hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

২৯
একাদশ অধ্যায় খলজী বংশের উত্থান
খলজী বংশের আদি পরিচয় সম্বন্ধে ঐতিহাসিকদের মধ্যে মতবিরোধ রয়েছে। সাম্প্রতিক গবেষণার ফলে খলজী বংশকে তুর্কী জাতি সম্ভত বলে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কিন্তু দীর্ঘকাল আফগানিস্তানে বসবাসের ফলে তারা আফগানি জাতির সকল প্রকার বৈশিষ্ট্য গ্রহণ করেছিলেন বলে জিয়াউদ্দিন বারানী ও অন্য ঐতিহাসিকগণ ভ্রম বশত তাঁদের আফগানিস্তানের অধিবাসী বলে বর্ণনা করেছেন।

সুলতান জালালুদ্দিন খলজী- কায়কোবাদের মৃত্যুর পর ওমরাহ এবং খলজীদের মধ্যে সিংহাসনকেন্দ্রিক ঝগড়াতে খলজীদের জয় হয়। অবশেষে জালালুদ্দিন খলজী ১২৯০ খ্রীস্টাব্দের ১৩ জুন ৭০ বছর বয়সে সিংহাসনে আরোহণ করেই দৌলতখানায় প্রবেশ করে দুরাকাত শুকরানা (কৃতজ্ঞতা) নামায পড়লেন। (সালাতীনে দেহলীকে মজহবী রুজহানাত, ১৯৬ পৃঃ দ্রঃ)

১২৯২ খৃস্টাব্দে হালাকুর নাতী আবদুল্লাহ ভারত আক্রমণ করলে জালালুদ্দিন তার মোকাবিলা করেন। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই জালালুদ্দিনকে পিতা বলে সম্বোধন করতে থাকলে উভয়ের মধ্যে সম্প্রীতি স্থাপিত হয়। এরপর চেঙ্গিস খার এক নাতি ‘আলাগু' সদলবলে মুসলমান হয়ে ভারতের ইতিহাসে নব মুসলমান (New Mussalman) নামে খ্যাতি লাভ করেন। সাইদী মাওলানাকে হত্যা করা জালালুদ্দিনের রাজত্বকালের অন্যতম প্রধান ঘটনা। (ঐ পুস্তকের ২০৪-২০৫ পৃঃ দ্রঃ)

যাই হোক, সুলতান জালালুদ্দিন শরিয়তের খুব পাবন্দ ছিলেন। তিনি নামায-রোযার প্রতি অত্যধিক যত্নবান ছিলেন। এমনকি রোযাবস্থাতেই তাঁর মৃত্যু হয়। রমজান মাসে ভাইপো এবং জামাই আলাউদ্দিনের সাথে কাটরা যান। ইফতারের সময় হঠাৎ নুসরাত খানের ইঙ্গিতে মুহম্মদ সেলিম তাঁকে আক্রমণ করেন। অতঃপর তাঁকে শহীদ করা হয়। মৃত্যুর সময় তিনি কালেমা শাহাদাত (অর্থাৎ ইসলামের মূলমন্ত্র) পড়ছিলেন।

সুলতান আলাউদ্দিন খলজী- জালালুদ্দিনের মৃত্যুর পর ১২৯৬ খৃঃ নানা বিপদকে সঙ্গী করে আলাউদ্দীন খলজী দিল্লীর সিংহাসনে আরোহণ করেন। একদিকে জালালী প্রধানগণ বৃদ্ধ সুলতানের মৃত্যুর প্রতিশোধ গ্রহণে সচেষ্ট, অপরদিকে রাজমাতা মালিকা জাহানের চক্রান্তে রুকনুদ্দীন ও ইব্রাহিমের সিংহাসন লাভ, তদুপরি উপযুপরি মোঙ্গলদের আক্রমণ।

বস্তুত ভারতব্যাপী সাম্রাজ্য বিস্তারের প্রথম পথ প্রদর্শনই আলাউদ্দীনের সর্বপ্রধান কীর্তি। আলাউদ্দিনের সাম্রাজ্য বিস্তারনীতিকে উত্তর ভারত ও দাক্ষিণাত্য এই দুভাগে ভাগ করা যায়। ১২৯৭ খৃঃ গুজরাট ১৩০১ খৃঃ রণথম্ভোর, ১৩০৩ খৃঃ চিতোর ও ১৩০৫ খৃঃ মালব আলাউদ্দীনের সাম্রাজ্যভুক্ত হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, চিতোর প্রসঙ্গে আলাউদ্দীন পদ্মিনীর যে উপাখ্যান বহুল প্রচলিত আছে তার মূলে কোন ঐতিহাসিক সত্যতা নেই। সেনাপতি মালিক কাফুরের সহায়তায় দাক্ষিণাত্য বিজয়াভিযানে আলাউদ্দীন একে একে দেবগিরি বরঙ্গল, মাদুরা প্রভৃতি নিজ অধিকারভুক্ত করে রামেশ্বর সেতুবন্ধ পর্যন্ত মুসলিম প্রভুত্বের প্রতিষ্ঠা করে ১৩১৬ খৃস্টাব্দে পরলোক গমন করেন।

শাসন ব্যবস্থা- আলাউদ্দিনের শাসন ব্যবস্থায় উল্লেখযোগ্য কীর্তি হল মোটামুটি এইরূপঃ তিনি সামরিক বিভাগের সংস্কার সাধন করে সৈন্যদের বেতন নির্ধারণ করেন, জিনিসপত্রের দর বেঁধে দেন, মদ্যপান কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেন, দেশের বিভিন্ন স্থানের খবরাখবর আনয়নের জন্য গুপ্তচর নিয়োগ করেন, আমীর ওমরাহদের মধ্যে বৈবাহিক সম্বন্ধ সুলতানের অনুমতি ব্যতিত নিষিদ্ধ করেন ইত্যাদি।

চরিত্র ও কৃতিত্ব- মুঘল কুলগৌরব রবি আলমগীরের কথা বাদ দিলে তাঁর পূর্বে কোন মুসলমান এত বড় বিশাল রাজ্যের শাসক ছিলেন না। তাঁর ব্যক্তিগত চারিত্রিক কলঙ্কের কথা ব্যতিরেকে শাসনগত যোগ্যতা ও কৃতিত্ব নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। ধর্ম সম্বন্ধে বেপরোয়া মনোভাব, স্বার্থপরতা, পাপপ্রবণতা, কূটনীতির নামে প্রতারণার সূক্ষ্ম কৌশল তাঁর ব্যক্তিগত চরিত্রে মসিলিপ্ত করেছিল। বলাবাহুল্য, আলাউদ্দীনের এরূপ ধর্মদ্রোহীতাই পরবর্তী যুগে তাঁর উত্তরাধিকারীদের অনুপযুক্ততা ও মালিক কাফুরের ক্ষমতা লাভের ফলে খলজী বংশের পতনের অন্যতম কারণ। তবে ডাঃ ঈশ্বরী প্রসাদ লিখেছেন, “আলাউদ্দিন হিন্দুদের অত্যাচার-উৎপীড়ন করেছিলেন বলে যে তথ্যটি প্রচারিত তা সত্য নয়।” (Medieval India, Ishari Prasad, P-208)

মুরল্যাণ্ড এবং প্রফেসর হাবীব লিখেছেন, “রাবণী যেখানে হিন্দু শব্দ ব্যবহার করেছেন তাঁর উদ্দেশ্য হল যুত, মুকাদ্দাম, চৌধুরী ইত্যাদি। এরা ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। সুতরাং রাজনীতির প্রয়োজনে তাদের শক্তিহীন করার প্রয়োজন ছিল।” (Agrariam system during the Muslim Rule in India by more land, P-225 & An introduction to the study of Madieval India, by Prof: Habib. P-45, Aligarh University magajin) অর্থাৎ যুত, মুকাদ্দাম, চৌধুরীকে এবং হিন্দুদের তিনি ধর্মের কারণে নিধন করেননি। ডাঃ ত্রিপাঠী লিখেছেন, “তিনি মুসলমানদেরও ছাড়েননি; অতএব হিন্দুদের কীভাবে ছাড়া সম্ভব?” (Some aspects of Mulsim administration, by Dr. Tripathi. P-258)

বারণী- জনাব জিয়াউদ্দিন বারণী খলজী যুগের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঐতিহাসিক। তার ‘তারিখি ফিরোজ শাহী’ এক অমর ঐতিহাসিক সৃষ্টি। গ্রন্থটি হতে সমসাময়িক বাদশাহদের জীবন-বৃত্তান্ত ও বহু ঐতিহাসিক তথ্যের সন্ধান পাওয়া যায়। একালের ঐতিহাসিকরা তাঁর এই গ্রন্থ হতে বহু তথ্য সংগ্রহ করে তাঁর সত্যনিষ্ঠা ও বিচারবোধের প্রশংসা করেছেন।

আমীর খসরু- উর্দু সাহিত্যের জনক মহাকবি খসরু ছিলেন তাপস শ্রেষ্ঠ খাজা নিজামুদ্দিন আউলিয়ার সর্ব প্রিয় শিষ্য। তাঁর আসল নাম আবুল হাসান। তিনি ১২৫৩ খৃঃ জন্মে ১৩২৫ খৃঃ দিল্লীতে মারা যান। অতি অল্প বয়স থেকেই তিনি কবিতা লিখতেন। একবার বলবন পুত্র বুগরা খানের সৌজন্যে অনুষ্ঠিত কবিদের সভায় তাঁর স্বরচিত কাব্য শুনিয়ে একখানা মোহর পেয়েছিলেন।

পীর শ্রেষ্ঠ নিজামউদ্দীন (র.) আমীরকে অত্যধিক ভালবাসতেন। তাই মনীষী তাঁর শেষ জীবনের প্রার্থনা শিষ্যদের কাছে ব্যক্ত করেছিলেন- “আমীরকে দেখছি না কেন? আমার ডাক এসেছে, যেতে হবে। যদি আল্লাহ তায়ালা বলেন, পৃথিবী থেকে কী এনেছিস আমার জন্য?” তখন বলব, “পৃথিবী ঘুরে তোমার জন্য এনেছি এক সুমহান কবি, যার হৃদয় ফুলের মত সুন্দর, নাম তার আমীর খসরু।” নিজামুদ্দিন (র.)-এর মৃত্যু সংবাদ শুনে শিশুর মতো কাঁদতে কাঁদতে কবি ছুটে এলেন বাংলাদেশ থেকে দিল্লীতে। তারপর দিবানিশি যোগীর কবরের পাশে শুয়ে কাঁদতে কাঁদতে প্রাণ বিসর্জন করলেন “ভারতের তোতা পাখি’ নামে খ্যাত দিল্লী তথা সারা ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ মুসলমান কবি ও ঐতিহাসিক আমীর খসরু।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন