hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৩৪
হযরত ইমদাদুল্লাহ আলফারুখী থানভী মোহাজেরে মক্কী (রহঃ)
খৃস্টীয় উনবিংশ শতাদ্বীতে মুসলিম সাধকদের ইতিহাসে যাঁরা অবর্ণনীয় খ্যাতি লাভ করে চির অমর হয়ে রয়েছেন আলহাজ হযরত ইমদাদুল্লাহ ফারুখী (রহ.) তাঁদের অন্যতম। তাঁর সামগ্রিক জীবনালেখ্য ইতিহাসের পাতায় এক অবিস্মরণীয় অধ্যায়। ভারতের বিপ্লবী নেতা হিসেবেও তাঁর নাম অক্ষয় হয়ে আছে। সে ইতিহাস পরে আসছে।

তিনি ১২৩৩ হিজরীতে শাহারানপুর জেলার নানুতাহ গ্রামে মামার বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা হাফেজ মোহাম্মদ আমিন ছিলেন মুজাফফারপুর জেলার থানাভবন গ্রামের অধিবাসীর বিখ্যাত মুহাদ্দিস ও আলেম, মাওলানা শেইখ মোহাম্মদ থানবীর পৌত্র। তাঁর মা ছিলেন সচ্চরিত্রা মহিলা। তাঁর পূর্ব পুরুষগণ দ্বিতীয় খলিফা হযরত ওমর ফারুকের (রা.) বংশ সম্ভুত। তাই তাঁকে ফারুখী বলা হয়। তিনি ষোল বছর বয়সে মাওলানা মামলুক আলী নানতুবী সাহেবের সৎ পরামর্শে ও সহযোগিতায় দিল্লীতে গিয়ে নানা অভিজ্ঞ আলেম ও বিখ্যাত মুহাদ্দিসগণের (হাদীসশাস্ত্রে অভিজ্ঞ পণ্ডিত) কাছে বিভিন্ন বিষয়ে পূর্ণ জ্ঞানার্জন করে ২৯ বছর বয়সে তিনি খ্যাতনামা পীর মাওলানা নাসীরুদ্দিন দেহলভীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।

তাঁর জীবনে অনেক আশ্চর্যজনক ঘটনা আছে। একদিন রাত্রে তিনি নিদ্রিত অবস্থায় স্বপ্ন দেখছেন, এক মজলিসে হযরত মোহাম্মদ (সা.) কতকগুলো শিষ্যসহ বসে আছেন। সেই মজলিসে দরবারে নববীর মধ্যে তিনি প্রবেশ করতে উদ্যোগী হলেন কিন্তু ভয়ে পারলেন না। তাঁর এই অবস্থা দেখে হাফেজ বোনাকী নামে তার এক আত্মীয় তাঁকে ধরে নিয়ে গিয়ে হুজুরের (সা.) কাছে হাজির হলেন। হযরত রসূলে করীম (সা.) তাঁকে দেখে তথায় বসতে আদেশ করলেন এবং স্নেহের সুরে বললেন, “বৎস! এক্ষণি তুমি মিয়াজিউ চিশতীর আস্তানায় গিয়ে তার সাথে দেখা কর।”

সহসা ইমদাদুল্লাহর নিদ্রা ভেঙে গেল এবং স্বপ্নে শোনা রাসূলুল্লাহ (সা.) এই নির্দেশটি চিন্তা করতে লাগলেন। অবশেষে ওস্তাদ মাওলানা কলন্দর জালালাবাদীকে তাঁর স্বপ্নের সমস্ত কথা বললেন, ওস্তাদ সাহেব তাঁকে সান্ত্বনা দিয়ে মিয়াজিউ চিশতীর ঠিকানাটা বলে দিলেন যে তুমি লোহারুর অন্তর্গত ঝনঝনা নামক স্থানে গেলেই তাঁর সাক্ষাৎ পাবে।

তথায় গিয়ে ইমদাদুল্লাহ চিশতী সাহেবের সৌম্য মূর্তি দর্শন করেই ভক্তিপ্লুত অন্তরে সাধক প্রবরের পা দুটো জড়িয়ে ধরলেন। সাধক তাকে বুকে নিয়ে হাস্যবদনে বললেন, “বাবা, স্বপ্নাদেশ কি সত্যি হয়েছে?” এই কথা শুনে ইমদাদুল্লাহ ফারুকী সাহেব বিস্ময়ে হতবাক হয়ে গেলেন।

যাইহোক, চিশতী সাহেব তাঁকে চিশতীয়া তরিকায় (পদ্ধতিতে) শিক্ষা দান করে খেলাফতি দানকালে বললেন, “বাবা, তুমি কি কিনিয়া অর্থাৎ স্বর্ণ প্রস্তুত বিদ্যা শিখবে। এতে তোমার যথেষ্ট উপার্জন হবে। আমি তোমাকে স্বর্ণ প্রস্তুত শিখিয়ে দেব।”

ইমদাদুল ফারুখী লজ্জিত হয়ে বললেন, “হযরত! পার্থিব সম্পদ আমি চাই না। আল্লাহর সন্তুষ্টিই আমার একমাত্র কাম্য। সেই জন্যেই আমি আপনার সান্নিধ্যে এসেছি। আপনি দোয়া করুন যেন আল্লাহ আমার মনোবাসনা পূর্ণ করেন।” একথা শুনে হযরত মিয়াজিউ খুবই আনন্দিত হলেন এবং হযরত ইমদাদুল্লাহ ফারুখীর জন্য কায়মনোবাক্যে দোয়া করলেন।

তিনি জীবনে কখনও প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করেননি। মাওলানা গাঙ্গুহী (রহ.)-এর কাছে একবার বলেছিলেন যে, মক্কা যাত্রার সময় তোমার সাথে দেখা করে যাব। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত হযরত ফারুখী সাহেবের মক্কা যাত্রার পূর্বেই হযরত মাওলানা গাঙ্গুহী (রহ.) বৃটিশ কারাগারে বন্দি হন। জনৈক ব্যক্তির প্রশ্নের উত্তরে মাওলানা গাঙ্গুহী (রহ.) বলেন, এক রজনীতে ফারুখী সাহেব জেল গৃহের সন্নিকটে এসে উপস্থিত হন। জেল প্রহীরা তখন জাগরিত ছিল। ফারুখী সাহেব যখন জেলে প্রবেশ করেন তখন তাঁকে কেউ-ই দেখতে পায়নি। তিনি আমার নিকট এসে অনেকক্ষণ কথাবার্তা বলে চলে যান। প্রতিশ্রুতি পালনের কি অপূর্ব দৃষ্টান্ত দেখুন, জেলখানায় বন্দি অবস্থাতেও তার সাথে দেখা করে প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে গেছেন।

মাওলানা গাঙ্গুহী (রহ.)-এর কাছ হতে বিদায় নিয়ে এসে হযরত ফারুখী সাহেব সেই রজনীতেই মক্কা যাত্রা করেন। বহু কষ্টে কোন রকমে পথ অতিক্রম করে অতি সংগোপনে আম্বালা নগরে এসে পৌঁছান। এখানে রাও আবদুল্লাহ খান নামক এক ব্যক্তি তাঁকে অত্যন্ত শ্রদ্ধা করতেন। ফারুখী সাহেব দীর্ঘ পথ ভ্রমণে ক্লান্ত হয়ে রাও সাহেবের বাড়িতেই সে রাতের মত আশ্রয় গ্রহণ করেন। যদিও রাও সাহেব জানতে দেশের স্বার্থে ফারুখী আজ রাজদ্রোহী তবু তিনি নিঃসংকোচে আশ্রয় দিলেন। বাইরের কোন লোক যেন জানতে না পারে তার জন্য অন্ধকার আস্তাবলের একটা কামরায় তিনি অবস্থান করতে লাগলেন।

একদিন চাশত নামাযের সময় তিনি সকলকে বললেন, “আমি এখন নামাযে প্রবৃত্ত হব। অতএব আপানারা একটু বাইরে যান।” অতঃপর ফারুখী সাহেব সেই কক্ষে ওজু সমাপনের পর জায়নামাজ বিছিয়ে নামাযে দণ্ডায়মান হলেন।

এদিকে আর এক বিপদ দেখা দিল। দুইজন ইংরেজ কর্মচারী হন্তদণ্ড হয়ে ছুটে এসে আস্তাবলের সামনে দাঁড়াল। রাও সাহেব অত্যন্ত সম্মানের সাথে তাদের উপবেশনের আসন প্রদান করলেন। ইংরেজ কর্মচারীদ্বয়ের একজন বলল, ‘শুনলাম আপনার অশ্বশালায় কিছু উৎকৃষ্ট অর্শ্ব বর্তমান আছে। তাই সেগুলোকে দেখার জন্যই আমরা আপনার এখানে এসেছি।’ এই বলে পরক্ষণেই তারা অশ্বশালায় ঢুকে চারদিকে ইতস্তত, দৃষ্টি নিক্ষেপ করেও কোথাও কোন লোককে দেখতে পেল না। অল্পক্ষণ পরেই তারা সে কক্ষ হতে বের হয়ে ফারুখী সাহেব যে কক্ষে নামায পড়ছিলেন সেই কক্ষের দ্বারে এসে উপস্থিত হলো। তারপর দ্বার ঠেলে ঘরের মধ্যে প্রবেশ করল। বিপদ অবশ্যম্ভাবী দেখে রাও সাহেব শিউরে উঠলেন। কিন্তু কর্মচারীদ্বয় এ কক্ষেও কিছু দেখতে না পেয়ে ব্যর্থ মনোরথ হয়ে ফিরে গেল। রাও সাহেব যেন হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। কিছুক্ষণ পর পুনরায় ওই কক্ষে প্রবেশ করে দেখলেন হাজী ইমদাদুল্লাহ ফারুখী সাহেব নামায অবস্থায় ধ্যানরত। নামায শেষে রাও সাহেবের প্রশ্নের উত্তরে হাজী সাহেব বললেন, ‘ইংরেজ কর্মচারীদ্বয়ের ঢোকার সময়েও আমি নামায পড়ছিলাম এবং কোরআন শরীফের এই আয়াতটি পড়ছিলাম “আ মানার রসুলু.....”। তাই আল্লাহ তায়ালা আমাকে শত্রুর কোপ দৃষ্টি থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন।’

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন