hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৩৫
হযরত নিজামুদ্দিন আওলিয়া (রহ.)
হযরত নিজামুদ্দিন (রহ.) ১২৩৮ খৃস্টাব্দে বদায়ুননগরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হযরত ইমাম হোসেনের পবিত্র বংশ সম্ভূত। অত্যন্ত বুদ্ধিমান, তেজস্বী ও প্রতিভাশালী বালক নিজামুদ্দিন শৈশবে বদায়ুন নগরের একটি মক্তবে মনোযোগের সাথে বিদ্যাভ্যাস করেন। তদানীন্তন সময়ে দিল্লী নগরে “শামসুল মূলক” অর্থাৎ ভারতের সূর্য উপাধিপ্রাপ্ত মহাপণ্ডিত জনাব মাওলানা খাজা সামসুদ্দিন খারেজমী নামে জনৈক আলেমের নিকট তিনি তাফসির, হাদীস, ফেকাহ, দর্শন, বিজ্ঞান প্রভৃতি শাস্ত্র অধ্যয়ন করতেন। তাঁর স্মৃতি শক্তি এত প্রখর ছিল যে, ‘মাশারেকুল আনোয়ার’ নামক একখানি বৃহদাকার গ্রন্থ আদ্যোপান্ত তাঁর মুখস্থ হয়ে গিয়েছিল।

খাজা সাহেবের প্রভাব সারা ভারতের ওপর বিস্তৃত ছিল। সম্রাট আলাউদ্দিনের তৃতীয় পুত্র কুতুবউদ্দিন মোবারক তার শাসনকালে মহামান্য খাজা সাহেবের ওপর অত্যন্ত ঈর্ষান্বিত হয়ে তাঁর আধ্যাত্মিক ক্ষমতার সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দিতা শুরু করলেন। তারপর সম্রাট সহসা একদিন পেটের বেদনায় আক্রান্ত হয়ে পড়লেন। অনেক চেষ্টা চরিতেও কোন কাজ হলো না দেখে দরবারস্থ ওমরাহবৃন্দ বললেন- খাজা সাহেবকে সন্তুষ্ট না করলে এ পীড়ার উপশম হবে না। যাইহোক, আমন্ত্রিক খাজা সাহেব সম্রাট জননীর আকুল অনুরোধে বিগলিত হয়ে করুণাময় আল্লাহর সমীপে দু রাকাত নামায পড়ে প্রার্থনা করলেন। তৎক্ষণাৎ সম্রাটের বেদনার উপশম হলো।

আবার একদিন সম্রাট স্বীয় সভাসদ কাজী গজনভীকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘খাজা সাহেব লোকদেরকে প্রচুর পরিমাণে দান করেন তা তিনি পান কোথায়?’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘আপনার আমীর ওমরাহদের অনেকেই তার শিষ্য, তাদের কাছ থেকে পাওয়া অর্থই তিনি দান করেন।’ সম্রাট আদেশজারী করে খাজা সাহেবের নিকট উপহার প্রেরণ বন্ধ করে দিলেন। তখন পান্থশালার অধ্যক্ষ রাজা ইকবাল আয়ের কোন উপায় নাই দেখে খাজা নিজামুদ্দিন (রহ.) -র নিকট নিবেদন করলেন এত বড় পান্থশালা চলবে কী করে? খাজা সাহেব বললেন, ‘করুণাময় আল্লাহর পবিত্র নাম স্মরণ করে তোমার সম্মুখস্থ তাকের ভেতর হাত দিলেই যত টাকা প্রয়োজন পাবে।’ কি আশ্চর্য ব্যাপার। আধ্যাত্মিক শক্তিতে বলীয়ান মহা পুরুষের কি অসীম প্রভাব। খাজা ইকবাল সাহেব তার প্রয়োজন মত টাকা ঐ তাকে হাত দিলেই পেতেন।

এভাবে যখন কোন প্রকারেই অত্যাচারী কুতুবুদ্দিন খাজা সাহেবকে পেরে উঠলেন না তখন তিনি আদেশজারী করে খাজা সাহেবকে সংবাদ পাঠালেন, তাকে প্রত্যেক দিন সম্রাটের দরবারে উপস্থিত হতে হবে এবং তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে হবে। কিন্তু খাজা সাহেব তাঁর এই আদেশকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করলেন। আদেশ রক্ষা না করায় সম্রাট ক্রুদ্ধ হয়ে আবার সংবাদ পাঠালেন, তাঁকে সপ্তাহের একদিন সম্রাটের সাথে দেখা করতেই হবে। খাজা সাহেব এবারও রাজ আদেশ প্রত্যাখ্যান করলেন। তখন অত্যন্ত রাগান্বিত হয়ে সম্রাট পুনর্বার সংবাদ পাঠালেন, যদি খাজা সাহেব আগামী মাসে প্রথম তারিখে শাহী দরবারে সম্রাটের সম্মুখে উপনীত না হন, তবে রাজ সৈন্যরা তাঁকে বলপূর্বক ধরে আনবেন এবং সম্রাটের ক্ষমতা আর খাজা সাহেবের কৃতিত্বের পরীক্ষা হবে।

রাজদরবারের অনেকেই এমনকি সৈন্যরাও খাজা সাহেবের শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন। ফলে সম্রাটের আদেশ শুনে তাঁরা তখন ভীত হয়ে খাজা সাহেবের কাছে গিয়ে বিনীত স্বরে বললেন, ‘হুজুর! আমরা আপনাকে অত্যধিক শ্রদ্ধা করি, কিন্তু আমরা রাজ আদেশের দাস। যদি সম্রাট আমাদেরকেই আপনাকে অসম্মানজনকভাবে বন্দি করে নিয়ে যাওয়ার আদেশ দেন তখন আমরা কী করব? আমরা কি রাজশক্তির বিরুদ্ধে জেহাদ করব?’

শিষ্যদের উত্তেজিত ভাব দেখে খাজা সাহেব সান্ত্বনার সুরে বললেন, ‘কোন কিছুর প্রয়োজন নেই, তোমরা রাজ আদেশের দাস কিন্তু আমি যে রাজার দাস তিনিই আমার জন্য যথাযথ ব্যবস্থা করে রেখেছেন। নির্দিষ্ট দিনের পূর্বেই তোমরা সব দেখতে পাবে।’ অনেকেই সেদিন খাজা সাহেবের এই হেয়ালীর তাৎপর্য বুঝতে পারেননি। হয়ত ভেবেছিলেন কোন স্বর্গীয় ফৌজ বা বাহিনী এসেই বোধ হয় খাজা সাহেবকে রক্ষা করবে।

যাইহোক, নির্দিষ্ট দিনের কয়েক মাস পূর্বে খাজা সাহেব মাওলানা বুরহানউদ্দিন, মাওলানা ইয়াকুব প্রমুখ শিষ্যদের খেলাফতি বা প্রতিনিধিত্ব দান করে যথাক্রমে দাক্ষিণাত্য ও গুজরাটে ধর্ম প্রচারের উদ্দেশ্যে প্রেরণ করেন। তিনি প্রত্যেককে একটি করে পাগড়ি, জামা ও জায়নামাজ (নামায পড়ার বিছানা) দান করেছিলেন।

এভাবে তিনি প্রায় নিঃসঙ্গ হয়ে পড়লেন। দরবারে হাজির হওয়ার পূর্ব দিনে, গভীর রজনীতে তিনি একটি ফারসি কবিতা পাঠ করেছিলেন যার মর্মার্থ- “হে জল্লুক! তুই কোন সাহসে সিংহের সাথে যুদ্ধ করতে আসলি? এই জন্য তোর এই দুর্দশা হল।”

খাজা সাহেব প্রায় চার মাসকাল পীড়িত থাকা অবস্থাতে দরবারে উপস্থিত দিন হওয়ার প্রত্যুষেই রবিউল আওয়াল মাসের ১৮ তারিখে বুধবার এই মরজগৎ ত্যাগ করেন। এত দিনে শিষ্যরা বুঝতে পারলেন যথাযথ ব্যবস্থার তাৎপর্য। মোবারকের আদেশে পদাঘাত করে তাঁর দরবারের পরিবর্তে আল্লাহর দরবারে হাজিরা দিয়ে লক্ষ লক্ষ ক্রন্দনরত শিষ্যদের কাছ হতে তিনি চির বিদায় নিলেন।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন