মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।
আসসালামু আলাইকুম, Hadith.one বন্ধ হওয়ার ঝুঁকিতে! আমাদের সার্ভারের মেয়াদ ১১ অক্টোবর ২০২৫ এ শেষ হবে, এবং এবং ওয়েবসাইট টি চালানোর জন্য আমাদের কোনো ফান্ড নেই।
🌟 আপনার দান এই প্ল্যাটফর্মকে বাঁচাতে পারে এবং প্রতিটি হাদিস পড়ার মাধ্যমে সদকাহ জারিয়ার অংশীদার হতে পারেন!
🔗 অনুগ্রহ করে আপনার দানের মাধ্যমে আমাদের এই ওয়েবসাইটটি চালিয়ে নিতে সাহায্য করুন!
জাযাকাল্লাহু খাইরান!
বিশ্বের ইতিহাসে ষোড়শ শতাব্দীতে ধর্মে আন্দোলন ও আলোড়ন শুরু হয়েছিল। ভারতবর্ষ কবীর নানক শ্রী চৈতন্য প্রমুখ মহা পুরুষগণ নানা ধর্মমত সৃষ্টি করে নানা সম্প্রদায় সৃষ্টি করলেন। ভক্তি ও মাহদী আন্দোলন জনসাধারণের মনকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছিল। প্রতি হাজার বছরের শেষ ভাগে ধর্মভোলা মানুষকে উদ্ধারের জন্য একজন ‘মসীহ’ পৃথিবীতে আবির্ভূত হবেন, এ ছিল মাহদীপন্থীদের বিশ্বাস। আফগানিস্তানেও অনুরূপ ‘রাসনী’ আন্দোলন শুরু হয়। তাদের ধ্যান ও ধারণাও অনুরূপ ছিল।
১৫৭৫ খ্রিস্টাব্দে পারস্যের শাহ আততায়ীর দ্বারা নিহত হন। পারস্যে বা ইরানে তখন একটা ইসলাম ধ্বংসী দল তৈরি হয়েছিল, নাম ‘মোলহেদ’। পারস্যে নতুন শাহ সিংহাসনে বসেই চিন্তা করে দেখলেন, এ. কুৎসিত নোংরা দলটি অদূর ভবিষ্যতে সুন্দর স্বচ্ছ ইসলাম ধর্মের কলঙ্কের কারণ হতে পারে। তাই ঐ মালহেদ দলকে নিষিদ্ধ করেন এবং ওদের বন্দি করার আদেশ দিলেন। কাস্পিয়ান সাগরের উপকূলে তাদের প্রধান ঘাঁটি ছিল। ঐ ঘাঁটি পারস্যের শাহ আক্রমণ করলে তারা দলে দলে ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করে। সম্রাট আকবরের সঙ্গে ঐ দল নেতারা দেখা করে নিজেদের মত ও পথের কথা বলতে গিয়ে বলে, আমরা জানি এবং বিশ্বাস করি প্রত্যেক যুগে যুগে নবী আসেন। কিন্তু হযরত মুহাম্মদের (সা.) পর আর কোন নবী আসবেন না বটে কিন্তু ইমাম মাহদীর আগমনের কথা কিতাবে আছে। তাছাড়া প্রতি হাজার বছর অন্তর একজন মোজাদ্দেদ বা সর্বজনীন ধর্ম বিশারদ আবির্ভূত হন। এখন আরবী হিজরি সালের সেই হাজার বছর পূরণের যুগ। আমরা জানতে পেরেছি এ যুগসন্ধিক্ষণে আপনিই সেই ইমাম মাহদী এবং ধর্মপ্রচারক। অতএব আপনি এগিয়ে আসুন। পালন করুন আপনার পবিত্র দায়িত্ব। সম্রাট আকবর এ রকমই একটা সুযোগের অপেক্ষায় নয়, প্রতীক্ষায় ছিলেন। সাম্রাজ্যবাদী আকবর তার রাজনীতির ভাল অঙ্গ হিসেবে এবং ধর্ম জগতে অমর হওয়ার বাসনায় ঐ দলের নেতাদের নিজের উপদেষ্টা হিসেবে গ্রহণ কররেন। (হিস্ট্রী অব ন্যাশনালিজম দ্রষ্টব্য)
ভারতে তিনি এক অখণ্ড সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিলেন। ভারতে হিন্দুগণ সংখ্যাগুরু ছিল বলে হিন্দুদের প্রতি তিনি সহিষ্ণুতার নীতি গ্রহণ করেছিলেন। হিন্দুদের বন্ধুত্ব লাভের জন্য তিনি তীর্থ কর ও জিজিয়া কর মওকুফ করেছিলেন এবং ঠিক একই কারণে তিনি বহু রাজপুত রমণীকে বিয়ে করেছিলেন। তাঁর হিন্দু স্ত্রীগণ হিন্দু রীতিনীতি ও অনুষ্ঠানের প্রচলন করেছিলেন তাঁর হেরেমে। এসব রীতিনীতি নারীবিলাসী সম্রাট আকবরের জীবনে সুদূর প্রভাবিত হয়েছিল। কণ্ঠ সূফী ভ্রাতৃদ্বয় (ফৈজী এবং আবুল ফজল) এবং তাঁদের পিতার সঙ্গে আকবরের সান্নিধ্য লাভের ফলে আকবরের ধর্ম জীবন বিশেষভাবে প্রভাবিত হয়। তাঁরা আকবরকে দর্শন এবং ধর্মীয় আলোচনার জন্য ফতেপুর সিক্রিতে এবাদতখানা নির্মাণ করতে উৎসাহ দিয়েছিলেন। আকবর বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী পণ্ডিতদের তাঁর ইবাদতখানায় আমন্ত্রণ করতে লাগলেন। ১৫৮০ খৃস্টাব্দে আকুয়াডিভ এবং মনসারেটর জেসুইট মিশনকে (খৃষ্টান মিশন) আকবর তাঁর সভায় সাদরে গ্রহণ করলেন। তিনি জোরোস্ট্রিয় ও জৈন ধর্মের পণ্ডিতদের সভায় স্থান দিয়েছিলেন। হিন্দু পণ্ডিতগণ তো সভায় ছিলেনই।
ধর্মবিষয়ক পরামর্শদাতা ছিলেন আবুল ফজলের পিতা শেখ মুবারক। তিনি সর্ববিষয়ে আকবরের মনোরঞ্জনের উপায় উদ্ভাবন করতেন এবং আকবর তাঁকে খুব সমীহ করতেন। শেখ মুবারক নানা যুক্তিতর্কের অবতারণা করে আকবরকে প্রমাণ দিলেন যে উলামা ইসলামের ভুল ব্যাখ্যা করেন। অপরাপর ধর্মের মধ্যেও কিছু ভুল বোঝাবুঝি আছে। যার ফলে বিদ্বেষ আর একঘেয়ে গোঁড়ামি এবং সম্প্রদায়গত আক্রমণের ভাব দেখা যায়।
নিরক্ষর প্রায় সম্রাট আকবরের ধর্মপ্রবণতা নতুন খাতে বইতে চাইল। সাম্রাজ্য লিপ্সু, হিন্দু নারী লোলুপ, উচ্চাভিলাষী সম্রাট আকবরের পূর্ব বর্ণিত পার্সী ধর্মগুরুর আশ্চর্য প্রভাব দেখা যেতে লাগল। এ সময়েই শেখ মুবারক তাঁকে পরামর্শ দিলেন যে, যেহেতু তিনি রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তা, সেহেতু তিনি ধর্মনেতাও হতে পারেন। ধর্ম গুরু হওয়ার এ পরামর্শ আকবরের মনকে খুব প্রভাবিত করল।
শাহী মহলে মূর্তিপূজা এবং অগ্নিপূজা যেন একটা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে পরিণত হল। জালালুদ্দিন আকবর শাহ গাজী স্বয়ং কণ্ঠে রুদ্রাক্ষ মালা পরে চন্দন চৰ্চিত দেহে হিন্দু সন্ন্যাসী বেশে দরবারে উপস্থিত হতে লাগলেন। দরবারের হিন্দু পণ্ডিতগণ ও সভাসদগণ 'সঠে সঠ্যাং' নীতি গ্রহণ করলেন। তাঁরা সম্রাটকে একেবারে আল্লাহর আসনে বসিয়ে “দিল্লিশ্বর” বা জগদীশ্বর এই আওয়াজে ভারতের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত মুখরিত করে তুললেন। সম্রাটের কৃত্রিম আনুগত্য প্রকাশ করতে লাগলেন। চণ্ডী, মাধবাচার্য ১৫৭৭ খৃস্টাব্দে রচনা করলেন “বঙ্গভাষা ও সাহিত্য” তারই ৩৭২ পৃঃ আছে–
“হেতা এক দেশ আছে নাম পঞ্চ গৌড়।
সেখানে রাজত্ব করেন বাদশাহ আকবর∫∫
অর্জুনের অবতার তিনি মহামতি।
বীরত্বে তুলনা হীন জ্ঞানে বৃহস্পতি∫∫
ত্রেতা যুগে রাম হেন অতি সযতনে।
এই কলিযুগে ভূপ পালে প্রজাগণে∫∫”
হিন্দু পণ্ডিতদের এ ধরনের চাটুকারিতা আকবরের ভাবান্তরের অন্যতম কারণ। আর সেই যুগে কিছু স্বার্থান্বেষী মৌলবী নিজেদের মধ্যে বিবাদ ও মতভেদও তাঁর ইসলাম ধর্মের ওপর অবহেলার ছোটখাটো কারণ। একদিন দরবারে আকবরের পাশে কে বেশি নিকটবর্তী হয়ে বসবেন তাই নিয়ে বিবাদ হয়, তাতেও আকবরের ভাবান্তর হয়। আকবরের উৎসাহ ও পরামর্শদাতারা তাঁকে বিশেষভাবে নতুন ধর্ম সৃষ্টিতে উৎসাহিত করলেও তেমন কেউ পরবর্তীকালে নতুন ধর্ম গ্রহণ করেনি। তবে ইসলাম ধর্মের সর্বনাশ সাধন যাদের উদ্দেশ্য ছিল তারা কেবলমাত্র এ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করার জন্য কৃত্রিম আনুগত্য প্রকাশ করেছিলেন। সময়মতো তার অনেক প্রমাণ দেয়া হবে।
ধর্মগুরু হওয়ার পথে আকবর ক্রমান্বয়ে এগিয়ে চললেন। ১৫৭৯ খৃস্টাব্দে ফতেপুর সিক্রীর প্রধান মসজিদে আকবর তাঁর স্পেশাল দালাল দলকে উলামা সাজিয়ে পাঠিয়ে দিলেন। পরে নিজে মসজিদের গেটে আড়ম্বরের সাথে উপস্থিত হন। তার পূর্বে ঐ মসজিদকে জমকালো করে সাজানো হয়েছিল। এবার যখনই আকবর উপস্থিত হলেন অমনি সেই নকল উলামা আর বহুরূপী সভাসদগণ নামায ত্যাগ করে অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে তাকে মসজিদের ভেতরে নিয়ে এসে মিম্বরে বসালেন।
হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর সময় থেকে প্রতি শুক্রবার জুমার নামায়ে আরবী খোতবা হতো তা বাতিল করে আকবরের গুণগানপূর্ণ কবিতা পাঠ করার ব্যবস্থা করা হয়েছিল। আর সেই কবিতার রচয়িতা ছিলেন ‘ফৈজী'। সেটি আকবর নিজে পাঠ করে শোনাবেন বিরাট জনতাকে আর সকলে সমস্বরে আল্লাহু আকবর বলে শাবাশ দেবেন এবং সেই সঙ্গে আকবর এই নতুন ‘দীনি-ইলাহী ধর্মে দীক্ষিত হতে আদেশ দেবেন।
আকবর ফৈজীর লেখা নিজ গুণগান সম্বলিত কবিতা হাতে নিয়ে দণ্ডায়মান হলেন। কিন্তু ঐতিহাসিক নাটকীয় সংবাদ এই যে, মাত্র ছয় লাইন কবিতা আবৃত্তি করতে গিয়ে আকবর চোখে যেন কুয়াশাচ্ছন্ন অন্ধকার দেখতে লাগলেন। তবু মনকে চাঙ্গা করে আবার আবৃত্তি করতে লাগলেন। কিন্তু তিনি যেন নিজ কানে শুনতে পাচ্ছিলেন বুকের স্পন্দন। হৃদকম্পনের কারণে তার একটি হাত বুকে বুলাতে লাগলেন। একটার পর একটা উপসর্গ দেখা দিতে লাগল। প্রথমে চোখ বিদ্রোহ করল, তারপর কণ্ঠস্বর বিদ্রোহী হয়ে উঠল। শেষে তাকে বিম্বরের উঁচু ধাপ থেকে নিচে নেমে আসতে হল। সকলেই হতবাক। সমস্ত প্রোগ্রাম খতম। অবশেষে কোনক্রমে বললেন, “জোর করে নয় ইচ্ছা করলে যে কেউ এই নতুন ধর্ম “দীনি-ইলাহী” গ্রহণ করতে পারে।”
এই কবিতায় যা লেখা ছিল তার অনুবাদ-এই বিশ্ব নিয়ন্তা আমার রাজ্যাধিপতি আর আমায় দেয়া হয়েছে সমস্ত জ্ঞান, শক্তি আর সাহসের সবটুকু। আসল সত্য, তথ্য ও প্রেম আমার বক্ষে সঞ্চিত। তিনিই আমার পরিচালক, আমার সব তারই ইঙ্গিতে। কোন ভাষা এমন নেই যে তার গুণগান করি। আল্লাহু আকবর সেই মহান আল্লাহ।” তাই এক ইংরেজ ঐতিহাসিক আকবরের হৃৎকম্প আর মিম্বর থেকে নিচে অবতরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে লিখেছেন, “কিন্তু এই ঘটনায় সে ভাবাবেগের সঞ্চার হল, তা যে দৃঢ়চিত্তে প্রবল শত্রুর মোকাবিলায় কখনও বিচলিত হয়নি, তাকে অভিভূত করে ছিল। যে হৃদয় সকল বিপদেও শাস্ত থাকত এখন তা দ্রুত স্পন্দিত হতে লাগল। যে কণ্ঠস্বর যুদ্ধের তুমুল হট্টনিনাদ ছাপিয়েও ঊর্ধ্বে শ্রুত হতো এক্ষণে বালিকার কণ্ঠের ন্যায়ই তা ভেঙে পড়ল। প্রথম তিন ছত্রের উচ্চারণ সমাপ্ত করার পূর্বেই এ সম্রাট নকল নবীকে সেই উচ্চ হতে নামিয়ে আসতে হল।” (টার্কস ইন ইন্ডিয়া পৃঃ ৬৯ দ্রঃ)
হযরত মুহাম্মদের (সা.) সময় হতে মুসলমানদের বিচার-আচার কুরআন ও হাদীসের ছায়াবলম্বনে কাজী বা মুফতিগণ দ্বারাই হয়ে আসছিল। আজও আমাদের মুসলমানদের বিষয়ে ভারতীয় কোন সংবিধানের সঙ্গে মুসলমানদের বাধ্য করা হয় না। যেমন ফারাজ আইন, তালাক আইন প্রভৃতি। মুসলমানদের বিখ্যাত আইন গ্রন্থ হেদায়া বা আজ সারা পৃথিবীতে নানা ভাষায় অনুবাদ বা তর্জমা করা হচ্ছে এবং প্রত্যেক রাষ্ট্রে তার পূর্ণ, অর্ধেক অথবা আংশিক গৃহীত হয়েছে। বিশেষ করে ইউরোপে ব্যাপকভাবে হেদায়া থেকে আইন সংকলিত হয়েছে। মূল আইন বই হেদায়া আর তার দেহ ও প্রাণ কুরআন ও হাদীস। যাইহোক, আকবর মতিভ্রমে বা মতিক্রমে ১৫৮৭ সালে কাজীর বা মুফতির বিচার ব্যবস্থার বিলোপ সাধন করেন। তার পরিবর্তে আকবরের নতুন আইন ও হিন্দু ধর্ম সংমিশ্রিত আইন পরিচালিত হল। এর ফলে স্বভাবত অমুসলমান পাঠক আকবরের প্রতি শ্রদ্ধাবান হতে পারেন। কিন্তু আকবর যদি পুরো হিন্দু হয়ে যেতেন তাহলে এ মারাত্মক অভিযোগ থেকে তিনি বাঁচতে পারতেন। তিনি হিন্দুও হননি আবার মুসলমানও বলা কঠিন। আবার দেখা যাচ্ছে তিনি ভেতরে ভেতরে মুসলমান হয়ে তওবা করে অনুতাপ ও অনুশোচনা করে নিজের জীবনে সহস্র সহস্র ধিক্কার দিয়ে প্রাণ ত্যাগ করেন। তাহলে তিনি হিন্দু এবং মুসলমান উভয় জাতির সঙ্গে সমানভাবে বিশ্বাসঘাতকতা করে গেছেন। হিন্দুদের খুশি করতে যত রকম ব্যবস্থা আছে তা তিনি করেছিলেন। আজ তা প্রমাণ হতে চলেছে। কিন্তু আসলে তার মধ্যে কোন আন্তরিকতা ছিল না, মৌখিক ছিল সবই। তাঁর রাজনৈতিক চালাকি নিছক ভণ্ডামি এবং উদারতার অভিনয় ছাড়া আর কিছু নয়।
১৫৮৮ খৃঃ রাজা ভগবান দাসের ভাগ্না (দত্তক পুত্র) এবং উত্তরাধিকারী মানসিংহকে তাঁর নতুন ধর্মে দীক্ষা গ্রহণ করতে অনুরোধ অথবা আদেশ করেছিলেন। কিন্তু তিনি যা জবাব দিয়েছিলেন তা চমকপ্রদ। মানসিংহ বলেছিলেন, “যদি জীবন উৎসর্গ করার সংকল্পই হয় মহামান্য সম্রাটের একজন বিশ্বস্ত অনুসারী তার প্রমাণ আমি যথেষ্ট দিয়েছি। কিন্তু আমি একজন হিন্দু; সম্রাট আমাকে মুসলমান হতে বলছেন না। আমি তৃতীয় কোন ধর্মের কথা অবগত নই।” নবরত্নের অন্যতম সদস্য রাজা টোডরমলও আকবরের ধর্ম প্রত্যাখ্যান করেছিলেন এবং ১৫৯০ খ্রিস্টাব্দে হিন্দু অবস্থাতেই পরলোক গমন করেন।
আকবরের একান্ত অনুগত কেবল বীরবল ও অন্য ১৭ জন ছাড়া আর কেউ “দীনি-ইলাহী” ধর্মগ্রহণ করতে সম্মত হননি, বীরবলসহ ১৮ জন কেবল উঁচু রাজপদ ও অর্থের লোভে এ নতুন ধর্মগ্রহণ করেছিলেন। অথচ সহায় সম্বলহীন যেকোন ফকির-দরবেশ মৃত্যুর পূর্বে হাজার হাজার মুরিদ (শিষ্য) রেখে যেতে পারেন। এখানেও আকবরের হলো সবচেয়ে লজ্জাকর পরাজয়। আকবরের মৃত্যুর পর আকবর অদৃশ্য হন বটে, কিন্তু তাঁর রোপিত বিষবৃক্ষ ভারতের বুকে ইসলামের শিক্ষা ও সংস্কৃতির ওপর দারুণ আঘাত হানে।
আকবর এবং তার পরবর্তী সময়ে আকবরের ভাবাদর্শে ও জাহাঙ্গীরের প্রযত্নে মুসলমান লেখক দ্বারা এমন কিছু বই লেখানো হয়েছিল হিন্দি ভাষায়, যার ভাব ছিল বৈদিক। মুসলমান অথচ সমাজের সর্বনাশের জন্য কুরআন, পুরাণ ও রাম রহিমের খিচুড়ি ছাড়া তাকে আর কিছু বলা যায় না। যেমন পুস্তকগুলোর নাম ‘মদন শতক’, ‘সামুদ্রিকা’ ইত্যাদি। এ পুস্তকগুলোর সূচনায় লেখকগণ গণেশ, রামচন্দ্র, প্রমুখ দেবতার বন্দনা গেয়েছেন। ‘রামভূষণ’ নামক পুস্তকের লেখক ইয়াকুব খান তাঁর পুস্তকে রাধাকৃষ্ণ, সরস্বতী ও গৌরীশঙ্করের অতি কীর্তন এবং এসব দেবদেবীর অতি পূজা নিবেদন করে ধর্মীয় উদারতা অথবা খিচুড়ি প্রবণতা প্রদর্শন করেছেন।
বিখ্যাত ঐতিহাসিক ফিরিস্তা লিখেছেন, “তারা মসজিদে প্রবেশ করে সেখানে মূর্তিপূজা করত, বাদ্যযন্ত্রের সাহায্যে দেবদেবীর স্তুতি বন্দনা করত, গান গাইত। এ তথ্যের সন্ধান পাওয়া যাবে কনফেডারেসী অফ ইন্ডিয়া পুস্তকে।
ডাঃ স্মিথ বলেন, “এই ধর্ম বিশ্বাস ছিল হাস্যকর, আভিজাত্য এবং অসংঘত স্বৈরাচারের স্বাভাবিক ফল।” অন্যত্র তিনি বলেছেন, “এটা আকবরের ভুলের সৃষ্টি, জ্ঞানের নয়।”
আজও ভারতের হিন্দু অনেকে খামের ওপর ৭৪৷ লেখেন। এর অর্থ হচ্ছে অত্যাচারী মুসলমানরা এত হিন্দু ব্রাহ্মণ হত্যা করেছিল, যাদের উপবীতের (পৈতার) ওজন হয়েছিল ৭৪ মণ। কিন্তু কথা হচ্ছে কে সেই মুসলমান অত্যাচারী ব্যক্তি? হয়ত নাম না জানলে মনে হতে পারে আওরঙ্গজেব, হুমায়ুন, শেরশাহ, বাবর প্রমুখ রাজা বাদশাহ কেউ; না হয় নাদির অথবা মুহাম্মদ বিন কাসিম। কার ওপর আন্দাজ করে ধরবে পাঠক-পাঠিকা? এখন যদি বলি আকবর তাহলে অবশ্যই অবিশ্বাস্য হবে। তার উত্তরে আসবে গোঁড়া মুসলমানরা আকবরকে দেখতে পারে না। তাই তার ওপর এত বিদ্বেষ ভাব। তাই বলি “দুর্গে দুর্গে" নামক ইতিহাস পুস্তিকার তৃতীয় সংস্করণের প্রথম পাতায় লেখক লিখেছেন “চিতোর গড়ের কথা।” তারই কয়েক লাইন হুবহু তুলে দিচ্ছি। “সাড়ে চুয়াত্তর কথাটা শুনেছ নিশ্চয়? কথাটার ব্যবহার কেন হয়েছিল জান? চিঠি লিখে খামের পেছনে সারে চুয়াত্তর লেখা হয়, কেননা যাতে করে খামটা কেউ না খোলে। যদি খোলে তাহলে পাপের ভাগী হবে। গল্পটা ইতিহাসের। আকবর বাদশাহ হুকুম দিলেন যুদ্ধে যত লোক মরেছে তাদের পৈতাগুলো ওজন করতে। তাই করা হল। দেখা গেল ওজন হয়েছে সারে চুয়াত্তর মণ। যদি পৈতার ওজন সারে চুয়াত্তর মণ হয়, তাহলে অনুমান করত কত হাজার লোক মরেছিল যুদ্ধে? গল্পটা আজ হয়ত ঠিক বিশ্বাস করতে ইচ্ছে হয় না। তবে ঘটনাটি ঘটেছিল চিতোরে।”
তবুও তাকে মহামতি বলতে হবে যত হত্যাই করুক, হোক না ব্রাহ্মণ হত্যা। তবু তো আকবর মুসলমান ধর্মের শত্রুতা করেছিলেন। অতএব তাঁকে মহামতি বানালে অন্তত মুসলমান বুদ্ধিজীবীরা আকবরের মত হিন্দু ভাবাপন্ন হয়ে যাতে ‘উদার’ উপাধি পায় সেই রাস্তা পরিষ্কার হয়েছে। ইংরেজদের ইনজেকশন সত্যই সাংঘাতিক। ঐ ‘দুর্গে দুর্গে’ ইতিহাস পুস্তিকাটির লেখকের নাম হচ্ছে শ্রীবেনু গঙ্গোপাধ্যায়।
একটা বিকৃত চরিত্রের পুরুষের চরিত্রে যত প্রকার দোষ থাকা সম্ভব আকবরের ক্ষেত্রে তা পূর্ণ মাত্রায় অথবা অতিমাত্রায় ছিল। যেমন দাবা খেলায় মানুষ খুঁটি ব্যবহার করে, কারো খুঁটি কাঠের, কারো হাড়ের, কারো হাতির দাঁতের, কারো রুপোর, আবার কারো সোনার খুঁটি। আকবর দাবা খেলতেন তাঁর খুঁটি হয়তো সোনার কিংবা মূল্যবান পাথরের হবে বলে সাধারণের ধারণা। কিন্তু আগেই বলেছি তার চরিত্র বিকৃতি মাত্রাতিরিক্ত ছিল। আকবরের দাবা খেলার খুঁটি ছিল জড়পদার্থ নয় জীবন্ত ষোড়শী যুবতী সুন্দরী নারী। সেই নারী নিয়ে হার-জিত হতো আর জিতে নেয়া নারীদের ব্যবহার করা হতো ব্যভিচারের ইন্ধনরূপে।
ভারতে তথা পৃথিবীতে অনেক মৃত মানুষের স্মৃতি রক্ষার জন্য স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে আগ্রার তাজমহল, কুতুব মিনার প্রভৃতি। কিন্তু অনেকে তা অর্থের অপচয় অথবা অর্থের শ্রাদ্ধ বলে অভিহিত করেন, আকবর সেখানেও মাত্রা ছাড়িয়ে গেছেন। হিরণ মিনার তার সাক্ষী। নব্বই ফুট উঁচু আর নানারকম কারুকার্য করা দেখার মত এ মিনারের নিচে শুয়ে আছেন নিশ্চয় কোন বিখ্যাত ব্যক্তি। কিন্তু না; সেটা একটি হাতির সমাধি। (শ্রীগঙ্গপাধ্যায় ‘দুর্গে দুর্গে’ ফতেপুর সিক্রীর অধ্যায়ে পৃঃ ৯৬)
আকবর তার তৈরি বহু প্রাসাদের দেয়ালে জীবজন্তুর ছবি অঙ্কন করেছেন। ইসলাম ধর্মে অপ্রয়োজনীয় জীব জন্তুর ছবি বৈধ নয়। আর যা বৈধ নয় তাকে বৈধ করা সম্রাট আকবরের বৈশিষ্ট্য। সম্রাট আওরঙ্গজেবের আমলে অনেক জীবজন্তুর নারীর মূর্তির উলঙ্গ ও অর্ধেলঙ্গ ছবির অপসারণ করা হয়। তুর্কী মহলে বংশীধারী মানুষের ছবি শ্রীকৃষ্ণকে মনে করে দেয় এবং অমুসলমান দর্শকগণ আকবরের প্রতি ভক্তিতে আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। লর্ড কার্জন দিল্লি, আগ্রা, ফতেপুর প্রভৃতি দর্শনীয় স্থানে অনেক চিত্র পুনরাঙ্কন করেছেন। প্রস্তর নির্মিত উলঙ্গ নারীমর্তি, ডানাওয়ালা পরী প্রভৃতি যা দেখলে সহজেই মনে হবে রাজা-বাদশারা বোধ হয় সব সময় উলঙ্গ উন্মাদনায় মত্ত হয়ে থাকতেন আসলে তা নয়।
শ্রী গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা “ফতেপুর সিক্রি” অধ্যায় থেকে কতকগুলো উদ্ধৃতি তুলে দিচ্ছি। “এই হামাম বা স্নানাগারটি আকবর তাঁর তুর্কী বেগমের জন্য নির্মাণ করেন। একটি ছোট বীথিকার মধ্যে দিয়ে প্রবেশ পথ, তপ্ত ও শীতল জলের ফোয়ারার ব্যবস্থা ছিল এখানে। আকবরের পাঁচ মহলের বর্ণনায় লেখক বলেছেন, “এই সৌধে তিনি বেগমদের ঈদের চাঁদ দেখার ব্যবস্থা করেছেন। হিন্দু বেগমদের সূর্য প্রণামের ব্যবস্থা করেছেন। পাঁচ মহলের দক্ষিণ দিকে আকবরের খৃস্টান বেগম মেরিয়ম জামানির মহল। সোনালী রঙে এই সৌধের দেওয়াল চিত্রিত ছিল তাই এটির নাম “সোনহেরা প্রাসাদ”। ফেরদৌসির শাহনামা চিত্র হিন্দুদের পুরাণ চিত্র, খৃস্ট জীবনীর চিত্র প্রভৃতি প্রাসাদ গাত্রে অলঙ্কিত ছিল।”
আকবরের নিকট বিয়ে ও ব্যভিচারের মধ্যে পার্থক্য ছিল না। তাই কোন কোন পণ্ডিতদের মতে বিকানীর রাজকন্যাকে আকবর বিয়ে করেছিলেন এবং তাঁর সঙ্গে খৃস্টানদের অবাধ মেলামেশা করতে আকবরেরও উৎসাহ ছিল। তাঁর গর্ভে একটি সুন্দর সুস্থ সন্তান হয়েছিল। আকবর তাঁর নতুন নাম রেখেছিলেন তাঁর মদ্য পানের সাথী মিঃ দানিয়েলের নাম অনুসারে দানিয়েল।
তিনি লিখেছেন, ‘পঁচিশী কোট’ সুন্দরী সুবেশা তরুণীদের দাঁড় করে ছক কাটা ঘরে পাশা খেলতেন সম্রাট আকবর।” ইসলাম ধর্মে ভাগ্য গণনা, হাত গণনা প্রভৃতি বিশ্বাস করা মারাত্মক অপরাধ। আকবর ইসলামের প্রতি সেখানেও আঘাত হেনেছেন। একজন হিন্দু জ্যোতিষীকে বসিয়ে রাখতেন তাঁর দরবারের চবুতারায় এবং তিনি যা বলতেন আকবর তাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে মেনে নিতেন। যুদ্ধ যাত্রা, প্রমোদ ভ্রমণ, প্রাসাদ নির্মাণ প্রভৃতি কাজে জ্যোতিষীর রায় গৃহীত হতো। কিন্তু তাঁর বহু ভবিষ্যদ্বাণী মিথ্যায় পরিণত হয়েছিল যেমন “দীনি ইলাহী” ধর্মের সারা ভারতে জনপ্রিয়তার কথা। কিন্তু যাঁকে বহুদিন ধরে ভক্তি করে এসেছেন তাঁকে ভক্তি করতে ইচ্ছা না হলেও অনেককে খুশি রাখতে মৌনতা পালন ছাড়া উপায় ছিল না।
আকবরের চরিত্রের কলঙ্ক সমুদ্রের সমস্তটুকু ঢাকা দিয়ে কিছু ঐতিহাসিক ঐগুলো ভাগ করে প্রত্যেক মুসলমান বাদশাহ, মন্ত্রী, সেনাপতিগণের চরিত্রে কাল্পনিক বণ্টন ব্যবস্থা করে সহজেই অনেকে ডক্টরেট উপাধি নিতে যেন মেতে উঠেছেন।
আজও ভারতে অসভ্য, অনাচার, ইসলাম ধ্বংসী কাজ, শিরক, বিদআত, বাউল-আউল ও মিথ্যা মারফতি ও অসভ্য ফকির দলের নোংরামির উৎস আকবরের উৎসাহ এবং প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সমর্থনেই সৃষ্টি। আওরঙ্গজেব বহু বর্বরতা দূর করেছিলেন। কিন্তু আগাছার চাষ করার প্রয়োজন হয় না, সার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না, এমনিই গজিয়ে ওঠে। তাই আজ এই আধুনিক যুগে মাথা উঁচু করে গজিয়েছে ঐ আগাছা জঙ্গল ও বিষাক্ত কণ্টক।
আকবর কিন্তু মৃত্যুর পূর্বাহ্নে তাঁর অভিনয়ের খোলস খুলে ফেলেছিলেন। দীর্ঘ ৪৭ বছর রাজত্ব করার পর ১৬০৫ খৃস্টাব্দে ৬০ বছর বয়সে শত শত স্ত্রীকে বিধবা করে পরলোক গমন করেন। আকবরের শেষ দশ বছরের ইতিহাস ভালভাবে পাওয়া যায় না। কারণ তার মৃত্যুর দশ বছর আগে বিখ্যাত ঐতিহাসিক বদায়ুনীর মৃত্যু হয়। আর একজন প্রতিভাধর ঐতিহাসিক আবুল ফজল আকবরের মৃত্যুর ১২ বছর পূর্বেই নিহত হন। আকবর নিজের মৃত্যুকে স্বাভাবিক মনে করে এবং চোখের সামনে ঐতিহাসিক প্রত্যক্ষ করে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েছিলেন। যেমন (ক) আকবরের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরের বিদ্রোহ। (খ) জনৈক হিন্দু আততায়ী কর্তৃক তাঁর আবাল্য বন্ধু দার্শনিক ও উপদেষ্টা আবুল ফজলের হত্যা (গ) তাঁর ‘দীনি ইলাহী’ ধর্মে দীক্ষিত বীরবল আর অনুগত মহেশ দাসের আফগানদের হাতে শোচনীয় পরাজয় ও মৃত্যু। আসলে ক, খ, গ কারণগুলো আসল নয়, মূলের শাখা কিংবা প্রশাখা। হিজরীর ৯৯৯ সালে আকবর ভাবলেন, মাত্র আর এক বছর বাকি ১০০০ হিজরী সন পূর্ণ হবে। আকবর নতুন নবী বলে খ্যাতি লাভ করতে পারল কই। যিনি প্রতীক্ষা করে আসছিলেন ইমাম মাহদী ও মসহীরূপে নিজকে আত্ম প্রকাশ করতে? তিনি ১০০০ হিজরী সনে বেশ বুঝতে পারলেন তাঁর সমস্ত স্বপ্ন স্বপ্নই নয় বরং জাগরিত অবস্থায় দুঃস্বপ্ন দর্শন। তাই “টার্কস ইন ইন্ডিয়া” গ্রন্থে মিঃ কীসি বলেছেন, “পরবর্তী বছরটি ছিল ৯৯৯ হিজরী সাল এবং তার পরেই এল ১০০০ হিজরী সাল। এক সহস্র বছরের যে আশা ব্যাপকভাবে পোষণ করা হয়েছিল তার সমাধি রচিত হল ঐ ১০০০ হিজরী সালেই।”
আকবরের মৃতদেহ কিন্তু দাহ করা বা নদীর বক্ষে নিক্ষেপ অথবা পশ্চিম দিকে পা রেখেও সমাধি হয়নি, হয়েছিল সাধারণ মুসলমানদের মতই। কিন্তু বড়ই পরিতাপ ও অবাক হওয়ার কথা যে, অমুসলমানদের জন্য তাঁর এত কাণ্ড, এত পরিকল্পনা তারাই আকবরের কবর খুঁড়ে অস্থিগুলোকে পর্যন্ত যতদূর সম্ভব অপবিত্র করে তুলে ফেলে দেয়। হয়তো বিধাতার বিধানের ইঙ্গিতেই এই সব।
সোশ্যাল মিডিয়ায় হাদিস শেয়ার করুন
Or Copy Link
https://hadith.one/bn/book/490/18
রিডিং সেটিংস
Bangla
English
Bangla
Indonesian
Urdu
System
System
Dark
Green
Teal
Purple
Brown
Sepia
আরবি ফন্ট নির্বাচন
Kfgq Hafs
Kfgq Hafs
Qalam
Scheherazade
Kaleel
Madani
Khayma
অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন
Kalpurush
Kalpurush
Rajdip
Bensen
Ekushe
Alinur Nakkhatra
Dhakaiya
Saboj Charulota
Niladri Nur
22
17
সাধারণ সেটিংস
আরবি দেখান
অনুবাদ দেখান
রেফারেন্স দেখান
হাদিস পাশাপাশি দেখান
এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন
মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।