hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৬৬
জহরলাল নেহরু
মতিলাল নেহরুর পুত্র জহরলাল ১৮৮৯ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। স্কুলে পড়তে গিয়ে দেখা গেল তিনি একেবারেই বোকাটে। তখন পিতা পাঠিয়ে দিলেন পণ্ডিতদের দেশে এবং শাসক মনিবের দেশ ইংলণ্ড। সেখান থেকে এলেন কেমব্রিজ। ১৯১২ তে ব্যারিস্টারি পড়ে দেশে এলেন, একেবারে সাহেব হয়ে চলনে, বলনে- চরিত্রে ও চিন্তায় একেবারে বিলেতি সাহেব। বাপ চাইলেন ছেলের নাম ছড়িয়ে পড়ক আইন ব্যবসায়। কিন্তু মস্তিষ্কটা জোরালো ছিল না। তাই তার দোষ দেওয়া যায় না। তবু বাপের পয়সাতেই সাহেবী চাল চালাতে লাগলেন। ১৯১৬ তে হয় বিবাহ। ১৯১৯ সালে চলে জালিয়ানওয়ালাবাগের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ড। তখন জহরলাল চুপচাপ আরামে দিন কাটাচ্ছিলেন স্ত্রীকে নিয়ে সিমলায় বড় হোটেলে। আর সাহেবী হোটেলগুলোতে সাহেবী ফরমায়েস অনুযায়ী চটপট কাজ পাওয়া যায়। ঠিক ঐ সময় আফগানদের সঙ্গে ইংরেজদের একটা চুক্তির কথা কইতে আফগানী নেতাদের ঐ হোটেলে আনা হয়। ঐ সময় একজন ইংরেজ ডিঃ ম্যাজিষ্ট্রেট তাকে ভারতীয় বলে হোটেল হতে চলে যেতে বললেন। জহরলাল অনেক অনুনয় করলেন, শেষে বলা হল এটা লিখিত স্বলেখা মুবন্ড দিতে হবে যেকোন আফগানীর সঙ্গে কথা বলবেন না। লাল সাহেবদের কথায় খুব দুঃখ পেলেন কিন্তু বণ্ড দিতে রাজি হলেন না। তাই সঙ্গে সঙ্গে হুকুম হল চার ঘণ্টার মধ্যে শুধু হোটেল থেকে নয় একেবারে সিমলা ছেড়ে চলে যেতে হবে। ট্রেনের কামরাতেও ইংরেজ প্যাসেঞ্জারদের কাছ হতে অপমানিত হয়ে তিনি কংগ্রেসে যোগ দেন। এখানে তাঁর ব্যক্তিগত আভিজাত্য পার্টিতে নামতে বাধ্য করে বোঝা যায়। এটা জালিয়ানাবাগের হত্যাকাণ্ডের পরেই যদি হত তাহলে তার পার্টিতে যোগ দেওয়া একটা স্বর্ণোজ্জ্বল পদক্ষেপ হত। বছরখানেক নানা কিছু ভূমিকা পালন করে তাঁর কারাদণ্ড হয়। সেই সময় তাঁর ইংরেজপ্রীতিতে কিছু দিনের জন্য ভাটা পড়লে তিনি কংগ্রেসের কাজে আত্মনিয়োগ করলেন বটে কিন্তু অন্তরে অকৃত্রিম ইংরেজপ্রীতি থেকেই গেল।” (দ্রঃ Mosley The last days of British Raj, P-76) গান্ধীজির কাছে নেহরু একরকম আত্মসমর্পণ করলেন। আর দু’জনের নীতিতে প্রায় মিল হয়ে গিয়েছিল। গান্ধী ও সুভাষচন্দ্রের মতবিরোধ চরমে ওঠে। গান্ধীজি দেশকে ঠাণ্ডা রাখতে চাইলেন আর সুভাষ স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করতে দেশবাসীকে প্রেরণা যোগাতে লাগলেন তখন জহরলাল কোন পক্ষে যাবেন সকলেই দেখতে চান, তাই তিনি ঠিক ঐ সময় ইউরোপ ভ্রমণে বের হলেন। শ্রী গঙ্গানারায়ণ চন্দ্র জহরলালের জন্য লিখেছেন, “পণ্ডিত নেহরু গণতন্ত্রের একজন বড় পাণ্ডা ছিলেন-তিনি মুখে বলেন এটা অন্যায় কিন্তু কাজের বেলায় চুপ করে থাকলেন। আর যারা চিরদিনই গোপনে ইংরেজকে সাহায্য করে এসেছে, এমনকি শোনা যায় শ্রী চন্দ্রশেখর আজাদ ও শ্রী ভকৎ সিং-এর মৃত্যু ও ফাঁসির জন্য যাদের দু-একজন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে দায়ী, সেই বঞ্চিত দুস্থ ভীরুরাই তখন কংগ্রেসের মন্ত্রণাদাতা! পণ্ডিত নেহরু ইচ্ছা করলে এ বিরোধের সমাধান করতে পারতেন মনে বুঝেও ভয়ে কাজে কিছু করতে পারলেন না। ভয়ই কাপুরুষতার লক্ষণ।” কারণ, সুভাষ বাবু যখন ব্যক্তিত্বের জোরে কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলেন তখনই প্রস্তাব পাস হয়ে গেল আজ হতে সভাপতির ইচ্ছায় নয়, একমাত্র গান্ধীজির ইচ্ছানুসারে ওয়ারকিং কমিটির সভ্য মনোনয়ন হবে। নেহরু গান্ধীকে বলতেন, "You permanent Super President of Congress"। ১৯৩৯ সালের ২৯ এপ্রিল অগত্যা সুভাষ বাবু পদত্যাগ করেন। যোগ্য লোকের পদত্যাগে কংগ্রেসের কেউ দুঃখ করেনি আর আপত্তিও জানায়নি; বরং বিজয় উল্লাসে ‘গান্ধীজি কি জয়’ স্লোগান দিয়েছিল। সারা ভারতে হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে উচ্চ শ্রেণীর স্বাধীনতার নায়ক দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাসের মতাবলম্বী সুভাষ বোসকে নেহরু কুৎসিত কথা বললেন-“সুভাষ ফ্যাসিষ্ট।” সুভাষ উত্তর দিলেন- “যদি ফ্যাসিষ্ট বলতে হিটলার, মহান হিটলার বা ক্ষুদে হিটলার বোঝার তাহলে সেরকম অনেক লোকই কংগ্রেসে দক্ষিণপন্থীদের মাঝে পাওয়া যাবে।” (দ্রঃ Michael Edwardes-The Last year of British India, p. 67)

সুভাষ তাঁর বড়দের পরামর্শ নিয়ে ফরওয়ার্ড ব্লক দল গঠন করলেন। কংগ্রেস সেই অজুহাতে তাঁকে তিন বছরের জন্য তাড়িয়ে দিলেন। তিনি জানতেন, এরা বিপ্লব করেনি, করবে না ও করতে দেবে না, তাই আন্দোলন চালিয়ে যেতে লাগলেন। ছাত্রদল তার পাশে এসে দাঁড়াতেই সরকারের পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে ছাত্র নেতা জ্যোতির্ময় ভৌমিক ও ঢাকার অনিলচন্দ্র দাস প্রাণ দিলেন।

দলে দলে বীর জোয়ানরা যখন কমিউনিস্ট দলে যোগ দিতে লাগলো তখন জয় প্রকাশ নারায়ণ, নরেন্দ্র দে ও আর অশোক মেটার চেষ্টায় কংগ্রেসের ভেতর জন্ম হয় কংগ্রেস সোশালিষ্ট পার্টির। এইবার মুসলমান জাতির পুরাতন পথে ও কমিউনিস্ট পার্টির নতুন পথ অর্থাৎ পূর্ণ স্বাধীনতা ও বিপ্লবের বুলি বলে সংগ্রাম চালানোর কথা ঘোষণা করে। (দ্রঃ V.V. Balabushevich-A Contemporary History of India. p 294-95)

১৯৩৯ সালের ৩ সেপ্টেম্বরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ আরম্ভ হয়। জার্মানদের আক্রমণে শাসক ইংরেজ ব্রিটিশের জাহাজ একে একে জলের তলে তলিয়ে গেল। তখন গান্ধীজি খুব শোক পেলেন এবং দুঃখময় বিবৃতিও দিলেন (দ্রঃ অবিস্মরণীয়, ৩২ পৃঃ ২য় খণ্ড) লণ্ডনে পড়তে লাগলো প্রচণ্ড বোমা। ইংরেজ বাহাদুররা বাদুড়ের মত কোথায় লুকাবে ভাবছে। ঠিক ঐ সময় গান্ধীজি কামনা করেছিলেন ইংরেজের জয়। কারণ তারা জয়ী হয়ে ভারতকে স্বাধীনতা দেবে আর যদি পরাজিত হয় তাহলে রাগে, দুঃখে, অভিমানে তা নাও দিতে পারে।

কিন্তু নেতাজী গান্ধীর কাছ হতে আঘাত আর অপমানের কষাঘাত পেয়েও দেশের জন্য সব ভুলে নিজের ইজ্জত নষ্ট হওয়ার কথা চিন্তা না করেও গান্ধীর কাছে করুণ আবেদন করলেন যে, এই উপযুক্ত সময় এখন যদি আমরা ভারতে বিপ্লব জোরদার করে ইংরেজদের বিরুদ্ধে যাই তাহলে বহুদিনের আশা পূরণ করে আমরা পূর্ণ স্বাধীনতা অর্জন করতে পারবো। আপনি একটু চিন্তা করুন। অপূর্ব সুযোগ।

“সেদিনের সেই শ্ৰী ভ্রষ্ট দিনে গান্ধীজি ইংরেজের শোকে মুহ্যমান।” (দ্রঃ অবিস্মরণীয় ২য় খণ্ড) তাই বা উত্তরে বললেন তাতে অবাক অথবা ক্রোধ কোনটি এগিয়ে আসবে কে জানে? গান্ধী বললেন, “ইংরেজকে ধ্বংস করে আমরা স্বাধীনতা চাই না- অহিংসা সংগ্রামের নীতি এ নয়।“ (দ্রঃ Indian struggle, 3, 34) সারা ভারতের কোন বুদ্ধিমান ও দেশভক্ত ঐ কথা মানুন আর নাই মানুন পণ্ডিত জহরলাল তা সমর্থন করলেন। তাঁর পাণ্ডিত্য আরও জ্যোতির্ময় হয়ে উঠলো। মাওলানা আযাদ কিন্তু প্রতিবাদ করে বলেছিলেন, “কংগ্রেস আপস করবার সমিতি নয়, ভারতের স্বাধীনতা অর্জনের ব্যবস্থা। অনন্যোপায় হলে ভারতবাসীর অস্ত্র ধারণেরও অধিকার আছে।” (দ্রঃ Arad India Wins freedom, 34)

ঐ অবস্থায় মাওলানা আজাদের একটা স্বাতন্ত্র পরিলক্ষিত হল। কিন্তু জহর যেন গান্ধীর ছায়া আর গান্ধী যেন তাঁর ছায়া। ২ জুলাই সুভাষ বন্দি হলেন, নয় তাকে বন্দি করা হল। অপরাধ হচ্ছে বিপ্লবের পক্ষপাতী আর মুসলমান শহীদ নবাব সিরাজের অন্ধকূপ হত্যার মিথ্যা মনুমেন্ট ভেঙে ফেলার জন্য সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন। কারণ ওটা শুধু মুসলমানদের হীন চোখে দেখার চিহ্ন শুধু নয়; বরং জাতীয় মর্যাদাহানির মনুমেন্ট সেটা। সুভাষের জেলে যাওয়া যেন সারা ভারতে মানুষের মনে তাঁর প্রতি ভক্তির জোয়ার এনে দিল। তখন গান্ধীজি, জহরলাল বুঝে দেখলেন জেলে যাওয়া ছাড়া সম্মান অক্ষুন্ন রাখা বা জনসাধারণের মনের মোড় ঘোরানো যাবে না। তাই ১৯৪০ সালে অক্টোবর মাসে করলেন সত্যাগ্রহ নামে জ্বলন্ত বিপ্লব। গলায় মালা পরে ইংরেজের মালের ও সম্মানের তেমন ক্ষতি না হয় এমন ছোট একটা আইন অমান্য করে একে একে ভদ্রভাবে জেলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। প্রথমে বিনোবাভাবে গলায় মালা পরে প্রথমসত্যাগ্রহী সাজলেন। তিন মাস জেল মঞ্জর হল। গঙ্গানারায়ণ বাবু লিখেছেন, “এক দিনেই তিনি পরম ত্যাগী দেশকর্মী হয়ে গেলেন আর সেই জোরেই আজও ভুদান যজ্ঞের পৌঁরহিত্য করেছেন আর কংগ্রেস তাঁর পৃষ্ঠপোষক। এর আগে দেশের লোক হয়ত তাঁর নামই নিত না। কয়েকদিন পরে সারা ভারতের দু নম্বরের সত্যাগ্রহী এগিয়ে এলেন পণ্ডিত নেহরু। তিনিও চার বছর কারাদণ্ড পেলেন। এমন করে ভারতে বিশ হাজার সত্যাগ্রহী বন্দি হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করলেন। এখানে নেতাজী আর নেহেরুর পথ ও মতের কত তফাৎ। ঐ বিশ হাজার লোকের ইচ্ছাকৃতভাবে জেলে ঢোকার আগ্রহ নিছক ভ্রান্ত পথ বলে অনেকে মনে করেন। তাদের মতে জেলের বাইরে থেকে কাজ করলে তাতে লাভ ছিল বেশি।

আজ কিন্তু সেই সত্যাগ্রহী দলের অনেকে জেল খাটার সনদ দেখিয়ে বাস চালানোর রুট আর ছেলের বড় চাকরি উদ্ধার করে উপকৃত হবেন। সুভাষ বসু জেলে অনশন আরম্ভ করলেন। উদ্দেশ্য ছিল বাইরে আসা। তাকে মুক্তি না দিয়ে তাঁর গৃহেই বন্দি রাখার ব্যবস্থা হয়। ওখান হতেই নেতাজী মুসলমান সেজে মওলুবী জিয়াউদ্দিন নাম ধারণ করে বাইরের সাহায্য বা অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহে এবং ভারতের বাইরে হতে কোন রেডিও সেন্টার খুলে তার মাধ্যমে ভারতের জনগণ বিশেষত হিন্দু জনগণকে কংগ্রেসের মায়াজাল হতে মুক্ত করার জন্য একেবারে কাবুলের পথে রাশিয়ার দিকে রওনা হলেন। পৌঁছালেন পেশোয়ার। ওখান হতে সঙ্গে করে নিয়ে চললেন রহমতখা কাবুলে। কাবুল হতে সুভাষ চললেন রাশিয়ার বেখরায়, ওখান হতে সমরখন্দ। ২৮ মার্চ বিমানে বার্লিনে এলেন। সুভাষ জার্মান হতে দু’টি রেডিও সেন্টার খুললেন- একটির নাম দিলেন ‘কংগ্রেস রেডিও’ যার দ্বারা কংগ্রেস ভক্তদের ডাক দেবেন। আর সুদূর দৃষ্টিসম্পন্ন সুভাষ জানতেন ভারতের স্বাধীনতার স্রষ্টা মুসলমান জাতি, তারা শুধু কংগ্রেস, ইংরেজ সৃষ্ট ভারতীয় নেতাদের বাধা দান ও বিরোধিতার জন্য অকৃতকার্য হতে চলেছে। তাই অপর রেডিও সেন্টারের নাম রাখলেন ‘আজাদ মুসলিম রেডিও’। ভারতে ঐ মহানেতা সুভাষের বড় শত্রুদের মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক শত্রু ছিলেন নেহরু। সুভাষ যখন ভারতের বাইরে গিয়ে আজাদ হিন্দু ফৌজ গঠন করে লড়াই করতে করতে ভারতের দিকে এগিয়ে আসছেন তখন ব্যারিষ্টার পণ্ডিত নেহরু দেশে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছেন আর বক্তৃতার বড় অংশ হচ্ছে সুভাষ এলে আমি রাইফেল হাতে তার বিরুদ্ধে দাঁড়াব।” (দ্রঃ অবিস্মরণীয়, ২ খণ্ড) তাছাড়া অন্য জায়গায় তিনি নিজ হাতে গুলি করে মারবো বলে প্রকাশ্য সভায় ভাষণ দিয়েছেন। এর কারণ চিন্তা করলেই বোঝা যাবে তিনি কেন এ কথা বলেছিলেন? কে বা কারা তা বলিয়েছিলেন? আর এ অশোভন অন্যায় উক্তি দেশের কল্যাণে বলেছেন না নিজের কল্যাণে?

আর আজ আমাদের মাতৃভূমিকে ত্রিখণ্ডিত দেখছি প্রথমে বিনা প্রমাণে জানতাম যত দোষ সব জিন্নার কিন্তু সে কথা সম্পূর্ণ সঠিক নয়। জিন্নাও ইংরেজেরই হাতে গড়া নেতা। কিন্তু গান্ধী, জহরলাল, প্যাটেল প্রমুখ পণ্ডিত যদি রাজি না হতেন ভারত ভাগ হত না এটা শত শত বর্তমান ইতিহাস বিজ্ঞানীর মত। মিঃ মাইকেল ব্রীচার খ্রিস্টান লেখক জহরলালের একজন প্রথম শ্রেণীর বন্ধু ছিলেন। প্রমাণে বলা যায় নেহরু তাঁর জীবনী লিখার ভার তাকেই দিয়েছিলেন। নেহরু তাঁকে বলেছিলেন, “অখণ্ড ভারত থাকলে প্রতিদিনই সাম্প্রদায়িক অশান্তি লেগে থাকত, তাতে দেশের সর্বাঙ্গীণ উন্নতি হতো না এবং অচিরে স্বাধীনতা পাওয়ার কোন উপায় থাকত না। তাই তিনি দেশ বিভাগ মেনে নিয়েছেন।” (অবিস্মরণীয়, ২য় খণ্ড, পৃঃ-১৭৮)

পরে মিঃ মসলেকে নেহরু যা বলেছিলেন তা আরও স্বচ্ছতর। “সত্যি কথা বলতে কি, আমরা ক্লান্ত, বার্ধক্যও আসছে। আর জেলের কষ্ট সহ্য করার ক্ষমতা আমাদের অনেকেরই নেই। যদি ভারতের ঐক্যের জন্য লেগে থাকতাম তাহলে আমাদের জেলে যাওয়া অনিবার্য হয়ে উঠত। পাঞ্জাবে অশান্তির আগুন দেখেছি, প্রতিদিন নরহত্যার খবর পেয়েছি। এ থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার উপায় দেশ বিভাগ মনে করে এটা গ্রহণ করেছি। তবুও গান্ধীজি না করলেই আমরা সংগ্রামই করে যেতাম। আমরা এই মনে করে দেশ বিভাগ মেনে নিয়েছিলাম যে, পাকিস্তান হবে স্বল্পায়ু আর আমাদের কাছে ফিরে আসতে বাধ্য হবে। আমরা কোনদিনই ভাবতে পারিনি যে এত লোক মরেও কাশ্মীর নিয়ে আমাদের এত তিক্ততা বাড়বে।” (Mosley, P-248)

উপরোক্ত মন্তব্যে ভেতরের তথ্যও যেমন প্রকাশিত তেমনি নেহরুর দুরদর্শিতার কত স্বল্পতা তাও অনুমেয়। ভারতবর্ষকে ভাগ করবার জন্য যখন বিলেত হতে আনানো হয়েছিল মিঃ লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনকে তিনি শুধু তার সুন্দরী স্ত্রীকেই আনেননি তিনি এনেছিলেন তাঁর পরমা সুন্দরী কন্যাকেও। তার অনেক কারণ ছিল। জহরলালের সঙ্গে তিনঘণ্টা আলাপ করে তার কোথায় দুর্বলতা ছিল সাহেব সব বুঝে ফেললেন। এও বুঝলেন একটু প্রশংসা করলে খুশিতে অনর্গল কথা বলে যান (Mosley 94)। নেহরুকে মিঃ মাউন্ট ব্যাটেন প্রশ্ন করলেন-“জিন্না লোকটা খুব একটা ভাল নয়, আপনি কী বলেন? নেহরু নিন্দের গুদাম ঘর খোলার মত বলতে লাগলেন, জিন্নার নামে অনেক কিছু বলে ফেললেন, যার সার কথা হচ্ছে ‘জিন্নাহ’ নামেই ব্যারিস্টার, কাজে কিছুই নয়, নিরেট বোকা ইত্যাদি। সাহেব জিন্নাহকে জানার ভানে জেনে ফেললেন জহরলালকে আর বুঝলেন জহরলাল একান্তই অযোগ্য। অথচ নেহরু নিজেই আইন ব্যবসায়ে অকৃতকার্য তা তিনি জানতেন। আর জিন্নাহ ব্যারিস্টারি পরীক্ষায় কৃতিত্বের সঙ্গে পাস করে বিলিতি ছাত্রদের চমকে দিয়েছিলেন তাও তিনি জানতেন। আর জিন্নাহ যে বুদ্ধির যুদ্ধে জহরলাল, গান্ধী ও কংগ্রেসের হর্তাকর্তাদের অধিকাংশকে পরাজিত করেছেন তাও মিথ্যা বলা মুশকিল।

লণ্ডনে কমিউনিস্ট পার্টির তরফ হতে একবার জিন্নাকে কেস দিতে গিয়ে দেখা যায় তাঁর তখনকার দিনে ফিস ছিল দুই হাজার পাউণ্ড বা ত্রিশ হাজার টাকা। তাই ভারতের কমিউনিস্ট পার্টির জন্মদাতা কমরেড মুজাফফর আহমাদ লিখেছেন, “তিনি ফিস নিতে অস্বীকার করেননি কিন্তু ফিস দাবি করেছিলেন দুই হাজার পাউণ্ড (ত্রিশ হাজার টাকা)। মিঃ সি. অলস্টনের দৈনিক ফিস ছিল এক হাজার টাকা। এই হিসেবে জিন্নাহ কিছু বেশি ফিস্ দাবি করেননি।” (দ্রঃ আমার জীবন ও ভারতের কমিউনিষ্ট পার্টি পৃঃ ৪৪৭, মুজাফফর আহমাদ)

মাউন্ট ব্যাটেন তাঁর স্ত্রীকে নেহরুর প্রতি নিক্ষেপ করলেন আর তাঁর সুন্দরী কন্যা কুমারী প্যামেলাকে রাজনীতি শেখানোর ভান করে গান্ধীর দিকে নিক্ষেপ করলেন। আর নেহরুর অত্যন্ত আদূরে মাতৃহীনা কন্যা ইন্দিরাকে মেহ ও ভালবাসা দেয়ার জন্য মিঃ জানসনকে নিয়োগ করলেন। আর লর্ড ইসমে এবং জর্জ এবেলকে নিক্ষেপ করলেন মুসলিম লীগ নেতাদের প্রতি। প্রায় সকলকে বশে আনা গেল শুধু জিন্নাহ ব্যতিক্রম। জহরলালের স্ত্রী অনেক দিন আগে মারা গিয়েছিলেন তাই তাঁর শূন্যস্থান পূরণ করতে যেন এগিয়ে এলেন মাউন্ট ব্যাটেনের স্ত্রী এডউইনা কিন্তু সেটা যে অভিনয় ছিল নেহরু তা বুঝতে পারেননি। মিঃ মশলে তাই লিখেছেন, He had long been a widower, and he was a lonely man, Lady Mount Batten filled an important gap in his life (Mosley 103)। মাওলানা আজাদ ও নেহরুকে একগুয়ে বা একরোখা বলেছেন কিন্তু একমাত্র সুন্দরী এডউইনার কথা তিনি কাটতে পারতেন না। ওখানেই ছিল তার গুপ্ত অপ্রকাশ্য বিতর্কিত দুর্বলতা।

চতুর ইংরেজ বিলেত হতে কাজ সমাধা করলো প্রেরিত নেতার চাতুরী দিয়ে। আমাদের দেশের হঠাৎ নেতার দল তাদের চাতুরীর শিকার হয়ে ইতিহাসকে অন্ধকার করেছেন বললে ঠিক হবে কি ভুল হবে কে জানে?

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন