hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৫৮
অক্ষয় কুমার দত্ত
নবদ্বীপ থেকে মাইল চারেক দূরে টুপী গ্রামে ১৮২০ খৃষ্টাব্দে অক্ষয় কুমার জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর মৃত্যু হয় ১৮৮৬ খৃষ্টাব্দে। তিনি রামমোহনের মত ইংরেজদের ভারত দখলকে আশীর্বাদ মনে করতেন না বরং বিরক্তিবোধ করতেন। এতদ্ব্যতীত ইংরেজ শাসনকে সর্বোতভাবে সমর্থন এবং রামমোহনের মত তাঁদের সঙ্গে গভীর বন্ধুত্ব স্থাপনে অপছন্দ করতেন। অক্ষয় বাবু বিলেত গিয়ে ভারতবাসীর জন্য করুণ আবেদন জানান যে, “অবস্থা বিপাকে, আমরা ইংরেজদের সানন্দে সব কিছু সম্পূর্ণ করে এদেশের রাজ সিংহাসনে বসিয়েছি। তাদের উচিত এদেশবাসীর যথোচিত মঙ্গল সাধন।” (দ্রঃ বাঙালীর রাষ্ট্রচিন্তা পৃঃ ৭৯)

তিনি প্রকাশ্য নাস্তিক ছিলেন তবে মদ খাওয়া পছন্দ করতেন না। সৌরেন্দ্র মোহন গঙ্গোপাধ্যায়ও এই উক্তির সমর্থনে বলেছেন, “রামমোহন সুরা পানের বিরোধী ছিলেন না; কিন্তু অক্ষয় কুমার স্পষ্টভাবেই সুরাপানের বিরোধিতা করেন।” (দ্রঃ বাঙালীর রাষ্ট্রচিন্তা, পৃঃ ৭৯)

প্রথম দিকে অক্ষয় কুমার ব্রাহ্ম ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন নিজস্ব মত ও স্বতন্ত্র পথে। তাঁর মতে ব্রাহ্মধর্ম সংক্রান্ত সমুদয় তত্ত্ব নিরূপিত হইয়াছে, আর কিছুই নির্ধারিত হইবার সম্ভাবনা নাই আমাদিগের এরূপ অভিপ্রায় নহে। ....সহস্র শতাব্দী পরেও যদি কোন অভিনব ধর্মতত্ত্ব উদ্ভাবিত হয় তাহাও আমাদের ব্রাহ্ম ধর্ম। (দ্রঃ তত্ত্ব বোধিনী পত্রিকা বৈশাখ, ১৭৭৭ শতাব্দ। ১৪১ সংখ্যা, পৃষ্ঠা ১০)

স্বভাবতই তাঁর মতবাদের ফলে ব্রাহ্মণদের সঙ্গে তাঁর তীব্র মতবিরোধ দেখা দিত। ইণ্ডিয়ার মিরর পত্রিকায় এ সম্পর্কে মন্তব্য প্রকাশিত হয়েছিল। যথা- The negative, critical and destructive part of the work of the Brahmo Samaj, thirty years ago, was principally done by him. " (hs" Bengali literature in the Nineteenth Century, by S.K.De. 606)

মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর তাঁকে নাস্তিক বলে মনে করতেন (দ্রঃ ‘আত্মজীবনী’ দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর। পৃঃ ৪১২) রাজ নারায়ণ বসু অক্ষয় কুমারকে অজ্ঞাবাদী বলে আখ্যায়িত করেছেন (দ্রঃ ‘আত্মচরিত’ রাজনারায়ণ, পৃ ৬৮) অবশ্য এসব মন্তব্যাদির পেছনে যুক্তিকেন্দ্রিক প্রমাণও যথেষ্ট বিদ্যমান। যথা অক্ষয় কুমারের মতে বিশ্ব জগৎ প্রকৃতির নিয়মে চলে, বিশ্বাতীত কোন ঈশয়ের নির্দেশ নয়। তাঁর কাছে প্রাকৃতিক নিয়মই ঈশ্বর সৃষ্ট নিয়ম। (দ্রঃ অক্ষয় কুমার দত্ত, “ ভারত বর্ষীয় উপাসক সম্প্রদায়”। ১ম খণ্ড। উপক্রমণিকা পৃঃ ৪০) তাছাড়া ব্রাহ্ম সমাজে সংস্কৃতের পরিবর্তে বাংলায় প্রার্থনার নিয়ম প্রবর্তন করেন। ব্রাক্ষের উপাসনায় পুষ্প, চন্দন, নৈবেদ্যাদি ব্যবহারের তিনি বিরোধী ছিলেন। মানুষ যখন পঞ্জিকা দেখে শুভ দিন নির্ধারণ করে যাত্রা করত তিনি তখন অশুভ দিনে ভ্রমণালে যাত্রা করতেন। যেদিন সকালে গঙ্গাস্নান ব্রত পালন করতেন সেই দিনেই তিনি বিপরীত দিকে গমন করে সরোবরে স্নান করতেন ইত্যাদি। (দ্রঃ B. B. Mojumdar, History of political thought', P-139)

অক্ষয় কুমার উপাসনা প্রার্থনা প্রভৃতি অনুষ্ঠানের ধার ধারতেন না। তিনি একবার কাল্পনিক পয়েন্টের উপর নির্ভর করে এক সমীকরণের সাহায্যে উপাসনার ভিত্তিহীনতা প্রমাণ করেন। তিনি বলেন, পরিশ্রম=শস্য। আর প্রার্থনা+পরিশ্রম=শস্য। অতএব প্রার্থণা=0। ব্রাহ্ম ধর্মের প্রথম যুগে বেদ ঈশ্বর প্রণীত ও অভ্রান্ত বলে বিশ্বাস করার পক্ষে কোন বাধা ছিল না। কিন্তু অক্ষয় বাবু ১৮৫০ খৃষ্টাব্দে এক বাৎসরিক সভায় প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন -বেদ ঈশ্বর প্রত্যাদিষ্ট নহে, বিশ্ব বেদান্তই প্রকৃত বেদান্ত। (দ্রঃ রাজ নারায়ণ বসু ‘আত্মচরিত পৃঃ ৬৮) মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথও এই মত সমর্থন ও স্বীকার করেন।

১৮৫৪ খৃষ্টাব্দে কিশোরী চাঁদ মিত্রের বাসগৃহে প্রতিষ্ঠিত যুক্তিবাদী নব্য সম্প্রদায়ের সমাজোন্নতি বিদায়নী সুহৃৎ সমিতি’তে অক্ষয় কুমারের নেতৃত্ব উল্লেখযোগ্য ছিল। ঐ দলে আরও ছিলেন নব্য শিক্ষিত ইয়ং বেঙ্গল দল। যথা রাধানাথ শিকদার, রসিক কৃষ্ণ মল্লিক, প্যারী চাঁদ মিত্র, হরিশ চন্দ্র মুখার্জি, রাজেন্দ্র লাল মিত্র প্রমুখ প্রখ্যাত ধর্ম শোধক ব্যক্তিবৃন্দ।

ইংরেজ সাহেব নীলকররা ভারতবাসীর ওপর যে অমানুষিক অত্যাচার করেছিল তার সত্যতা প্রকাশ্য দিবালোকের ন্যায় বিশ্বাসযোগ্য হলেও যেখানে রামমোহনের মতে নীলকরদের বিরুদ্ধে অত্যাচারের অভিযোগকে ‘অতিরঞ্জিত ও কায়েমি স্বার্থ বৃদ্ধি প্রসূত’ বলে অভিহিত করা হয়েছে সেখানে অক্ষয় কুমার, দীনবন্ধু মিত্র, হরিশচন্দ্র মুখার্জি প্রমুখ ব্যক্তি রামমোহনের উপরোক্ত মন্তব্যের বিরুদ্ধপক্ষে মত পোষণ করতেন।

কিন্তু তবুও অক্ষয় কুমারের জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক তিনি স্বাধীনতা আন্দোলন বা সংগ্রামের পক্ষপাতী ছিলেন না। তিনিই ইংরেজদের করুণার ওপর চরম ও পরমভাবে নির্ভরশীল ছিলেন। তিনি মনে করতেন যেহেতু ভারতীয়েরা ইংরেজদের সার্বভৌম কর্তৃত্বে অধিষ্ঠিত করে নিজেদের জীবন ও ধনসম্পদ তাদের কাছে সঁপে দিয়েছে, সেহেতু তাঁদেরই ওপর ভারতীয়দের কল্যাণ সাধনের মহান দায়িত্ব নির্ভর করে।” (সৌরেন্দ্র মোহন গঙ্গোপাধ্যায় রচিত বাঙালীর রাষ্ট্রচিন্তা পুস্তকের ৮০ পৃঃ দ্রষ্টব্য)

লক্ষ্য করার বিষয় এই যে, এমন দুর্বল ও ভীতচিত্ত মহাপুরুষ কেমন করে স্বাধীনতাকামী বা সংগ্রামী নেতা বলে বরণীয় ও স্মরণীয় হতে পারেন?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন