hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৪৮
সিরাজের ঐতিহাসিক নিমজ্জন
সিরাজ আওরঙ্গজেবের ন্যায় ইসলামের পূর্ণ প্রতীকও যেমন ছিলেন না তেমনি আকবরের ন্যায় স্বধর্মের নিপতি সাধনে অগ্রগামী নায়কও ছিলেন না; বরং তাকে ধর্মভীরু বলার পথে কোন প্রতিবন্ধক নেই। কেননা যখন তিনি বন্দি ছিলেন তখন তার কক্ষে মুহাম্মদীবেগ উলঙ্গ তরবারী হাতে প্রবেশ করলেই সিরাজ অনুমান করেছিলেন তাঁর মৃত্যু সংবাদ আগত। তখন সিরাজ কাতর কণ্ঠে বললেন- ‘মুহাম্মদী বেগ তুমি আমায় কতল করতে এসেছ?’ মুহাম্মদী বেগ তখন নিশ্চুপ। নবাবের মুখের দিকে তাকাতেও যেন সে অপারগ। আবার কাতর কণ্ঠে নবাব বললেন-“আমাকে কি তোমরা সামান্য একটা অসহায় গরিবের মত বেঁচে থাকতেও দেবে না?’ এবার মুহাম্মদী বেগ গলাটা সামান্য পরিষ্কার করে বললো- ‘না, তারা তা দেবে না, আমিও বাঁচতে চাই না, হুসেন কুলীর মৃত্যুর প্রতিশোধ হোক।’ বাংলা, বিহার, উড়িষ্যা তথা সারা ভারতের দেদীপ্যমান আলোকবর্তিকা নবাব সিরাজুদ্দৌলা তাঁর দেশবাসীর চোখের আড়ালে অশ্রু মুছে আবার কাতর কণ্ঠে বললেন- ‘আমাকে একটি বার সুযোগ দাও, আল্লাহর সন্নিধানে যাবার পূর্বে শেষ দুই রাকাত নামায পড়ে নিই।’ মুহাম্মদী বেগের চক্ষুদ্বয় তখন বর্ষণোন্মুখ। অশ্রুবৰ্ষক মেঘে কিছু দেখতে পায় না যে, উত্তরও দিতে পারে না। নবাব বুঝলেন মৌনং সম্মতি লক্ষণ। তাই জীবনের অন্তিম প্রার্থনাময় নামাযে আত্মনিয়োগ করলেন। নামায তখনও শেষ হয়নি, দূরে বাঁশির সংকেত শ্রবণে মুহাম্মদী বেগ প্রার্থনারত অবস্থাতেই তরবারী চালনা করলো নবাবের পিঠের উপর। ঐ আঘাতেই লুটিয়ে পড়লেন নবাব। অতঃপর আরও কয়েকটি আঘাত করলো মুহাম্মদী বেগ। সিরাজ শুধু একবার বলেছিলেন, ‘আল্লাহ তুমি আমায় ক্ষমা করো।’ তারপর রক্তাক্ত সিরাজ শুধু আল্লাহ আল্লাহ শব্দ করতে করতেই চিরবিদায় নিলেন।

এই ঘটনায় অল্পজ্ঞানী পাঠক মুসলমান ভৃত্য কত বিশ্বাসঘাতক ও নিষ্ঠুর হতে পারে তারই শিক্ষা পারে, কিন্তু সূক্ষ্ম ও সুস্থ জ্ঞানীর নিকট ধরা পড়বে আসল রহস্য।

ইংরেজরা যখন সিরাজকে পিঞ্জরাবদ্ধ পাখির মত বন্দি করেছিল তখন সিরাজের সমস্ত চাকর-চাকরানী আর সিরাজের ছিল না; বরং ইচ্ছার বিরুদ্ধেও ক্লাইভ আর ওয়াটসের হাতের পুতুল হয়ে গিয়েছিল। এমতাবস্থায় ইতিহাসে মুসলিম চরিত্রকে কলঙ্কিত করার পরিকল্পিত বুদ্ধিতেই সিরাজের সাহায্যপুষ্ট মুহাম্মদী বেগকেই আদেশ করা হয়েছিল সিরাজকে হত্যা করতে। মুহাম্মদী বেগ তাতে রাজি না হওয়ায় তারও প্রাণদণ্ড হবে বলে তাকে ভীতি প্রদর্শন করা হয়েছিল। তখন অন্যোন্যপায় নিরক্ষর বোকা মুহাম্মদি বেগ অশ্রুসরণ করেও মনের ইচ্ছার বিরুদ্ধেই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই হত্যা করতে বাধ্য হয়েছিল। যদি মুহাম্মদী বেগ শিক্ষিত ও জ্ঞানী হতো তাহলে হয়ত ইংরেজদের আদেশ প্রত্যাখ্যান করে নিজের প্রাণদণ্ডকেই অমৃত জ্ঞানে বরণ করে মীর মর্দান আর মোহন লালের মত ধন্য হতে পারতো। সিরাজ যখন একটু অসহায়ের মত বেঁচে থাকার আবেদন করেছিল তখন মুহাম্মদী বেগ এ কথা বলেছিল না যে, ‘না, আমরা তা দেব না’; বরং তাঁর ভাষাতে হৃদয়ের অবারিত প্রেমধারাই প্রবাহিত হয়েছিল, ‘না, তারা তা দেবে না।’ এই তারা কারা?

যাইহোক, সিরাজকে হত্যা করে তার মৃতদেহকে একটি বস্তায় ভরে হাতীর পিঠে চড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সিরাজের স্ত্রী, মা এবং অনেক আত্মীয়া তখন বন্দিনী। তাঁদের জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল তারা আলিবর্দীর বিখ্যাত বাগানের আম খেতে চান কি না। অশ্রু সজল নয়নে তাঁরা ইঙ্গিতে সম্মতিই দিয়েছিলেন। তারপর করুণার জীবন্ত ছবি ইংরেজ কর্মচারীর আদেশ অনুযায়ী অন্ধ্র ভর্তি আমের বস্তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। নবাব পরিবারের সমস্ত মহিলাদের পক্ষ হতে একজন বস্তার মুখ খুলতেই দেখতে পেলেন ভেতরে আমও নেই বা অন্য কোন খাদ্য বস্তুও নেই, আছে সিরাজের বীভৎস কাঁচা কাটা মাথা। সিরাজ যেন তাঁর গর্ভধারিণী মাকে শেষ দেখা দেখতে এসেছে। সিরাজের হতভাগিনী মা প্রিয় পুত্রের মুখের দিকে এক পলক তাকাতেই অজ্ঞান হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লেন। সম্বিত ফিরে এলে মীর জাফরের অনুচর গোলাম হোসেনের আদেশে তাঁকে পুনরায় কারারুদ্ধ করা হয়।

এদিকে জয়নুল আবেদীন নামক এক দরিদ্র নাগরিকের অনুরোধে সিরাজের খণ্ডিত দেহকে ভাগীরথী নদীর পারে খোসবাগ নামক বাগানে নানাজান, আলিবর্দীর কবরের পূর্ব পাশে সমাধিস্থ করা হলো। আবার মৃত নানা ও নাতীর এক ঐতিহাসিক মিলন হয়েছিল মৃত্যুর পরেও। এ প্রসঙ্গে বর্ধমান জেলার এক কবির কবিতার কিয়দংশ গভীর শ্রদ্ধার সাথে তুলে ধরছি

“আলীবর্দীর কবরের ছায়া সূর্যাস্তের সনে,

ধীরে ধীরে পরে সিরাজের গোরে! দেখি ভাবি মনে;

আজো বুঝি দাদু ভোলে নাই তারি স্নেহের দুলালটিরে,

আজো বুঝি তারে দুটি বাহু দিয়ে রেখেছে সোহাগে ঘিরে।”

সিরাজের ইতিহাস পৃথক একটা পুস্তকে তুলে ধরাই সম্ভব। তার জন্য বহু ঐতিহাসিক তথ্য আমাদের হাতে মজুত আছে। কিন্তু এখানে সংক্ষিপ্ত মাত্র জানানো হলো।

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন