মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
১৮৬৩ সালে স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম হয় এবং ১৯০২ সালে তিনি ইহধাম ত্যাগ করেন। তিনি মোটামুটি রামমোহনের প্রভাবপ্রাপ্ত ছিলেন তাই ব্রাহ্ম সমাজে তাঁর যাতায়াত ছিল। আমরা জানি তিনি রামকৃষ্ণের শিষ্য ছিলেন। তাই এও ভাবি বিবেকানন্দ যদি এত বড় পণ্ডিত, প্রতিভাবান, বিপ্লবী ও বুদ্ধিমান হন তাহলে তাঁর গুরু রামকৃষ্ণ আরো জানি কত না মহান। আমরা বিবেকানন্দকে যেভাবে পেয়েছিলাম তাতে জানতাম তিনি অত্যন্ত ধর্ম ভীরু ব্যক্তি ছিলেন, বেদ ও গীতার মতাদর্শভাবে চলতেন। একটি অক্ষরেও এদিক ওদিক যেতেন না। আর কালির বাণীপ্রাপ্ত হয়ে একেবারে হিন্দু ধর্ম প্রচারে আমেরিকা গিয়ে এমন বক্তৃতা দেন যে, গোটা আমেরিকা নাকি তোলপাড়।
আসলে তিনিও সেকালে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত বি, এ, পাস করেছিলেন এবং ইংরেজকে সরানো যায় কি না তার জন্য হাবভাব বুঝতে প্রায় সারা ভারত ঘুরলেন, কিন্তু হিন্দু জাতির কোন সাড়া তিনি পাননি। তাই স্বামী বিবেকানন্দ বলেছেন, “বিদেশী শাসন উচ্ছেদ করার জন্য আমি ভারতীয় নৃপতিদের নিয়ে একটি শক্তি জোট তৈরি করতে চেয়েছিলাম। সে জন্যই আমি হিমালয় থেকে কন্যা কুমারীকা পর্যন্ত দেশের সর্বত্র ঘুরে বেড়িয়েছি, সেই জন্যই আমি বন্দুক নির্মাতা স্যার হাইরাম ম্যাক্সিমের সঙ্গে বন্ধুত্ব করেছিলাম। কিন্তু দেশের কাছ হতে আমি কোন সাড়া পাইনি। দেশটা মৃত। (দ্রঃ ভুপেন্দ্রনাথ দত্তের স্বামী বিবেকানন্দঃ ১৩৬৪ বঙ্গাব্দ, পৃঃ ১০৮)
এবার তার আমেরিকা যাওয়ার ব্যাপারটা আসলে যে টাকা আনতে যাওয়া তা সহজে কেউ বিশ্বাস করবে না আর আমেরিকার শিকাগোতে বক্তৃতা যা দিয়েছিলেন তা তেমন কোন যুক্তি ও মুক্তির কথা নয়, শুধু টাকা ও রুটির কথাই মুখ্য ছিল, তাও বিশ্বাস করা মুশকিল তাই প্রমাণের জন্য উদ্ধৃতি দিচ্ছি “সতের দিন ধরে অনুষ্ঠিত ঐ সম্মেলনের উদ্বোধন অধিবেশন ও বিভাগীয় অধিবেশনগুলোতে প্রদত্ত তাঁর বক্তৃতাগুলোতে এ কথাই সবচেয়ে বেশি ফুটে ওঠে, ধর্ম নয় রুটির ভারতীয়দের সর্বাগ্রে প্রয়োজন” (দ্রঃ সৌরেন্দ্র মোহনে শা রাঃ চিঃ পঃ ২২৫)
“স্বামীজি আমেরিকা যাওয়া উদ্দেশ্য সম্পর্কে স্বামী ব্রহ্মানন্দকে বলেছিলেন- দেখ ভাই, এ দেশে যে রকম দুঃখ দারিদ্র্য, এখানে এখন ধর্ম প্রচারের সময় নয়। যদি কখনও এদেশের দুঃখ দরিদ্র্য দূর করতে পারি, তখন ধর্মের কথা বলব। সেই জন্য কুবেরের দেশে যাচ্ছি; দেখি যদি কিছু উপায় করতে পারি। (দ্রঃ স্বামী অখণ্ডনন্দের ‘স্মৃতি কথা’-১৩৭৫ বঙ্গাব্দ, পৃঃ ১০৮)
আমেরিকা হতে তিনি লণ্ডনে যান অর্থাৎ তখনকার মনিবের দেশে সেখানে একটি সুন্দরী রমণী তাঁর প্রতি মুগ্ধ হন এবং নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিবেদন করেন। সুন্দরীর নাম ছিল মিস মার্গারেট লোবল। তিনিই নিবেদিতা নাম নিয়ে বিবেকানন্দের সঙ্গে সারা জীবন ছায়ার মত ছিলেন। তিনি শিক্ষিতা এবং রাজনীতি সচেতন নারী সন্দেহ নেই। তবু কেন তিনিই ছায়ার মত স্বামীজিকে বরণ করলেন তাও বিতর্কিত বিষয়। ওখান হতে ভারতে ফিরেই ভারতের শ্রেষ্ঠতম ঘাঁটি কলকাতায় রামকৃষ্ণ মিশন প্রতিষ্ঠা করেন। তখন স্বামীজির হাতে অঢেল টাকা। কী শর্তে এত টাকা চালাক ইংরেজ দিল তাও সহজেই অনুমেয়। মিশনের মাধ্যমে অনেক শিক্ষিত মানুষ রাজনীতি হতে পরিত্রাণ পেয়ে স্বর্ণ রাজ্যের স্বপ্ন দেখতে লাগলো। তাই স্বামীজিকে ঘোষণা করতে হয়েছিল রাজনীতির সঙ্গে মিশনের কোন সম্বন্ধ নেই। "The aims and ideals of the Misson being purly spiritual and humanitarian it shall have no connection with politics." (hs" The life of Swamin Vivekananda by his Eastern and Western Disciples. 1960, p 501)
আসলে রামকৃষ্ণের নাম অনুসারে মিশনের নাম হলেও গামকৃষ্ণ মিশন মানেই বিলেতি মিশন। আর যাদের দান নিতে হয় তাদের মানও রাখতে হয়। আজও যারা ইংরেজদের টাকা নিচ্ছে, টাকা নেওয়া ও দেওয়ার পেছনে কারণ আছে আর সেগুলো অনেক ক্ষেত্রে অতি মারত্মক। তাহলে স্বামীজি কি রামকৃষ্ণকে অবোধ শিশুর মত চূড়ান্তভাবে গ্রহণ করেননি? উত্তরে বলা যায় না। যেহেতু একবার মিশনের বড় বড় সভ্য এবং রামকৃষ্ণের প্রাক্তন বিখ্যাত প্রত্যক্ষ শিষ্যদের সঙ্গে তার কর্মসূচি নিয়ে তর্ক বিতর্ক হয় ফলে তিনি সদম্ভে বলেন, 'I am not a servant of Ramkrishna or any one, but of him only who serves and helps others, without caring for his own Mukti." (দ্রঃ ঐ p 507) অবশ্য উত্তরেই প্রশ্ন বোঝা যাচ্ছে। আর এও দেখা যাচ্ছে, আমি রামকৃষ্ণ অথবা কারো চাকর নই, কিন্তু তার চাকর যে অপরকে সাহায্য করে নিজের মুক্তির ধার ধারে না।
তিনি প্যারিসে দ্বিতীয় সফর করেন, সেখানে বক্তৃতায় তিনি ভারতের শালগ্রাম শিলা ও শিবলিঙ্গের পূজার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ করেন। এই সময় একজন রুশ বিপ্লবীর সাক্ষাৎ হয়। (দ্রঃ স্বামী বিবেকানন্দ, ভূপেন্দ্রনাথ দত্ত, ১৩৬৪ বঙ্গাব্দ পৃঃ ৫)।
তাকে যত বড় ধর্মভীরু বলে আমাদের শেখানো হয়েছে আসলে তিনি তা ছিলেন না অর্থাৎ গোড়া ছিলেন না; বরং প্রগতিবাদী ছিলেন তাই তিনি গীতা পড়ার চেয়ে ব্যায়াম করা উত্তম মনে করতেন। তাই তাঁর উক্তি "You will be nearer to Heaven through football than through the study of the Gita" (hs" The complete Works of Swami Vivekananda, 1960, Vol 3, p 242) বিবেকানন্দ ব্রাহ্মণ্যবাদের একচেটিয়া প্রভুত্বেরও নিন্দা করেছেন। তিনি চাইতেন সবাই যেন ব্রাহ্মণত্ব অর্জন করে।” অস্পৃশ্যতাবাদের তিনি নিন্দা করেছেন। (বাঙ্গালীর রাষ্ট্র চিন্তা পৃঃ ২-৪) “আধ্যাত্মিক চিন্তা ও ক্রিয়া কলাপে উচ্চ বর্ণের একচেটিয়া অধিকারবাদ উপনিষদে স্বীকৃত। বিবেকানন্দ প্রাচীন চিন্তার সব কিছুকেই অন্ধভাবে গ্রহণ করেননি”। (দ্রঃ The life of Swami Vivekananda by his Eastern and Western Disciples, 1960, p, 624)।
স্বাধীনতার জন্য ভারত ঘুরেছিলেন, বিপ্লবের জন্য বন্দুক নির্মাতার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন কিন্তু আমেরিকা, ব্রিটেন ও প্যারিস ঘুরে এসে, অর্থপ্রাপ্ত হয়ে আর স্বাধীনতার কথা না বলে হিন্দু জাতিকে মুসলমানের মত সর্ব সভ্য জাতিতে পরিণত করতে চেয়েছিলেন। তাই ইংরেজদের ওপর দোষারোপ না করে দোষ দেশবাসীর ওপরেই নিক্ষেপ করতেন। ভারতের দুর্দশা ও দুর্গতির জন্য দায়ী ইংরেজ নয়, দেশীয় “সমাজপতি ও পূর্ব পুরুষদের” ত্রুটি। তিনি বিপ্লবীদের ক্রীতদাস উপাধি দিয়ে বলেছিলেন, “এদেশের ক্রীতদাসরা মুক্তি চাইছে অপরকে ক্রীতদাস করার জন্য” (দ্রঃ The Complete works of Swami Vivekananda, 1959, Vol, 4, p 368)
ইংরেজের ওষুধ খাওয়া বঙ্কিম যেমন দেশ ও সরকারকে দেবতার আসনে বসিয়ে ভারতবাসীকে ভেড়ায় পরিণত করতে চেয়েছিলেন, বিবেকানন্দও যা বলেছিলেন, তাতে সেই গন্ধই পাওয়া যায়। “আগামী পঞ্চশৎ বর্ষ ধরিয়া সেই পরম জননী মাতৃভূমি যেন তোমাদের আরাধ্য দেবী হন, অন্যান্য অকেজো এই কয়েক বর্ষ ভুলিলে কোন ক্ষতি নেই। অন্যান্য দেবতারা ঘুমাইতেছেন, এই দেবতাই একমাত্র জাগ্রত”। এখানে তিনি কেমন দেব দেবতা ভক্ত স্বামীজি ছিলেন তাও বোঝা যাচ্ছে আর যতদিন তিনি মাতৃ পূজা করতে নির্দেশ দিচ্ছেন ততদিন তাঁর বাবার সম্ভাবনা ছিল না অর্থাৎ তাঁর জীবদ্দশায় তিনি দেশবাসীকে বিপ্লবের পরিবর্তে মাতৃভূমিকেই একমাত্র ‘কেজো ও জাগ্রত’ দেবতা হিসেবে পূজা করিয়ে ইংরেজের সঙ্গে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে সততা পালনে শৈথিল্য বা বিশ্বাসঘাতকতা করেননি।
আরও স্পষ্ট প্রমাণের প্রয়োজনে বলা যায় তিনি সরকারকেও পূজার আরাধা বিষয় বা বস্তু মনে করতে দ্বিধা করেননি। যেমন তিনি লিখেছেন, “রাজা প্রজাদিগের পিতা-মাতা, প্রজারা তাহার শিশু সন্তান। প্রজাদের সর্বতোভাবে মা মুখাপেক্ষী হইয়া থাকা উচিত।” (দ্রঃ স্বামী বিবেকানন্দের বাণী ও রচনা, খণ্ড ৬, পৃঃ ২৩৬ বর্তমান ভারত)
নিঃসন্দেহে তার রাজনৈতিক মনোভাব জানার জন্য উপরোক্ত মন্তব্যগুলো যথেষ্ট আর ধর্মভীরুতার গভীরতাও পূর্বে পাওয়া গেছে তবু পরিশেষে বিবেকানন্দের আর একটি বাণী দিয়েই প্রসঙ্গ খতম করতে চাই। তিনি বলতেন, "First bread and then religion" অর্থাৎ প্রথমে রুটি তার পরে ধর্ম। তিনি আরও স্পষ্ট করে বলেছেন, “রুটি চাই-যে ঈশ্বর কেবল স্বর্গের চিরন্তন সুখের কথা বলে, অথচ রুটি যোগাতে পারে না তার প্রতি আমার কোনও বিশ্বাস নেই।” (দ্রঃ ঐ)। বিবেকানন্দকেও স্বাধীনতার ইতিহাসে স্থান দেওয়া কী করে যাবে তাও চিন্তার বিষয়।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/64
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।