মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
অষ্টদশ অধ্যায়
ঐতিহাসিক নেতাদের গুপ্ত ঐতিহাসিক রহস্য
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/54
তাহলে ভারতের বিভিন্ন স্থানের বিপ্লবের মোটামুটি তথ্য জানা গেল কিন্তু ভারতের রাজধানী, প্রাণকেন্দ্র কলকাতা তথা বঙ্গদেশের বিপ্লবের কথা জানার জন্য পাঠকমাত্ৰই উদ্বিগ্ন হয়ে প্রতীক্ষায় আছেন। বঙ্গের বিষয়ে বলতে গিয়ে বলতে হয় যে চতুর ইংরেজ নিজের রুচীমাফিক নাগরিক তৈরি করতে কিছু স্কুল, কলেজ ও ইউনিভার্সিটির জন্ম দেয় আর সুদক্ষ বিচক্ষণ ইংরেজ সৃষ্ট ভারত প্রেমিককে, ভারতবাসীকে শিকার করার জন্য লেলিয়ে দেওয়া হয়। অনেকের মতে মিঃ ডেভিড হেয়ার হিন্দু প্রেমিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন আর মিঃ লং মুসলমান প্রেমিকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।
মিঃ ডেভিড হেয়ার ১৭৭০ খৃঃ জন্ম গ্রহণ করেন আর ১৮৪২ খৃঃ মারা যান। তিনি প্রথমে সূক্ষ্ম ছুঁচের মত কলকাতায় মাত্র একজন ঘড়িওয়ালা হয়ে দোকান করেন। আর তখন ঘড়ি পরতো সাধারণ মানুষের পরিবর্তে হোমরা চোমরা নামী ও দামি লোকেরা। ঐ খরিদদারগুলিই তাঁর প্রথম শিকারে পরিণত হয়। প্রত্যেক চলতি ইতিহাসে কতকগুলি সর্বজন স্বীকৃত তথ্য পাওয়া যায় যেমন তিনি নাস্তিক ছিলেন সুতরাং খ্রীষ্টান ধর্ম ও খ্রীষ্টান রাজত্ব তাঁর কাছে গ্রহণযোগ্য ছিল না। এবং ভারতবাসীর শিক্ষার উন্নতির জন্য আর ভারতের মানুষের ধর্ম ও সমাজের গোঁড়ামি যুক্ত কুসংস্কারের বিরুদ্ধে তার ঐতিহাসিক ভূমিকা নাকি অতুলনীয়।
১৮০০ হতে ১৮১৪ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি ঘড়ির কাজে প্রায় লাখ খানেক টাকা রোজগার করলেন এবং তা ভারতবাসীর শিক্ষা দীক্ষার জন্য দান করলেন। ১৮২০ ঐ তিনি ঘড়ির ব্যবসা ছেড়ে দিয়ে তার গোটা দেহ, মন, সময় সবই ব্যয় করলেন ভারতের জনসাধারণের জন্য। তাই কলকাতা কলেজ স্কোয়ারে কিছু জমি কেনেন এবং ১৮১৫ খ্রিঃ হিন্দুদের নিয়ে হিন্দু কলেজের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন। কিছু দিনের মধেই হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়।
কিন্তু এখানে প্রশ্ন হচ্ছে যিনি নাস্তিক, কোন ধর্ম মানেন না তিনি এমন কলেজ কেন করবেন যা মুসলমান ও অন্য জাতিকে বঞ্চিত করবে?
তারপর হিন্দু মহিলাদের জন্য ১৮২৪ খ্রীঃ লেডিজ সোসাইটি ফর নেটিভ ফিমেল এডুকেশন স্থাপন করলেন। রাধাকান্ত দেব একজন বিখ্যাত গোঁড়া হিন্দু, যিনি সতীদাহ প্রথার পক্ষপাতী। একবার মুসলমান ছাত্র ভর্তি করা চলতে পারে কিনা কথা উঠলে রাধাকান্তদেব তীব্র প্রতিবাদ করেন এবং জয়ী হন। সেই রাধাকান্তের সঙ্গে ডেভিড হেয়ারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠতা ছিল। গোঁড়া রাধাকান্ত দেবের বাড়িতে যখন হিন্দু মেয়েদের বাৎসরিক পরীক্ষা হতো তখন নিয়মিতভাবে হেয়ার উপস্থিত থাকতেন। রাধাকান্ত মুসলমানদের বরণ করতে পারলো না কিন্তু কেমন করে নাস্তিক গোভক্ষক ডেভিডকে গ্রহণ করতে পারলেন তা চিন্তা করলে ইংরেজদের বাহাদুরীর প্রশংসা করতে হয়। (দ্রঃ যোগেশচন্দ্র বাগল, বাংলার জনশিক্ষা, বিশ্ব ভারতী গ্রন্থালয়, Amit sen, Notes on the Bengal Renaissance, PP.14-15)
সর্ব ভারতীয় অফিস আদালতে ফারসী ভাষা তুলে দেয়ার গোড়া পত্তন তিনিই করেন এবং সরকার হতে তা মুঞ্জুর করিয়ে হিন্দুদের জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন। ভারতীয় কুলীদের বাইরে চালান দেওয়ার ব্যাপারে হেয়ার হিন্দুদের সঙ্গে নিয়ে আন্দোলন গড়ে তুললেন এবং ঐ কু-প্রথা ইংরেজ সরকারকে বন্ধ করতে বাধ্য করেন। আর ইংরেজ জজদের সাথে ভারতীয় জুরী প্রথার প্রবর্তন করেও তিনি খ্যাতি লাভ করেন। তাই আমরা বেশির ভাগ মানুষ তাকে ভারত দরদি বলে মনে করি কিন্তু সূক্ষ্ম বিচারশীল মানুষ আজ অন্য রকম বুঝতে দ্বিধাবোধ করছে না যে ঐ নেতাকে কই কারাগারে তো পচতে হয়নি, কই ফাঁসি দেওয়ার ভয় তো দেখানো হয়নি। কই তাঁর কোন দাবীই তো প্রত্যাখ্যাত হয়নি? তাহলে চোরে চোরে মাসতুত ভাই বললে বাধা দেওয়া যাবে কী করে? আর একজন তাঁর বিখ্যাত সহকর্মী ও সহমর্মী তিনি হচ্ছেন মিঃ ডিরোজিয়ো। তিনিও দাবি করতেন তিনি নাকি নাস্তিক, তাই ইংরেজবিরোধী।
১৮৪২ খৃঃ হেয়ার মারা গেলেও তাঁর চক্রান্ত চালানোর দায়িত্ব দিয়ে যান ডিরোজিয়ো সাহেবের হাতে। অবশ্য কায়দা এইটিই ছিল হেয়ার যা কিছু করেছিলেন তিনি কাগজে-কলমে মার্বেল পাথরে নিজেকে লাগিয়ে রাখেননি, করেছিলেন অত্যন্ত গোপনে। যখন মারা যান তখন খৃষ্টানদের কবর স্থানের পরিবর্তে তিনি তাঁর নিজের কেনা জায়গার ওপর কবর দেওয়ার ব্যবস্থা করে রেখেছিলেন। কিন্তু যিনি নাস্তিক তার দেহ তার প্রাণপ্রিয় হিন্দু জাতির মত দাহ করলেই তো উদারতা প্রকাশ পেত অথবা নদীতে মৃতদেহ ভাসানোর কথাও তো বলে যেতে পারতেন অথবা মৃতদেহ কবরস্থ করার নিয়মকানুন খৃস্টান মতে নাও তো করতে পারতেন? তার সেই সস্তার বাজারে মাত্র কয়েক বহর ঘড়ির কাজ করে দুহাতে লক্ষ লক্ষ টাকা যা তিনি দিয়েছেন তা যদি হিসাব করা হয় তাহলে দেখা যাবে তাঁর রোজগারের বহু গুণ বেশি। ঐ বেশি টাকা কে দিয়েছিল তাঁকে কাল মানুষ চিন্তা করেনি আজ করতে শিখেছে।
এই হেয়ার ও ডিরোজিয়োর স্বপ্ন ও ডিউটি ছিল হিন্দু জাতিকে শিক্ষিত করা এবং শিক্ষার সঙ্গে তাদের হাতের পুতুল তৈরি করে মুসলমানদের বিরুদ্ধবাদী করে তোলা এবং স্বধর্মের পরিবর্তে খৃষ্টান ধর্ম, দর্শন সভ্যতা ও সংস্কৃতির ওপর শ্রদ্ধাশীল করে তোলা। এখন কথা হচ্ছে ইংরেজরা কতটা সাফল্য অর্জন করেছিল তা পরবর্তী আলোচনায় স্বচ্ছ হয়ে উঠবে।
আমাদের ভোলা উচিত হবে না যে বিপ্লব আন্দোলন, বিদ্রোহ, প্রভৃতি গণ্ডগোল বা হট্টগোলগুলি অস্ত্রশস্ত্রের সঙ্গেই সীমিত নয় বরং তার উৎস বা গোড়া হচ্ছে কলম আর কালি আর কালি কলম এবং কাগজের পেছনে থাকে মগজ। তাই ইংরেজ নিজেদের তৈরি কলেজ বা মাদরাসাগুলি করেছিলো নিজেদের স্বার্থে মগজ ধোলাইয়ের জন্যই।
ইংরেজরা মুসলমানদের দুর্ব্যবহারের প্রতিশোধের যত রকমের অত্যাচার আছে সবই প্রয়োগ করতে কুণ্ঠাবোধ করেনি। মুসলমানদের জাতে মারতে না পেরে ভাতে মারতে এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যাতে সারা ভারতের মুসলমান দরিদ্র শ্রেণীতে পরিণত হতে নিশ্চিতভাবে বাধ্য হয়। তবুও এত অভাব অনটন আর প্রতিকূলতার ভেতরেও বন্দুক তলোয়ার চালু রাখার জন্য পত্রপত্রিকা প্রচার করে যে ভূমিকা পালন করেছে তা খুবই প্রণিধান যোগ্য। হাতে লেখা প্রচুর পত্রপত্রিকা বা বুলেটিনগুলির নাম দিলে বইটি খুব বেড়ে উঠবে তাই কয়েকটি ছাপা পত্রিকার কথা জানানো হচ্ছে এবং সেগুলিই জানানো হচ্ছে, যেগুলি প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর বের করা হয়েছিল। তার কারণ আন্দোলনকে জিইয়ে রাখবার জন্য এবং ইংরেজের স্বপক্ষে পত্রিকাগুলির প্রতিবাদ ও তাদের বিপক্ষ পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য।
পারিল বার্তাবহ সম্পাদক মঃ আনিসুদিন, ১৮৭৪ খ্রীঃ ঢাকা
আখবারে ইসলামিয়া ১৮৮৪ খৃঃ ময়মনসিংহ।
হিন্দু মুসলিম সম্মিলনী ১৮৮৭ খৃঃ,যশোর।
সুধাকর ১৮৮৯ খৃঃ কলকাতা।
হিতকরী ১৮৯০ খৃঃ, কুষ্টিয়া, সম্পাদক মোশাররাফ হসেন।
ইসলাম প্রচারক ১৮৯১ খৃঃ, সম্পাদক রেয়াজুদ্দিন আহমাদ ও শেখ আঃ রহিম।
মিহির ১৮৯২ খৃঃ সম্পাদক আঃ রহিম।
কোহিনুর ১৮৯৮ খৃঃ পূর্ববঙ্গ, সম্পাদক মওলুবী রওশন আলী।
প্রচারক ১৮৯৯ খৃঃ কলকাতা।
নূরুল ঈমান ১৯০১ কলকাতা।
নূরুল ইসলাম এটিও ১৯০১ খৃষ্টাব্দে যশোর হতে প্রচারিত হতো।
ভারত সূহৃদঃ ১৯০১ খৃঃ কলকাতা হতে বের হতো।
সুলতানঃ কলকাতা হতে প্রকাশিত হতো (১৯০২)।
হানিফঃ ঢাকার ময়মন জেলা হতে আত্মবিকাশ করেছিল (১৯০৩)।
নবনূরঃ এটিও ১৯০৩ সালেই কলকাতা হতে বের হয়েছিল।
মোসলেম হিতৌষীঃ বঙ্গীয় চৌদ্দ শতাব্দীর প্রথম দশকে, সম্পাদক মুন্সী আঃ রহিম সাহেব। ইনি মোসলেম সুহৃদ নামক এক পত্রিকার সঙ্গেও সংশ্লিষ্ট ছিলেন বলে জানা যায়।
মূসলমানঃ কলকাতা হতে প্রকাশিত হতো (১৯০৬)।
ইসলাম সুহৃদঃ ১৯০৬, মৌলানা আবুল সোবহান, ঢাকা।
বাসনাঃ ১৯০৮, রংপুর।
ইসলামঃ বিংশ শতকের প্রথম দশকে কলকাতা ‘ল’ কলেজে আইন অধ্যয়নরত মৌলানা তসলীমুদ্দীন আহমাদ ও মৌঃ একিনুদ্দিন আহমাদ এবং কয়েকজন তরুণের ছাত্র জীবনের প্রচেষ্টায় বাংলার প্রথম মুসলিম পরিচালিত সাহিত্য মাসিক।
মোসলেম হিতৌষীঃ ১৯১১, কলকাতায়।
আল এসলামঃ ১৩২১ সালে, সম্পাদক মৌলানা আকরাম খাঁ, সহকারী সম্পাদক, সাংবাদিক মৌঃ মনিরুজ্জামান এসলামাবাদী। তেজস্বী লেখক মাওলানা ফজলুল হক সেলসীও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন।
ইসলামঃ ১৯১৫, সম্পাদক আবদুর রশীদ।
আহলে হাদীসঃ এটিও ১৯১৫ সালে জন্মলাভ করেছে। প্রথম দুই এক সংখ্যার প্রধান সম্পাদক ছিলেন মৌলানা আবদুল হাকীম সাহেব। যুগ্ম সম্পাদক মৌঃ মো বাবর আলী। পরে বাবর আলীই ছিলেন স্থায়ী সম্পাদক
মসজিদ ১৯১৭, সম্পাদক মুন্সী গোলাম রহমান সাহেব, কলকাতা।
ইসলাম দর্শনঃ ১৯২০ প্রকাশনায় জনাব মুনসী আবদুর রহিম সাহেব।
ধুমকেতু এই প্রখ্যাত অর্ধ সাপ্তাহিক পত্রিকাটি ১৯২২ খৃঃ ১২ আগষ্ট বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম কতৃক পরিচালিত ও সম্পাদিত। এর কর্মসচীব ছিলেন শ্রী শান্তিপদ সিংহ, আর মুদ্রাকর ও প্রকাশক ছিলেন মুসলিম পাবলিশিং হাউসের কর্মকর্তা মৌলানা আফজালুল হক সাহেব। কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নজরুলের ‘ধুমকেতু’ সম্বন্ধে যে বাণী পাঠিয়ে ছিলেন তা নিম্নরূপঃ
কাজী নজরুল ইসলাম কল্যাণীয়েষু
আয়, চলে আয়, রে ধূমকেতু,
আঁধারে বাঁধ অগ্নিসেতু,
দুর্দিনের এই দুর্গশিরে
উড়িয়ে দে তোর বিজয়কেতন।
অলক্ষণের তিলক রেখা
রাতের ফালে হোক না লেখা,
জাগিয়ে দেরে চমক মেরে
আছে যারা অর্ধচেতন।
—শ্রী রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। ২৪ শে শ্রাবণ, ১৩২৯
ধুমকেতু কেবল মাত্র একটি পত্রিকাই নয়, ইতিহাসও। এতে স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক ঐতিহাসিক তথ্যের সন্ধান মেলে।
মোসলেম জগৎ' ১৯২২ খৃষ্টাব্দেই কলিকাতায় প্রকাশ। এর সম্পাদক ছিলেন মৌলানা আঃ রশিদ সাহেব। সম্পাদকীয় বিভাগে সংশ্লিষ্ট কবি শাহাদত হোসেন এবং কবি খান মহম্মদ মঈনুদ্দিন প্রমুখ খ্যাতনামা ব্যক্তিদের সরকারবিরোধী রচনার জন্য কারাবরণ করতে হয়েছিল।
সাম্যবাদী' প্রথম দিকে বিখ্যাত সাংবাদিক মৌঃ মহাম্মদ ওয়াজেদ আলী এবং পরে সুসাহিত্যিক, সুসাংবাদিক ও সুকবিরূপে বিশিষ্ট জনাব মঈনুদ্দিন খান সাহেবের সম্পাদনায় এটিও ১৯২২ খৃঃ প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
‘সোনার ভারত’ ১৯২৩ খৃঃ আত্মপ্রকাশ করে। সম্পাদক ছিলেন সাংবাদিক জনাব মৌঃ জবেদ আলি। ইনি সাপ্তাহিক মোহাম্মদীর সম্পাদকীয় বিভাগে কাজ করেছিলেন।
সৌরভ' মুর্শিদাবাদের বহরমপুর হতে ১৯২৫ খৃঃ এর প্রকাশ। সম্পাদক ছিলেন সুখ্যাত অধ্যাপক, সাহিত্যিক ও রাজনীতিবিদ মোহাঃ রেজাউল করিম সাহেব।
তরুণ পত্র’ সাহিত্যিক আবুল হোসেন সাহেবের প্রকাশনায় ও জনাব ফজলুল করিম মল্লিকের সম্পাদনায় ১৯২৫ অব্দে ঢাকা হতে বের হয়।
‘জিয়া-উল-ইসলাম মৌঃ আবদুশ শুকুর সাহেব কর্তৃক প্রকাশিত ও জনাব মৌঃ আঃ ওয়াহিদ কর্তৃক সম্পাদিত ১৯২৫-এর জানুয়ারিতে প্রকাশ।
অভিযান ১৯২৬ খৃঃ ঢাকায় মুসলিম সাহিত্য সমাজ'-এর মুখপাত্ররূপে বের হয়েছিল। সুসাহিত্যিক মৌলানা আবুল হোসেন ছিলেন এর অগ্রনায়ক।
সাহিত্যিক সুবিখ্যাত সাহিত্যিক মহঃ ইয়াকুব আলি চৌধুরী ও স্বনামধন্য কবি গোলাম মোস্তফা সাহেবদ্বয়ের সম্পাদনায় বঙ্গীয় মুসলমান সাহিত্য সমিতির’র মুখপাত্ররূপে ১৯২৬ খৃঃ প্রকাশিত হয়েছিল।
হেলাল মৌলানা শামসুর রহমান সাহেবের সম্পাদনায় সাহিত্য গগনে এরও প্রথম উদয় ১৯২৬ সালে কলকাতায়।
ইসলাম মৌলানা মোহাঃ আঃ মোনয়েম সাহেবেব প্রকাশনায় বৰ্মা মুলকের রেঙ্গুন, হতে এটি ১৯২৭ খৃঃ সেপ্টেম্বরে প্রকাশ হয়েছিল।
তবলীগ ১৯২৭ সালে প্রকাশ লাভ করেছিল। সম্পাদক ছিলেন মৌলানা শামসুর রহমান ও মাওলানা দেলওয়ার হোসেন সাহেবান।
নওরোজ'-এর প্রথম প্রকাশ ঐ ১৯২৭ সালেই। সম্পাদক ছিলেন মৌলানা আফজালুল হক। পত্রিকাটি বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলাম ও বিশ্বকবি রবীন্দ্ৰনাথ ঠাকুরের রচনা সম্ভারে পরিপুষ্ট ও চিত্তাকর্ষক ছিল।
জাগরণ এটিও মুনসী আহমাদ সাহেবের সম্পাদনায় ঢাকার সাত রওজা হতে ১৯২৭ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
তরুণ জনাব এম মেসের আলী সাহেবের সম্পাদনায় ১৯২৮ সালে বগুড়া হতে প্রকাশিত হয়েছিল।
তাইদে ইসলাম এটিও ১৯২৮ সালে রংপুর হতে প্রকাশিক। সম্পাদক ছিলেন জনাব শাহ সৈয়দ আবুল কাশের আল কাদেরী সাহেব।
তরী নব মুসলিম মিঃ সিরাজুল হকের অধিনায়কত্বে ১৯২৮ সালেই পত্রিকাটি উন্নতির সোপানে আরোহন করে।
‘সহচর এই সহচরের সাহায্য পাওয়া গিয়েছিল ১৯২৮ সালে। এর প্রথম দিকের সম্পাদক ছিলেন মৌলানা সৈয়দ নওশের আলি সাহেব। পরে সুখ্যাত সাহিত্যিক মৌলানা এমদাদ আলী সাহেব ছিলেন এর স্থায়ী সম্পাদক।
জয়তী কবি আবদুল কাদের সাহেবের সুসম্পাদনায় ও বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম-এর রচনায় সমৃদ্ধ হয়ে ১৯৩১ সালে কলকাতা হতে বের হয়েছিল।
‘সুন্নাত-আল-জামাত’ ১৯৩২ খৃঃ এর জন্ম। সম্পাদক ছিলেন খ্যাতনামা সাহিত্যিক মাওলানা মোঃ রুহুল আমিন সাহেব।
গুলিস্তা কলকাতার বিখ্যাত সাহিত্যিক ও তৃতীয় ম্যাজিষ্ট্রেট এস, ওয়াজেদ আলী (বি-এ-ক্যান্টব, বার-এট-ল) সাহেবের প্রচেষ্টা ও অর্থে এটিও ১৯৩২ খৃঃ প্রতিষ্ঠিত। জনাব এস শামসের আলী ও জনাব আবদুল রউফ উকীল সাহেবদ্বয়ের নামের পত্রিকাটি চললেও এর সম্পাদক ছিলেন খ্যাতনামা ঔপন্যাসিক জনাব ঈদ্রিশ আলী সাহেব।
‘আল ইসলাহ' এটিও ১৯৩২ খৃঃ সিলেট হতে প্রকাশিত। এর সম্পাদক ছিলেন সিলেট কেন্দ্রীয় সাহিত্য সংসদের মুখপাত্র সুরল হক সাহেব, যিনি স্বদেশ সমাজ ও সাহিত্য সেবায় স্বীকৃতি স্বরূপ পাক সরকারের কাছে টি, কে, উপাধিসহ প্রচুর পরিমাণে অর্থ সাহায্য পেয়েছিলেন তাঁর সংসদের জন্য। তিনি তাঁর পাঠাগারে আঠারো হাজার পুস্তক সংগ্রহ করেছিলেন।
মার্কস পন্থী কমরেড আবদুল হালীম কর্তৃক পরিচালিত। এর আত্মপ্রকাশের কাল ১৯৩৩ খৃষ্টাব্দ।
আলফারুক সম্ভবত এটিও ঐ ১৯৩৩ খৃষ্টাব্দেই জন্ম লাভ করেছিল।
সিরাজ আনুমানিক ১৯৩৩ সালে পূর্ববঙ্গের পুড়রা নামক স্থান হতে প্রকাশিত হোত। এতে কবি নজরুল, কবি গোলাম মোস্তফা ও অধ্যাপক হুমায়ুন কবীর প্রমুখ কীর্তিমানদের রচনা পরিবেশিত হতো।
ছায়া বীথি কথা শিল্পী জনাব নাজিরুল ইসলাম সাহেবের সম্পাদনায় কলকাতা হতে ১৯৩৪ খৃঃ জন্মগ্রহণ করেছিলো।
হেদায়েত’ ১৯৩৬ খৃষ্টাব্দে খুলনা হতে প্রকাশিত। এর প্রচারকর্মী ছিলেন মৌলানা মোয়েজুদ্দিন হমিদী।
আজাদ ১৯৩৬ সালে মুসলিম পরিচালিত বাংলার দৈনিক পত্রিকার অন্যতমরূপে এটি ৯১ নং আপার সার্কুলার রোড ঐ কলকাতা হতে প্রকাশিত হয়েছিল। এর সম্পাদক ছিলেন খ্যাতনামা সাংবাদিক, সাহিত্যিক ও ঐতিহাসিক মৌলানা মোহাঃ আকরাম খাঁ সাহেব। মৌলবী নাজির আহমাদ চৌধুরী সাহেবের প্রকাশনায় এবং মৌলানা মহম্মদ খায়রুল আনাম খাঁ নাদভী সাহেবের কর্মাধ্যক্ষে এটি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল।
সন্ধানী মৌলানা মোহাম্মদ আবু বকর (বি,এ) সাহেবের সম্পাদনায় এটি অবিভক্ত বঙ্গের কুষ্টিয়ায় ১৯৩৬ সালে জন্ম নিয়েছিল।
পাকিস্তান এটি ১৯৩৭ সালে প্রকাশিত। সম্পাদক ছিলেন জনাব মৌলানা মোহাম্মদ মোদাব্বের সাহেব।
গুল বাগিচা সুসাহিত্যিক মৌলানা আবদুল ওহাব সিদ্দিকী কর্তৃক এটিও ১৯৩৭ সালে কলকাতা হতে বিকাশ লাভ করেছিল।
কৃষক ১৯৩৮ সালে সম্পাদক মিঃ আবুল মনসুর আহমাদ সাহেবের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় এই কৃষকের অভিযান শুরু।
আঙ্গুর ১৯৩১ সালে জন্মকাল। গবেষক, অগ্রগণ্য সাহিত্যিক ও বহু ভাষায় অসাধারণ পাণ্ডিত্যের অধিকারী মৌলানা ডাক্তার মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ এন এ, বি-এল, ডি-লিট সম্পাদিত এটিই ঢাকার মুসলিম পরিচালিত প্রথম শিশু মাসিক।
চতুরঙ্গ কলকাতা হতে এটিও ১৯৩৯ সালে আত্মপ্রকাশ করেছিল। সম্পাদক ছিলেন ভারত রাষ্ট্রের সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী পণ্ডিত, কবি ও সুসাহিত্যিক মিঃ হুমায়ুন কবীর। পত্রিকাটির বিশেষ বৈশিষ্ট শিক্ষিত ব্যতিরেকে এর গ্রাহক করা হতো না।
মীনার জনাব সাহিত্যিক মওলবী ময়নুদ্দিন হোসায়েন সাহেব সম্পাদিত কলকাতার বুকে ঐ ১৯৩৯ সালেই এই মীনারটি নির্মিত হয়।
মোসলেম ১৯৪১ সালে কলকাতার ৪৭ নং রিপন স্ট্রিটে এর জন্ম। সম্পাদক ছিলেন জনাব হাশেম সাহেব ও খ্যাতনামা নেতা এবং দেশ ও জাতির সেবক, বাংলা মায়ের সুসন্তান ও সুপ্রসিদ্ধ সাংবাদিক জনাব মৌঃ এ কে ফজলুল হক।
নওরোজ’, পাকিস্তান সরকার কর্তৃক টি কে উপাধিপ্রাপ্ত সাহিত্য সেবায় হাজী মোহাম্মদ হেমায়েত আলী সাহেবের সম্পাদনায় এটি ১৯৪১ সালে দিনাজপুর হতে প্রকাশিত।
আজান', ১৯৪২ সালে এর জন্ম। মৌঃ এ কে এম নূর মহম্মদ ও সহকারী মৌঃ মোহাঃ আবদুল কাদের সাহেব ছিলেন এর সম্পাদক।
‘আল আমান’ এর প্রথম দিকের সম্পাদক মৌলানা আঃ রহিম চৌধুরী ও শেষের দিকের মৌলানা আবদুস সাত্তার। পৃথিম পাশার সিলেট নামক স্থান হতে ১৯৪২ সালে প্রকাশিত।
‘মীনার’ এটি বেগম ফাত্তাজয়া সাহেবার প্রচেষ্টায় ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত সর্বপ্রথম মহিলা সম্পাদিত উল্লেখযোগ্য সাহিত্য।
মিল্লাত চৌদ্দ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে এর জন্ম (আনুমানিক ১৯৪৫ খৃষ্টাব্দে)। সম্পাদক ছিলেন প্রখ্যাত নেতা মৌলানা আবু হাশেম সাহেব। যার নাম আগেই উল্লেখ করা হয়েছে।
ইত্তেহাদ ১৯৪৬ অন্যতম বাংলা দৈনিক পত্রিকারূপে প্রকাশ। সম্পাদক ছিলেন মৌলানা আবুল আহমাদ সাহেব।
সাপ্তাহিক তকবীর, মৌলানা আজিজুর রহমান সাহেবের সম্পাদনায় ১৯৪৭ সালে প্রথম প্রকাশ।
জিন্দেগী জনাব এস এম বজলুল হক সম্পাদিত ১৯৪৭ সালের সাপ্তাহিক পত্রিকা। আবার অনেকে মনে করেন এটা ছিল দৈনিক পত্রিকা।
সাপ্তাহিক দৈনিকঃ- সম্পাদক মোঃ আবদুল গফুর সাহেবের সুশালায় ১৯৪৮ সালে ঢাকা হতে বের হতো।
কোরআন প্রচার - জন্ম ১৯৪৮ খৃষ্টাব্দে সম্পাদক ছিলেন আলেম, সাহিত্যিক জনাব মৌঃ মোহাঃ রফিকুল হাসান সাহেব কলকাতা হতে প্রকাশিত।
আজানঃ- এই আজানের ধ্বনি প্রথম ধ্বনিত হয়েছিল ১৯৪৯ খৃষ্টাব্দে বর্ধমান হতে। এর পরিচালক ছিলেন খ্যাতনামা সম্ভ্রান্ত রাজনীতিবিদ বাগ্নী ও সাহিত্যিক জনাব মৌ আবুল হাসেম সাহেব যিনি “ইসলাম ও অর্থনৈতিক সমস্যা” Islam and Economic problem, creed & Islam প্রভৃতি অনেক গ্রন্থের প্রণেতা।
তবলীগঃ- জন্ম ১৯৫১ -এর ২০ সেপ্টেম্বরে সম্পাদক মৌঃ ফজলুল হক সাহেব।
ওয়াতন - ১৯৫২ খৃষ্টাব্দে তাইয়েবুল হক সাহেবের সম্পাদনায় এই পত্রিকাটি প্রকাশ হতো। কাজী নজরুল ইসলামের কয়েকটি অপ্রকাশিত কবিতা এতে প্রকাশ পেয়েছিল। জনাব তৈয়েবুল হক সাহেব ছিলেন স্বাধীনতা বিপ্লবে বিশেষ অংশগ্রহণকারী নেতা দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের সঙ্গে তাঁদের পরিবারের সৌহার্দ্যতা ছিল। ডঃ বিধানচন্দ্র রায়, শ্রী প্রফুল্ল সেন প্রমুখ জননেতার তিনি অত্যন্ত প্রিয়ছিলেন।
সিরাজ- মুর্শিদাবাদের ধুলিয়ান হতে ১৯৫৩ খৃষ্টাব্দে কবি মোদাস্বর হোসেন এবং মৌঃ জসিমুদ্দিন ও সোহরাব আলীর প্রচেষ্টায় বের হয়েছিল।
ত্রিলেখাঃ- ১৯৫৩ খৃস্টাব্দে মালদহ হতে প্রকাশিত। সম্পাদক ছিলেন দিলওয়ার হোসেন।
ইনসাফঃ জন্ম ১৯৫৩ খৃষ্টাব্দে। পরিচালক মৌঃ শেখ শামসের আলী এবং সম্পাদক মোঃ মোসলেম আলী।
আওয়াজ - অনুমানিক ১৯৫৪-৫৫ অব্দে জন্ম। জনাব মাওঃ আবুল হান্নান আবকারী সাহেবের পৃষ্ঠপোষকতায় ও সাহিত্যিক আঃ আজিজ-আল-আমানের সম্পাদনায় কলকাতা হতে প্রকাশিত।
আহবান- মহম্মদ হাবিবর রহমানের সম্পাদকীয়তে ১৯৫৫ সালে। মালদহ দক্ষিণ বালুচর হতে প্রকাশিত।
মশালঃ- জন্মগ্রহণ করেছিল ১৯৫৫ সালে সম্পাদক ছিলেন ২৪ পরগনা জেলার গোবরডাঙ্গা নামক স্থানের তরুণ। সাহিত্যিকদ্বয় জনাব মনিরুজ্জামান ও আখতারুল জামাত।
মাসিক আজাদঃ এর জন্মও ১৯৫৫ সালে কলকাতায়। সম্পাদক ছিলেন সুসাহিত্যিক খোন্দকার নুরুল ইসলাম ও জনাব গোলাম আহমাদ সাহেবান।
উন্মেষঃ- ১৯৫৬ তে কাটোয়া হতে প্রকাশ। প্রথম দিকে সম্পাদক ছিলেন দিলীপকুমার দাস ও নুরুল হল। শেষে মহাম্মদ হুদাই এককভাবে ছিলেন।
আজঃ- মোহম্মদ মোস্তাফা হোসেনের সম্পাদনায় সাপ্তাহিকরূপে ১৯৫৭তে প্রকাশ হয়েছিল।
দিশারীঃ সম্পাদক মন্ডলী জনাব অধ্যক্ষ মিঃ এব্রাহিম খান জনাব মিঃ আবুল হাসেম, জনাব ডাঃ মোঃ সিরাজুল হক ও মৌঃ মোহিউদ্দিন খাঁ সাহেদের প্রচেষ্টায় দারুল ইসলামিক একাডেমীর মুখপাত্ররূপ ১৯৬০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
আভাবঃ- আসামের শিলচর নামক স্থান হতে ১৯৬০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। সম্পাদক ছিলেন তরুণ সাহিত্যিক এম, জি, কিবরিয়া সাহেব। ইসলামিক একাডেমী পত্রিকা, পত্রিকাটির সম্পাদক মৌলানা আবুল হাশেম ও সহ সম্পাদক মৌঃ ফারুক আহমাদ সাহেবানের অক্লান্ত পরিশ্রমে ঢাকা ইসলামিক একাডেমীর মুখপাত্ররূপে ১৯৬১ সালে জন্ম লাভ করেছিল। মিঃ আবদুল মওদুদ সাহেব কর্তৃক অনূদিত “The Indian Mussalmans" নাকম মিঃ হান্টারের লেখা ইংরেজি গ্রন্থের বাংলা অনুবাদ পত্রিকাটির বিশেষ আকর্ষণ।
আকাশ এর আবির্ভাব ১৯৬২ খৃষ্টাব্দে। প্রধান পৃষ্টপোষক এস এস আবদুল্লাহ। যুগ্ম সম্পাদক এম রওশন হালদার ও কোরবানী সিরাজ ওয়াই। কলকাতা হতে প্রকাশিত।
তওহিদ আবু তাহের কর্তৃক সম্পাদিত ও কলকাতা থেকে ১৯৬৩ সালে প্রথম প্রচারিত।
জাগরণঃ সাহিত্যিক আঃ আজিজ আল আমান সম্পাদিত মুসলিম পরিচালিত পত্রিকাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য। ১৯৬৩ খৃষ্টাব্দে কলকাতায় জন্ম।
সন্ধানঃ “ইসলামী গবেষণা প্রতিষ্ঠান” এর মুখপাত্ররূপে পশ্চিম পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডি হতে ১৯৬৪ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। সম্পাদক ছিলেন ডাক্তার ফজলুর রহমান এবং ডাঃ এম, সগীর হাসান মামূমী।
খেদমতগার সর্বসাধারণের খেদমতে এটি প্রথম আবির্ভূত হয় ১৯৬৪ সালেই। সম্পাদক ছিলেন জনাব কাজী মোহাম্মদ আলি আর আবদুল গণি সাহেব ছিলেন এর তত্ত্বাবধায়ক।
তরুণ পত্রঃ ১৯৬৫ খৃষ্টাব্দে। সম্পাদক ছিলেন অধ্যাপক কাজী আবদুল ওদুদ সাহেব। “সংকল্প” নামেও আর একখানি পত্রিকা তিনি ১৯৫৪ খৃষ্টাব্দে প্রকাশ করেছিলেন।
মাসিক নবারুণ জনাৰ মিঃ এ এম সফিক জনাব মি হামিদুল হক এবং জনাব হাসিনূর রহমান সাহেবদের প্রচেষ্টায় সুপ্রতিষ্ঠিত এই নবারুণের প্রথম উদয়কাল ১৯৬৬ খৃষ্টাব্দ।
সাপ্তাহিক জনবার্তা সাহিত্য সেবক জনাব সোহরাব আলী সাহেবের সুদক্ষ সম্পাদনায় ১৯৬৬ তেই প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল।
দামামাঃ জনাব এস এ মোত্তালিব ও এন এ হান্নান সাহেবানে সম্পাদনায় কলকাতা হতে এই দামামার প্রথম আওয়াজ প্রতিধ্বনিত হয়েছিল ১৯৬৬ সালে।
মোসলেম প্রতিভাঃ সুসাহিত্যিক মুনসী আবদুর রহিম সাহেবের সুসম্পাদনায় ১৯৬৭ সালে কলকাতায় প্রকাশিত হয়েছিল।
সাহিত্য কান্ডারী নবীন সম্পাদক জনাব মোহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম মল্লিক সাহেৰে উদ্যমে ও প্রচেষ্টায় এটিও ১৯৬৭ তে প্রকাশ লাভ করেছিল। পত্রিকাটি নিঃসন্দেহে সর্বসাধারণের প্রশংসার দাবি রাখে।
এছাড়া আরও অসংখ্য পত্র-পত্রিকা স্বাধীনতার পূর্বেও পরে প্রকাশিত হয়েছিল। যেমন -দর্পণ লণ্ডন থেকে প্রকাশিত। যেটি পাঠরত ভারতীয় ছাত্রদের দ্বারা প্রযোজিত। সংবাদপত্র থেকে জানা যায় দর্পণ একটি অসাধারণ সাহিত্য সংবাদপত্র, যার সব কিছু মূল্যবান। পাক হিতৌষীঃ জনাব এ কে এম আজিজুল হক সাহেবের সম্পাদনায় পাবনা হতে প্রকাশিত। আরাফাতঃ এটি ঢাকা হতে প্রকাশিত এবং মাওলানা মোঃ আঃ রাহমান সাহেব কর্তৃক সম্পাদিত। তরুণ নকীবঃ জনাব মীম ওবায়দুল্লাহ সাহেবের সম্পাদনায় এবং হাজী শাহ মোহাম্মদের প্রকাশনায় এটি মালদার বাটনা জামেয়া মাদরাসা হতে বের হয়। অগ্নিশিখা, ২৪ পরগনা জেলার বজাজ অঞ্চল থেকে এর প্রকাশ। সম্পাদক শেখ রওশন আলী। মুর্শিদাবাদ সাহিত্য সংকলন, জনাব ফজলুল হক সাহেবের সম্পাদনায় মুর্শিদাবাদের লালবাগ হতে এটি প্রকাশিত হয়েছিল। জাগরণ দ্বিতীয় মহাযুদ্ধের সমসময়ে যশোর বনগাঁ হতে প্রকাশিত। সম্পাদক মিঃ মিজানুর রহমান। বাঙালা একাডেমী পত্রিকা, গবেষণা মূলক উচ্চাঙ্গের পত্রিকা বাংলা একাডেমীর মুখপাত্ররূপে ঢাকা, বর্ধমান হাউস হতে প্রকাশ হতো। দীলরূবা এটির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন স্বনামধন্য কবি গোলাম মোস্তফা। আমাদের দেশ, এটি বাংলা ভাষায় পূর্ব পাকিস্তানের পাবনা হতে, উর্দুতে পশ্চিম পাকিস্তানের লায়ালপুর হতে এবং ইংরেজিতে লণ্ডল হতে প্রকাশিত হতো। বাংলার সম্পাদক ছিলেন মিঃ এম এ হামিদ-টি কে এম এস সি। আজিজুন নাহার, বিখ্যাত সাহিত্যিক মীর মশাররফ হোসেন সাহেব পরিচালিত এটি এক অনবদ্য সৃষ্টি। মোজাহেদ, স্বাধীনতা পূর্ব যুগে মৌলানা আবদুল লতিফ সাহেবের সম্পাদনায় প্রকাশিত মুসলিম ন্যাশনাল গার্ডের মুখপাত্র। মোসলেম পতাকা, এর ধারক ও বাহক ছিলেন পুঁথি লেখায় ও সংগ্রহে অদ্বিতীয় পণ্ডিত ডাঃ আবদুল গফুর সিদ্দিকী সাহেব। ফরিয়াদ, জনাব চৌধুরী আবদুর রহিম সাহেবের সম্পাদনায় কলকাতা হতে প্রকাশিত। আল হাকিম, এটি ঢাকা হতে বের হতো। সম্পাদক ছিলেন প্রখ্যাত হেকিমী চিকিৎসক হাফেজ আজিজুল ইসলাম সাহেব। জমজম, সম্ভবত বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের শেষের দিকে কলকাতায় জন্ম। প্রকাশক ছিলেন নূর লাইব্রেরী স্বত্বাধিকারী মোহাঃ মঈনুদ্দিন হোসায়েন সাহেব। সম্পাদক ছিলেন সুসাংবাদিক মৌঃ শামসুর রহমান সাহেব। হেদায়াত, কলারোয়া খুলনা হতে প্রকাশ হতো। এর প্রচার কর্মী ছিলেন মৌলানা মোয়েজুদ্দিন হামিদী সাহেব। মাহেনও কবি আবদুল কাদের সাহেবের সুসম্পাদনায় ঢাকা হতে একাশিত। এটি খুবই উচ্চস্তরের পত্রিকা হিসেবে প্রশংসনীয়। সমকাল, সুখ্যাত সাহিত্যিক সেকেন্দার আবু জাফর সাহেবের সম্পাদনায় নাম করা কাগজ। সংবাদ জনাব জহুর হোসেন সম্পাদিত ঢাকা হতে প্রকাশিত নামী দৈনিক। স্বাধিকার এটি জনাব জোয়াদ আলী সাহেবের সম্পাদনায় কলকাতা হতে প্রকাশিত হয়েছিল। বৈভব, জনাব আবদুল মালিক সাহেবের সম্পাদনায় এর প্রাথমিক উদয় ঢাকায় খৈকরা গ্রামে। আস্তানা, জনৈক মুসলমান সম্পাদকের পরিচালনায় আজমীর থেকে প্রকাশ হতো। পৃথিবী, এটি ঢাকা হতে প্রকাশ হতো। সম্পাদক ছিলেন জনাব মোহাম্মদ নূর উদ্দিন আহমাদ সাহেব। দরদী, স্বাধীনতার পূর্ব যুগে জনাব সৈয়দ জাহিদুল হক সাহেবের সম্পাদনায় ঢাকা হতে বের হতো। সংহতি, এটি বর্ধমান হতে প্রখ্যাত ব্যবহারজীবী মৌলানা নজীরউদ্দিন আহমাদ সাহেবের পরিচালনায় বের হতো। ইনি বর্ধমান বাণী নামক একখানি পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন। শিক্ষক সুহৃদ পূর্ব পাকিস্থানের প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির মুখপাত্ররূপে ময়মনসিংহ হতে প্রকাশিত হতো। সম্পাদক ছিলেন হাজী শেখ আলফুদ্দিন সাহেব। প্রচেষ্টা, তরুণ সম্পাদক সমাজ ও সাহিত্য সেবায় উদ্যোগী জনাব আইউব আলী খানের প্রযত্নে প্রকাশিত দামি পত্রিকা। প্রথমে এর নাম ছিল প্রান্তিক পরে নাম বদল করে রাখা হয় প্রচেষ্টা। আলো কর, আনুমানিক বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশকের প্রথম দিকে ঢাকা হতে মৌলানা এস এম আলী সাহেবের সম্পাদনায় প্রকাশ হতো। আলোক, বর্ধমান হতে বের হয়েছিল। এর সম্পাদক ছিলেন মৌলানা আবদুল হায়াত সাহেব। ইনি ইংরেজি Neda-i-Islam নামক মাসিক পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। তরুণ বয়সে তিনি সরকারের অধীনে চাকরি করতেন পরে স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেসে যোগ দেন। কংগ্রেসের এলাহাবাদ অফিসের একটা বিভাগের তিনি ভারপ্রাপ্ত কর্মী ছিলেন। ঐ সময়ে পণ্ডিত জওহর লাল নেহেরুর সাথে তাঁর হৃদ্যতা গড়ে ওঠে। উর্দু-ইংরেজির ওপর তাঁর অগাধ পাণ্ডিত্য ছিল। ১৯৬৬ সালে তাঁর স্বরচিত গ্রন্থ “Mussalmans of Bengal" ইংরেজি শিক্ষিত সমাজে দারুণ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছিল।
এমনিভাবে আরও বহু পত্রিকা, পুস্তক-পুস্তিকা স্বাধীনতার প্রাপ্তির পূর্বে প্রকাশ করে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিতে মুসলমান মনীষীগণ যেমন আত্মপ্রকাশ করেছিলেন আর স্বাধীনতা বিপ্লবে রক্তাক্ত পরিস্থিতি আর শাসকের আগ্নেয় অস্ত্র ও অত্যাচারের মাঝখানেও এগিয়ে এসেছিলেন পত্রিকার সম্পাদক, প্রকাশক ও মুসলিম লেখক-লেখিকার দল। আর স্বাধীনতার পরেও ভারতের প্রায় প্রতিটি ভাষায় পত্রিকা ও পুস্তক-পুস্তিকা প্রকাশে মুসলিম সমাজ কোনো সময়েই পিছিয়ে নেই। তবে বর্তমানে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মুসলমানদের অবস্থা ‘প্লাসটিকের শাখের’ মত।
যারা নিজেদের ইতর, অনুন্নত অথবা উপজাতি বংশীয় বলে মনে করে, যারা নিজেরাই জানে না নিজেদের ইতিহাসের ঐতিহ্যপূর্ণ জীবনধারা, যারা ধর্মগ্রন্থাদি বা আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুত পয়গম্বর হযরত মুহাম্মদের (সঃ) বিশ্বজনীন বাণীর পূর্ণ সংবাদ রাখে না তারাই তাদের কলমে জাতিকে নেতৃত্ব দেওয়ার নামে শোধনবাদীর সঙ সেজে সহজ-সরল জনসাধারণকে বিভ্রান্ত করতে উঠেপড়ে লেগেছে। তাদের ধারণা, ধর্ম আলাদা আর সমাজ আলাদা, ধর্ম আলাদা আর রাজনীতি আলাদা, ধর্ম এক বস্তু আর আধুনিক উন্নতির অন্যবস্তু। এটা একটা মারাত্মক মূর্খামি। ইসলাম ধর্ম পরিপূর্ণভাবে পালন করে প্রত্যেকের পক্ষে যেকোন স্তরে নেতা বা আদর্শবান পূর্ণাঙ্গ পূর্ণ নাগরিক হয়ে আত্মপ্রকাশ করা সম্ভব। তাই প্রত্যেকের মনে রাখা দরকার বহুল প্রচলিত প্লাসটিকের শাঁখ শখ নয় বরং শঙ্খ বা শাঁখ খাঁটি জিনিস।
আমাদের দেশের কলমধারী ও অস্ত্রধারী বলে যারা আমাদের কাছে স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতা ও পিতা-মাতা হয়ে আছেন তাঁদের মধ্যে কয়েকজনের নাম করা যাচ্ছে মাত্র। মহাত্মা গান্ধী জন্ম ১৮৬৯, মৃত্যু ১৯৪৮ খৃঃ। পণ্ডিত মতিলাল নেহরু জন্ম ১৮৬১, মৃত্যু ১৯৩১। পণ্ডিত জওহর লাল নেহরু জন্ম ১৮৮৯, মৃত্যু ১৯৬৪। আবুল কালাম আজাদ ১৮৮৮-১৯৫৮। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস ১৮৭০-১৯২৫। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল ১৮৭৫-১৯৫০। স্যার সুরেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ১৮৪৮-১৯২৫। মহাম্মদ আনসারী ১৮৮০-১৯৬৩। রাজেন্দ্র প্রসাদ ১৮৮৫-১৯৬৩। রাজা গোপালাচারী ১৮৭৯-১৯৭২। লালালাজ পৎ রায় ১৮৬৫-১৯২৮।। সরোজিনী নাইডু ১৮৭৯-১৯৪৯। রাধা কৃষ্ণান ১৮৮৮-১৯৭৫। সৈয়দ আমীর আলী ১৮৪৯-১৯২৯ প্রমুখ। বিচক্ষণ পাঠকদের উপরে জন্ম-মৃত্যুর সালগুলো লক্ষ্য করলেই প্রমাণ পেতে বাকি থাকবে না যে সকলেই প্রথম স্বাধীনতা আন্দোলন যা বহু পূর্ব হতে যুগ যুগ ধরে চলতে চলতে ১৮৫৭ সালে চরমতম রূপ গ্রহণ করে যেটাকে চক্রান্তকারীরা সিপাহী বিদ্রোহ বলে অভিহিত করেছে। সেই সময় ভারতের জাতির বা স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্মদাতাদের পৃথিবীতে জন্মই হয়নি অথচ কোটি কোটি মানুষকে ভ্রান্তির সমুদ্রে হাবুডুবু খাওয়ানো হয়েছে ইতিহাসের পাতায়।
এবার আর কিছু কলমনবীস বা বুদ্ধিজীবীদের নাম লিখছি- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্ম ১৮৬১, মৃত্যু ১৯৪১। ইশ্বর চন্দ্র বিদ্যাসাগর ১৮২০-১৮৯১। উমেশচন্দ্র বন্দ্যেপাধ্যায় ১৮৪৪-১৯০৬। রঙ্গলাল ১৮২৭-১৮৮৭। নবীনচন্দ্র সেন ১৮৪৭-১৯০১। যোগীন্দ্রনাথ বসু ১৮৫৭-১৯২৭।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/54
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।