মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
আকবরের মৃত্যুর পর ১৬০৫ খৃস্টাব্দে জাহাঙ্গীর সিংহাসন লাভ করেন। তিনি চরিত্রে, চেহারায়, পোশাক-পরিচ্ছদে পুরোপুরি ইসলামবিরোধী ছিলেন। তাঁর সম্বন্ধে কিছু আলোচনা এই ইতিহাসের ইতিহাসে করা হয়েছে। কিন্তু শুধু তাঁর চরিত্রের কালো দিকটাই তুলে ধরা হয়েছে, এছাড়া তাঁর একটা ভাল দিক আছে, সেটি হচ্ছে এই- হযরত আলফেসানী আহমাদ সাহেবকে তিনি কারাগারে বন্দি করেছিলেন। কারণ আকবরের বিরুদ্ধে অভিযান তিনিই সৃষ্টি করেছিলেন এবং প্রকারান্তরে আকবরকে পরাজিত করেছিলেন ঐ আলফেসানী সাহেবই আকবরের নতুন ধর্ম প্রচারের ক্ষেত্র। আর তাই দেখা যায় পৃথিবীর বেশির ভাগ নবী, পয়গম্বর দরিদ্র হয়েও সহস্র সহস্র শিষ্যের নেতা আর যার হাতে সারা ভারতের চাবিকাঠি, যিনি দণ্ডমুণ্ডের কর্তা সারা জীবনে তার মাত্র ১৮ জন শিষ্য। তাও তার মৃত্যর পূর্বেই বিকল ধর্মের অচল অবস্থা। এর পেছনে হাত ছিল শিরহিন্দের মুজাদ্দিদ হযরত মাওলানা আহমাদ আলফেসানীর ধর্মীয় প্রচার অভিযান।
জাহাঙ্গীরকে আশফজাহ পরামর্শ দিলেন বাদশাহী কর্মচারী উজির-নাজির যেভাবে মুজাদ্দিদে আহমাদ সাহেবের শিষ্য হতে শুরু করেছেন তাতে একদিন রাজনৈতিক বিপ্লব আসতে পারে, তাই তার দিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। মদ্যপ জাহাঙ্গীর বড় বড় সেনাপতি রাজকর্মীদের তাঁর পরামর্শে দূরে দূরে পাঠিয়ে দিলেন। তারপর মুজাদ্দেস আহমাদ সাহেবকে রাজ দরবারে আসতে সংবাদ পাঠালেন। তিনি জানতেন জাহাঙ্গীরের দরবারে প্রত্যেক সেজদা বা প্রণিপাত করতে হতো, আর করতে হতো সম্মুখে নত হয়ে দুহাত কপালে ঠেকিয়ে কুর্নিশ। জেনে শুনেই আহমাদ সাহেব জাহাঙ্গীরের দরবারে ঘৃণাভরে সদর্পে মাথা উঁচু করে গিয়ে দাঁড়ালেন। জাহাঙ্গীর জানতে চাইলেন তিনি দরবারের আইন অনুসারে সেজদা বা কুর্নিশ করলেন না কেন? আর অন্তত আসসালামু আলাইকুমও তো বলতে পারতেন? কপর্দকহীন হযরত আহমাদ সাহেব বললেন, “আমি জাহাঙ্গীরের দরবারের ভৃত্য নই বরং আমি আল্লাহর দরবারের ভৃত্য। তাই তাঁর আইনই আমার কাছে আইন আর বাকি সব কিছু আমার কাছে বেআইনি। তবে তোমাকে সালাম দেইনি এজন্য যে, তুমি অহংকারী। হয়ত উত্তর দেবে না তখন আমার সালাম দেওয়ার অর্থ হবে প্রিয় নবীর একটা সুন্নতকে পদদলিত করানো।”
জাহাঙ্গীর রেগে তাঁকে বন্দি করে গোয়ালিয়র দুর্গে কারাগারে পাঠান। এই সংবাদ চারদিকে ছড়িয়ে পড়তেই জাহাঙ্গীরের উপর লোক আরও অসন্তুষ্ট হয়ে উঠল। মহব্বত খান কাবুলে জাহাঙ্গীরের কর্মী হিসেবে প্রেরিত হয়েছিলেন। তিনিও মুজাদ্দিদ সাহেবের শিষ্য ছিলেন। তাই ক্রোধে আগুন হয়ে তিনি বিদ্রোহ করলেন। শুধু তাই নয়, নিজের নামে মুদ্রা প্রচলন করলেন এবং জাহাঙ্গীরকে বন্দি করলেন। এদিকে মুজাদ্দিদ সাহেব মহব্বত খাকে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে জানালেন এবং তাঁকে কারাগার থেকে মুক্তি দিতে বললেন। মুহব্বত তাই করলেন।
জাহাঙ্গীর এবার মুজাদ্দিদ সাহেবকে সসম্মানে দরবারে আমন্ত্রণ করলেন, কিন্তু মুজাদ্দিদ সাহেব জানালেন তার কতগুলো শর্ত পালন করতে হবে। তবে জাহাঙ্গীরের সঙ্গে তিনি সাক্ষাৎ করতে পারেন নচেৎ দেখা হওয়ার কোন উপায় নেই- (ক) দরবার হতে ইসলামবিরোধী সেজদা বা প্রণিপাতের ও কুর্নিশ প্রথার উচ্ছেদ করতে হবে। (খ) ধ্বংস করে দেওয়া মসজিদগুলো পুনঃ নির্মাণ করতে হবে। (গ) যুদ্ধকরের পুনঃ প্রবর্তন করতে হবে। (ঘ) জাহাঙ্গীরকে নিজে ইসলাম অনুযায়ী চলতে হবে এবং রাজ্য ইসলামের আইন মতে চলবে। (ঙ) বিচার আগের মত কাজী বা মুফতি মৌলভীরা করবেন। জাহাঙ্গীর সমস্ত শর্ত মেনে নিলেন, নিজে মুজাদ্দিদ সাহেবের শিষ্য হলেন এবং মদ্যপান ত্যাগ করলেন। পাঁচবার নামায, কুরআন পাঠ প্রভৃতি শুরু করলেন। মুহাদ্দিদ সাহেবকে প্রধান পরামর্শদাতা মদ্যপ চরিত্রহীন ধর্মত্যাগী প্রায় জাহাঙ্গীর যেন ইসলামের স্নিগ্ধ আলোতে নব শিশুর মত নির্মল জীবন আরম্ভ করলেন। মাত্র পাঁচ বছর তার এই নতুন জীবন স্থায়ীত্ব লাভ করেছিল। তিনি নূরজাহানকে আর পূর্বের মত বাইরের ভূমিকা পালন করতে নিষেধ করে দিলেন। একটি কূপের মত গভীর গর্ত তৈরি করালেন সেটা সোনা রুপার টাকা দিয়ে ভর্তি করলেন সেটা হতে জাহাঙ্গীর দীন, দুস্থ, অনাথ, বিধবা হিন্দু মুসলমান প্রজাদের দান করতেন।
একদিন যে জাহাঙ্গীর ছিলেন নূরজাহানের হাতের পুতুল প্রজাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ অনুভবের অবকাশ ছিল না। আজ তিনি মুজাদ্দিদ সাহেবের পরামর্শে দরবারের বাইরের ফটকে একটি শিকল রাখলেন যেটি একেবারে জাহাঙ্গীরের শয়নকক্ষ পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল, আর সঙ্গে সঙ্গে একটা ঘণ্টাও বাঁধা ছিল। যেকোন অত্যাচারিত, উপবাসী, অবহেলিত, মুসলমান, অমুসলমান প্রজা রাজকর্মচারীদের দ্বারা যার কাজ সমাধা হয়নি তিনি শিকল টানলেই বাদশা জাহাঙ্গীর তাকে সঙ্গে সঙ্গে কক্ষে ডাকতেন এবং তাঁর সন্তোষজনক সমাধান করে তবে ক্ষান্ত হতেন।
একদিন রূপ লাবণ্যের জীবন্ত প্রতীক নূরজাহান আয়নার সামনে তাঁর রূপচর্চা করছিলেন এমন সময় এক বিকৃত মস্তিষ্ক হিন্দু প্রজা কেমনভাবে একেবারে নূরজাহানের কক্ষে উপস্থিত হয়ে পড়ে। নূরজাহান সঙ্গে সঙ্গে তাকে গুলি করেন। হিন্দু প্রজা মারা যায়। মৃতের আত্মীয় শিকল টানলেন এবং জাহাঙ্গীরের নিকট বিচারপ্রার্থী হলেন নূরজাহানের বিরুদ্ধে। জাহাঙ্গীর তার প্রিয়তমা বিশ্ব সুন্দরী নূরজাহানের বিচার করে রায় দিলেন নূরজাহানের প্রাণদণ্ড। সকলেই অবাক হলেন। সেদিনের জাহাঙ্গীর আর আজকের জাহাঙ্গীরের মধ্যে অনেক দূরত্ব, অনেক ব্যবধান। আগে ছিলেন ধর্মমুক্ত রাজা, এখন হচ্ছেন ধর্মযুক্ত বাদশাহ। সারা ভারতে যিনি সব চেয়ে অবাক হয়েছিলেন তিনি তাঁর সহধর্মিণী, সহকর্মিণী, চিরসঙ্গিনী নূরজাহান। নূরজাহান কাঁদতে লাগলেন এবং বললেন, “হে স্বামী পুরনো দিনের কোন কথা কি আপনার মনে নেই! আমার সমস্ত প্রেম-ভালবাসা, মায়া, সেবা সমস্ত কিছু একটু মনের তুলাদণ্ডে ওজন করলে হতো না?” জাহাঙ্গীর চোখ ভরা জল নিয়ে বললেন, “প্রিয় নূরজাহান, আমি আমার মনের তুলাদণ্ডে তোমার সারা জীবনের সবকিছু এক পাল্লায় চাপিয়েছি আর অন্য পাল্লায় চাপিয়েছি হযরত মুহাম্মদের (সা.) আইনকে। বারে বারেই ভারী হয়েছে ইসলামের আইনের নির্দেশ। ইসলামের আইনে তুমি তাকে হত্যা করতে পারতে প্রাণদণ্ডের বা ব্যভিচারের অপরাধে। কিন্তু সে দোষ তার ছিল না। আসলে সে ছিল বিকৃত মস্তিষ্ক, অতএব আবার বলছি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত তোমার প্রাণদণ্ড।” বিচার প্রার্থী স্বপ্ন দর্শনের মত নাটকীয় ইসলামী বিচার ব্যবস্থা দেখে কাঁদতে কাঁদতে বললেন, “হে বাদশাহ! আমরা আর প্রাণদণ্ড দেখতে চাই না, নূরজাহানকে আমরা ক্ষমা করলাম। আমরা আজ বুঝলাম ইসলাম সত্যিই শান্তি ও সত্যের নিরপেক্ষ ধর্ম।”
অনেক কান্নাপুত অনুরোধে নূরজাহান তাঁদের নিকট ক্ষমার সাথে প্রচুর ক্ষতি পূরণ দিয়ে প্রাণ ফিরে পেলেন। জাহাঙ্গীর এত সুন্দর, আদর্শ চরিত্রের প্রভাব তাঁর সানদের উপর পড়া অস্বাভাবিক ছিল না।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/25
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।