মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
মুহম্মদ বিন তুঘলকের মস্তিষ্ক বিকৃতি না ঐতিহাসিকদের হৃদয় বিকৃতি?
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/31
মুহম্মদ বিন তুঘলক ছিলেন সর্বগুণের সমন্বয়ে এক অদৃশ্যপূর্ব ব্যক্তিত্ব, অতুলনীয়, খোদাভক্ত এবং নিরলস সংগ্রামী বাদশাহ। অতএব এহেন এক মধুর চরিত্র সম্রাটের ঘাড়ে ‘পাগল’, ‘বিকৃত মস্তিষ্ক’ আর ‘রক্ত লোলুপ’-এর ষ্ট্যাম্প না লাগালে ঐতিহাসিক হওয়া যাবে না অথবা প্রভুভক্ত ভারতপ্রেমিক হওয়া সম্ভব হবে না। তাই তাঁকেও দুর্নামের শিকার হতে হয়েছে। কারণ এ কথা প্রকাশ্য দিবালোকের ন্যায় স্পষ্ট যে, ভারতীয় মুসলমান বংশধররা যেদিন থেকে তারা ইসলামের ছায়া অবলম্বনে গঠিত হবে, হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর আদর্শে আদর্শবান হবে, উন্নত-আদর্শ রাজা-বাদশাদের চরিত্র মাধুর্যের রঙে রঙিন হবে সেদিনই ভারত প্রভু ইংরেজদের লোটা-কম্বল কাঁধে নিয়ে এ ভারত ভূমি ছেড়ে সুদূর পশ্চিমদেশে পাড়ি দিতে হবে। তাই ইংরেজ প্রভু ও তাঁদের পোষ্য পুত্রের দল প্রায় সমস্ত আদর্শ মুসলিম রাজা-বাদশাদের চরিত্রেই কলঙ্কের বিষাক্ত ইনজেকশন প্রয়োগ করেছেন, এমনকি অনেক স্থানে পবিত্র ইসলামের ওপরও নির্মম আঘাত হেনেছেন। প্রধানত চারটি কারণে মুহাম্মদ বিন তুঘলককে ইতিহাসে পাগল, নিষ্ঠুর এবং খামখেয়ালীর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়ে থাকে। কারণগুলো এইরূপ (১) রাজ্য জয়ের পরিকল্পনা (২) রাজধানী দেবগিরিতে স্থানান্তরকরণ (৩) দোরাব এলাকায় করভার স্থাপন ও (৪) তাম্র মুদ্রার প্রচলন। এবার কারণগুলোর যথার্থতা ও যৌক্তিকতা নিয়ে কিছু আলোচনা করা যাক।
১। ঐতিহাসিক জিয়াউদ্দিন বারণী লিখেছেন, খোরাসান অভিযানের উদ্দেশ্যে মুহম্মদ বিন তুঘলক ৩৭০,০০০ সৈন্য সংগ্রহ করে অবশেষে এই পরিকল্পনা ত্যাগ করেন। এতে তার বাস্তব জ্ঞানের অভাব ও অদূরদর্শিতার পরিচয় পাওয়া যায়। উল্লেখ করা যেতে পারে, বারণী সাহেবের লেখা পক্ষপাত দোষে দুষ্ট। কারণ তিনি তার রচনায় খোরাসান জয়ের পরিকল্পনা কেন ত্যাগ করা হয়েছিল তা বলেননি। তবে সে তথ্য আমাদের হাতে মৌজুদ। পারস্য ও মিসরের মধ্যে মনোমালিন্যের পরিপ্রেক্ষিতেই এই পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছিল কিন্তু পরবর্তী সময়ে পারস্যের আবু সৈয়দ ও মিসরের আন-নাসিরের মধ্যে হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। তখন বাধ্য হয়েই মুহাম্মদ বিন তুঘলক তার পরিকল্পনা ত্যাগ করেন। অতএব এক্ষেত্রে তাঁর জ্ঞানের অভাব বা অদূরদর্শিতার পরিচয় তো পাওয়া যায়ই না; বরং তাঁর শান্তিকামী মনের পরিচয় ফুটে ওঠে এবং দেশে ক্ষতির পরিবর্তে যে বিরাট লাভ হয়েছিল তা হচ্ছে এই যে, যুদ্ধে অনভিজ্ঞ প্রজাবৃন্দের বিরাট একটা অংশ যুদ্ধ বিদ্যায় পারদর্শী হয়েছিল, যা আধুনিক রাষ্ট্র বিজ্ঞানীদের মতে এক উল্লেখযোগ্য অবদান।
এছাড়া বারণী তার রচনায় মুহাম্মদ বিন তুঘলকের চীন অভিযানের মিথ্যা স্বকপোলকল্পিত ঘটনাকে স্থান দিয়ে ইতিহাসকে দূষিত করেছেন। বাস্তবপক্ষে মুহাম্মদ বিন তুঘলক চীন অভিযান তো করেনইনি, চীন অভিযানের কল্পনাও তাঁর মস্তিষ্কে স্থানলাভ করেনি কোনও দিন। অবশ্য চীন ও ভারতের সীমান্তবর্তী কারাচল বা কুর্মাচলে তিনি বাহিনী প্রেরণ করেছিলেন কিন্তু তার পশ্চাতেও যথেষ্ট বাস্তব যুক্তির ইন্ধন রয়েছে। উদ্ধত পার্বত্য সর্দারকে আয়ত্তাধীনে আনার জন্যই তার এই অভিযান, শুধু তাই নয়, এই অভিযানের ফলস্বরূপ কারচলের রাজা সুলতানের বশ্যতা স্বীকার করতেও বাধ্য হন।
২। দেবগিরিতে রাজধানী স্থানান্তরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে মুহম্মদ বিন তুঘলকের ন্যায় এক অভিজ্ঞ, দূরদর্শী ও অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিত্বে যেভাবে কলঙ্কের মসিলেপন করা হয়েছে তাতে ঐতিহাসিকরা নিরপেক্ষতা ও দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পারেননি। রাজধানী পরিবর্তনের ব্যাপারে ঐতিহাসিক ইবনে বতুতা যেভাবে কল্পনার তুলি দিয়ে চমকপ্রদ উপন্যাস সৃষ্টি করেছেন তাতে সত্যতার লেশমাত্র নেই। তিনি বলেছেন, দিল্লীর লোকদের শাস্তি দেয়ার উদ্দেশ্যেই তিনি দাক্ষিণাত্যে তাঁর রাজধানী স্থাপন করেছিলেন। কিন্তু এই উক্তি ভিত্তিহীন এবং প্রকৃতপক্ষে সত্যের অপলাপ। ঐতিহাসিক বারণীও অনুরূপ ঔপন্যাসিক কৃতিত্বের পরিচয় দিতে ভোলেননি। কিন্তু আসল কথা হচ্ছে এই যে, পিতার শাসনকালে বরঙ্গল অভিযানে নিযুক্ত থাকার সময় মুহম্মদ বিন তুঘলক দাক্ষিণাত্যের বিপজ্জনক সমস্যার গুরুত্ব উপলব্ধি করেছিলেন। তাই সিংহাসন লাভের পরেই এই সমস্যা সমাধানের উদ্দেশ্যে তিনি দেবগিরিতে দৌলতাবাদ নামক একটি রাজধানী স্থাপন করতে প্রয়াসী হলেন। কেননা, দেবগিরি ছিল সাম্রাজ্যের অপেক্ষাকৃত মধ্যবর্তী এবং দাক্ষিণাত্যের শাসন প্রণালী পর্যবেক্ষণ করার অধিকতর নিকটবর্তী স্থান। সুদূর দিল্লীতে অবস্থান করে বৃহৎ সাম্রাজ্যের অধিপতি সুলতানের পক্ষে সমগ্র দেশ পরিচালনা করা একপ্রকার অসম্ভব ছিল। তাছাড়া দিল্লী ভারত সীমান্তের নিকটবর্তী হওয়ায় মোঙ্গল আক্রমণের লক্ষবস্তুতে পরিণত হয়েছিল। এই সব কারণে সুলতানের নতুন রাজধানী স্থাপনের নিছক পাগলামি বলে উড়িয়ে দেওয়া চলে না; বরং এর পশ্চাতে তাঁর যোগ্য শাসন, ক্ষমতা ও দূরদর্শী মনের কৃতিত্ব লুকিয়ে রয়েছে।
মহম্মদ বিন তুঘলকের রাজধানী স্থানান্তরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বর্তমান গতানুগতিক ইতিহাসে পাওয়া যায়-তিনি নাকি জোর করে দিল্লীবাসীদের ঘটিবাটি, শিশু সন্তানসহ ৭০০ মাইল পথ অতিক্রম করে দৌলতাবাদে যেতে বাধ্য করেছিলেন। ফলে অপারগ অনেক শিশু, বৃদ্ধ-বৃদ্ধা নানা কষ্টে পথে মৃত্যুবরণ করে। ইবনে বতুতার বর্ণনায়, “দিল্লী নগরী তখন মরুভূমিতে পরিণত হয়েছিল।” তিনি আরও বলেন, “এক পঙ্গু ব্যক্তিকে পথে নিক্ষেপ করা হয় এবং একজন অন্ধকে দিল্লী হতে দৌলতাবাদে টেনে নিয়ে যাওয়া হয়।”
কিন্তু এ সব উক্তি প্রকৃত সত্যের বিপরীত। ১৩২৭ এবং ১৩২৮ খৃঃ দুটি সংস্কৃত অনুশীলনলিপি হতে জানা যায়, সুলতান সাধারণ প্রজাবর্গ অথবা হিন্দুদের রাজধানী ত্যাগ করতে আদেশ দেননি। প্রকৃত ঘটনার বেশ কয়েক বছর পর ইবনে বতুতা ভারতবর্ষে এসে হাটুরে গল্পের ভিত্তিতে তিনি তাঁর মত প্রকাশ করে গেছেন। দিল্লী যে কখনও জন পরিত্যক্ত ছিল না অথবা কোনও দিন তার রাজধানীর মর্যাদা হারায়নি, এই অমোঘ ঐতিহাসিক সত্য সমীক্ষাই তার উক্তির অসারতা ও অযৌক্তিকতা প্রমাণ করে। তাছাড়া ইবনে বতুতার উক্তি সঠিক হলে ১৩২৯ খৃঃ মুলতানে যে বিদ্রোহ ঘোষিত হয়েছিল তার বিরুদ্ধে এক বিরাট ও শক্তিশালী সৈন্য গঠন করা ঐ জনশূন্য দিল্লী থেকে সুলতানের পক্ষে কোনক্রমেই সম্ভব ছিল না।
সবচেয়ে আশ্চর্যের কথা হচ্ছে এই যে, রাজধানী পরিবর্তনের যে কথা জোরেশোর প্রচার করা হয়ে থাকে সেটাই আসলে ঠিক নয়। তিনি রাজধানী পরিবর্তন করেননি তবে শাসন কার্যের সুবিধার জন্য দৌলতাবাদকে সাম্রাজ্যের দ্বিতীয় রাজধানীতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন মাত্র। আর দিল্লীবাসীকে দেবগিরি প্রেরণের পশ্চাতে আসল তথ্য হচ্ছে এই যে, দাক্ষিণাত্যের মুসলমানরা সেই সময় ধর্মবিমুখ হয়ে অত্যাচারী গোষ্ঠীতে পরিণত হয়েছিল, তাই তাদের ইসলামের আলো দেখানোর জন্য দিল্লী হতে শুধু একদল মুসলমানকেই দেবগিরি পাঠানো হয়েছিল। এছাড়া আরও অন্যান্য অঞ্চলে তিনি ইসলাম প্রচারক দল পাঠিয়েছিলেন। বিখ্যাত আলেম শামসুদ্দিন ইয়াহইয়াকে ডেকে বলেছিলেন, “আপনি এখানে বসে কী করছেন? কাশ্মীরে যান এবং খোদার সৃষ্টিকে স্রষ্টার দিকে ডাক দিন।” তাই মনে হয় প্রত্যক্ষ জ্ঞানের অভাবে বতুতা সাহেব কিংবদন্তির ভিত্তিতেই এই উপাদনগুলোকে বিকৃত ইতিহাসে স্থান দিতে গিয়ে তালগোল পাকিয়ে বসেছেন।
তবে একথাও ঠিক যে, ঐতিহাসিকরা কোন নবী, পয়গম্বর বা অবতার নন। তাঁরাও রক্ত-মাংসের মানুষ। অতএব ভুল-ক্রটি তাঁদেরও কিছু কিছু থেকে যাওয়া অস্বাভাবিক বা অসম্ভব নয়। ঐতিহাসিক বারণী বা ইবনে বতুতার ক্ষেত্রেও এ সত্য প্রযোজ্য।
তাছাড়া ইবনে বতুতা ১৩৩৩ খৃস্টাব্দে ভারতবর্ষে এসে প্রায় আট বছর ধরে মুহম্মদ বিন তুঘলক কর্তৃক দিল্লীর প্রধান কাজীর বিচারক পদে নিযুক্ত ছিলেন। কিন্তু এমন এক অমার্জনীয় অপরাধ তাঁর দ্বারা হয়ে যায়, এর বিচার সুলতানকেই করতে হয় এবং তাঁকে কারারুদ্ধ করা হয়। কারামুক্তির পর যদিও তিনি সুলতানের প্রীতি ফিরে পেয়েছিলেন তথাপি শান্তির কথা ভুলতে পারেননি। তাই তার পুস্তকে সুলতানের প্রতি কিছুটা ঘৃণা ও অবজ্ঞাকে তিনি শত চেষ্টা করেও বোধহয় চাপা দিতে পারেননি। দ্বিতীয়ত অপরাধপর পর্যটকদের ন্যায় তিনিও ঘটনার সাথে গল্পের সংমিশ্রণ ঘটিয়েছেন এবং অলীক জনশ্রুতিকেই অধিক প্রাধান্য দান করেছেন। অবশ্য এর জন্য তাঁকে আমরা সম্পূর্ণরূপে দায়ী করতে পারি না। কারণ অধিকাংশ ঘটনা তিনি প্রত্যক্ষ দেখার সুযোগ পাননি। তাই প্রায় বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁকে জনশ্রুতির ওপর নির্ভর করতে হয়েছে। তবে জনতার দলের চরিত্র নিরীক্ষণ না করায় অপরাধকে অস্বীকার করা যায় না।
তবুও আমরা দ্বিধামুক্তচিত্তে বলতে পারি যে, তাঁর রচনায় সে যুগের অনেক মূল্যবান সংবাদ বা তথ্য ইতিহাস সম্ভারকে পরিপূর্ণতা দান করেছে। তদুপরি উপর্যুপরি অনাবৃষ্টির কারণে স্বাভাবিকভাবেই দোয়াববাসীর ভাগ্যে দুর্ভাগ্য নেমে এসেছিল। মুহম্মদ বিন তুঘলক এর জন্য দায়ী নন। আজও আমাদের বর্তমান বিশ্বে কোন নিরপরাধ মুহম্মদ বিন তুঘলকের চরিত্রে নিষ্ঠুরতার আর এক অপবাদের আলেখ্য অঙ্কন করা হয়েছে। কোন কোন ঐতিহাসিকের মতে, দোয়াবে সুলতান দশ হতে বিশগুণ কর বৃদ্ধি করে রায়ত শ্ৰেণীকে ভিক্ষাবৃত্তি গ্রহণ করাতে বাধ্য করেন এবং কৃষক শ্রেণীর ওপর নিষ্ঠুর স্টীম রোলার চালিয়ে গেছেন। বলা যেতে পারে, প্রবাদ বাক্যের মত এই মতকেই সাদরে গ্রহণ করে ইউরোপীয় ঐতিহাসিকরা তাতে আরও কল্পনার রঙ ছড়িয়ে প্রকৃত ইতিহাসকে হজম করে ফেলেছেন। কিন্তু তারা তো আর নীলকণ্ঠ নন তাই আবার তার উদগিরণ শুরু হয়ে গেছে বর্তমান লেখনী জগতে। কিন্তু জানিয়ে রাখা ভাল যে, জিয়াউদ্দিন বারনী কদাচ সুলতানের প্রতি প্রসন্ন ছিলেন না; তাছাড়া তার ইতিহাসের ঘটনা বিন্যাসও ধারাবাহিকভাবে নয়। যখন যে শোনা ঘটনা তার কল্পনাকে উদ্দীপ্ত করেছে তখন সেটাকেই তিনি অগ্রে স্থান দিয়েছেন। ফলে তাঁর বর্ণনায় মুহম্মদ বিন তুগলকের সমস্ত কার্যকলাপই কার্যকর নীতিবিবর্জিত এক পাগলামি ক্রিয়াকাণ্ড বলে মনে হয়েছে।
খলজী বংশের পতনের পর অভ্যন্তরীণ শৃঙ্খলার কারণে দোয়াব অঞ্চল হতে কর আদায়ের কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়নি। তাই মুহম্মদ বিন তুঘলক আলাউদ্দিন খলজী অপেক্ষাও কম হারে পূর্ব আরোপিত করের পুনঃপ্রবর্তন করেন মাত্র। আজও আমাদের স্বাধীন ভারত রাষ্ট্রে দু-তিন বছরের অপরাগ অনাদায়ীকৃত করকে একসঙ্গে আদায় করা হয়। এটা যদি শিক্ষিত যুগের শিক্ষিত মানুষের কাছে দোষণীয় না হয় তবে মুহম্মদ বিন তুঘলকই বা দোষী কিসের জন্য?
কৃষিপ্রধান রাষ্ট্রে পরপর দু বছর বৃষ্টিপাত না হলে গণজীবন বিপর্যস্ত হয়। কিন্তু মুহম্মদ বিন তুঘলকের সময়ে দোয়াব অঞ্চলে এক বছর, দু বছর, তিন বছর নয়- পর পর সাত বছর অনাবৃষ্টি হয় এবং এর ফলে সেখানকার জনসাধারণকে এক দারুণ দুর্ভিক্ষের প্রকোপে পড়তে হয়েছিল। মুহম্মদ বিন তুঘলকের মত এক উদারচেতা ও অসীম সাহসী বাদশাহের পক্ষেই এরকম ভীষণ সমস্যার মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছিল। কারণ তিনি এ বিপদে নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন না করে দুর্ভিক্ষপীড়িত প্রজাদের সাহায্যের নিমিত্ত খাদ্য দান, ঋণ দান, কূপ খনন, চাষের বীজ ইত্যাদির ব্যবস্থা করে জনকল্যাণকামী মনোভাবের পরিচয় দান করেছিলেন। কথিত আছে, হাতেমতাই এবং অন্যেরা এক বছর যা দান করতেন তিনি একবারেই তা করতেন। তাই ডাঃ ঈশ্বরী প্রসাদ দুঃখ করে বলেছেন, “প্রায় এক যুগ স্থায়ী মারাত্মক দুর্ভিক্ষ তাঁর রাজত্বের গৌরব অনেকখানি বিনষ্ট এবং প্রজাদিগকে বিদ্রোহী করে তুলেছিল। তাঁকে নীরো এবং ক্যালিগালের মত নিষ্ঠুর এবং রক্তপিপাসু দানব বলে অভিহিত করলে তাঁর মহান প্রতিভার প্রতি অভিচার করা হয় এবং দুর্ভিক্ষের প্রতিরোধের জন্য তাঁর প্রকৃত চেষ্টা ও বিভিন্ন উন্নতিমূলক সংস্কারের পরিকল্পনা হেতু মহান কৃতিত্বের দাবিকে অবজ্ঞা করা হয়।”
(৪) মুহম্মদ বিন তুঘলক তাঁর রাজত্বের প্রথম ভাগ স্বর্ণ-রৌপ্যের পরিবর্তে তাম্র মুদ্রার প্রচলন করেন। মিঃ থমাসের মতে তিনি ছিলেন "Prince of Moneyers" অর্থাৎ ‘তঙ্কা নির্মাতার রাজা’। “তাঁর প্রবর্তিত মুদ্রা নতুনত্ব এবং গঠন-বৈচিত্র্যের দিক দিয়ে দৃষ্টান্তস্বরূপ। নমুনা এবং কার্যকারিতার দিক দিয়ে এই মুদ্রার শিল্পসম্মত পরিপূর্ণতা প্রশংসনীয়.....।”
সাধারণত এ কথাই বলা হয়ে থাকে যে, সুলতানের অপরিমিত উদারতা, দুর্ভিক্ষ, রাজধানী স্থানান্তরকরণ জনিত ব্যয় বাহুল্য, দিল্লীতে পুনর্বাসনের ব্যয় প্রভৃতির ফলে রাজকোষ শূন্যপ্রায় হয়ে পড়লে সুলতান এই সমস্যার সমাধানের জন্য তাম্র মুদ্রার অসাফল্যের ফলে সমস্ত তাম্র মুদ্রার বিনিময়ে জনসাধারণকে দেয়ার জন্য তখনও সুলতানের হাতে যথেষ্ট স্বর্ণ ছিল, যেহেতু স্বর্ণ ও রৌপ্যের বিনিময়ে রাষ্ট্রের সমস্ত তাম্র মুদ্রা তিনি ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেটা আজ নিরপেক্ষ ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে এক অকল্পনীয় বিজ্ঞানময় কীর্তি।
এছাড়া আরও বলা হয়, তার যথার্থ সতর্কতা অবলম্বনের অভাবেই তাম্র মুদ্রা প্রচলনের অসাফল্যের কারণ। আমরা এ কথার সাথেও একমত নই। কেননা যদি এ কথাই সত্যি হয় তবে কয়েক মাসের মধ্যেই তিনি সমস্ত তাম্র মুদ্রা ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হলেন কীভাবে? বলাবাহুল্য, তাঁর এই অভিনব পদ্ধতিতে জনসাধারণের ভুল বোঝাবুঝির কারণেই এই ব্যর্থতা। আজকের শিক্ষিত জনসাধারণ তাঁর যুগের তদানীন্তন উৎকট মুদ্রাস্ফীতিকে মাত্র কয়েক মাসের মধ্যে আয়ত্তে আনার ঐতিহাসিক ঘটনার প্রশংসা না করে পারেন না।
মোট কথা, মুহম্মদ বিন তুঘলকের সামগ্রিক জীবনী আলোচনা করে আমরা নিঃসংকোচে বলতে পারি তিনি একদিকে যেমন আদর্শ বাদশাহ, উন্নত চরিত্র সাধক, প্রতিভাশালী শাসক, যুগোত্তীর্ণ পণ্ডিত, অসাধারণ বক্তা ও অতুলনীয় দাতা ছিলেন তেমনি অপরদিকে তর্কশাস্ত্র, জ্যোতিষবিদ্যা, দর্শন, গণিত এবং স্বাস্থ্য বিজ্ঞানেও তার বিস্ময়কর পাণ্ডিত্য ছিল। বারণী বলেছেন, পাণ্ডিত্য ও প্রতিভায় মুহম্মদ ছিলেন ‘সৃষ্টির বিস্ময়’। বদায়ুনী তাঁকে ‘বৈপরীত্যের সংমিশ্রণে বলেছেন। ডাঃ ঈশ্বরী প্রসাদ বলেছেন, "Muhammad Tughlak was unquestionaly the ablest man among the crowened leads of the Middle ages." অর্থাৎ মধ্য যুগের রাজা-বাদশাহদের মধ্যে মুহম্মদ তুঘলক প্রশ্নাতীতভাবে সর্বাধিক ক্ষমতাশালী শাসক ছিলেন।
তাঁর সময়ের হিন্দুদের লেখা হতে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, তৎকালীন হিন্দু প্রজারা সুলতানের ওপর খুব ভাল ধারণা পোষণ করতেন। চৌদ্দ শতকের শেষের দিকে বিহারের বিখ্যাত কবি বিদ্যাপতি ঠাকুরের লেখা বিখ্যাত বই ‘পুরুশা পরিশকা’তে মুহম্মদ বিন তুঘলকের অত্যন্ত প্রশংসা করা হয়েছে। (Vidyapati Thakur's Purusa Pariska' P-20-24, 4-44, Allahabad)
১৩২৭ ইং শ্রী ধারাণী ব্রাহ্মণের বই-এ তাঁর রাজত্বকে হীরা বলে উল্লেখ করা হয়েছে এবং তাঁকে সাকার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। (Cataloque of the Delhi Museum of Archaclogy-J.P. Vagel, Calcutta 1908,P-29)
রতন নামে জনৈক হিন্দুকে মুহম্মদ বিন তুঘলক সিন্ধু প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত করেন। (আজায়েবল আসফারেজ, ২য় খণ্ড, পৃঃ ৯)
এমনিভাবে মহা পণ্ডিত হাফেজে কুরআন মুহম্মদ বিন তুঘলক তাঁর হিন্দু মুসলিম প্রজাবৃন্দের মধ্যে এক মিলন ঐক্য গড়ে তুলে মূল ইতিহাসে চির অমর ও অক্ষয় হয়ে আছেন কিন্তু সাধারণ ইতিহাসে তিনি আজ বিপরীত।
ফিরোজ শাহ তুঘলকঃ মুহম্মদ বিন তুঘলকের আকস্মিক মৃত্যুতে সৈন্য বাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিলে তার ভাইপো ফিরোজ শাহ তুঘলক ১৩৫১ খৃস্টাব্দে সিংহাসনে প্রতিষ্ঠিত হন। তিনি ১৩৮৮ খৃস্টাব্দ পর্যন্ত রাজত্ব করেছিলেন।
তাঁর রাজত্বকালে মুফতি ও কাজীগণ বিচার করতেন। মুফতি আইন ব্যাখ্যা করতেন আর কাজীগণ রায় দিতেন। তিনি অনেক জনহিতকর কাজ করেছেন। যেমন অসংখ্য প্রাসাদ, মসজিদ, সরাইখানা, স্নানাগার, উদ্যান, খাল খনন, দাতব্য চিকিৎসালয় স্থাপন, দীনহীন জনসাধারণকে সাহায্য দান, রাজপথ, মতভেদে প্রায় ১০০০ বিদ্যালয় অসংখ্য অক্ষয় কীর্তি তার দ্বারাই স্থাপিত হয়েছিল।
ঐতিহাসিক মোহাম্মদ এহিয়া খান বলেন, "There has been no king at Delhi so just and merciful, so kind religious or such a builder as Firuj shah."- (Tarikhi Mubarak Shahi.)
অর্থাৎ ফিরোজ শাহের ন্যায় ন্যায়পরায়ণ, দয়ালু ধর্মপ্রাণ ও নির্মাতা কোন সম্রাট দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেননি। ঐতিহাসিক হ্যাভেলও তার প্রশংসা করে গেছেন।
বস্তুত মুহাম্মদ ফিরোজ শাহ তুঘলক ছিলেন এক আদর্শ চরিত্রের শাসক। তিনি সিংহাসনে আরোহণ করেই ওমরাহদের ডেকে বললেন, “আপনারা যখন আমার কাঁধে এই বিরাট দায়িত্ব চাপিয়ে দিয়েছেন তখন একটু অপেক্ষা করুন, ওজু করে নিই। ওজু সমাপ্ত করে দু রাকাত নামায পড়লেন। তারপর সিজদায় গিয়ে কেঁদে বললেন, “ওগো আল্লাহ! রাজ্যের ব্যবস্থা এবং রাজত্বের গতি নির্ধারণ মানুষের চিন্তাশক্তির বাইরে। রাজ্য ব্যবস্থা সুসম্পন্ন তোমারই নির্দেশে। হে খোদা! তুমি আমার শান্তিদাতা এবং আশ্রয়স্থল।” এরপর তিনি হাতীর পিঠে চড়ে ফুফুর (পিসি) কাছে গিয়ে দেখা করলে ফুফু তাঁকে বক্ষে ধারণ করে মুহম্মদ তুঘলকের স্মৃতি জড়িত টুপি স্বহস্তে তার মাথায় পরিয়ে দিলেন। যার দাম এক লক্ষ তনকাহ (টাকা)।
কিন্তু তবুও ফিরোজ শাহ তুঘলক সাধারণ ইতিহাসে মহামান্য ঐতিহাসিকদের বিষাক্ত কলমের খোঁচা থেকে নিজেকে বাঁচাতে পারেননি। জিজিয়া কর আদায়ের জন্য তাঁর ওপর বিদ্বেষমনা ও ধর্মান্ধতার দোষ আরোপ করা হয়। কিন্তু আগেই জিজিয়া কর প্রসঙ্গে আলোচনায় বলা হয়েছে, জিজিয়া কোন অত্যাচারী বা সাম্প্রদায়িক কর নয়। মাথা গুনতি যেকোন অমুসলমানের কাছে থেকেই জিজিয়া নেওয়া হতো না। তাই জিজিয়াকরের দোহাই দিয়ে সচ্চরিত্রের ফিরোজ শাহের মাথায় অপরাদের বোঝা চাপানোর পশ্চাতে কোন মনোভাবের পরিচয় লুকিয়ে রয়েছে সূক্ষ্মদর্শী পাঠক-পাঠিকারাই তা নির্ণয় করবেন।
বীর তৈমুরঃ ফিরোজ শাহ তুঘলকের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র পৌত্রদের মধ্যে কলহ শুরু হলে দেশের অভ্যন্তরীণ শান্তি বিঘ্নিত হয় এবং বিশৃঙ্খলার বহ্নি প্রজ্বলিত হয়ে ওঠে। এমতাবস্থায় ১৩৯৮ খৃস্টাব্দে তৈমুর ভারত আক্রমণ করেন। তিনি ট্রান্স অক্সিয়ানার কেশ অঞ্চলের শেবজার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা তুরঘাই ছিলেন তুর্কদের দলপতি আর মাতা নাগিনা ছিলেন চেংগিস খানের বংশীয়। তৈমুর আঠার বছর বয়স পর্যন্ত অশ্বারোহণ, যুদ্ধবিদ্যা, লেখাপড়া প্রভৃতি বিষয়ে পারদর্শিতা অর্জন করে ৩৫ বছর বয়সে অদ্বিতীয় প্রতিপত্তিতে বীরপুরুষ বলে মানুষের হৃদয়ের ভক্তি ও প্রীতির পুস্পাঞ্জলি জ্ঞাপনের বস্তুতে পরিণত হলেন। এই সময় তাঁর মনে বিশ্ববিজয়ের অভিলাষ জাগে। বাস্তবিক তাঁর সামগ্রীক জীবনী আলোচনা করলে জানা যায়, রুশ সাম্রাজ্যের অধিকাংশ, চীনের প্রাচীর ও নীলনদ পর্যন্ত তার বিজয়কেতন উড্ডীন ছিল; তাছাড়া তুর্কিস্তান, আফগানিস্তান, পারস্য, ইরাক, সিরিয়া প্রভৃতি দেশ তাঁর সাম্রাজ্যভুক্ত ছিল। পৃথিবীর সকল ঐতিহাসিকই একমত যে, বিজেতা হিসেবে তৈমুর অদ্বিতীয়। আলেকজাণ্ডার, সীরাজ, হানিবল, শার্লিমেন, চেঙ্গিস, নেপোলিয়ন কেউ তাঁর সমকক্ষ নন। এক কথায় তৈমুর নিজের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, সাংগঠনিক ক্ষমতা, রাজনৈতিক দক্ষতা, অপরিসীম সাহস ও অধ্যবসায়ের গুণে ভূমধ্য সাগর হতে গঙ্গা এবং ভলগা ও ইপটিস নদী হতে পারস্যোপসাগর পর্যন্ত নিজের সাম্রাজ্যের পরিধিকে বিস্তৃত করতে সক্ষম হয়েছিলেন তৈমুরের দিল্লী অভিযান ভারতের ইতিহাসে এক রক্তক্ষয়ী অধ্যায়।
অনেকে বলেন, তৈমুর হিন্দু বিদ্বেষী। কিন্তু তা ঠিক নয়। হিন্দু বিদ্বেষের বশে তিনি ভারত আক্রমণ করেননি; তিনি তাঁর উৎকট দিগ্বিজয়ের বাসনাকে চরিতার্থ করতেই শুধু ভারত নয় বিশ্বগ্রাসে মেতে উঠেছিলেন।
অবশেষে ১৪০৬ খৃস্টাব্দে চীন জয়ের পরিকল্পনাতে রাজধানী সমরখন্দ হতে কয়েকশত মাইল দূরে প্রবল শীতে বিশ্বগ্রাসোদ্যত মহাবীর তৈমুর ৭০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন।
তুঘলক বংশের পতনঃ ফিরোজ শাহের মৃত্যুর পর তাঁর পৌত্র দ্বিতীয় গিয়াসুদ্দিন তুঘলক সিংহাসনে বসেন। কিন্তু তার আমোদ প্রমোদ ও দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে তাঁরই পিতৃব্য পুত্র আবু কবর তাঁকে হত্যা করে ১৩৮৮ খৃস্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন। কিন্তু নাসিরুদ্দিন মুহাম্মদ নামে নগরকোটের এক শাসনকর্তা তাকে সিংহাসনচ্যুত করেন। নাসিরুদ্দিনের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র হুমায়ুন সিংহাসনে আরোহণ করেন। অল্পকালের মধ্যেই তাঁর মৃত্যু হয়। অতঃপর কনিষ্ঠ ভ্রাতা নাসিরুদ্দিন মাহমুদ তুঘলক সিংহাসনে আরোহণ করেন। তিনিই ছিলেন তুঘলক বংশের শেষ সুলতান। তিনি ২০ বছর রাজত্ব করে ১৪১৩ খৃস্টাব্দে মৃত্যুমুখে পতিত হন। তাঁর মৃত্যুর সাথে সাথেই তুঘলক বংশের পতন শুরু হয়।
এখানে অবশ্যই একথা লক্ষণীয় যে, বাদশাদের ইতিহাসে যেখানে যে বাদশাহ তাঁর নিজ ধর্মের (ইসলামের) আদর্শ হতে দূরে সরে পড়েছেন সেখানেই তাঁর পতন অনিবার্য হয়ে দেখা দিয়েছে। সুলতান মোয়েজুদ্দিন কায়কোবাদ, দ্বিতীয় গিয়াসুদ্দিন প্রমুখ বাদশাহর জীবনে এ সত্যেরই বিকাশ অতি প্রকটরূপে দেখা যায়। তাহলে কি একথা ঠিক নয় যে, ধর্মবিমুখ বাদশাহরাই ইতিহাসে স্বেচ্ছাচারিতা আর দুর্নীতির আলেখ্য অঙ্কন করে গেছেন আর যারা ধর্মপ্রাণ তাঁরা প্রত্যেকেই ছিলেন সৎ, চরিত্রবান, প্রজাপালক এবং উন্নত আদর্শ?
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/31
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।