hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

২১
সপ্তম অধ্যায় সম্রাট আওরঙ্গজেবের পরবর্তী মুঘল বাদশাহ
সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর তাঁর পরবর্তী বংশধরগণ সম্রাট আওরঙ্গজেবের মত এত যোগ্যতাসম্পন্ন ছিলেন না, কিন্তু তাই বলে অযোগ্যও ছিলেন না। আওরঙ্গজেবের জ্যেষ্ঠপুত্র শাহ আলম বাহাদুর শাহ উপাধি নিয়ে ১৭০৭ খৃস্টাব্দে সিংহাসনে আরোহণ করলেন। সম্রাট শাহ আলম বা বাহাদুর শাহ বীর পণ্ডিত ও ধর্মপরায়ণ ছিলেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের মৃত্যুর পর সকল শক্রই স্বাভাবিকভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে থাকে। কিন্তু শাহ আলমের বীরত্ব গাম্ভীর্য ও কলাকৌশলের ভূমিকা অবলোকন করেই অনেকে শান্ত ও ক্ষান্ত হয়। কিন্তু শিখ জাতি শক্তিশালী হয়ে বান্দার নেতৃত্বে এগিয়ে এলেন। বান্দার আদেশে শিরহিন্দে লুটপাট শুরু হয়। বাহাদুর শাহ কোন সেনাপতি নিয়োগ না করে নিজে বীরবেশে সুশিক্ষিত সৈন্যসহ স্বয়ং যুদ্ধক্ষেত্রে নামলেন। যুদ্ধে শিখ সৈন্য সম্পূর্ণরূপে পরাজিত হল এবং বান্দা কোন রকমে পালিয়ে প্রাণ বাঁচান। চারদিকে শাহ আলমের সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। শাহ আলম মুঘল বাহিনীকে শক্তিশালী করে সাম্রাজ্য পরিচালনা করতে লাগলেন। কিন্তু ১৭১২ খৃস্টাব্দে তাঁর মৃত্যু হয়। মাত্র পাঁচ বছর রাজত্ব করেন শাহ আলম। স্বল্পায়ু না হলে শাহ আলম আওরঙ্গজেবের মত অমর হয়ে থাকতেন। তিনি সিংহাসনে বসে রাজা প্রজাদের সঙ্গে মৈত্রী বন্ধনের ব্যবস্থা করেছিলেন। সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে বন্দি শম্ভুজির পুত্র শাহুকে মুক্তি দিলেন। এমনিভাবে পাণ্ডিত্য, বিচক্ষণতা, সুদূরপ্রসারী চিন্তাধারা, সর্বোপরি ধর্ম প্রবণতা তাঁকে মহীয়ান করে তুলেছিল।

সম্রাট শাহ আলমের মৃত্যুর পর তাঁর পুত্র জান্দাহার শাহ সম্রাট হন। তিনিও বিচক্ষণ ছিলেন। দুষ্ট দমনে তিনি ছিলেন খুব নির্ভীক। ষড়যন্ত্রকারীদের চক্রান্তে এক বছর রাজত্ব করার পর তিনি গুপ্ত ঘাতকের হাতে নিহত হন। এখানে অপমৃত্যুর জন্য তিনি দায়ী নন। ভারতে গান্ধীজি, পাকিস্তানের লিয়াকত আলী খান, আমেরিকার মিঃ কেনেডিকে হত্যা করা হয়েছিল। যারা হন্তা তারাই কলঙ্কিত আর যারা নিহত তারা ইতিহাসের আসল পাতায় চির জীবন্ত হয়ে রয়েছেন। সম্রাট জান্দাহারের পরে বাহাদুর শাহের পৌত্র ফাররুক শিয়র সিংহাসনে বসেন ১৭১৩ খৃঃ। পূর্ব পুরুষদের আকস্মিক মৃত্যু লক্ষ করে স্থির করলেন মৃত্যুর পূর্বে এমন যোগ্য প্রতিনিধি তৈরি করতে হবে, যাতে তাঁরা যেকোন মুহূর্তে সাম্রাজ্যের হাল ধরতে পারে। তাই সম্ভ্রান্ত বংশের যোগ্য দুই ভাই (ইতিহাসে সৈয়দ ভাতৃদ্বয় বলে পরিচিত) সৈয়দ হুসাইন আর সৈয়দ আবদুল্লাকে সঙ্গে নিলেন এবং রাজকার্যে এমন সুযোগ্য করে তুললেন যাতে সম্রাটের অসুস্থতা, অনুপস্থিতির কারণে সম্রাটের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হতে পারে। অপরপক্ষে অনেক ঐতিহাসিক মনে করেন সম্রাট ফররুক শিয়র সৈয়দ ভাতৃদ্বয়ের হাতের পুতুল ছিলেন। আসলে তারা সম্রাটের উচ্চ চিন্তা বুঝতে পারেননি। ঐ সময় মারওয়ার রাজা অজিত সিং বিদ্রোহ ঘোষণা করলে সম্রাট তা কঠোর হস্তে দমন করেন। অজিত সিং পরাজিত হয়ে অত্যন্ত আগ্রহে সম্রাট ফারুকশিয়রের আনুগত্য স্বীকার করেন এবং নিজ কন্যাকে সম্রাটের সহিত বিবাহ দেন। পূর্বে বর্ণিত শিখ নেতা বান্দা আবার শক্তি সঞ্চয় করে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। ফররুকশিয়র বিপুল বিক্রমে বান্দাকে পরাজিত এবং নিহত করেন। ১৭১৯ খৃস্টাব্দে আততায়ীর হাতে সম্রাট নিহত হন।

এমনিভাবে বাহাদুর শাহের চতুর্থ পুত্র জাহান শাহ মুহম্মদ শাহ উপাধি নিয়ে সম্রাট হলেন (১৭১৯-৪৮)। পতনোন্মুখ মুঘল সাম্রাজ্যের তিনিই ছিলেন শেষ প্রতাপশালী সম্রাট। তার সময়ে দরবারে ওমরাহগণ ইরানী ও তুর্কী দুই দলে বিভক্ত হয়ে যায়। ফলে সাম্রাজ্য অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা প্রকাশ পায়। তাঁর উজির নিজাম উল মুলক দাক্ষিণাত্যের সুবাদার থেকে স্বাধীন শাসক হয়ে উঠলেন, হায়দরাবাদ রাজ্যের তিনিই প্রতিষ্ঠাতা। এই সময় সাফাবী বংশ উচ্ছেদ করে তুর্কী নাদির শাহ পারস্যের মসনদে বসে ভারত আক্রমণ করেন। তার প্রচণ্ড আঘাতে মুঘল সাম্রাজ্যের মেরুদণ্ড ভেঙে যায়। সুবাদারগণ চারদিকে স্বাধীন হয়ে দাঁড়ালেন। অযোধ্যার শাদাৎ খাঁ, বাংলা দেশে আলিবর্দী, রোহিল খণ্ডে আফগানরা। মারাঠাগণ এই সময় খুব প্রবল হয়ে মালব, বুন্দেল খণ্ড গুজরাট, বেবার ও উড়িষ্যা পর্যন্ত দখল করেন। বাংলাদেশে মারাঠাদের লুটপাটকে লোকে বর্গীয় হামলা বলত।

নাদীর শাহের পর আহম্মদ শাহ আব্দালির ভারত অভিযানে মুঘল সাম্রাজ্য একবারে অন্তঃসারশূন্য হয়ে পড়ল। মুহম্মদ শাহের পরে আহম্মদ শাহ (১৭৪৮-৫৪), দ্বিতীয় আলমগীর (১৭৫৪-৫৯), দ্বিতীয় শাহ আলম (১৭৫৯-১৮০৬), দ্বিতীয় আকবর (১৮০৬-৩৭) ও দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ (১৮৩৭-৫৮) সম্রাট হয়েছিলেন। ১৭৫৭ খৃঃ পলাশীল যুদ্ধে বৃটিশ রাজশক্তির উভ্যদয় হয় দ্বিতীয় আলমগীরের রাজত্বকালে। তার একশত বছর পর (১৮৫৭-৫৮) দ্বিতীয় বাহাদুর শাহের আমলে জাতীয় বিদ্রোহ হয়। ঐ বিদ্রোহের নায়ক হিসেবে তিনি ইংরেজদের হাতে বন্দি হয়ে রেঙ্গুনে নির্বাসিত হন এবং তাঁর পুত্র পৌত্রদের তাঁর সামনে দিল্লিতে মিঃ হডসন গুলি করে মারেন। সম্রাট মুহম্মদ শাহ থেকে দ্বিতীয় বাহাদুর শাহ পর্যন্ত সম্রাটদের অনেক সমালোচক ও ঐতিহাসিকগণ অযোগ্য বিলাসী প্রভৃতি বলে আখ্যায়িত করেন। ইংরেজ এবং দেশের দালালগণ ভারতের বিরুদ্ধে যেভাবে বিরোধিতা করেছিল সেখানে সাহস ও যোগ্যতা প্রদর্শন ইতিহাসে আত্মহত্যার নামান্তর বলে গণ্য হতো। হৃদয়ে খোদাই করে রাখার মত ঘটনা এই যে, শেষ সম্রাট বাহাদুর শাহ সিপাহি বিদ্রোহ আন্দোলনে (১৮৫৭) সারা ভারতে বিদ্রোহই হিন্দু মুসলমানদের নিয়ে ইংরেজদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য সারা ভারতের সম্রাট বলে ঘোষণা করেন। সারা ভারতে সকলের মাঝে সকলের বিচারে সম্রাট হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার মত যোগ্যতা তাঁর ছিল একথা সর্বজনবিদিত।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন