব রবি, যা দেশকে উন্নতির পথে এগিয়ে দিতে অপরিহার্য পাথেয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/10
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।