hadith book logo

HADITH.One

HADITH.One

Bangla

Support
hadith book logo

HADITH.One

Bangla

System

এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন
hadith book logo

ইতিহাসের ইতিহাস

লেখকঃ গোলাম আহমাদ মোর্তজা

৬৮
ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর
বিদ্যাসাগর সম্বন্ধে আলোচনা বঙ্কিম প্রসঙ্গে কিঞ্চিৎ করা হয়েছে। অবশ্যই প্রখ্যাত নেতা প্রত্যেকের বিষয়ে আলোচনা অনেকের কাম্য, তবুও তা সম্ভব নয়। বিদ্যাসাগর মহাশয়ও কোন দিন স্বাধীনতা সংগ্রামের সমর্থক ছিলেন না। পুরোপুরি ইংরেজের বেতনভোগী বিশ্বাসভাজন ব্যক্তি ছিলেন। ইংরেজের সৃষ্ট ফরমুলায় ভারতে শিক্ষা বিস্তারের ব্যবস্থায় শুধুমাত্র সম্রান্ত হিন্দুদের বশে আনতে যে সকল মূল কলেজ করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল তার বিরাট দায়িত্ব যার ওপর দেওয়া হয়েছিল তিনিই হচ্ছেন বিদ্যাসাগর। অনেক উন্নতি ও পুরস্কারের ব্যবস্থা ইংরেজরা তাঁর জন্য করেছিলেন। সংস্কৃত কলেজগুলোতে শুধু ব্রাহ্মণ সন্তানরা পড়ার অনুমতি পেত। সেখানে বিদ্যাসাগর কায়স্থদের ছেলেদের নেওয়ার সুপারিশ করেন এবং তা সরকারকে মঞ্জুরও করতে হয়। কিন্তু কোটি কোটি অনুন্নত শূদ্র বা অব্রাহ্মণ জাতির জন্য কোন রকম সুপারিশ তিনি করেননি। (দ্রঃ বিদ্যাসাগর ও বাঙালী সমাজ, ওরিয়েন্ট লং ম্যান, পৃঃ ৫২৪-৫৪৪)

তিনি বিধবা বিবাহের প্রচলনে যেভাবে বাধা পেয়েছিলেন, যার ফলে তিনি ভারতবাসীর ওপর আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলেন। তাই তিনি বলেছিলেন, “আমার দেশের লোক এত অসার ও অপদার্থ বলিয়া পূর্বে জানিলে আমি কখনই বিধবা বিবাহ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করিতাম না।” (দ্রঃ ডক্টর দুর্গাচরণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে লিখিত পত্র, পুস্তক ঐ, পৃঃ ৪৫৩) বিদ্যাসাগরের ঐ ভূমিকা ধর্মভীরুতার জন্য বলে অনেকে মনে করেন না। অনেকের ধারণা, তিনি একটি বাল্য বিধবাকে ভালবেসে ফেলেছিলেন। কিন্তু ধর্মের বাঁধন ছিড়ে তার জন্য তিনি যা চেয়েছেন তা পারেননি। কিছু দিনের মধ্যে বিদ্যাসাগরের ঐ ভালবাসার পাত্রী সমাজচ্যুত হয় এবং তাকে নিষ্ঠুরভাবে আত্মহত্যা করতে হয়েছিল। ঐদিন হতেই তাঁর প্রতি ধর্মগ্রন্থ মন্থন করে বিধবা বিবাহ বৈধ করার রাস্তা বের করতেই হবে এবং সরকারকে মঞ্জুর করার ক্ষমতাও তাঁর ছিল। (দ্রঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, শ্রী বিনয় ঘোষ, পৃঃ ৭৪)

বিদ্যাসাগরকে আমরা সরস্বতীর বরপুত্র মনে করলেও তিনি ধর্ম মানতেন কি তাই আজ তর্কের ব্যাপার। কারণ কোন দিনই তাঁকে মন্দিরে পুরোহিত আর দেব-দেবতাকে ভক্তি করতে দেখা যায়নি। শুধুমাত্র সরকারের স্বার্থে রাজনৈতিক কারণে ধর্ম সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছিলেন। যেমন তিনি কোন হিন্দুকে পত্র লেখার সময় উপরে শ্রী হরি শরন প্রভৃতি লিখতেন মাত্র। বিদ্যাসাগরের ভ্রাতা শঙ্কুমিত্র লিখেছেন, “একদিন দাদা সুখাসীন হইয়া কথাবার্তা বলিতেছেন এমন সময় দুইজন ধর্ম প্রচারক ও কয়েকজন কৃতবিদ্য ভদ্রলোক আসিয়া উপবেশন পূর্বক জিজ্ঞাসা করলেন, বিদ্যাসাগর মহাশয়। ধর্ম লয়ে বঙ্গ দেশে বড় হুলস্থল পড়েছে যাহার যা ইচ্ছা সে তাই বলতেছে, এ বিষয়ে কিছুই ঠিকানা নাই, আপনি ভিন্ন এ বিষয়ে মীমাংসা হইবার সম্ভাবনা নাই।”

এক কথায় দাদা বললেন, ধর্ম যে কি তাহা মানুষের বর্তমান অবস্থায় জ্ঞানের অতীত এবং ইহা জানবারও উপায় নাই।” (দ্রঃ ঐ পৃঃ ৩৬০) বিদ্যাসাগর কোনদিন ধর্মের জন্য ধর্ম সভায় যোগ দেননি শুধু বিধবা বিবাহের প্রচলনের পরিপ্রেক্ষিতে ধর্মকেন্দ্রিক জাতিকে বশে আনার জন্য তিনি ধর্মের কথা বলেছেন বা লিখেছেন মাত্র। (দ্রঃ অধ্যাপক বদরুদ্দিন উমরের লেখা) সংস্কৃত কলেজগুলোর যদিও তিনি সরকারপক্ষের বড় অধিকর্তা ছিলেন, তথাপিও বেদ, সাংখ্য প্রভৃতি পাঠ্য তালিকায় থাকলেও তিনি ঐ সব পুরাতন ধর্মগ্রন্থের ওপর আস্থা রাখতেন কতটুকু তা তাঁর লেখায় যথেষ্ট পরিমাণে পাওয়া যায়। যেমন- কতকগুলো কারণে সংস্কৃত কলেজে বেদান্ত ও সাংখ্য আমাদের পড়াতেই হয়। কী কারণে পড়াতে হয় তা এখানে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু সাংখ্য ও বেদাত্ত যে ভ্রান্ত দর্শন সে সম্বন্ধে এখন আর বিশেষ মতভেদ নেই। তবে ভ্রান্ত হলেও এই দুই দর্শনের প্রতি হিন্দুদের গভীর শ্রদ্ধা আছে। সংস্কৃত যখন এগুলো পড়তেই হবে তখন তার প্রতিশেধক হিসেবে ছাত্রদের ভাল ইংরেজি দর্শন শাস্ত্রের বই পড়ানো দরকার।” (দ্রঃ ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও উনবিংশ শতকের বাঙালী সমাজ, অধ্যাপক বদরুদ্দিন উমর) উদ্ধৃতিটি খুব বুঝে পড়া প্রয়োজন।

আর একটি উদ্ধৃতি-বিদ্যাসাগর, “একজন সুলেখক হওয়া সত্ত্বেও পত্রপত্রিকা, ছাপাখানা, প্রকাশন সংস্থা ইত্যাদির ওপর তার যথেষ্ট কৰ্তত্ব থাকা সত্ত্বেও তিনি কৃষকদের দুরবস্থা অথবা চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে একটি বাক্যও রচনা করেননি। বিদ্যাসাগর সেটা না করার কারণ। বঙ্কিমের মত তিনিও জানতেন যে চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনের অর্থ ইংরেজ শাসনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো; তার উচ্ছেদ ঘটতে সহায়তা করা”...। (দ্রঃ ঐ)

ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ইংরেজি শিক্ষা ও ইউরোপীয় উদারনীতিবাদের বাঙালী সমাজের চিন্তাগত পশ্চাদপদত্ব এবং অন্তঃহীন কুসংস্কার দূরীকরণের একটা নিশ্চিন্ত উপযুক্ত প্রতিশোধক হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন এবং সেজন্যই তিনি ভারতবর্ষে ইংরেজ বিরোধিতা তো করেনই না, উপরন্তু সিপাহী বিদ্রোহের ব্যাপারে সম্পূর্ণভাবে উদাসীন থেকে ভারতবর্ষে ইংরেজ শাসনের দীর্ঘ জীবনই কামনা করেছিলেন।” (দ্রঃ অধ্যাপক বদরুদ্দিন উমরের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর ও উনিশ শতকের বাঙালী সমাজ, পৃঃ ১০৫)

এমনিভাবে আজকাল যারা ঐতিহাসিক নেতা তাদের একটি একটি করে তুলে ধরলে বহু বেড়ে যাবে। বেশিরভাগ চরিত্রে না পাই পূর্ণ দেশপ্রীতি আর না পাই ধর্মের নির্ভেজাল ভক্তি। রামকৃষ্ণ পরমহংসদেবও আজকাল একজন ঐতিহাসিক পুরুষ স্বাধীনতা আন্দোলনে তারও নাকি বহুকিছু অবদান আছে। তাঁর কাছে ভক্তের দল পিপাসার্ত হয়ে যাবেন আর তিনি উদার হস্তে পরিবেশন করবেন ধর্মের অমৃত বাণী এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁকে বিদ্যাসাগরের দরবারে যেতে হয়েছে। বিদ্যাসাগর কোনদিনও রামকৃষ্ণের ছায়া স্পর্শ করারও এতটুকু প্রয়োজন মনে করেননি।

বিবেকানন্দের গুরু রামকৃষ্ণ পরমহংস দেব বিদ্যাসাগরের কাছে গিয়ে অত্যন্ত অনুনয় বিনয় করে বললেন, “আমি সাগরে এসেছি, ইচ্ছে আছে কিছু রত্ন সংগ্রহ করে নিয়ে যাব।" বিদ্যাসাগর বুঝতেই পারলেন তাকে দলে ভেড়াবার ষড়যন্ত্র। তিনি উত্তর দিলেন, “আপনার ইচ্ছে পূর্ণ হবে বলে তো মনে হয় না, কারণ এ সাগরে কেবল শামুকই পাবেন।” রামকৃষ্ণ বললেন, এমন না হলে আর সাগরকে দেখতে আসব কেন?” তারপর শুরু হওয়ার সাধ নিয়ে পরকাল আর মোক্ষ লাভের অনেক কথা বললেন। কিন্তু সুবিধা করতে না পেরে প্রকারান্তরে অপমান আর উপেক্ষার বোঝা নিয়ে ফিলে গেলেন। যারা তার কাছে ধর্মীয় রিপোর্ট নেয়ার জন্য প্রতীক্ষা করছিলেন তাদের তিনি বললেন, “এমনকি তাঁর নিজের মোক্ষ লাভের জন্য ভগবানের নাম করারও তার কোন স্পৃহা নেই, সেটাই বোধহয় তার সবচেয়ে বড় ত্যাগ।” আরও অনেক কথার মধ্যে বললেন, “আপন কল্যাণ মুক্তি পর্যন্ত তিনি উপেক্ষা করলেন।” (দ্রঃ শ্রী বিনয় ঘোষের ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর)

রিডিং সেটিংস

Bangla

System

আরবি ফন্ট নির্বাচন

Kfgq Hafs

অনুবাদ ফন্ট নির্বাচন

Kalpurush

22
17

সাধারণ সেটিংস

আরবি দেখান

অনুবাদ দেখান

রেফারেন্স দেখান

হাদিস পাশাপাশি দেখান


এই সদাকা জারিয়ায় অংশীদার হোন

মুসলিম উম্মাহর জন্য বিজ্ঞাপনমুক্ত মডার্ন ইসলামিক এপ্লিকেশন উপহার দিতে আমাদের সাহায্য করুন। আপনার এই দান সদাকায়ে জারিয়া হিসেবে আমল নামায় যুক্ত হবে ইন শা আল্লাহ।

সাপোর্ট করুন